Saturday, August 15, 2015

বিয়ে ‪ক্যাম্পেইনের পটভূমি ‪ ইসলামপন্থীদের ‪পূঁজিবাদী ‪চিন্তার পোস্টমর্টেম





ক্লাস রুমে গিয়ে দেখে- এক কর্ণারে দু'তিন জন ছেলে একসাথে গোল হয়ে কি যেন দেখছে আর অল্প-অল্প ঘামছেতরুণীটি কেন জানি বারবার ডিসপ্লের দিক থেকে লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে, আর তরুণটি বারবার তাকে দেখানোর চেষ্টা করছে

১৮ বছর পার হলে কি সব অপরাধ মাফ? আপনি যে পেজটি দেখতে চান সেটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য, আপনি যদি ১৮+ হন তবেই প্রবেশ করতে পারেনএর মানে কি?
১৮ বছর পার হলে পর্ণগ্রাফি দেখা বৈধ? হ্যা বৈধকারণ আপনি মুসলিম ননএরকম না লিখে লেখা উচি আপনি কি মুসলিম? মুসলিম না হলে চালিয়ে যান
যারা মনে করেন পর্ণগ্রাফী দেখা স্বাভাবিক, তাদের জন্য এ লেখা নয়


পর্ণগ্রাফী বা নীল ছবি, অথবা এডাল্ট কন্টেন্ট যাই বলুন ইসলামে হারাম

আপনি একজন মুসলিমআপনার ১৩-৩৫ বছর বয়সী ছেলে, ভাই, ভাগ্নে, বন্ধু, ছাত্র, শিক্ষক বা প্রতিবেশী রয়েছেআপনি কি জানেন এদের মধ্যে অধিকাংশেই কোনো না কোনোভাবে পর্ণগ্রাফি দেখে? চটি গল্প পড়ে?
এমনকি এক শ্রেণীর অমানুষেরা পরিবারের সবচেয়ে ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার পাত্রদের নিয়ে এমন সব বিকৃত সম্পর্ক স্থাপনের গল্প ফাঁদে যা পড়লে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন যে কোনো মানুষের বমি আসবেএই সম্পর্ককে অজাচার বলা হয়
হয়ত গাছ থেকে পড়বেন, অথবা গালি দিতে চাইবেনঅসম্ভব! এ হতেই পারে নাসবাই একরকম না, ইত্যাদি বলে উড়িয়ে দিবেন তাই না? দিলে দেন আমার কথা বন্ধ করতে পারবেন না
মানুষ কিভাবে পর্ণগ্রাফি্র প্রতি আসক্ত হয় আসুন দেখে নিই-


২০০৫ সাল; রসু এস এস সি পাশ করে শহরের এক কলেজে ভর্তি হয়কলেজ সংলগ্ন হোস্টেলে ওঠে সেগ্রামের ছেলে, শহরের অনেক কিছুই জানে না, বোঝে না
একদিন
সে তার বিছানা পরিস্কার করতে গিয়ে বিছানার তলায় একটি পাতলা বই আবিষ্কার করেকৌতুহলি হয়ে সে একটু উল্টে-পাল্টে দেখেকয়েক লাইন পড়ে সে তো হতবাক
ছি! ছি! মানুষ এত খারাপ হয় কি করে? এই বই এখানে আসল কি করে?
মাথাটা তার গরম হয়ে গেলযে ছেলে গ্রামে থাকতে রেডিওর বাংলা গান, আর বিটিভির বাংলা সিনেমা ছাড়া নারী-পুরুষের মধ্যে যে সম্পর্ক কত ধরণের থাকতে পারে তার ধারণা ছিলনাএই বইয়ের মধ্যে পরিবারের রক্তের সম্পর্কের মানুষগুলিকে নিয়ে যে অশ্লীল কথা লেখা সে দেখল তাতে সে ভাবল, এ বই কি কোনো মানুষ লিখতে পারে?



এভাবেই পরিচয়
২০০৮ সালমদন ঢাকা শহরের এক বিখ্যাত স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়েসারাদিন ক্লাসের পর আবার তাকে ক্রসিং সেন্টারে যেতে হয়একদিন সে কোচিং এ গেল ক্লাস শুরু হওয়ার কিছু আগেক্লাস রুমে গিয়ে দেখে- এক কর্ণারে দু'তিন জন ছেলে একসাথে গোল হয়ে কি যেন দেখছে আর অল্প-অল্প ঘামছেএকটু কৌতুহলি হয়ে সে পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যা দেখল তাতে তার মাথা ঘুরে এলছি! তোরা এত নিচ! আমি স্যারকে সব বলে দেবছেলেরা বলে উঠল এ...হ...দরবেশ সেজেছেযা যা বল গিয়ে



২০১৫ সালের মার্চ মাসকিছুক্ষণ আগেই সন্ধ্যা হয়েছেঢাকার নীলক্ষেত থেকে আজিমপুরের উদ্দেশ্যে ফুটপাত দিয়ে হাটছে রবিএটিএম বুথ এর পর হতেই শুরু হয় প্রেমলীলাএসব দেখে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছেকিছুদূর যাওয়ার পর এক জায়গায় বেশি অন্ধকারতার মধ্যে সামান্য আলো, বড় স্মার্টফোনের ডিসপ্লেসে আলোয় দুজন তরুণ-তরুণীর মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তরুণীটি কেন জানি বারবার ডিসপ্লের দিক থেকে লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে, আর তরুণটি বারবার তাকে দেখানোর চেষ্টা করছেকৌতুহলি হয়ে কয়েক সেকেন্ড সে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করল ঘটনা কিসে যা দেখল তার জন্য কখনোই প্রস্তুত ছিল না

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এক দুপুরঢাবির রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এ জরুরি কাগজপত্র তোলার জন্য গিয়েছে রাহাত৩য় তলার ০০১ নং কক্ষে মুরব্বি টাইপের এক লোক বসাবয়স দেখে মনে হয় বয়স ৬০ এর মত হবে, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়িঅন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে, সরাসরি মুরব্বির পাশে চলে গেল সেমুরব্বির হাতে একটা মাল্টিমিডিয়া মোবাইলকাছে গিয়ে রাহাত কর্মকর্তার মোবাইলের ডিসপ্লেতে যা দেখল, তাতে মানুষ সম্পর্কে তার ধারণা বদলে গেলপৃথিবীতে সে বয়স্ক মানুষকে শ্রদ্ধা করতে ভুলে গেল

