Friday, July 27, 2018

ভালোবাসার জন্য লেখা চমৎকার চিঠি।


ভালোবাসার মানুকে মনের কথা বলার সবচেয়ে প্রাচীন/ঐতিহ্যবাহি মাধ্যম হলো চিঠি।যার মাধ্যমে মনের না বলা কথা গুলি প্রকাশ করা সহজ হয়।
তাই আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম ★★চিঠি★★
আমার তুমি
জানো মাঝে মাঝে হঠাৎ শুদ্ধ শুভ্র কোন ভালবাসা বাঁচতে দেখলে সাথে সাথে আমার তোমাকে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে হয়, কাচের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ অথবা বৃষ্টির ছন্দের মত মিষ্টি ভালবাসায় তোমার চারপাশ ভরে দিতে ইচ্ছে করে।
তারপরও জানো খুব ভয় হয়, আমি জানি তুমি ভালবাসো আমায় তোমার হৃদয়ের কোথাও যত্ন করে আগলে রাখা আছে আমার ছবি কিন্তু আজ থেকে ছয় বছর পরও কি তুমি এমন করে ভালবাসবে আমায় ? তখনো কি তোমার হৃদয় জুড়ে আমি খুব কাছের কেউ থাকবো!
একা একা খোলা মাঠে বসে আমাকে নিয়ে ভাববে তুমি ? নাকি তখন তোমার হৃদয় জুড়ে আমার মত অন্য কেউ ছোট্ট কুটির বানিয়ে বাস করতে শুরু করবে ?ভয় লাগে আমার অসহ্য ভয়ে কুকড়ে যাই আমি।
তোমার জন্য আমার অনুভূতিগুলো দিন দিন শুধু পাড়ভাঙ্গা নদীর মত ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়ে বাড়তেই থাকে, তোমার কাছে যেতে ভয় পাই আমি জানি যতটুকু কাছে যাবো আমার অনুভুতিগুলো ততই বাড়বে। হারতে থাকবো আমি ভালবাসার কাছে, ডুবতে থাকবো তোমার মাঝে আরো বেশী, তোমাকে সারাক্ষণ ছুঁয়ে থাকার অনুভূতিতে।
মাঝে মাঝেই জানো আমার অনুভুতিগুলো বন্যার মত বাধ ভেঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে থাকে, বাস্তবতা আর হিসাব নিকাশের সব অংক মাথা থেকে মুছে গিয়ে চারপাশটা আমার শুধু তুমিই হয়ে যাও... ভালবাসার নেশা আলো হয়ে আমার চারপাশে নিয়ন প্রদীপ জ্বালে ।
আমি তোমাকেই ভাবি , ভেবে যাই সব অকারণ হাসি আর গানের সুর ।
তাই হয়তো হঠাৎ করেই চারপাশে কোথাও শুদ্ধ শুভ্র ভালবাসার দেখা পেলে আমার দুচোখ জলে ভরে যায়। বুকের মাঝে হাহাকারের মত বাজে সুখের কোন ব্যাথা, বাচিয়ে রাখতে ইচ্ছে করে সেই ভালবাসা আমার সব কিছু দিয়ে ...
সেই ইচ্ছের মাঝেও কোথাও লুকিয়ে থাকো তুমি অন্য কোন সুপ্ত ইচ্ছে হয়ে, আমারও বাঁচতে ইচ্ছে করে তোমার সাথে শুদ্ধ সব ভালবাসায় পুরো জীবনটা জুড়ে ।
ইতি
তোমার আমি

মূল কোরআন চিনতে ও জানতে প্রথমে তালিম জানুন।

চিশতীয়া তরিকার তালিম
শুরু করতেছি আমি আমার নামে
কুরসি নামা
ইয়ানে চার পীর চৌদ্দ খানোয়াদা, হযরত সৈয়দানা আলী কঃ এর চার খলীফা
১। হযরত সৈয়দানা হাসান রাঃ ২। হযরত সৈয়দানা হোসেন রাঃ ৩। হযরত সৈয়দানা হাসান বসরি রাঃ ৪। হযরত সৈয়দানা কামিল ইবনে যেয়াদ কুদচি ছারহু রাঃ।
হযরত হাসান বসরি রাঃ হইতে চৌদ্দ খানোয়াদা, যেহেতু পাঁচ চিশতী ও নয় কাদরী।
চিশতীয়া তরিকার পরিচয়
১। হযরত খাজা আব্দুল ওয়াহেদ ইবনে যায়াদ রাঃ হইতে, যাহাদিয়া চিশতিয়া তরীকা।
২। হযরত খাজা ফযিল ইবনে আয়ায রাঃ হইতে, আইয়াযিয়া চিশতিয়া তরীকা।
৩। হযরত খাজা ইব্রাহীম আদহাম বলখী রাঃ হইতে, আদহামিয়া চিশতিয়া তরীকা।
৪। হযরত খাজা আবু হুরাইরাতুন বসরী রাঃ হইতে, হাবিবীয়া চিশতিয়া তরীকা।
৫। হযরত খাজা ইসহাক চিশতী রাঃ হইতে, মূল চিশতিয়া তরীকা হইয়াছে।
কাদরীয়া তরীকার পরিচয়
১। হযরত খাজা হাবিব আযমী রাঃ হইতে, হাবিবীয়া কাদরীয়া তরীকা।
২। হযরত খাজা বায়েযিদ বোস্তামি রাঃ হইতে, তাইফুরিয়া কাদরীয়া তরীকা।
৩। হযরত খাজা মারুফ কারখী রাঃ হইতে, কারখীয়া কাদরীয়া তরীকা।
৪। হযরত খাজা সূরী সাকতি রাঃ হইতে, সাত্তিয়া কাদরীয়া তরীকা।
৫। হযরত খাজা জোনায়েদ বোগদাদী রাঃ হইতে, জোনেদিয়া কাদরীয়া তরীকা।
৬। হযরত খাজা ইব্রাহীম আবু ইসহাক গাজনূরী রাঃ হইতে, গাজনূরীয়া কাদরীয়া তরীকা।
৭। হযরত খাজা আলাউদ্দিন তারতুসী রাঃ হইতে, তাউসিয়া কাদরীয়া তরীকা।
৮। হযরত খাজা নিযাম উদ্দিন আহাম্মদ ফারুকী রাঃ হইতে, ফেরদৌসীয়া কাদরীয়া তরীকা।
৯। হযরত খাজা সাহাব উদ্দিন শহরদ্দী রাঃ হইতে, শহরদ্দীয়া কাদরীয়া তরীকা হইয়াছে।
চিশতীয়া তরীকার প্রথম সবক
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী মোট পাঁচটি
১। হুস দরদম- সব সময় স্মরণ করা ২। নযর বার কদম- প্রতি পদক্ষেপের প্রতি স্মরণ করা ৩। সফর দর তন- দেহ মধ্যে ভ্রমণ করা ৪। খেলাওয়াতে দ্বার আঞ্জুমান- দেহ মধ্যে অবস্থিত প্রতিটা দরজা খুঁজে বাহির করা ৫। হেবযে মোবাতিশ- দরজাসমূহ খোলার পদ্ধতি জানা।
চিশতীয়া তরীকার দ্বিতীয় সবক
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী মোট পাঁচটি
৬। মোযাহেদা- যিকিরে শরিয়ত, মঞ্জিল নাছুত ৭। মোশাহেদা- যিকিরে তরিকত, মঞ্জিল মলকুত ৮। মোরাকাবা- যিকিরে হকিকত, মঞ্জিল যবরুত ৯। মোয়াইনা- যিকিরে মারিফাত, মঞ্জিল লাহুত ১০। মোকাশাফা- যিকিরে অহেদানিয়াত, মঞ্জিল হাহুত।
চিশতীয়া তরীকার তৃতীয় সবক
উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী মোট একটা
১১। ফানা ফিল্লাহ- আল্লাহর জাতের সাথে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া, বা মিশে যাওয়া। ফানা ফিল্লাহ এর তিনটি বিষয় রয়েছে। যথা-
১। ফানা ফিস শায়খ- গুরুতে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া ২। ফানা ফির রাসুল- রাসুলে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া ৩। ফানা ফিল্লাহ- আল্লাহ্‌তে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া।
চিশতীয়া তরীকার চতুর্থ ও শেষ সবক
বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণী মোট একটা
১২। বাকা বিল্লাহ- আল্লাহ্‌তে রুপান্তর হয়ে যাওয়া।
এলমে তাসাউফের আরকান আহকাম
এলমে তাসাউফের আরকান ছয়টি।
১। তেলাওয়াতে কোরআন ২। দুস্তি রাখো নবীর কোরবাই ৩। নিজকে নিজে চিনো ৪। আল্লাহ্‌র এশকে মজো ৫। অজুদ ভাণ্ডারে বিচার করো ৬। তালাশ করো অজুদ ভাণ্ডারে।
এলমে তাসাউফের আহকাম সাতটি
১। সাখাওয়াত করা ২। সবরকে এক্তেয়ার করা ৩। তকদীরের উপর ভরসা করা ৪। শোকর করা ৫। আল্লাহ্‌র তারিফ করা ৬। আল্লাহ্‌র ধ্যান করা ৭। আল্লাহ্‌র উপর ইমান রাখা।
আশেকের লাযেম ইহা করিতে আমল।
মারেফাত দিল তবে মিলিবে দখল।।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর পরিচয়
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম লিখতে মীম হরফ ও হে হরফটি তিনবার করে ব্যবহার হয়েছে।
তিন মীম এর হকিকত হল- প্রথম মীম একটি পানির নহর, দ্বিতীয় মীম একটি মধুর নহর, তৃতীয় মীম একটি মদের নহর।
তিন হে এর হকিকত হল- প্রথম হে একটি দুগ্ধের নহর, দ্বিতীয় হে একটি সমূদয় ফলের নহর, তৃতীয় হে একটি সমূদয় মাংসের নহর।
আল্লাহ্‌ বলেছেন- হে আমার হাবিব, তোমার উম্মতের মধ্যে যে, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর তিন মীম ও তিন হে এই ছয় নামের যিকির করবে, তাঁকে আমি ছয় নহরের রস পান করিয়ে ষড় ঋপু জয় করিয়ে দিব।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এ ব্যবহৃত উনিশ হরফের পুণ্যমান
১। বা- ২ ২। সিন- ৬০ ৩। মীম- ৪০ ৪। আলিফ- ১ ৫। লাম- ৩০ ৬। লাম- ৩০ ৭। ছোটহা- ৫ ৮। আলিফ- ১ ৯। লাম- ৩০ ১০। রা- ২০০ ১১। বড়-হা- ৮ ১২। মীম- ৪০ ১৩। নুন- ৫০ ১৪। আলিফ- ১ ১৫। লাম- ৩০ ১৬। রা- ২০০ ১৭। বড়-হা - ৮ ১৮। ইয়া- ১০ ১৯। মীম- ৪০
উনিশ অক্ষরের সর্বমোট পুণ্যমান= ৭৮৬
আরবি ৩১ হরফের পুন্যমান
(১) ا - আলিফ - অক্ষরের পুণ্যমান- ১ (২) ب - বা- অক্ষরের পুণ্যমান- ২
(৩) ت - তা- অক্ষরের পুণ্যমান- ৪০০ (৪) ث - ছা- অক্ষরের পুণ্যমান- ৫০০
(৫) ج - জ্বিম- অক্ষরের পুণ্যমান- ৩ (৬) ح - বড় হা- অক্ষরেরপুণ্য মান- ৮
(৭) خ - খা- অক্ষরের পুণ্যমান- ৬০০ (৮) د - দ্বাল- অক্ষরের পুণ্যমান- ৪
(৯) ذ - যাল- অক্ষরের পুণ্যমান- ৭০০ (১০) ر - রা- অক্ষরের পুণ্যমান- ২০০
(১১) ز - যা- অক্ষরের পুণ্যমান- ৭ (১২) س - সীন- অক্ষরের পুণ্যমান- ৬০
(১৩) ش - শীন- অক্ষরের পুণ্যমান- ৩০০ (১৪) ص - সোয়াদ- অক্ষরের পুণ্যমান- ৯০
(১৫) ض - দোয়াদ- অক্ষরের পুণ্যমান- ৮০০ (১৬) ط - ত্বোয়া- অক্ষরের পুণ্যমান- ৯
(১৭) ظ - জ্বোয়া- অক্ষরের পুণ্যমান- ৯০০ (১৮) ع - আইন- অক্ষরের পুণ্যমান- ৭০
(১৯) غ - গাইন- অক্ষরের পুণ্যমান- ১০০০ (২০) ف - ফা- অক্ষরের পুণ্যমান- ৮০
(২১) ك -বড় কাফ-অক্ষরের পুণ্যমান- ১০০ (২২) ق - ছোট কাফ- অক্ষরের পুণ্যমান- ২০
(২৩) ل - লাম- অক্ষরের পুণ্যমান- ৩০ (২৪) م - মীম - অক্ষরের পুণ্যমান- ৪০
(২৫) ن - নুন - অক্ষরের পুণ্যমান- ৫০ (২৬) و - ওয়া - অক্ষরের পুণ্যমান- ৬
(২৭) ه - ছোট হা - অক্ষরের পুণ্যমান- ৫ (২৮)ي - ইয়া অক্ষরের পুণ্যমান- ১০
এই ২৮টি অক্ষর ই মূলতঃ মূল কোরআনের মৌলিক অক্ষর। এ ছাড়াও মূল কোরআনে
যৌগিক অক্ষর আছে ৩টি। সেগুলির পুন্যমান নিম্নরূপ-
