কোনো মেয়েকে কাছে পেতে চাইলে তার আগে কলেমা পড়ে বিয়ে করে সঙ্গীসাথীদের মুখ বন্ধ করে রাখতেন। কুৎসা রটনা থেকে নিজেকে বাচাতেই বিয়ে করে তারপর মেয়েদের কাছে নিতেন। এ কথাগুলো শুনে রাগ হচ্ছে প্রচন্ড? ভাবছেন শুরুতেই আমার মনগড়া কথা বলে চলেছি? না, তা নয়। নিচের হাদিসটি পড়লেই বুঝতে পারবেন যে বিয়ে কতটুকু গুরুত্ব বহন করত নবির জীবনে।
[Muslim, Book 8, Hadith 3243 | http://sunnah.com/muslim/16/13 ]
“আব্দুল্লাহ মাসুদ থেকে বর্নিত, আমরা একবার আল্লাহর নবীর সাথে অভিযানে বের হয়েছিলাম ও আমাদের সাথে কোন নারী ছিল না। তখন আমরা বললাম- আমাদের কি খোজা (নপুংষক) হয়ে যাওয়া উচিৎ নয় ? তখন তিনি আমাদের তা করতে নিষেধ করলেন ও স্বল্প সময়ের জন্য কোন মেয়েকে কিছু উপহারের বিনিময়ের মাধ্যমে বিযে করার জন্য অনুমতি দিলেন”
-- হাদিসটি লক্ষ্য করুন। নবি যখনই তার সঙ্গীসাথীদের নিয়ে অভিযানে যেতেন, তাদের সাথে নারী রাখতে হতো সেক্স করার জন্যে। উক্ত অভিযানে সাথীদের সেক্স আকাঙ্ক্ষা মিটানোর জন্যে নবি স্বল্প সময়ের জন্যে কিছু উপহারের বিনিময়ে মেয়ে বিয়ে করতে বলেছিলেন। আর কি বুঝতে বাকি থাকে যে, নবির কাছে বিয়েটা ছিল সেক্স করার আগে লোকমুখ বন্ধ করার জন্যে একটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
যাহোক, আর এসব আলোচনা না করে মুল আলোচনায় চলে যাই। নবির বউদের নাম, বিয়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।
১। খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদঃ
নবির প্রথম বউ। নবী ও খাদীজার মধ্যে ফুফু-ভাতিজার অনেক দূরের সম্পর্ক ছিল। এজন্যই নবুওয়ত লাভের পর খাদীজা নবীকে তার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবন নাওফিলের কাছে নিয়ে গিয়ে বলেছিলেন, "আপনার ভাতিজার কথা শুনুন"। যাক, দূর সম্পর্কের ফুফুর কোন ভ্যালু নেই, বিয়ে হতেই পারে। নবির সাথে বিয়ে হওয়ার আগে খাদিজার আরও দুটি বিয়ে হয়। খাদিজা ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবারের ও একজন ধনী মহিলা। এতিম নবিকে তিনি তার ব্যাবসার দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। একসময় তাদের বিয়ে হয় । খাদীজার গর্ভে নবীর কন্যা জয়নব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম ও ফাতিমা এবং পুত্র কাসিম ও আবদুল্লাহ জন্ম নেয়। বিয়ের সময় নবির বয়স ছিল ২৫ এবং খাদিজার বয়স তখন ৪০। নবি নিজের থেকে ১৫ বছর বড় একজন মহিলাকে কেন বিয়ে করলেন? এতিম নবির তখন কিচ্ছু ছিল না, খাদিজার বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়াও একটা সাম্ভাব্য কারন।এটা কারও বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়। যাহোক, আমরা সেদিকে গেলাম না, এই বিয়েটাকে স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিলাম।
২। সাওদা বিনতে জাময়াঃ
খাদিজার মৃত্যুর পর ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে নবি সাওদাকে বিয়ে করেন। সাওদা তার বৃদ্ধ বাবা ও ভাইয়ের সাথে থাকতেন। তাদের পরিবার ধনী না হলেও তারা স্বচ্ছল ছিল। পরিবারের সম্মান ছিল। তাই সাওদা কোন অসহায় মেয়ে ছিল না। নবির সাথে বিয়ের পুর্বে সাওদার আরেকটি বিয়ে হয়েছিল এবং সন্তানও ছিল। ধারনা করা হয় বিয়ের সময় সাওদা ছিলেন পঞ্চাশোর্ধ মহিলা। তবে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্যের অভাব রয়েছে। সাওদাকে নবি বিয়ে করেছিলেন নবি ও খাদিজার সন্তানদের দেখাশুনা করার উছিলায়। বলা হয়ে থাকে যে এই বয়স্ক মহিলাকে নবি যৌন তাড়নায় বিয়ে করেন নি। তাই যদি হবে, তাহলে সওদার শেষ বয়সটাতে কেন সে স্ত্রীর মর্যাদা হারাবে? দাসী বাদীর মত করে মুহাম্মদের সংসারে থেকে যাবে? কি ভাবছেন? আন্দাজে কথা বলা শুরু করে দিয়েছি? উহু... তা নয়। নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন।
[Muslim, Book 8, Hadith 3451 | http://sunnah.com/muslim/17/62 ]
“Never did I find any woman more loving to me than Sauda bint Zam'a. I wished I could be exactly like her who was passionate. As she became old, she had made over her day (which she had to spend) with Allah's Messenger to 'A'isha. She said: I have made over my day with you to 'A'isha. So Allah's Messenger allotted two days to 'A'isha, her own day (when it was her turn) and that of Sauda.”
[See also: Bukhari, Volume 3, Book 47, Number 766]
[See also: Bukhari, Volume 3, Book 48, Number 853]
সাওদা নবি কর্তৃক অবহেলিত হচ্ছিলেন তার ভাটা পড়া যৌবনের কারনে এবং তালাক পাওয়ার আশংকা করছিলেন। তাই তিনি নবিজি থেকে প্রাপ্য তার ভাগের রাতটি নবির প্রিয় শিশুবউ আয়েশাকে দিয়ে দিলেন। একজন নারী কতটা দুর্ভিষহ পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে? তিনি নবির বউ অথচ নবিকে কাছে পান না! এটা কি নিছক দাসীবাদী হয়ে দিন কাটানো নয়?
