Wednesday, December 30, 2020

সময় কি?

সময় কি? উইকিপিডিয়ার সংজ্ঞায় সময় হচ্ছে জগতের অস্তিত্বের ক্রমাগত অগ্রগতি এবং ঘটনাবলির অপরিবর্তনীয় পারম্পার্য যা অতীত থেকে বর্তমানের মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। সময় হলো সেই জিনিস যা বিভিন্ন রকম পরিমাপের পরিমান, ঘটনাবলীর ক্রম, স্থিতিকালের তুলনা কিংবা পার্থক্য, বাস্তব পরিমানের পরিবর্তনের হার নির্ণয়ে সাহায্য করে। দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সময় দীর্ঘকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ স্থান জুড়ে রয়েছে। এছাড়া আমাদের প্রাত্যহিক কাজকর্ম যেমন ব্যবসা, কলকারখানা, খেলাধুলা, পড়াশুনা, শিল্পকলা সবকিছুতেই সময়ের ভুমিকা রয়েছে। আমরা সময়ের মধ্যেই বেড়ে উঠি, সময়ের মধ্য দিয়েই চলি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সময় অঙ্গাঅঙ্গি জড়িয়ে রয়েছে। অথচ সময় আমাদের কাছে এক প্রহেলিকা। প্রাচীন যুগ থেকেই দার্শনিক, বিজ্ঞানী, ধর্মশাস্ত্রবিদেরা সময়ের প্রকৃতি নিয়ে চিন্তা ভাবনা কিংবা বিতর্ক করে আসছেন। সভ্যতার দীর্ঘ পথচলায় মানুষ ক্রমশঃ  সময় নামক ধারনাটির রহস্য উন্মোচন করে চলেছে। তবুও সময় নামক এই প্রহেলিকাটিকে মানুষ পুরোপুরি করায়ত্ব করতে পারেনি। এখনো অনেক কিছুই জানার বাকী রয়েছে। 

আজকের এই পর্ব দিয়ে আমি সময় নিয়ে একটি লেখা শুরু করছি। আমার লেখাটি সময়ের দার্শনিক দিক নিয়ে শুরু হবে। এরপর ক্রমশঃ মনস্তাত্বিক, ধ্রুপদ পদার্থ বিজ্ঞান, কোয়ান্টাম পদার্থ বিজ্ঞান, বিশেষ ও সাধারন  আপেক্ষিকতায় সময়ের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করবো। সবশেষে সময়ের প্রবাহের দিক বা সময়ের তীর নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা রয়েছে। চেষ্টা করবো সহজ বোধগম্য ভাষায় সবকিছু বর্ণনা করার।  আমার লেখাটি একটু দীর্ঘ (প্রায় ১৫/১৬ পর্বের) হতে পারে। চেষ্টা করবো প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি করে পর্ব লেখার। আশা করি আপনারা ধৈর্য্য নিয়ে পড়বেন। 

পর্ব ১ঃ সময়ের দর্শন

দর্শনের ইতিহাসে সময়।

একমাত্র মানুষ ছাড়া পৃথিবীর সব প্রানী শুধুমাত্র বর্তমান সময়ে বাস করে, তাদের চেতনায় অতীত কিংবা ভবিষ্যত বলে কিছু নাই। সময়ের ব্যাপারে আমাদের সচেতনতাই আমাদের অনন্যতা দিয়েছে এবং অন্য প্রানী থেকে গুরুত্বপূর্ন পার্থক্য দান করেছে। স্মরনাতীত কাল থেকে দার্শনিক, ধর্মতত্ববিদ, শিক্ষাগুরুরা সময়ের প্রকৃতি নিয়ে ভেবেছেন। সময় কি কোন পদার্থ? সময়ের অস্তিত্ব আমরা কিভাবে প্রমান করতে পারি? সময়ের কি কোন শুরু বা শেষ আছে? এটা কি সরল রৈখিক নাকি বৃত্তাকার?
সময়ের ধারাবাহিকতা (continuous) সম্পর্কে সব দার্শনিকেরা মনে করেন যে এর কোন থামা নাই, যা আছে তা শুধু একটানা একদিকে চলা, অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে। সময় যে একটি বস্তুগত (objective) ব্যাপার, বিষয়ী (subjective) নয়, এ নিয়েও দার্শনিকদের মোটামুটি ঐক্যমত্য রয়েছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের সকল ভৌত ঘটনা একটি সার্বজনীন  সময় কাঠামো মেনে চলে। পৃথিবীর আবর্তন থেকে ঘড়ির পেন্ডুলামের দোলন সবই একই সময়ের সাথে সমঞ্জস্যপূর্ন। এর পরেও অনেক শতাব্দী যাবত সময়ের প্রকৃত পরিচয় নিয়ে বিতর্ক চলছে। 
প্রাচীন ভারত ও গ্রীস দর্শনে 'সময়'  ছিল অন্যতম আলোচনার বিষয়। প্রাচীন এসব দর্শনে সময় সম্পর্কিত অন্যতম বিতর্ক ছিল এটা সরল রৈখিক নাকি চক্রাকার। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্ট এর সময় আধুনিক দর্শনের শুরুতে পুরনো একটি প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, সময় বাস্তব এবং পরম, নাকি মানব মননের বিমূর্ত একটি ধারনা যার সাহায্যে মানুষ ঘটনার ক্রম সংরক্ষন করে। সময় বাস্তব নাকি অবাস্তব এ নিয়ে অতি সম্প্রতি আধুনিক দর্শনে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর সাথে আরো কিছু দার্শনিক সমস্যা সামনে চলে এসেছে। যেমন, সময় প্রসারিত হতে পারে কিনা, বর্তমান সময় কি বিশেষ মুহূর্ত নাকি চলমান ঘটনা, অতীত কিংবা ভবিষ্যতের সত্যিই কোন অস্তিত্ব আছে কি না, বস্তু কিভাবে সময়ে অবস্থান করে, ইত্যাদি। দর্শন থেকে বিজ্ঞান আলাদা হওয়ার পর আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার সময়ের প্রকৃতি সম্পর্কে প্রতি নিয়ত নিত্য নতুন দার্শনিক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে চলেছে। 

প্রাচীন দর্শন

প্রধানত প্রাচীন ভারতীয় ও গ্রীস দার্শনিকেরা সময় সম্পর্কে মূল সত্য উদ্ঘাটনে চিন্তা ভাবনা করেছিলেন। এই সব অঞ্চলের বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী এবং গল্পগাথায়  মহাবিশ্ব সম্পর্কে ধারনা গুলো ফুটে উঠেছে। গ্রীক পুরানে 'ক্রোনোস' (khronos) শব্দটি দিয়ে সময়কে একজন লম্বা সাদা দাড়ি ওয়ালা মানুষ (father time) রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। ঋতুচক্র এবং সময়ের স্বাভাবিক প্রবাহের দেবীদের নাম Horae বা Hours। Geras ছিলেন বৃদ্ধ বয়সের দেবতা। মিশরীয় পৌরানিক কাহিনীতে Heh হলো চিরন্তন সময়,  Zurvan the Zoroastrian হচ্ছেন অসীম সময়ের দেবতা। Elli হলো নর্সদের বৃদ্ধ বয়সের দেবতা।

কালচক্র (Wheel of time)

খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে রচিত বেদ গ্রন্থে সময় কে অসংখ্য চক্রের সমাহার বা কালচক্র রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। গাড়ি চলার সময় এর চাকা যেমন কিছুক্ষন পর পর একটি ঘুর্ণন শেষ করে তেমনি প্রতি চক্রে মহাবিশ্ব একবার সৃষ্টি হয় এবং চক্রের শেষে ধংস হয়। আবার  নতুন চক্র সৃষ্টি হয়। আবার ধংস হয়। এটা চলছে অসীম সময় ধরে।  প্রতিটি চক্রের সময়কাল চার হাজার বছরের চেয়ে কিছু বেশী। এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলেছে প্রতিটি মানুষের অসংখ্য বার জন্ম মৃত্যু। মানুষের পুনর্জন্মের এই বিশ্বাস হিন্দু, বৌদ্ধ, মায়া, পেরুর এবং আরিজোনার হোপি ইন্ডিয়ানদের ধর্মেও পাওয়া যায়। মনে করা হয়  দিন- রাত্রি, চাঁদের পুর্ণিমা-অমাবস্যা, জোয়ার-ভাটা, ঋতু চক্র প্রভৃতি প্রাকৃতিক চক্রের পর্যবেক্ষন থেকেই কালচক্র ও পুর্জন্মের ধারনা এসেছে। জুরাথ্রুস্টবাদে আমাদের চতুর্পার্শ্বের জগতকে দেখা হয় ভাল ও খারাপের যুদ্ধক্ষেত্র হিসাবে এবং সময় সেই যুদ্ধের স্থিতিকাল।
প্রাচীন গ্রীস- পারমেনিডেস ও জেনোর কূটাভাস (Zeno's Paradoxes)

প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকরা মহাবিশ্ব এবং সময়কে অসীম মনে করতেন। এদের কোন শুরু বা শেষ নাই। প্রাক সক্রেটিস পঞ্চম খৃষ্ট পুর্বাব্দের সোফিস্ট দার্শনিক এন্টিফেন এর মতে সময় কোন বাস্তবতা নয়, এটা একধরনের পরিমাপ কিংবা ধারনা মাত্র। অন্যদিকে তার সমসাময়িক গ্রীক দার্শনিক হেরাক্লিটাস মনে করতেন সময়ের প্রবাহ বাস্তব। 
 
পারমেনিডেস এবং জেনো খৃষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর  দুজন দার্শনিক ছিলেন ।  ইতালীর দক্ষিন প্রান্তে টিরেনিয়ান সাগর তীরে অবস্থিত Elea শহরের অধিবাসী ছিলেন তারা। পারমেনিডেস এর মতে বাস্তবতা পরিবর্তন ও সময় নিরেপেক্ষ। সময় এবং গতি সহ আমাদের দৈনন্দিন আরো অনেক অভিজ্ঞতাকে মনে করতেন এক ধরনের মায়া। পারমেনিডেস এর মতে অতীত এবং ভবিষ্যত দুটোই অবাস্তব এবং কাল্পনিক। বাস্তব হচ্ছে বর্তমান। দার্শনিক জেনো (Zeno of Ilea) ছিলেন পারমেনিডেসের ছাত্র। তার বিখ্যাত রচনা সমূহ জেনোর কূটাভাস (Zeno's paradoxes) নামে পরিচিত। ।  পারমেনিডেস এর দর্শনকে সমর্থন করে মূলত এগুলো তৈরী হয়। এদের সব চেয়ে বিখ্যাত হলো একিলিস এবং কচ্ছপ। এটা অনেকেরই জানা। প্যারাডক্সটি এরকম,  মনে করা যাক একদিন গ্রীক বীর একিলিসকে  একটি কচ্ছপ দৌড় প্রতিযোগীতায় চ্যালেঞ্জ জানালো। একিলিস সানন্দ চিত্তে রাজী হলেন। সাধারন ভাবে চিন্তা করলে সবাই বলবে একিলিস জিতবে। কিন্তু জেনোর মতে সেটা হবার নয়। তিনি যুক্তি দিলেন এরকম। একিলিস কচ্ছপের কিছুটা পেছনে থেকে  দৌড় শুরু করলেন। মনে করা যাক একশত মিটার। একিলিস যখন কচ্ছপের দৌড় শুরুর জায়গায় পৌছুলেন তখন কচ্ছপটি দশ মিটার সামনে এগিয়ে গেছে। কচ্ছপের এই নতুন স্থানে পৌছুতে একিলিসের আরো  সামান্য কিছু সময় লাগবে যে সময়ের মধ্যে কচ্ছপটি আরো সামান্য এগিয়ে যাবে। এভাবে একিলিস যতবারই কচ্ছপকে ধরার জন্য তার জায়গায় উপস্থিত হবে ততবারই কচ্ছপ সামান্য এগিয়ে থাকবে। এভাবে একিলিস ও কচ্ছপের মধ্যেকার দুরত্ব কমে আসবে। কিন্তু কখনো শুন্য হবে না কারন দুজনের মধ্যে অসীম সংখ্যক বিন্দু রয়েছে। সুতরাং অসীম বিন্দুকে অতিক্রম করতে একিলিসের অসীম সময়ের প্রয়োজন হবে। তাই একিলিসের পক্ষে কচ্ছপকে ধরা অসম্ভব এবং কচ্ছপই প্রতিযোগীতায় জিতবে। জেনো বলেন, "অসীম সংখ্যক জিনিসকে সসীম সময়ে অতিক্রম করা কখনোই সম্ভব নয়"। 

জেনোর এরকম আরো কিছু প্যারাডক্স রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো জেনোর প্যারাডক্সের সমাধান নিয়ে প্রাচীন যুগের দার্শনিক এরিস্টল, থমাস একুইনাস থেকে বর্তমান সময়ের হারম্যান ভাইল, নিক হাগেট, পিটার লিন্ডস, বার্ট্রান্ড রাসেল প্রমুখ  দার্শনিক, পদার্থ বিজ্ঞানী এবং গনিতবিদেরা চিন্তা ভাবনা করেছেন। কিন্তু কেউ নির্দিষ্ট সমাধান দিতে পারেন নাই। আবার অনেকের মতে জেনোর প্যারাডক্স দার্শনিক যুক্তির চমৎকারিত্ব, গানিতিক সমস্যা নয়।

খৃষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকের গ্রীক দার্শনিক প্লেটো বিশ্বাস করতেন ঈশ্বর স্বর্গ সৃষ্টির মুহূর্তেই সময় সৃষ্টি করেছেন। তবে কিছুটা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনি সময়কে স্বর্গীয় বা মহাকাশের বস্তু সমূহের গতিবিধির সাথে সম্পর্কীত করেছেন। প্লেটো মহাবর্ষ (great year যে সময়ে পৃথিবীর মেরুঅক্ষ একটি ঘুর্ণন সম্পন্ন করে। ২৫,৮০০ বছরে এক মহাবর্ষ সম্পন্ন হয়।) সম্পর্কেও জ্ঞাত ছিলেন। পিথাগোরিয়ান এবং স্টয়িক দার্শনিকেরা বিশেষত ক্রিসিপাস মহাবর্ষকে সময়ের ধারক মনে করতেন। প্রতি মহাবর্ষ শুরুর সাথে সময়ের যাত্রা শুরু হয় এবং শেষের সাথে সময়ও শেষ হয়ে যায়। এভাবে অনন্তকাল ধরে অসংখ্য চক্রের পুনরাবৃত্তি চলতে থাকে।