(২৯) لا - লামালিফ। লামালিফ মূলতঃ কোন মৌলিক অক্ষর নয়। এটা একটা যৌগিক অক্ষর। এই লামালিফ অক্ষরের মধ্যে দুটি মৌলিক অক্ষর রয়েছে। সে মৌলিক অক্ষর দুটির নাম- ل লাম + ا আলিফ = لا লামালিফ। মনে রাখবেন, আলিফ অক্ষরটি এক নম্বরে ও লাম অক্ষরটি তেইশ নম্বরে অবস্থান করছে, এবং আটাশ নম্বরে এসে এই আলিফ ও লাম মিলিত হয়ে লামালিফ হয়েছে। এই লামালিফ অক্ষরটির পুণ্য সংখ্যা বা মান সংখ্যা বা পুন্যমান হলো- ৩৪১। যেমন- যুক্ত অক্ষরের পুণ্যমান নির্ণয়ে যৌগিক অক্ষরে যুক্ত হওয়া প্রতিটি মৌলিক অক্ষরকে গুণিন আলিফ পুন্যমান=১১ দিয়ে গুণ করতে হবে, এরপর যুক্ত মৌলিক অক্ষরের গুনফলকে যোগ করলে যে উত্তর আসবে, সেটাই হবে ঐ যৌগিক অক্ষরের পুন্যমান।
সূত্রানুসারে لا লামালিফের পুণ্যমান হলো- ا আলিফ এর পুন্যমান ১ গণিত গুণিন আলিফ মান ১১ + লাম এর পুন্যমান ৩০ গণিত গুণিন আলিফ এর পুন্যমান ১১। সর্ব সাকুল্যে লামালিফের পুন্যমান ১*১১+৩০*১১= ৩৪১।
(৩০) ء - হামযা। হামযা মূলতঃ কোন মৌলিক অক্ষর নয়। এটা একটা যৌগিক অক্ষর। এই হামযা অক্ষরের মধ্যে দুটি অক্ষর রয়েছে। সে অক্ষর দুটির নাম- ا আলিফ + ي ইয়া = ء হামযা। মনে রাখবেন, আলিফ অক্ষরটি এক নম্বরে আর ইয়া অক্ষরটি ৩০ নম্বরে অবস্থিত। এই দুটি অক্ষর যুক্ত হয়ে ২৯ নম্বরে হামযা নামে রূপান্তরিত হয়েছে। হামযা অক্ষরের পুন্যমান- ১১০। যেমন- গুণিন আলিফ এর পুন্যমান ১১ , আলিফ অক্ষরের পুন্যমান ১, ও ইয়া অক্ষরের পুন্যমান ১০। সূত্রানুসারে হামযা অক্ষরের পুন্যমান ১*১০*১১=১১০।
(৩১) ى- ইইয়া বা ي ي ইয়াইয়া অক্ষরের পুণ্যমান ২২০। গুণিন আলিফ এর পুণ্যমান ১১ গণিত দুই ইয়া অক্ষরের পুন্যমান ১০+১০ = ২০। সূত্রানুসারে ইয়াইয়া অক্ষরের পুন্যমান ১১*২০=২২০।
পুণ্য মানের ভিত্তিতে মূল কোরআনের ৩১টি হরফকে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- একক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা খাকি হরফ, দশক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা আবি হরফ, শতক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা বাতি হরফ ও সাহস্রিক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা নূরী হরফ এবং মিশ্র পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা আতশি।
একক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা খাকি ৯ টি যথা-
(১) ا - আলিফ- এর পুণ্যমান- ১ (২) ب-বা- এর পুণ্যমান- ২ (৩) ج-জ্বিম- এর পুণ্যমান- ৩ (৪) د - দ্বাল- এর পুণ্যমান- ৪ (৫) ه - ছোটহা - এর পুণ্যমান- ৫ (৬) و-ওয়া - এর পুণ্যমান- ৬ (৭) ز - যা- এর পুণ্যমান- ৭ (৮) ح-বড়হা- এর পুণ্য মান- ৮ (৯) ط - ত্বোয়া- এর পুণ্যমান- ৯
দশক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা আবি হরফ ৯টি-
(১)ي -ইয়া- এর পুণ্যমান- ১০ (২) ق-ছোটকাফ- এর পুণ্যমান- ২০ (৩) ل- লাম- এর পুণ্যমান- ৩০ (৪) م-মীম - এর পুণ্যমান- ৪০ (৫) ن-নুন - এর পুণ্যমান- ৫০ (৬) س - সীন- এর পুণ্যমান- ৬০ (৭) ع - আইন- এর পুণ্যমান- ৭০ (৮) ف - ফা- এর পুণ্যমান- ৮০ (৯) ص - সোয়াদ- এর পুণ্যমান- ৯০
শতক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা বাতি হরফ ৯টি-
(১) ك -বড়কাফ- এর পুণ্যমান- ১০০ (২) ر - রা- এর পুণ্যমান- ২০০ (৩) ش - শীন- এর পুণ্যমান- ৩০০ (৪) ت - তা- এর পুণ্যমান- ৪০০ (৫) ث - ছা- এর পুণ্যমান- ৫০০ (৬) خ - খা- এর পুণ্যমান- ৬০০ (৭) ذ - যাল- এর পুণ্যমান- ৭০০ (৮) ض - দোয়াদ- এর পুণ্যমান- ৮০০ (৯) ظ - জ্বোয়া- এর পুণ্যমান- ৯০০
সাহস্রিক পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা নূরী হরফ ১টি-
(১) غ - গাইন- এর পুণ্যমান- ১০০০
মিশ্র পুন্যমান বিশিষ্ট হরফ বা আতশি হরফ ৩টি-
(১) لا - লামালিফ এর পুন্যমান- ৩৪১ (২) ى- ইয়াইয়া এর পুণ্যমান ২২০ (৩) ء - হামযা- এর পুন্যমান-১১০
মূল কোরআন লিখিত হয়েছে মূলতঃ এই ৩১ অক্ষর দ্বারা। তাই এই ৩১টি অক্ষরই মূলতঃ মূল কোরআন। এই মূল কোরআনের আয়াত সংখ্যা ৬৬৬৬টি। এখন, মূল কোরআনের এই ৩১টি অক্ষরের পুন্যমান যোগ করে দেখুন, ৬৬৬৬ পাবেন। মূল কোরআনের মৌলিক সূরাত সংখ্যা ৩১টি। এই ৩১টি সূরাত এর মধ্যেই আরও ৮৩টি সূরাত লুকিয়ে আছে।
এই কোরআন চিনিতে একজন কামেল গুরুর সরনাপন্ন হওয়া চাই। ইহা ব্যতীত এই মূল কোরআন চিনা ও জানা কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়। আর যতক্ষণ এই মূল কোরআন না চিনিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্রষ্টার মূল উপাসনা বিষয়ে অজানাই থাকিবে, ও সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতিকেই এবাদত জ্ঞানে উপাসনা চালিয়ে যাইবে, আখিরাতে যা তোমার কোন কাজেই আসিবা না। তাই যত দ্রুত সম্ভব একজন কামেল গুরুর সান্নিধ্য গ্রহণ করে মূল কোরআন জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
হরুফে মুকাত্তায়াত পরিচয়
হরুফে মুকাত্তায়াতে মোট ১৪টি হরফ ব্যবহার হয়েছে
১। আলিফ ২। লাম ৩। মীম ৪। সোয়াদ ৫। রা ৬। বড়-কাফ ৭। ছোট-হা ৮। ইয়া ৯। আইন ১০। সীন ১১। তোয়া ১২। বড়-হা ১৩। ছোট-কাফ ১৪। নুন।
কোন কোন সূরার শুরুতে কোন কোন হরুফে মুকাত্তায়াত রয়েছে
১। আলিফ লাম মীম- সূরাত বাকারা ২। আলিফ লাম মীম- সূরাত আল এমরান ৩। আলিফ লাম মীম সোয়াদ- সূরাত আরাফ ৪। আলিফ লাম রা- সূরাত ইউনুস ৫। আলিফ লাম রা- সূরাত হুদ ৬। আলিফ লাম রা- সূরাত ইউসুফ ৭। আলিফ লাম মীম রা- সূরাত রা’আদ ৮। আলিফ লাম রা- সূরাত ইবরাহীম ৯। আলিফ লাম রা- সূরাত হিজর ১০। বড়-কাফ ছোট-হা ইইয়া আইন সোয়াদ- সূরাত মারইয়াম ১১। ত্বোয়া ছোট-হা- সূরাত ত্বোয়া ছোট-হা ১২। ত্বোয়া সিন মীম- সূরাত শু’আরা ১৩। ত্বোয়া সিন- সূরাত নামল ১৪। ত্বোয়া সিন মীম- সূরাত কাসাস ১৫। আলিফ লাম মীম- সূরাত আনকাবুত ১৬। আলিফ লাম মীম- সূরাত রুম ১৭। আলিফ লাম মীম- সূরাত লুকমান ১৮। আলিফ লাম মীম- সূরাত সিজদাহ ১৯। ইয়া সিন- সূরাত ইয়া সিন ২০। সোয়াদ- সূরাত সোয়াদ ২১। বড়-হা মীম- সূরাত মুমিন ২২- বড়-হা মীম- সূরাত বড়- হা মীম সিজদাহ ২৩। বড়-হা মীম আইন সিন ছোট-কাফ- সূরাত শুরা ২৪। বড়-হা মীম- সূরাত যুখরুফ ২৫। বড়-হা মীম- সূরাত দুখান ২৬। বড়-হা মীম- সূরাত যাসিয়াস ২৭। বড়-হা মীম- সূরাত আহকাফ ২৮। ছোট-কাফ- সূরাত ছোট-কাফ ২৯। নুন- সূরাত কলম।
আলিফ লাম মীম
১। আলিফ লাম মীম- সূরাত বাকারা ২। আলিফ লাম মীম- সূরাত আল এমরান ৩। আলিফ লাম মীম- সূরাত আনকাবুত ৪। আলিফ লাম মীম- সূরাত রুম ৫। আলিফ লাম মীম- সূরাত লোকমান ৬। আলিফ লাম মীম- সূরাত সিজদাহ
বড়-হা মীম
১। বড়-হা মীম- সূরাত মুমিন ২। বড়-হা মীম- সূরাত বড়-হা মীম সিজদাহ ৩। বড়-হা মীম- সূরাত যুখরুফ ৪। বড়-হা মীম- সূরাত দুখান ৫। বড়-হা মীম- সূরাত যাসিয়াস ৬। বড়-হা মীম- সূরাত আহকাফ
আলিফ লাম রা
১। আলিফ লাম রা- সূরাত ইউনুস ২। আলিফ লাম রা- সূরাত হুদ ৩। আলিফ লাম রা- সূরাত ইউসুফ ৪। আলিফ লাম রা- সূরাত ইবরাহীম ৫। আলিফ লাম রা- সূরাত হিজর
ত্বোয়া সিন মীম
১। ত্বোয়া সিন মীম- সূরাত শু’আরা ২। ত্বোয়া সিন মীম- সূরাত কাসাস
১। বড়-হা মীম আইন সিন ছোট-কাফ- সূরাত শুরা
২। ছোট-কাফ- সূরাত ছোট-কাফ
৩। নুন- সূরাত কলম।
৪। আলিফ লাম মীম সোয়াদ- সূরাত আরাফ
৫। আলিফ লাম মীম রা- সূরাত রা’আদ
৬। বড়-কাফ ছোট-হা ইয়া আইন সোয়াদ- সূরাত মারইয়াম
৭। ত্বোয়া ছোট-হা- সূরাত ত্বোয়া ছোট-হা
৮। ইয়া সিন- সূরাত ইয়া সিন
৯। সোয়াদ- সূরাত সোয়াদ
১০। ত্বোয়া সিন- সূরাত নামল
মোট হরুফে মুকাত্তায়াতের হরফ
১। আলিফ ১৩ বার ২। লাম ১৩ বার ৩। মীম ১৭ বার ৪। বড়-হা ৭ বার ৫। রা ৬ বার ৬। ত্বোয়া ৪ বার ৭। সিন ৫ বার ৮। আইন ২ বার ৯। ছোট-কাফ ২ বার ১০। নুন ১ বার ১১। সোয়াদ ৩ বার ১২। বড়-কাফ ১ বার ১৩। ইয়া ২ বার ১৪। ছোট হা ২ বার
মোট আলিফ
আলিফ- ১৩ + লাম- ১৩ + মীম- ১৭ + সোয়াদ- ৩ + রা- ৬ + ছোট-হা- ২ + ইয়া- ২ + ত্বোয়া- ৪ + সিন- ৫ + বড়-হা- (৭+৭)=১৪ আইন- ২ + ছোট-কাফ- ২ + নুন- ১ + বড়-কাফ- (১+১)=২ = ৮৬ + মৌলিক অক্ষর ২৮ = ১১৪
মূল কোরআনের মোট সূরাত সংখ্যা উপরিউক্ত ১১৪টি
তিনের তালিমের বিবরণ
মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে মৌলিক যে তিনটি উপাদানের ব্যবহার হয়েছে, সেই তিন উপাদানের বিবরণকেই মুলতঃ তিনের তালিম বলে। প্রচলিত কোরআন মহাবিশ্ব সৃষ্টির মৌলিক এই তিন উপাদানের সাংকেতিক নাম হিসাবে উল্লেখ করেছে, আলিফ লাম মীম। এই আলিফ লাম ও মীম ই মূলত মহাবিশ্ব সৃষ্টির মৌলিক তিন উপাদানের সাংকেতিক নাম। আর এর বিস্তারিত বিবরণ হলো-
১। আলিফ (মহাবিশ্ব সৃষ্টির পুরুষ স্বত্বা) । যাহাকে আবুদিয়াত বলে। যাহার সেফাত বা গুণ তিনটি। যথা- (১)সামিউন- শ্রবণ শক্তি (২) বাসিরুন- দর্শন শক্তি (৩) কলিমুন-বাক শক্তি।
২। লাম (প্রকৃতি স্বত্বা) । যাহাকে রবুবিয়াত বলে। যাহার সেফাত বা গুণ তিনটি। যথা- (১) আলিমুন- জ্ঞান শক্তি (২) মুরিদুন- যৌন শক্তি (৩) কুদিরুন- কর্ম শক্তি।
