লিখেছেন: সবাক
চুলকানি দিয়ে শুরু:-
সরকারপন্থী অনলাইন এক্টিভিস্টদের প্রতি অত্যন্ত বিরক্ত ও রাগান্বিত। তারা আমাদেরকে দিয়ে বিএনপির শূন্যস্থান পূরণ করতে চায়। তাদের বিষম চুলকানি স্বভাব। চুলকানির জায়গা (বিএনপি) এখন নেই। জায়গার আইল ঠেলতে ঠেলতে লন্ডন পর্যন্ত নিয়ে গেছে। কিন্তু চুলকাতেতো হবে। তো, হেফাজত আর আনসারুল্লাহদের সাথে মিলেমিশে নাস্তিক ব্লগারদের চুলাকানোটা অত্যন্ত নিরাপদ। সংখ্যাগরিষ্ঠের চুলকানি। রিস্ক কম। ওই কম রিস্কের কাজটাই করে যাচ্ছে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সারাদিন নাস্তিক ব্লগারদের চুলকানোর পর রাতে ঘুমাতে গিয়ে দেখে গায়ে ব্যাথা। আসলে নিজের শরীরটাই যে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। মোটা দাগে নাস্তিক ব্লগাররা কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দলের স্বার্থ দেখে না। দেশের স্বার্থটাই দেখে। দেশের স্বার্থ যারা দেখে, তাদের সাথে বিটলামি করা আর দেয়ালে নিজের মাথা ঠুকা একই জিনিস।
চাঞ্চল্যকর এসাইলাম ব্যবসা
বাজারে এসেছে উচ্চ মাধ্যমিক এসাইলাম ব্যবসা শিক্ষা। ধর্মনিরপেক্ষতা, ইসলাম, জয় বাংলা, নারায়ে তাকবীর, সব মিলেমিশে একাকার। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এসাইলাম ব্যবসার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে।
এসব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ কারা করছে?
সরকারপন্থী এক্টিভিস্টরা।
এসাইলাম তীরের লক্ষ্য কারা?
জঙ্গীবাদ, দুর্নীতি, দুঃশাসনবিরোধী নাস্তিক ব্লগাররা।
এসাইলাম নিতে সাহায্য করছে কারা?
জঙ্গীবাদ, দুর্নীতি, দুঃশাসনবিরোধী প্রবাসী নাস্তিক ব্লগাররা।
তো, এখানে সরকারপন্থী এক্টিভিস্টদের সম্পৃক্ততা কোথায়?
ঘোড়ার ডিমের সম্পৃক্ততা।
এখন পর্যন্ত এসাইলাম নেয়া কোন নাস্তিক ব্লগার টাকা লেনদেন বিষয়ক অভিযোগ এনেছে?
না। আনেনি।
তাহলে সরকারপন্থীরা কিভাবে জেনেছে যে এসাইলাম ব্যবসা হচ্ছে?
জিব্রাইলের মাধ্যমে ওহীপ্রাপ্ত হয়ে।
ধুর মিয়া, সিরিয়াসলি বলেন। কিভাবে জেনেছে?
কারণ তাদের পক্ষের কেউ কেউ ম্যালা টাকা পয়সা খরচ করে এসাইলাম নিয়েছে। যেমন সিদ্দিকী নাজমুল আলম। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তো তারা ভাবছে টেকা ছাড়াতো এসাইলাম হয় না। এতগুলো নাস্তিক ব্লগার এসাইলাম নিলো, না জানি কত মিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়েছে! তারা টাকার অংক নিয়ে খুব চিন্তিত।
বলেন কী! ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কেউ এসাইলাম নেয়?
এটা পরীক্ষামূলক এসাইলাম। কোন কারণে ক্ষমতা হারালে ফার্মের মুরগিগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে এসাইলাম নিবেতো, তাই।
তার মানে সেটারও প্রস্তুতি চলছে?