প্রাচীন দার্শনিকদের মধ্যে সময় সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বিস্তৃত ধারনা দিয়েছেন প্লেটোর ছাত্র এরিস্টটল। তিনি সময়কে গতি বা movement এর ধর্ম মনে করতেন। অর্থাৎ সময়ের অস্তিত্ব জিনিসের গতির উপর নির্ভরশীল। তার মতে সময় হচ্ছে অবস্থানের ধারাবাহিক পরিবর্তনের পরিমাপ। তার কথায়, “neither does time exist without change”। তিনি এটাও মনে করতেন যে, সময় যেহেতু পরিবর্তনের পরিমাপ সেহেতু পরিবর্তন ছাড়া সময়ের অস্তিত্ব থাকে না এবং এই পরিবর্তন গননা করার জন্য একটি সচেতন সত্ত্বার উপস্থিতি আবশ্যক। তিনি সময়কে পরিবর্তনের পরিমাপ মনে করলেও পরিবর্তন ও সময়কে এক মনে করতেন না। কারন পরিবর্তন দ্রুত কিংবা ধীর হতে পারে। তিনি মনে করতেন মহাবিশ্ব সসীম কিন্তু সময় অসীম। মহাবিশ্বের অস্তিত্ব অসীম সময় ধরে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে চিরদিন থাকবে। তিনি আরো মনে করতেন সময় একটি রেখার মত নিরবিচ্ছিন্ন এক রাশি। রেখার মতই সময়কে অসীম খন্ডে বিভক্ত করা সম্ভব। এর ক্ষুদ্রতম কোন একক নাই। 

এরিস্টটল সময় সম্পর্কিত একটি প্রচলিত প্যারাডক্স প্রথম উত্থাপন করেছিলেন। কয়েক শতক পর সেন্ট অগাস্টিন পুনরায় সেটা নিয়ে আলোচনায় এনেছিলেন। প্যারাডক্সটি হলো, যদি অতীত এক অস্তিত্বহীন স্মৃতি এবং ভবিষ্যত অনাগত কল্পনা হয় আর সময়ের এই দুই অংশ বর্তমান নামক মরীচিকা দিয়ে বিভক্ত হয় তাহলে সময়ের অস্তিত্ব কিভাবে সম্ভব?

পরবর্তী পর্বঃ ২
সময়ের দর্শনঃ মধ্য ও আধুনিক যুগ।

Tuesday, November 17, 2020

Ms Excel কি?

সুবিশাল শীটের যে অংশে কাজ করা যায় তাকে Ms Excel বলে । Ms Excel এ অংসখ্য সারি ও কলাম থাকে । Ms Excel এ সুবিশাল স্প্রেডশীটের সুবিশাল পৃষ্ঠা কলাম ও রো ভিওিক সেলে বিভক্ত থাকায় সহজেই বিভিন্ন তথ্য সন্নিবেশিত করে বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষন করা সহ অতি সহজেই যোগ , বিয়োগ , গুন , ভাগ , শতকরা হার ইত্যাদি গাণিতিক করা যায় ।
Ms Excel এর ব্যবহার :
1. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাএ-ছাএীদের ফলাফল ।
2. বেতন-ভাতা বিল তৈরি করা ।
3. দৈনন্দিন হিসাব বিশ্লেষণ ও সংরক্ষন করা ।
4. বাজেট প্রণয়ন করা ।
5. বার্ষিক প্রতিবেদন করা ।
6. আয়কর ও অন্যান্য হিসাব করা ।
7. সব ধরনের পরিসংখ্যানগত হিসাব বিশ্লেষণ করা ।
8. ডাটা সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার যাবতীয় কাজ ইত্যাদি ।

Ms Excel এর ব্যবহার করি :
প্রথমে পরিচিতি এর পরই যোগের সূত্র:
দুটি সংখ্যা পাশাপাশি থাকলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে যোগ করা হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস + ২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXP : =SUM(A1+B1)
দুই বা ততোধিক সংখ্যা পাশাপাশি থাকলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে যোগ করা হয়:-
গঠন: =SUM(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXP : =SUM(A1:B1)

উদাহরন: দরুন আমরা 10 এবং 20 যোগ করব C1 সেলে , এজন্য আমাদেরকে সর্বপ্রথম C1 সেলে =(সমান) চিহৃ দিতে হবে । তারপর 10 এর সেল এড্রেস দিতে হবে, খেয়াল করে দেখুন 10 A কলামে এবং 1 নং রো তে রয়েছে এজন্য 10 এর সেল এড্রেস হবে A1 ।
তারপর (+) সাইন দিয়ে 20 এর সেল এড্রেস দিয়ে এন্টার প্রেস করলে আমরা আমাদের ফলাফল পেয়ে যাব। অর্থাৎ সূত্র হবে =A1+B1 PRESS ENTER.
বিয়োগের সূত্র:
দুটি সংখ্যার মধ্যে বিয়োগ করতে হলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে বিয়োগ করতে হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস – ২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : =SUM(A1-B2)
গুনের সূত্র:
দুটি সংখ্যার মধ্যে গুন করতে হলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে গুন করতে হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস * ২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : =SUM(A1*B2)
ভাগের সূত্র:
দুটি সংখ্যার মধ্যে ভাগ করতে হলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে ভাগ করতে হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস /২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : =SUM(A1/B2)

পার্সেন্টিজ(%) বের করার সূত্র:
গঠন: =(যে সংখ্যার পার্সেন্টিজ বের করবেন ঐ সংখ্যা * যত পার্সেন্ট বের করবেন% ) তারপর এন্টার দিতে হবে।
EXM : =SUM(A1*10%)

উদাহরন: আমরা 5,000 এর 10% পাসেন্ট বের করব। তাহলে সূত্র হবে =5,০০০ এর সেল এড্রেস*10%

গড় বের করার সূত্র:
গঠন: =AVERAGE(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
উদাহরন: দরুন আমরা ১০, ২০, ৩০,৪০ ও ৫০ এই পাঁচটি সংখ্যার গড় বের করব, তাহলে সূত্র হবে:
=AVERAGE(১০ এর সেল এড্রেস : ৫০ এর সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = AVERAGE (A1:E1)

সর্বনিম্ন সংখ্যা বের করা সূত্র:
গঠন: =MIN(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = MIN(A1:C1)
সর্বোচ্চ সংখ্যা বের করা সূত্র:
গঠন: =MAX(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = MAX(A1:C1)
সংখ্যা গননা করার সূত্র:
গঠন: =COUNT(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = COUNT (A1:D1)

RESULT SHEET GRADE SYSTEM
—————————————————————————
এবার চেষ্টা করি আমরা কিভাবে গ্রেডিং সিস্টেম এ একটি রেজাল্ট শীট তৈরী করব। চলেন এবার গ্রেডিং সিস্টেমের নিয়ম গুলো দেখে নেই:
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৮০ নম্বেরর উপরে হলে হবে A+ Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৭০-৭৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে A Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬০-৬৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে A- Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৫০-৫৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে B Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪০-৪৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে C Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৩-৩৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে D Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৩ নম্বেরর নিচে হলে অকৃতকার্য বা Fail.
এবার নিচে মত করে একটি ডাটাবেজ তৈরী করুন:

প্রথমে A1 থেকে M1 পর্যন্ত সেলকে সিলেক্ট করে Merge Cell করে ফেলুন, তারপর টাইপ করুন Result Sheet Grade System ।
লক্ষ্য করে দেখুন লেখা গুলো ভার্টিক্যালি রয়েছে। এক্সেলে আমরা যেকোন লেখাকে বিভিন্ন angle এ লিখতে পারি । যে লেখাকে আপনি angle করবেন ঐ লেখাকে সিলেক্ট করে Home Menu এর Orientation থেকে লেখাকে Angle বা Vertical করুন।

Average: Average বের করার জন্য সেল পয়েন্টারটিকে L3 সেল এ রাখুন। তারপর নিম্নের সুত্র টাইপ করুন:
=AVERAGE(C3:K3) তারপর এন্টার দেন।

Grade: এবার আমর আমাদের আসল কাজটি করব গ্রেড বের করব। গ্রেড বের করার জন্য সেল পয়েন্টারটিকে M3 সেল এ রাখুন । তারপর নিম্নের সূত্র টাইপ করুন:
=IF(OR(C3<33,D3<33,E3<33,F3<33,G3<33,H3<33,I3<33,J3<33,K3<33), “Fail”,IF(L3>=80,”A+”,IF(L3>=70,”A”,IF(L3>=60,”A-“,IF(L3>=50,”B”,IF(L3>=40,”C”,IF(L3>=33,”D”,IF(L3<33,”F”))))))
তারপর এন্টার দিন। সূত্রটি কিছুটা লম্বা তাই দুই লাইনে দিলাম । লক্ষ্য রাখবেন সূত্রের মাঝখানে কোন স্পেস হবে না । আর এটা হচ্ছে ( ” ) ডাবল কোটেশন, কখন ভুলে সিঙ্গেল কোটেশন দিবনে না তাহলে সুত্র ভূল দেখাবে । মূলত ডাবল কোটেশনের ভিতর যা লেখা হয়, তাই ফলাফলে প্রদর্শিত হয়।
দেখেন তো এরকম হয়েছে কিনা–

তাড়াহুড়া করবেন না।

Salary Sheet
আজকে আমরা কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের Salary Sheet তৈরী করতে হয় তা শিখব।
শুধুমাত্র বেসিক সেলারী দেয়া থাকবে, নিম্নের শর্ত আনুযায়ী আমরা মোট সেলারী বের করব । তাহলে চলুন শুরু করা যাক:
• 1. House Rent (HR), Basic এর 50%
• 2. Medical Allowance (MA) , Basic এর 10%
• 3. Provident Fund (PF), Basic এর 10%
• 4. Income Tax- (IT), Basic 2000 টাকার নীচে হলে 0%
• Income Tax- Basic 2000 থেকে 5000 পর্যন্ত হলে 5%
• Income Tax- Basic 5000 টাকার উপরে হলে 10%
• 5. Provident Fund & Income Tax Net Salary এর সঙ্গে প্রদেয় নয়।
নিচের মত করে একটি ডাটাবেজ তৈরী করুন:

House Rent: মাউস পয়েন্টারটি D2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2*50% তারপর এন্টার দিন।
এখানে C2 হচ্ছে বেসিক এর সেল এড্রেস। আমরা মাত্র একজনের হাউস রেন্ট বের করলাম । এখন বাকি গুলা বের করতে মাউস দিয়ে D2 সেলে ক্লিক করে মাউস পয়েন্টার D2 সেলের ডানের নিচের কর্নারে নিলে দেখবেনে একটি প্লাস চিহৃ দেখা যাচ্ছে তখন মাউস পয়েন্টারকে ড্রাগ (চেপে নিচের দিকে টান দিন) করে নিচের দিকে টেনে ছেড়ে দিন ।
কি!!! বাকি গুলোর ফলাফল চলে আসছে না!!!!

Medical Allowance: মাউস পয়েন্টারটি E2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2*10% তারপর এন্টার দিন। বাকি গুলো কিভাবে রেব করবেন তা আশা করি আর বলে দিতে হবে না!!!
Provident Fund: মাউস পয়েন্টারটি F2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2*10% তারপর এন্টার দিন।
Tax: মাউস পয়েন্টারটি G2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=IF(C2<2000,0,IF(AND(C2>=2000,C2<=5000),C2*5%,IF(C2>5000,C2*10%))) তারপর এন্টার দিন।
(সূত্রটি উপরের Tax এর শর্ত অনুযায়ী তৈরী করা হয়েছে)
তারপর এন্টার দিন।
Total: মাউস পয়েন্টারটি H2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2+D2+E2-(F2+G2) তারপর এন্টার দিন।

কি পেরেছেন তো!!! হয় নাই ভাইয়া কষ্ট করে আরেক বার ট্রাই করে দেখেন।।। সূত্রগুলো সাবধানে লেখতে হবে, তাড়াহুড়া করবেন না।

Electric Bill
আজকে আমরা এক্সেলের মাধ্যমে ইলেকট্রিক বিল তৈরী করা শিখব। কি সবাই কি প্রস্তুত ! তাহলে চলুন শুরু করা যাক। বিদুৎ বিতরন কতৃপক্ষ বিদুৎ বিল ধার্য করার জন্য সাধারনত তাদের নির্ধারিত রীতি প্রয়োগ করেন। সাধারনত প্রবর্তিত নীতি হল বিদুৎ খরচ যদিঃ-
• ০০১ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত হলে প্রতি ইউনিট = ২.৫০ টাকা.
• ২০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত হলে প্রতি ইউনিট = ৩.৫০ টাকা.
• ৪০১ থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত হলে প্রতি ইউনিট = ৪.৫০ টাকা.
• ৫০০ ইউনিট এর উপরে হলে প্রতি ইউনিট = ৫.৫০ টাকা.
বি:দ্র: বর্তমানে ইউনিট প্রতি টাকার পরিমাণ সম্ভবত বাড়ানো হয়েছে, কি পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এটা কোন মুখ্য ব্যাপার না, আপনি যদি নিয়ম জানেন তাহলে যেকোন নীতিতে আপনি বিদুৎ বিল বের করতে পারবেন। তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ সূত্রের কন্ডিশন গুলো একটু খেয়াল করে দেখবেন। শুধু শুধু মুখস্ত করে লাভ নেই! কন্ডিশন বুঝলে সুত্র আপনি নিজেই তৈরী করতে পারবেন।
এবার নিচের মত করে একটি ডাটাবেজ তৈরী করেন:

Taka: এখন আমরা উপরের ইউনিটের নীতি অনুযায়ী সবার টাকা বের করব। এখন D4 সেল মাউস পয়েন্টার নিয়ে নিম্নের সূত্র টাইপ করুন:
=IF(C4<=200,C4*2.5,IF(AND(C4>200,C4<=400),C4*3.5,IF(AND(C4>400,C4<=500),C4*4.5,C4*5.5))) তারপর এন্টার দিন। সূত্রগুলো একটু খেয়াল করে লেখবেন। মুখস্ত বা দেখে দেখে না লেখে একটু বুঝে লেখার চেষ্টা করবেন। এবার দেখেন তো এরকম হয়েছে কিনা!!! Wrap Text: খেয়াল করে দেখুন Service Charge দুই লাইনে লেখা আছে । অনেক সময় Text একটু লম্বা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আমরা যদি কলাম এর দৈঘ্য বৃদ্ধি করি তাহলে দেখা যায় যে, তা প্রিন্ট এরিয়া এর বাহিরে চলে যায়। এজন্য লম্বা লেখাকে দুই লাইনে করার জন্য Wrap Text ব্যবহার করা হয়। চলুন এবার আমরা Service Charge লেখা দুই লাইনেকরি:- প্রথমে Service Charge লেখুন,তারপর লেখাটি যে সেলে আছে তা সিলেক্ট থাকা অবাস্থায় Wrap Text এ ক্লিক করুন। Service Charge: Service Charge সকলের জন্য সমান। মনে করি Service Charge হচ্ছে ১০ টাকা । তাহলে এবার E4 সেলে ১০ লেখে বাকিগুলো ডাগ্র করে ছেড়ে দিন। VAT: মনে করি Vat হচ্ছে টাকার ৫% ।তাহলে ভ্যাট বের করার জন্য F4 সেলে মাউস পয়েন্টার নিয়ে নিম্নের সূত্র টাইপ করুন: =D4*5% তারপর এন্টার দিন। Amount To Be Paid: এবার আমরা Amount To Be Paid বের করব, অর্থাৎ সর্বমোট কত টাকা বিল দিতে হবে। Amount To Be Paid বের করার জন্য G4 সেলে মাউস পয়েন্টার নিয়ে নিম্নের সূত্র টাইপ করুন:- =SUM(D4:F4) অথবা =D4+E4+F4 তারপর এন্টার দিন। এটা ইচ্ছা করলে আপনি Auto Sum দিয়ে ও বের করতে পারেন।(Auto Sum সম্পর্কে পূর্বের টিউন এ আলোচনা করা হয়েছে) এবার দেখেন তো এরকম হয়েছে কিনা!!!! কি হয়েছে গুড বেরি গুড। হয় নাই আরেক বার ট্রাই করেন হয়ে যাবে ইনশা্আল্লাহ। আজ এ পর্যন্তই । সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ক্যাশ মেমো তৈরী করা আমি আপনাদের কে বিভিন্ন প্রজেক্ট এর মাধ্যমে এক্সেল এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব । কারন আমার মতে ধারাবাহিক ভাবে বর্ননা না করে প্রজেক্ট ভিত্তিক ভাবে শিখলে নতুনরা সহজে বুঝতে পারবে।।। প্রথমে Microsoft Excel Open করেন: Start> All Programs> Microsoft Office >Microsoft Office Excel 2007.
চলুন তাহলে আমরা কাজ করা শুরু করি:
১ম ধাপ:
খেয়াল করে দেখুন Cash Memo লেখাটি টিক মাঝখানে আছে এবং এটাতে মাত্র একটি সেল আছে। এ কাজটি করা হয়েছে Merge Cell এর মাধ্যমে । একাধিক সেলকে একটি মাত্র সেল এ রুপান্তর করা জন্য Merge Cell ব্যবহৃত হয়। যে কয়েকটি সেল কে Merge করবেন সে কয়েকটি সেলকে সিলেক্ট করে Merge Cell এ ক্লিক করলে সেল গুলোMerge হয়ে যাবে অর্থাৎ একটি মাত্র সেল এ রুপান্তরিত হবে।
২য় ধাপ:
খেয়াল করে দেখুন Sl. No এর নিচে 1,2,3 এভাবে সিরিয়াল দেয়া আছে। ধরুন আপনার প্রয়োজন ক্রমিক 1 থেকে 100 অথবা মাসের নাম জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর বা দিনের নাম রবি থেকে শনি পর্যন্ত । এগুলো যদি টাইপ করতে থাকেন তাহলে তো এখানেই আপনার ১২ টা বেজে যাবে!!!!!!!
না আমি থাকতে আপনাদের বারটা বাজতে দিব না !!!! এ কাজ টি পানির মত সহজ যদি আপনি Data Fill নিয়ম জানেন।।
তাহলে চলুন ট্রাই করে দেখি: প্রথমে 1 এবং 2 লিখুন তারপর 1 এবং 2 কে সিলেক্ট করুন । ২ যে সেলে আছে ঐ সেলের কর্নারে নিলে দেখবেন একটি কালো প্লাস (+) চিহৃ দেখা যাচ্ছে তখন ঐ কালো প্লাস চিহৃকে চেপে ধরে (ড্রাগ করে) যত সংখ্যা প্রয়োজন তত সংখ্যাতে নিয়ে ছেড়ে দেন। ব্যস কাজ খতম!!! আর হ্যা অবশ্যই 1 এবং 2 দুটোই যেন সিলেক্ট অবস্থায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এভাবে মাস, ক্রমিক নাম্বার , সাপ্তাহ Data Fill করা যাবে খুব সহজে।।।।।
৩য় ধাপ:
এখন প্রথম ছবিটি দেখে দেখে বাকি ডাটা গুলো হবুহু এন্টি করেন। এখন আমরা Pen Drive এর Amount বের করব। তাহলের Amount বের করার জন্য প্রথমে E3 সেলে এ পয়েন্টার নিয়ে নিম্নে সূত্র টাইট করেন:
=C3*D3 তারপর এন্টার দেন, দেখেন ফলাফল চলে এসেছে। সেল এড্রেস মুখস্থ লেখা লাগবে না প্রথমে = (সমান) চিহৃ দিয়ে আপনি যে সংখ্যাটির সেল এড্রেস লিখবেন ঐ সংখ্যাটিতে ক্লিক করলেই সেল এড্রেস চলে আসবে
প্রথমটার ফলাফল আমরা পেলাম তাহলে বাকি রইল আরো দুটো না এগুলোর সূত্র আর আপনাকে কষ্ট করে লেখতে হবে না । প্রথমটার ফলাফল সিলেক্ট করে ড্রাগ করে নিচের দুটোতে নিয়ে যান ব্যস ফলাফল চলে আসবে।

৪র্থ ধাপ:
হ্যা এখন তাহলে Total Amount টা বের করে ফেলেন। সূত্র টা হবে =sum(E3:E5) তারপর এন্টর চাপেন।
৫ম ধাপ:
হ্যা এখন আমরা Due বের করব । সূত্র টা হবে =E6-E7 তারপর এন্টর চাপেন।
কাজ শেষ এখন দেখেন তো এটা এরকম হয়েছে কিনা!!!!!!!!!!

কি এরকম হয়েছে!!! তাহলে আপনি ১০০ তে ১০০ পেয়েছেন । হয়নাই আরেক বার ট্রাই করে দেখেন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

মাইক্রোসফট এক্সেলে জন্ম তারিখ নির্নয় করা যায়। নিম্নে জন্ম তারিখ নির্নয় করার পদ্ধতি আলোচনা করা হলোঃ
১। প্রথমে Microsoft Excel এ আজকের তারিখটি লিখতে হবে
২। তারিখটি হাতে লিখে দিলে হবে না। তারিখটি লিখতে হবে Microsoft Excel এর ফর্মূলার মাধ্যমে।
৩। ফর্মূলাটি হচ্ছে =today() লিখে এন্টার দিলে আজকের তারিখটি বের হয়ে আসবে।
৪। তারপর আপনার জন্ম তারিখটি লিখতে হবে।
৫। তবে এটা লেখার নিয়ম হচ্ছে প্রথমে মাস, তারপর দিন, তারপর বছর।
৬। এবার যে ঘরে জন্ম তারিখ বের করতে চাচ্ছেন তার উপরের ঘরগুলোতে যা লিখবেন।
৭। প্রথম ঘরে লিখবেন year, দ্বিতীয় ঘর অথ্যাৎ তার পাশের ঘরে লিখবেন month, এবং শেষ ঘর অথ্যাৎ তৃতীয় ঘরে লিখবেন day।
৮। এবার year এর ঘরের ঠিক নিচের ঘরটিতে কার্সর রাখুন। তারপর লিখুন =DATEDIF(I9,$D$5,”y”)। এখানে প্রথমে =, তারপর datedif, তারপর ফাস্ট ব্রাকেট(, তারপর জন্ম তারিখের ঘরটি সিলেকশন করতে হবে, তারপর একটি কমা দিতে হবে, তারপর আজকের যে তারিখ বের করা হয়েছে উক্ত ঘরে ক্লিক, তারপর f4 অর্থ্যাৎ ফাংশন ফোর, তারপর “” এর ভিতরে লিখতে হবে y।
৯। লিখে এন্টার দিন তারপর দেখুন আপনার উক্ত ঘরে বছর বের হয়ে আসবে।
১০। তারপর month এর ঘরে কার্সর রেখে উপরোক্ত জিনিসটুকু লিখুন কিন্তু এক জায়গাতে চেঞ্জ হবে সেটা হচ্ছে y এর স্থলে ym হবে। এবার লিখে এন্টার দিন দেখুন month এর ঘরে মাস বের হয়ে আসবে।
১১। এবার day এর ঘরে একই জিনিস লিখুন শেষের দিকে লিখুন md । তাহলে দিন বের হয়ে আসবে।
১২। এভাবে আপনি আপনার জন্ম তারিখ নির্নয় করতে পারেন।

Saturday, November 14, 2020

Ms Excel Tutorial in Bangla

Ms Excel

Ms Excel কি : সুবিশাল শীটের যে অংশে কাজ করা যায় তাকে Ms Excel বলে । Ms Excel এ অংসখ্য সারি ও কলাম থাকে । Ms Excel এ সুবিশাল স্প্রেডশীটের সুবিশাল পৃষ্ঠা কলাম ও রো ভিওিক সেলে বিভক্ত থাকায় সহজেই বিভিন্ন তথ্য সন্নিবেশিত করে বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষন করা সহ অতি সহজেই যোগ , বিয়োগ , গুন , ভাগ , শতকরা হার ইত্যাদি গাণিতিক করা যায় ।
Ms Excel এর ব্যবহার :
1. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাএ-ছাএীদের ফলাফল ।
2. বেতন-ভাতা বিল তৈরি করা ।
3. দৈনন্দিন হিসাব বিশ্লেষণ ও সংরক্ষন করা ।
4. বাজেট প্রণয়ন করা ।
5. বার্ষিক প্রতিবেদন করা ।
6. আয়কর ও অন্যান্য হিসাব করা ।
7. সব ধরনের পরিসংখ্যানগত হিসাব বিশ্লেষণ করা ।
8. ডাটা সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার যাবতীয় কাজ ইত্যাদি ।

Ms Excel এর ব্যবহার করি :
প্রথমে পরিচিতি এর পরই যোগের সূত্র:
দুটি সংখ্যা পাশাপাশি থাকলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে যোগ করা হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস + ২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXP : =SUM(A1+B1)
দুই বা ততোধিক সংখ্যা পাশাপাশি থাকলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে যোগ করা হয়:-
গঠন: =SUM(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXP : =SUM(A1:B1)

উদাহরন: দরুন আমরা 10 এবং 20 যোগ করব C1 সেলে , এজন্য আমাদেরকে সর্বপ্রথম C1 সেলে =(সমান) চিহৃ দিতে হবে । তারপর 10 এর সেল এড্রেস দিতে হবে, খেয়াল করে দেখুন 10 A কলামে এবং 1 নং রো তে রয়েছে এজন্য 10 এর সেল এড্রেস হবে A1 ।
তারপর (+) সাইন দিয়ে 20 এর সেল এড্রেস দিয়ে এন্টার প্রেস করলে আমরা আমাদের ফলাফল পেয়ে যাব। অর্থাৎ সূত্র হবে =A1+B1 PRESS ENTER.
বিয়োগের সূত্র:
দুটি সংখ্যার মধ্যে বিয়োগ করতে হলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে বিয়োগ করতে হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস – ২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : =SUM(A1-B2)
গুনের সূত্র:
দুটি সংখ্যার মধ্যে গুন করতে হলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে গুন করতে হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস * ২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : =SUM(A1*B2)
ভাগের সূত্র:
দুটি সংখ্যার মধ্যে ভাগ করতে হলে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে ভাগ করতে হয়:-
গঠন: =(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস /২য় সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : =SUM(A1/B2)

পার্সেন্টিজ(%) বের করার সূত্র:
গঠন: =(যে সংখ্যার পার্সেন্টিজ বের করবেন ঐ সংখ্যা * যত পার্সেন্ট বের করবেন% ) তারপর এন্টার দিতে হবে।
EXM : =SUM(A1*10%)

উদাহরন: আমরা 5,000 এর 10% পাসেন্ট বের করব। তাহলে সূত্র হবে =5,০০০ এর সেল এড্রেস*10%

গড় বের করার সূত্র:
গঠন: =AVERAGE(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
উদাহরন: দরুন আমরা ১০, ২০, ৩০,৪০ ও ৫০ এই পাঁচটি সংখ্যার গড় বের করব, তাহলে সূত্র হবে:
=AVERAGE(১০ এর সেল এড্রেস : ৫০ এর সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = AVERAGE (A1:E1)

সর্বনিম্ন সংখ্যা বের করা সূত্র:
গঠন: =MIN(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = MIN(A1:C1)
সর্বোচ্চ সংখ্যা বের করা সূত্র:
গঠন: =MAX(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = MAX(A1:C1)
সংখ্যা গননা করার সূত্র:
গঠন: =COUNT(১ম সংখ্যার সেল এড্রেস : শেষ সংখ্যার সেল এড্রেস) তারপর এন্টার কী প্রেস করতে হবে।
EXM : = COUNT (A1:D1)

RESULT SHEET GRADE SYSTEM
—————————————————————————
এবার চেষ্টা করি আমরা কিভাবে গ্রেডিং সিস্টেম এ একটি রেজাল্ট শীট তৈরী করব। চলেন এবার গ্রেডিং সিস্টেমের নিয়ম গুলো দেখে নেই:
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৮০ নম্বেরর উপরে হলে হবে A+ Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৭০-৭৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে A Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬০-৬৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে A- Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৫০-৫৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে B Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪০-৪৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে C Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৩-৩৯ নম্বেরর মধ্যে হলে হবে D Grade
• মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৩ নম্বেরর নিচে হলে অকৃতকার্য বা Fail.
এবার নিচে মত করে একটি ডাটাবেজ তৈরী করুন:

প্রথমে A1 থেকে M1 পর্যন্ত সেলকে সিলেক্ট করে Merge Cell করে ফেলুন, তারপর টাইপ করুন Result Sheet Grade System ।
লক্ষ্য করে দেখুন লেখা গুলো ভার্টিক্যালি রয়েছে। এক্সেলে আমরা যেকোন লেখাকে বিভিন্ন angle এ লিখতে পারি । যে লেখাকে আপনি angle করবেন ঐ লেখাকে সিলেক্ট করে Home Menu এর Orientation থেকে লেখাকে Angle বা Vertical করুন।

Average: Average বের করার জন্য সেল পয়েন্টারটিকে L3 সেল এ রাখুন। তারপর নিম্নের সুত্র টাইপ করুন:
=AVERAGE(C3:K3) তারপর এন্টার দেন।

Grade: এবার আমরা আমাদের আসল কাজটি করব গ্রেড বের করব। গ্রেড বের করার জন্য সেল পয়েন্টারটিকে M3 সেল এ রাখুন । তারপর নিম্নের সূত্র টাইপ করুন:
=IF(OR(C3<33,D3<33,E3<33,F3<33,G3<33,H3<33,I3<33,J3<33,K3<33), “Fail”,IF(L3>=80,”A+”,IF(L3>=70,”A”,IF(L3>=60,”A-“,IF(L3>=50,”B”,IF(L3>=40,”C”,IF(L3>=33,”D”,IF(L3<33,”F”))))))
তারপর এন্টার দিন। সূত্রটি কিছুটা লম্বা তাই দুই লাইনে দিলাম । লক্ষ্য রাখবেন সূত্রের মাঝখানে কোন স্পেস হবে না । আর এটা হচ্ছে ( ” ) ডাবল কোটেশন, কখন ভুলে সিঙ্গেল কোটেশন দিবনে না তাহলে সুত্র ভূল দেখাবে । মূলত ডাবল কোটেশনের ভিতর যা লেখা হয়, তাই ফলাফলে প্রদর্শিত হয়।
দেখেন তো এরকম হয়েছে কিনা–

তাড়াহুড়া করবেন না।

Salary Sheet
আজকে আমরা কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের Salary Sheet তৈরী করতে হয় তা শিখব।
শুধুমাত্র বেসিক সেলারী দেয়া থাকবে, নিম্নের শর্ত আনুযায়ী আমরা মোট সেলারী বের করব । তাহলে চলুন শুরু করা যাক:
• 1. House Rent (HR), Basic এর 50%
• 2. Medical Allowance (MA) , Basic এর 10%
• 3. Provident Fund (PF), Basic এর 10%
• 4. Income Tax- (IT), Basic 2000 টাকার নীচে হলে 0%
• Income Tax- Basic 2000 থেকে 5000 পর্যন্ত হলে 5%
• Income Tax- Basic 5000 টাকার উপরে হলে 10%
• 5. Provident Fund & Income Tax Net Salary এর সঙ্গে প্রদেয় নয়।
নিচের মত করে একটি ডাটাবেজ তৈরী করুন:

House Rent: মাউস পয়েন্টারটি D2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2*50% তারপর এন্টার দিন।
এখানে C2 হচ্ছে বেসিক এর সেল এড্রেস। আমরা মাত্র একজনের হাউস রেন্ট বের করলাম । এখন বাকি গুলা বের করতে মাউস দিয়ে D2 সেলে ক্লিক করে মাউস পয়েন্টার D2 সেলের ডানের নিচের কর্নারে নিলে দেখবেনে একটি প্লাস চিহৃ দেখা যাচ্ছে তখন মাউস পয়েন্টারকে ড্রাগ (চেপে নিচের দিকে টান দিন) করে নিচের দিকে টেনে ছেড়ে দিন ।
কি!!! বাকি গুলোর ফলাফল চলে আসছে না!!!!

Medical Allowance: মাউস পয়েন্টারটি E2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2*10% তারপর এন্টার দিন। বাকি গুলো কিভাবে রেব করবেন তা আশা করি আর বলে দিতে হবে না!!!
Provident Fund: মাউস পয়েন্টারটি F2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2*10% তারপর এন্টার দিন।
Tax: মাউস পয়েন্টারটি G2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=IF(C2<2000,0,IF(AND(C2>=2000,C2<=5000),C2*5%,IF(C2>5000,C2*10%))) তারপর এন্টার দিন।
(সূত্রটি উপরের Tax এর শর্ত অনুযায়ী তৈরী করা হয়েছে)
তারপর এন্টার দিন।
Total: মাউস পয়েন্টারটি H2 সেলে এনে নিম্নের সূত্রটি লিখুন:
=C2+D2+E2-(F2+G2) তারপর এন্টার দিন।

কি পেরেছেন তো!!! হয় নাই ভাইয়া কষ্ট করে আরেক বার ট্রাই করে দেখেন।।। সূত্রগুলো সাবধানে লেখতে হবে, তাড়াহুড়া করবেন না।

Electric Bill
আজকে আমরা এক্সেলের মাধ্যমে ইলেকট্রিক বিল তৈরী করা শিখব। কি সবাই কি প্রস্তুত ! তাহলে চলুন শুরু করা যাক। বিদুৎ বিতরন কতৃপক্ষ বিদুৎ বিল ধার্য করার জন্য সাধারনত তাদের নির্ধারিত রীতি প্রয়োগ করেন। সাধারনত প্রবর্তিত নীতি হল বিদুৎ খরচ যদিঃ-
• ০০১ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত হলে প্রতি ইউনিট = ২.৫০ টাকা.
• ২০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত হলে প্রতি ইউনিট = ৩.৫০ টাকা.
• ৪০১ থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত হলে প্রতি ইউনিট = ৪.৫০ টাকা.
• ৫০০ ইউনিট এর উপরে হলে প্রতি ইউনিট = ৫.৫০ টাকা.
বি:দ্র: বর্তমানে ইউনিট প্রতি টাকার পরিমাণ সম্ভবত বাড়ানো হয়েছে, কি পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এটা কোন মুখ্য ব্যাপার না, আপনি যদি নিয়ম জানেন তাহলে যেকোন নীতিতে আপনি বিদুৎ বিল বের করতে পারবেন। তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ সূত্রের কন্ডিশন গুলো একটু খেয়াল করে দেখবেন। শুধু শুধু মুখস্ত করে লাভ নেই! কন্ডিশন বুঝলে সুত্র আপনি নিজেই তৈরী করতে পারবেন।
এবার নিচের মত করে একটি ডাটাবেজ তৈরী করেন:

Taka: এখন আমরা উপরের ইউনিটের নীতি অনুযায়ী সবার টাকা বের করব। এখন D4 সেল মাউস পয়েন্টার নিয়ে নিম্নের সূত্র টাইপ করুন:
=IF(C4<=200,C4*2.5,IF(AND(C4>200,C4<=400),C4*3.5,IF(AND(C4>400,C4<=500),C4*4.5,C4*5.5))) তারপর এন্টার দিন। সূত্রগুলো একটু খেয়াল করে লেখবেন। মুখস্ত বা দেখে দেখে না লেখে একটু বুঝে লেখার চেষ্টা করবেন। এবার দেখেন তো এরকম হয়েছে কিনা!!! Wrap Text: খেয়াল করে দেখুন Service Charge দুই লাইনে লেখা আছে । অনেক সময় Text একটু লম্বা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আমরা যদি কলাম এর দৈঘ্য বৃদ্ধি করি তাহলে দেখা যায় যে, তা প্রিন্ট এরিয়া এর বাহিরে চলে যায়। এজন্য লম্বা লেখাকে দুই লাইনে করার জন্য Wrap Text ব্যবহার করা হয়। চলুন এবার আমরা Service Charge লেখা দুই লাইনেকরি:- প্রথমে Service Charge লেখুন,তারপর লেখাটি যে সেলে আছে তা সিলেক্ট থাকা অবাস্থায় Wrap Text এ ক্লিক করুন। Service Charge: Service Charge সকলের জন্য সমান। মনে করি Service Charge হচ্ছে ১০ টাকা । তাহলে এবার E4 সেলে ১০ লেখে বাকিগুলো ডাগ্র করে ছেড়ে দিন। VAT: মনে করি Vat হচ্ছে টাকার ৫% ।তাহলে ভ্যাট বের করার জন্য F4 সেলে মাউস পয়েন্টার নিয়ে নিম্নের সূত্র টাইপ করুন: =D4*5% তারপর এন্টার দিন। Amount To Be Paid: এবার আমরা Amount To Be Paid বের করব, অর্থাৎ সর্বমোট কত টাকা বিল দিতে হবে। Amount To Be Paid বের করার জন্য G4 সেলে মাউস পয়েন্টার নিয়ে নিম্নের সূত্র টাইপ করুন:- =SUM(D4:F4) অথবা =D4+E4+F4 তারপর এন্টার দিন। এটা ইচ্ছা করলে আপনি Auto Sum দিয়ে ও বের করতে পারেন।(Auto Sum সম্পর্কে পূর্বের টিউন এ আলোচনা করা হয়েছে) এবার দেখেন তো এরকম হয়েছে কিনা!!!! কি হয়েছে গুড বেরি গুড। হয় নাই আরেক বার ট্রাই করেন হয়ে যাবে ইনশা্আল্লাহ। আজ এ পর্যন্তই । সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ক্যাশ মেমো তৈরী করা আমি আপনাদের কে বিভিন্ন প্রজেক্ট এর মাধ্যমে এক্সেল এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করব । কারন আমার মতে ধারাবাহিক ভাবে বর্ননা না করে প্রজেক্ট ভিত্তিক ভাবে শিখলে নতুনরা সহজে বুঝতে পারবে।।। প্রথমে Microsoft Excel Open করেন: Start> All Programs> Microsoft Office >Microsoft Office Excel 2007.
চলুন তাহলে আমরা কাজ করা শুরু করি:
১ম ধাপ:
খেয়াল করে দেখুন Cash Memo লেখাটি টিক মাঝখানে আছে এবং এটাতে মাত্র একটি সেল আছে। এ কাজটি করা হয়েছে Merge Cell এর মাধ্যমে । একাধিক সেলকে একটি মাত্র সেল এ রুপান্তর করা জন্য Merge Cell ব্যবহৃত হয়। যে কয়েকটি সেল কে Merge করবেন সে কয়েকটি সেলকে সিলেক্ট করে Merge Cell এ ক্লিক করলে সেল গুলোMerge হয়ে যাবে অর্থাৎ একটি মাত্র সেল এ রুপান্তরিত হবে।
২য় ধাপ:
খেয়াল করে দেখুন Sl. No এর নিচে 1,2,3 এভাবে সিরিয়াল দেয়া আছে। ধরুন আপনার প্রয়োজন ক্রমিক 1 থেকে 100 অথবা মাসের নাম জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর বা দিনের নাম রবি থেকে শনি পর্যন্ত । এগুলো যদি টাইপ করতে থাকেন তাহলে তো এখানেই আপনার ১২ টা বেজে যাবে!!!!!!!
না আমি থাকতে আপনাদের বারটা বাজতে দিব না !!!! এ কাজ টি পানির মত সহজ যদি আপনি Data Fill নিয়ম জানেন।।
তাহলে চলুন ট্রাই করে দেখি: প্রথমে 1 এবং 2 লিখুন তারপর 1 এবং 2 কে সিলেক্ট করুন । ২ যে সেলে আছে ঐ সেলের কর্নারে নিলে দেখবেন একটি কালো প্লাস (+) চিহৃ দেখা যাচ্ছে তখন ঐ কালো প্লাস চিহৃকে চেপে ধরে (ড্রাগ করে) যত সংখ্যা প্রয়োজন তত সংখ্যাতে নিয়ে ছেড়ে দেন। ব্যস কাজ খতম!!! আর হ্যা অবশ্যই 1 এবং 2 দুটোই যেন সিলেক্ট অবস্থায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এভাবে মাস, ক্রমিক নাম্বার , সাপ্তাহ Data Fill করা যাবে খুব সহজে।।।।।
৩য় ধাপ:
এখন প্রথম ছবিটি দেখে দেখে বাকি ডাটা গুলো হবুহু এন্টি করেন। এখন আমরা Pen Drive এর Amount বের করব। তাহলের Amount বের করার জন্য প্রথমে E3 সেলে এ পয়েন্টার নিয়ে নিম্নে সূত্র টাইট করেন:
=C3*D3 তারপর এন্টার দেন, দেখেন ফলাফল চলে এসেছে। সেল এড্রেস মুখস্থ লেখা লাগবে না প্রথমে = (সমান) চিহৃ দিয়ে আপনি যে সংখ্যাটির সেল এড্রেস লিখবেন ঐ সংখ্যাটিতে ক্লিক করলেই সেল এড্রেস চলে আসবে
প্রথমটার ফলাফল আমরা পেলাম তাহলে বাকি রইল আরো দুটো না এগুলোর সূত্র আর আপনাকে কষ্ট করে লেখতে হবে না । প্রথমটার ফলাফল সিলেক্ট করে ড্রাগ করে নিচের দুটোতে নিয়ে যান ব্যস ফলাফল চলে আসবে।

৪র্থ ধাপ:
হ্যা এখন তাহলে Total Amount টা বের করে ফেলেন। সূত্র টা হবে =sum(E3:E5) তারপর এন্টর চাপেন।
৫ম ধাপ:
হ্যা এখন আমরা Due বের করব । সূত্র টা হবে =E6-E7 তারপর এন্টর চাপেন।
কাজ শেষ এখন দেখেন তো এটা এরকম হয়েছে কিনা!!!!!!!!!!