৩। মীম (অপ্রাকৃত স্বত্বা) । যাহাকে উলুহিয়াত বলে । যাহার সেফাত বা গুণ একটি। যথা- (১) হাইউন- জীবিত শক্তি।
মূল তালিম
প্রথম আনাছ বা জাত, সাফা বা নূর
১। রূহ- কুদচি ২। নফস- রহমানি ৩। অজুদ- ওয়াযেবল ৪। রাহা- অহেদানিয়াত ৫। মোকাম- অরা অল অরা ৬। মঞ্জিল- হাহুত ৭। মক্কেল- আযরাইল ৮। ঈমান- হুয়াল একিন ৯। রঙ- সফেদ ১০। স্বাদ- তলখে জহুর।
আনাছের সাফার ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। সওহত- কামনা ২। মেহের- দয়া ৩। গোস্যা- রাগ ৪। বখিল- কৃপণ ৫। ডর- ভয়।
কলবে সাফার ফেল বা কর্ম আটটি
১। বেহুঁশ- অচেতন ২। গাফলত- আলস্য ৩। ওয়াসওয়াসা- স্পর্শকাতরতা ৪। খাতরা- বিশ্বাসঘাতকতা ৫। তাজল্লি- মহান হওয়ার বাসনা, পরিস্কার হওয়ার বাসনা, ঝলক বিশিষ্ট ৬। মেহের- দয়া ৭। বখিলি- কৃপণতা ৮। খওফ- ভীতি প্রাপ্ত হওয়া।
রূহ কুদচির ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। ফেকের- চিন্তা করা ২। সবর- ধৈর্য ৩। এলেম- জ্ঞান ৪। ইনসাফ- বিবেচনাবোধ ৫। কামসুকান- অসুস্থতা।
নফস রহমানির ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। হাতেফ- নিয়তি বা ভাগ্য ২। আদল- বিচারিক ক্ষমতা ৩। তুয়াজ্জা- শীর্ষতা ৪। আক্কেল- বিবেচনাবোধ ৫। খুদি- যুদ্ধ ক্ষমতা।
ওয়াযেবল অজুদের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। দেল ২। অহম ৩। আক্কেল ৪। খাতরা ৫। খুদি।
রাহা অহেদানিয়াতের ফেল বা কর্ম চারটি
১। গাইজা ২। খাতরা ৩। জোলমাত ৪। নোকতাজামা।
মোকাম মঞ্জিল দেহের কোথায় এবং কাহার কোন সুরাত
মঞ্জিল- হাহুত, মগজোকি বা ধুকধুকি। মোকাম- অরা অল অরা, মগজোকি হরকত, সুরাতে- সাফা, মেসালে- পরী।
দ্বিতীয় আনাছ বা জাত বাদ বা বাতাস
১। রূহ- ইনসানি ২। নফস- মোৎমাইন্না ৩। অজুদ- অহেদাল ৪। রাহা- মারিফাত ৫। মোকাম- আওদানা ৬। মঞ্জিল- হাহুত ৭। মক্কেল- ইস্রাফিল ৮। ঈমান- হক্কোল একিন ৯। রঙ- সবুজ
১০। স্বাদ- খাট্টা।
আনাছের বাদের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। হেলা ২। চলা ৩। ফোলা ৪। কাঁপা ৫। হাঁই।
কলবে বাদের ফেল বা কর্ম আটটি
১। হরকত ২। ফোলা ৩। কাঁপা ৪। যম হাঁই ৫। ঢেকুর ৬। ছিক ৭। হেঁচকি ৮। শ্বাস।
রূহ ইনসানির ফেল বা কর্ম ছয়টি
১। শুকুর ২। শুকুনাথ ৩। রেজামন্দি ৪। শরনজাম ৫। মহব্বত খলক ৬। হকজুঁই।
নফস মোৎমাইন্নার ফেল বা কর্ম সাতটি
১। নেদা ২। বশারত ৩। হেদায়েত ৪। এনায়েত ৫। কেরামত ৬। বেলায়েত ৭। নবুয়াত।
অহেদাল অজুদের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। জজবা ২। মোমেছা ৩। মোছেফা ৪। হজমা ৫। দফেহা।
রাহা মারিফাতের ফেল বা কর্ম চারটি
১। শাহাদত ২। দিদারে কত্তনি ৩। হাস্তিক বেকুল ৪। হাস্তি কলুববুনা।
মোকাম মঞ্জিল দেহের কোথায় এবং কাহার কোন সুরাত
মঞ্জিল- লাহুত, কান বলে যারে। মোকাম- আওদানা, খফরে। সুরাতে- বাত। মেসালে- আজদাহা। সুরাতে- ইস্রাফিল, শিকারি বাজ।
তৃতীয় আনাস আতশ বা আগুন
১। রূহ- ইনসানি ২। নফস- আম্মারা ৩। অজুদ- মোমকেনাল ৪। রাহা- শরিয়াত ৫। মোকাম- কাবকাউসিন ৬। মঞ্জিল- নাছুত ৭। মক্কেল- আজাজিল ৮। ঈমান- বেল গায়েব একিন ৯। রঙ- ছিয়া বা কালো ১০। স্বাদ- কড়ুয়া বা তিতা।
আনাসের আতশের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। ভুক ২। পিয়াস ৩। সুস্থি ৪। নিন্দ ৫। হজম।
কলবে আতশের ফেল বা কর্ম আটটি
১। ভুক ২। পিয়াস ৩। সুস্থি ৪। নিন্দ ৫। হজম ৬। শহদত ৭। তৌনিদ ৮। খাহেশ।
রূহ হায়ানির ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। জেহলত ২। কিবরে ৩। কিনা ৪। কহর ৫। কুফর।
নফস আম্মারার ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। নেফাক ২। হাশদ ৩। রিয়াকারী ৪। বোগজ ৫। লা-ইনসাফি।
মোমকেনাল অজুদের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। সামেয়া ২। লামেসা ৩। বাসেরা ৪। যায়েফা ৫। ছকহা।
শরিয়াতের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। আরওয়া ২। আনকালেকুল ৩। সেফাত ৪। নূর ফরদা ৫। তত্ত্ব বিতত্ত্ব।
মোকাম মঞ্জিল দেহের কোথায়, এবং কাহার কোন সুরাত
মঞ্জিল- নাসুত, নাক ও মুছ। মক্কেল- মেকাইল। মোকাম- কাবকাউসিন, ভ্রু বলে যারে। সুরাতে- আতশ। মেসালে- শের পালনা। সুরাতে- আজাজিল, আজদাহা আগ।
চতুর্থ আনাস আব বা পানি
১। রূহ- নাবাদাত ২। নফস- লোয়াম্মা ৩। অজুদ- মোমতেনাল ৪। রাহা- তরিকত ৫। মোকাম- মাহামুদা ৬। মঞ্জিল- মলকুত ৭। মক্কেল- মেকাইল ৮। ঈমান- এলমল একিন ৯। রঙ- লাল ১০। স্বাদ- মিঠা।
আনাসের আবের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। খুন ২। মণি ৩। পেশাব ৪। পছিনা ৫। থুক
কলবে আবের ফেল বা কর্ম নয়টি
১। খুন ২। মণি ৩। মজি ৪। গুর্দা ৫। চর্বি ৬। পেশাব ৭। পছিনা ৮। আছু ৯। থুক
রূহ নাবাতির ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। দানায়ী ২। রাস্তি ৩। তাহকিক ৪। অফায় ৫। একিন
নফস লোয়াম্মার ফেল বা কর্ম ছয়টি
১। এলহাম ২। দরিয়াফত ৩। জেহাদ ৪। এলম ৫। এস্তাহার ৬। খুশবাছি
মোমতেনাল অজুদের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। গোশত ২। পোস্ত ৩। পশম ৪। জবান ৫। বিনি
তরিকতের ফেল বা কর্ম চারটি
১। মেসালে তুয়াজ্জা ২। শহুদ ৩। তাজল্লি ৪। কেয়াস
মোকাম মঞ্জিল দেহে কোথায় এবং কাহার কোন সুরাত
মঞ্জিল- মলকুত, নেত্র বলে যারে। মোকাম- মাহামুদা, রগ, পারা, পেশানি। সুরাতে- আব। মেসালে- মাহি। সুরাতে- মেকাইল। মেসালে- ফিল বা হস্তী।
পঞ্চম আনাস খাক বা মাটি
১। রূহ- যামাদাত ২। নফস- মুলহেমার ৩। অজুদ- আরেফেল ৪। রাহা- হকিকত ৫। মোকাম- সোলতানন নসিরা ৬। মঞ্জিল- জবরুত ৭। মক্কেল- জিবরাঈল ৮। ঈমান- আইনাল একিন ৯। রঙ- জরদ ১০। স্বাদ- নিমকিন।
আনাসের খাকের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। হাড় ২। রগ ৩। গোশত ৪। পোস্ত ৫। পশম
কলবে খাকের ফেল বা কর্ম আটটি
১। হাড় ২। রগ ৩। কুচলা ৪। পশম ৫। গোশত ৬। নাখুন ৭। ময়লা ৮। বারহানা
রূহ যামাদাতের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। আমরে পাঞ্জেগানা ২। জেহাদে তকিয়া ৩। বন্দেগী ৪। আজিজী ৫। এনফেসারি
নফসে মুলহেমারের ফেল বা কর্ম ছয়টি
১। অহি ২। হুকুমত ৩। তৌফিক ৪। কিনায়েত ৫। হকজুঁই ৬। দানিন্দা
আরেফেল অজুদের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। দেহাল ২। দাস্ত ৩। পা ৪। লব ৫। মেকাদ
রাহা হকিকতের ফেল বা কর্ম পাঁচটি
১। খাইরাত ২। অজুদ ৩। ফেল ৪। কুদরাত ৫। ফহম
মোকাম মঞ্জিল দেহের কোথায় এবং কাহার কোন সুরাত
মঞ্জিল- জবরুত, জবান বলে যারে। মোকাম- সোলতানন নসিরা, মুখ। সুরাতে জিবরাঈল। মেসালে তাউস বা ময়ূর। সুরাতে- খাক, মেসালে- ফিল বা হস্তী।
অজুদে চৈদ্দ ভুবন বা সাত আসমান ও সাত জমিন
অজুদে সাত আসমান
১। দম- শ্বাস প্রশ্বাস ২। কদম- পোস্তে আদমের ৩। অহম- সলবে আব্দুল্লাহর ৪। ফহম- মায়ের পেটেতে ৫। আক্কেল- বেহেশতে ৬। এলেম- সিপি দরিয়ায় ৭। হেলেম- মুসলমানের দিলেতে।
অজুদে সাত জমিন
১। পশম-জাত ২। চামড়া- সেফাত ৩। খুন- মাবুদ ৪। গোশত- আব্দু ৫। রগ- আল্লাহ্‌ ৬। হাড়- আল্লাহ্‌ ৭। গুর্দা- আল্লাহ্‌।
পাঞ্জাতনের হাকিকাত
জাহের বাতুন বস্তু ফেরেশতা
১। হযরত মুহাম্মদ খফি সাফা বা নূর আজরাইল
২। হযরত আলী সিররি বাদ ইসরাফিল
৩। হযরত ফাতিমা রুহি আতশ আজাজিল
৪। হযরত হাসান কালবি আব মেকাইল
৫। হযরত হোসাইন জলি খাক জিবরাঈল
পাঞ্জাতনের মোকাম মঞ্জিল
মোকাম মঞ্জিল মোকাম মঞ্জিল
১। অরা অল অরা হাহুত- ধুকধুকি ২। আওদানা লাহুত- কান
৩। কাবকাউসিন নাসুত- নাক ৩। মাহামুদা মোলকুত- চোখ
৫। সোলতানন নসিরা জবরুত- জবান
পাঞ্জাতনের ঈমান ও একিন
ফেরেশতা একিন অর্থ
১। আজাজিল বেলগায়েব একিন অদেখা বিশ্বাস
২। মেকাইল এলমল একিন জ্ঞান দ্বারা বিশ্বাস
৩। জিবরাঈল আইনাল একিন দেখে বিশ্বাস
৪। ইস্রাফিল হক্কোল একিন চিনে বিশ্বাস
৫। আজরাইল হুয়াল একিন দেখে চিনে বিশ্বাস
শরিয়াতের পাক পাঞ্জাতন
শরিয়াতে পাক পাঞ্জাতন বা পবিত্র পাঁচ দেহ হিসাবে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত হল-
১। হযরত মোহাম্মদ ২। হযরত আলী ৩। মা ফাতিমা ৪। হযরত হাসান ৫। হযরত হোসেন।
হযরত মোহাম্মদের চার ছেলে, যথা- তাহের, তৈয়ব, কাশেম ও মহসিন। চার মেয়ে, যথা- ফাতিমা, রুকাইয়া, যয়নব ও কুলসুম। এই চার মেয়ের স্বামীগণ হলেন- ওকবা, ওতবা, ওসমান ও আলী। এখানে প্রশ্ন আসে যে, মোহাম্মদের চার মেয়ে, চার ছেলে ও চার জামাতা থাকলেও, কেবল মাত্র এক মেয়ে অর্থাৎ, ফাতিমা ও এক জামাতা অর্থাৎ, আলী পাক পাঞ্জাতন বা পবিত্র পাঁচ দেহের মধ্যে স্থান পেলো, বাঁকি সন্তান ও জামাতারা পাক বা পবিত্র দেহের মধ্যে স্থান পেলো না। তাহলে কি ফাতিমা বাদে মোহাম্মদের অন্য সন্তানেরা নাপাক তন বা অপবিত্র দেহ? ও আলী বাদে অন্য জামাতারা নাপাক তন বা অপবিত্র দেহ?
