Tuesday, June 22, 2021

অসীম কত বড়?

অসীমের বিশালত্ব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা অসহায় হয়ে দেখবো আমাদের চিন্তার পরিধি কত ছোট! আমাদের তুচ্ছতা আর বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিশালত্ব নিয়ে চিন্তা করলে নিজেদের যে কতটা অসহায় মনে হয়, তার একটা ছোট্ট উদাহরণ এটি। অসীমের বিশালত্ব উপলব্ধি করার জন্য পাঠকের গভীর গাণিতিক জ্ঞান দরকার নেই, তবে নিঃসন্দেহে গভীরতম চিন্তাশক্তির প্রয়োজন!

লেখকের ছোটবেলার একটা অভিজ্ঞতা দিয়েই শুরু করা যাক। খুব ছোটবেলায় আমার এক বন্ধুর সাথে একবার তর্ক লেগে গেল, কার কয়টা খেলনা আছে। আমি অনেক কষ্টে গুনে বললাম, আমার সব মিলিয়ে আটটি খেলনা আছে। বন্ধু বলল তার দশটি। এবার তো পড়ে গেলাম বিপাকে! বন্ধুর কাছে হেরে যাওয়া যায় না, আমি বললাম আমার পনেরটা! এবার বন্ধুও চিন্তায় পড়ে গেল! অনেক ভেবে বলল, আমার গুনতে একটু ভুল হয়ে গেছে, আমার আসলে বিশটা! এবার অনেক ভেবে বললাম, আমার একশটা!

আমি তখন মোটে গুনতে পারি বিশ পর্যন্ত! একশো বলে খুব খুশি হয়ে গেলাম। এবার বন্ধু খুব চিন্তায় পড়ে গেল। ঐ বয়সে একশ অনেক বড় সংখ্যা, এর থেকে বড় কোনো সংখ্যা আছে কি না আমাদের কারোরই জানা নেই। এবার বন্ধু একটু চালাকি করে ফেলল! বলল, আমার যতগুলো খেলনা আছে, বন্ধুর নাকি তার চেয়ে এক বেশি! এর পরে আর কোনো কথা থাকে না। মন খারাপ করে বাড়ি ফিরলাম। মাকে জিজ্ঞেস করলাম, একশোর চেয়ে বড় আর কী আছে?

অর্থাৎ একটা শিশু খুব চিন্তা করেও তার পরিধি একশো থেকে বড় করতে পারেনি! আমাদের পূর্বপুরুষদের সংখ্যার ধারণা ছিল এক আর অনেক! গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, অনেক প্রাণী তিন পর্যন্ত গুনতে পারে! আসুন দেখি, আমরা কত পর্যন্ত গুনতে পারি!

আমাদের পৃথিবী কিন্তু অনেক বড়, প্রায় ৫১০ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। এবার সূর্যের দিকে তাকান। সূর্যের মধ্যে আপনি এক মিলিয়ন পৃথিবী রাখতে পারবেন। আরেকটু বড় পরিসরে ভাবুন, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে সূর্যের মতো প্রায় ৪০০ বিলিয়ন তারা আছে। আর আমাদের জানা মতে, মহাবিশ্বে ১০০ বিলিয়ন শনাক্ত করা যায় এমন গ্যালাক্সি আছে, শনাক্ত করা যায়নি, এমন গ্যালাক্সির সংখ্যা নিশ্চয়ই আরও বেশি। আর আপনি জানেন কি, ইদানীং কিছু গবেষণামতে, মহাবিশ্বও কিন্তু একটি নয়। স্ট্রিং থিওরি মতে, মোটামুটি 10^500 টি (১ এর পর ৫০০টি শূন্য)! তবে এই সংখ্যাটি নিশ্চিত নয়। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন,

"মহাবিশ্বের সংখ্যা শূন্য ও অসীমের মাঝামাঝি কিছু একটা!"

আপনি কি ভাবতে পারেন, এই সংখ্যাগুলো কত বড়? এদের কাছে আমরা কতটা তুচ্ছ? আসুন, এবার আমাদের প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি। অসীম এই সংখ্যাগুলোর চেয়েও বড়!