কি এরকম হয়েছে!!! তাহলে আপনি ১০০ তে ১০০ পেয়েছেন । হয়নাই আরেক বার ট্রাই করে দেখেন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

মাইক্রোসফট এক্সেলে জন্ম তারিখ নির্নয় করা যায়। নিম্নে জন্ম তারিখ নির্নয় করার পদ্ধতি আলোচনা করা হলোঃ
১। প্রথমে Microsoft Excel এ আজকের তারিখটি লিখতে হবে
২। তারিখটি হাতে লিখে দিলে হবে না। তারিখটি লিখতে হবে Microsoft Excel এর ফর্মূলার মাধ্যমে।
৩। ফর্মূলাটি হচ্ছে =today() লিখে এন্টার দিলে আজকের তারিখটি বের হয়ে আসবে।
৪। তারপর আপনার জন্ম তারিখটি লিখতে হবে।
৫। তবে এটা লেখার নিয়ম হচ্ছে প্রথমে মাস, তারপর দিন, তারপর বছর।
৬। এবার যে ঘরে জন্ম তারিখ বের করতে চাচ্ছেন তার উপরের ঘরগুলোতে যা লিখবেন।
৭। প্রথম ঘরে লিখবেন year, দ্বিতীয় ঘর অথ্যাৎ তার পাশের ঘরে লিখবেন month, এবং শেষ ঘর অথ্যাৎ তৃতীয় ঘরে লিখবেন day।
৮। এবার year এর ঘরের ঠিক নিচের ঘরটিতে কার্সর রাখুন। তারপর লিখুন =DATEDIF(I9,$D$5,”y”)। এখানে প্রথমে =, তারপর datedif, তারপর ফাস্ট ব্রাকেট(, তারপর জন্ম তারিখের ঘরটি সিলেকশন করতে হবে, তারপর একটি কমা দিতে হবে, তারপর আজকের যে তারিখ বের করা হয়েছে উক্ত ঘরে ক্লিক, তারপর f4 অর্থ্যাৎ ফাংশন ফোর, তারপর “” এর ভিতরে লিখতে হবে y।
৯। লিখে এন্টার দিন তারপর দেখুন আপনার উক্ত ঘরে বছর বের হয়ে আসবে।
১০। তারপর month এর ঘরে কার্সর রেখে উপরোক্ত জিনিসটুকু লিখুন কিন্তু এক জায়গাতে চেঞ্জ হবে সেটা হচ্ছে y এর স্থলে ym হবে। এবার লিখে এন্টার দিন দেখুন month এর ঘরে মাস বের হয়ে আসবে।
১১। এবার day এর ঘরে একই জিনিস লিখুন শেষের দিকে লিখুন md । তাহলে দিন বের হয়ে আসবে।
১২। এভাবে আপনি আপনার জন্ম তারিখ নির্নয় করতে পারেন।

Saturday, October 31, 2020

All Shortcuts of Excel Explain.

Ctrl + E - Flash Fill

Ctrl+Page Up/Down: Move to the previous or next worksheet

Shift+Left/Right Arrow: Extend the cell selection to the left or right

Shift+Space: Select the entire row

Ctrl+Space: Select the entire column

Ctrl+Shift+Space: Select the entire worksheet

Home: Go to the leftmost cell in the current row (or go to the beginning of the cell if editing a cell)

Ctrl+Home: Move to the beginning of a worksheet

Ctrl+End: Go to the most bottom right used cell

Page Up/Down: Move one screen up or down in a worksheet

Alt+Page Up/Down: Move one screen to the right or left in a worksheet

F8 : Exntend Selection

Ctrl+W  / CTRL + F4: Close a workbook  (Alt + Space + C)

F4: Repeat the last command or action. For example, if the last thing you typed in a cell is “hello,” or if you change the font color, clicking another cell and pressing F4 repeats that action in the new cell.

Shift+F11: Insert a new worksheet

Ctrl+Z: Undo an action

Ctrl+Y: Redo an action

Ctrl+N: Create a new workbook

Ctrl+O: Open an existing workbook

Ctrl+S: Save a workbook

F12: Open the Save As dialog box

Ctrl+ P: Print / Print Preview

F1: Open the Help pane

F7: Check spelling

F9: Calculate all worksheets in all open workbooks

Alt + V + Z : Zoom in / Zoom Out

Alt or F10: Turn key tips on or off

Ctrl+F1: Show or hide the ribbon

Ctrl+Shift+U: Expand or collapse the formula bar

Ctrl+F9: Minimize the workbook window

F11: Create a bar chart based on selected data (on a separate sheet)

Alt+F1: Create an embedded bar chart based on select data (same sheet)

Ctrl+F: Search in a spreadsheet, or use Find and Replace

Alt+F: Open the File tab menu

Alt+H: Go to the Home tab
 
Ctrl+Tab: Switch between open workbooks

Shift+F3: Insert a function

Alt+F8: Create, run, edit, or delete a macro

Alt+F11: Open the Microsoft Visual Basic For Applications Editor

Ctrl+Left/Right Arrow: Move to the farthest cell left or right in the row

Ctrl+Up/Down Arrow: Move to the top or bottom cell in the column

Tab = Goto the Next cell  & Shift+Tab: Go to the previous cell

F5 or CTRL + G: Go to any cell by pressing F5 and typing the cell coordinate or cell name.

F2: Edit a cell

Shift+F2: Add or edit a cell comment

Ctrl+X: Cut contents of a cell, selected data, or selected cell range

Ctrl+C or Ctrl+Insert: Copy contents of a cell, selected data, or selected cell range

Ctrl+V or Shift+Insert: Paste contents of a cell, selected data, or selected cell range

Ctrl+Alt+V: Open the Paste Special dialog box

Alt+Enter: Insert a hard return within a cell (while editing a cell)

F3: Paste a cell name (if cells are named in the worksheet)

Esc: Cancel an entry in a cell or the formula bar

Enter : Complete the Formula / Paste Content if already copied

Alt+H+H: Select a fill color

Alt+H+B: Add a border

Ctrl+Shift+&: Apply outline border

Ctrl+Shift+_ (Underscore): Remove outline border

Ctrl+9: Hide the selected rows

Ctrl + Shift + 9 : Unhide Rows

Ctrl+0: Hide the selected columns

Ctrl+1: Open the Format Cells dialog box

Ctrl+5: Apply or remove strike through

Ctrl+Shift+$: Apply currency format

Ctrl+Shift+%: Apply percent format

Ctrl+Shift+#: Apply Date format

Ctrl+Shift+@: Apply Time format

Ctrl+Shift+!: Apply Number format

Ctrl+Shift+ ~: Apply General format

Ctrl+ ' : Copy Above Content to Fill below

Ctrl + D = Fill Down

Ctrl + R - Fill Right

Ctrl + F3 = Name Manager 

Ctrl  + F10 = Restore Window or Alt + Space + R   

Alt + Space + X - Maximize  or Ctrl + F10 - Restore 

Ctrl + F9 - Minimize  / Alt + Tab - Maximize / Switch

Ctrl + F11 - Insert Macro Name Sheet

Ctrl  + F12 = Open Dialog box

Ctrl + Shift + F1 - Hide Tab and Ribbon

Alt + V + U - Full Screen

Ctrl + Shift + F3 - Create Names from Selection

Alt + H + W - Wrap Text

Ctrl + Shift + Page Down / Page up - Select All Sheets to the right / Left

Ctrl + ; - Insert Date

Ctrl + Shift + ; - Insert Time

Ctrl + T - Create Table or Ctrl + L 

Alt + H + O + R - Rename Sheet

Ctrl + H - Replace

Ctrl + K - Hyperlink

Ctrl + Shift + {  - Select all cells which involved in selected formula 

Ctrl + Shift + }  - Select Formula cells where selected cell in included  

Ctrl  + Shift + A - Insert Argument Names into a Formula

Alt + A + T - Apply and Remove Filter

ALT + N + V - PIVOT TABLE

ALT + = : AutotSum

ALT + H +M + C - MERGE AND CENTER

CTRL  + ~ = Show and Hide All formulas from sheet

CTRL + SHIFT + ENTER - Create Array

Alt + A + Q - Advance Filter

 Alt + H + O + I - Auto-fit Column Width

Alt + H + FP - Format Painter

Alt + H + E + F - Clear Format

Ctrl + + - Insert Column / Row
 
Ctrl  + -  = Delete Row / Column
 
Alt + I + R - Insert Row
 
Alt + I + C - Insert Column
 

Thursday, October 22, 2020

হাপাইতে হাপাইতে এক বৃদ্ধ রিক্সাচালক আমাকে বললো!

হাপাইতে হাপাইতে এক বৃদ্ধ রিক্সাচালক আমাকে বললো, সাহেব আমার লগে চলেন, ১০ ট্যাহা কম দিয়েন। আমার আরো ৫০ ট্যাহা লাগবো। আমি আমার বউয়ের লাইগ্যা সবজী, ডাইল-ভাত কিনুম।  

একথা শুনে তখন আর না করতে পারি নি। রিকশায় উঠে বসি। রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। একটু যাচ্ছে তো  একটু থামছে। সামনেই দেখছি বৃদ্ধলোকটা খুব কষ্ট করে গাড়ি চালাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করি মামা, তুমি এই বয়সে রিক্সা চালাও কেনো? তোমার কি ছেলে মেয়ে কেউ নাই? 

 কয়েক সেকেন্ডের বিরতি নিয়ে সে বলে উঠল,
সাহেব, মগবাজার যাইতে আরো চল্লিশ মিনিট লাগবো তাইলে হুনেন আস্তে ধীরে।

আমি মনু (৭১) আইজ থেইক্যা বছর তিনেক আগে জেল থেইক্যা ছাড়া পাইছি। তেরোডা বছর বিনা দোষে জেল খাটছি।

খিলক্ষেতে, খা-পাড়ায় আমার একটা মুদির দোকান আছিল। আশে-পাশে অনেক গার্মেন্টস আছিল। অনেক মাইনসে কাম করত। ভালোই  ইনকাম হইতো আমার। ম্যালা সুখেই দিন যাইত আমাগো। মাঝে মাঝে বাকীও দিতাম। আমার দুই পোলা। করিম আর রহিম। বড় পোলা রহিম হার্টের রুগী। আল্লাহ দিছে অসুখ সাহেব, কি করতাম আর। প্রত্যেক মাসে  রহিমের ডাক্তার খরচ দিয়া কোন রকম জীবন যাপন করতাম। ম্যালা টেহা যাইত।

মাঝে মাঝে দোকানে কিছু পোলাপাইন বইয়া আড্ডা দিত। ঢাকাইয়া পোলাপাইন অনেক দিন ধইরা চিনতাম।আমারে মাঝে মইধ্যে ভাই ভাই কইয়া ডাকতো। কাম কাইজে সাহায্য করতো। আমিও একা মানুষ বিশ্বাস করতাম। আমার একদিন খুব শইল খারাপ করে। বউ, রমিজারে কইয়া আমি ফার্মেসি থেইক্কা ওষুধ আনতে গেছি।

এই ফাঁকে  একটু  পরে পোলাপাইন গুলা আমারে ফোন করে। কয় ভাই,দোকানে দুই গাড়ি পুলিশ আইছে, আপনারে খুঁজে। আমি ওষুধ আর না কিন্নাই হাঁটা ধরছি। যাইয়া দেহি, বড় বড় দুইডা গাড়ি আমার দোকানে সব সময় মাল ডেলিবারি দিতো হেই ড্রাইবার।

আমি যাওয়া মাত্রই আমার দোকান খুইল্লা চিনির বস্তা থেইক্যা লাল দুই পেকেট ইয়াবা বাইর করে। আমি হেডির নাম জানতাম না ধরা খাওনের পরে নাম হুনছি। আমি জানতাম না কিছুই, আমার হাতে রশি  লাগাইয়া থানায় নিয়া কোটে চালান কইরা দিলো।

 রমিজা অনেক কষ্টে আমার সাথে দেখা করবার যায়। আমারে ছাড়াইতে পারে নাই। ধরার তিনমাস পরে আমারে তের বছরের সাজা দিলো। ছয় মাস পর পর রমিজা দেখা করতো আমার লগে।। ছেলে গুলার খুঁজ নিতাম, বড় পোলাডা আমার টাকার অভাবেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। রমিজা আমার কাছে লুকায়ে রাখছে। ছোডো পোলাডা  ফুটপাতে টোকাই। মা পোলায়  মিল্লা কোন রকম বাইচ্চা থাকতো।

ওহন আমার কোন ব্যাবসা করতে মন বসে না। এক জায়গাই তিনজন দেখলে সইরা যাই। এই শহরের মানুষ গুলা খারাপ। বিনা দোষে জেল দেয়, গরীব বইলা দাম দেয় না সাহেব, চোর বাটপার মনে করে আমাগো। ভরসা পাই নাহ্।

এহন রিক্স চালাই। দিন আনি দিন খাই। বাসায় অসুস্থ বউ, বয়স হইছে এহন আর কামে কাজে যাইবার পারে না। ছোট পুলাডা বড় হইছে, কই যায় কি করে খোঁজ পাই না।

তিনদিন হইয়া গেলো বউটা উইঠ্যা রানবার পারে না। সারাদিন গাড়ী চালাই মালিকরে ১৬০ টাকা, ভাড়া দিয়ে যা'ই থাকে দুইজনে খাওন কিন্না খাই। রমিজা আমারে ছাড়া খাইবার পারে না। আমি নিজ হাতে খাইয়ে দেই সাহেব। আমি বুড়া বয়সে তার জন্য কিছুই করবার পারলাম। আমি জেলে থাকতে রমিজা আমার লাই কত কি না করলো। তেরডা বছর আমার লেইগ্যা অপেক্ষা কইরা রাস্তায় দিন কাটাইছে।

আজকে অনেক কষ্ট হইতাছে। এহনো  ৪০ ট্যাহা হইলে দুইজনের দুই বেলা খাওনের টাহা হইবো। 

আমি জানিনা  সাহেব কোন কারণে আমার লগে এইগুলান করলো। আমি জেলে না থাকলে আমার রহিম মরতো না। আমার রমিজা মাইনষের বাসায় এক প্লেট ভাতের জন্য কাজ করতো নাহ। আমিও আজকে রিক্সা চালাইতাম না। আমার বউ আইজ বিনা চিকিৎসায় ঘরে হুইয়া থাকতো না।  সাহেব আমি ক্ষতি করি নাই আল্লাহ দেখছে, আমি কোটে বিচার না পাইলেও আল্লাহর কাছে পামু। আল্লাহ আমার বিচার করবো। আমি দুখি না সাহেব আমি সুখি। আমার জীবনে কোন পাপ নাই। আমি হালাল কামাই হালাল খাই।

