Sunday, June 4, 2017

মানপত্র,মানপত্রের নমুনা,মানপত্র লিখন,বদলির আবেদন,চাকরির আবেদন পত্র,চাকরির আবেদন ।

মানপত্র


 
 
 
 
 
 
 
 
 
কাঙ্ক্ষিত কিছু পেতে আমাদের প্রায়ই আবেদনপত্র লিখতে হয়। আবেদনপত্রের উপস্থাপনা স্বভাবতই হতে হবে নমনীয়। এর ভাষা হতে হবে প্রাঞ্জল বা সহজবোধ্য। বাহুল্য কথা লিখে আবেদনপত্রটি দীর্ঘ করা মোটেও ঠিক নয় । আবেদনপত্রটি যাতে এক পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করা যায় সে চেষ্টা করতে হবে। তবে প্রয়োজনে একাধিক পৃষ্ঠা ব্যবহার করা যাবে।  আবেদনপত্রে সরাসরি কোন প্রশ্ন করা যাবেনা । তবে এমনভাবে লেখা যাবে যেমন- "কেন এমন করা হল তা আমার বোধগম্য নয়"।

আজকাল আবেদনপত্র দুটি স্টাইলে লেখা হচ্ছে। একটি স্টাইল হচ্ছে আবেদনের সবগুলো প্যারাই বাম দিক থেকে শুরু করা হয়। যেমন- 

তারিখ......................................

বরাবর
জেলা প্রশাসক
গাজীপুর।

বিষয়ঃ ............................................................

জনাব,
........................................................................
.......................................................................
......................................................................
........................................................................

অতএব ...............................

নিবেদক
..........................
.........................

সংযুক্তিঃ ...................


অপর স্টাইলটি হচ্ছে প্রতি প্যারায় লেফ্ট ইনডেন্ট ব্যবহার করা। যেমন-
বরাবর
         জেলা প্রশাসক
         গাজীপুর।

বিষয়ঃ ............................................................

জনাব,
          ..............................................................
........................................................................
........................................................................
.......................................................................

          অতএব ...............................


                                                    নিবেদক
তারিখ- 
                                             ......................

বর্তমানে দুটি স্টাইলেরই প্রচলন থাকলেও প্রথমোক্ত স্টাইলটির প্রতিই বেশি আকৃষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে।
বিষয়বস্তু বিবেচনায় আবেদনপত্রের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। এই  পোস্ট-এ আবেদন নিয়ে আর আলোচনা করছি না। তবে সচরাচর যে ধরণের আবেদনপত্র লেখা হয়ে থাকে তা নিয়ে এ ব্লগের অন্যান্য পোস্ট-এ আলোচনা করছি।

মানপত্রের নমুনা

মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ........................... এর আগমনে ...................... বিদ্যালয়ের পক্ষ  হতে-

