Friday, February 26, 2016

পশ্চিমা পত্রিকার সাড়া জাগানো রিপোর্ট: বিশ্বের শীর্ষ দশ বুদ্ধিজীবীর সকলেই মুসলমান.......

যুক্তরাষ্ট্রের বহুল প্রচারিত দ্বিমাসিক পত্রিকা ফরেইন পলিসি (Foreign Policy) এবং যুক্তরাজ্যের মাসিক প্রস্পেক্ট ম্যাগাজিন (Prospect Magazine) যৌথ উদ্যোগে পাঠকদের ভোটের মাধ্যমে সর্বশেষ ২০০৮ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করে। এর আগে পত্রিকা দুটি ২০০৫ সালেও একই ধরনের তালিকা প্রকাশ করেছিল। ২০০৮ সালের তালিকায় শীর্ষ দশ বুদ্ধিজীবির মধ্যে সকলেই মুসলমান। তারা হলেন যথাক্রমে তুরষ্কের ফেতহুল্লাহ গুল, বাংলাদেশের মুহাম্মাদ ইউনুস, মিশরের ইউসুফ আল কারদাভী, তুরষ্কের ওরহান পামুক, পাকিস্তানের এইতজাজ আহসান, মিশরের আমর খালেদ, ইরানের আব্দুল করিম শরশ, সুইজারল্যান্ডের তারিক রামাদান, ভারতের মাহমুদ মামদানী এবং ইরানের শিরিন এবাদি। উল্লেখ্য ২০০৫ সালের তালিকায় শীর্ষ দশজনের মধ্যে কোন মুসলমান বুদ্ধুজীবীর ঠাই হয় নি।

১। ফেতহুল্লাহ হুল (Fethullah Gülen)
ফেতহুল্লাহ গুল ১৯৪১ সালের ২৭ এপ্রিল তুরষ্কে জন্মগ্রহন করেন। তিনি একাধারে একজন লেখক, শিক্ষাবিদ এবং ইসলামী পন্ডিত। গুল এ পর্যন্ত ৬০ টিরও বেশি গ্রন্থ রচন আকরেছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্টের পেনসুলভেনিয়ায় নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।

২। ড: মুহাম্মাদ ইউনুস (Dr. Muhammad Yunus)
ড: মুহাম্মাদ ইউনুস ১৯৪০ সালের ২৮ শে জুন বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৩ সালে তিনি গ্রামীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র্ঋন কার্যক্রমের সূচনা করেন। ২০০৬ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুষ্কার লাভ করেন।

৩। ইউসুফ আল কারদাভী (Yusuf Al-Qaradawi) 
ইউসুফ আল কারদাভি ১৯২৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মিশরে জন্মগ্রহন করেন। কারদাভীকে সমসাময়িক কালের অনত্যম শীর্ষ ইসলামী পন্ডিত বিবেচনা করা হয়। আল কারদাভি প্রায় ১২০ টিরও বেশি বই রচনা করেছেন। ১৯৮১ সাল তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত করা হয়। ২০১১ সালে ৩০ বছর পর তিনি নিজ দেশ ভ্রমন করেন। ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্য তাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করে চলতি বছর ফ্রান্স সেদেশে তাকে নিষিদ্ধ করে।

৪। ওরহান পামুক (Orhan Pamuk)
ওরহান পামুক ১৯৫২ সালের ৭ জুন তুরষ্কে জন্মগ্রহন করেন। ওরহান পামুক বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ঔপন্যসিক, লেখক এবং শিক্ষাবিদ। ২০০৬ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেন।

৫। এইতজাজ আহসান (Aitzaz Ahsan)
চৌধুরী এইতজাজ আহসান ১৯৪৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের রাওয়ালপন্ডিতে জন্মগ্রহন করেন। তিনি পাকিস্তানের প্রখ্যাত আইনজীবি এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। তিনি একাধিকবার পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেন। ২০০-০৮ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি নির্বাচিত হন।

৬। আমর খালেদ (Amr Khaled)
আমর খালেদ ১৯৬৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় জন্মগ্রহন করেন। আমর খালেদ মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় টিভি মুখ। ইসলামী বিভিন্ন বিষয়ে টেলিভিশনে তিনি বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন।

৭। আব্দুল করিম শরশ (Abdulkarim Soroush)
আব্দুল করিম শরশ ১৯৪৫ সালে তেহরানে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ইরানের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, সংগঠক এবং তাহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে কর্মরত।

৮। ড: তারিক রামাদান (Dr. Tariq Ramadan)
তারিক রামাদান ১৯৬২ সালের ২৬ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড এর প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল বান্নার নাতি। তারিক রামাদান হাল সময়ের অন্যতম শীর্ষ একজন ইসলামী পন্ডিত এবং লেখক। ২০০৩ সালে ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির সাথে তিনি ঔতিহাসিক টেলিভিশনে বিতর্কে অংশ নেন। বর্তমানে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কনটেম্পরারি ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

৯। মাহমুদ মামদানী (Mahmood Mamdani)
মাহমুদ মামদানী ১৯৪৬ সালের ২৩ এপ্রিল ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহন করেন। তিনি একজন শিক্ষাবিদ, লেখক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক। বর্তমানে তিনি উগান্ডার ম্যাকেরের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

১০। শিরিন এবাদি (Shirin Ebadi)
শিরিন এবাদি ১৯৪৭ সালের ২১ জুন ইরানে জন্মগ্রহন করেন। শিরিন এবাদি একজন আইনজীবি, সাবেক বিচারক এবং মানবাধিকার কর্মী। ২০০৩ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।