আপনাকে যদি বলা হয়, পৃথিবীতে যতগুলো জোড় সংখ্যা আছে, ততগুলোই স্বাভাবিক সংখ্যা আছে, আপনি কি মানবেন? নিশ্চয়ই না (১-১০ এর মধ্যে জোড সংখ্যা ৫টি, স্বাভাবিক সংখ্যা ১০টি)! কিন্তু আমাদের ভাবনার জগত কেবল গণনাযোগ্য সংখ্যা নিয়ে কাজ করে বলেই এটা মানতে আপনার কষ্ট হচ্ছে। আপনি না গুনে কীভাবে বুঝবেন আপনার দু'হাতে সমান সংখ্যক আঙুল আছে? আপনি প্রতিটি আঙুলের বিপরীতে আরেকটি আঙুল রাখতে পারবেন, তাই এরা সমান। একে গণিতে বলে One-one correspondence। এই পদ্ধতিতেই আমরা প্রমাণ করতে পারি, জোড় সংখ্যার সংখ্যা আর মোট সংখ্যার সংখ্যা সমান। (২-১, ৪-২, ৬-৩, ৮-৪..... এরকম জোড়া কিন্তু চলতেই থাকবে)

2       4      6      8      10      12   ……….

 1       2     3     4        5        6   ………..

এভাবে প্রতিটি সংখ্যার বিপরীতে আরেকটি জোড় সংখ্যা পাওয়া যাবে, মানে আমাদের বিষয়টি প্রমাণ হয়ে গেল। কিন্তু এখানে একটা 'কিন্তু' থেকেই গেল! মোট জোড় সংখ্যা আছে অসীম সংখ্যক। আবার মোট স্বাভাবিক সংখ্যাও আছে অসীম সংখ্যক। আপনার যদি ওপরের প্রমাণে ‘কিন্তু’টাই পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলে এই দুই অসীম সমান না! অর্থাৎ অসীমেরও ছোট-বড় আছে, সব অসীম অন্য অসীমের সমান নয়!

অসীমগুলো যে অন্য অসীম থেকে আলাদা এরকম প্রস্তাবনা প্রথম দেন জর্জ ক্যান্টর (তিনি সেট তত্ত্বের জনক)। এর নাম The Continuum Hypothesis।

এই তত্ত্বে বলা হয়, প্রত্যেক অসীম অন্য অসীম থেকে আলাদা। এক অসীম অন্য অসীম থেকে ছোট-বড় হতে পারে। ডেভিড হিলবার্টের মতে, গণিতে এই তত্ত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপ্রমাণিত সমস্যা। কেন? কারণ কার্ল গোডেল প্রমাণ করেছেন, এই তত্ত্ব কখনও মিথ্যা প্রমাণ করা যাবে না। অন্যদিকে পল কোহেন প্রমাণ করেছেন, একে সত্য প্রমাণ করাও সম্ভব নয়! এটা প্রমাণ করে যে, বিজ্ঞানে বা গণিতে এখনও অনেক উত্তর দেয়া সম্ভব হয়নি এমন প্রশ্নের অস্তিত্ব রয়েছে!

এবার আমাদের চিন্তাশক্তির আরেকটু উচ্চস্তরে যাওয়া যাক। এর নাম The infinity Paradox, এর প্রস্তাবনাকারী ডেভিড হিলবার্ট।

চিন্তা করুন একটি হোটেলের কথা যেখানে রুমের সংখ্যা অসীম। কোনো এক রাতে প্রত্যেকটি রুম ভর্তি, কোনো রুম ফাঁকা নেই। হোটেলের নাম আমরা ধরে নিই ইনফিনিটি হোটেল, আর হোটেলের ম্যানেজার গণিতবিদ জেফ্রি। হোটেল ভর্তি করে জেফ্রি রাতে ঘুমিয়েছেন। হঠাৎ একজন নতুন অতিথি আসলো, যে আরেকটা রুম চায়। গণিতবিদ জেফ্রি কিন্তু তাকে ফিরে যেতে দেননি, তার জন্যও ইনফিনিটি হোটেলে আরেকটি রুমের বরাদ্দ করা হলো। কীভাবে? জেফ্রি এক নম্বর রুমের লোককে বলল দুই নম্বরে যেতে, দুই নম্বর রুমের লোককে বলা হলো তিন নম্বর রুমে যেতে। মানে সব রুমের লোককে তার ঠিক পাশের রুমে যেতে বলা হল। এখন আপনি ভাবতে পারেন, শেষ রুমের লোকটি কোথায় যাবে? কিন্তু এটা তো কোনো চল্লিশ রুমের হোটেল না, এটি ইনফিনিটি হোটেল। এখানে শেষ রুম বলে কোনো কথা নেই। n তম রুমের লোকটি n+1 তম রুমে চলে গেল, এক নম্বর রুম খালি করে নতুন লোকটিকে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা হলো।

এবার জেফ্রির জন্য আরেকটু কঠিন সমস্যা, এবার একটা বাস এলো চল্লিশজন মানুষ নিয়ে, এরা আরও চল্লিশটা রুম চায়। চট করে জেফ্রি সমাধান করে ফেলল, এক নম্বর রুমের লোককে বলা হলো একচল্লিশ নম্বর রুমে, দুই থেকে বিয়াল্লিশ নম্বর রুমে, n রুমের লোক চলে গেল (n+40) নম্বর রুমে, চল্লিশটি রুম ফাঁকা হয়ে গেল, চল্লিশজনের জায়গা হয়ে গেল!

