Saturday, October 31, 2020

All Shortcuts of Excel Explain.

Ctrl + E - Flash Fill

Ctrl+Page Up/Down: Move to the previous or next worksheet

Shift+Left/Right Arrow: Extend the cell selection to the left or right

Shift+Space: Select the entire row

Ctrl+Space: Select the entire column

Ctrl+Shift+Space: Select the entire worksheet

Home: Go to the leftmost cell in the current row (or go to the beginning of the cell if editing a cell)

Ctrl+Home: Move to the beginning of a worksheet

Ctrl+End: Go to the most bottom right used cell

Page Up/Down: Move one screen up or down in a worksheet

Alt+Page Up/Down: Move one screen to the right or left in a worksheet

F8 : Exntend Selection

Ctrl+W  / CTRL + F4: Close a workbook  (Alt + Space + C)

F4: Repeat the last command or action. For example, if the last thing you typed in a cell is “hello,” or if you change the font color, clicking another cell and pressing F4 repeats that action in the new cell.

Shift+F11: Insert a new worksheet

Ctrl+Z: Undo an action

Ctrl+Y: Redo an action

Ctrl+N: Create a new workbook

Ctrl+O: Open an existing workbook

Ctrl+S: Save a workbook

F12: Open the Save As dialog box

Ctrl+ P: Print / Print Preview

F1: Open the Help pane

F7: Check spelling

F9: Calculate all worksheets in all open workbooks

Alt + V + Z : Zoom in / Zoom Out

Alt or F10: Turn key tips on or off

Ctrl+F1: Show or hide the ribbon

Ctrl+Shift+U: Expand or collapse the formula bar

Ctrl+F9: Minimize the workbook window

F11: Create a bar chart based on selected data (on a separate sheet)

Alt+F1: Create an embedded bar chart based on select data (same sheet)

Ctrl+F: Search in a spreadsheet, or use Find and Replace

Alt+F: Open the File tab menu

Alt+H: Go to the Home tab
 
Ctrl+Tab: Switch between open workbooks

Shift+F3: Insert a function

Alt+F8: Create, run, edit, or delete a macro

Alt+F11: Open the Microsoft Visual Basic For Applications Editor

Ctrl+Left/Right Arrow: Move to the farthest cell left or right in the row

Ctrl+Up/Down Arrow: Move to the top or bottom cell in the column

Tab = Goto the Next cell  & Shift+Tab: Go to the previous cell

F5 or CTRL + G: Go to any cell by pressing F5 and typing the cell coordinate or cell name.

F2: Edit a cell

Shift+F2: Add or edit a cell comment

Ctrl+X: Cut contents of a cell, selected data, or selected cell range

Ctrl+C or Ctrl+Insert: Copy contents of a cell, selected data, or selected cell range

Ctrl+V or Shift+Insert: Paste contents of a cell, selected data, or selected cell range

Ctrl+Alt+V: Open the Paste Special dialog box

Alt+Enter: Insert a hard return within a cell (while editing a cell)

F3: Paste a cell name (if cells are named in the worksheet)