অনেকেই বলবেন তিনি বয়সের কারনে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আচ্ছা, তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বুঝলাম। কিন্তু এমন একটা সিদ্ধান্ত নবি কেন মেনে নিবেন? তিনি কেন তার বউদের সাথে সমান আচরন করবেন না? তাহলে তিনি কেমন মহামানব হলেন? সাওদা বললেন আর অমনি তার সাথে রাত কাটানো ছেড়ে উক্ত সময় আয়েশার সাথে থাকা শুরু করলেন? শুধু তাই নয়, নবির সাওদা প্রতি এমন তাচ্ছ্বিল্য আর তার সাথে রাত কাটানো থেকে বিরত থাকাকে হালাল করতে তাৎক্ষনিক কুরানে এক আয়াত পয়দা করে দিলেন। নিচে লক্ষ্য করুনঃ
[Quran 4:128 | http://quran.com/4/128 ]
“যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন।”
আর এভাবেই নিজের সুবিধামত আয়াত পয়দা করে তার সব কাজ বৈধ করে ফেলতেন নবীজি।
৩। আয়েশা বিনতে আবু-বকরঃ
আয়েশা ছিলেন নবির সবচেয়ে প্রিয় বউ। উপরোক্ত দুটি বিয়ে করেও নবী আরববাসীর কাছে কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হন নি। সবাই তা স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিয়েছিল। কিন্তু নবি যখন ৬ বছরের মতান্তরে ৭ বছরের বাচ্চা মেয়ে আয়েশাকে বিয়ে করেন এবং তার ৯ বছর বয়সে তাকে ঘরে বিছানায় নিয়ে আসেন, তখনই আরববাসী এ নিয়ে নানা কথা শুরু করে। অসংখ্য হাদিস আয়েশার বিয়ের বয়স নিশ্চিত করে। যেমনঃ
[Muslim, Book 8, Hadith 3310 | http://sunnah.com/muslim/16/82 ]
“আয়শা হতে বর্নিত- যখন নবী আমাকে বিয়ে করেন তখন আমার বয়স ছয় বছর , আর আমার বয়স যখন নয় বছর বয়সে তাকে ঘরে বিছানায় নিয়ে আসেন, তখনই আরববাসী এ নিয়ে নানা কথা শুরু করে। অসংখ্য হাদিস আয়েশার বিয়ের বয়স নিশ্চিত করে। যেমনঃ
[Muslim, Book 8, Hadith 3310 | http://sunnah.com/muslim/16/82 ]
“আয়শা হতে বর্নিত- যখন নবী আমাকে বিয়ে করেন তখন আমার বয়স ছয় বছর , আর আমার বয়স যখন নয় বছর তখন আমি স্ত্রী হিসাবে তার গৃহে গমন করি।”
[See also: Bukhari, Vol. 7, Book 62, Hadith 64 | http://sunnah.com/bukhari/67/69 ]
[See also: Bukhari, Vol. 7, Book 62, Hadith 65 | http://sunnah.com/bukhari/67/70 ]
[See also: Bukhari, Vol. 7, Book 62, Hadith 88 | http://sunnah.com/bukhari/67/93 ]
[See also: Bukhari, Vol. 5, Book 58, Hadith 236 | http://sunnah.com/bukhari/63/122 ]
সহিহ মুসলিম শরীফের একটি হাদিসে বলা হয়েছে বিয়ের সময় আয়েশার বয়স ছিল ৭, নবির ঘরে যাওয়ার সময় তার বয়স ছিল ৯। সে নবির ঘরে বউ হয়ে যাওয়ার সময় তার খেলার পুতুলগুলোও সাথে করে নিয়ে গিয়েছিল!
[Muslim, Book 8, Hadith 3311 | http://sunnah.com/muslim/16/83 ]
“আয়শা বর্ননা করেন যে – যখন আল্লাহর নবীর সাথে তার বিয়ে হয় তখন তার বয়স ছিল সাত, আর যখন তার বয়স নয় বছর তখন নবী তাকে স্ত্রী হিসাবে ঘরে তোলেন আর তখন আয়শা তার সাথে তার খেলার পুতুল গুলিও নিয়ে যান। আর যখন নবী মারা যান তখন তার বয়স আঠার”
অনেক কাঠমোল্লা নবির এমন অপকর্ম ঢাকতে বলে যে, আবু বকর আর মুহাম্মদ ছিলেন বন্ধু। তারা বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাকা করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অনেকে আবার বলে বেড়ান যে আবু বকরই আগে নবিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আচ্ছা, নবি কেমন নিম্ন মন মানসিকতার ছিলেন যে বন্ধুত্ব পাকা করতে পঞ্চাশোর্ধ বয়সে ৬ বছরের একটা বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করলেন? তার মেয়েকে বিয়ে করা ছাড়া কি সম্পর্ক পাকা হয় না? আপনি কি পারবেন আপনার পঞ্চাশোর্ধ বয়সকালে আপনার ৬ বছরের মেয়েকে আপনার আরেক পঞ্চাশোর্ধ বেস্ট ফ্রেন্ডের কাছে বিয়ে দিতে? আপনি নিশ্চয়ই এমন কাজ করবেন না। এমন বন্ধুর দরকার নেই যার সাথে সম্পর্ক পাকা করার জন্যে পিচ্ছি বোন কিংবা মেয়েকে বিয়ে দেয়া লাগে। তেমনি, আবু বকরও এই বিয়ের কথা শুনার জন্যে প্রস্তুত ছিলেন না, তিনি নবির মুখ থেকে এমন প্রস্তাব শুনে বিব্রত হয়েছিলেন। নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন।
[Bukhari, Vol. 7, Book 62, Hadith 18 | http://sunnah.com/bukhari/67/19 ]
“উর্সা হতে বর্নিত- আল্লাহর নবী আবু বকরকে তার কন্যা আয়শাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলেন।আবু বকর বললেন- কিন্তু আমি তো তোমার ভাই হই। নবী বললেন-তুমি তো আমার ধর্ম সম্পর্কিত ভাই, তাই আয়শাকে বিয়ে করাতে আমার কোন বাধা নেই”
হাদিসটি একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লেই বুঝা যায় যে, আবু বকর নবিকে ভাইয়ের মত দেখত। তিনি মোটেই নবির মুখে এমন প্রস্তাব আশা করেন নি। কিন্তু নবি তাকে কনভিন্স করার চেষ্টা করেছেন। অনেকেই আবার বলতে চাইবেন যে, আগের যুগে বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করা স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। আগের যুগে কম বয়স্ক মেয়েদের বিয়ে করলেও তা করতো যুবকরা, পঞ্চাশোর্ধ বৃদ্ধরা নয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, নবি যদি সে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ওসব কাজ করে যাবেন, তাহলে তিনি আর নবি রইলেন কিভাবে? তাকে তো সেই যুগেই রেখে দেয়া উচিত। এই যুগে কেন তাকে সবাই অনুসরন করবে? নবি এই যুগে আর অনুসরনীয় নয়। নবি তো এসেছিলেন মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে, ভাল মন্দের পার্থক্য বুঝাতে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিশু বিবাহ করার জন্যে নিশ্চয়ই তিনি আসেন নি? তিনি যদি সমাজে চলমান প্রথাই মেনে নিবেন, তাহলে এমন নবি কিভাবে মানুষকে সঠিক পথ দেখাবে?