আসুন, জেফ্রিকে আরেকটু কঠিন সমস্যা দেয়া যাক। দেখি এবার জেফ্রি কী করে! এবার তার হোটেলে একটা বাস পাঠানো হলো, যেখানে লোকের সংখ্যা অসীম। এবার কী করে তাদের জায়গা দেওয়া হবে? এবার কিন্তু আর জেফ্রি যোগের ধারণা দিয়ে এত লোকের জন্য রুম খালি করতে পারবে না, কারণ n+∞ কোনো নির্দিষ্ট রুমের নম্বর না, জেফ্রি কাউকে গিয়ে হুট করে সেই রুমে যেতে বলতে পারে না। এবার কিছুক্ষণ ভেবে এক অভিনব বুদ্ধি বের করল। এক নম্বর রুমের লোককে বলা হল দুই নম্বরে যেতে, দুই নম্বরের লোক গেল চারে, তিন নম্বর রুম থেকে পাঠানো হল ছয় নম্বর রুমে। n নম্বর রুম থেকে 2n নম্বর রুমে পাঠিয়ে দিলে সব জোড় সংখ্যার রুম ভরে গেল, আর বিজোড় সংখ্যার রুম ফাঁকা হয়ে গেল। এখন নিশ্চয়ই জানেন বিজোড় সংখ্যা আছে মোট অসীম সংখ্যক, তাই অসীম সংখ্যক লোকের জায়গা হয়ে গেল।

পাঠক, এবার সময় এসেছে আপনার সিট বেল্ট টাইট করে নেয়ার। কারণ এবার আঘাত আসবে স্বাভাবিক মানুষের চিন্তার প্রায় সর্বোচ্চ স্তরে! জেফ্রি এবার তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে! এবার অসীম সংখ্যক লোক নিয়ে একটি-দুটি নয়, পুরো অসীম সংখ্যক বাস চলে এসেছে, সবাই গণিতবিদ জেফ্রির কাছে ইনফিনিটি হোটেলে জায়গা চায়!

এবার জেফ্রি পড়ে গেল মহাবিপদে। অনেক চিন্তা করে তার মনে পড়লো গুরু ইউক্লিডের কথা। তিনি বলেছেন, মৌলিক সংখ্যা আছে অসীম সংখ্যক। জেফ্রি আইডিয়া পেয়ে গেল! এক নম্বর রুমের লোককে পাঠানো হলো দুই নম্বর রুমে, দুই নম্বর রুম থেকে চার নম্বর রুমে, তিন থেকে আটে, চার থেকে ষোলতে… বুঝতে পারছেন? এখানে n নম্বর রুমের লোককে 2^n নম্বর রুমে পাঠানো হলো। দুইয়ের ঘাত বাদে সব রুম কিন্তু ফাঁকা হয়ে গেল।

প্রথম বাসের সব লোককে এবার বলা হলো ১ নম্বর ঘরে যেতে। পরের বাসের লোককে পাঠানো হলো ৩, ৯, ২৭, ৮১, ...3^n... নাম্বার রুমে। পরের মৌলিক সংখ্যা পাঁচের ঘাতে, পরের বাসে সাতের ঘাতে। এভাবে প্রতিটি বাসের জন্য একটি করে মৌলিক সংখ্যার ঘাতে তাদের জায়গা হলো। অসীম সংখ্যক মৌলিক সংখ্যা থাকায় অসীম সংখ্যক বাসের লোকদের জায়গা হলো। এভাবে জেফ্রি তার অসীমের মধ্যে অসীম সংখ্যক অসীমের জায়গা করে দিল!

কী! প্যাঁচ লেগে গেল? আরেকবার পড়ুন। তা-ও না বুঝলে চিন্তার কারণ নেই, কারণ You are not alone!

এবার আমরা জেফ্রির আয়ের কথা ভাবি, তার তো অনেক বড়লোক হয়ে যাবার কথা। যদি প্রতি রুমের জন্য জেফ্রি এক টাকা করে পায়, তাহলে রাতের শুরুতে জেফ্রির ছিল অসীম টাকা, কিন্তু রাতের শেষেও তার আয় অসীম টাকাই!