প্রাণঢালা অভিনন্দন  


হে মহান অতিথি,
    ষড়ঋতুর এই বাংলাদেশে শরৎ বিদায়ের পর এখন সোনাঝরা হেমন্তের গৌরবময় উপস্থিতি। গ্রাম-বাংলার প্রতিটি ঘর আজ নবান্ন উৎসবে মুখর। এমনি এক স্বর্ণালি  প্রহরে আমরা যখন একান্ত কোন আপনজনের আগমন অপেক্ষায়  প্রহর গুণছিলাম; তেমনি এক শুভক্ষণে  শত ব্যস্ততাকে উপেক্ষা  করে আপনি আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছেন। আমরা যেন কতকাল ধরে এমনি একটি মুহূর্তের প্রতীক্ষায়  ছিলাম। তাইতো আপনার আগমনে আমাদের মাঝে আজ খুশির বান ডেকেছে। আমাদের মন আজ আনন্দে উদ্বেলিত। বৃক্ষশাখে  বিহগের কণ্ঠে যেন আজ শুধু আপনারই আগমনী গান। সোনাঝরা বিকেলের এই মায়াবী ক্ষণে আপনি আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন গ্রহণ করুন। 
হে বিজয়ী বীর,
    জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সফল অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আপনি যে বিজয় অর্জন করেছেন, তা শুধু আপনার নয়; এ বিজয় লাখো জনতার বিজয়। একজন সুযোগ্য সমাজসেবক হিসেবে এই অভিষেক শুধু আপনাকে নয় আমাদেরকেও করেছে গৌরবান্বিত। আপনাকে সংসদ সদস্য হিসেবে পেয়ে আমরা আজ আজ এলাকার উন্নয়নের স্বপ্নে বিভোর। এই এলাকার সকল দৈন্য দূর করতে উন্নয়নের আলোকবর্তিকা হিসেবে মহান আল্লাহতায়ালা যেন আপনাকেই মনোনীত করেছেন।
হে আপন জন,
     মানুষ সুখে-দুখে আপনজনকেই স্মরণ করে। আপনি হলেন আমাদের পরম আপনজন। তাইতো আমাদের কিছু দুঃখ দৈন্যের কথা আপনাকে জানাতে ইচ্ছে করছে। এ বিদ্যালয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী দূরবর্তী গ্রামের বাসিন্দা। নদী প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদেরকে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া নদী পারাপারে সর্বসাধারণেরও ভোগান্তির শেষ নেই। আমরা আশা করি আপনার শৈল্পিক হাতের ছোঁয়ায় শ্রীঘ্রই ............... নদীর ওপর একটি সেতু নির্মিত হবে। এর পরও আমাদের আরও কিছু দীনতা রয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণীকক্ষের  স্থান সঙ্কট ক্রমেই প্রকট আমার ধারণ করছে। তাই একটি নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ খুবই জরুরি। আজকের এই দিনে আপনার কাছে আমাদের দাবি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ বিদ্যালয়ে শীঘ্র একটি দ্বিতল একাডেমিক ভবন নির্মাণের ব্যাপারে আপনি সহযোগিতা করবেন।

হে মহানুভব,
    নিতান্ত প্রয়োজনেই আপনাকে নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে আমাদের মাঝে এসে আপনি যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন তা আমরা আজীবন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবো। আমরা আশা করবো, আপনার শ্রম, আপনার আন্তরিকতা, আপনার কর্ম ................এলাকার উন্নয়নে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করবে। সেই সাথে আপনি বার বার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। 

    পরিশেষে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আপনার সুস্থ, সুন্দর দীর্ঘায়ু কামনা করি। 


                                                                আপনার গুণমুগ্ধ
তারিখঃ 
                                                        ................... বিদ্যালয়ের
                                      শিক্ষক মণ্ডলি, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা        