আয়েশা ছিলেন আবু বকরের কন্যা এবং তারা বেশ স্বচ্ছল ও সম্ভ্রান্ত পরিবার ছিলেন। আয়েশা তো কোন বিপদের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিল না, সে বিধবাও ছিল না, তার পিতা বকর সাহেব কন্যা দায়গ্রস্ত ছিলেন না... এমন একটি পুতুল খেলা বাচ্চা মেয়েকে ঠিক কোন যুক্তিতে বিয়ে করেছিল মুহাম্মদ?
৪। জয়নব বিনতে খুযায়মাঃ
তিনি ছিলেন উবায়দা ইবনে হারিথ এর স্ত্রী। হারিথ বদরের যুদ্ধে মারা যান। তার স্বামী মারা যাওয়ার ৭ মাস পর জয়নবের ২৯ বছর বয়সে (তিনি বৃদ্ধা ছিলেন না) নবি তাকে বিয়ে করেন। এই বিয়েটি ঠিক কি কারনে? মেয়েটি বিধবা বলে নবি তাকে বিয়ে করেছিলেন? প্রথমত, নবির ঘরে তখন আরও স্ত্রী রয়েছে। ঘরে আরও একাধিক স্ত্রী রেখে বিধবা নারী পেলেই তাদের বিয়ে করতে হবে নবির? আশেপাশে কোন সাহাবী ছিল না? আর, নবি তখন মদিনায় হিজরত করেছিলেন। ঐ সময় নবির খুব আর্থিক দুর্দশা চলছিল। আয়েশা কর্তিক বর্নিত হাদিস থেকে জানা যায় এমন অনেক দিন যেত তাদের চুলায় আগুন জ্বলতো না। নিজের এমন দারিদ্রতার মাঝে বিয়ে করে তাদের কিভাবে ভরন পোষন করতেন নবি? পক্ষান্তরে, জয়নব ছিলেন ধনাঢ্য হিলাল গোত্রের মেয়ে, তাদের পরিবার ছিল ধনী। সুতরাং, নবি তাকে বিয়ে করে উদ্ধার করেছেন, এমনটা ভাবাই অনুচিত।
৫। উম্মে সালামা হিন্দ বিনতে আবি উমাইয়াঃ
উম্মে সালামার স্বামী ছিল আবদুল আসাদ। তারা ইসলাম গ্রহনের কারনে মক্কা ছাড়তে বাধ্য হন এবং আবিসিনিয়া হয়ে মদিনায় হিজরত করেন। উহুদের যুদ্ধে আসাদ মারাত্মকভাবে আহত হয়ে তারপর বেশ কিছুদিন ভুগে সে মারা যায়। এসময় তাকে বিয়ে করার জন্যে প্রস্তাব পাঠায় আবু বকর। উম্মে সালামা তাকে প্রত্যাখ্যান করে দেন। এরপর তাকে প্রস্তাব পাঠায় উমর। উম্মে সালামা উমরের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন। সবশেষে তাকে প্রস্তাব পাঠায় নবি মুহাম্মদ। সালামা মুহাম্মদের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন। এই ঘটনার পর মুহাম্মদ তার সাথে ব্যাক্তিগতভাবে সাক্ষাত করেন এবং পুনরায় তাকে বিয়ে করার ইচ্ছে ব্যাক্ত করেন [Bewley/Saad 8:63]। উম্মে সালামা জানান যে, তার ছেলেমেয়ে আছে, তারা বিয়ের পর নতুন সংসারে উপেক্ষিত হতে পারে। তাছাড়া নবির অন্য বউদের সাথে থাকতে তার হিংসাবোধ জাগবে। উম্মে সালামা চর্মকারের কাজ করতেন এবং তারা স্বচ্ছলভাবেই চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, নবিজি তাকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করালেন বিয়েতে। নবির অন্য বউদের সাথে থাকতে সালামার হিংসাবোধ হবে, এই কথার উত্তরে নবি বলেছিলেন যে হিংসা কমার জন্যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন! তবুও সালামাকে বিয়ে করতেই হবে! যাহোক, বিয়ের সময় সালামার বয়স ছিল ২৭ (তিনি বৃদ্ধা ছিলেন না) এবং নবির বয়স তখন ৫৭। সুতরাং, উম্মে সালামা বিধবা ছিলেন কিন্তু বৃদ্ধাও ছিলেন না এবং অসহায় অসচ্ছ্বল ছিলেন না। উপরন্তু, তিনি আবু বকর, উমর, মুহাম্মদ সহ অনেকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুহাম্মদের কাছে পেরে উঠেন নি।
৬। হাফসা বিনতে উমর:
হাফসা ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমরের মেয়ে। হাফসার সাথে প্রথম বিয়ে হয় হুজাইফার। কিন্তু হুজাইফা বদর ও উহুদ যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়টাতে মারা যান। হাফসার বয়স তখন ১৯ এবং হাফসা বিধবা হয়ে পরেন। ফলে, আবারও দিলের নবীর একটা দায়িত্ব বেড়ে যায়। উমর তার মেয়েকে বিয়ে করার জন্যে প্রথমে আবু বকর ও পরে উসমানকে প্রস্তাব করেন। তারা দুজনেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন কারন তারা জানতেন যে নবি মুহাম্মদ তাকে বিয়ে করার ইচ্ছে পোষন করেছেন। অতঃপর উমর তাদের এমন ব্যবহার সম্পর্কে নবির কাছে অভিযোগ করার জন্যে গেলে নবি উমরকে দেখে মুচকি হাসেন এবং বলেন যে, হাফসা এমন কাউকে বিয়ে করতে চাচ্ছে যে উসমানের থেকে উত্তম। নবির কথা শুনে উমর বুঝতে পারেন যে নবি তাকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক। অতঃপর উমর খুশি হন এবং হাফসার সাথে নবির বিয়ে হয় যখন হাফসা বয়স ছিল ১৯ বছর। হাফসা উক্ত সময়ের গুটিকয়েক লেখাপড়া জানা মেয়েদের মধ্যে একজন ছিলেন। তার বাবা উমর ছিলেন কুরাইশ বংশের অন্যতম একজন ধণী ব্যক্তি। কাজেই হাফসা মোটেই অসহায় এবং বয়স্কা কোন মেয়ে ছিলেন না।
যাহোক, নবির সাথে হাফসার সাংসারিক জীবন সুখের ছিল না। অশান্তি শুরু হয় যখন হাফসার অনুপস্থিতিতে তার বিছানায় নবি তাদের দাসী মারিয়ার সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়। এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে মারিয়াকে নিয়ে আলোচনার সময়। এখন এ বিষয় থেকে বিরত থাকলাম।
(চলবে...)