আপনি কি আন্দাজ করতে পারছেন, অসীম কত বড়? এতক্ষণ আমরা যে অসীম নিয়ে আলোচনা করলাম, তা হলো অসীমের সর্বনিম্ন স্তর, কারণ আমরা কেবল স্বাভাবিক সংখ্যার ভেতরেই অসীম নিয়ে আলোচনা করেছি! আপনারা যদি অসীম সম্পর্কে সামান্য ধারণাও পেয়ে থাকেন, অসীমের বিশালত্ব আপনাকে নাড়া দেয়, তাহলেই লেখার স্বার্থকতা!

এখন আসুন, আমরা আমাদের প্রশ্ন নিয়ে শেষবারের মতো ভাবি। অসীম তাহলে কত বড়? এর উত্তর আসলে খুবই সহজ। কারণ এর উত্তর হলো,

"আমরা জানি না!"

Wednesday, June 2, 2021

"বিজ্ঞানী এলিস সিলভারের চাঞ্চল্যকর দাবি: মানুষ পৃথিবীর জীব নয়!

 


তাঁর 'হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ: এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স' বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, 'মানুষ পৃথিবীর জীব নয়'।

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং অনেক আগেই বলেছিলেন, “এলিয়েন আছে, অবশ্যই আছে।” নাসার গবেষকেরা কেপলার টেলিস্কোপের সাহায্যে এমন ২০টি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন, যাদের মধ্যে সম্ভবত প্রাণ আছে। নাসার প্রথম সারির বিজ্ঞানী অ্যালেন স্টেফান, বিজ্ঞানী সিলভানো পি কলম্বানো, বিজ্ঞানী থমাস জুরবিউকেন বিভিন্ন সময় বলেছেন এলিয়েনদের থেকে নাসা আর বেশি দূরে নেই। কয়েক বছরের মধ্যেই নাসা এলিয়েনদের কাছে পৌঁছে যাবে।

কিন্তু সম্প্রতি নাসার এই বক্তব্যে জল ঢেলে দিয়েছেন এক বিজ্ঞানী। তাঁর চাঞ্চল্যকর মতবাদ নিয়ে ঝড় উঠেছে বিজ্ঞানপ্রেমীদের মধ্যে। তিনি দাবী করেছেন মানুষই এলিয়েন বা ভিনগ্রহের জীব। অথচ বিজ্ঞান বলেছিল, প্রায় ১৮ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকায় সৃষ্টি হয়েছিল প্রথম মানব প্রজাতি হোমো ইরেকটাস।

এলিয়েনরা কি আদৌ এরকম দেখতে?
ডঃ এলিস সিলভার বললেন, মানুষই ভিনগ্রহের জীব
আমেরিকার প্রখ্যাত ইকোলজিস্ট ডঃ এলিস সিলভার। তিনি তাঁর ‘হিউম্যান আর নট ফ্রম আর্থ: এ সায়েন্টিফিক ইভ্যালুয়েশন অফ দ্য এভিডেন্স’ বইটিতে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, ‘মানুষ পৃথিবীর জীব নয়’। বহুদিন ধরে গবেষণা করার পর তাঁর সিদ্ধান্ত, অন্য জীবদের মতো মানুষের সৃষ্টি পৃথিবীতে হয়নি।

কয়েক লক্ষ বছর আগে অন্য গ্রহ থেকে মানুষকে পৃথিবীতে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল। ডঃ সিলভার বলেছেন, মানুষের শরীরে থাকা অনেক ত্রুটি বুঝিয়ে দেয়, পৃথিবী আমাদের নিজের গ্রহ নয়। পৃথিবীর অনান্য উন্নত প্রাণীর সঙ্গে মানুষের শরীরের এত পার্থক্য কেন! এই প্রশ্নটির ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে ডঃ এলিস সিলভারের মতবাদটি।

ডঃ এলিস সিলভারের সেই চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী বই।
ডঃ সিলভারের সেই চাঞ্চল্যকর থিয়োরির কিছু ঝলক
● ডঃ সিলিভারের মতে, পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া থাকা সব প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী পরিবেশ থেকেই সরাসরি তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে নেয়। উদ্ভিদ তার গায়ে এসে পড়া সূর্যালোক, বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর মাটি থেকে জল নিয়ে নিজের খাবার তৈরি করে নেয়। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা সরাসরি উদ্ভিদকে খেয়ে, বা অনান্য প্রাণীকে খেয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। কিন্তু মানুষ প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া বা গজিয়ে ওঠা খাবার সরাসরি খেতে অপছন্দ করে কেন!