হ। মিস্টার ধান্ধাবাজ দাশগুপ্ত বৃটেনে সেকুলার মুভমেন্ট এনজিও খুলেছেন। যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে বুঝেনইতো! মদীনা সনদের সেকুলার (!) কর্মীদের এসাইলাম পাইয়ে দিতে তিনি কাজ করবেন। বিনিময়ে টাকা নিবেন।
কিন্তু আপনার কাছে কি কোন প্রমাণ আছে?
সেটাইতো। আমার কাছে কোন প্রমাণ নেই। এখন এমনও হতে পারে সিদ্দিকী নাজমুল আলম বৃটেনে এসাইলাম নেননি। বছর খানেকের জন্য বেড়াতে গেছেন। আবার এমনও হতে পারে এসাইলাম নিয়েছেন, প্রাণ রক্ষার জন্য। নিজ দল বা বিরোধী দলীয় প্রতিপক্ষ দ্বারা তিনি আতংকিত। তারপর ধরেন সুশান্ত দাশগুপ্ত সত্যি সত্যি সৎ উদ্দেশ্যে সেকুলার মুভমেন্ট শুরু করেছে। কিন্তু আমি যেই সুরে উপরে প্রমাণছাড়া কথাগুলো বলেছি, এই কথাগুলো শুনে তারা খুব কষ্ট পাবেন। ব্যক্তিগতভাবে নাজমুল কিংবা সুশান্তকে পছন্দ করি না। আমি ভাবতেই পারি তারা অসৎ, ধান্ধাবাজ। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া গুরুতর অভিযোগ আনতে পারি না। তারউপর সেটার সাথে যদি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্ন জড়িত থাকে।
তো, এই যে এতকিছু হচ্ছে, এসবে দোষ কার?
কেন, অবশ্যই নাস্তিক ব্লগারদের। তারা কেন ৫৭ ধারা মানে না!
ইস্, মুখোশ খুলে দিয়েছে!
মনে করি কোন প্রবাসী ব্লগার বিপদগ্রস্থ কোন ব্লগারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এখন এই কথাটি পাবলিক জানতে পারার বিশ্বাসযোগ্য উপায় কী কী?
১. যে ব্যক্তি টাকা দিয়েছেন, তিনি জানাবেন।
২. যে ব্যক্তি টাকা নিয়েছেন, তিনি জানাবেন।
৩. টাকা লেনদেনে কোন তৃতীয়পক্ষ থাকলে, তিনি জানাবেন।
কিন্তু আমরা জানলাম কাদের কাছ থেকে? সরকারপন্থী এক্টিভিস্টদের কাছ থেকে। উপরের তিন ব্যক্তির মাঝে সরকারপন্থী কেউ থাকার সুযোগ নেই। কারণ উভয় পক্ষের মাঝে বিবাদ বহু পুরনো। আর যদি কোন সরকারপন্থী ব্যক্তি লেনদেনের সাক্ষী থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই যথপোযুক্ত প্রমাণাদিসহ জিনিসটা ফাঁস করবেন।
ওকে। এমনটাও হতে পারে, ভুক্তভোগী কোন ব্লগার তার দুঃখের কথা সরকারপন্থী বন্ধুর সাথে শেয়ার করেছে। এমনটা যদি ঘটে থাকে, তাহলে এই দুঃখের কথায় খাঁদ আছে। কারণ, এভাবে দুঃখ কমে না। সরকারপন্থী বন্ধুর কাছে প্রমাণ ছাড়া শেয়ার করার কোন রিটার্ন নেই। তারচেয়ে তথ্য প্রমাণসহ নিজেই ফেসবুকে একটা পোস্ট দেয়া সহজ এবং দুঃখ লাঘব হবে দ্রুত। যে লোক সরকারপন্থী এক্টিভিস্টের কাছে শেয়ার করার মত ‘এসাইলাম দুঃখে’ দুঃখী, সেই লোক নিশ্চয় বিনা দ্বিধায় বিনা সংকোচে নিজেই সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস করে দেয়ার সাহস রাখে। কারণ এতে তার সরাসরি লাভ এবং ইউরোপে আশ্রয় প্রত্যাশী অন্যান্য বিপদগ্রস্থ সহব্লগারদেরও লাভ। কিন্তু সরকারপন্থী কারো কাছে শেয়ার করলে শুধু ওই ব্যক্তির লাভ। চুলকানির লাভ।
নিরাপত্তা কিনতে পাওয়া যায়?