কিছু কবিতার বেড়ে উঠার চেষ্টা



নাহয় এ কটা দিন ধৈর্য্য ধরলাম, প্রাত্যহিক নিয়মের বাইরে দূরত্ব অনেক সময় নাকি নতুন করে ভাবতে শেখায়,
নতুন করে সাজাতে শেখায় আমি নাহয় এই কটা দিন ভাববো ভেঙে গড়ে নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করবো, আশায় বুক বাঁধবো, দিনগুলো পেরুলে তুমি খুলে দিবে দ্বার--- 
মরণ দেখেছিলেন কবি কারো চোখে, আর কারো চোখ দেখে বাঁচতে ইচ্ছে হয় নারীকন্ঠে শুনি,"ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই" তাই কেউ কেউ চোখে খোঁজে সাড়া চোখ নিয়ে এত ভাবনার ভীড়ে শুনি আগুনে না পোড়া অলৌকিক চোখের খবর এ জীবনে দেখার সুযোগ হয়েছে নিজের চোখে, মনি কেড়ে নেয়া চোখ- যে চোখ মনের কথা বলে---
লোকে বলে, নিরাপত্তার খাতিরে গোপনীয়তা ভাল আমার আবার খাতির এ খুব না পছন্দ আমার তো মনে চায়- প্রতিটি চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘোষণা দেই প্রেমের, প্রতিটি যুবককে উদ্বুদ্ধ করি গভীর প্রেমে পড়তে যৌবনের ধর্মই তো প্রেমে পড়া, যার জন্য সে জীবন মরণপণ করবে বুড়ো হাড়ে আছে এত জোর? তবুও তুমি বললে গোপন রাখতে পারি সব সমাজের আড়ালে,লোকচক্ষুর অন্তরালে শর্ত শুধু একটাই- তোমার নিখাদ প্রেমে সিক্ত করবে আমায়, রিক্ত আমায় করবে পূর্ণ; এত ভালবাসবে আমায় যেন মনে হয় ডানা গজিয়েছে পিঠে আমার খুব পাখি হয়ে উড়বার শখ,তোমার সাজানো বাগানে---
চোঁখ বোজা বিশ্বাস থেকেই নাকি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয় যেন রাখো একদিন আবে হায়াত পানের লোভে ঝাপটে ধরে হলেও চুমু খাবো তোমায় মিটিয়ে নিবো তৃষা শুক্রাণুর অদম্য পাগলামী নাকি যূবককে নীতিভ্রষ্ট করে, যে শুক্রাণুর সৃষ্টি নষ্ট রক্ত থেকে আমার ভাল,তাজা রক্তই পাগলামী জুড়ে দিয়েছে, তার আর ডান-বাম করতে ভাল লাগে না তোমার চোখে চোখ রাখব একদিন দৃপ্ত সাহসে সেদিন জেনে বুঝে মেনে নিও আহ্বান, কেননা তোমার জন্য আমি অগ্রাহ্য করেছি অনেক লোভাতুর কামনা তোমার জন্য মহাকাব্য লেখার সাধ,হে কবিতা তুমি বুঝি চিত্র সমালোচক? তাহলে জেনে নাও শপথ করলাম, তোমায় নিয়ে আলোচিত চিত্রকর্ম জন্ম দিব পৃথিবীর মাটিতে
প্রবল আকাঙ্ক্ষায়---
মাঝে মাঝে মনে হয় তোমাকে কোনদিন ছুঁয়ে দিতে পারবো না,পাবো না বুকের কাছে; যেমনটি থাকো স্বপ্নে আমার তোমার শরীরের ঘ্রাণে মাতাল করে ফুল হতে তুমি অথবা শরতের কাশবন তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে মিলিয়ে দিতাম হাহাকার হতে কোন পাহাড়ের আড়ালে গোপন ঝর্ণাধারা মিটিয়ে নিতাম প্রাণের তৃষ্ণা সেই আবে হায়াতে মাঝে মাঝে মনে হয় কল্পনার সব রঙ দিয়েও তোমায় মূর্ত করে তোলা হবে না, তোমার প্রতিমার সামনে দাঁড়িয়ে অনুচ্চারিত থেকে যাবে সকল স্তুতিগান হতে যদি কলের পুতুল বলতে শুধু "ভালবাসি,ভালবাসি" বৃষ্টি হবো আমি তোমার আকাশে প্রিয়, আমার ঝরে যাবার বেলায় ছাদে দাঁড়াইও