পর্ব-২> https://www.facebook.com/AtheistBangla/photos/a.1590604184514029.1073741828.1590339541207160/1702629236644856/
পর্ব-৩> https://www.facebook.com/AtheistBangla/photos/a.1590604184514029.1073741828.1590339541207160/1702630396644740/
নবী মুহাম্মদের বহুবিবাহ ও যৌক্তিকতা
নাস্তিকদের কটুক্তির ঠ্যাংভাঙ্গা জবাব (পর্ব-২)
==============================
(... ১ম পর্বের পর থেকে...)
৭। জয়নব বিনতে জাহশঃ
উপরোক্ত একের পর এক বিয়ে ও সমালোচনা সামলে নিয়েছিলেন দিলের নবী। কিন্তু জয়নব বিনতে জাহশ এর সাথে বিয়ের পর যে সমালোচনা শুরু হয়েছিল সাহাবিদের মধ্যে, তা সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় নবির। বেশ কিছু কুরানিক আয়াতও পয়দা করতে হয়েছিল পরিস্থিতি সামাল দিতে। আসছি সে কথায় একটু পর। জয়নব ছিলেন সম্পর্কে মুহাম্মদের ফুফাতো বোন। একই সাথে মুহাম্মদের পালিত পুত্র জায়েদের স্ত্রী। মুহাম্মদ কর্তৃক পুত্রবধুকে বিয়ে করার কাহিনীটা একটু লম্বা। যথাসম্ভব সংক্ষেপে আলোচনা করছি। আশা করি ধৈর্য্য সহকারে পড়বেন।
জায়েদ ও জয়নবের বিয়ের মধ্যস্ততা করেছেন নবি নিজেই। নবিই জয়নবকে তার পালিত পুত্র জায়েদের জন্যে পছন্দ করেছিলেন। সে সময় জয়নবের প্রতি নবির অন্যরকম কোন আকাক্ষা ছিল না এবং সরল মনেই পুত্র জায়েদ ও জয়নবের বিয়ে দেন। জায়েদ ও জয়নবের বিবাহ সম্পন্ন হবার পর স্বামী-স্ত্রী মদীনায় তাদের নিজ বাসগৃহে বাস করতেন।
জারীর তাবারীর বর্ননা অনুসারে,
একদিন জায়েদ যখন বাড়ীর বাইরে ছিলেন, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে মুহাম্মদ তাদের বাসগৃহে আসেন। ঘরের ভিতর জায়েদ আছে কিনা দেখার জন্য দরজার ফাক দিয়ে মুহাম্মদ উকি মারলে ঘরের ভিতরে থাকা জয়নবকে দেখতে পান বেশামাল পোশাকে। মুহাম্মদ এরুপ পোশাকে যুবতী জয়নবকে দেখে হতচকিত হন এবং তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসেঃ “সকল প্রশংসা আল্লাহ্র, হৃদয় যেভাবে চায় তিনি সেভাবে বদলে দিতে পারেন।” তারপর তিনি ফিরে যান।(বলে রাখা ভালো, “হৃদয় বদলে যাওয়া”র অর্থ নবি আগে তাকে ভ্রুক্ষেপ না করলেও এই ঘটনার পর তার মন পরিবর্তন হতে শুরু করে।) জায়েদ বাড়ি আসলে এই ঘটনা জয়নব সগর্বে তার স্বামী জায়েদকে বলে যে নবি তার প্রেমে পড়েছেন।
জায়িদ মুহাম্মদের প্রকৃতি সম্পর্কে এতটাই জানতেন যে, আরবের সাধারণ মানুষের জন্য যেটা অচিন্তনীয় ছিল যে, সে ধরনের কথাও তিনি মুহাম্মদকে বলতে সাহস করেছিলেন। ঘটনা জানার পর আতঙ্কিত জায়েদ মুহাম্মদকে খুঁজে বের করেন। জায়েদ খোলাখুলি পালক-পিতাকে বললেনঃ “আপনি হয়ত জয়নবকে পছন্দ করেছেন। সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য আমি তাকে ত্যাগ করছি।”এ কথা শুনে মুহাম্মদ উত্তর দিলেন, “তুমি তোমার স্ত্রীকে রাখ।” [Quran 33:37] এ এ সম্পর্কিত আয়াতও রয়েছে। ঘটনার সম্পর্কিত এই হাদিসটিও দেখতে পারেন [Sahih Bukhari 9:93:516 | http://sunnah.com/bukhari/97/48 ]।
লক্ষ্য করুন, ভালো মনের লোক হলে সে জায়েদকে তাৎক্ষনিক তিরস্কার করে বলতো যে, জায়েদ, তুমি এসব কি বলছো? সে আমার পুত্রবধু। তুমি এমন কথা বলার সাহস করলে কিভাবে? কিন্তু নবিজি এমন উত্তর না দিয়ে বললেন যে তুমি তোমার স্ত্রীকে রাখ। তার মানে সে মনে মনে রাজি। এবং তার মনের এই রাজি ভাব ও লোকলজ্জার ভয় Quran 33:37 (...আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন…) দ্বারা প্রমানিত হয় এবং তা পানির মত পরিস্কার।
জায়েদ সম্পূর্ণরূপে সচেতন ছিলেন যে, মুহাম্মদ যা চান তা পাবার পথে যে ব্যক্তি প্রবিন্ধক হওয়ার সাহস করবে, তাকে ধ্বংস করার মত সামর্থ্য মুহাম্মদের আছে। নইলে স্ত্রীকে যখন রক্ষা করার জন্য জান-প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করার কথা, সেখানে নিজে থেকেই জয়নবকে মুহাম্মদের হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারতেন না।মুহাম্মদ আপাতত জয়নবকে রাখতে বললেও তার মনে ছিল অন্য কথা, সে মনে জয়নবকে পাওয়ার ইচ্ছে গোপন করছিল। এবং লোকলজ্জার ভয়ে তা বলতে পারছিল না। এ সম্পর্কে কুরানের উক্ত আয়াতটি না দিয়ে পারলাম না।
[Quran 33:37, | http://quran.com/33/37 ]
“আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে।”
আয়াতটি লক্ষ্য করুন। নবি যখন জায়েদকে বলেছিল যে তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও, সে সময় সে অন্তরে অন্য কিছু গোপন করছিল যাতে কিনা লোকলজ্জার ভয় রয়েছে। একজন মুর্খও বুঝবে যে নবি কি বাসনা গোপন করেছিল। আবার এও বলা হচ্ছে যে, আল্লাহ সেই গোপন বাসনা প্রকাশ করে দিবেন, মানে নবি কিন্তু আশা ছাড়েন নি জয়নবের, প্ল্যান করেছেন পরবর্তীতে আল্লার উপর দিয়ে চালিয়ে দিবেন তার বিয়ের দায়ভার।
জায়েদ বুঝতে পেরেছিলেন যে মুহাম্মদ তার বাসনা চরিতার্থ করবেই। অবশেষে জায়েদ তার বউকে তালাক দেয় এবং নবি তাকে বিয়ে করেন। বিয়েতে নবি বেশ বড় রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং অনেক অতিথি দাওয়াত করেন। কিছু অতিথি দাওয়াত খাওয়া শেষ করেও গল্পগুজবে মেতে ছিল এবং ফিরে যাওয়ার নাম করছিল না। আর এদিকে নবি অপেক্ষায় আছেন যে কখন তিনি জয়নবের সাথে সাক্ষাত করবেন। তাছাড়া অতিথিদের কেউ যদি জয়নবের রুপ লাবন্য দেখে ফেলে! এটাও ভয় হচ্ছিল। তাই, নবি অতিথিদের নিজ বাড়ি থেকে তাড়াতে এবং বউদের পর্দায় রাখতে তাৎক্ষনিক কুরানে এক আয়াত পয়দা করে দিলেনঃ