Esc: Cancel an entry in a cell or the formula bar

Enter : Complete the Formula / Paste Content if already copied

Alt+H+H: Select a fill color

Alt+H+B: Add a border

Ctrl+Shift+&: Apply outline border

Ctrl+Shift+_ (Underscore): Remove outline border

Ctrl+9: Hide the selected rows

Ctrl + Shift + 9 : Unhide Rows

Ctrl+0: Hide the selected columns

Ctrl+1: Open the Format Cells dialog box

Ctrl+5: Apply or remove strike through

Ctrl+Shift+$: Apply currency format

Ctrl+Shift+%: Apply percent format

Ctrl+Shift+#: Apply Date format

Ctrl+Shift+@: Apply Time format

Ctrl+Shift+!: Apply Number format

Ctrl+Shift+ ~: Apply General format

Ctrl+ ' : Copy Above Content to Fill below

Ctrl + D = Fill Down

Ctrl + R - Fill Right

Ctrl + F3 = Name Manager 

Ctrl  + F10 = Restore Window or Alt + Space + R   

Alt + Space + X - Maximize  or Ctrl + F10 - Restore 

Ctrl + F9 - Minimize  / Alt + Tab - Maximize / Switch

Ctrl + F11 - Insert Macro Name Sheet

Ctrl  + F12 = Open Dialog box

Ctrl + Shift + F1 - Hide Tab and Ribbon

Alt + V + U - Full Screen

Ctrl + Shift + F3 - Create Names from Selection

Alt + H + W - Wrap Text

Ctrl + Shift + Page Down / Page up - Select All Sheets to the right / Left

Ctrl + ; - Insert Date

Ctrl + Shift + ; - Insert Time

Ctrl + T - Create Table or Ctrl + L 

Alt + H + O + R - Rename Sheet

Ctrl + H - Replace

Ctrl + K - Hyperlink

Ctrl + Shift + {  - Select all cells which involved in selected formula 

Ctrl + Shift + }  - Select Formula cells where selected cell in included  

Ctrl  + Shift + A - Insert Argument Names into a Formula

Alt + A + T - Apply and Remove Filter

ALT + N + V - PIVOT TABLE

ALT + = : AutotSum

ALT + H +M + C - MERGE AND CENTER

CTRL  + ~ = Show and Hide All formulas from sheet

CTRL + SHIFT + ENTER - Create Array

Alt + A + Q - Advance Filter

 Alt + H + O + I - Auto-fit Column Width

Alt + H + FP - Format Painter

Alt + H + E + F - Clear Format

Ctrl + + - Insert Column / Row
 
Ctrl  + -  = Delete Row / Column
 
Alt + I + R - Insert Row
 
Alt + I + C - Insert Column
 

Thursday, October 22, 2020

হাপাইতে হাপাইতে এক বৃদ্ধ রিক্সাচালক আমাকে বললো!

হাপাইতে হাপাইতে এক বৃদ্ধ রিক্সাচালক আমাকে বললো, সাহেব আমার লগে চলেন, ১০ ট্যাহা কম দিয়েন। আমার আরো ৫০ ট্যাহা লাগবো। আমি আমার বউয়ের লাইগ্যা সবজী, ডাইল-ভাত কিনুম।  

একথা শুনে তখন আর না করতে পারি নি। রিকশায় উঠে বসি। রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। একটু যাচ্ছে তো  একটু থামছে। সামনেই দেখছি বৃদ্ধলোকটা খুব কষ্ট করে গাড়ি চালাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করি মামা, তুমি এই বয়সে রিক্সা চালাও কেনো? তোমার কি ছেলে মেয়ে কেউ নাই? 

 কয়েক সেকেন্ডের বিরতি নিয়ে সে বলে উঠল,
সাহেব, মগবাজার যাইতে আরো চল্লিশ মিনিট লাগবো তাইলে হুনেন আস্তে ধীরে।

আমি মনু (৭১) আইজ থেইক্যা বছর তিনেক আগে জেল থেইক্যা ছাড়া পাইছি। তেরোডা বছর বিনা দোষে জেল খাটছি।

খিলক্ষেতে, খা-পাড়ায় আমার একটা মুদির দোকান আছিল। আশে-পাশে অনেক গার্মেন্টস আছিল। অনেক মাইনসে কাম করত। ভালোই  ইনকাম হইতো আমার। ম্যালা সুখেই দিন যাইত আমাগো। মাঝে মাঝে বাকীও দিতাম। আমার দুই পোলা। করিম আর রহিম। বড় পোলা রহিম হার্টের রুগী। আল্লাহ দিছে অসুখ সাহেব, কি করতাম আর। প্রত্যেক মাসে  রহিমের ডাক্তার খরচ দিয়া কোন রকম জীবন যাপন করতাম। ম্যালা টেহা যাইত।

মাঝে মাঝে দোকানে কিছু পোলাপাইন বইয়া আড্ডা দিত। ঢাকাইয়া পোলাপাইন অনেক দিন ধইরা চিনতাম।আমারে মাঝে মইধ্যে ভাই ভাই কইয়া ডাকতো। কাম কাইজে সাহায্য করতো। আমিও একা মানুষ বিশ্বাস করতাম। আমার একদিন খুব শইল খারাপ করে। বউ, রমিজারে কইয়া আমি ফার্মেসি থেইক্কা ওষুধ আনতে গেছি।

এই ফাঁকে  একটু  পরে পোলাপাইন গুলা আমারে ফোন করে। কয় ভাই,দোকানে দুই গাড়ি পুলিশ আইছে, আপনারে খুঁজে। আমি ওষুধ আর না কিন্নাই হাঁটা ধরছি। যাইয়া দেহি, বড় বড় দুইডা গাড়ি আমার দোকানে সব সময় মাল ডেলিবারি দিতো হেই ড্রাইবার।