নাকুদের নিয়ে কৌতুক



আমার ব্লগে কিভাবে ছাগু চিহ্নিত করা হয় তা নিয়ে ফ্লো চার্ট ও রেফারেন্স সেকশন সমৃদ্ধ বিশাল গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে পিয়ার রিভিউড জার্নাল সদালাপেলেখক বিজ্ঞানী এম সারোয়ার হোসেনে পিঠ যথারীতি চাপড়ে দিয়েছেন তাঁর পিয়ার শাহবাজ নজরুল
ভাবলাম কৌতুক তো সদালাপের সম্পত্তি হতে পারে না, তাই এই পোস্টের অবতারণা তবে এখানে দেওয়া নেট থেকে সংগৃহিত কৌতুকগুলো প্রচলিত ফরম্যাটের, গবেষণা নিবন্ধের আকারে নাকৌতুকগুলো নাকুদের নিয়ে (নাকু = নাস্তিক কুত্তা, কপিরাইট সদালাপীদের সহমর্মী কেউ, কে ঠিক মনে নেই)আমার ব্লগ থেকে সাম্প্রতিক হিজরতে যাঁরা বিমর্ষ বোধ করছেন, আশা করি তাঁরা মনে কিছুটা হলেও স্ফূর্তি ফিরে পাবেন
একঃ- সুন্দরী তরুণী ডেটিং শেষে বাসায় ফিরল মন মরা হয়েমা জিজ্ঞেস করলেন, "এ্যাই তোর কী হয়েছে, মন খারাপ কেন?" তরুণী বলল, "মা, ও না আজকে সুন্দর একটা গিফট দিয়েছে, আর আমাকে বিয়ে করবে বলেছে।" মা জিজ্ঞেস করলেন, "তাতে মন খারাপের কী হল?" তরুণী : কিন্তু মা, ও বলল ও নাকি নাস্তিক! মা : নাউজুবিল্লাহ! তাই নাকি! তরুণী : হ্যাঁ মাএমন কি ও জাহান্নামের কথাও বিশ্বাস করে না মা : অসুবিধা নাই, বিয়ের পরপরই আমরা দু'জনে মিলে ওটা বিশ্বাস করিয়ে ছাড়ব
দুইঃ- নাকু : ওয়েটার, আমার সুপের ভিতর মাছি কী করছে? ওয়েটার : মোনাজাত করছে, স্যার নাকু : হুঁহ! রসবোধ তো তোমার ভালই, যাও এটা পালটে নিয়ে এসো ওয়েটার : দেখলেন তো স্যার, ওর মোনাজাত কবুল হয়েছে!
তিনঃ- এক মোল্লা, এক পুরুত আর এক নাকু ছোট নৌকায় ভ্রমণে বেরিয়েছেমাঝ নদীতে নৌকা ফুটা হয়ে ডুবতে বসেছেমোল্লা হাত তুলে মোনাজাত শুরু করল, "হে আল্লাহ, এই যাত্রা আমাকে বাঁচিয়ে দাও! আমি বেঁচে গেলে মক্কা শরীফে গিয়ে বাকি জীবন তোমার ইবাদত-বন্দেগীতে কাটিয়ে দিব।" পুরুত ঠাকুর প্রার্থনা শুরু করল, "হে ভগবান, এ যাত্রা আমাকে বাঁচিয়ে দাওআমি বেঁচে গেলে বৃন্দাবন গিয়ে বাকি জীবন তোমার আরাধনা করে কাটিয়ে দিব।" নাকু বলা শুরু করল, "হে মোল্লা ও পুরুত ভাই, এ যাত্রা নৌকার এক মাত্র লাইফ জ্যাকেটটা আমার দিকে বাড়িয়ে দাও।" মোল্লা ও পুরুত বলল, "বাকি জীবন কী করবে বললে না তো!" নাকু বলল, "অন্য কোন নাস্তিকের সাথে এক নৌকায় না উঠার কথা সারা জীবন মনে রাখব।"
চারঃ- এক মোল্লা প্রতিদিন সকালে দরজা খুলে বাসা থেকে বের হয়ে তারস্বরে চিকার করে বলে, "শুকুর আলহামদুলিল্লাহ!" পাশের বাসার নাকু তাতে খুব বিরক্তসেও ঘর থেকে বেরিয়ে এসে চিকার করে বলে, "আল্লাহ বলে কিছু নেই।" একদিন রাতে নাকু খেয়াল করল মোল্লা মোনাজাত করার সময় আল্লাহ কাছে খাবার-দাবার চাইছেনাকুর মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেলসে অনেক খাবার দাবার কিনে পরদিন ভোরে মোল্লার দোর গোড়ায় রেখে দিয়ে এলসকালে মোল্লা ঘর থেকে বেরিয়ে তাজ্জবসাথে সাথে সে চিকার করে বলল, "শুকুর আলহামদুলিল্লাহ, এত খাবারের এন্তজাম করার জন্য।" পাশের বাড়ির নাস্তিক বের হয়ে এসে হাসতে হাসতে বলল, "আরে বোকা, খাবার আল্লাহ দেয়নি, আমি দিয়ে গেছি।" মোল্লা আবার বলল, "শুকুর আলহামদুলিল্লাহ, নাকুর পয়সায় এত খাবারের এন্তেজাম করার জন্য।"
পাঁচঃ- প্রশ্ন : নাকুরা আস্তিকদের নিয়ে কৌতুক করে কেন? উত্তর : কারণ তারা বিশ্বাস করে যে আস্তিকরা ছাগু

Wednesday, August 12, 2015

যে ৩টা কারনে ধূমপান ত্যাগ করা যায় না

অনেকেই ধূমপান করেন আমি না দেইখাও সাক্ষি দিতে পারি। আর অনেকেই অনেক অনেক বার ধূমপান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েও ছাড়তে পারেন না। এর ৩টা খুব কমন কারণ আমি ব্যাপক গবেষণা করে বের করেছি। মূলত এই ৩টা কারণেই মানুষ ধূমপান শুরু করে থাকেন।
(আর বিড়ি খামু না, ঘোষনার পর)
ধূমপান ত্যাগ না করার কারণ ১- আইজ কোন ১ কারণে মন খারাপ। তাই বিড়ি খাইতেই হবে। ধরাইলাম ১টা। এই শুরু হয়া গেল আবার।
ফলাফলঃ আবার বিড়ি খোর।B-)
ধূমপান ত্যাগ না করার কারণ ২- আইজ মন খুব ভাল। ভাল কিছু হইছে। সুখের চোটে আবার বিড়ি ধরাইলেন।
ফলাফলঃ আবার বিড়ি খোর।:((
ধূমপান ত্যাগ না করার কারণ ৩- আইজ কিছুই লাগতাছে না। মন ভাল ও না, খারাপ ও না। তাই কিছু ১টা লাগার জন্ন বিড়ি খাইতে হবে। বেস… শুরু হয়া গেল।
ফলাফলঃ আবার বিড়ি খোর।:P
দেখেন কমন পড়ে কিনা ? আমার করণ গুলা এগুলার মদ্ধেই সীলাবদ্ধ থাকে।