[Quran 33:53, http://quran.com/33/53 ]
“হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।”
মেরু অঞ্চলে যেখানে ৬ মাস দিন ৬ মাস রাত থাকে, সেখানে নামাজ রোজার নিয়ম নিয়ে কুরানে কোন বাণী নেই, অথচ দাওয়াত খেয়ে অতিথিদের তাড়াতাড়ি মুহাম্মদের বাড়ি ছাড়তে হবে, এ নিয়ে কুরানে এত বড় আয়াত! কা্রো বুঝতে কষ্ট হয় না যে মুহাম্মদ নিজ প্রয়োজনে অতি তুচ্ছ বিষয়েও আয়াত পয়দা করতেন।
যাহোক, এই বিয়ের পর মুহাম্মদের এরকম কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু আয়াত কুরানে পয়দা করেছিলেন। কিছু তুলে ধরা হলো নিচে।
**Quran 33:4 | http://quran.com/33/4
“আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন।”
-- দেখুন আল্লাহ নামধারী মুহাম্মদ কত অমানবিক। জয়নবের সাথে বিয়ে হালাল করতে পালক পুত্রদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো এই আয়াতের মাধ্যমে। এটা কতটুকু মানবিক? পালক কারা আসে? যারা অসহায়, যাদের মাতা পিতা নাই কিংবা থাকলে তাদের ভরন পোষন করেন না কিংবা করতে পারেন না। এমন অসহায় শিশুরাই তো পালক আসে নাকি? শুধুমাত্র নবির কু স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে তিনি সকল পালক সন্তানদের বঞ্চিত করলেন। কুরান যদি সত্যিই সৃষ্টিকর্তার বাণী হতো, তাহলে বলা উচিত ছিলে যে, হে মানবজাতি, তোমরা পালক সন্তানদের নিজ সন্তানদের মত দেখবে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করবে। তাই কি উচিত ছিল না?
**Quran 33:50 | http://quran.com/33/50
“হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
-- সেই সময় নিজের নিকটস্থ আত্মীয় দের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করা কে ভাল চোখে দেখা হতো না । তাই ফুফাতো বোন জয়নব কে বিবাহ করার নিন্দা যারা করছিল , এই আয়াতের দ্বারা তাদের নির্দেশ দেওয়া হলো যে ,জয়নব মহম্মদের ফুফাতো বোন হলেও , মহম্মদের বিবাহের জন্য বৈধ । যেহেতু আল্লাহ পারমিশান দিয়েছেন, তাই এই নিয়ে কারো কিছু বলার থাকতে পারে না।
**Quran 33:52 | http://quran.com/33/52
“এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন।”
-- লোকনিন্দা বন্ধ করার শেষ উপায় হিসেবে তিনি আর বিয়ে করবেন না, এই মর্মে আয়াত তৈরি করে নেন। আয়াতটি ভালো করে লক্ষ্য করুন, এখানে নারীর রুপলাবন্যের প্রতি নবির মুগ্ধতার কথা প্রমানিত হচ্ছে এবং সেই সাথে দাসীচর্চার পথ পরিস্কার করা হচ্ছে। {এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে, সুরা আহযাবের এই আয়াত নাযিল হয় ৫ম হিজরিতে, ৬২৭ খ্রিষ্টাব্দে। কিন্তু এই আয়াত নাযিলের পরও মুহাম্মদ জুওয়ারিয়া, মায়মুনা, সাফিয়া, রামলাসহ একাধিক বিয়ে করেন যা স্পষ্ট কুরানের আয়াতের লংঘন! সেক্স এমন একটা বিষয়, নবি নিজেই এক্ষেত্রে কুরানের আদেশ মানতে পারেন না! হাস্যকর।
৮। রায়হানা বিনতে জায়েদঃ
রায়হানা ছিলেন বনু নাদির গোত্রের মেয়ে। তার বিয়ে হয়েছিল বনু কুরাইযা গোত্রে। মুহাম্মদ যখন তাকে আশ্রয় দেন তখন রায়হানা ছিলেন বিধবা, গরীব ও অসহায়। মনে হচ্ছে এই একটি খুবই ভালো কাজ করেছেন নবিজী। সুবহানাল্লাহ!
রায়হানার সাথে বনু কুরাইযা গোত্রের গনহত্যার ইতিহাস জড়িত। নবি বনু কুরাইযা নামক ইহুদি গোত্রকে পরাজিত করে তাদের মধ্যে সকল সাবালক পুরুষদের শীরচ্ছেদ করে ইতিহাসের ঘৃন্যতম গনহত্যা সংগঠিত করেছিলেন। আর সকল শিশু ও মহিলাদের বানিয়েছিলেন দাসদাসী এবং সকল সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন।
কুরানে এ সম্পর্কে নবী বলেন,
[Quran 33:26-27 | http://quran.com/33/26-27 ]
“কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি নিক্ষেপ করলেন। ফলে তোমরা একদলকে হত্যা করছ এবং একদলকে বন্দী করছ। তিনি তোমাদেরকে তাদের ভূমির, ঘর-বাড়ীর, ধন-সম্পদের এবং এমন এক ভূ-খন্ডের মালিক করে দিয়েছেন, যেখানে তোমরা অভিযান করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান।”
এ সম্পর্কিত বহু হাদিস রয়েছে। আমরা কিছু হাদিস দেখে আসি।
[Bukhari Vol. 5, Book 58, Hadith 148, http://sunnah.com/bukhari/63/30 ]
[See also: Bukhari 4:52:280 | Bukhari 8:74:278 | Muslim 19:4368]
“Narrated Abu-Sa'id al-Khudri: When the tribe of Banu Qurayza was ready to accept Sad's judgment, Allah's Apostle sent for Sad who was near to him. Sad came, riding a donkey and when he came near, Allah's Apostle said (to the Ansar), "Stand up for your leader." Then Sad came and sat beside Allah's Apostle who said to him. "These people are ready to accept your judgment." Sad said, "I give the judgment that their warriors should be killed and their children and women should be taken as prisoners." The Prophet then remarked, "O Sad! You have judged amongst them with (or similar to) the judgment of the King Allah.”