ডঃ সিলিভারের মতে, সরাসরি পরিবেশ থেকে নেওয়া খাবার হজম করতে পারে না একমাত্র মানুষই। তাই সে অন্যভাবে তার খাদ্যের প্রয়োজন মেটায়। মানুষ যদি পৃথিবীরই জীব হতো, তাহলে সে বাকি প্রাণীদের মতোই পরিবেশ থেকে পাওয়া খাবার সরাসরি খেয়ে হজম করতে পারত।

ডঃ এলিস সিলভার।
● মানুষকে এই গ্রহের সবচেয়ে উন্নত প্রাণী বলে মনে করা হয়। কিন্তু ডঃ সিলভারের মতে মানুষই হল পৃথিবীর সবচেয়ে খাপছাড়া জীব। মানুষই হল পৃথিবীর জলবায়ুতে টিকে থাকার পক্ষে সবচেয়ে অনুপযুক্ত জীব। কারণ, পৃথিবীর বাকি সব জীব সারাজীবন খোলা আকাশের নীচে, প্রখর রৌদ্র, তুমুল ঝড় বৃষ্টি সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে। মানুষ কেন পৃথিবীর বাকি সব প্রাণীর মতো বৃষ্টিতে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিজতে পারে না! কয়েকঘন্টার বেশি সূর্য্যের প্রখর রৌদ্রে থাকলে একমাত্র মানুষেরই কেন ‘সান স্ট্রোক’ হয়! সূর্য্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে আমাদের ত্বকের চামড়া কালো হয়ে যায় কেন! ! কেন সূর্যের আলোয় মানুষেরই চোখ ধাঁধিয়ে যায়! অন্য প্রাণীদের তো তা হয় না। এগুলি কি প্রমাণ করেনা সূর্য রশ্মি মানুষের পক্ষে উপযুক্ত নয় এবং মানুষ থাকত কোনও নরম আলোয় ভরা গ্রহতে।
● মানুষের মধ্যেই প্রচুর দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা ক্রনিক ডিজিজ দেখা দেয় কেন! ডঃ সিলভারের মতে ব্যাক পেন (back ache) হল মানুষের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী রোগ। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই রোগে ভোগেন। কারণ মানুষ পৃথিবীর অনান্য প্রাণীর মতো চারপায়ে হাঁটে না। ফলে হাঁটা চলা ও বিভিন্ন কাজে মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য পায় না। পৃথিবীর বাকি প্রাণীদের কি ঘাড়ে, পিঠে, কোমরে ব্যাথা হয়! মানুষের এই ‘ব্যাক পেন’ রোগটিই প্রমাণ করে, মানুষের দেহ অন্য কোনও গ্রহে বসবাসের উপযুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছিল। যে গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ ছিল পৃথিবীর তুলনায় অনেক কমজোরি।

● পৃথিবীতে থাকা কিছু দীর্ঘজীবী প্রাণী, যেমন আফ্রিকার হাতি, অ্যালডাবরা ও গ্যালাপাগোস কচ্ছপ, বো-হেড তিমি, গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো, গ্রিন-উইং ম্যাকাওদের চোখেও কি চল্লিশের পর চালসে (হাইপার মেট্রোপিয়া) পড়ে! বয়েসের সঙ্গে সঙ্গে তাদের শ্রবণক্ষমতা কমে যায়!

● পৃথিবীর কোনও মানুষই ১০০% সুস্থ নয় কেন! প্রত্যেকেই এক বা একাধিক রোগে ভোগেন কেন!
● মানব শিশুর মাথা বড় হওয়ার জন্য নারীদের স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব করতে প্রবল যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। প্রসব করতে গিয়ে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রজাতির লক্ষ লক্ষ স্ত্রী প্রাণী ও শাবক প্রসবকালে মারা গিয়েছে কি? মানব শিশু জন্মের পরেই পৃথিবীর উন্নত প্রাণীগুলির শাবকদের মতো হাঁটতে শেখে না কেন?

● মানুষের দেহে কেন ২২৩টি অতিরিক্ত জিন আছে! পৃথিবীর অনান্য প্রাণীদের দেহে অতিরিক্ত জিন নেই কেন!

● মানুষের ঘুম নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা বলছেন পৃথিবীতে দিন ২৪ ঘন্টার, কিন্তু আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (body clock) বলছে, আমাদের দিন হওয়া উচিত ছিল ২৫ ঘন্টার। মানবজাতির সৃষ্টিলগ্ন থেকেই দেহঘড়িতে একটি দিনের জন্য কেন ২৫ ঘন্টা বরাদ্দ করা হয়েছিল!