আল কুরআনের অভিনবত্ব স্বীকার করে নিয়ে অমুসলিম গবেষকদের উক্তি।

কুরআন এর নাযিলের পর থেকে মানবজাতির জন্যে পথনির্দেশ পাবার একমাত্র নির্ভুল গ্রন্থ। সত্য সকল নিষ্ঠাবান মুসলিমের পাশাপাশি অনেক অমুসলিম গবেষকও স্বীকার করে গেছেন। এখানে এমন কিছু উক্তি দেওয়া হলো। মনে রাখতে হবে প্রত্যেকেই তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কুরআনকে বিবেচনা করেছেন।

. স্যার ডায়মন্ড বার্স: কুরআনের বিধানাবলী শাহানশাহ থেকে শুরু করে পর্ণকুটিরের অধিবাসী পর্যন্ত সকলেরই জন্যেই সমান উপযোগী কল্যাণকর। দুনিয়ার জন্য কোন ব্যাবস্থায় এর বিকল্প খুঁজে পাওয়া একবারেই অসম্ভব।

. আর্নেস্ট রিনান: “কুরআন নির্ভুল, বইয়ে কোন রদবদল ঘটেনি। আর যখনই কুরআন শুনবেন আপনি ম্পন্দিত হবেন। আর আপনি এর বিধানগুলো যতই পর্যালোচনা করবেন ততই একে সম্মান করতে থাকবেন।

. লিও টলস্টয় বিখ্যাত রুশ দার্শনিক: আমি কুরআন পড়বার পর বুঝলাম মানবতার জন্যে এই আসমনী বিধানাবলীই দরকার
তিনি আরো বলেন, “কুরআনের বিধিবিধান সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়বে কারণ এটা মন-মানস, যুক্তি প্রজ্ঞার সাথে সংগতিপূর্ণ

. গীবন বলেছেন, “জীবনের প্রতিটি শাখার কার্যকরী বিধান কুরআনে মওজুদ রয়েছে


. মাইকেল এইচ হার্ট:কুরআন ছাড়া ইতিহাসে এমন দ্বিতীয় বই নেই যেটা কোন সংশোধন ছাড়াই নিজস্ব ভাষা দিয়েই পূর্ণাঙ্গ

. জেইমস জেন্জ- জ্যোতির্বিদ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, “কুরআন ঈশ্বর কতৃক নাযিলকৃত গ্রন্থ

. অধ্যাপক আইরিন বার্গ- অসলো বিশ্ববিদ্যালয়: সন্দেহাতীতভাবে কুরআন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর থেকেই প্রদত্ত

. . মরিস বুকাইলি: “এটা অসম্ভব যে মুহাম্মাদ সা. নিজেই এই বই রচনা করেছেন,.. কীভাবে তিনি বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলী কোন ভুল না করেই ঘোষণা করেছেন যা আর কেউ পারেনি?”

. ইউশিদো কোজান-জাপানী প্রফেসর: আমি কুরআনকে ঈশ্বরের সত্য বাণী হিসেবে মেনে নিতে কোন জটিলতা দেখিনা

১০. আলবার্ট আইনস্টাইন: কুরআন হচ্ছে কিছু বিধানের সমষ্টি যেগুলো মানুষকে সঠিক পথনির্দেশনা দেয় আর তা এমনভাবে যে সকল মহান দার্শনিকগণই এটা স্বীকার না করে পারেননা।

১১. উইল ডোরান্ট:কুরআনের ধর্মীয় সমাধান পার্থিব দিকের সমাধানও বটে আর এর সবকিছুই আল্লাহ কতৃক নাযিলকৃত, এতে রয়েছে বিধানাবলী যেমন ভালো আচরণ, স্বাস্হ্য, বিবাহ, তালাক, শিশু,দাস প্রাণীদের সাথে আচরণের নীতিমালা, বাণিজ্য, রাজনীতি, অবৈধ মুনাফা, ঋণ, চুক্তি, শিল্প, সম্পদ, শাস্তি, যুদ্ধ এবং শান্তি বিষয়ক

১২. পি. এইচ করবিন: ”মুহাম্মাদ সা. যদি কুসংস্কারাচাছান্ন হতেন আর কুরআন যদি ওহী না হতো তাহলে তিনি মানুষকে বিজ্ঞানের প্রতি আমন্ত্রণ জানাতে সাহস পেতেননা…”

১৩. জর্জ বার্নাড: একদিন ইউরোপ এই ধর্ম (ইসলাম) কে মুহাম্মাদ সা. এর বইটিকে গ্রহণ করে নিবে

১৪. মহাত্মা গান্ধী: কুরআন শেখার মাধ্যমে প্রত্যেকেই ঐশী ধর্মীয় গূঢ জ্ঞান অর্জন করবে। আমরা কুরআনে অন্য ধর্মকে পরিবর্তনের মত কোন বাধ্যবাধকতা দেখিনা। এই গ্রন্থ সাবলীলভাবে বলেছে, ‘ধর্মে কোন জবরদস্তি নেই’”

১৫. ডক্টর অসওয়েল জনসন,কুরআনের প্রজ্ঞাময় বিধানাবলী এতই কার্যকরী এবং সর্বকালের উপযোগী যে সর্বযুগের দাবীই উহা পূরণ করতে সক্ষম। কর্ম কোলাহলপূর্ণ নগরী, মুখর জনপদ, শুণ্য মরুভূমি এবং দেশ হতে দেশান্তর পর্যন্ত সব জায়গায় বাণী সমভাবে ধ্বনিত হতে দেখা যায়।

কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্যে কুরআনই যথেষ্ট, তাদের উক্তির প্রয়োজনীয়তা সে জন্যে দরকার নেই। তবে তাদের উক্তি হয়তো অন্য সংশয়বাদীদেরকে সত্য চিনতে সাহায্য করবে