আমি যাওয়া মাত্রই আমার দোকান খুইল্লা চিনির বস্তা থেইক্যা লাল দুই পেকেট ইয়াবা বাইর করে। আমি হেডির নাম জানতাম না ধরা খাওনের পরে নাম হুনছি। আমি জানতাম না কিছুই, আমার হাতে রশি  লাগাইয়া থানায় নিয়া কোটে চালান কইরা দিলো।

 রমিজা অনেক কষ্টে আমার সাথে দেখা করবার যায়। আমারে ছাড়াইতে পারে নাই। ধরার তিনমাস পরে আমারে তের বছরের সাজা দিলো। ছয় মাস পর পর রমিজা দেখা করতো আমার লগে।। ছেলে গুলার খুঁজ নিতাম, বড় পোলাডা আমার টাকার অভাবেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। রমিজা আমার কাছে লুকায়ে রাখছে। ছোডো পোলাডা  ফুটপাতে টোকাই। মা পোলায়  মিল্লা কোন রকম বাইচ্চা থাকতো।

ওহন আমার কোন ব্যাবসা করতে মন বসে না। এক জায়গাই তিনজন দেখলে সইরা যাই। এই শহরের মানুষ গুলা খারাপ। বিনা দোষে জেল দেয়, গরীব বইলা দাম দেয় না সাহেব, চোর বাটপার মনে করে আমাগো। ভরসা পাই নাহ্।

এহন রিক্স চালাই। দিন আনি দিন খাই। বাসায় অসুস্থ বউ, বয়স হইছে এহন আর কামে কাজে যাইবার পারে না। ছোট পুলাডা বড় হইছে, কই যায় কি করে খোঁজ পাই না।

তিনদিন হইয়া গেলো বউটা উইঠ্যা রানবার পারে না। সারাদিন গাড়ী চালাই মালিকরে ১৬০ টাকা, ভাড়া দিয়ে যা'ই থাকে দুইজনে খাওন কিন্না খাই। রমিজা আমারে ছাড়া খাইবার পারে না। আমি নিজ হাতে খাইয়ে দেই সাহেব। আমি বুড়া বয়সে তার জন্য কিছুই করবার পারলাম। আমি জেলে থাকতে রমিজা আমার লাই কত কি না করলো। তেরডা বছর আমার লেইগ্যা অপেক্ষা কইরা রাস্তায় দিন কাটাইছে।

আজকে অনেক কষ্ট হইতাছে। এহনো  ৪০ ট্যাহা হইলে দুইজনের দুই বেলা খাওনের টাহা হইবো। 

আমি জানিনা  সাহেব কোন কারণে আমার লগে এইগুলান করলো। আমি জেলে না থাকলে আমার রহিম মরতো না। আমার রমিজা মাইনষের বাসায় এক প্লেট ভাতের জন্য কাজ করতো নাহ। আমিও আজকে রিক্সা চালাইতাম না। আমার বউ আইজ বিনা চিকিৎসায় ঘরে হুইয়া থাকতো না।  সাহেব আমি ক্ষতি করি নাই আল্লাহ দেখছে, আমি কোটে বিচার না পাইলেও আল্লাহর কাছে পামু। আল্লাহ আমার বিচার করবো। আমি দুখি না সাহেব আমি সুখি। আমার জীবনে কোন পাপ নাই। আমি হালাল কামাই হালাল খাই।

উনি কথা গুলা বললেন আর কাঁদলেন। আমি বনানী থেকে মগবাজার যাই। রাস্তায় প্রতিটা চোখের ফোঁটা যেন বৃষ্টির মতো টপ টপ করে পড়লো। 

নাহ আমি ওনাকে শান্তনা দিতে পারি নি। এমন দুখি মানুষের আমার সামান্য শান্তনায় ক্ষতি পরিপুরণ হবে না। 
"Collected"

Monday, October 5, 2020

মহাবিশ্বের জীবনী।

#জীবনবিজ্ঞান 

কত বিশাল এ মহাবিশ্ব! ভাবা যায়! তার কোথাকার কোন চিপার এক পিচ্চি গ্রহে বসে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই আমি মহাবিশ্বের জন্মমৃত্যু নিয়ে লিখছি! এরচেয়ে হাইস্যকর আর কীই বা হতে পারে? যাইহোক আর যে যাই বলুক, এই ইউনিভার্সের হ্যাপিবার্থডে থেকে মৃত্যুদিবস পর্যন্ত না লিখে ছাড়ব না এই আমার শেষ কথা। তাতে যার যেখানে খুশি চুলকাক।
এখন আমি মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে যে বিশ্বাস প্রচলিত ছিল (হয়তো এখনো আছে) তা নিয়েই কথা বলব।