মারিফাতের পাকপাঞ্জাতন
প্রতিটি জীবই পাঁচটি উপাদান বা বস্তু দ্বারা গঠিত। সেই পাঁচটি উপাদান হলো- আগুন, পানি, মাটি, বাতাস, নূর। এই পাঁচটি উপাদানের স্ব-স্ব ভাবে একটি একটি করে তন বা দেহ আছে। যেমন-
১। আগুনের তৈরি দেহের নাম- মোমকেনাল অজুদ ২। পানি দ্বারা তৈরি দেহের নাম- মোমতেনাল অজুদ ৩। মাটি দ্বারা তৈরি দেহের নাম- আরেফেল অজুদ ৪। বাতাস দ্বারা তৈরি দেহের নাম- অহেদাল অজুদ ৫। নূর দ্বারা তৈরি দেহের নাম- ওয়াজেবল অজুদ।
প্রতিটি জীবই নিজ নিজ দেহের মাঝে পাঁচটি করে দেহ নিয়ে জীবন ধারণ করে আছে। যে জীব তাঁর মধ্যে অবস্থিত পাঁচটি দেহকে পবিত্র করতে পেরেছে, সেই জীবটি নিজেই পাকপাঞ্জা তন বা পবিত্র পাঁচ দেহের অধিকারী হয়ে যায়। তখন সেই জীবকে পাকপাঞ্জা তন বলে।
মুর্শিদের নিকট কি নিয়ে যাইবে
১। নফস ২। দেল ৩। রূহ ৪। সিররি এবং ভেদ নূর ৫। জাত গঞ্জ মুখফি।
অজুদে কে কাহার মুরিদ
১। নফস- দেলের মুরিদ ২। দেল- রূহের মুরিদ ৩। রূহ- সিররি ও ভেদের মুরিদ ৪। সিররি- নূরের মুরিদ ৫। নূর- গঞ্জ মুখফি এর মুরিদ। এই নূর জাত গঞ্জ মুখফিই নিজ অজুদ।
মৃত্যুর সময়ের ও পরের অবস্থা
১। রোজ কিয়ামত ২। রোজ হাশর ৩। রোজ মিশাক ৪। রোজ আজল ৫। রোজ যাজা।
১। রোজ কিয়ামত- মৃত্যুর সময়ের অবস্থা ২। রোজ যাজা- যখন মাটিতে সোপর্দ করে ৩। রোজ মিশাক- জাতের সাথে জাত মিশে যাওয়া ৪। রোজ আজল- কৃত কর্মের ফল ৫। রোজ হাশর- ফল লইয়া উঠা।
নামাযের হাকিকত
ওয়াক্ত হাল পড়েছিলেন
১। ফজর নামায- জলি আদম শফিউল্লাহ
২। যোহর- কালবি ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ
৩। আসর- রুহি ইউনুস নবিউল্লাহ
৪। মাগরিব- সিররি ঈসা রুহুল্লাহ
৫। ইশা- খফি মুসা কালামুল্লাহ
৬। হযরত মোহাম্মদ সাঃ পড়েছিলেন ওয়াজেবল বেতের এর তিন রাকাত নামায।
কোন মোকামে কোন ফেরেশতা
মোকাম মঞ্জিল ফেরেশতা
১। অরা অল অরা- হাহুত আজরাইল
২। আওদানা- লাহুত ইস্রাফিল
৩। কাবকাউসিন- নাসুত আজাজিল
৪। মাহামুদা- মুলকুত মেকাইল
৫। সুলতানন নসিরা- জবরুত জিব্রাইল
বাতুনে পাঁচ ফেরেশতার নাম
১। আজাজিল- বিনাই ২। মিকাইল- মতলব ৩। জিব্রাইল- বাক্য ৪। ইস্রাফিল- পৌঁছানো ৫। আজরাইল- শোনা।
কোন হালে কোন ফেরেশতা
ফেরেশতা হাল ফেরেশতা হাল
১। আজাজিল- রুহি ২। মেকাইল- কালবি
৩। জিবরাঈল- জলি ৩। ইস্রাফিল- সিররি
৫। আজরাইল- খফি
পাক পাঞ্জাতনের হাল
১। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম- খফি হাল ২। হযরত আলী করমুল্লাহ ওয়াজহু- সিররি হাল ৩। ফাতিমাতুজ্জোহরা রাদি আল্লাহু আনহা- রুহি হাল ৪। হযরত হাসান রাদি আল্লাহু আনহু- কালবি হাল ৫। হযরত হোসেন রাদি আল্লাহু আনহু- জলি হাল।
কাহার কোন তাসির
১। আপনি আগে দেখাকে খফি যে হইলো ২। দেখিতে দেখিতে যবে মশগুল হইলো ৩। মশগুলে যবে আন্দেশা হয়, সেই হাল রুহির ৪। আন্দেশা যবে ইয়াদে আছে, সেই হাল কালবি ৫। জহুরে আইলো ফেল, সেই হাল জলি।
কোন আনাসের কোন হাল
১। সাফা বা নূর আনাসকে খফি বলে ২। বাদ আনাসকে সিররি বলে ৩। আতশ আনাসকে রুহি বলে ৪। আব আনাসকে কালবি বলে ৫। খাক আনাসকে জলি বলে।
কাহার কোন খোরাকী
১। কালবের খোরাকী- যিকের ২। রূহের খোরাকী- ধ্যান ৩। সিররি এর খোরাকী- এলম, মশগুলতা ৪। খফি এর খোরাকী- মোকাশাফা, মোরাকাবা, কাশফ ৫। আখফা এর খোরাকী- ফানাউল ফানা, মউতা, বেহুঁশ।
খামসা আনাসের পয়দায়েশ কথা
১। আনাসের সাফা হইতে- বাতাস পয়দা ২। আনাসের বাতাস হইতে- আগুন পয়দা ৩। আনাসের আগুন হইতে- পানি পয়দা ৪। আনাসের পানি হইতে- মাটি পয়দা।
কে কাহাকে হজম করে
১। মাটিকে হজম করে- পানি ২। পানিকে হজম করে- আগুন ৩। আগুনকে হজম করে- বাতাস ৪। বাতাসকে হজম করে- সাফা বা নূর ৫। সাফা বা নূরকে হজম করে- জাত সে কাদিম।
সাফার সাত সেফাত পয়দাশ ও চার এতবার
হাইউন সেফাতে জাত জিন্দা বরাবরি। হাইউন ঐ জাত নূরের নাম আহদিয়াত হয়। ঐ নূর এশকো
লইয়া চুপে চুপে রয়। এশকো হইতে অহদত পয়দা হয়। অহদত হইতে আওদিয়াত পয়দা হয়। যথা- ১। আহদিয়াত এবং নূর এতবার ২। হাইউন এবং এলম এতবার ৩। অহদত এবং সহুদ এতবার ৪। অহেদিয়াত এবং অজুদ এতবার।
আপনার খাতিরে জাত যখন জ্বলিলো।
আলিমুন সেফাত পয়দা তখনই হইল।।
নূর হইতে মুরিদুন সেফাত হইলো।
যখন আহদিয়াত সহুদ হইলো।।
আহদত কুয়াতে সেপ্ত কুদির জন্মিলো।
আহদিয়াত জাত হাইউন সেফাতে ছিল।।
ঐ আহদিয়াত জাত আপনি কওত দেনেওয়ালা। তাঁহার কওতে আর তিন এছেম এবং তিন সেফাত হইয়াছে। এবং উপরিউক্ত ঐ এতবারিতে এই চার সেফাত। যথা-
১। হাইউন ২। আলিমুন ৩। কুদিরুন ৪। মুরিদুন।
সেফাতে আলিমুনের মর্তবা হইতে- সামিউন সেফাত। সেফাতে মুরিদুনের মর্তবা হইতে- বসিরুন সেফাত। সেফাতে কুদিরুনের মর্তবা হইতে- কলিমুন সেফাত। যাহাকে সাত সেফাত বা উম্মে হায়াত বলে।
আল্লাহ্‌র সাত সেফাত
১। হাইউন- জীবিত শক্তি ২। আলিমুন- জ্ঞান শক্তি ৩। কুদিরুন- কর্ম শক্তি ৪। মুরিদুন- এরাদা বা যৌন শক্তি ৫। সামিউন- শ্রবণ শক্তি ৬। বসিরুন- দর্শন শক্তি ৭। কলিমুন- বাক শক্তি।
পাঁচ জাতের বিবরণ
ফারসি বাংলা সংস্কৃতি
১। নূর জ্যোতি ব্যোম
২। বাদ বাতাস মরুৎ
৩। খাক মাটি ক্ষিতি
৪। আব পানি অপ
৫। আতশ আগুন তেজ
কোন জাত হতে কোন সেফাতের উৎপত্তি
জাত সেফাত জাত সেফাত
১। সাফা বা নূর হইতে হাইউন ২। বাদ হইতে আলিমুন, সামিউন
৩। আতশ হইতে মুরিদুন, বসিরুন ৪। আব হইতে কলিমুন
৫। খাক হইতে কুদিরুন
অজুদে সাত আসমান ও সাত জমিন
আসমান অর্থ জমিন অর্থ
১। দম শ্বাসপ্রশ্বাস ১। পশম লোম
২। কদম চলাফেরা ২। চামড়া ত্বক
৩। অহম চিন্তা ৩। খুন রক্ত
৪। ফহম চৈতন্য ৪। গোশত মাংস
৫। আক্কেল বিবেক ৫। রগ শিরা
৬। এলেম জ্ঞান ৬। হাড় হাড্ডি
৭। হেলেম হিম্মত ৭। গুর্দা মজ্জা
হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর মোকাম পরিচয়
১। প্রথম মোকাম- সেতারায় ২। দ্বিতীয় মোকাম- পোস্তে আদমের ৩। তৃতীয় মোকাম- সলবে আব্দুল্লাহর ৪। চতুর্থ মোকাম- গর্ভে আমেনার ৫। পঞ্চম মোকাম- বেহেশতে ৬। ষষ্ঠ মোকাম- সিপি দরিয়ায় ৭। সপ্তম মোকাম- প্রাণীর দিলেতে।
অহদত সেফাতে খুঁজিলে যে মেলে। অহদত সে ঢেউ উলুহিয়াত দরিয়া।।
তিন কাহাকে বলে
১। যামাদাত- পাথর, মাটি, লোহা, পিতলসহ সমূহ ধাতব পদার্থ ২। নাবাদাত- গুল্ম, লতা ও বৃক্ষাদি যত ৩। হায়ানাত- চলমান প্রাণীসমূহ।
অজুদে তিনের মোকাম
১। যামাদাত- হাড্ডি ২। নাবাদাত- মাংস, মজ্জা, চুল, রগ ৩। হায়ানাত- প্রাণীসমূহ।
অজুদে নব গ্রহের নাম
১। বুধ ২। শুক্র ৩। ধরণী ৪। মঙ্গল ৫। বৃহস্পতি ৬। শনি ৭। অধরা ৮। দেবী ৯। গঙ্গা।
নজুলের প্রথম নয় ঠাই এর নাম
১। আহদিয়াত ২। অহদত ৩। অহেদিয়াত ৪। আলমে আরওয়া ৫। আলমে মেসাল ৬। আলমে হেচ্ছা ৭। আলমে জেসেম ৮। আলমে হাইয়ান ৯। আলমে ইনসান।
নজুলের দোসরা তৌর
১। গঞ্জ মুখফি ২। জামাদাত ৩। নাবাদাত ৪। হায়ানাত ৫। মণি ৬। আলকা ৭। লটকা হুয়া খুন ৮। মগজা বা টুকরা গোশত ৯। জলিল বা দায়রা ১০। সেকেল ১১। তেফেল ১২। কামেল।
মোসাহাব কোরআনের কথা
প্রত্যেক আনাসের খাসলত পাঁচ করে হয়। অজুদ গঠনে আনাস পাঁচটিই রয়।।
পাঁচ আনাসের খাসলত মোট হয় পঁচিশ। আনাসের পাঁচ যোগে হয় দেখো ত্রিশ।।
পাঁচ পাঁচে পঁচিশ পাঁচ ত্রিশ জানিবে। তিরিশ পারার এই কোরআন মানিবে।।
তিরিশ সেপারার এই অজুদ কোরআন। তেলাওয়াত করো তুমি কহিনু সন্ধান।।
অজুদে বাদশাহ ও উজির
বাদশাহ উজির বাদশাহ উজির
১। রূহ আক্কেল ২। নফসে আম্মারা শয়তান
৩। দেল জবান।
অজুদে সূরা ও আয়াত পরিচয়
অজুদে সূরা দেল ও আয়াত জবান।
কোরআনের পরিচয়
১। কোরআনের প্রাণ- আদব ২। কোরআনের শের- বিসমিল্লাহ্‌ ৩। কোরআনের মাতা- সূরা ফাতিহা ৪। কোরআনের তাজ- সূরা আর রহমান ৫। কোরআনের দেল- সূরা ইয়াসিন ৬। কোরআনের আরশ- সূরা বাকারা ৭। কোরআনের চেরাগ- সূরা মূলক ৮। কোরআনের ইয়ার বা বন্ধু- আয়াতুল কুরসি ৯। ওয়াকেব কোরআন- তাশদীদে পাইবে।
অজুদে মসজিদ মেহরাব
১। মসজিদ- পেশানি বা কপাল ২। মেহরাব- সিনা বা বুক ৩। মিম্বর- মাথা ৪। চেরাগ- দুই নয়ন।
বারো বুরুজের বিচে সাত সেতারা
পহেলা সেতারা যোহাল দাহকানি- যুদি ও দোনা দুই বুরুজ তাঁর কালবে থাকে। দোসরা সেতারা কার্যকারী কলবে থাকে- কুছ ও হুত দুই বুরুজ তাঁর। তেসরা সেতারা মিররিক জল্লাদ কলবে থাকিবার স্থান- হাম্বল ও আকবর দুই বুরুজ তাঁর। চাহরাম সেতারা শামস, বাদশা, কলবে থাকিবার মোকাম- আসদ নামে এক বুরুজ তাঁর। পঞ্চম সেতারা জোহরা মতবর, কলবে থাকিবার মোকাম- সুর ও মীযান দুই বুরুজ তাঁর। ষষ্ঠ সেতারা অতারদ , মুমিন কলবে কস তিনি- সরতান নামে এক বুরুজ তাঁর। সপ্তম সেতার বারো বুরুজে গরদেশ করিতেছে, তাঁহারে যে জানিবে সেই হাকিম।
কোন দিকে কোন বুরুজ
দিকের নাম বুরুজের নাম
১। মগরেব বা পশ্চিম তরকে তিন বুরুজ- সরতান, আকবর, হুত
২। মশরেক বা পূর্ব তরফে তিন বুরুজ- হাম্বল, আসদ, কুছ