মানপত্র লিখন

কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আগমনে তাকে যথোপযুক্ত সম্মান জানাতে স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মানপত্র পাঠ করা হয়। অধিকাংশ মানপত্রের মাধ্যমে আগত অতিথিকে শ্রদ্ধা আর ভালবাসার রসালো অভিব্যক্তি দ্বারা সিক্ত করা হয়। সেইসাথে গুরুত্বপূর্ণ অতিথির কাছে নিজেদের দৈন্য তুলে ধরে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করা হয়। তাই মানপত্রটি হতে হয়ে হয় যথেষ্ট মানসম্মত। মানপত্রের ভাষা হতে হবে প্রাঞ্জল। এখানে কোন দুর্বোধ্য শব্দ কিংবা পংক্তি  সন্নিবেশ করা মোটেও ঠিক নয়। মানপত্রের শীর্ষে অতিথির নাম পদবী উল্লেখ করতে হয়। যেমন- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদের সরকারের ........................ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ................................ মহোদয়ের শুভাগমন উপলক্ষে মিতালির বন্ধন সমাজকল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে                                                                        শ্রদ্ধাঞ্জলি     /       অভিনন্দন
মানপত্রের প্রথম অনুচ্ছেদে কিছু ভূমিকাসহ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন দিয়ে অতিথিকে বরণ করা হয়। প্রয়োজনে কোন লেখকের কবিতা বা আবেগময় লেখার উদ্বৃতি তুলে ধরা যায়।  এই অনুচ্ছেদটিতে বিভিন্ন শব্দালঙ্কার প্রয়োগ করে আবেগানুভূতি প্রকাশ করা যায়। সময় বা ঋতু অনুযায়ী কিছু প্রাকৃতিক বর্ণনা তুলে ধরলে লেখাটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। যেমন- ‘‘সারাদেশে এখন সোনাঝরা হেমন্তের গৌরবময় উপস্থিতি। গ্রাম-বাংলার সর্বত্রই নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধ। চারদিক তাই নবান্ন উৎসবে মুখর। অঘ্রাণের এমনি এক মায়াবী লগ্নে আমরা যখন কাঙ্ক্ষিত  প্রিয়জনকে কাছে পাওয়ার একান্ত বাসনায় অপেক্ষার প্রহর গুণছিলাম; ঠিক তখনি এক অনাবিল আনন্দের ঊর্মীদোলায় আমাদের আন্দোলিত করে এ ক্ষুদ্র  প্রতিষ্ঠানে আপনার শুভাগমন। আপনার আগমনে বনে বনে যেন আজ পুষ্পের  বাহুল্য; সেই সাথে ভ্রমরের গুঞ্জনধ্বনি যেন আপনার আগমন উল্লাসেই মুখর। আপনাকে কাছে পেয়ে আমরা আজ ধন্য। আপনি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন গ্রহণ করুন।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদেও কথার ফুলঝুরিতে অতিথির গুণকীর্তন করে তাকে আরও সিক্ত করে দেওয়া যেতে পারে। যদি অতিথির দ্বারা এলাকার বা দেশের উল্লেখ্যযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হয়ে থাকে তবে সে সম্পর্কে ইতিবাচক আলোচনা ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ থাকতে পারে এই অনুচ্ছেদে।
তৃতীয় অনুচ্ছেদে স্বাগতিক প্রতিষ্ঠান বা এলাকার বিভিন্ন দৈন্যের কথা বা সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রতিকারের জন্য দাবি বা অনুরোধ জানানো যেতে পারে।
চতুর্থ অনুচ্ছেদে অতিথিকে কষ্ট স্বীকার করে এখানে আসায় তার মহানুভবতা নিয়ে কিছু বলা যায়, যেমন- ‘‘শত ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে আপনি আমাদের মাঝে এসে যে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করি এভাবেই বার বার যেন আপনি আমাদের মাঝে এসে আমাদের ধন্য করেন। ’’
উপসংহারে অতিথির জীবনের সুস্থতা ও দীর্ঘজীবনের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা। যেমন- ‘‘সৃষ্টিকর্তার কাছের আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন আপনাকে সুস্থ, সবল, দীর্ঘ জীবন দান করেন। ’’তারিখ-আপনার গুণমুগ্ধ................................