আমাদের পৌরাণিক ভারতবর্ষের প্রচলিত ধারণা দিয়েই বরং শুরু করি; সেই ধারণা মতে দেবতা ব্রহ্মা ৮৬৪ কোটি বছর পরপর ব্রহ্মান্ডকে ধংস করে আবার নতুন করে তৈরি করেন। অর্থাৎ এই মহাবিশ্ব ধংস-সৃষ্টি-ধংস এইরকম একটা চক্রে আবদ্ধ। আর আমাদের বর্তমান মহাবিশ্বের অস্তিত্বকাল সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি এই চার যুগে বিভক্ত। হিসাব অনুযায়ী আমরা শেষযুগ কলিতে জন্ম নিয়েছি! এই মহাবিশ্বের ধংস হবে বিষ্ণুর দশম অবতার কল্কির আগমনের পর।

এবার আসি চৈনিক উপকথায়; প্যান গু নামের এক অতীকায় দেবতা একটা ডিমের ভেতর আঠারো হাজার বছর ঘুমিয়ে ছিলো । মজার ব্যাপার হলো সেই ডিমের মধ্যেই আমাদের মহাবিশ্ব জড়সড় হয়ে ভর্তি ছিলো। প্যান গুর ঘুম ভাঙলে তিনি এক কুঠারের আঘাতে ডিম ভেঙে বেড়িয়ে আসেন। আর সেই সাথে সৃষ্টি হয় মহাবিশ্ব!

আফ্রিকান উপকথা অনুযায়ী, বোম্বা নামের এক দেবতার একদিন খুব পেটে অসুখ হলো। সেই সাথে হয়ে গেল কয়েক দফা বমি। প্রথম দফায় বেড়োলো সূর্য্য আর পানি। সূর্যের তাপে পানি শুকিয়ে ডাঙা হলো। পরেরবার বেরোলো চাঁদ, গ্রহ আর অন্যান্য নক্ষত্রগুলো। শেষবারে বেরোয় সকল জীবকুল!

গ্রীকপুরাণ বলে যে দেবী ইউরিনোম যখন জন্ম নেন তখন আকাশ -পৃথিবী -সাগর সব একসাথে জগাখিচুড়ি হয়ে ছিলো। ইউরিনোম পৃথিবী থেকে আকাশকে আলাদা করে দেন। ইউরিনোমের বাবা অন্ধকারের দেবতা ক্যাওস আলোর সাথে মিশে দিন রাত্রির ব্যাবস্থা করেন। ক্যাওসের আরেক সন্তান অফিওন নামক সাপ ইউরিনোমের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তখন দেবী পাখির রুপ ধরে একটি ডিম প্রসব করেন। অফিয়ন সেই ডিমে তা
দিতে থাকে। সেখান থেকেই জন্ম হয় সকল জীব এবং পাহাড়ের।

মহাবিশ্বের জন্ম সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক মতবাদঃ
তার আগে বলে নেই, এই বৈজ্ঞানিক প্যাঁচাল আমার দুটো চারটে কথায় শেষ হবে না। লিখে যেতে হবে গোটাকয়েক পর্ব। আর শুধু জন্ম লিখলেই তো হবে না! জীবনী যখন লিখতে বসেছি তখন এত্তো বড় এই ইউনিভার্সের এট দ্যা ইন্ড কী সেও তো লিখতে হবে! মোদ্দাকথা আমাদের পারি দিতে হবে দীর্ঘ এক পথ। যে পথ শুরু হবে ক্ষুদ্র এক বিন্দু থেকে আর শেষ হবে...কোথায়? সেটা তো পথের শেষেই জানা যাবে তাই না?তাহলে সিটবেল্ট বেঁধেনিন আর শুরু করা যাক আমাদের জার্নি!

মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছে বিগব্যাং(মহাবিস্ফোরণ) এর মাধ্যমে; সে তো আমরা সবাই জানি(যারা জানেন না তারাও পড়তে থাকুন। কোনো সমস্যা হবে না)। কিন্তু দাড়ান, বিগব্যাং এর আগে কি ছিলো?
উত্তর হলো, কিছুই ছিলো না!
এইটা কেমন কথা? বিগব্যাং এর আগে একেবারে কিচ্ছুই ছিলোনা? কিচ্ছু না? ক্যামনে সম্ভব?
চলুন তাহলে সহজ যুক্তির মধ্যদিয়ে দেখে নিই আসলেই সম্ভব কী না।