[Bukhari, Vol. 5, Book 59, Hadith 362 | http://sunnah.com/bukhari/64/77 ]
“Narrated Abd-Allah ibn Umar: Banu Nadir and Banu Qurayza fought (against the Prophet violating their peace treaty), so the Prophet exiled Bani An-Nadir and allowed Bani Quraiza to remain at their places (in Medina) taking nothing from them till they fought against the Prophet again). He then killed their men and distributed their women, children and property among the Muslims, but some of them came to the Prophet and he granted them safety, and they embraced Islam. He exiled all the Jews from Medina. They were the Jews of Banu Qaynuqa, the tribe of Abdullah bin Salam and the Jews of Bani Haritha and all the other Jews of Medina”
তাদের গনহত্যা কতটা নির্মম ছিল তা দেখুন নিচের হাদিসে।
[Abu Dawud, Book 14, Hadith 2665 | http://sunnah.com/abudawud/15/195 ]
Narrated Aisha:
“No woman of Banu Qurayzah was killed except one. She was with me, talking and laughing on her back and belly (extremely), while the Messenger of Allah was killing her people with the swords. Suddenly a man called her name: Where is so-and-so? She said: I I asked: What is the matter with you? She said: I did a new act. She said: The man took her and beheaded her. She said: I will not forget that she was laughing extremely although she knew that she would be killed.”
-- গনহত্যার নির্মমতা দেখুন। উক্ত গনহত্যার সময় সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে হত্যা করা হয়। সকল মহিলাদের দাসী বানানো হয়, তবে একজন মাত্র মহিলাকে হত্যা করা হয়েছিল। নবি সেই মহিলার দের দাসী বানানো হয়, তবে একজন মাত্র মহিলাকে হত্যা করা হয়েছিল। নবি সেই মহিলার সামনেই তার পরিবারের লোকজনকে শীরচ্ছেদ করে চলছিলেন, এমন মুহুর্তে যে কারোরই পাগলের মত আচরন করা স্বাভাবিক। মহিলাটি এসময় জোরে জোরে হাসা শুরু করল। এমন হাসাহাসির অপরাধে তাকেও হত্যা করা হয়েছিল।
যাহোক, বনু কুরাইযার সেই গনহত্যায় রায়হানার স্বামীকে খুন করা হয়। তাই রায়হানা বিধবা হয়েছিল। রায়হানাদের সকল সম্পত্তি মুসলিমরা দখল করে নেয়, তাই রায়হানা গরীব ও অসহায় হয়ে গিয়েছিল। এমন একটি বিধবা গরীব মেয়েকে আশ্রয় দিয়ে দিলের নবি বহুত সওয়াবের কাজ করেছিলেন। নবি তাকে যৌনদাসী হিসেবে রেখেছিলেন, তাকে বিয়ে করেন নি। তবে, এ বিষয়ে দ্বিমত আছে, কতক ইসলামি পন্ডিত দাবি করেন নবি তাকে বিয়ে করেছিলেন।
৯। জুওয়ারিয়া বিনতে হারিথঃ
জুওয়ারিয়া ছিলেন অত্যন্ত সুন্দরী এবং বনু মুস্তালিক গোত্রের প্রধান আল হারিথ এর কন্যা। এই মেয়েটির ঘটনাও প্রায় রায়হানার অনুরুপ। নবির সাথে বিয়ের সময় এই মেয়েটিও ছিল বিধবা, কারন ঐ একই। যুদ্ধে মুসলিমরা তার স্বামীকে হত্যা করে, সে বিধবা হয় [Bewley/Saad 8:83]। এরপর সকল নারীদের মত করে সেও যুদ্ধবন্দী দাসীতে পরিণত হয়। সে নবির কাছে গিয়ে গোত্রপ্রধানের কন্যা হওয়ার সুবাধে তার মুক্তি দাবি করে। কিন্তু নবি তা প্রত্যাখান করে। যুদ্ধের সময় হারিথ পালিয়ে বেচে যান। পরে তিনি তার মেয়ে জুওয়ারিয়াকে মুক্ত করতে নবির কাছে মুক্তিপন দিতে চান [Ibn Hisham note 739]। কিন্তু এতেও রাজি হলেন না নবি মুহাম্মদ। নবি মুহাম্মদ বরং জুওয়ারিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন [Guillaume/Ishaq 629; Ibn Hisham note 918; Al-Tabari, Vol. 39, pp. 182-183.]। অসহায় জুওয়ারিয়া বাধ্য হয়ে বিয়েতে মত দিলেন। তাদের বিয়ের সময় জুওয়ারিয়ার বয়স ছিল ২০ বছর। এভাবেই অসহায় বিধবাদের বিপদের সাগর থেকে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে থাকেন ঘরে ইতোমধ্যে অনেকগুলো বউ থাকা নবি মুহাম্মদ।
১০। রামলা বিনতে আবু সুফিয়ান (উম্মে হাবিবা) :
রামলা ছিলেন মুহাম্মদের শত্রু আবু সুফিয়ানের কন্যা। রামলা ও তার স্বামী ওবায়দুল্লাহ নবি মক্কায় অবস্থানকালেই ইসলাম গ্রহন করেছিলেন। পরে তারা আবিসিনিয়ায় চলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে বসবাসের এক পর্যায়ে রামলার স্বামী ইসলাম ত্যাগ করে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহন করে। অবশ্য এর কিছুদি পর সে মারা যায়। রামলা বিধবা হয়ে পরে। মুহাম্মদ তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে সে রাজি হয়, ফলস্রুতিতে তাদের বিয়ে হয়, তখন রামলার বয়স ছিল ত্রিশোর্ধ। এই নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কেননা, রামলার বাবা ছিলেন কুরাইশদের নেতা আবু সুফিয়ান। নবি তখন মদিনায় অবস্থানরত এবং তিনি কুরাইশদের সাথে সন্ধি করার উদ্দেশ্যে এই বিয়ে করে বলে ধারনা করা হয়। তাছাড়া আবিসিনিয়ায় তখন অনেক মুসলিমই রামলাকে বিয়ে করার জন্যে আগ্রহী ছিল।
(...চলবে...)
নবী মুহাম্মদের বহুবিবাহ ও যৌক্তিকতা
নাস্তিকদের কটুক্তির ঠ্যাংভাঙ্গা জবাব (পর্ব-৩ । শেষ পর্ব)
==============================
(... ২য় পর্বের পর থেকে...)