বিভিন্ন বিজ্ঞানী ডঃ সিলভারের থিওরিটির বিস্তর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু অনেকে আবার তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা বলেছেন ডঃ সিলভার যে যুক্তিগুলি হাজির করেছেন, সেগুলি কিন্তু একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। সত্যিই তো পৃথিবীর অনান্য প্রজাতির জীবের চেয়ে আমরাই কেন আলাদা হলাম। সত্যিই কি আমরা পৃথিবীর প্রাণী! নাকি আমরা ভিনগ্রহের প্রাণী হয়ে পৃথিবীকে শাসন করছি! রহস্যটির উত্তর লুকিয়ে আছে কালের গর্ভে।

Tuesday, June 1, 2021

⭕ সাইকোলজিক্যাল হ্যাক ⭕

◽১..স্মার্টফোন কেনার সময় কখনই ক্যামেরাটা গুরুত্ব দেবেন না। প্রসেসর এবং RAM এর গুরুত্ব সর্বাধিক। স্ক্রীনসাইজ ও খুব একটা গুরুত্ব রাখেনা। মনে রাখবেন আপনি ক্যামেরা অথবা TV নয়, মোবাইল ফোন কিনছেন।

◽২..যখন কারো সাথে কোনো বিতর্কে অংশ নেবেন তখন পুরো সময় নিজেকে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন..... ঠান্ডা মাথায় বিতর্কে জয়লাভ করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে

◽৩..কোন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত মানসিক চাপের সৃষ্টি হলে চুইংগাম চিবতে পারেন; পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে

◽৪..যখনই কারো সাহায্য প্রয়োজন হবে সরাসরি তাকে বলুন "আমি আপনার সাহায্য চাই"। এতে অনেক দ্রুত কাজ হয়।

◽৫..কোন ব্যক্তি যদি আপনাকে অপমান করে আপনি শুধু তাকে অবহেলা করুন অথবা পারলে তার নকল করুন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই আপনি আপনার মেজাজ হারাবেন না এবং পরিস্থিতি কখনও আপনার হাতের বাইরে যেতে দেবেন না

◽৬..অনলাইন থেকে কোন জিনিস কিনতে চাইলে সেই জিনিসটাকে আপনার cart এ কয়েকদিনের জন্য সেভ করে রাখুন কিন্তু অর্ডার দেবেন না। কিছুদিনের মধ্যে দেখবেন এই জিনিসটির দাম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছুটা কম হয়ে যাবে।

◽৭..কোনো নতুন জায়গায় ঘুরতে গেলে আপনি যদি ওই জায়গাটির সম্বন্ধে একটা সম্যক ধারণা চান তাহলে কোন চায়ের দোকানে চলে যান। চা খেতে খেতে এবং দোকানদারের সাথে কথা বলতে বলতে ওই জায়গার সম্বন্ধে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়ে যাবেন

◽৮..আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখুন এবং নিজের সাথে হাসতে থাকুন এবং নিজেকে বলুন "আমি নিজেকে পছন্দ করি" তাৎক্ষণিকভাবে এটি আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে

◽৯..আপনার ঘরে একটি নীল বাতি রাখুন। এটি আপনাকে শান্ত থাকার প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করবে

◽১০..আপনি যদি কোন দলের সাথে একসাথে থাকেন এবং জানতে চান কে আপনাকে সবথেকে বেশি পছন্দ করে তাহলে কোন হাসির মুহূর্তে দেখুন কোন ব্যক্তি আপনার দিকে হাস্যরত অবস্থায় তাকিয়ে রয়েছে! যখন কেউ মন খুলে হাসে তখন সে তার সবথেকে নিকট ব্যক্তির দিকেই তাকিয়ে থাকতে পছন্দ করে।

◽১১..যখন কেউ আপনার দিকে রাগান্বিত অবস্থায় তাকিয়ে আছে তখন শান্ত থাকার চেষ্টা করুন

◽১২..দুটো সিদ্ধান্তের মধ্যে কোন একটি কে পছন্দ করতে হলে কঠিনতর সিদ্ধান্তটি গ্রহন করুন। ভবিষ্যতে আফসোস করবেন না।

◽১৩..ইন্টারভিউ বোর্ডে যদি কোনো অজানা প্রশ্নের মুখোমুখি হন তাহলে তিন থেকে পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে জানিয়ে দিয়েন আপনি ওই প্রশ্নের উত্তর জানেন না। কোনরকম ভনিতা করবেন না। এতে আপনার ব্যক্তিত্বের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে।

◽১৪..কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার এক ঘণ্টা আগে থেকে পরীক্ষার হলে ঢোকার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত আপনি ওই কোম্পানি সম্বন্ধে শুধু ভাবতে থাকুন এবং চাকরিরত অবস্থায় ওই কোম্পানিতে আপনার অবস্থানের প্রতিচ্ছবি কল্পনা করুন। পরীক্ষার সময় আপনার ইতিবাচক মানসিকতা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
সংগৃহীত

কিভাবে হয়েছিলো পৃথিবীর যাত্রা?