আচ্ছা এই বিগব্যাং থেকেই যে আমাদের ইউনিভার্স, আরো ভেঙে বললে ইউনিভার্সের সব উপাদান সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে তো আমরা সবাই বিশ্বাস করি! তার মানে বিগব্যাং থেকেই আমাদের স্থানকাল সৃষ্টি হয়েছে, আর এখান থেকেই সময়ের যাত্রা শুরু যা আজ ১৩৭৮কোটি বছর ধরে শুধুই এগিয়ে চলেছে।
এখন ধরা যাক পুরো ইউনিভার্সের টাইম কন্ট্রোলের সুপার পাওয়ার আপনি পেয়ে গেছেন! তো আপনি করলেন কী, সময়টাকে পেছনের দিকে নিতে থাকলেন। এভাবে নিতে নিতে ১৩৭৮কোটি বছর অতিতে নিয়ে গেলেন; যেখান থেকে সময়ের শুরু সেখানে! কিন্তু ভাই আপনি তো বাঙালী; আপনি ছাড়বেন কেনো! আপনি দেখতে চান এরও আগে কী ছিলো তাই সময়কে আরো পেছানোর জন্যে গুঁতোগুঁতি করতে লাগলেন। কিন্তু সময় বেচারা কী করবে? সে তো তার শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে! মানে যেখানথেকে তার জন্ম সেখানে! তাহলে সময় তার জন্মের আগের খবর জানবে কীভাবে? সুতরাং আপনার আর জানা হলো না যে বিগব্যাং এর আগে কী ছিলো।
আচ্ছা সে না হয় মানলেন জানা হলো না; কিন্তু কিছু তো ছিলো! আর আমি যে বললাম, "এর আগে কিছুই ছিল না!" এইটা ক্যামনে কী? ভাই আসেন একটু চিন্তা করি,
কোনোকিছুর "আগে(অতীত),পরে(ভবিষ্যৎ), এখন(বর্তমান)" এগুলা কিন্তু সময়ের উপরই নির্ভর করে! তাহলে বিগব্যাং এর আগে যখন সময়ই ছিলো না তখন বিগব্যাং এর "আগে" থাকবে কীভাবে? সুতরাং বিগব্যাং এর আগে কিছুই ছিলো না।
এবার পুরো ব্যাপারটা একটা উপমা দিয়ে বোঝাই কেমন?
ধরেন আপনি একটা বই কিনলেন। গল্পের বই। তো আপনাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম,"প্রথম পৃষ্ঠার আগের পৃষ্ঠায় কোন গল্প আছে?" কী উত্তর দেবেন? কোনো গল্পই নেই! থাকবে কিভাবে? প্রথম পৃষ্ঠায় আগে যে কোনো পৃষ্ঠাই নেই!