আচ্ছা, মনে করি জীবনের নিরাপত্তা সংকটে ভোগা একজন নাস্তিক ব্লগার ইউরোপে আশ্রয় নেয়ার জন্য সাহায্যকারীকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে। একই পরিমাণ টাকা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগ, সরকারপন্থী এক্টিভিস্টদের কাউকে দিলে সে কি ওই নাস্তিক ব্লগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে? যদি না পারে, তাহলে কীসের এত গৌরব? কিসের এত হম্বিতম্বি? কিসের এত চুলকানি?
ধর্মীয় সন্ত্রাসের শিকার এই মানুষগুলো কখনো ভাবেনি শুধু ব্লগে লেখার জন্য তাকে প্রাণ হারাতে হবে। আসলে মানুষগুলো কেবল বাঁচতে চেয়েছে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভাগ চায়নি। রেলওয়ের জমি চায়নি, সর্বাধিক ব্যয়ে নির্মিত রাস্তার কাজ চায়নি, ছোটবড় পদ চায়নি। তবে কেন তাদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টাকে মিথ্যা দিয়ে আঘাত করে যাবেন?
চুলকানী লীগের নেত্রী সরাসরি বলে দিয়েছে লেখালেখির জন্য কেউ মারা গেলে সরকার দায় নিবে না। বলেছে নাস্তিক খারাপ। প্রশাসন বলেছে দেশ ছেড়ে চলে যেতে। এরপর হেফাজতকে ডেকে এনে কোরমা পোলাও খাওয়ানো, পাঠ্যপুস্তক মুসলমানিকরণ, মদীনা সনদ, জঙ্গীদের ফুলের মালা দিয়ে দলে ঢুকানোসহ ইত্যকার কত কথা। এত কথার পর লজ্জায় মরে যাওয়া উচিত নয়, কিন্তু লাল হয়ে যেতে কোন বাধা নেই। কোন রকম প্রমাণ ছাড়া সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি ধরে ধরে অনৈতিক অর্থ লেনদেনের অভিযোগ আনার মত নির্লজ্জতা দেখে ঘেন্না লাগে। গা ঘিনঘিনে ঘেন্না। এরা নিজের শরীরভরা পঁচন নিয়ে অন্যের গায়ের ঘামাচি খুঁজে বেড়ায়, একটু চুলকে দিবে বলে।
এদের কোন স্বপ্ন নেই, দায়িত্ব নেই, দায় নেই, সফলতা নেই, ব্যর্থতা নেই। নিজস্ব কোন আনন্দ নেই, নিজস্ব কোন বেদনা নেই। এরা অন্যের ইচ্ছার দাস। কর্তব্যহীন বদমাশ।
কী বলেন! তার মানে কোন টাকা লেনদেন হচ্ছে না?