১১। সাফিয়া বিনতে হুয়াইঃ
সাফিয়া, আরেকটি দুর্ভাগা মেয়ের নাম। খায়বার দখলের পর সাফিয়ার বাবা স্বামীসহ সকল আত্মীয়-স্বজনকে হত্যা করা হয়। এরপর অন্যান্য সব নারীর সাথে সাফিয়াও যুদ্ধবন্দী দাসী হিসেবে মুসলিমদের কাছে আসে। নবি তার অনুসারীদের আদেশ দেন দাসীদের পছন্দ অনুযায়ী ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে। দাসী বন্টন শেষে সাফিয়া পরেছিল দাহিয়া নামে এক সাধারন মুসলিমের ভাগে। কিন্তু সাফিয়া অনেক সুন্দরী ছিলেন এবং কিছু সাহাবী তাকে দেখে বিস্মিত হলেন। তাছাড়া সে ছিল বনু নাদির গোত্রপ্রধানের কন্যা। তারা ব্যাপারটি মুহাম্মদকে জানান এবং মুহাম্মদ দাহিকে বিরত রেখে সাফিয়াকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন এবং বিয়ে করেন। তখন সাফিয়ার বয়স ছিল ১৬ বছর। যাহোক, নবি আবারও একই কায়দায় স্বামী হত্যা করে সাফিয়াকে বিধবা করলেন এবং বিয়ে করে নিলেন। কারও বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা না যে সদ্য বাবা আত্মীয় স্বামী সব হারা একটা মেয়ে তখনই শত্রুকে বিয়ে করে তার বিছানায় যেতে কি কষ্ট হয়েছিল। মুমিন বান্দাদের হাতে বন্দী মেয়েটির রাজি না হয়েই কি কোন উপায় ছিল?
কথা বাড়াবো না, এ ঘটনা সম্পর্কিত কিছু হাদিস জেনে আসি।
[Bukhari, Vol. 1, Book 8, Hadith 367 | http://sunnah.com/bukhari/8/23 ]
“…We conquered Khaibar, took the captives, and the booty was collected. Dihya came and said, 'O Allah's Prophet! Give me a slave girl from the captives.' The Prophet said, 'Go and take any slave girl.' He took Safiya bint Huyai. A man came to the Prophet and said, 'O Allah's Messenger ! You gave Safiya bint Huyai to Dihya and she is the chief mistress of the tribes of Quraidha and An-Nadir and she befits none but you.' So the Prophet said, 'Bring him along with her.' So Dihya came with her and when the Prophet saw her, he said to Dihya, 'Take any slave girl other than her from the captives.' Anas added: The Prophet then manumitted her and married her…”
[Bukhari, Vol. 3, Book 34, Hadith 437 | http://sunnah.com/bukhari/34/181 ]
“The Prophet came to Khaibar and when Allah made him victorious and he conquered the town by breaking the enemy's defense, the beauty of Safiya bint Huyai bin Akhtab was mentioned to him and her husband had been killed while she was a bride. Allah's Messenger selected her for himself and he set out in her company till he reached Sadd-ar-Rawha' where her menses were over and he married her…”
এ সম্পর্কিত আরও বহু হাদিস রয়েছে। পোস্ট ছোট রাখার স্বার্থে আর উল্লেখ করা হলো না।
১২। মায়মুনা বিনতে হারিথঃ
মায়মুনার স্বামী মারা যাওয়ার পর সে তার বোনের আশ্রয়ে ছিল। তার দুলাভাই ছিলেন মুহাম্মদের চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মোতালিব। সুতরাং, মায়মুনা ছিল নবির চাচীর বোন। মুহাম্মদের চাচা আব্বাস ছিলেন অন্যতম একজন ধনী ব্যক্তি। তাদের কোন অভাব থাকার প্রশ্নই আসে না। এদিকে, নবি তখন মক্কাবাসীর সাথে চুক্তি করে মক্কায় প্রবেশাধীকার পায় এবং সে উমরাহ পালনের জন্যে মক্কায় আসে। মায়মুনা এসময় নবিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং নবি তাতে সম্মত হলে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মায়মুনার বয়স ছিল ৩৫ বছর। লক্ষ্য করুন, মায়মুনা বিধবা ছিল, কিন্তু সে দরিদ্রতার মধ্যে ছিল না। নবি তাকে নিজে বিয়ে না করে অন্য কাউকে বিয়ে করার পরামর্শ দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে নবি নিজেই ঘরে অনেকগুলো বউ রেখে একেও বিয়ে করে নিলেন। আরেকটি মেয়েকে উদ্ধার করলেন দিলের নবী!
১৩। মারিয়া আল কিবতিয়াঃ
নবিজীর যৌনদাসী ছিলেন তিনি। এই দাসী মারিয়ার গর্ভে মুহাম্মদের পুত্র সন্তান ইব্রাহিমের জন্ম হয়েছিল যে কিছুদিন পরেই মারা যায়। মিশরের বাদশাহ মুকাওকিস উপহার হিসেবে নবির জন্যে এই দাসীকে প্রেরন করেন। নবি তাকে গ্রহন করেন এবং হাফসার দাসী হিসেবে নিয়োগ দেন। তাকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা আছে।
একদিন নবী হাফসার ঘরে যান। হাফসাকে বললেন যে তার বাবা উমর তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। হাফসা তার বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলে নবি দাসী মারিয়াকে নিয়ে হাফসার বিছানায় যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে যান। হাফসা যখন বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখলেন যে তার বাবা তাকে ডাকেনি, তখনই হাফসা বুঝতে পেরেছেন যে নবি তাকে মিথ্যা বলেছে। সে তাৎক্ষনিক ফিরে আসে। ফিরে এসে নবী ও মারিয়াকে যৌনকর্মে লিপ্ত দেখে উন্মত্ত হয়ে উঠেন।
জারীর তাবারীর তাফসীর অনুযায়ী, এসময় হাফসা চিৎকার করতে করতে বলতে থাকেন, “আমার বিছানায় এ কাজ কারবার?” উত্তরে নবি বলেন, “আল্লাহর কসম, আমি তাকে আমার উপর হারাম করে নিলাম”।
চলুন, এ ঘটনাটি সম্পর্কে হাদিস এর বর্ননা দেখে আসি।
[Sunan an-Nasa'I , Vol. 4, Book 36, Hadith 3411 | http://sunnah.com/nasai/36/21 ]
“It was narrated from Anas, that the Messenger of Allah had a female slave with whom he had intercourse, but 'Aishah and Hafsah would not leave him alone until he said that she was forbidden for him. Then Allah, the Mighty and Sublime, revealed:
"O Prophet! Why do you forbid (for yourself) that which Allah has allowed to you.' until the end of the Verse.”