বিগব্যাং হচ্ছে অদ্ভুত মজার এক তত্ব যেটা এই মহাবিশ্বের জন্ম কীভাবে হয়েছিলো সেটার ব্যাখা দেয়। সত্যিই খুব ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় এই বিগব্যাং থিওরি।
মোটাদাগে বিগব্যাং আমাদের বলে যে, এই ইউনিভার্সের শুরু হয়েছে এক অতীব ক্ষুদ্র অঞ্চল(সিংগুলারিটি) থেকে। যেখানে প্রকৃতির সব নিয়মকানুন জড়িয়ে-পেঁচিয়ে ছিলো। সহজ কথায় বললে, পুরো ইউনিভার্সের সবকিছুই ওই বিন্দুবৎ অঞ্চলে একে অন্যের সাথে মিশে ছিলো।তবে একটা কথা, সবকিছু বলতে আবার ভাববেন না যে,আমি আপনি আজ যেভাবে আছি সেভাবেই ওইখানে ছিলাম;আসলে আমরা, আমাদের ইউনিভার্সের সবকিছুই তখন ছিলো প্লাজমা অবস্থায়।
আর সেই বিন্দুটাই ১৩৭৮ কোটি বছর ধরে ক্রমশ সম্প্রসারিত হয়ে আজকের এই অবস্থায় এসেছে।এমনকি এখনো প্রসারিত হচ্ছে।
এইবার আরেকটু খোলাখুলি কথা বলি কেমন;
ইউনিভার্সের শুরুটা হয় এক অকল্পনীয় বিস্ফোরণের মাধ্যমে। আসলে বিগব্যাং থিওরির বাংলাই হচ্ছে মহাবিস্ফোরণ তত্ব।
এই বিস্ফোরণের ১০^-৪৩ সেকেন্ড পর্যন্ত মহাবিশ্ব খুবই দ্রুত প্রসারিত হয়। আর এটা যে কতোটা দ্রুত সে আমি গাঁজা খেয়েও কল্পনা করতে পারব না। এই সময়টুকুর মধ্যেই ওই ছোট্ট পিচ্চি মহাবিশ্বটা বেশ বড়সড় হয়ে যায়!
১০^-৩২ সেকেন্ডে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা ছিলো ১০^২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে সারা ইউনিভার্স জুড়ে ছিলো শুধু ইলেকট্রন, কোয়ার্ক এবং অন্যান্য মৌলিক কণাগুলো। পরের১০^-৬ সেকেন্ডে কোয়ার্কগুলো মিলিতো হয়ে প্রোটন এবং নিউট্রন গঠন করে। এসময় ইউনিভার্সের তামপাত্রা নেমে দ্বারায় ১০^১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে!
বিস্ফোরণের প্রথম সেকেন্ডে মূলত এই ঘটনাগুলোই খুব দ্রুত ঘটে। মোট কথা সময়ের সাথে সাথে ইউনিভার্স ঠান্ডা হতে থাকে আর সেই সাথে তৈরি হয় প্রোটন ও নিউট্রন। পরবর্তী ৩মিনিটে তাপমাত্রা নেমে আসে ১০^৮ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তখন প্রোটন আর নিউট্রন একসাথে মিলে হায়ড্রোজেন আর হিলিয়াম নিউক্লিয়াস তৈরি করে। এরপর প্রায় ৩০০,০০০বছর ধরে ইলেক্ট্রন গুলো ওই নিউক্লিয়াসের সাথে একত্রিত হয়ে পরমাণু তৈরি করতে থাকে। বলাবাহুল্য, যার বেশিরভাগই ছিলো হায়ড্রোজেন আর হিলিয়াম পরমাণু। এ সময় ইউনিভার্সের তাপমাত্রাও গিয়ে দাঁড়ায় ১০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
তারপর এক দীর্ঘ সময় ধরে গ্র্যাভিটি দেখাতে থাকে তার ক্যালমা! হায়ড্রোজেন আর হিলিয়াম গ্যাসগুলো প্রায় ১বিলিয়ন বছর ধরে মহাকর্ষেরর কারণে জমা হতে হতে দৈত্যাকৃতির মহাজাগতিক মেঘের সৃষ্টি করে। যেগুলোকে প্রোটো গ্যালাক্সি বলে। তখন তাপমাত্রা ছিলো -২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও গ্যাসের তুলনামুলক ছোটো ছোটো পিণ্ড থেকে সৃষ্টি হতে থাকে নক্ষত্র সমূহ।
এর পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সৃষ্ট নক্ষত্রগুলো মারা যেতে থাকে ; এর ফলে সৃষ্ট ভারী পদার্থগুলো মহাশূন্যে ছড়িয়ে পরে। যার থেকে সৃষ্টি হয় এবং এখনো হচ্ছে বিভিন্ন গ্রহ ও নক্ষত্র।
ছোটো করে এই হচ্ছে বিগব্যাং তথা ইউনিভার্সের জন্মকথা।

এবার কাজের কথায় আসি; আমাদের ইউনিভার্সের শেষ পরিণতি কী হবে সেটা নিয়ে মুরুব্বিগণ অনেক ভাবনাচিন্তা করেছেন। আর শেষ পর্যন্ত বেরও করে ফেলেছেন যে, কী হবে(হতেপারে) আমাদের মহাবিশ্বের শেষ পরিণতি। কিন্তু ওইযে বলে,"নানা মুনির নানা মত। " আমাদের মুরুব্বিগণও বেশকয়েকটা মতামত সামনে আনলেন এ বিষয়ে। এখন সেই মতামত গুলোনিয়েই ঘাটাঘাটি করব।