৩। সেমাল বা উত্তর তরফে তিন বুরুজ- যৌজা, মীযান, দোনা
৪। জুনুব বা দক্ষিন তরফে তিন বুরুজ- সুর, সোম্বল, যুদি
কোন দিকে কোন আনাস
১। মাগরেব বা পশ্চিমে তিন বুরুজ, আতশি সেতারা, আনাস- আগুন ২। মশরেক বা পূর্বে তিন বুরুজ, আবি সেতারা, আনাস- পানি ৩। সেমাল বা উত্তরে তিন বুরুজ, বাদি সেতারা, আনাস- বাতাস ৪। জুনুব বা দক্ষিনে তিন বুরুজ, খাকি সেতারা, আনাস- মাটি।
বারো বুরুজ দেহে কোথায় কার অবস্থান
বুরুজের নাম অজুদের নাম বুরুজের নাম অজুদের নাম
১। হাম্বল বুরুজ মাথা ২। সুর বুরুজ গর্দান
৩। যৌজা বুরুজ দুই হাত ৪। সরতান বুরুজ দুই পেস্তান
৫। আসদ বুরুজ ছিনা ৬। সোম্বল বুরুজ বুদা বা গুর্দা
৭। মীযান বুরুজ নাভি ৮। আকবর বুরুজ পুরুষাঙ্গ
৯। কুছ বুরুজ দুই রান ১০। যুদি বুরুজ দুই জানু
১১। দোনা বুরুজ পায়ের ফিল্লি ১২। হুত বুরুজ পায়ের তলা
অজুদে দশ দিক পরিচয়
১। দেহের সম্মুখ ভাগ- পূর্ব দিক ২। দেহের পিছন ভাগ- পশ্চিম দিক ৩। দেহের ডান হাত ভাগ- দক্ষিণ দিক ৪। দেহের বাম হাত ভাগ- উত্তর দিক ৫। ডান হাত ও বক্ষের মাঝামাঝি স্থান- নৈরত দিক ৬। বাম হাত ও বক্ষের মাঝামাঝি স্থান- অগ্নি দিক ৭। ডান হাত ও পিঠের মাঝামাঝি স্থান- ইশান দিক ৮। বাম হাত ও পিঠের মাঝামাঝি স্থান- বায়ু দিক ৯। নাভি থেকে মাথা পর্যন্ত- ঊর্ধ্ব দিক ১০। নাভি থেকে পা পর্যন্ত- অধঃ দিক
নামাযের হাল
ওয়াক্ত হাল ওয়াক্ত হাল
১। ফজরের নামায জলি ২। যোহরের নামায কালবি
৩। আছরের নামায রুহি ৪। মাগরিবের নামায ছিররি
৫। ইশার নামায খফি
পঞ্চ ব্যানার হাল
ব্যানা হাল ব্যানা হাল
১। কলেমা জলি ২। নামায কালবি
৩। রোজা খফি ৪। হজ্জ ছিররি
৫। যাকাত রুহি
কোন ওয়াক্তের নামায তরক করিলে কে অসন্তুষ্ট হয়
ওয়াক্তের নাম অসন্তুষ্টির নাম
১। ফজরের নামায তরক করিলে ঈমান অসন্তুষ্ট হয়
২। যোহরের নামায তরক করিলে নবীগণ অসন্তুষ্ট হয়
৩। আসরের নামায তরক করিলে ফেরেশতাগণ অসন্তুষ্ট হয়
৪। মাগরিবের নামায তরক করিলে কোরআন অসন্তুষ্ট হয়
৫। ইশার নামায তরক করিলে আল্লাহ্‌ অসন্তুষ্ট হয়
কোন ফেরেশতার কোন একিন
ফেরেশতার নাম একিন অর্থ
১। আজাজিল ফেরেশতা বেলগায়েব একিন অদেখা বিশ্বাস
২। মেকাইল ফেরেশতা এলমল একিন জ্ঞান দ্বারা বিশ্বাস
৩। জিবরাঈল ফেরেশতা আইনাল একিন দেখে বিশ্বাস
৪। ইসরাফিল ফেরেশতা হক্কোল একিন চিনে বিশ্বাস
৫। আজরাইল ফেরেশতা হুয়াল একিন দেখে ও চিনে বিশ্বাস
অজুদে কাহার কি নাম
১। আদম- নফসের নাম ২। মোমিন- দেলের নাম ৩। মুসলমান- ভেদের মোকামের নাম ৪। ইনসান- রূহের নাম ৫। বান্দা নূরের নাম ৬। ফকির- জাত যে জহুর।
উক্ত ছয় নামের হাকিকাত
১। আদম জানিবে- দম ২। মোমিন জানিবে- কদম ৩। মুসলমান জানিবে- সবর ৪। ইনসান জানিবে- শোকর ৫। বান্দা জানিবে- বুঝ ৬। ফকির জানিবে- জাত।
মাযহাব পরিচয়
ভারতবর্ষের বিখ্যাত হাদিসশাস্ত্রবিদ ও হানাফীদের শিক্ষাগুরু যাহাকে হানাফীরা ভারতবর্ষের ‘ইমাম বুখারি’ বলে থাকেন সেই শাহ আলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহেলভী (রঃ) বলেছেন-
‘ই’লাম আন্না না-সা-কা-নু ক্কারলাল মিআতির রা-বিআতি গাইরা মুজমিয়ীনা আলাত্‌-তাকলীদিল খা-লিস লিমায় হাবিন্‌ ওয়া-হিদিন্‌ বি-আইনিহী’
অর্থ- তোমরা জেনে রাখো যে, ৪০০ হিজরীর আগে লোকেরা কোন একটি বিশেষ মাযহাবের উপর জমে ছিল না’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ; ১৫২ পৃষ্ঠা)।
অর্থাৎ ৪০০ হিজরীর আগে নিজেকে হানাফী, শাফেরী বা মালেকী বলে পরিচয় দিতো না। আর চারশো হিজরীর অনেক আগে ইমামরা ইন্তেকাল করেন। ইমামদের জন্ম ও মৃত্যুর সময়কালটা একবার জানা যাক তাহলে ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।
১। সুন্নি মুসলমানদের চার মাযহাব। যথা-
১। হানাফি মাযহাব- হানাফি মাযহাবের ইমাম আবু হানীফা (রঃ)। ইমাম আবু হানিফার জন্ম ৮০ হিজরী সনে, এবং মৃত্যু ১৫০ হিজরী সনে।
২। মালেকি মাযহাব- মালেকি মাযহাবের ইমাম মালেক (রঃ)। ইমাম মালেকের জন্ম ৯৩ হিজরী সনে, এবং মৃত্যু ১৭৯ হিজরী সনে।
৩। শাফি মাযহাব- শাফি মাযহাবের ইমাম শাফিয়ী (রঃ)। ইমাম শাকেরীর জন্ম ১৫০ হিজরী সনে, এবং মৃত্যু ২০৪ হিজরী সনে।
৪। হাম্বলি মাযহাব- হাম্বলি মাযহাবের ইমাম আহমদ বিন হাম্বাল (রঃ)। ইমাম আহমদ বিন হাম্বালের জন্ম ১৬৪ হিজরী সনে, এবং মৃত্যু ২৪১ হিজরী সনে।
বিশিষ্ট হানাফী বিদ্বান শাহ ওলিউল্লাহ দেহেলভী (রহ) এর কথা যদি মেনে নেওয়া যায় যে ৪০০ হিজরীর আগে কোনো মাযহাব ছিল না, এবং ৪০০ হিজরীর পরে মানুষেরা মাযহাব সৃষ্টি করেছে, তার মানে এটা দাঁড়ায় যে আবু হানীফার ইন্তেকালের ২৫০ বছর পর হানাফী মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। ইমাম মালেকের ইন্তেকালের ২২১ বছর পর মালেকী মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। ইমাম শাফিয়ীর ইন্তেকালের ১৯৬ বছর পরে শাফি মাযহাব এবং ইমাম আহমাদের ইন্তেকালের ১৫৯ বছর পর হাম্বলী মাযহাব সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ ইমামদের জীবিত অবস্থায় মাযহাব সৃষ্টি হয়নি। তাঁদের মৃত্যুর অনেকদিন পরে মাযহাবের উদ্ভব হয়েছে।
মুলতঃ প্রচলিত কোরআনের দৃষ্টিতে কোন মাযহাব মান্য করা মানেই ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়া। তাই যাহারা কোন এক মাযহাবে বিশ্বাসী প্রচলিত কোরআনের দৃষ্টিতে তাহারা অমুসলিম।
শিয়া এর পরিচয়
আরবি শাঁই শব্দ থেকে আরবি শিয়া শব্দের উৎপত্তি। আরবি শাঁই শব্দের বাংলা অর্থ মহাবিশ্ব সৃষ্টির উপাদান সমূহ। আর শিয়া শব্দের বাংলা অর্থ মহাবিশ্ব সৃষ্টির উপাদান সমূহ বিষয়ে জ্ঞান লাভকারী। তাই শিয়া শব্দের বাংলা অর্থ মহাবিশ্ব সৃষ্টির উপাদান সমূহকে জানা বা বস্তু বাদ। এক কোথায় শিয়া শব্দের বাংলা অর্থ উপাদান বা বস্তুবাদ। শিয়া শব্দটি প্রচলিত কোরআনে অনেকবার ব্যবহার হয়েছে। তম্মধ্যে
مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا ۖ كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ
আয়াতের আরবি উচ্চারণ- মিনাল্লাযিনা ফাররাকু দ্বীনাহুম ওয়া কানু শিইয়াআন। কুল্লু হিযবিন বিমা লাদাইহিম ফারিহুনা।
আয়াতের বাংলা অর্থ- যাহারা বিচ্ছিন্ন করে তাহাদের স্বভাব উৎপত্তি স্বত্বা সমূহের আর মহাবিশ্ব সৃষ্টির উপাদান সমূহের। প্রত্যেক দল বা অংশেই আছে আনন্দদানকারী। সূরা রুম- আয়াত ৩২
২। শিয়া মুসলমানদের চার মাযহাব। যথা-
১। ইথনা মাযহাব ২। আশারি মাযহাব ৩। ইসমাইলিয়া মাযহাব ৪। যায়ীদিয়া মাযহাব
শিয়াদের ইমাম- ইমাম যাফর সাদিক।
তরীকাতে সুন্নাতাল্লাহি এর সালাত
সালাতের নিয়ম
হুজুরি দেল ব্যতিরেকে সালাত হয় না। তাই শুনো-
হুজুরি করিতে লাভ চাই যেই জন। তৌবা, তসলিম, শোকর করো হে পালন।
এনাবৎ, যোহদ, অরা, রেদা ও সবর, তাওয়াক্কাল, কানাযাত এই দশ চিজের উপর।
মোরাকাবার সাথে যেই কোশেশ করিবে, বেলায়েত সোগরা তাঁর হাসেল হইবে।
অজু বিধি
সূরা মায়িদার ৬ নম্বর আয়াত মোতাবেক অজু করিতে হইবে। যথা-
মুখোমণ্ডল ধৌত, হাত সমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত এবং পা সমূহ গিঁঠ পর্যন্ত ধৌত করিতে হইবে। যদি তোমরা অপবিত্র থাকো তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও, এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাকো, অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব পায়খানা থেকে আসো, অথবা তোমরা স্ত্রী সহবাস করে থাকো, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, অর্থাৎ- স্বীয় মুখোমণ্ডল ও হাত সমূহ মাটি দ্বারা মুছে ফেলো।
জায়নামাজে বসার পরে করণীয়
সূর্য অস্ত যাওয়ার পর মুহূর্তে অজু করে জায়নামাজে বসার পরে দুই চোখ বন্ধ করে তৃতীয় নয়ন দ্বারা আজকের বারের জাগ্রত সময়ে করা সকল কাজ সমূহকে স্মরণ করতে হবে। যেমন, সারাদিন কি কি চিন্তা করেছি, কি কি দর্শন করেছি, কি কি শ্রবণ করেছি, কি কি কথা বলেছি, এবং হাত ও পা দ্বারা কি কি কর্ম সম্পাদন করেছি। পাঁচ ইন্দ্রিয়ের সকল কর্ম সমূহে কি কি উত্তম কাজ করেছি, ও কি কি মন্দ কাজ করেছি তাহা আলাদা ভাবে বাছায় করুন। এবার উত্তম কাজ সমূহের জন্য স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া আদায় করুন, ও সকল মন্দ কাজ সমূহের জন্য অনুতপ্ত হউন, এবং আগামীতে আর মন্দ কাজ না করার জন্য অঙ্গীকার করুন।
উত্তম কাজ সমূহের জন্য শুকরিয়া- মনে মনে পাঠ করুন-
১। হে প্রভু, আজকের জাগ্রত সময়ে আমাকে দিয়ে উত্তম কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য ২। তোমার দরবারে শতকোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি ৩। আর আমি সাহায্য প্রার্থনা করছি যে ৪। আগামীজাগ্রত সময়েও যেন তুমি আমাকে উত্তম কাজ সমূহের মধ্যে নিয়োজিত রাখবে।