উনি কথা গুলা বললেন আর কাঁদলেন। আমি বনানী থেকে মগবাজার যাই। রাস্তায় প্রতিটা চোখের ফোঁটা যেন বৃষ্টির মতো টপ টপ করে পড়লো। 

নাহ আমি ওনাকে শান্তনা দিতে পারি নি। এমন দুখি মানুষের আমার সামান্য শান্তনায় ক্ষতি পরিপুরণ হবে না। 
"Collected"

Monday, October 5, 2020

মহাবিশ্বের জীবনী।

#জীবনবিজ্ঞান 

কত বিশাল এ মহাবিশ্ব! ভাবা যায়! তার কোথাকার কোন চিপার এক পিচ্চি গ্রহে বসে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই আমি মহাবিশ্বের জন্মমৃত্যু নিয়ে লিখছি! এরচেয়ে হাইস্যকর আর কীই বা হতে পারে? যাইহোক আর যে যাই বলুক, এই ইউনিভার্সের হ্যাপিবার্থডে থেকে মৃত্যুদিবস পর্যন্ত না লিখে ছাড়ব না এই আমার শেষ কথা। তাতে যার যেখানে খুশি চুলকাক।
এখন আমি মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে যে বিশ্বাস প্রচলিত ছিল (হয়তো এখনো আছে) তা নিয়েই কথা বলব।

আমাদের পৌরাণিক ভারতবর্ষের প্রচলিত ধারণা দিয়েই বরং শুরু করি; সেই ধারণা মতে দেবতা ব্রহ্মা ৮৬৪ কোটি বছর পরপর ব্রহ্মান্ডকে ধংস করে আবার নতুন করে তৈরি করেন। অর্থাৎ এই মহাবিশ্ব ধংস-সৃষ্টি-ধংস এইরকম একটা চক্রে আবদ্ধ। আর আমাদের বর্তমান মহাবিশ্বের অস্তিত্বকাল সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি এই চার যুগে বিভক্ত। হিসাব অনুযায়ী আমরা শেষযুগ কলিতে জন্ম নিয়েছি! এই মহাবিশ্বের ধংস হবে বিষ্ণুর দশম অবতার কল্কির আগমনের পর।

এবার আসি চৈনিক উপকথায়; প্যান গু নামের এক অতীকায় দেবতা একটা ডিমের ভেতর আঠারো হাজার বছর ঘুমিয়ে ছিলো । মজার ব্যাপার হলো সেই ডিমের মধ্যেই আমাদের মহাবিশ্ব জড়সড় হয়ে ভর্তি ছিলো। প্যান গুর ঘুম ভাঙলে তিনি এক কুঠারের আঘাতে ডিম ভেঙে বেড়িয়ে আসেন। আর সেই সাথে সৃষ্টি হয় মহাবিশ্ব!

আফ্রিকান উপকথা অনুযায়ী, বোম্বা নামের এক দেবতার একদিন খুব পেটে অসুখ হলো। সেই সাথে হয়ে গেল কয়েক দফা বমি। প্রথম দফায় বেড়োলো সূর্য্য আর পানি। সূর্যের তাপে পানি শুকিয়ে ডাঙা হলো। পরেরবার বেরোলো চাঁদ, গ্রহ আর অন্যান্য নক্ষত্রগুলো। শেষবারে বেরোয় সকল জীবকুল!

গ্রীকপুরাণ বলে যে দেবী ইউরিনোম যখন জন্ম নেন তখন আকাশ -পৃথিবী -সাগর সব একসাথে জগাখিচুড়ি হয়ে ছিলো। ইউরিনোম পৃথিবী থেকে আকাশকে আলাদা করে দেন। ইউরিনোমের বাবা অন্ধকারের দেবতা ক্যাওস আলোর সাথে মিশে দিন রাত্রির ব্যাবস্থা করেন। ক্যাওসের আরেক সন্তান অফিওন নামক সাপ ইউরিনোমের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তখন দেবী পাখির রুপ ধরে একটি ডিম প্রসব করেন। অফিয়ন সেই ডিমে তা
দিতে থাকে। সেখান থেকেই জন্ম হয় সকল জীব এবং পাহাড়ের।

মহাবিশ্বের জন্ম সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক মতবাদঃ
তার আগে বলে নেই, এই বৈজ্ঞানিক প্যাঁচাল আমার দুটো চারটে কথায় শেষ হবে না। লিখে যেতে হবে গোটাকয়েক পর্ব। আর শুধু জন্ম লিখলেই তো হবে না! জীবনী যখন লিখতে বসেছি তখন এত্তো বড় এই ইউনিভার্সের এট দ্যা ইন্ড কী সেও তো লিখতে হবে! মোদ্দাকথা আমাদের পারি দিতে হবে দীর্ঘ এক পথ। যে পথ শুরু হবে ক্ষুদ্র এক বিন্দু থেকে আর শেষ হবে...কোথায়? সেটা তো পথের শেষেই জানা যাবে তাই না?তাহলে সিটবেল্ট বেঁধেনিন আর শুরু করা যাক আমাদের জার্নি!

মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছে বিগব্যাং(মহাবিস্ফোরণ) এর মাধ্যমে; সে তো আমরা সবাই জানি(যারা জানেন না তারাও পড়তে থাকুন। কোনো সমস্যা হবে না)। কিন্তু দাড়ান, বিগব্যাং এর আগে কি ছিলো?
উত্তর হলো, কিছুই ছিলো না!
এইটা কেমন কথা? বিগব্যাং এর আগে একেবারে কিচ্ছুই ছিলোনা? কিচ্ছু না? ক্যামনে সম্ভব?
চলুন তাহলে সহজ যুক্তির মধ্যদিয়ে দেখে নিই আসলেই সম্ভব কী না।

আচ্ছা এই বিগব্যাং থেকেই যে আমাদের ইউনিভার্স, আরো ভেঙে বললে ইউনিভার্সের সব উপাদান সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে তো আমরা সবাই বিশ্বাস করি! তার মানে বিগব্যাং থেকেই আমাদের স্থানকাল সৃষ্টি হয়েছে, আর এখান থেকেই সময়ের যাত্রা শুরু যা আজ ১৩৭৮কোটি বছর ধরে শুধুই এগিয়ে চলেছে।
এখন ধরা যাক পুরো ইউনিভার্সের টাইম কন্ট্রোলের সুপার পাওয়ার আপনি পেয়ে গেছেন! তো আপনি করলেন কী, সময়টাকে পেছনের দিকে নিতে থাকলেন। এভাবে নিতে নিতে ১৩৭৮কোটি বছর অতিতে নিয়ে গেলেন; যেখান থেকে সময়ের শুরু সেখানে! কিন্তু ভাই আপনি তো বাঙালী; আপনি ছাড়বেন কেনো! আপনি দেখতে চান এরও আগে কী ছিলো তাই সময়কে আরো পেছানোর জন্যে গুঁতোগুঁতি করতে লাগলেন। কিন্তু সময় বেচারা কী করবে? সে তো তার শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে! মানে যেখানথেকে তার জন্ম সেখানে! তাহলে সময় তার জন্মের আগের খবর জানবে কীভাবে? সুতরাং আপনার আর জানা হলো না যে বিগব্যাং এর আগে কী ছিলো।
আচ্ছা সে না হয় মানলেন জানা হলো না; কিন্তু কিছু তো ছিলো! আর আমি যে বললাম, "এর আগে কিছুই ছিল না!" এইটা ক্যামনে কী? ভাই আসেন একটু চিন্তা করি,
কোনোকিছুর "আগে(অতীত),পরে(ভবিষ্যৎ), এখন(বর্তমান)" এগুলা কিন্তু সময়ের উপরই নির্ভর করে! তাহলে বিগব্যাং এর আগে যখন সময়ই ছিলো না তখন বিগব্যাং এর "আগে" থাকবে কীভাবে? সুতরাং বিগব্যাং এর আগে কিছুই ছিলো না।
এবার পুরো ব্যাপারটা একটা উপমা দিয়ে বোঝাই কেমন?
ধরেন আপনি একটা বই কিনলেন। গল্পের বই। তো আপনাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম,"প্রথম পৃষ্ঠার আগের পৃষ্ঠায় কোন গল্প আছে?" কী উত্তর দেবেন? কোনো গল্পই নেই! থাকবে কিভাবে? প্রথম পৃষ্ঠায় আগে যে কোনো পৃষ্ঠাই নেই!

বিগব্যাং হচ্ছে অদ্ভুত মজার এক তত্ব যেটা এই মহাবিশ্বের জন্ম কীভাবে হয়েছিলো সেটার ব্যাখা দেয়। সত্যিই খুব ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় এই বিগব্যাং থিওরি।
মোটাদাগে বিগব্যাং আমাদের বলে যে, এই ইউনিভার্সের শুরু হয়েছে এক অতীব ক্ষুদ্র অঞ্চল(সিংগুলারিটি) থেকে। যেখানে প্রকৃতির সব নিয়মকানুন জড়িয়ে-পেঁচিয়ে ছিলো। সহজ কথায় বললে, পুরো ইউনিভার্সের সবকিছুই ওই বিন্দুবৎ অঞ্চলে একে অন্যের সাথে মিশে ছিলো।তবে একটা কথা, সবকিছু বলতে আবার ভাববেন না যে,আমি আপনি আজ যেভাবে আছি সেভাবেই ওইখানে ছিলাম;আসলে আমরা, আমাদের ইউনিভার্সের সবকিছুই তখন ছিলো প্লাজমা অবস্থায়।
আর সেই বিন্দুটাই ১৩৭৮ কোটি বছর ধরে ক্রমশ সম্প্রসারিত হয়ে আজকের এই অবস্থায় এসেছে।এমনকি এখনো প্রসারিত হচ্ছে।
এইবার আরেকটু খোলাখুলি কথা বলি কেমন;
ইউনিভার্সের শুরুটা হয় এক অকল্পনীয় বিস্ফোরণের মাধ্যমে। আসলে বিগব্যাং থিওরির বাংলাই হচ্ছে মহাবিস্ফোরণ তত্ব।
এই বিস্ফোরণের ১০^-৪৩ সেকেন্ড পর্যন্ত মহাবিশ্ব খুবই দ্রুত প্রসারিত হয়। আর এটা যে কতোটা দ্রুত সে আমি গাঁজা খেয়েও কল্পনা করতে পারব না। এই সময়টুকুর মধ্যেই ওই ছোট্ট পিচ্চি মহাবিশ্বটা বেশ বড়সড় হয়ে যায়!
১০^-৩২ সেকেন্ডে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা ছিলো ১০^২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে সারা ইউনিভার্স জুড়ে ছিলো শুধু ইলেকট্রন, কোয়ার্ক এবং অন্যান্য মৌলিক কণাগুলো। পরের১০^-৬ সেকেন্ডে কোয়ার্কগুলো মিলিতো হয়ে প্রোটন এবং নিউট্রন গঠন করে। এসময় ইউনিভার্সের তামপাত্রা নেমে দ্বারায় ১০^১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে!
বিস্ফোরণের প্রথম সেকেন্ডে মূলত এই ঘটনাগুলোই খুব দ্রুত ঘটে। মোট কথা সময়ের সাথে সাথে ইউনিভার্স ঠান্ডা হতে থাকে আর সেই সাথে তৈরি হয় প্রোটন ও নিউট্রন। পরবর্তী ৩মিনিটে তাপমাত্রা নেমে আসে ১০^৮ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তখন প্রোটন আর নিউট্রন একসাথে মিলে হায়ড্রোজেন আর হিলিয়াম নিউক্লিয়াস তৈরি করে। এরপর প্রায় ৩০০,০০০বছর ধরে ইলেক্ট্রন গুলো ওই নিউক্লিয়াসের সাথে একত্রিত হয়ে পরমাণু তৈরি করতে থাকে। বলাবাহুল্য, যার বেশিরভাগই ছিলো হায়ড্রোজেন আর হিলিয়াম পরমাণু। এ সময় ইউনিভার্সের তাপমাত্রাও গিয়ে দাঁড়ায় ১০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
তারপর এক দীর্ঘ সময় ধরে গ্র্যাভিটি দেখাতে থাকে তার ক্যালমা! হায়ড্রোজেন আর হিলিয়াম গ্যাসগুলো প্রায় ১বিলিয়ন বছর ধরে মহাকর্ষেরর কারণে জমা হতে হতে দৈত্যাকৃতির মহাজাগতিক মেঘের সৃষ্টি করে। যেগুলোকে প্রোটো গ্যালাক্সি বলে। তখন তাপমাত্রা ছিলো -২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও গ্যাসের তুলনামুলক ছোটো ছোটো পিণ্ড থেকে সৃষ্টি হতে থাকে নক্ষত্র সমূহ।
এর পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সৃষ্ট নক্ষত্রগুলো মারা যেতে থাকে ; এর ফলে সৃষ্ট ভারী পদার্থগুলো মহাশূন্যে ছড়িয়ে পরে। যার থেকে সৃষ্টি হয় এবং এখনো হচ্ছে বিভিন্ন গ্রহ ও নক্ষত্র।
ছোটো করে এই হচ্ছে বিগব্যাং তথা ইউনিভার্সের জন্মকথা।

এবার কাজের কথায় আসি; আমাদের ইউনিভার্সের শেষ পরিণতি কী হবে সেটা নিয়ে মুরুব্বিগণ অনেক ভাবনাচিন্তা করেছেন। আর শেষ পর্যন্ত বেরও করে ফেলেছেন যে, কী হবে(হতেপারে) আমাদের মহাবিশ্বের শেষ পরিণতি। কিন্তু ওইযে বলে,"নানা মুনির নানা মত। " আমাদের মুরুব্বিগণও বেশকয়েকটা মতামত সামনে আনলেন এ বিষয়ে। এখন সেই মতামত গুলোনিয়েই ঘাটাঘাটি করব।