বিগ রিপ (BIG RIP) থিওরিঃ
আচ্ছা আমরা তো জেনে এসেছি যে, এই ইউনিভার্স জন্ম থেকেই প্রসারিত হচ্ছে। এখনো অভাবনীয় গতিতে এই ইউনিভার্স প্রসারিত হচ্ছে। বিগ রিপ থিওরি বলে যে,আমাদের মহাবিশ্ব অনন্তকাল ধরে অবিরাম প্রসারিত হতে থাকবে। কিন্তু একটু দাঁড়ান,
মহাবিশ্বের একটা বস্তু আরেকটা বস্তুকে তো আকর্ষণ করে। তাহলে তারা একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কেনো?
খুবই সুন্দর আর যৌক্তিক একটা প্রশ্ন। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এই আকর্ষণ টা যে মহাকর্ষ বল তা তো আমরা জানি। আর এটাও জানি যে মহাকর্ষ বলটা মৌলিক বলগুলোর মধ্যে সবচাইতে দুর্বল। আর মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের পেছনে নাটেরগুরু হয়ে রয়েছে দ্যা গ্রেট, " ডার্ক এনার্জি।" যে এখনো আমাদের চোখের এবং জ্ঞানের গণ্ডিতে ধরা দেয়নি।
কিন্তু বিগ রিপের জন্য একটা নির্দিষ্ট ডার্ক এনার্জি দায়ী। যার নাম," ফ্যানটম(phantom)এনার্জি।" এই ফ্যানটম এনার্জির তখনই কাজ করে, যখন ডার্ক এনার্জির চাপ তার এনার্জির ঘনত্বের চাইতে বেশি হয়। এভাবেও বলা যায়, এ দুয়ের অনুপাত হয় -১ এর চাইতে কম। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা এখনো সঠিক জানি না এই ডার্ক এনার্জির চাপ আর ঘনত্বের অনুপাত কী।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সম্প্রসারণের মান কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বাড়তেই থাকবে। একপর্যায়ে গ্যালাক্সি ক্লাস্টার থেকে গ্যালাক্সি গুলো আলাদা হয়ে যাবে।গ্যালাক্সি থেকে সৌরজগৎ আলাদা হয়ে যাবে। ভবিষ্যতের একটা পর্যায়ে প্রতিটা অনু একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যাবে।
বিগরিপ অনুযায়ী শেষপর্যন্ত মহাবিশ্বের প্রতিটা কণা আলাদা হয়ে যাবে। তখন স্পেস জুড়ে অসংখ্য কণা ছড়িয়ে থাকবে ঠিকই, কিন্তু সেগুলোর মধ্যে পুণরায় কোনো বন্ধন গঠন হবে না।

বিগ ফ্রিজ (The Big Freeze):
এই বিগ ফ্রিজ থিওরিটি " বিগ চিল" এবং "হিট ডেথ' থিওরি নামেও পরিচিত। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের আগের বিগ রিপের মতো বিগ ফ্রিজও রহস্যময় ডার্ক এনার্জির মতিগতির উপর নির্ভরশীল।
বিগ ফ্রিজ বলে যে, মহাবিশ্ব ক্রমশ বর্ধমান গতীতে সম্প্রসারিত হতে থাকবে। আরেকটু বিস্তারিত বললে, ইউনিভার্সের গ্যালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহগুলো ক্রমশ একে অন্যের থেকে দূরে সরে যেতে থাকবে। মোট কথা, ইউনিভার্সের এনট্রপি ক্রমশ বাড়তে থাকবে। এপর্যন্ত ব্যাপারটা অনেকটা ওই বিগরপের মতোই।
এবার আসল কথায় যাচ্ছি,
এই এনট্রপিটা কী? খায় নাকী মাথায় লাগায়?
এনট্রপি টা হচ্ছে বিশৃঙ্খলতার মাত্রা। অর্থাৎ কোনো কিছু যত বেশি বিশৃঙ্খল তার এন্ট্রপি তত বেশি। ধরেন, আপনার হাত থেকে পড়ে একটা ডিম ভেঙে গেলো; এতে করে ডিমের উপাদানগুলো ছড়িয়ে পড়লো তথা বিশৃঙখল হয়ে পড়ল। সুতরাং ডিমের এনট্রপি বেড়ে গেলো! দারুণ না?
এই ফাঁকে বলে রাখা ভালো যে, তাপগতীবিদ্যার ২য় সূত্র অনুসারে বস্তুর এনট্রপি বাড়ার সাথে সাথে এর থেকে তাপশক্তিও নির্গত হয়।
এই ইউনিভার্সের এনট্রপিও তার জন্মের সময় থেকে ক্রমশ বেড়েই চলেছে, বেড়েই চলেছে এবং বেড়েই চলেছে। সুতরাং একই সাথে মহাবিশ্বের সকল বস্তু থেকে তাপও নির্গত হচ্ছে। অর্থাৎ ইউনিভার্সের তাপমাত্রা ক্রমশ কমছে। এভাবে কমতে কমতে একপর্যায়ে এই ইউনিভার্স পরমশূন্য তাপমাত্রায় চলে যাবে। এই অবস্থায় মহাবিশ্বের এনট্রপিও হবে সর্বোচ্চ।
তখন চারদিক জুড়ে থাকবে শুধুই নির্জিবতা। অন্ধকার স্পেস জুড়ে থাকবে অসংখ্য নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, গ্রহের মৃতদেহ। আর তখন আমিও জীবনান্দ দাসের সঙ্গে বসে আবৃতি করব,
"থাকে শুধু অন্ধকার, পাশাপাশি বসিবার বনলতা সেন।"