আন্দাজের স্বাধীনতা সবার আছে। আপনি মনের সুখে ভাবতে পারেন অমুক ইউরোপে যাওয়ার জন্য তমুককে পাঁচ হাজার ডলার দিয়েছে। দশ, পনের, বিশ হাজার ডলার দিয়েছে, এক লাখ ডলার দিয়েছে, স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি দিয়েছে, যা নেই তাও দিয়েছে। – এটা একান্তই স্বমেহনী ভাবনা।
আর যদি সত্যি সত্যি এক পয়সা অনৈতিক লেনদেনও হয়ে থাকে এবং লেনদেনের সাথে জড়িত কোন পক্ষ স্বীকার করে কিংবা প্রমাণ প্রকাশিত হয়, তখনই কেবল আমি বলতে পারবো যে লেনদেন হয়েছে। তার আগে নয়।
সবচে বড় বিষয় লেনদেন হয়ে থাকলে একদিন না একদিন সেটা প্রকাশিত হবেই। বাংলাদেশি ব্লগারদের উপর এই আস্থা আছে। এরা সামান্য দ্বিমতের গর্তকে মহাসাগর বানানোর মত সৃজনশীল। কোন কিছুই গোপন থাকবে না।
বুঝতে পারলাম, নাস্তিক ব্লগাররা নির্দোষ, নিষ্পাপ
এল ও এল, লল।
ভুলে গেলে চলবে না বাংলাদেশি নাস্তিক ব্লগারদের বেশিরভাগই বাঙালি মুসলমান পরিবারের সন্তান। পরশ্রীকাতরতা আর ঈর্ষাপরায়ণতা আমাদের শিরায় উপশিরায়। পরনিন্দা, পরচর্চা, অন্যকে শত্রু বানানোর হাজারটা উপায় আমাদের জানা আছে। আমরা অন্যের দৌড় থামাতে গিয়ে নিজের দৌড়ও থামিয়ে রাখি। অন্যের ভালো হলে যদি আমার খারাপ হয়, এমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি। বাঙালি আস্তিক আর বাঙালি নাস্তিকদের মাঝে সামান্যতর পার্থক্য আছে, আর বাকিসব প্রায় একই। এক পক্ষ আল্লাহ বিশ্বাস করে, আরেক পক্ষ করে না। এই যা! নাস্তিকতা কখনো ‘ভালো মানুষ’ এর নিশ্চয়তা দেয় না। এটা কেবলই ইশ্বরের অস্তিত্ব বিষয়ক। সততা, মানবতাবাদ, প্রগতিশীলতা, পরোপকার, উদারতা এসব ভিন্ন বিষয়। নাস্তিকতা প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত নয়। সেই হিসেবে কেউ নাস্তিক তাই তাকে নির্দোষ নিষ্পাপ সার্টিফিকেট দেয়া যায় না। তার অর্জন যতটুকু, ততটুকুই বলা যায়।
এই দুঃসহ সময়ে এমন কয়েকজন ব্লগার দেখেছি, যাদের কাছে প্রাণ বাঁচানোর চেয়ে ইউরোপ যাওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে হয়েছে। আবার এমন অনেককে দেখেছি যারা এসব অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে দূরে থাকার জন্য নিজেকে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রেখেছে।
এমনও কাউকে পেয়েছি, যিনি অমুককে বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়া প্রয়োজন; আবার সিক্রেট মেসেজ থ্রেডে বলেছেন, অমুকের কোন থ্রেট নেই। সে সেফ। সে কেন দেশ ছাড়বে।
এসব হচ্ছে আমাদের স্বভাবচর্চা এবং সামাজিক ঐতিহ্যের ঠেলা। আমিও অনেক অন্যায়, হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, অসহযোগিতার সাক্ষী।
আমি কিন্তু অনেক কিছু জানি
হ্যাঁ জানি। অনেক তথ্য জানি। আপনি যদি জানতে চান, তাহলে প্রতিটি তথ্যের জন্য এক হাজার ডলার করে দিতে হবে। ডলার দিবেন, তথ্য নিবেন। এসাইলাম ব্যবসা বাদ, আমি তথ্য ব্যবসা করবো।
যাইহোক, মন দিয়ে শোনেন। আমার কাছে কোন নাস্তিক ব্লগার টাকা চায়নি। বরং বেশ কয়েকজন টাকা সেধেছেন। এবং নাস্তিক আস্তিক মিলিয়ে একাধিক ব্লগার টাকা ধার দিয়ে উপকৃত করেছেন। আমার বিপদে ব্লগার ছাড়াও অনেকের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি।
এসবের সৌন্দর্য ঘামাচি খুঁজে বেড়ানো লোকজন বুঝবে না।
আপনি কি আসলেই ভেতরের (!) কিছু জানেন না?
বললামইতো, অনেক কিছু জানি। আপনি জানতে চাইলে আমাকে প্রতি তথ্য বাবদ দুই হাজার ডলার করে দিতে হবে। (রেট বেড়ে গেছে)।
সিরিয়াসলি বলেন, আপনি কি কিছু জানেন?