বিগ রিপ (BIG RIP) থিওরিঃ
আচ্ছা আমরা তো জেনে এসেছি যে, এই ইউনিভার্স জন্ম থেকেই প্রসারিত হচ্ছে। এখনো অভাবনীয় গতিতে এই ইউনিভার্স প্রসারিত হচ্ছে। বিগ রিপ থিওরি বলে যে,আমাদের মহাবিশ্ব অনন্তকাল ধরে অবিরাম প্রসারিত হতে থাকবে। কিন্তু একটু দাঁড়ান,
মহাবিশ্বের একটা বস্তু আরেকটা বস্তুকে তো আকর্ষণ করে। তাহলে তারা একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কেনো?
খুবই সুন্দর আর যৌক্তিক একটা প্রশ্ন। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এই আকর্ষণ টা যে মহাকর্ষ বল তা তো আমরা জানি। আর এটাও জানি যে মহাকর্ষ বলটা মৌলিক বলগুলোর মধ্যে সবচাইতে দুর্বল। আর মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের পেছনে নাটেরগুরু হয়ে রয়েছে দ্যা গ্রেট, " ডার্ক এনার্জি।" যে এখনো আমাদের চোখের এবং জ্ঞানের গণ্ডিতে ধরা দেয়নি।
কিন্তু বিগ রিপের জন্য একটা নির্দিষ্ট ডার্ক এনার্জি দায়ী। যার নাম," ফ্যানটম(phantom)এনার্জি।" এই ফ্যানটম এনার্জির তখনই কাজ করে, যখন ডার্ক এনার্জির চাপ তার এনার্জির ঘনত্বের চাইতে বেশি হয়। এভাবেও বলা যায়, এ দুয়ের অনুপাত হয় -১ এর চাইতে কম। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা এখনো সঠিক জানি না এই ডার্ক এনার্জির চাপ আর ঘনত্বের অনুপাত কী।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সম্প্রসারণের মান কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বাড়তেই থাকবে। একপর্যায়ে গ্যালাক্সি ক্লাস্টার থেকে গ্যালাক্সি গুলো আলাদা হয়ে যাবে।গ্যালাক্সি থেকে সৌরজগৎ আলাদা হয়ে যাবে। ভবিষ্যতের একটা পর্যায়ে প্রতিটা অনু একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যাবে।
বিগরিপ অনুযায়ী শেষপর্যন্ত মহাবিশ্বের প্রতিটা কণা আলাদা হয়ে যাবে। তখন স্পেস জুড়ে অসংখ্য কণা ছড়িয়ে থাকবে ঠিকই, কিন্তু সেগুলোর মধ্যে পুণরায় কোনো বন্ধন গঠন হবে না।

বিগ ফ্রিজ (The Big Freeze):
এই বিগ ফ্রিজ থিওরিটি " বিগ চিল" এবং "হিট ডেথ' থিওরি নামেও পরিচিত। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের আগের বিগ রিপের মতো বিগ ফ্রিজও রহস্যময় ডার্ক এনার্জির মতিগতির উপর নির্ভরশীল।
বিগ ফ্রিজ বলে যে, মহাবিশ্ব ক্রমশ বর্ধমান গতীতে সম্প্রসারিত হতে থাকবে। আরেকটু বিস্তারিত বললে, ইউনিভার্সের গ্যালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহগুলো ক্রমশ একে অন্যের থেকে দূরে সরে যেতে থাকবে। মোট কথা, ইউনিভার্সের এনট্রপি ক্রমশ বাড়তে থাকবে। এপর্যন্ত ব্যাপারটা অনেকটা ওই বিগরপের মতোই।
এবার আসল কথায় যাচ্ছি,
এই এনট্রপিটা কী? খায় নাকী মাথায় লাগায়?
এনট্রপি টা হচ্ছে বিশৃঙ্খলতার মাত্রা। অর্থাৎ কোনো কিছু যত বেশি বিশৃঙ্খল তার এন্ট্রপি তত বেশি। ধরেন, আপনার হাত থেকে পড়ে একটা ডিম ভেঙে গেলো; এতে করে ডিমের উপাদানগুলো ছড়িয়ে পড়লো তথা বিশৃঙখল হয়ে পড়ল। সুতরাং ডিমের এনট্রপি বেড়ে গেলো! দারুণ না?
এই ফাঁকে বলে রাখা ভালো যে, তাপগতীবিদ্যার ২য় সূত্র অনুসারে বস্তুর এনট্রপি বাড়ার সাথে সাথে এর থেকে তাপশক্তিও নির্গত হয়।
এই ইউনিভার্সের এনট্রপিও তার জন্মের সময় থেকে ক্রমশ বেড়েই চলেছে, বেড়েই চলেছে এবং বেড়েই চলেছে। সুতরাং একই সাথে মহাবিশ্বের সকল বস্তু থেকে তাপও নির্গত হচ্ছে। অর্থাৎ ইউনিভার্সের তাপমাত্রা ক্রমশ কমছে। এভাবে কমতে কমতে একপর্যায়ে এই ইউনিভার্স পরমশূন্য তাপমাত্রায় চলে যাবে। এই অবস্থায় মহাবিশ্বের এনট্রপিও হবে সর্বোচ্চ।
তখন চারদিক জুড়ে থাকবে শুধুই নির্জিবতা। অন্ধকার স্পেস জুড়ে থাকবে অসংখ্য নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, গ্রহের মৃতদেহ। আর তখন আমিও জীবনান্দ দাসের সঙ্গে বসে আবৃতি করব,
"থাকে শুধু অন্ধকার, পাশাপাশি বসিবার বনলতা সেন।"

বিগ ক্রাঞ্চ (Big Crunch):
বিগ ক্রাঞ্চ বলে যে, এই ইউনিভার্সের ধংসের সাথে সাথে আরেকটি নতুন ইউনিভার্স সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। মানে আবার সেই সিংগুলারিটি,সেই বিগব্যাং; নতুন গ্যালাক্সি, নতুন সৌরজগৎ ; হয়তোবা নতুন আরেকটা পৃথিবী!
আবার ঘুরিয়ে বললে আমাদের এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির আগে অন্য একটা মহাবিশ্ব ছিলো! এই যে জন্ম-মৃত্যু-জন্ম- মৃত্যুর চক্রটাকেই বলে, "CONFORMAL CYCLIC COSMOLOGY"।
বিগ ক্রাঞ্চ মতে, সুদূর ভবিষ্যতের কোনো একসময় এই ইউনিভার্সের গড় ঘনত্ব এমন একটা পর্যায়ে পৌছাবে যে, তারপর মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এরপর কী হবে?
এরপরে ঘটতে শুরু করবে সবচাইতে মজার ব্যাপার। সহজ কথায় বলতে গেলে, এতোকাল ধরে ইউনিভার্সে যা যা ঘটেছে এরপর থেকে ঠিক তার বিপরীতটা ঘটতে থাকবে।
এ পর্যায়ে মহাবিশ্ব ক্রমশ সংকুচিত হতে থাকবে। সকল গ্যালাক্সি এবং গ্যালাক্সি ক্লাস্টার গুলো একে অন্যের কাছে আসতে থাকবে। এভাবে তৈরি হবে এক বিশায়ায়াল আকৃতির গ্যালাক্সি।
এই গ্যালাক্সির ভেতর নক্ষত্রগুলো একসঙ্গে মিশে যেতে থাকবে। শেষ পর্যায়ে নক্ষত্রগুলো ধংস হয়ে জন্ম হবে ব্ল্যাকহোলের। ব্ল্যাকহোলগুলো তাদের আশপাশের সবকিছুই নিজের ভেতর নিয়ে নেবে। একটাসময় এই ব্ল্যাকহোলগুলোও একসঙ্গে মিলে অনেক অনেক শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোলের জন্ম দেবে।
এখানে কিন্তু ভুলেও ভাবা যাবে না যে, ব্ল্যাকহোলটা হবে অনেক বড় আকারের। আসলে ব্ল্যাকহোলের আয়তন খুবই অল্প। একেবারে শুণ্যের কাছাকাছি বলা চলে। কিন্তু এই অতি অল্প যায়গাতেই ব্ল্যাকহোলের সব কিছু শুষে নিয়ে জমিয়ে রাখে
(অবশ্য হোয়াইট হোল থিওরি বলে যে, ব্ল্যাকহোলের অপর পাশ দিয়ে সেগুলো বেরিয়ে যায়। তবে সে বিষয় এক্ষেত্রে না আনাই ভালো)।
ব্ল্যাকহোলের ব্যাপারটা আমাদের "আব্দুল হাই" এর মতো। পড়েননি কবিতাটা?,
"আব্দুল হাই, করে খাই খাই;
সবকিছু খেয়ে বলে,
কিছু খাই নাই।"
মুল কথায় ফিরে আসি, এই মহাশক্তিধর ব্ল্যাকহোলটি মহাবিশ্বের বাকী যা কিছু ছিলো তাও চেটেপুটে শেষ করে দেবে। এরপর কি থাকবে?
সিংগুলারিটি! যেখান থেকে আমাদের ইউনিভার্সের যাত্রা শুরু হয়েছিলো; আবার সেখানেই শেষ! সেখান থেকে যাত্রা শুরু হবে আরো এক মহাবিশ্বের! একসময় সে ইউনিভার্সে হয়তো নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হবে। হয়তো সে নতুন পৃথিবীতে নতুন এক জাহিদুল ইসলাম নতুন করে শোনাবে মহাবিশ্বের জন্ম কথা। এ যেনো রবীন্দ্রনাথের ছোটোগল্প,
"শেষ হয়ে হইলো না শেষ।"

Monday, September 28, 2020

ডার্ক ম্যাটারের খনি!!

চেহারায় আমাদের মিল্কি ওয়ের মতো হলেও, একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরা একটা ভুতুড়ে গ্যালাক্সির খোঁজ মিলল। এই প্রথম। যে গ্যালাক্সিতে তারার সংখ্যা খুবই সামান্য। ফলে, আমাদের আকাশগঙ্গার মতো তার কোণায় কোণায় আলো জ্বলে না। আর সেই ভুতুড়ে গ্যালাক্সির প্রায় গোটা শরীরটাই (৯৯.৯৯ শতাংশ) ভরা রয়েছে অজানা, অচেনা পদার্থে। যার নাম ডার্ক ম্যাটার। তাই গোটা গ্যালাক্সি জুড়েই যেন ‘বিদিশার নিশা’! জমাট বাঁধা ভুতুড়ে অন্ধকার ফুঁড়ে ওই গ্যালাক্সির কিছু কিছু তারার আলো গ্যালাক্সির চার পাশে যেন তৈরি করেছে একটা জ্যোতি! সেই ‘জ্যোতি’ ছিল ভাগ্যিস। সেই আলোতেই টেলিস্কোপের লেন্সে ধরা দিয়েছে সেই ‘কৃষ্ণকলি’ ভুতুড়ে গ্যালাক্সি। যার নাম ‘ড্রাগনফ্লাই-৪৪’।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ভন ডোক্কুমের নেতৃত্বে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল এই ভুতুড়ে গ্যালাক্সিটির হদিশ পেয়েছে সম্প্রতি। গবেষণাপত্রটি ছাপা হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল লেটার্স জার্নাল’-এ। এই ‘কৃষ্ণকলি’ গ্যালাক্সিটি রয়েছে এই ব্রহ্মাণ্ডের ‘কোমা’ নক্ষত্রপুঞ্জে। তার খোঁজ পেয়েছে হাওয়াই দ্বীপের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরি ও জেমিনি নর্থ টেলিস্কোপ। জল বেশি থাকার জন্য গভীর সমুদ্রে যেমন জাহাজের গতি বেড়ে যায়, সমুদ্রোপকূলের চেয়ে, তেমনই কোন গ্যালাক্সিতে কত জোরে ছুটছে তারাগুলি, তার ওপর নির্ভর করে সেই গ্যালাক্সি কতটা ভারী। গ্যালাক্সির ভর কতটা। তারাগুলি যত জোরে ছোটে, গ্যালাক্সির ভরও হয় ততটাই বেশি।
কিন্তু ওই ভুতুড়ে গ্যালাক্সিতে তারাগুলি যতটা জোরে ছোটে বলে ধারণা ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের, দেখা গিয়েছে, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি জোরে ছোটে তারাগুলি।
তখনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, এটা কী ভাবে সম্ভব হচ্ছে?
রাস্তায় গাড়িঘোড়া বেশি থাকলে তো ট্রাফিক জ্যাম হবেই আর তাতে রাস্তায় গাড়িঘোড়ার গতি কমে যাবে। ওই গ্যালাক্সিতেও যদি তারার সংখ্যা খুব বেশি হোত, তা হলে তারাগুলি অত জোরে ছুটতে পারতো না সেখানে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারলেন, ওই গ্যালাক্সিতে তারার সংখ্যা যৎসামান্যই। গ্যালাক্সির মধ্যে প্রচুর ফাঁকা জায়গা রয়েছে। আর সেই জায়গাগুলি একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরা।
ওই ফাঁকা জায়গাগুলিতে অত অন্ধকার কেন?
যেন ‘বিদিশার নিশা’! ঘুটঘুটে কালো ‘ড্রাগনফ্লাই-৪৪’ গ্যালাক্সি
সেই জায়গায় যদি কোনও চেনা, জানা পদার্থ থাকতো, তা হলে তার ওপর আলো পড়লে তা প্রতিফলিত বা বিচ্ছুরিত হতো। আর সেই আলোয় আমরা ফাঁকা জায়গাগুলি দেখতে পেতাম। সেগুলি ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকা থাকতো না। তা হলে, নিশ্চয়ই সেই জায়গাগুলি ভরা রয়েছে এমন সব পদার্থ দিয়ে, যাদের সঙ্গে দৃশ্যমান আলো বা কোনও তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের কোনও বনিবনাই (ইন্টার-অ্যাকশন) হয় না। নেই বিন্দুমাত্র ভাবসাব। এর থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, ওই ফাঁকা জায়গাগুলি ভরা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অজানা অচেনা ডার্ক ম্যাটার দিয়ে।
কিন্তু ওই ফাঁকা জায়গাগুলি শুধুই ডার্ক ম্যাটার দিয়ে ভরা, এ ব্যাপারে কী ভাবে নিশ্চিত হলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা?
গবেষকরা জানিয়েছেন, অত বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা ফাঁকা জায়গাগুলি যদি একেবারেই শূন্য থাকতো বা আমাদের চেনা পদার্থ দিয়ে ভর্তি থাকতো, তা হলে ওই গ্যালাক্সির ভর অতটা বেশি হতো না। আমাদের সূর্যের ভরের এক লক্ষ কোটি গুণ ভর ওই ভুতুড়ে গ্যালাক্সির। আর এইখানেই আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির সঙ্গে তার মিল। আমাদের আকাশগঙ্গারও ভর তেমনটাই। অমিলটা হোল, সেই ভরের এক শতাংশের ১০০ ভাগের মাত্র এক ভাগ হয়েছে তার তারাদের জন্য। বা, অন্যান্য চেনা, জানা পদার্থের জন্য।
উল্লেখ্য আমাদের গ্যালাক্সিরও ২৭% ডার্ক ম্যাটার ও ৬৮%ডার্ক অ্যানার্জি দিয়ে ভর্তি!!!
বাকিটুকু আমাদের পৃথিবী সৌরজগৎ প্রভৃতি আমাদের পরিচিত পদার্থগুলো নিয়ে মাত্র ৫% দাঁড়ায়। এখন ভাবুন আমরা ইউনিভার্সের কতটুকু জানতে পেরেছি।
যাই হোক, এই ঘুটঘুটে অন্ধকারেই মিলবে ‘আলো’র দেখা? মিলবে ডার্ক ম্যাটার?
তা হলে অত ভর হল কী ভাবে ওই গ্যালাক্সির?
নিশ্চয়ই সেখানে রয়েছে এমন কিছু, যাদের আমরা চিনি না, জানি না। এরাই সেই ডার্ক ম্যাটার।
শরীরের ভেতর ডার্ক ম্যাটার রয়েছে, এমন গ্যালাক্সির আবিষ্কার অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও এমন গ্যালাক্সির খোঁজ মিলেছে। সেগুলির নাম ‘আলট্রা-ফেন্ট ডোয়ার্ফ গ্যালাক্সি’। তবে সেই গ্যালাক্সিগুলি ছোট ছোট। অত ভারীও নয় সেগুলি। ‘ড্রাগনফ্লাই-৪৪’ গ্যালাক্সির ভরের ১০ হাজার ভাগের মাত্র এক ভাগ ওই ছোট ছোট গ্যালাক্সিগুলির ভর।
তার মানে, এটা বলাই যায়, মহাকাশে ডার্ক ম্যাটারের এত বড় ‘খনি’র হদিশ মেলেনি এর আগে। ফলে, আগামী দিনে ডার্ক ম্যাটারের তল্লাশে বড় ল্যাবরেটরি হতে চলেছে এই ‘কৃষ্ণকলি’ ড্রাগনফ্লাই-৪৪’!
।তথ্যসূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা।
/স্বল্প পরিমার্জিত/