মন্দ কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অঙ্গীকার, জোরে জোরে পাঠ করবে-
১। হে প্রভু, আজকের জাগ্রত সময়ে আমি আমার কামনা ও বাসনা শক্তির প্ররোচনায় পড়ে যে সকল মন্দ কাজ করে ফেলেছি .২। সে সকল মন্দ কাজের জন্য আমি তোমার দরবারে বড়ই অনুতপ্ত ৩। এখন আমি অঙ্গীকার করছি ৪। আগামীর জাগ্রত অবস্থায় আমি কামনা ও বাসনা শক্তির প্ররোচনায় পড়ে আর কোন মন্দ কাজ করবো না ৫। আমি তোমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি যে ৬। তুমি আমাকে কামনা ও বাসনা শক্তির সকল ক্যু প্ররোচনা হতে দূরে থাকার শক্তি দান করো ৭। আর তুমি আমাকে দান করো শান্তিময় অনন্ত জীবন।
সালাতের নিয়ত, মনে মনে বলিবে-
হে প্রভু, চন্দ্রবার গণনা হিসাবে আজকের বারের প্রথম প্রহরে দুই রাকাত সালাত আদায়ের জন্য নিজ কেবলা মুখীতে রোখ হইলাম।
সকলে সজোরে বলিবে- মুর্শিদ সহায় হউক সকল কাজে।
জোরে বলা এই বাক্যটুকুকে তাকবীরে তাহরিমা বলে।
তাকবীরে তাহরিমার পর পাঠ করিবে-
১। হে প্রভু, তুমি আমাদিগকে সৃষ্টি করেছো ২। প্রতিপালন করছো ৩। শান্তি পথের সন্ধান দিয়েছো ৪। মুর্শিদের হাতে হাত রেখে বাইয়াত হওয়ার তৌফিক দান করেছো ৫। সত্য ও সরল পথে চলার ক্ষমতা দিয়েছো ৬। অনুগ্রহ করে আমাকে পথভ্রষ্ট করিও না ৭। আখিরাতে শাস্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করিও না।
সেজদায় গিয়ে সাত বার বলিবে- সত্য সহায় হউক সর্ব জীবে।
তসবি পাঠের নিয়ম-
সারাদিনে তুমি যতগুলি মন্দ কাজ করেছো, প্রত্যেক মন্দ কাজের জন্য এক তসবি খতম করতে হবে। প্রতিবার তসবি খতমে-
প্রথম ৩৩ দানায় বলিবে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলাল্লাহ। দ্বিতীয় ৩৩ দানায় বলিবে- সত্য সহায় হউক সর্ব জীবে। তৃতীয় ৩৩ দানায় বলিবে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু (নিজ গুরুর নাম) রাসুলাল্লাহ।
সূর্য উদয়ের পূর্ব মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে অজু করে জায়নামাজে বসার পরে, প্রথমে দুই চোখ বন্ধ করে তৃতীয় নয়ন দ্বারা দৃষ্টি করুন, ও মনে মনে বলুন।
১। হে প্রভু, তোমার অশেষ করুণাতে আজ আমি নিদ্রাময় জীবন হতে জাগ্রত জীবনে ফিরে আসতে পেরেছি ২। তোমার ইচ্ছা না হলে হয়তো এই নিদ্রাই আমার শেষ নিদ্রা হয়ে যেতো ৩। নিদ্রা হতে জাগ্রত করার জন্য আমি তোমার দরবারে শতকোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি ৪। হে প্রভু, আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যে, যতক্ষণ তুমি আমাকে জাগ্রত অবস্থায় রাখবে ৫। ততক্ষণ তুমি আমাকে উত্তম উত্তম কাজ সমূহের মধ্যে নিয়োজিত রেখো ৬। কামনা ও বাসনা শক্তির প্ররোচনায় পড়ে মন্দ কাজ করা থেকে আমাকে রক্ষা করো ৭। আর তুমি আমাকে শান্তিময় অনন্ত জীবন দান করো।
সালাতের নিয়ত, মনে মনে বলিবে-
হে প্রভু, সূর্যবার গণনা হিসাবে আজকের বারের প্রথম প্রহরে দুই রাকাত সালাত আদায়ের জন্য নিজ কেবলা মুখীতে রোখ হইলাম।
নিয়তের পরে পূর্বের নিয়মেই সালাত সম্পন্ন করতে হবে।
তোমরা নিজ নিজ ঘরে একাকী ও স্বামী স্ত্রী মিলে, এবং অনেকে এক সাথে সালাত আদায় করতে পারো, তবে- প্রতি বৃহস্পতিবার জুম্মা হিসাবে নিজ নিজ ঘরে বা একাকী সালাত আদায় না করে, সকলে এক সাথে সালাত আদায় করবে। সে ক্ষেত্রে সূর্য মধ্য আকাশে অবস্থান কালে জুম্মার সালাত আদায় করতে হবে।
ঘরে একাকী সালাত আদায় কালে গুরু স্মরণ কেবলায় সালাত আদায় করবে। স্বামী স্ত্রী সালাত আদায় কালে স্বামী স্ত্রীকে ও স্ত্রী স্বামীকে কেবলা মেনে সালাত আদায় করবে। অনেকে এক সাথে সালাত আদায় করলে, মাঝখানে ইমামকে রেখে গোল হয়ে সকলেই ইমাম মুখী হয়ে সালাত আদায় করতে হবে।
জুম্মার সালাত
সূর্য মধ্য আকাশে অবস্থান কালে সালাত আদায় করতে হবে।
জায়নামাজে বসার পরে-
সূর্য মধ্য আকাশে অবস্থান মুহূর্তে অজু করে জায়নামাজে বসার পরে দুই চোখ বন্ধ করে তৃতীয় নয়ন দ্বারা বিগত ছয় বারের জাগ্রত সময়ে করা সকল কাজ সমূহকে স্মরণ করতে হবে। যেমন, ছয়বারে জাগ্রত অবস্থায় কি কি চিন্তা করেছি, কি কি দর্শন করেছি, কি কি শ্রবণ করেছি, কি কি কথা বলেছি, এবং হাত ও পা দ্বারা কি কি কর্ম সম্পাদন করেছি। পাঁচ ইন্দ্রিয়ের সকল কর্ম সমূহে কি কি উত্তম কাজ করেছি, ও কি কি মন্দ কাজ করেছি তাহা আলাদা ভাবে বাছায় করুন। এবার উত্তম কাজ সমূহের জন্য স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া আদায় করুন, ও সকল মন্দ কাজ সমূহের জন্য অনুতপ্ত হউন, এবং আগামীতে আর মন্দ কাজ না করার জন্য অঙ্গীকার করুন।
উত্তম কাজ সমূহের জন্য শুকরিয়া- মনে মনে পাঠ করুন-
১। হে প্রভু, বিগত ছয়বারের জাগ্রত সময়ে আমাকে দিয়ে উত্তম কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য ২। তোমার দরবারে শতকোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি ৩। আর আমি সাহায্য প্রার্থনা করছি যে ৪। আগামী জাগ্রত সময়েও যেন তুমি আমাকে উত্তম কাজ সমূহের মধ্যে নিয়োজিত রাখবে।
মন্দ কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে অঙ্গীকার, জোরে জোরে পাঠ করবে-
১। হে প্রভু, বিগত ছয়বারের জাগ্রত সময়ে আমি আমার কামনা ও বাসনা শক্তির প্ররোচনায় পড়ে যে সকল মন্দ কাজ করে ফেলেছি .২। সে সকল মন্দ কাজের জন্য আমি তোমার দরবারে বড়ই অনুতপ্ত ৩। এখন আমি অঙ্গীকার করছি ৪। আগামীর জাগ্রত অবস্থায় আমি কামনা ও বাসনা শক্তির প্ররোচনায় পড়ে আর কোন মন্দকাজ করবো না ৫। আমি তোমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি যে, ৬। তুমি আমাকে কামনা ও বাসনা শক্তির সকল ক্যু প্ররোচনা হতে দূরে থাকার শক্তি দান করো ৭। আর তুমি আমাকে দান করো শান্তিময় অনন্ত জীবন।
সালাতের নিয়ত, মনে মনে বলিবে-
হে প্রভু, চন্দ্রবার গণনা হিসাবে আজকের বারের সপ্তম প্রহর ও সূর্য বার গণনা হিসাবে আজকের বারের তৃতীয় প্রহর এ দুই রাকাত সালাত আদায়ের জন্য গুরু কেবলা মুখীতে রোখ হইলাম।
সকলে সজোরে বলিবে- মুর্শিদ সহায় হউক সকল কাজে।
জোরে বলা এই বাক্যটুকুকে তাকবীরে তাহরিমা বলে।
তাকবীরে তাহরিমার পর পাঠ করিবে-
১। হে প্রভু, তুমি আমাদিগকে সৃষ্টি করেছো। প্রতিপালন করছো ৩। শান্তি পথের সন্ধান দিয়েছো ৪। মুর্শিদের হাতে হাত রেখে বাইয়াত হওয়ার তৌফিক দান করেছো ৫। সত্য ও সরল পথে চলার ক্ষমতা দিয়েছো ৬। অনুগ্রহ করে আমাকে পথভ্রষ্ট করিও না ৭। আখিরাতে শাস্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করিও না।
সেজদায় গিয়ে সাত বার বলিবে- সত্য সহায় হউক সর্ব জীবে।
দশ চিজের নাম ও অর্থ
চিজের নাম অর্থ চিজের নাম অর্থ
১। তৌবা গুনাহ পরিত্যাগ করা ২। এনাবত আল্লাহ্‌তে রুজু থাকা
২। জোহদ পৃথিবী বিরাগী থাকা ৪। রেয়াযাত এবাদতে শ্রম দেওয়া
৫। অরা আল্লাহ্‌ ভীতি থাকা ৬। কানাজাত অল্পে তুষ্ট থাকা
৭। তাওয়াক্কাল আল্লাহ্‌তে নির্ভরশীলতা ৮। তাসলিম আল্লাহ্‌ই সোপর্দ থাকা
৯। সবর ধৈর্য ধারণ করা ১০। রেদা আল্লাহ্‌র খুশিতে খুশি থাকা
তালেবানের রেজালত ১০টি পরিবর্তে ১০টি লতাফত হাসেল হওয়া চাই
১। রেজালত ২। হারাম ৩। মিথ্যা ৪। হাসাদ ৫। কিনা ৬। আদাওয়াত ৭। সাহাওয়াত ৮। গীবত ৯। তকব্বরি ১০। তহমত।
হযরত মোহাম্মদ সাঃ বলেছেন
১। আশ শরিয়াতি আকওয়ালি- শরিয়াত আমার বাক্য ২। আত তরিকাতি আফওয়ালি- তরিকাত আমার কর্ম ৩। আল হকিকাতি আহওয়ালি- হকিকাত আমার উচ্ছ্বাস বা প্রেরণা ৪। আল মারিফাতি এছরারি- মারিফাত আমার নিগুঢ় তত্ত্ব ৫। আনা অহেদানিয়াত- স্বয়ং আমিই গুপ্ত ধনাগার।
হযরত মোহাম্মদ সাঃ আলী কঃ কে বলেছেন, আল্লাহ্‌র দোস্ত হতে হলে অবশ্যয় আমার এই কয়টি কথা মান্য করিবে।
১। মারিফাত আমার মূলধন ২। জ্ঞান আমার ধর্মের মূল ৩। প্রেম আমার ভিত্তি ৪। উৎসাহ আমার বাহন ৫। উপাস্য স্মরণ আমার বন্ধু ৬। দুঃখ আমার সাথী ৭। বিদ্যা আমার হাতিয়ার ৮। ধৈর্য আমার অঙ্গ আবরণী ৯। জেহাদ আমার স্বভাব ১০। উপাস্য ভরসা আমার ভাণ্ডার ১১। বিশ্বাস আমার শক্তি ১২। সন্তুষ্টি আমার গনিমাত ১৩। বিনয় আমার গৌরব ১৪। সংযম আমার ব্যবসা ১৫। সত্য আমার সহচর ১৬। উপাসনা আমার সম্বল ১৭। সালাত আমার চোখের তৃপ্তি।
তৌবা দুই প্রকার
১। রাসমি তৌবা- যাহা পাগড়ি ধরিয়ে করানো হয় ২। হাকিকি তৌবা- যাহা মুর্শিদ দেখাইয়া দেন বা দিবেন।
কোরআনের পরিচয়
কোরআন দুই প্রকার-
১। (ক) নাতেক (খ) মাতলেক ২। (ক) হাদেস (খ) কাদেম ৩। (ক) তফসির (খ) রেসমি ৪। (ক) মুর্দা (খ) জিন্দা ৫। (ক) নাম বাচক (খ) বস্তু বাচক।
আল্লাহ্‌ পাক মুসা কালামুল্লাহকে বলেছেন। হে মুসা, আমি ছয় বস্তুকে ছয় স্থানে রেখেছি, লোকে ঐ বস্তু সকল অন্য স্থানে খুঁজে পাবে কি?