(অনেকেই মারিয়াকে নবীর বউ বলে দাবি করেন। এই হাদিস দ্বারা এটাও প্রমানিত হয় যে মারিয়াকে নবি বিয়ে করেন নি। সে শুধুই যৌনদাসী ছিল।)
হ্যা, নবি উক্ত পরিস্থিতিতে হাফসাকে শান্ত করতে বলেছিলেন যে, দাসী মারিয়াকে তার উপর হারাম করে নিলেন। সেই সাথে এই ঘটনার কথা অন্য কাউকে বলতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে আফসোফ হচ্ছিল মারিয়ার জন্যে এবং তাকে হারাতে চাইলেন না নবি। কিন্তু এই কথা হাফসাকে বলার সাহসও পাচ্ছিলেন না। সমস্যা কি, কুরান তো আছেই! তিনি এসময় দাসী মারিয়ার সাথে তার যৌনকাজ হালাল করার জন্যে কুরানে আয়াত পয়দা করলেন। দেখুন নিচে।
[Quran 66:1-2 | http://quran.com/66/1-2 ]
“হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়। আল্লাহ তোমাদের জন্যে কসম থেকে অব্যহতি লাভের উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাদের মালিক। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।”
ওদিকে হাফসা ঘটনা গোপন রাখতে পারলেন না নবির নিষেধ সত্যেও। তিনি এই ঘটনা আয়েশার কাছে বলে দিলেন। একই সাথে অন্য স্ত্রীরাও ব্যাপারটা জেনে গেলো। সকল স্ত্রীরা নবির সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিল। তখনই নবি ক্ষীপ্ত হয়ে গেলেন স্ত্রীদের উপর এবং শপথ নিলেন যে এক মাস কোন স্ত্রীদের কাছে যাবেন না শুধু দাসী মারিয়ার সাথে থাকবেন। সব স্ত্রীদের একই সাথে তালাক দিতেও চেয়েছিলেন (কিন্তু শেষ পর্যন্ত তালাক দেয়া থেকে বিরত ছিলেন) । ঘটনার সত্যতা জানতে নিচের হাদিসটি দেখুন। অনেক বড় হাদিস, আমি মুল কিছু অংশ তুলে ধরছি, লিঙ্কে গিয়ে পুরো হাদিসটি পড়ে নিন।
[Bukhari, Vol. 3, Book 43, Hadith 648 | http://sunnah.com/bukhari/46/29 ]
“…Who were the two ladies from among the wives of the Prophet to whom Allah said: 'If you two return in repentance (66.4)? He said, "I am astonished at your question, O Ibn `Abbas. They were Aisha and Hafsa."…
…The Prophet did not go to his wives because of the secret which Hafsa had disclosed to `Aisha, and he said that he would not go to his wives for one month as he was angry with them when Allah admonished him (for his oath that he would not approach Maria). When twenty-nine days had passed, the Prophet went to Aisha first of all…”
হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে উক্ত ঘটনাটি নবির নিষেধ সত্যেও হাফসা তা আয়েশাকে বলে দিয়েছিল। এ সম্পর্কে কুরান এও আয়াত পয়দা হয়েছিল। চলুন দেখে আসি।
[Quran 66:3-4 | http://quran.com/66/3-4 ]
“যখন নবী তাঁর একজন স্ত্রীর কাছে একটি কথা গোপনে বললেন, অতঃপর স্ত্রী যখন তা বলে দিল এবং আল্লাহ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নবী সে বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। নবী যখন তা স্ত্রীকে বললেন, তখন স্ত্রী বললেনঃ কে আপনাকে এ সম্পর্কে অবহিত করল? নবী বললেন,ঃ যিনি সর্বজ্ঞ, ওয়াকিফহাল, তিনি আমাকে অবহিত করেছেন। তোমাদের অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বলে যদি তোমরা উভয়ে তওবা কর, তবে ভাল কথা। আর যদি নবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর, তবে জেনে রেখ আল্লাহ জিবরাঈল এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনগণ তাঁর সহায়। উপরন্তুত ফেরেশতাগণও তাঁর সাহায্যকারী।”
এভাবে নবি কুরানের আয়াত দ্বারা আয়েশা ও হাফসাকে গোপন কথা চালাচালি করার জন্যে তওবা করতে তাগিদ দিলেন।
ও আচ্ছা, নবি যে তার সকল স্ত্রীদের তালাক দিতে চেয়েছিলেন, এ বিষয়ে স্ত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কুরানে আয়াতও পয়দা করেছিলেন নবি মুহাম্মদ। চলুন দেখে আসি।
[Quran 66:5 | http://quran.com/66/5 ]
“যদি নবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন, তবে সম্ভবতঃ তাঁর পালনকর্তা তাঁকে পরিবর্তে দিবেন তোমাদের চাইতে উত্তম স্ত্রী, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, নামাযী তওবাকারিণী, এবাদতকারিণী, রোযাদার, অকুমারী ও কুমারী।”
দেখুন, নিজের অপকর্ম ঢাকতে কি সুন্দর করে কুরানে আয়াত পয়দা করতেন আমাদের দিলের নবি। কুরানটাকে ব্যবহার করতেন নিজের প্রয়োজন মত, তার স্বার্থ অনুযায়ী কুরানে আয়াত হাজির করতেন।
***এছাড়াও নবির আরও স্ত্রী ছিলেন যাদের তিনি দ্রুত তালাক দিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সাথে এদের সম্পর্কে খুব একটা তথ্য পাওয়া যায় না এবং সত্যতা নিয়ে স্কলারদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। চলুন, তাদের নামগুলোও দেখে আসি।
১৪। মুলায়কা বিনতে কায়াবঃ
কয়েক সপ্তাহ পরেই নবি এই মেয়েটিকে তালাক দিয়ে দিয়েছিলেন। [Al-Tabari, Vol. 8, p. 187; Al-Tabari, Vol. 39, p. 165; Bewley/Saad 8:106.]
১৫। ফাতিমা বিনতে আল দাহাকঃ
এই মেয়েটিরও একই অবস্থা। কয়েক সপ্তাহ পরেই তালাক পেয়ে যান নবির কাছ থেকে। [Al-Tabari, Vol. 9, p. 138; Al-Tabari, Vol. 39, pp. 186-188; Bewley/Saad 8:100-101.]
১৬। আসমা বিনতে আল নুমানঃ
ইয়েমেনের রাজকন্যা ছিলেন এবং অত্যন্ত অভিজাত জীবনযাপনে অভ্যস্থ ছিলেন নবির এই বিবি। [Al-Tabari, Vol. 39, p. 189. Her tribe, the Kindah, were the rulers of Yemen]
১৭। আমরাহ বিনতে ইয়াযিদঃ
বিয়ের প্রথম দিনেই তালাক পেয়ে যান এই মেয়ে। [Al-Tabari, Vol. 39, p. 188; Bewley/Saad 8:101.]
১৮। তুকানাহ আল কুরাযিয়াহঃ
এই মেয়েটি যুদ্ধবন্দি হয়ে পরে এবং নবিকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। [Al-Majlisi, Hayat al-Qulub vol. 2 chapter 52. Translation by Rizvi, S. A. H. (2010). Life of the Heart. Qum, Iran: Ansariyan Publications]
নবির জীবনি পড়লে আরও কিছু স্ত্রী/দাসীর নাম চলে আসে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের অভাবে আর কারও কথা তুলে ধরা হলো না।