একটা করে গালী আর সেই তালে থাপ্পর----

স্টেডিয়াম থেকে সবে মাত্র ভারত – দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনাল খেলা দেখে বেরুচ্ছি। স্টেডিয়ামের ৪ (চার) নাম্বার গেট তখনো পার হইনি। দেখি এক টোকাই অকথ্য ভাষায় গালী দিচ্ছে মোটাসোটা লম্বা আমার সমবয়সী এক ছেলেকে। আর মোটা ছেলেটা টোকাই এর গলা চেপে ধরে গালে থাপ্পর দিচ্ছে গালীর তালে তালে।
একটা করে গালী বের হচ্ছে আর সেই তালে থাপ্পর। স্টেডিয়ামের গেট থেকে বেরুলেই LG এর স্টল। সেখানে জোরে গান বাজানো হচ্ছে। গানের শব্দে গালী ভালভাবে শোনা না গেলেও, থাপ্পরের আওয়াজ ঠিকই শোনা যাচ্ছিল। কেউ দমবার পাত্র নয়। থাপ্পর/গালী সমানতালে। কিছু বিনে পয়সার দর্শক জর হয়ে গিয়েছিল। আমিও ছিলাম তাদেরই একজন। বুঝতে চাচ্ছিলাম আসল ঘটনা কি। বুঝতে বুঝতেই টোকাইটা অই ছেলের হাত থেকে ফসকে দৌড়। নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে চোখ মুছতে মুছতে আরো তীব্র গালাগালি। দেখার মত দৃশ্য।
এক হাতে তালি বাজে না। দোষ দুজনেরই আছে। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে টোকাই ছেলেটা অশিক্ষীত, হয়ত পেটের দায়ে কোন কাজে এসেছে। আর আমার সমবয়সী ছেলেটা সার্টিফিকেটধারী শিক্ষীত তা দেখি আন্দাজ করা যাচ্ছিল এবং এসেছে বিনোদন খোঁজার আশায়।
বিবেকের হিসাব খুব কম ভুল হয়। আমার বার বার ইচ্ছে হচ্ছিল নাদুস নুদুস ছেলেটাকে গলা চেপে ধরে বলি, আমাকে গালী দে হারামজাদা আর আমি তোকে কিছুক্ষন থাপড়াই। কিন্তু না, সেটা পারলাম না, কারণ টোকাইটার মত আমারও পেছনে কোন ব্যাকাপ ছিল না, যেটা সেই নাদুস নুদুসের ছিল। খুঁটির জোর সত্যিই দরকারী জিনিস। আর পৃথিবীর সব সিকিউরিটি শুধু ধনীদের জন্যই। একারনেই বিনে পয়সার নিশ্চুপ দর্শকদের মাঝে কিছু পুলিশ ও আনসার ও ছিল। হয়ত তাদের ব্যাকাপ টোকাইটার থেকেও কম ছিল।রক্ষা এই যে, নাদুস ছেলেটার কিছু বন্ধু তাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল।

আমার যৌবনের ডাকে সারা দেয়া ও বিপত্তি---

মাত্র ৮ম শ্রেণী’র বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলো। দৌড় দিলাম গ্রামের বাড়ি। কাজিনের বাইক দিয়ে মোটামোটি চালানো শিখলাম সবে মাত্র। সে এক বিরাট ফিলিংস। এটা কোন সমস্যা নয়, বিপত্তি আসলে অন্য যাগায়। বাসায় এসেই আব্বুর সাথে মিটিং এ বসলাম।
মিটিং এ আমি, আব্বু আর আম্মু বসে আছি
আমিঃ আব্বু, আমি যৌবনের ডাকে সাড়া দিতে চাই।
আব্বুঃ তো আমি কি করতে পারি তোমার জন্য?
আমিঃ আমাকে বাইক কিনে দাও। আমি ভাল চালাতে পারি।
আব্বুঃ এই কথা আর কোনদিন বলবা না। ২ চাক্কা কোনদিন কিনে দেয়া হবে না। যদি কোনদিন তোমার বাবার টাকা হয়, তাহলে ৪ চাক্কা কিনে দেয়া হবে।
আমিঃ কেন? আমি কি যৌবনের ডাকে সাড়া দিব না? আমি এক্সিডেন্ট করব না।
মাঝ থেকে আম্মু বিপত্তি দেখিয়ে কথা ধরলেন,
আম্মুঃ তোর ফুফু মারা গেছে বাইক এক্সিডেন্ট এ। তাই তোর আব্বু বাইক কিনে দিবে না।
আমিঃ আচ্ছা, ঠিক আছে।
আসলে আমার একমাত্র আপন ফুফু যখন ফুফার পেছনে বসে আমাদের বাসায় আসচ্ছিলেন, তখন বাইক এক্সিডেন্ট এ মারা যান। আমি তখন বেশ ছোট, তাই মনে নাই। তখন থেকেই পুরা ফ্যামিলিতে বাইক অনেকটা হারাম টাইপের। যাই হোক, অনেক বছর পার হয়ে গেছে। আব্বু আম্মুর যৌথ প্রযোজনায় এটা আমার লাইফের একমাত্র ‘না’। যেটা আমি আর কোনদিন দাবী করিনি। সেই চার চাক্কাও আর আসেনি জীবনে।