১। আমি শান্তিকে রেখেছি বেহেশতে, তা দুনিয়ায় খোঁজা পণ্ডশ্রম ২। দোয়া কবুলকে রেখেছি হালাল খাদ্য ভোজন ব্যক্তির মুখে, হারাম খাদ্য ভোজনে তা পাওয়া অসম্ভব ৩। ইজ্জতকে রেখেছি সংসার ত্যাগের মধ্যে, সংসারে থেকে তা খোঁজা নির্বুদ্ধিতা ৪। পদোন্নতিকে রেখেছি তোয়াজের মধ্যে, অহংকারের মাধ্যমে খোঁজা পাগলামি ৫। বল শক্তিকে রেখেছি ক্ষুধা সহ্যের মাঝে, পূর্ণ ভোজনে খোঁজা প্রহসন। ধন সম্পদ রেখেছি ধৈর্যের মধ্যে, লোভের মাঝে খোঁজা অনর্থক।
আল্লাহ্‌র প্রধান গুণ সাতটি
১। তিনি কাহাকেও জন্ম দেন না ২। তিনিও কাহারও দ্বারা জন্ম নহে ৩। তিনি সৃষ্টি করেন ৪। তিনি প্রতিপালন করেন ৫। তিনি ন্যায় বিচারক ৬। তিনি অত্যন্ত দয়ালু ৭। তিনি কঠিন শাস্তি দাতা।
প্রত্যেক বিষয়ের আটটি গুণ
১। নাম ২। বস্তু ৩। রূপ ৪। রস ৫। স্বাদ ৬। গন্ধ ৭। সু-গুণ ৮। কু-গুণ
যে পাহাড় দ্বারা অজুদ কাবা তৈরি
১। লাবানন- অন্তর্দৃষ্টি ২। কোহসারা- বহিঃদৃষ্টি ৩। কায়েস- বাকশক্তি ৪। সাফা- শ্রবণশক্তি ৫। মারওয়া- সঞ্চালন শক্তি।
সূরাদাল আসগার বা সমস্ত শরীর
১। কালেব- বাম স্তনের দুই আঙ্গুল নিচে ২। রূহ- ডান স্তনের দুই আঙ্গুল নিচে ৩। ছের- বাম স্তনের দুই আঙ্গুল উপরে ৪। খফি- ডান স্তনের দুই আঙ্গুল উপরে ৫। আখফা- দুই স্তনের মধ্যবর্তী স্থান ৬। নফস- দুই ভ্রু এর মাঝখানে ও নাভির নিম্ন দেশে। এছাড়া ৭। আব ৮। আতশ ৯।
খাক ১০। বাদ জীবের সর্ব শরীর ব্যপী ব্যপ্ত রহিয়াছে।
পাক জাতের সাত সেফাত
১। আল্লাহ্‌র একটি- হাইউন- জীবিত শক্তি ২। মোহাম্মদের তিনটি- আলিমুন-জ্ঞান শক্তি, কুদিরুন- কর্ম শক্তি, মুরিদুন- যৌন শক্তি ৩। বান্দার তিনটি- সামিউন- শ্রবণ শক্তি, বসিরুন- দর্শন শক্তি, কলিমুন- বাক শক্তি।
কোরআনের সাত মঞ্জিল
১। সূরা বাকারা হইতে সূরা মায়িদা পর্যন্ত প্রথম মঞ্জিল ২। সূরা আনআম হইতে সূরা তৌবা পর্যন্ত দ্বিতীয় মঞ্জিল ৩। সূরা ইউসুফ হইতে সূরা ত্বোয়া ছোট-হা পর্যন্ত তৃতীয় মঞ্জিল ৪। সূরা আম্বিয়া হইতে সূরা কাসাস পর্যন্ত চতুর্থ মঞ্জিল ৫। সূরা আনকাবুত হইতে সূরা সোয়াদ পর্যন্ত পঞ্চম মঞ্জিল ৬। সূরা যুমার হইতে সূরা আর রহমান পর্যন্ত ষষ্ঠ মঞ্জিল ৭। সূরা ওয়াকেয়া হইতে সূরা নাস পর্যন্ত সপ্তম মঞ্জিল।
অজুদ কোরআনের সাত মঞ্জিল
১। সাফা থেকে আব, আতশ, বাদ, হয়ে খাক পর্যন্ত প্রথম মঞ্জিল ২। কালেবে সাফা থেকে কালেবে বাদ, কালেবে আতশ, কালেবে আব হয়ে কালেবে খাক পর্যন্ত দ্বিতীয় মঞ্জিল ৩। রুহে সাফা থেকে রুহে বাদ, রুহে আতশ, রুহে আব হয়ে রুহে খাক পর্যন্ত তৃতীয় মঞ্জিল ৪। ছেরে সাফা থেকে ছেরে বাদ , ছেরে আতশ, ছেরে আব হয়ে ছেরে খাক পর্যন্ত চতুর্থ মঞ্জিল ৫। খফিয়ে সাফা থেকে খফিয়ে বাদ, খফিয়ে আতশ, খফিয়ে আব হয়ে খফিয়ে খাক পর্যন্ত পঞ্চম মঞ্জিল ৬। আখফায়ে সাফা থেকে আখফায়ে বাদ, আখফায়ে আতশ, আখফায়ে আব হয়ে আখফায়ে খাক পর্যন্ত ষষ্ঠ মঞ্জিল ৭। নফসে সাফা থেকে নফসে বাদ, নফসে আতশ, নফসে আব হয়ে নফসে খাক পর্যন্ত সপ্তম মঞ্জিল।
কোরআনের ৩০ পারা পরিচয়
১। সূরা ফাতিহার ১ আয়াত থেকে সূরা বাকারার ১৪১ আয়াত পর্যন্ত ১ পারা ২। সূরা বাকারার ১৪২ আয়াত থেকে সূরা বাকারা ২৫২ আয়াত পর্যন্ত ২ পারা ৩। সূরা বাকারা ২৫৩ থেকে সূরা ইমরান ৯১ আয়াত পর্যন্ত ৩ পারা ৪। সূরা ইমরান ৯২ আয়াত থেকে সূরা নিসা ২৩ আয়াত পর্যন্ত ৪ পারা ৫। সূরা নিসা ২৪ আয়াত থেকে সূরা নিসা ১৪৭ আয়াত পর্যন্ত ৫ পারা ৬। সূরা নিসা ১৪৮ আয়াত থেকে সূরা মায়িদাহ ৮২ আয়াত পর্যন্ত ৬ পারা ৭। সূরা মায়িদাহ ৮৩ আয়াত থেকে সূরা আনআম ১১০ আয়াত পর্যন্ত ৭ পারা ৮। সূরা আনআম ১১১ আয়াত থেকে সূরা আরাফ ৮৭ আয়াত পর্যন্ত ৮ পারা ৯। সূরা আরাফ ৮৮ আয়াত থেকে সূরা আনফাল ৪০ আয়াত পর্যন্ত ৯ পারা ১০। সূরা আনফাল ৪১ আয়াত থেকে সূরা তাওবা ৯৩ আয়াত পর্যন্ত ১০ পারা ১১। সূরা তাওবা ৯৪ আয়াত থেকে সূরা হুদ ৫ আয়াত পর্যন্ত ১১ পারা ১২। সূরা হুদ ৬ আয়াত থেকে সূরা ইউসুফ ৫২ আয়াত পর্যন্ত ১২ পারা ১৩। সূরা ইউসুফ ৫৩ আয়াত থেকে সূরা হিজর ১ আয়াত পর্যন্ত ১৩ পারা ১৪। সূরা হিজর ২ আয়াত থেকে সূরা নাহল ১২৮ আয়াত পর্যন্ত ১৪ পারা ১৫। সূরা বনী ইসরাইল ১ আয়াত থেকে সূরা কাহাফ ৭৪ আয়াত পর্যন্ত ১৫ পারা ১৬। সূরা কাহাফ ৭৫ আয়াত থেকে সূরা ত্বোয়া ছোট-হা ১৩৫ আয়াত পর্যন্ত ১৬ পারা ১৭। সূরা আম্বিয়া ১ আয়াত থেকে সূরা হজ্জ ৭৮ আয়াত পর্যন্ত ১৭ পারা ১৮। সূরা মুমিনুন ১ আয়াত থেকে সূরা ফোরকান ২০ আয়াত পর্যন্ত ১৮ পারা ১৯। সূরা ফোরকান ২১ আয়াত থেকে সূরা নামল ৫৯ আয়াত পর্যন্ত ১৯ পারা ২০। সূরা নামল ৬০ আয়াত থেকে সূরা আনকাবুত ৪৪ আয়াত পর্যন্ত ২০ পারা ২১। সূরা আনকাবুত ৪৫ আয়াত থেকে সূরা আহযাব ৩০ আয়াত পর্যন্ত ২১ পারা ২২। সূরা আহযাব ৩১ আয়াত থেকে সূরা ইয়াসিন ২১ আয়াত পর্যন্ত ২২ পারা ২৩। সূরা ইয়াসিন ২২ আয়াত থেকে সূরা যুমার ৩১ আয়াত পর্যন্ত ২৩ পারা ২৪। সূরা যুমার ৩২ আয়াত থেকে সূরা বড়-হা মীম সেজদাহ ৪৬ আয়াত পর্যন্ত ২৪ পারা ২৫। সূরা বড়-হা মীম সেজদাহ ৪৭ আয়াত থেকে সূরা যাসিয়াহ ৩৭ আয়াত পর্যন্ত ২৫ পারা ২৬। সূরা আহকাফ ১ আয়াত থেকে সূরা যারিয়াত ৩০ আয়াত পর্যন্ত ২৬ পারা ২৭। সূরা যারিয়াত ৩১ আয়াত থেকে সূরা হাদিদ ২৯ আয়াত পর্যন্ত ২৭ পারা ২৮। সূরা মুজাদালাহ ১ আয়াত থেকে সূরা তাহরিম ১২ আয়াত পর্যন্ত ২৮ পারা ২৯। সূরা মূলক ১ আয়াত থেকে সূরা মুরসালাত ৫০ আয়াত পর্যন্ত ২৯ পারা ৩০। সূরা নাবা ১ আয়াত থেকে সূরা নাস ৬ আয়াত বা শেষ আয়াত পর্যন্ত ৩০ পারা।
কোরআনের ৩০ পারার নাম
১। আলিফ লাম মীম ২। সাইয়াকুলু ৩। তিলকাররুসুলু ৪। লানতানালু ৫। ওয়ালমুহসানাত ৬। লা ইউহিব্বুল্লাহ ৭। ওয়া ইযা সামিউ ৮। ওয়ালাও আননানা ৯। কালাল মালাউ ১০। ওয়া’লামূ ১১। ইয়া’তাযিরুনা ১২। ওয়ামা মিন দা-ব্বাহ ১৩। ওয়ামা উবাররিউ ১৪। রুবামা ১৫। সুবহানাললাযী ১৬। কালা আলাম ১৭। ইকতারাবা লিন্নাস ১৮। কাদ আফলাহা ১৯। ওয়া কালালযীনা ২০। আমমান খালাকা ২১। উতলু মা ঊহিয়া ২২। ওয়ামাইয়াকনুত ২৩। ওয়ামা লিয়া ২৪। ফামান আযলামু ২৫। বড়-হা মীম সাজদাহ ২৬। বড়-হা মীম ২৭। কালা ফামা খাতবুকুম ২৮। কাদ সামি’আল্লাহু ২৯। তাবারাকাল্লাযী ৩০। আম্মা ইয়াতাসা-আলুন।
কোরআনের ১৫টি সেজদাহ পরিচয়
১। সূরা আরাফ, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ২০৬, পারা- ৯ ২। সূরা রাদ, মদিনা অবতীর্ণ, আয়াত ১৫, পারা- ১৩ ৩। সুরা নাহল, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ৫০, পারা ১৪ ৪। সুরা বণী- ইসরাঈল, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ১০৯, পারা ১৫ ৫। সুরা মারইয়াম, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ৫৮, পারা ১৬ ৬। সুরা হজ্জ, মদিনা অবতীর্ণ, আয়াত ১৮, পারা ১৭ ৭। সুরা হজ্জ, মদিনা অবতীর্ণ, আয়াত ৭৭, পারা ১৭ ৮। সুরা ফুরকান, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ৬০, পারা ১৯ ৯। সুরা নামল, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ২৬, পারা ১৯ ১০। সুরা সাজদাহ, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ১৫, পারা ২১ ১১। সুরা সোয়াদ, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ২৫, পারা ২৩ ১২। সুরা বড়-হা মীম সেজদাহ, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ৩৮, পারা ২৪ ১৩। সুরা নাজম, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ৬২, পারা ২৭ ১৪। সুরা ইনশিকাক, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ২১, পারা ৩০ ১৫। সূরা আলাক্ব, মক্কা অবতীর্ণ, আয়াত ১৯, পারা ৩০।
সম্মানিত পাঠক- প্রচলিত কোরআনের অনুবাদকেরা এ পর্যন্ত লিখে আসছে যে, প্রচলিত কোরআনের সেজদাহ সংখ্যা ১৪টি। কিন্তু প্রচলিত কোরআনে মোট ১৫টি সেজদাহ রয়েছে। এখন আবার প্রচলিত কোরআনের অনুবাদকেরা বলছেন যে, সুরা হজ্জ ৭৭ নম্বর আয়াতের সেজদাহটি ইমাম শাফেয়ীর মতে, অন্য কারো মতে নয়। তাহলে কি বুঝবো যে, ইমাম শাফেয়ী প্রচলিত কোরআনের সূরা হজ্জের ৭৭ নম্বর আয়াতে “সেজদাহ” সংযোজন করে, প্রচলিত কোরআনের বিকৃতি ঘটিয়েছে?
মুলতঃ প্রচলিত কোরআনের সেজদাহ সংখ্যা ১৫টি ছিল, এবং এখনো ১৫টি রয়েছে। সেজদাহ কি এবং কেন তা না জানার কারণে প্রচলিত কোরআনের লিপিবদ্ধকারী ও অনুবাদকেরা মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছে। আশা করি আমি প্রচলিত কোরআনের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা গ্রন্থে সঠিক বিষয় উপস্থাপন করবো। তবে আপাতত নিশ্চিত করে জেনে রাখুন যে, প্রচলিত কোরআনে সেজদাহ সংখ্যা ১৪টি নয়, ১৫টি।
কোরআন ফরয। তবে কোরআন পাঠের সময় সেজদাহর আয়াতে সেজদাহ দেওয়া ওয়াজিব। প্রত্যেক সেজদাহর আয়াতে দুটি করে সেজদাহ দিতে হবে।
বারো ইমামের নাম
১। হযরত আলী করিমুল্লাহ ওয়াজহু ২। হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু ৩। হযরত হোসেন রাদিয়াল্লাহু আনহু ৪। হযরত জয়নাল আবেদিন রাদিয়াল্লাহু আনহু ৫। হযরত বাকের রাদিয়াল্লাহু আনহু ৬। হযরত যাফর সাদিক রাদিয়াল্লাহু আনহু ৭। হযরত মুসা কাযেম রাদিয়াল্লাহু আনহু ৮। হযরত মোহাম্মদ তকি রাদিয়াল্লাহু আনহু ৯। হযরত মুসা আলী রেজা রাদিয়াল্লাহু আনহু ১০। হযরত মোহাম্মদ নকি রাদিয়াল্লাহু আনহু ১১। হযরত হাসান আজগর রাদিয়াল্লাহু আনহু ১২। মাহদি হাদি এ আখেরি জামানা রাদিয়াল্লাহু আনহু।
অজুদে বারো ইমাম
১। হাইউন বা জীবিত শক্তি ২। আলিমুন বা জ্ঞান শক্তি ৩। কুদিরুন বা কর্ম শক্তি ৪। মুরিদুন বা
যৌন শক্তি ৫। সামিউন বা শ্রবণ শক্তি ৬। বসিরুন বা দর্শন শক্তি ৭। কলিমুন বা বাক শক্তি ৮। আগুন ৯। পানি ১০। মাটি ১১। বাতাস ১২। নূর।
পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও তাঁদের কর্ম সমূহ
পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের নাম- ১। চক্ষু ২। কর্ণ ৩। নাসিকা ৪। জিহবা ৫। ত্বক
১। চক্ষু ইন্দ্রিয়ের কাজ রূপ দর্শন করা। রূপ পাঁচ প্রকার। যথা- ১। হাস্যকর রূপ ২। বিরক্তিকর রূপ ৩। মোহনীয় রূপ ৪। মায়াময় রূপ ৫। ভয়ঙ্কর রূপ।
২। কর্ণ ইন্দ্রিয়ের কাজ শব্দ শ্রবণ করা। শব্দ পাঁচ প্রকার। যথা- ১। হাস্যকর শব্দ ২। বিরক্তিকর শব্দ ৩। মায়াময় শব্দ ৪। মধুর শব্দ ৫। ভয়ঙ্কর শব্দ।