পৃথিবী। যে গ্রহে আমরা বসবাস করি। যে গ্রহের দান গুলো নিয়ে আমরা বেঁচে আছি। যুদ্ধ, ভালোবাসা, পরমাণু বিস্ফোরণ, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কত কিছুই না সহ্য করে আমাদের এই পৃথিবী। কিন্তু আপনি কি জানেন এই মূল্যবান আর সুন্দর এই পৃথিবী তৈরি হতে কত যুগ যুগ সময় লেগেছে? তাহলে আসুন আজকে আমরা সময়ের কিছুটা পিছনে যাই আর জেনে নেই আগুনের গোলা থেকে জীবন সমৃদ্ধ পৃথিবীতে রূপান্তর হওয়ার সেই অভিযান।

আজ থেকে প্রায় চার লক্ষ কোটি বছর আগে …

আমাদের সৌরজগতে নতুন জন্মানো একটি তারা বা নক্ষত্র এর চারিদিকে ধূলিকণা বা পাথরের টুকরো ঘুরছে। এই মুহূর্তে এখানে আমাদের পৃথিবীর কোন অস্তিত্ব নেই। কারণ, এখনো পৃথিবী তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এই ধূলিকণা বা পাথরগুলির মাধ্যাকর্ষণ এর প্রভাবে পরস্পরের সাথে যুক্ত হতে থাকে। লক্ষ্য কোটি বছর পর এই ধূলিকণা বা পাথর গুলি পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি বড় গোলাকার অগ্নি খন্ডে পরিণত হয়। কিন্তু, এখন এটাকে পৃথিবী বলা যাবে না। কারণ, এটা ভীষণ গরম। মানে, এটা আজকের শুক্র গ্রহের সমান। আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ কোটি বছর আগে পৃথিবী ফুটন্ত লাভা দিয়ে ঢাকা ছিল। ভুল করে যদি কেউ একবার এখানে পা ফেলে দেয় তাহলে দ্বিতীয়বার পা ফেলার জন্য তার কাছে আর পাই থাকবে না।

পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল ১২০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস…

মানে এই জায়গা নরক এর চাইতে কোন অংশে কম ছিল না। তখনো পৃথিবীতে অক্সিজেনের চিহ্ন ছিল না। ঠিক এই সময় পৃথিবীতে Asteroid বৃষ্টি হয়। যেটা কিনা পৃথিবীতে এক কিলোমিটার গতিবেগে ফুটন্ত লাভার নদী তৈরি করে। এই Asteroid গুলো দূরে কোথাও থেকে আসেনি বরং পৃথিবীর প্রতিবেশী গ্রহ গুলো থেকে এসেছিল আর এই Asteroid গুলি রীতিমত পৃথিবীর সাথে ধাক্কা খাচ্ছিল।

নিচের ছবির দিকে দেখুন। এই হল নতুন তৈরি হওয়া একটি গ্রহ। এটা খুবই দ্রুত। প্রায় ১৫ কিলোমিটার গতিবেগে প্রতি সেকেন্ডে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে। মানে একটি বন্দুকের গুলি এর গতিবেগ এর চাইতেও ২০ গুণ বেশি গতিবেগে পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ছে।

আমাদের এটাকে সাদরে গ্রহন করতে হবে। কারণ, এটার জন্যই আমাদের সুন্দর চাঁদের সূচনা হবে। এবার আমাদের পৃথিবীর চারদিকে পাথরের টুকরো ভরে গেছে। এখানে এত ছোট ছোট পাথর রয়েছে যার ফলে পৃথিবীর পাশেও শনি গ্রহের মতো একটি রিং তৈরি হয়ে গেছে। এই রিং একেবারে শনি গ্রহের রিং এর মত দুই ভাগে ভাগ হয়ে রয়েছে। প্রথম রিং আজকের পৃথিবী ও চাঁদ এর মাঝখানে এবং অন্যটি চাঁদ এর পেছনে রয়েছে আর এই রিংগুলো থেকে রীতিমত Asteroid গুলো পৃথিবীতে পড়ছে।কিন্তু Asteroid এর আসল বৃষ্টি এখনো শুরু হয়নি। এখন এই রিং আস্তে আস্তে গ্রাভিটির কারণে একটি তিন হাজার কিলোমিটার চওড়া গোল পিণ্ডে পরিণত হবে আর এখানে আমরা দেখছি আমাদের চাঁদের জন্ম। এখন এটাতে কোন দাগ নেই এবং এখন এটা পৃথিবীর খুব কাছাকাছি রয়েছে যার জন্য এটা অনেক বড় দেখাচ্ছে। এটা গরম লাভা দিয়ে তৈরি এবং এর কাছাকাছি থাকায় পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব ফেলছে। প্রায় ত্রিশ লক্ষ বছর পর আমাদের সোলার সিস্টেমের মধ্যে এমন কিছু হবে যেটা সম্পর্কে আপনি হয়তো প্রথমবার জানবেন। আমাদের সৌরমণ্ডলের গ্যাস জায়েন্ট নিজেদের অরবিট এর পরিবর্তন করে। আর এই পরিবর্তনের কারণে সৌরমণ্ডলের Asteroid এবং comets এর মধ্যে Gravitational Mass তৈরি হয়। এখনই সেই সময় যখন চাঁদ তার দাগগুলো পাবে। এটাকেই বলা হয় The Late Heavy Bombardment.