অনুগল্পঃ সাইলেন্ট ভালবাসা---

পর্যাপ্ত জ্বালানীর অভাবে চোখদুটো তখন একেবারে নিভু নিভু অবস্তা। তার সাথে মাথার উপরে নিচে একটি করে বালিশ দিয়ে কৃত্রিম নিশ্বব্দ পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে। এর মাঝেই গোঁ গোঁ টাইপের কর্কশ শব্দে কাপা শুরু করলো বিছানা। বিরক্ত হয়েই ফোনটা বালিশের নিচ থেকে হাতরে বের করে আনলাম। বেজে উঠা ফোন কলটা বার্ধক্যে উপনিত হওয়ার আগেই রিসিভ করলাম।
‘হ্যালো বলার অগেই ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো, ভালো আছো তুমি? ফোনে লাইভ নারী কন্ঠ শোনার অভ্যাস নাই বল্লেই চলে। নিভু চোখের পুরো জ্বালানীটা যেন শুধু হৃৎপিন্ডের গতি বৃদ্ধিতেই ব্যাবহৃত হচ্ছিল সেই মুহূর্তে। কি বলব না ভেবেই, স্বভাব সুলভ বলে বসলাম, মারাত্বক আছি
কথাটাযে সত্যি ছিল, তা উপলব্ধি করতে পেরেছি অনেক পরে। ততক্ষণে আর মিথ্যা বলার উপায় নেই। ইতোমধ্যে নারীকণ্ঠটি স্ক্যান হয়ে, তার পরিচয় বের করে, পুরনো সৃতি গুলো একে একে জমা করে যাচ্ছিল আমার মস্তিষ্ক। অচেনা নারীকণ্ঠটি একদম পরিষ্কার রঙিন হয়ে গিয়েছে ততক্ষনে।
“তোমার বাচ্চা কয়টা এখন?” – এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য নিজেও প্রস্তুত ছিলাম না একেবারেই। মন থেকে এক ঢিলে ২ পাখি মারার উদ্দেশ্যে প্রশ্নটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলে এসেছে। আসলে যার সাথে কথা হচ্ছে, সে আমার ছাত্রজীবনের প্রেমিকা। ভালবাসতাম, ভালবাসা ছিল, আজো হয়তো আছে তবু যোগাযোগ নেই প্রায় ৭ কি ৮ বছর যাবৎ। সে বিয়ে করেছে কবে, এরেঞ্জ নাকি প্রেম বা আদৌ করেছে কিনা সেটাও জানি না। সবগুলো উত্তর একত্রে পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রশ্ন।
“তোমার কয়টা?” – উত্তর না দিয়ে উল্টা প্রশ্ন তার। সাথে সাথে তার সঙ্গে ভালবাসা  সম্পর্ক ছিন্ন করার অপ্রিয় ঘটনাও মনে পরে গেল। উল্টা প্রশ্ন করার অভ্যাসটা এখনও যায়নি তার। এগুলোর পাশাপাশি কি উত্তর দিব ভাবাচ্ছিলাম। দুটো খরগোশের বাচ্চা আছে আমার। কয়েক বছর যাবত পুষচ্ছি। সেগুলোর কথাই কি বলে দিব? এই দুষ্টামি টা করা কি ঠিক হবে এই মুহূর্তে? জ্বালানীর অভাবে মস্তিষ্কটাও যেন একেবারে ধীরে কাজ করচ্ছিল। উত্তর দেব নাকি আমার প্রশ্নের উত্তর না দেয়ার দরুন ঝগড়া চালিয়ে যাব, ভেবে পাচ্ছিলাম না।

প্রহর---

অস্থীর চিত্তে রাত্রী জাগরণ আর
কান্নার শব্দে এলোমেলো রাতের নিস্তব্ধতা,
দীর্ঘ নিশ্বাসে সারাটাদিন কাটে আর
মোহিনীর টানে কেটে যায় পুরো সন্ধ্যাটা।
ঘুম ঘুম চোখে জাগে সকালের সূর্য আর
দুপুরের দেখা মেলা কাক ডাকা নিরব ভোরে,
বিকালেতে তরীটা বন্দর ছাড়ে আর
কাজ শেষে দেখা মেলা চর জাগা বালু তীরে,
এত এত লোক তবু একটাই আপন আর
শত শত দিন কাটে ভেবে ভেবে একা আমার,
এপার থেকে ওপারে যাই আর
খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হই তবু দেখা পাই না যে তোমার।
আমি গুনি রবি চাঁদ তারা আর
তুমি জীবনের হিসেব মিলিয়ে মিলিয়ে ক্লান্ত,
হিসেবের গড়মিলে নিজে থেকে দূরে আর
আবার বেহিসেবে মোহিনীর টানে নিজকে করি প্রশান্ত।

