Thursday, May 31, 2018

কফিনভর্তি বারুদের নির্যাস

লিখেছেন: কৌশিক মজুমদার শুভ
 
আমার জন্যে কয়েক বিলিয়ন কফিন জমা রেখো,প্রিয়তমা।
গোলাপের চাষ অলাভজনক হতে পারে-
পৃথিবীতে যুদ্ধ কখনো থেমে যাবে না।
বাতাসে বারুদ আর সীসা-রক্তের কালো দাগ দেখে যারা, তারাও একসময় পাহাড়ের স্বপ্ন দেখেন,
ফিরে যেতে চান ঘরে,
দ্যাখেন কমলা রোদে জমাট হয়ে আছে গরম পাথর-ফুলের ঘ্রাণ-
প্রেমিকার চুলের মতো আঁধার নেমে আসে যখন যুদ্ধের ডামাডোলে-
যখন রক্তে ভিজে আসে হাসপাতাল আর সাদা বেডসিট
প্রার্থনা কোরো প্রিয়তমা,
এবারের কফিনগুলো যেন সাজানো যেতে পারে পর্যাপ্ত রজনীগন্ধা আর অর্কিডে,
গোলাপের রক্তাভ লাল অসহ্য হয়ে উঠেছে লাশেদের দলে-
যুদ্ধবিমানের গোলায় উড়ে গিয়েছিল যে হাসপাতাল, পুড়ে গিয়েছিল যে শিশুর মুখ,থেমেছিল যে অপত্যের কান্না,
অথবা শরণার্থীশিবিরে পড়ে আছে যে হাতকাটা কবি,
অথবা বিধবার আর্তনাদের তীব্রতা কানে এলে তাই নিয়ে থেমে থাকা যায় না
আমি যুদ্ধে যাচ্ছি,প্রিয়তমা -
বিপক্ষের অজস্র কার্তুজে ভরে যাবে আমার বুক-
মিশে যাবে রক্তে,সীসা বিধে যাবে স্কেলেরায়,
ততক্ষণ পৃথিবীর উত্থিত রাজনীতি সসম্মানে
তাহাদের লিঙ্গ প্রদর্শন করবে যেখানে-এক্সিবিসনিজম
যখন ফিরে আসি আমার যুদ্ধবিদ্ধস্ত শহরে,
মর্গে দেখি ফ্রিজারের অভাব,
দুর্গন্ধের সাথে একটা বারুদ মিশে গ্যাছে শহরের বাতাসে,
সাদা কাফনের অপর্যাপ্ত অংশে বেরিয়ে ছিল সুপরিচিতের ছাইমাখা পা-
যার প্রতিটা শিরাউপশিরা জটপেকেছিলো নিউরনে।
আমার হৃদযন্ত্রে ক্ষুরাঘাত করে অজস্র জেব্রা-সাদাকালো,ডোরাকাটা -
উদ্ভট পৃথিবীর সঙ্গমলীলা,উদ্ভট আমাদের চিন্তাপ্রণালী
শাসকের মূল্য দিতে গিয়ে ক্রীতদাস হয়ে
জন্মেছিল যে সৈণিক-তার স্ত্রী ধর্ষিত হয়েছিল যখন, পৃথিবীর বাতাসে সে চিৎকার করেছিল?
নাকি তার গোঙানির সুরে ছিল বেশ্যার ছিনালী-
এই নিয়ে চিন্তা করে মস্তিষ্কে ধার দেন মস্তকহীন বুদ্ধিজীবীগণ
মহামাণ্য শাসক-মহামাণ্য ঈশ্বর -
আমি কি গ্লাডিয়েটর হতে চেয়েছি?
অথবা তারা স্বাধীনতা চেয়েছিল-কফিন চায়নি,কেননা কফিনে দমবন্ধ হয়ে আসে,
কফিনের চাহিদায় পৃথিবীতে বিলুপ্ত এখন আবলুস গাছ,অর্কিড নেই বললেই চলে।
আপনার পালিত কুকুরগুলো ছেড়ে দিন-যে গুলো সিংহের ছাল পড়ে আছে।
আমাদের মাংস নিশ্চয়ই তার জন্যে সুস্বাদু হবে
মৃত্যু শাশ্বত -কিন্তু আমরা নিশ্চিত নই কিভাবে দেখা হবে মৃত্যুর সাথে,
কে জানে,আগামীকালই বাতিল হবে শান্তিচুক্তি,
হয়ত মাথার ওপরে ভেঙে পড়বে আরেকটা বিশ্বযুদ্ধ