৩। নাসিকা ইন্দ্রিয়ের কাজ ঘ্রাণ বা গন্ধ গ্রহণ করা। গন্ধ পাঁচ প্রকার। যথা- ১। দুর্গন্ধ ২। প্রাণঘাতী গন্ধ ৩। হাস্যকর গন্ধ ৪। জ্ঞানহরা গন্ধ ৫। মৌ মৌ গন্ধ।
৪। জিহবা ইন্দ্রিয়ের কাজ স্বাদ গ্রহণ করা। স্বাদ পাঁচ প্রকার। যথা- ১। টক স্বাদ ২। লবণাক্ত স্বাদ ৩। মিষ্টি স্বাদ ৪। ঝাল স্বাদ ৫। তিতা স্বাদ।
৫। ত্বক ইন্দ্রিয়ের কাজ স্পর্শে অনুভূতি করা। স্পর্শ অনুভূতি পাঁচ প্রকার। যথা- ১। আরামদায়ক স্পর্শ ২। বেদনাদায়ক স্পর্শ ৩। হাস্যদায়ক স্পর্শ ৪। বিরক্তিদায়ক স্পর্শ ৫। ভয়ঙ্কর স্পর্শ।
পঞ্চ রস পরিচয়
১। দুধ ২। মধু বা ফুলের রস ৩। পানি বা বায়ু রস ৪। গাছের রস- যেমন, খেজুরের রস, তালের রস, রাবারের রস ৫। ফলের রস।
সপ্তাহের সাত বারের নাম
ইংরাজি বাংলা আরবি
১। স্যাটার ডে শনিবার ইয়াউমুস সাবত
২। সান ডে রবিবার ইয়াউমুল আহাদ
৩। মান ডে সোমবার ইয়াউমুল ইসনাইন
৪। টুইস ডে মঙ্গলবার ইয়াউমুস সুলাসা
৫। ওয়েডনেস ডে বুধবার ইয়াউমুল আরবিয়া
৬। থার্স ডে বৃহস্পতিবার ইয়াউমুল খামিস
৭। ফ্রাই ডে শুক্রবার ইয়াউমুল জুমুয়া
বৎসরের বারো মাসের নাম
ইংরাজি মাস বাংলা মাস আরবি মাস
১। জানুয়ারি বৈশাখ মহররম
২। ফেব্রুয়ারি জ্যৈষ্ঠ সফর
৩। মার্চ আষাঢ় রবিউল আওয়াল
৪। এপ্রিল শ্রাবণ রবিউস সানি
৫। মে ভাদ্র জমাদিউল আওয়াল
৬। জুন আশ্বিন জমাদিউস সানি
৭। জুলাই কার্ত্তিক রজ্জব
৮। আগস্ট অগ্রহায়ণ শাবান
৯। সেপ্টেম্বর পৌষ রমজান
১০। অক্টোবর মাঘ শওয়াল
১১। নভেম্বর ফাল্গুন জিলকদ
১২। ডিসেম্বর চৈত্র জিলহজ্জ
দ্বীন ও দুনিয়ার সময়ের হিসাব
দ্বীন এর এক সেকেন্ড সমান দুনিয়ার বারো ঘণ্টা। দুনিয়ার এক বার বা একরাত ও একদিন বা চব্বিশ ঘণ্টা সমান দ্বীনের দুই সেকেন্ড। দুনিয়ার ত্রিশ বার বা এক মাস সমান দ্বীনের ষাট সেকেন্ড বা এক মিনিট। দুনিয়ার ষাট মাস বা পাঁচ বছর সমান দ্বীনের ষাট মিনিট বা এক ঘণ্টা। দুনিয়ার পনেরো বছর সমান দ্বীনের তিন ঘণ্টা বা এক প্রহর। দ্বীনের আট প্রহর বা চব্বিশ ঘণ্টা বা একরাত ও একদিন বা এক বার সমান দুনিয়ার একশো কুড়ি বছর।
মনে রাখবে, তুমি দ্বীন ও তুমি যেখানে অবস্থান করছো, তাহা দুনিয়া।
প্রতিটি মানুষ প্রজাতিয় প্রাণী মাতৃগর্ভে প্রবেশকালে ১২০ বৎসরের আয়ু নিয়েই প্রবেশ করে। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভিণীর আচরণ হেতু গর্ভস্থ সন্তান পূর্ণ আয়ু ১২০ বৎসর প্রাপ্ত হতে পারে, ১২০ বৎসর হতেও অধিক আয়ু প্রাপ্ত হতে পারে, ১২০ বৎসর হতে কম আয়ুও প্রাপ্ত হতে পারে, এমন কি আয়ুহীন হয়ে মৃত সন্তানও প্রসব করতে পারে।
জমিতে ফসল ফলাতে হলে যেমন, কোন মৌসুমে কোন ফসলের চাষ করতে হয়, ও কি পদ্ধতিতে চাষ করলে ভালো ফসল উৎপাদন করা যায়, তা জানা আবশ্যক। ঠিক তেমনি পৃথিবীতে প্রাণীরূপে জন্ম নেওয়ার পরে, কি পদ্ধতিতে জীবন পরিচালনা করলে জীবনে শান্তি প্রাপ্ত হওয়া যায় তা জানা জরুরী। তার থেকেও জরুরী একজন পুরুষ নারী সঙ্গ, বা একজন নারী পুরুষ সঙ্গ করার আগে, কি পদ্ধতিতে সঙ্গ দিলে নারী ও পুরুষ উভয়ে আয়ু বৃদ্ধি করে, সুখী ও শান্তিময় জীবন প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সেই পদ্ধতি জানা আবশ্যক। তা না হলে, প্রাণীকুল অশান্তিতে নিমজ্জিত হয়ে অকালে প্রাণ বিসর্জন দিবে।
বিঃ দ্রঃ যারা বলে ত্রিশ দিনে এক মাস তারা ভুল বলে। কেন না ত্রিশ দিনে মাস নয়, ত্রিশ বারে এক মাস হয়। যাহা ত্রিশ দিন ও ত্রিশ রাতের সমন্বয়ে সংঘটিত হয়।
বার পরিচয়
পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর এক পাক, বা- এক বার ঘুরে আসতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা, বা- একরাত ও একদিন। চব্বিশ ঘণ্টায় পৃথিবীর নিজ অক্ষের উপর একবার প্রদক্ষিণ হেতু, এই সময়কে পৃথিবীর নিজ অক্ষের উপর ঘুরার একবার বলা হয়। এভাবে পৃথিবী নিজ অক্ষের ত্রিশ বার ঘুরাকে ত্রিশবার বা এক মাস বলা হয়। আর পৃথিবী সূর্যকে একবার ঘুরে আসতে নিজ অক্ষের উপর ৩৬৫ বার ৪ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড সময় লাগে। এই সময়কে পৃথিবীর এক বছর বলা হয়।
লিখেছেন গুরুজি। মূল লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১। স্বার্থ সিদ্ধির জন্য নেওয়া ছলনাময়ী আশ্রয়টুকুর নামই, প্রেম বা ভালবাসা। সেরু পাগলার বাণী।
২। যাহার চিন্তা বাক্য ও কর্ম, নিজের, সমাজের, দেশের তথা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিযোজিত, সেই ইসলাম বা শান্তি ধর্মের লোক। তা সে যে সম্প্রদায়েরই হউক না কেন। আর- যাহার চিন্তা বাক্য ও কর্ম, নিজের, সমাজের, দেশের তথা বিশ্ব অ-শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিযোজিত, সেই অ-ইসলাম বা অ-শান্তি ধর্মের লোক। তা সে যে সম্প্রদায়েরই হউক না কেন। সেরু পাগলার বাণী।
৩। আস্তিক হলো তারাই- যারা বিশ্বাস করে আল্লাহর অস্তিত্ব আছে। আল্লাহ দেহধারী, তাকে দেখা যায় ও তাকে ধরা যায়।
নাস্তিক হলো তারা- যারা মনে করে আল্লাহ নিরাকার, তাকে দেখা ও ধরা যায় না।
আর যারা বিশ্বাস করে স্রষ্টা বলতে কিছু নাই, তারা মূলতঃ ভণ্ড। সেরু পাগলার বাণী।

হিন্দু ধর্ম ও যৌনতা



লিখেছেন: নীল কষ্ট
হিন্দু ধর্ম উপমহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন ধর্ম বিশ্বাস। হিন্দুরা একে সনাতন নামেও অভিহিত করে থাকেন। সনাতন অর্থ যা আদিতে ছিল, বর্তমানে আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে। অনেকে একে পৃথিবীর প্রাচীনতম ধর্ম বিশ্বাস মনে করেন যা এখনো অস্তিত্ব টিকে রেখেছে।
হিন্দু ধর্ম মতে- জীবনের উদ্দেশ্য চারটি- ১. ধর্ম ২.অর্থ ৩. কাম ৪. মোক্ষ। অর্থ অপেক্ষা ধর্ম শ্রেয় এবং কাম অপেক্ষা অর্থ শ্রেয়। মোক্ষ লাভ হলো আত্মার মুক্তি।
যৌনতা অর্থাৎ কাম হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ন অধ্যায়। প্রতিটি মানুষকে এই পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যদিও ব্রক্ষ্মচার্য ও সন্যাস জীবনের উপড় হিন্দু ধর্ম অনেক জোর দিয়েছে, তথাপি খুব গুরুত্বপুর্ন। কারন- কামই হলো বংশবৃদ্ধি ও সৃস্টি রক্ষার একমাত্র উপায়। হিন্দু ধর্ম মতে- কাম স্বর্গীয়। কিন্তু ব্যভিচার, ধর্ষন প্রভৃতি অপরাধমূলক কর্মকান্ডকে পাপ হিসেবে গন্য করা হয়। প্রকৃতির অন্যান্য জিনিসের মতো কামও তিন প্রকারের- ১. সাত্ত্বিক- ইহা নিষ্পাপ, স্বর্গীয় এবং বংশরক্ষার পদ্ধতি। ২. রাজসিক- ইহা আত্মরম্ভিক ও রিরংশামূলক। ৩. তামসিক- ইহা নিগ্রহ ও বলপূর্বক।
কাম হিন্দু ধর্মে মানব জীবনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। কাম মানবকে স্বর্গীয় সুখ দিতে পারে। ছাত্রদের যেমন বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত ব্রক্ষ্মচর্য পালন অত্যাবশ্যকীয়, তেমনি সবার জীবনে বিয়ের পরে বা কিছু ক্ষেত্রে পূর্বেও কামকে সম্মতি দেয়। হিন্দু ধর্ম বহুবিবাহ ও বহুগামিতাকে সম্মতি দেয়। পুরুষ তার স্ত্রী ছাড়াও অন্য নারীর সাথে বিশেষত বারবনিতা, চাকর প্রভৃতির সাথে কাম চরিতার্থ করতে পারে। প্রাচীনকালে ভারতে বেশ্যাবৃত্তির প্রচলন ছিল এবং অনেক রাজ্যে নারীদের বেচাকেনা হতো। কোন নারী চাইলে মুক্তভাবে জীবন যাপন করতে পারত এবং যে কোন পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলিন করতে পারত। উপনিষদে বর্ণিত- সত্যকামার মাতা জাবালার কাহিনী থেকে আমরা এটা দেখতে পাই।
প্রাচীন কালে- কোন বিধবা নিঃসন্তান নারী তার আপন দেবর অথবা দুরসম্পর্কীয় দেবরের সাথে মিলন করতে পারতো, বংশরক্ষার জন্য। কোন দম্পত্তির সন্তান না থাকলে নারী তার ইচ্ছামত পুরুষের সাথে মিলিত হতো, বংশরক্ষার জন্য। এটা ছিল আইনত সিদ্ধ।
বেদ, পুরান, উপনিষদে এরকম অনেক কাহিনী বর্ণিত আছে। হিন্দু ধর্মের দেবতারা বেশিরভাগ লালসাপূর্ন কামুক ও দেবীরা সতী ও পবিত্র। শাস্ত্রে কাম লালসাপূর্ন দেবতাদের অনেক উপাখ্যান বর্ণিত আছে। তারা স্বর্গের দেবী এমনকি মর্ত্যের সুন্দরী নারীদের সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়েছে। যখন কোন মানুষের আত্মা স্বর্গের পথে গমন করে, স্বর্গের সুন্দরী নর্তকীরা তাকে স্বাগত ও বিনোদন দেওয়ায জন্য প্রস্তুত থাকে।
স্বর্গের দেবতা ইন্দ্র হলো কামুক, লালসাপূর্ন ও হিংসুটে। যখনি কোন মানুষ কৌমার্য পালনে ব্রতী হয়েছে, ইন্দ্র নর্তকী পাঠিয়ে তার ব্রত ভঙ্গ করেছে। সে নিজেও অনেক নারীর সাথে মিলন করেছে, এমনকি গুরুপত্নী অহল্যার সাথে মিলিত হয়ে সে অভিশাপ প্রাপ্ত হয়। এরকম বেদ, পুরানে অনেক উপাখ্যান উদ্ধৃত আছে। মহাভারতের রাজা শান্তনুর স্ত্রী সত্যবতীর বিবাহপূর্ব সন্তান হলো কৃষ্ণদৈপান যিনি বেদব্যাস নামে বিখ্যাত। তার জন্ম হয়েছিল ঋষি পরাশরের ঔরষ্যে। সত্যবতী ছিল মৎস্যকন্যা, গায়ের গন্ধ দুর করার শর্তে তিনি পরাশরের সাথে মিলিত হন। বিয়ের পরে তার সন্তান বিচিত্রবীর্য সন্তান জন্ম দানের পূর্বে মারা গেলে, কৃষ্ণদৈপায়ন তার স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ে সন্তান জন্ম দেন। এছাড়া পঞ্চপান্ডব মাতা কুন্তীর চার ও মাদ্রীর দুই সন্তানের জন্মও হয় বিভিন্ন দেবতাদের ঔরষ্যে। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কান্ডারী কৃষ্ণের ছিল ১৬০০৮ জন পত্নী ও উপপত্নী।
পুরানে বর্নিত উপাখ্যানগুলো আরো রসাত্মক। আত্মসংযম ও নিশ্চলতার দেবতা শিবও নর্তকী মোহিনী রুপ দেখে নিজেকে সংযম রাখতে পারেন নি। অগ্নি, বরুন, বিষ্ণু সবারই ছিল নারীদের প্রতি লালসাপূর্ন দৃষ্টি। এই ব্রক্ষ্মান্ডের সৃস্টিকর্তা ব্রক্ষ্মা তার সৃস্টি দেবী স্বরস্বতীকে দেখে আত্মসংযম হারিয়ে তার সাথে মিলিত হন। যম ও যমি ছিল আপন ভাইবোন। তারাও কামের তাড়নায় মিলিত হন। হিন্দুদের পূর্বপুরুষ ভারতের মাতা শকুন্তলার জন্ম হয় ঋষি বিশ্বামিত্র ও নর্তকী মেনকার গর্ভে। প্রাচীন ঋষিদের সবারই ছির পত্নী। কেহই কাম হতে মুক্ত ছিল না।
উপনিষদগুলোর মধ্যে ছান্দোগ্য ও বৃহদারন্যক উপনিষদে নর নারীর কামকে ও এর প্রকৃতিগুলোকে সুন্দরভাবে বর্ননা করা হয়েছে। কামকে বলা হয়েছে নিষ্পাপ ও স্বর্গীয়। পুরুষ নারীকে এবং নারী পুরুষকে আকৃষ্ট করার ও রতিক্রিয়ার পদ্ধতিগুলো বর্নিত আছে। এছাড়াও বাৎস্যায়নের কামশাস্ত্রে কামকে নান্দনিক ও উপভোগ্য করার জন্য বিভিন্ন আসন ও পদ্ধতি বর্নিত আছে।