বিদায় বন্ধু----


বিদায় জানাচ্ছি বন্ধু তোমায় আজ,
জানাচ্ছি বন্ধু চীর বিদায়,
আর কখনো তোমার সামনে এসে,
বলব না ভালোবাসি তোমায়।
সত্যি কি তুমি আমার ছিলে?
কখনো? বা এক মুহূর্তের জন্য?
হয়তো ছিলে! হয়তো ছিলে না কোন কালেও!
আমি চাই না, তোমার চরিত্রে কোন বাজে কালিমা,
আমি চাই না, লোকে তোমায় বলুক নষ্টা।।
তাইতো তোমায় বিদায় জানাচ্ছি বন্ধু,
জানাচ্ছি চীর বিদায়।
কথা দিচ্ছি,
আর কোনদিন তোমার সিড়িতে,
দেখবে না তুমি আমার ছায়া,
রক্তাক্ত লাল, হলুদ বা সাদা গোলাপ হাতে,
বহুবার পরখ করেছি তোমার মায়া।
কতবার তাকিয়ে দেখেছি তোনার জ্বল জ্বল চোখ,
চাঁদের আলোয় দেখেছি প্রীতম তোমার মুখ,
গভীর আঁধারে বা আবছা আলোয় কতবার,
পরখ করেছি তোমার দেহের তীব্র পাগল করা গন্ধ,
তোমার চোখ ঝলসানো রুপ, তোমার শরীরের ভাজ,
আমায় করেছিল অন্ধ।
আমি চাই না, লোকে তোমায় বলুক দূশ্চরিত্রা,
অথবা পথ চলতে লোকে তোমায় বলুক কলঙ্কিনী।।
তাইতো তোমায় বিদায় জানাচ্ছি বন্ধু,
জানাচ্ছি চীর বিদায়।
কথা দিচ্ছি,
আর কোনদিন লিখব না তোমায় কোন চিঠি,
কারো হাতে দেব না, তোমার জন্য কোন উপহার,
তোমার বাড়ির রাস্তায় দাঁড়াব না আমি আর,
কখনো প্রেমের দাবী নিয়ে,
ভাঙতে আসব না তোমার সাজানো সংসার।
গোলাপে, চিঠিতে বা চোখের ভাষায়,
আর করব না তোমায় প্রেম নিবেদন,
কখনো আর মনে ভুলেও করব না,
তোমায় প্রিয়া বলে সম্বোধন।
আমি বুঝে গেছি,
তুমি আর আমার কোন উপভোগের বস্তু নও,
আমি বুঝে গেছি,
তুমি আর আমার সাজানো সুন্দর ভালবাসার পুতুল নও
যে পুতুলের প্রতিটি অঙ্গ নিয়ে খেলেছি কত খেলা,
অঙ্গ থেকে অঙ্গে খেলাকরে শুধু কেটেগেছে কত বেলা।
কত উপভোগ করেছি তোমার ভেতরের উষ্ণতা,
কত প্রাণ মাতিয়েছে তোমার কেশের তীক্ষ্ণতা,
আমি ভুলে গেছি আজ, সব মন মাতানো খেলা।
আমি চাই না, লোকে তোমায় বলুক চরিত্রহীনা,
আমি চাই না, লোকে তোমায় বলুক ছলনাময়ী,
তাই তো তোমায় বিদায় জানাচ্ছি বন্ধু,
জানাচ্ছি চীর বিদায়।
তোমার প্রতিটি লোমে লোমে,
ছড়িয়ে রয়েছে আমার কত পাপ,
তোমার প্রতিটি গুপ্ত অঙ্গের গভীরে,
জড়িয়ে আছে আমার আদরের ছাপ।
আমার প্রতিটি ভাল লাগা, ভালবাসা,
জড়িয়ে আছে তোমার সকল গোপন সৌন্দর্যে,
তুমি আজো মাতাল কর আমার প্রাণ,
তোমার কত সৃতিময়, স্বপ্নিল মাধুর্যে।
কথা দিচ্ছি,
আর কোনদিন স্পর্শ করব না,
তোমার কাঁধ, ঐ তিল, তোমার গলা আর ঐ বুক,
দূর হতেই শুধু কল্পনা করেই মিটিয়ে নেব,
তোমার দেয়া সেই আদীম, অকৃত্রিম সুখ।
জানি তুমি চাইলেও ভুলে যেতে পারবে না,
ভালবাসার মুহূর্তের আমার আবেগাপ্লুত মুখ।
কিন্তু আমি চাই না, লোকে তোমায় বলুক পতিতা,
লোকে কটুক্তি করুক নিয়ে তোমার প্রেমের সততা,
তাইতো তোমায় চীর বিদায় জানাচ্ছি বন্ধু,
জানাচ্ছি চীর বিদায়।
যদি সম্ভব হয়,
তবে সব ভালবাসা, সব প্রেম,
সবগুলো প্রেমময়, আনন্দময়, স্বর্গীয় মুহূর্তগুলো ভুলে,
ক্ষমা করো তুমি আমায়,
আবারো বিদায় জানাচ্ছি বন্ধু,
জানাচ্ছি চীর বিদায়।

অনুগল্পঃ সাইলেন্ট ভালবাসা---

পর্যাপ্ত জ্বালানীর অভাবে চোখদুটো তখন একেবারে নিভু নিভু অবস্তা। তার সাথে মাথার উপরে নিচে একটি করে বালিশ দিয়ে কৃত্রিম নিশ্বব্দ পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে। এর মাঝেই গোঁ গোঁ টাইপের কর্কশ শব্দে কাপা শুরু করলো বিছানা। বিরক্ত হয়েই ফোনটা বালিশের নিচ থেকে হাতরে বের করে আনলাম। বেজে উঠা ফোন কলটা বার্ধক্যে উপনিত হওয়ার আগেই রিসিভ করলাম।
‘হ্যালো বলার অগেই ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো, ভালো আছো তুমি? ফোনে লাইভ নারী কন্ঠ শোনার অভ্যাস নাই বল্লেই চলে। নিভু চোখের পুরো জ্বালানীটা যেন শুধু হৃৎপিন্ডের গতি বৃদ্ধিতেই ব্যাবহৃত হচ্ছিল সেই মুহূর্তে। কি বলব না ভেবেই, স্বভাব সুলভ বলে বসলাম, মারাত্বক আছি
কথাটাযে সত্যি ছিল, তা উপলব্ধি করতে পেরেছি অনেক পরে। ততক্ষণে আর মিথ্যা বলার উপায় নেই। ইতোমধ্যে নারীকণ্ঠটি স্ক্যান হয়ে, তার পরিচয় বের করে, পুরনো সৃতি গুলো একে একে জমা করে যাচ্ছিল আমার মস্তিষ্ক। অচেনা নারীকণ্ঠটি একদম পরিষ্কার রঙিন হয়ে গিয়েছে ততক্ষনে।
“তোমার বাচ্চা কয়টা এখন?” – এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য নিজেও প্রস্তুত ছিলাম না একেবারেই। মন থেকে এক ঢিলে ২ পাখি মারার উদ্দেশ্যে প্রশ্নটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলে এসেছে। আসলে যার সাথে কথা হচ্ছে, সে আমার ছাত্রজীবনের প্রেমিকা। ভালবাসতাম, ভালবাসা ছিল, আজো হয়তো আছে তবু যোগাযোগ নেই প্রায় ৭ কি ৮ বছর যাবৎ। সে বিয়ে করেছে কবে, এরেঞ্জ নাকি প্রেম বা আদৌ করেছে কিনা সেটাও জানি না। সবগুলো উত্তর একত্রে পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রশ্ন।
“তোমার কয়টা?” – উত্তর না দিয়ে উল্টা প্রশ্ন তার। সাথে সাথে তার সঙ্গে ভালবাসা  সম্পর্ক ছিন্ন করার অপ্রিয় ঘটনাও মনে পরে গেল। উল্টা প্রশ্ন করার অভ্যাসটা এখনও যায়নি তার। এগুলোর পাশাপাশি কি উত্তর দিব ভাবাচ্ছিলাম। দুটো খরগোশের বাচ্চা আছে আমার। কয়েক বছর যাবত পুষচ্ছি। সেগুলোর কথাই কি বলে দিব? এই দুষ্টামি টা করা কি ঠিক হবে এই মুহূর্তে? জ্বালানীর অভাবে মস্তিষ্কটাও যেন একেবারে ধীরে কাজ করচ্ছিল। উত্তর দেব নাকি আমার প্রশ্নের উত্তর না দেয়ার দরুন ঝগড়া চালিয়ে যাব, ভেবে পাচ্ছিলাম না।

পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ হওয়ার সূত্র---

পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষটির ব্লগ আপনি এখন পড়চ্ছেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? বিশ্বাস না করলে আমার কিছু করার নাই। সুখ দুঃখ দুটিই আপেক্ষিক বিষয়, একই জিনিস আমি যেভাবে ফীল করব আপনি সেভাবে ফীল করবেন না। এটা সবার ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।
তো, আমি কেন দাবী করচ্ছি আমি সুখি মানুষ?
প্রথম কথা হচ্ছে, চেটের খুশি। আমার মঞ্চাইছে তাই  না, আসলে তা’না। আমি সত্যিই সুখি মানুষ। তবে এমনি এমনি আমি সুখি হইনি, এমনি এমনি ভাল থাকা শুরু করিনি। এজন্য অনেক কিছু বুঝতে হয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। হয়তো পারিবারিক কারণে আমি অন্য সবার চেয়ে অনেক কিছু বেশি পেয়েছি, বেশি সুবিধা, বেশি ভালবাসা পেয়েছি তবে সবার জন্য ভাল থাকা বা সুখি মানুষ হওয়ার সূত্র কিন্তু প্রায় একই। (সম্ভবতো)
আমার আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছে আমার পরিচিত যারা সারাদিন দুঃখ দুঃখ করে, আর হতাশা দেখায়। তাদের যে কি নেই, তা হয়তো তারা নিজেও জানে না। নিজের অজান্তেই তারা সারাটা জীবন দুঃখের ভেতর দিয়ে কাটিয়ে যায়। টাকা পয়সা, বাড়ি গাড়ি সব হয়তো তাদের আছে কিন্তু এক বিন্দু সুখ তাদের স্পর্শ করে যায় না, একটি মুহূর্তেও জন্যও।
আমাকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছেন, আমি এত খুশি কেন। কিভাবে সবসময় এত আনন্দে থাকি। কেউ কেউ জীদ করে বলেন, আমি নাটক করে বেড়াই। আমি কারো চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে পারব না, আমি সুখি মানুষ হওয়ার জন্য কোন বিশেষ তাবিজ বা সূত্র দিতে পারব না, যা ১০০ ভাগ কাজ করবে। তবে, আমি এমন কিছু কাজের কথা বলতে পারব, যেগুলো আমি করি এবং আমার ভাল লাগে করতে। যেগুলো করে আমি আত্নতৃপ্তি পাই। হয়তো, এগুলোই আমার সুখের কারণ।