Friday, September 25, 2020

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম কানুন জেনে নিন

জিডি শব্দটি জেনারেল ডায়েরীর সংক্ষিপ্ত রুপ। প্রতিটি থানায় এবং ফাঁড়িতে একটি ডায়েরীতে ২৪ ঘন্টার খবর রেকর্ড করা হয়। প্রতিদিন সকাল আটটায় ডায়েরী খুলে পরের দিন সকাল আটটায় বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ কার্যত এটি কখনই বন্ধ হয় না।
এই ডায়েরীতে থানার বিভিন্ন কার্যক্রম  যেমন আসামী কোর্টে চালান দেয়া, এলাকার বিভিন্ন তথ্য, থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আগমন ও প্রস্থানের তথ্য ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে।

নানাবিধ সমস্যায় পড়ে আমরা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দ্বারস্থ হয়ে থাকি। কিন্তু কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা থানায় লিখিত আকারে জানালে পুলিশ এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারে। আর কিভাবে আমরা থানা থেকে সেই সহযোগিতা নিতে পারি তা অনেকেরই জানা নেই।
মূল্যবান যে কোনো জিনিস হারালে যেমন- সার্টিফিকেট, দলিল, লাইসেন্স, পাসপোর্ট, মূল্যবান রশিদ, চেকবই, এটিএম বা ক্রেডিট স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ইত্যাদি। অথবা কোনো প্রকার হুমকি পেলে বা হুমকির আশংকা থাকলে কিংবা কেউ নিখোঁজ হলেও জিডি করার সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ সাধারণত যেসব ক্ষেত্রে মামলা হয় না সেসব ক্ষেত্রেই থানায় জিডি করা যায়। জিডি করার কোন বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নতুন করে হারানো কাগজ তুলতে হলেও জিডির কপির প্রয়োজন হয়।
এসব ক্ষেত্রে আপনার প্রথম কাজ হলো নিকটবর্তী থানাকে জানানো। আর এটি জানাবেন একটি সাধারণ ডায়েরির মাধ্যমে, যাকে আমরা সংক্ষেপে জিডি বলে থাকি। এ ধরনের জিডি করার অর্থ হলো- বিষয়টি সম্পর্কে থানাকে অবগত করা, যাতে থানা কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য অপরাধটি সংঘটিত হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নিতে পারে।


সাধারণ মানুষের কাছে জিডির গুরুত্ব
সাধারণ মানুষের কাছে জিডির গুরুত্ব ভিন্ন। কোন থানায় মামলাযোগ্য নয় এমন ঘটনা ঘটলে মানুষ থানায় জিডি করে থাকেন। আবার কাউকে ভয় ভীতি দেখানো হলে বা অন্য কোন কারণে যদি তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, কিংবা কোন ধরনের অপরাধের আশঙ্কা করেন তাহলেও তিনি জিডি করতে পারেন। জিডি করার পর পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। প্রয়োজনবোধে তদন্ত করা, নিরাপত্তা দেয়া ছাড়াও জিডির বিষয়টি মামলাযোগ্য হলে পুলিশ মামলা করে থাকে। আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য জিডি অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেক সময় আদালতেও জিডিকে সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জিডি করা
থানার ডিউটি অফিসার জিডি নথিভুক্ত করেন। এক্ষেত্রে তিনি একটি ডায়েরীতে জিডির নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। জিডির দুটি কপি করা হয়। একটি থানায় সংরক্ষণ করা হয় এবং অন্যটিতে জিডির নম্বর লিখে প্রয়োজনীয় সাক্ষর ও সীলমোহর দেয়া হয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করতে হয়।
অভিযোগকারী নিজে জিডি লিখতে পারেন, আবার প্রয়োজনে থানার কর্মকর্তাও লিখে দিয়ে থাকেন।
প্রতিটি জিডির বিপরীতে একটি নম্বর দেয়া হয়, ফলে কোন অবৈধ প্রক্রিয়া মাধ্যমে কেউ আগের তারিখ দেখিয়ে জিডি করতে পারেন না।
অনলাইন জিডি
আবার পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া দেবার প্রয়োজন নেই এমন ক্ষেত্রে যেমন পাসপোর্ট হারানো, বাখাটে বা মাদক সেবীদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান বা এজাতীয় ক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করা যেতে পারেন বা সরাসরি পুলিশ সদরদপ্তরে ফ্যাক্স বা ই-মেইল করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে দেশের বাইরে থেকেও জিডি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করার পর ই-মেইল বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিডি নম্বরটি জিডিকারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

হারানো বিষয়ের জিডি
মোবাইল ফোনের সিম, পরীক্ষার সার্টিফিকেট, জমির দলিল প্রভৃতি হারিয়ে গেলে ঐ সব কাগজপত্র পুনরায় তুলতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হারানো সংবাদের জিডি চেয়ে থাকে, তাই ঐসব ক্ষেত্রে হারানো সংবাদের জিডি করে সেই জিডি নম্বরসহ কর্তৃপক্ষরে কাছে আবেদন করতে হয়।

এবার আসুন জেনে নেই জিডিতে কী কী উল্লেখ করতে হবে:
১. থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সম্বোধন করে লিখতে হবে এবং থানার নাম ও ঠিকানা লিখতে হবে।
২. বিষয় : ‘জিডি করার জন্য আবেদন’- এভাবে লিখতে হবে।
৩. অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা করলে জিডিতে আশঙ্কার কারণ উল্লেখ করতে হবে।
৪. হুমকি দিলে হুমকি দেওয়ার স্থান, তারিখ, সময়, সাক্ষী থাকলে তাদের নাম, পিতার নাম ও পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
৫. হুমকি প্রদানকারী পরিচিত হলে তার/তাদের নাম, পিতার নাম ও পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
৬. অপরিচিত হলে তাদের শনাক্তকরণের বর্ণনা দিতে হবে।
৭. জিডি নথিভুক্ত করে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করতে হবে।
৮. সর্বশেষ জিডিকারীর নাম, স্বাক্ষর, পিতার নাম, পূর্ণ ঠিকানা ও তারিখ লিখতে হবে।
উল্লেখ্য, জিডি দুই কপি করতে হবে। এক কপি নথিভুক্ত করার জন্য থানায় জমা দিতে হবে, আরেক কপি থানার কর্মকর্তার সিল এবং জিডির নম্বর সংবলিত কপিটি যত্ন করে সংরক্ষণ করতে হবে। জিডি করতে থানায় কোনো ফি দিতে হয় না।
জিডির একটি নমুনা কপি:
তারিখঃ ………………
বরাবর
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
………………..থানা, ঢাকা।
বিষয় : সাধারণ ডায়েরি ভুক্তির জন্য আবেদন।
জনাব,
আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী নাম: …………………………………
বয়স : ………………………………………………………
পিতা/স্বামী : ………………………………………………..
ঠিকানা : …………………………………………………….
এই মর্মে জানাচ্ছি যে আজ/গত …………………….. তারিখ ……………. সময় …………….জায়গা থেকে  আমার নিম্নবর্ণিত কাগজ/মালামাল হারিয়ে গেছে।
বর্ণনা : (যা যা হারিয়েছে)
বিষয়টি থানায় অবগতির জন্য সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করার অনুরোধ করছি।
বিনীত
নাম:
ঠিকানা:
মোবাইল নম্বর:

Sunday, September 13, 2020

গামা রশ্মি কী?

গামা রশ্মি হলো উচ্চ কম্পাঙ্কের তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ বা ফোটন কণা। এর শক্তি দৃশ্যমান আলোর চেয়ে অন্তত ৫০ হাজার গুণ বেশি হতে পারে। সেজন্য এটি প্রাণী দেহের ডিএনএকে আঘাত করে অনায়াসে ভেঙে দিতে পারে। পৃথিবীর চারপাশে যে ওজোনস্তর রয়েছে তা ক্ষতিকারক মহাজাগতিক রশ্মিকে আটকে দেয়। কিন্তু গামা রশ্মি এই স্তর ভেদ করতে পারে; যার ফল ভয়াবহ। এর ফলে ওজোনস্তর পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যাবে।

গামা রে বার্স্ট প্রথম নজরে আসে গেল শতকের ষাটের দশকে। যুক্তরাষ্ট্র কয়েকটি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায়। উপগ্রহগুলোর কাজ ছিল গামা রশ্মির বিকিরণকে শনাক্ত করা। উপগ্রহগুলো এতটাই শক্তিশালী ছিল যে চাঁদের অপর পৃষ্ঠে যদি কোনো বিস্ফোরণ ঘটে তাও ধরতে পারবে। আর সত্যি সত্যিই মহাকাশ থেকে আসা গামা রশ্মির বিকিরণ ধরা পড়ল।

২০০৮ সালের সালের মার্চ মাসে একটি গামা রে বার্স্ট ধরা পড়ে যেটির উৎপত্তি ৭০০ আলোকবর্ষ দূরে ছিল, এত বিশাল দূর ভেবেই অনুমান করা সম্ভব বিস্ফোরণটি কতটা শক্তিশালী ছিল। সূর্য তার ৪৬০ কোটি বছরের জীবনকালে যে পরিমাণ শক্তি বিকিরণ করে, একটি গামা রে বার্স্ট মাত্র এক সেকেন্ডে তার থেকেও বেশি শক্তি তৈরি করে।

গামা রে বার্স্ট দুইভাবে হতে পারে। যখন দুটি নিউট্রন তারা একে অপরের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে, কোনো এক মুহূর্তে জুড়ে গিয়ে তৈরি করে একটি ব্ল্যাক হোল। এর ফলে যে মহাবিস্ফোরণ সৃষ্টি হয় তাকে গামা রে বার্স্ট বলে। আবার সূর্যের চেয়ে ৮ গুণ ও তার বেশি ভারি তারা মহাবিস্ফোরণ ঘটিয়ে ব্ল্যাক হোল তৈরি করলে গামা রে বার্স্ট তৈরি করতে পারে।

গড় হিসাব করে দেখা গেছে, প্রতিদিন একটা করে জিআরবি হয়েই থাকে। কিন্তু এদের বেশিরভাগটাই ক্ষতিকারক নয়। কারণ এগুলো অনেক দূরের। তবে ১০০০ আলোকবর্ষের মধ্যে যদি কোনো জিআরবি হয়ে থাকে এবং এর গতিপথের সামনে যদি পৃথিবী থাকে তাহলে পৃথিবীর সামনের অংশটা পুরে যাবে।

বিজ্ঞানীদের অনুমান ৪৪০ কোটি বছর আগে একবার হয়ে থাকতে পারে। সেই সময় হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। যদিও পৃথিবীর পরিবেশ সে সময় গরম থাকার কথা। মনে করা হয়, GRB আঘাতের কারণের এটা হয়েছে। এর জন্য প্রায় ৮৫% সামুদ্রিক প্রাণী ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

৮০০০ আলোকবর্ষ দূরে WR104 নামে একটি মৃত্যুপথগামী লাল তারা রয়েছে। যার ঘূর্ণন অক্ষ পৃথিবীর দিকেই তাক করে আছে। যদি এই মুহূর্তে ওই তারা থেকে GRB ধেয়ে আসে পৃথিবীতে আবার প্রাণের ধ্বংসলীলা শুরু হবে। তবে এটি সবকিছুর শেষ তা বলা ভুল হবে। কারণ একটা বৃহৎ তারা ধ্বংসের অবশেষ থেকেই যেভাবে আমাদের সৌরজগতের সৃষ্টি হয়েছে সেভাবেই শুরু হবে নতুন তারার জগৎ।

তথ্যসূত্র ইন্টারনেট! তবে কিছু ভুল তথ্য ছিলো, তা সংশোধন করা হয়েছে।