বিগ ক্রাঞ্চ (Big Crunch):
বিগ ক্রাঞ্চ বলে যে, এই ইউনিভার্সের ধংসের সাথে সাথে আরেকটি নতুন ইউনিভার্স সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। মানে আবার সেই সিংগুলারিটি,সেই বিগব্যাং; নতুন গ্যালাক্সি, নতুন সৌরজগৎ ; হয়তোবা নতুন আরেকটা পৃথিবী!
আবার ঘুরিয়ে বললে আমাদের এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির আগে অন্য একটা মহাবিশ্ব ছিলো! এই যে জন্ম-মৃত্যু-জন্ম- মৃত্যুর চক্রটাকেই বলে, "CONFORMAL CYCLIC COSMOLOGY"।
বিগ ক্রাঞ্চ মতে, সুদূর ভবিষ্যতের কোনো একসময় এই ইউনিভার্সের গড় ঘনত্ব এমন একটা পর্যায়ে পৌছাবে যে, তারপর মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এরপর কী হবে?
এরপরে ঘটতে শুরু করবে সবচাইতে মজার ব্যাপার। সহজ কথায় বলতে গেলে, এতোকাল ধরে ইউনিভার্সে যা যা ঘটেছে এরপর থেকে ঠিক তার বিপরীতটা ঘটতে থাকবে।
এ পর্যায়ে মহাবিশ্ব ক্রমশ সংকুচিত হতে থাকবে। সকল গ্যালাক্সি এবং গ্যালাক্সি ক্লাস্টার গুলো একে অন্যের কাছে আসতে থাকবে। এভাবে তৈরি হবে এক বিশায়ায়াল আকৃতির গ্যালাক্সি।
এই গ্যালাক্সির ভেতর নক্ষত্রগুলো একসঙ্গে মিশে যেতে থাকবে। শেষ পর্যায়ে নক্ষত্রগুলো ধংস হয়ে জন্ম হবে ব্ল্যাকহোলের। ব্ল্যাকহোলগুলো তাদের আশপাশের সবকিছুই নিজের ভেতর নিয়ে নেবে। একটাসময় এই ব্ল্যাকহোলগুলোও একসঙ্গে মিলে অনেক অনেক শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোলের জন্ম দেবে।
এখানে কিন্তু ভুলেও ভাবা যাবে না যে, ব্ল্যাকহোলটা হবে অনেক বড় আকারের। আসলে ব্ল্যাকহোলের আয়তন খুবই অল্প। একেবারে শুণ্যের কাছাকাছি বলা চলে। কিন্তু এই অতি অল্প যায়গাতেই ব্ল্যাকহোলের সব কিছু শুষে নিয়ে জমিয়ে রাখে
(অবশ্য হোয়াইট হোল থিওরি বলে যে, ব্ল্যাকহোলের অপর পাশ দিয়ে সেগুলো বেরিয়ে যায়। তবে সে বিষয় এক্ষেত্রে না আনাই ভালো)।
ব্ল্যাকহোলের ব্যাপারটা আমাদের "আব্দুল হাই" এর মতো। পড়েননি কবিতাটা?,
"আব্দুল হাই, করে খাই খাই;
সবকিছু খেয়ে বলে,
কিছু খাই নাই।"
মুল কথায় ফিরে আসি, এই মহাশক্তিধর ব্ল্যাকহোলটি মহাবিশ্বের বাকী যা কিছু ছিলো তাও চেটেপুটে শেষ করে দেবে। এরপর কি থাকবে?
সিংগুলারিটি! যেখান থেকে আমাদের ইউনিভার্সের যাত্রা শুরু হয়েছিলো; আবার সেখানেই শেষ! সেখান থেকে যাত্রা শুরু হবে আরো এক মহাবিশ্বের! একসময় সে ইউনিভার্সে হয়তো নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হবে। হয়তো সে নতুন পৃথিবীতে নতুন এক জাহিদুল ইসলাম নতুন করে শোনাবে মহাবিশ্বের জন্ম কথা। এ যেনো রবীন্দ্রনাথের ছোটোগল্প,
"শেষ হয়ে হইলো না শেষ।"