শেয়ার করছিঃ-

ছরী বলি
ছরী বলায় আমি বেশ ভাল এক্সপার্ট। দোষ না করেও ছরী বলতে পারি। কেউ আমার কথা কষ্ট পাচ্ছে, বুঝতে পারলেই ছরী বলে ফেলতে পারি। আমার কাছে ভাল লাগে। বেশ হাল্কা লাগে সবসময়। তবে, কিছু বন্ধু আছে, যাদের আমি সবসময় জ্বালাই, তাদেরকে ছরী বলি না। তাদেরকে দুষ্টামির পর ছরী না বলা আমার অধিকার হিসাবেই মনে করি। তবে একেবারেই যে বলি না, তা না। মাঝে মাঝেই দোষ করে ফেলি এবং ছরী বলে দেই।
ধন্যবাদ দিই
কেউ কোন উপকার করলে বা আমাকে সাহায্য করলে ধন্যবাদ দিতে ভুলি না।  ধন্যবাদ দিতে আমার ভাল লাগে।  ধন্যবাদ টা সবার’ই প্রাপ্য বলে মনে করি। সে যত দূরের লোক হোক বা কাছের।
কথা ও কাজে মিল রাখার চেষ্টা করি
আপনি জীবনে যত যা’ই করেন না কেন, যত ভাল কাজই করে থাকেন না কেন, আপনার কথা কাজে মিল না থাকলে আমার ভাষায় আপনি একটা “ বাইঞ্চোদ "।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে এই ধরণের মানুষদের খুব কম পছন্দ করি। মুখের উপরে না বলে দেবার অভ্যাস আমার আছে। এই অভ্যাস আপনিও করুন। বিনিময়ে তাৎক্ষনিক সে হয়ত আপনাকে কিঞ্চিৎ ঘৃণা করবে কিন্তু পরবর্তীতে সে ভালই বাসবে। আর নিজের দিক থেকে আত্নতৃপ্ত থাকতে পারবেন। গ্যারান্টী দিচ্ছি।
অযথা প্রতিশ্রুতি দেই না
ব্যাক্তিগতভাবে আমি প্রতিশ্রুতি দিই না বললেই চলে। অযথা স্বপ্ন কাওকে দেখাই না, যেটার ব্যাপারে আমার নিজের কাছে সন্দেহ আছে। নিজে শিওর থাকলেও অন্তত প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না, বাই চান্স যদি আর না হয়ে উঠে! তবে প্রতিশ্রুতি যদি দিয়েই বসি, তবে জীবন দিয়ে হলেও সেটা পূরণ করব। ইন সা আল্লাহ। এই সংকল্প রাখি।
ভেতরে চেপে না রেখে প্রকাশ করে দিই
কারো প্রতি রাগ থাকলে তাৎক্ষনিক ঝেরে ফেলি। একেবারে ঝারতে না পারলেও বলে দিই যে, তার এই কথা বা এই কাজটি আমার ভাল লাগে নাই। আমার খারাপ লেগেছে। ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে করে ভুল বুঝাবুঝি হয় না। খেয়াল রাখা উচিৎ, সামনা সামনির কথা এবং আড়ালের কথা যেন একই থাকে। ব্যাতিক্রম যেন না হয়।
বন্ধুদের সাথে প্রাণ খুলে মিশি
বন্ধুদের ব্যাপারে আমি একটু বেশি ই দূর্বল। জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত বন্ধুদের সাথে কাটাতে চাই। প্রতিটা মুহূর্তের সৃতি ধরে রাখতে চাই। আমি ঠিক যা, তা হিসাবেই মিশতে চাই। কোন লিমিট বা কন্ডিশনে বন্ধু বানাই না। বন্ধু আসলে বানিয়ে নিতে হয় + হতে হয়। বন্ধুত্ব কোন চুক্তি বা প্রতিদানের বিষয় নয়।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি
আপনি যে ধর্মেরই হোন না কেন। সৃষ্টিকর্তা (আমার ক্ষেত্রে আল্লাহ) আমাকে যা’ই দিক না কেন, শুকরিয়া আদায় করি। আল্লাহ অশেষ দয়াবান। আমি মনে করি, আমি যে পরিমাণ ফাউল সেই হিসাবে, আল্লাহ আমাকে অনেক ছাড় দেন। প্রতিটা মুহূর্তে, প্রতিটা ক্ষেত্রে।
চীরদিন বেঁচে থাকব না, এটা মাথায় রাখি
পৃথিবী চীরস্থায়ী আবাস না। এটা সাধারণত আমাদের মনেই থাকে না। কিন্তু এই বিষয় টা মাথায় রাখা উচিৎ। যে কোন মুহূর্তে মৃত্যু ঘটতে পারে। তখন আমার বলতে আর কিছুই থাকবে না। এটা মাথায় রাখলে নিজেকে অনেক হাল্কা মনে হয়। যদি আর্থিক অসম্পূর্ণতা থাকে আর যদি আপনার উদ্দেশ্য থাকে অনেক দিন বাঁচার ও অনেক ধনী হওয়া, সে ক্ষেত্রে আপনার জীবন অতীষ্ট হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক।
ছোট ছোট আবদারে ছাড় না দিয়ে বড় যাগায় ছাড় দেয়ার চেষ্টা করি
আমি প্রচুর প্যাংছা করি। প্যাংছা হচ্ছে আজাইরা আবদার। যেগুলো না করলেও চলে। রিক্সায় নির্দিষ্ট সাইডে বসা, এটা করা, ওটা দাবী করা এসব আমার অভ্যাস। আমি জানি এই ছোট ছোট আবদার গুলো বন্ধুরা খুব সহজে পূরণ করতে পারবে। এতে খুশি লাগবে, আনন্দ লাগবে। এই ছোট্ট ছোট্ট বিষয়গুলার মাঝেই আসলে জীবনের সুখ। এমন কিছু দাবী করা ঠিক না, যা অন্যের উপর বোঝা হয়ে যায়।
অন্যের দুক্ষের কথা শুনি
আমার পাশের বন্ধুটির কথা আমি শুনি। তার দুখ শোনার মত যদি কেউ না থাকে, তখন আমি আছি। আসলে মানুষের বন্ধু দরকার পরে দুখের মুহূর্তেই। আনন্দের বন্ধুরা আসলে বন্ধু না। আর মানুষ নিজের ভুল নিজে ধরতে পারে না। কাছের মানুষকে আমার পরিবর্তনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি, আমার কি জিনিস তার কাছে ভুল মনে হয়, কি আচরণ খারাপ লাগে, কি করলে ভাল হয়, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তার সাথে আমার সম্পর্কের ব্যাপারে যৌক্তিক আলোচনা করি। এতে করে নিজের দোষ গুলো ধরা পরে এবং নিজের ভাল কিছু শুনে কনফিডেন্ট হওয়া যায়।
রাগ/ইগোর বিপরীতে চলার চেষ্টা করি
ইগোর বিপরীতে চলা সবচাইতে কঠিন। তবে আয়ত্ব করে নিতে পারলে বেশ ভাল। আমার মনে হয় আয়ত্ব করতে পেরেছি। আমাকে কেউ যখন বলে, “লাবিব, তোর খবর আছে বুঝিস”, আমি খুব বিনম্রভাবে বলার চেষ্টা করি যে, এমন যাতে সে না করে। উলটো বলে দেই, সে আমার ক্ষতি করলেও, আমি তার ক্ষতি করব না। আমি জানি, সেই মুহূর্তে এই কথাগুলো বলা কতটা কঠিন। তবে পুরোটাই অভ্যাস। রাগের মাথায় হুট করে কমিটমেন্ট টাইপের ক্ষতিকারক কিছু না বলাই ভাল।
পরিবারের সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখি
এটা আসলে সবার কপালে জোটে না। আমার কপালে জুটেছে। আমি আব্বু আম্মু ও বাসার সবাইকে বন্ধু হিসাবে পেয়েছি। ক্লাস ৯ থেকে আমি নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিই। আমাকে সেই অধিকার দেয়া হয়েছে। আমি যে কোন ব্যাপার নিয়ে আব্বু আম্মুর সাথে যৌক্তিক তর্ক করতে পারি। যৌক্তিক তর্ক আমার বাসায় বেয়াদবী হিসাবে গন্য হয়না। তবে আমার মনে হয়, কেউ ইচ্ছা করলে বাবা/মা কে বন্ধু বানিয়ে নিতেই পারে। এটা একমাত্র সন্তানই জানে, কিভাবে তার বাবা/মায়ের বন্ধু হতে হয়।
পরিশেষঃ 
আসলে সুখি মানুষ হওয়ার সূত্র বলতে যেয়ে, জীবনের ছোট্ট ছোট্ট সুখ গুলো শেয়ার করলাম। সুখি মানুষ হওয়ার স্পেসিফিক কোন সূত্র নেই। থাকলেও আমার জানা নেই। তবে, সম্ভবত, বলে দেয়া কারণগুলোর কারণেই আমার কোন সময় কোন বিষয়ে টেনশন লাগে না। কখনো ইনসিকিউর মনে হয় না। কখনো নিজেকে দূর্বল লাগে না, হতাশ মনে হয় না। কাউকে পর বা শত্রু মনে হয় না। এর কিছু খারাপ দিক ও আছে, সেটা অন্য কোনদিন বলব। আল্লাহ আমাকে সুখি করেছেন, সেজন্য আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া। সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র এক আল্লাহর জন্য।