অন্যদিকে, এই সময় আমাদের চাঁদও ভীষণ গরম ছিল। এটা আকাশে একটি বড় জ্বলন্ত লন্ঠনের মত ছিল আর এটা পৃথিবীর এতটাই কাছে ছিল যে এর মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর উপরে আজকের তুলনায় ২৫ গুণ বেশি প্রভাব ফেলেছিল। অর্থাৎ, আমাদের পৃথিবীতে একদিন ২৪ ঘন্টায় নয় বরং ৬ ঘন্টায় হত। এ কারণেই পৃথিবীতে গরম লাভার নদীর ঢেউ আজকের দিনের সমুদ্রের ঢেউ এর তুলনায় ২০ গুণ বেশি উপরে উঠে।

কিন্তু ধীরে ধীরে সময়ের সাথে চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে চলে যায় এর ফলে আমাদের পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীরে ধীরে কমতে থাকে। লাভার নদী ও ঠান্ডা হতে থাকে। পৃথিবীর সত্তার নির্মাণ হয়। এই সময় শুধুমাত্র চাঁদই আমাদেরকে আকর্ষণ করবে এমনটা নয়। তখন আকাশে আরও দুটি উজ্জ্বল তারা দেখা যায়। এই জ্বলন্ত তারার মতো দেখতে এগুলো আসলে তারা নয়। আসলে এগুলো গ্রহ। জুপিটার এবং অন্য গ্রহ। সৌরমণ্ডলের আন্তরিক যেমন আমাদের পৃথিবী, ভেনাস, মারকিউরি, মার্স এগুলো সব রকেট প্লানেট। এগুলো বেশি সময় ধরে গরম লাভার রুপে থাকতে পারে না।

কিন্তু জুপিটার এবং শনি আসলে গ্যাস জায়েন্ট যার জন্য অনেকক্ষণ গরম থাকতে পারে এই গ্রহগুলি। পৃথিবীর জন্মানোর এই সময় কালে জুপিটার এর টেম্পারেচার ৫০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছিল এবং Satrun এর ৩০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছিল। অর্থাৎ জুপিটার তখন সূর্য থেকে বেশি উজ্জ্বল ছিল। যেমন বিজ্ঞানীদের মতে তারা সময়ের সাথে সাথে আরো বেশি উজ্জ্বল হতে থাকে তখন আমাদের সূর্য ৩০% কম উজ্জ্বল ছিল কিন্তু চার লক্ষ কোটি বছরে এই গ্রহগুলি ঠান্ডা হয়ে যায়। এবার আসুন আবার ফিরে যাওয়া যাক আমাদের প্রাণপ্রিয় পৃথিবীতে। পৃথিবীতে তখন শুধুমাত্র একটি গ্যাস ছিল যেটা হলো মিথেন গ্যাস। আপনি ভুল করেও এখানে শ্বাস নেবেন এ কথা ভাববেন না। নইলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার মৃত্যু হতে পারে। The Late Heavy Bombardment এর সময় Comets এর বৃষ্টি হয়েছিলো। এই বৃষ্টিতেই পৃথিবীতে পানির আবির্ভাব হয়। এই বৃষ্টিতেই প্রথিবীতে সমুদ্রের আবির্ভাব হয়। পৃথিবী এবার চারিদিক থেকে সমুদ্রে ঘেরা ছিল। কিন্তু না এখানে পা রাখার জন্য কোন জায়গা ছিল আর না ছিল শ্বাস নেবার জন্য কোন অক্সিজেন। আমাদের পৃথিবীতে এখন থেকে ধীরে ধীরে জীবের বীজ রোপণ করা শুরু হয়েছে মাত্র। আর এখান থেকেই আমাদের আজকের এই পৃথিবী।