কী কী জানি, কী কী পরিস্থিতির মুখোমুখী হয়েছি, সেটা স্মৃতিকথায় লিখবোনে কোন এক সময়। সেটা পরের আলাপ। এখনকার আলাপ হচ্ছে আপনাদেরকে যদি কোন ব্যক্তি প্রমাণ ছাড়া এসাইলাম ব্যবসার কথা বলে থাকে, তাহলে নিশ্চয় সেও উন্নত কোন দেশে এসাইলাম নিয়েছে। তাকে বিশ্বাস করছেন ভালো কথা, কিন্তু কয়েকটা সন্দেহওতো করতে পারেন। যেমন সে নিজেই এসাইলামপ্রত্যাশী কাউকে সাহায্য করার বিনিময়ে টাকা নিয়েছে কিনা, টাকা নিয়ে ফেঁসে যাওয়ার আতংকে ভুগছে কিনা, সেই আতংক কাটিয়ে উঠতে অন্যের গায়ে ঢিল ছুঁড়ছে কিনা। এসব আরকি! একটু ভেবে দেইখেন।
অন্ধত্বে এসে শেষ
এসব লিখতে লিখতে, বলতে বলতে জানতে পারলাম সিদ্দিকুর চিরতরে অন্ধ হয়ে গেলো। পুলিশের ছোঁড়া টিয়ার শেলের আঘাতে একজন ছাত্রকে তার দু’টো চোখই হারাতে হয়েছে। পুলিশ সার্দার বলেছে এটা সাবোট্যাজ, অন্য কেউ করেছে। যদিও আমরা ছবিতে দেখতে পেয়েছি কত কাছ থেকে পুলিশ সিদ্দিকুরের দিকে টিয়ারশেল ছুঁড়ে মেরেছে।
সিদ্দিকুরের এভাবে অন্ধ হয়ে যাওয়াটা প্রতীকী। আসলে আমরা সবাই অন্ধ হয়ে যাচ্ছি। আবার আমাদেরকে যারা অন্ধ করে দিচ্ছে, তারা অনেক আগে থেকেই অন্ধ। স্বেচ্ছান্ধ।
এই যে এসব স্বেচ্ছান্ধ শাসকের দালালি করার জন্য আন্দাজে বেআন্দাজে সব জায়গায় ঢিল ছোঁড়েন। ঢিলগুলো কোথায় যাচ্ছে, জানেন? ঢিলগুলো আপনাদের এক্সিটওয়ের মুখে গিয়ে জমা হচ্ছে। পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর আপনারা আটকে যাচ্ছেন অন্ধকারে, অসুখে, বিপর্যয়ে। যেখানে আপনি আটকে আছেন, সেখানে আটকে থাকবে আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম। তারা এসব অন্ধকারের জন্য আপনাকে দায়ী করবে।
যে মানুষগুলো শৃঙ্খলা মানে না, মৌলবাদ মানে না, একই জায়গায় আটকে থাকতে চায় না, যারা সাহস নিয়ে কথা বলে, যারা পরিবর্তনের কথা বলে, সবার মিলেমিশে থাকার কথা বলে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে বলে, তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে না চলার স্বাধীনতা আপনার আছে। কিন্তু তাদের ক্ষতি না করলেও পারেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের ক্ষতি করার মাধ্যমে আপনি সরাসরি একটা পক্ষ নিয়ে নিচ্ছেন। সেই পক্ষে আপনার একপাশে হেফাজত, আরেক পাশে আনসারুল্লাহ। সামনে মিলিটারি, পেছনে লুটেরা। তারা আপনাকে অন্ধ করে দিয়েছে। তারা আপনাকে লুটে নিয়েছে। আপনি নিজের উপর নিজের দখল হারিয়ে ফেলেছেন।
আপনি এখন আপনার নয়। অন্য কারো। নিজেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করুন। প্লীজ।