বদলির আবেদন

বদলির আবেদন
যারা সরকারি বা অন্য কোন সংস্থায় চাকরি করেন তাদের মধ্যে অনেকেরই স্থায়ী বাসস্থান থেকে চাকরিস্থলের দূরত্বের কারণে প্রিয়জনের সাথে ঠিকমত দেখা সাক্ষাত ও দেখাশুনা করা সম্ভব হয় না। তাই যথাসম্ভব কাছাকাছি স্থানে বদলি হওয়ার চেষ্টা করতে হয়। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপরে কাছে বদলির জন্য আবেদন করতে হয়। বদলির আবেদনপত্রে যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করে বদলি চাইতে হয়। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বেশিরভাগই দেখা যায় নিজ উপজেলা এমনকি নিজ জেলাতেও পোস্টিং দেওয়ার বিধান নেই। এ ক্ষেত্রে  কাছাকাছি জেলা বা উপজেলায় বদলির জন্য আবেদন করতে হয়। ধরা যাক, জনাব রফিকুল ইসলাম সহকারী উপজেলা  শিক্ষা অফিসার পদে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলায় কর্মরত আছেন। তার স্থায়ী বাসস্থান ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায়। বিভাগীয় নিয়ম হচ্ছে- তাকে কিছুতেই নিজ উপজেলায় পদায়ন করা যাবে না। তাই তাকে তার নিজ উপজেলার কাছাকাছি কোন উপজেলায় পদায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। অবশ্য যদি পদ শূন্য থাকে। এবার দেখে নিন আবেদনপত্রের একটি নমুনাঃ

তারিখ ...................

বরাবর
বিভাগীয় উপপরিচালক
প্রথামিক শিক্ষা
ঢাকা বিভাগ, ঢাকা।

বিষয়ঃ বদলীর জন্য আবেদন। 

জনাব,
যথাবিহিত সম্মান পূর্বক সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি সহকারী উপজেলা  শিক্ষা অফিসার পদে কিশোরগঞ্জ জেলাধীন বাজিতপুর উপজেলায় কর্মরত আছি। আমার স্থায়ী বাসস্থান ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায়। আমার বাড়িতে বৃদ্ধ পিতামাতা, স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। পিতামাতা প্রায়ই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভোগেন। এক ছেলে ও এক মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। আমার বাড়ি হতে কর্মস্থলের অধিক দূরত্বের কারণে পিতামাতা ও ছেলেমেয়ের দেখাশুনা করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া অধিক দূরতের কারণে যাতাযাতও বেশ ব্যয়সাধ্য, যা আমার মত স্বল্প বেতনভোগীর পক্ষে  কষ্টকর। বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম, আমার নিজ উপজেলার কাছাকাছি ফুলপুর উপজেলায় সহকারী উপজেলা  শিক্ষা অফিসার এর একটি পদ শূন্য হয়েছে। এমতাবস্থায় আমাকে উক্ত শূন্য পদে বদলির সদয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
অতএব, মহোদয়ের কাছে আকুল প্রার্থনা, আমার সমস্যাটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে আমাকে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায় সহকারী উপজেলা  শিক্ষা অফিসারের শূন্য পদে বদলির ব্যবস্থা করে বাধিত করতে মর্জি হয়। 

বিনীত নিবেদক

(মো. রফিকুল ইসলাম)
সহকারী উপজেলা  শিক্ষা অফিসার
বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ।

চাকরির আবেদনপত্রের নমুনা (জীবন বৃত্তান্তসহ)

তারিখঃ ১০.০৮.২০১৪

বরাবর
প্রকল্প পরিচালক
সেকেন্ডারি এডুকেশন সেকটর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট 
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর
আব্দুল গনি রোড, ঢাকা-১০০০।

বিষয়ঃ ‘সহকারী পরিদর্শক’ পদে নিয়োগের জন্য আবেদন।

জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে, গত ০৫/০৮/২০১৪ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম, আপনার অধীনে ‘সহকারী পরিদর্শক’ পদে কিছু সংখ্যক লোক নিয়োগ করা হবে। আমি উক্ত পদে নিয়োগ লাভে একজন আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে মহোদয়ের সদয় বিবেচনার জন্য নিচে আমার যাবতীয় তথ্য সন্নিবেশ করলামঃ

নাম                      : ফাহিম ফেরদৌস
পিতার নাম          : আনোয়ার হোসেন মণ্ডল 
মাতার নাম          : সালমা আকতার
স্থায়ী ঠিকানা       : গ্রাম- শিমুলতলী, ডাকঘর- পাঁচগাঁও
                              উপজেলা- শাহজাদপুর, জেলা- পাবনা।
বর্তমান ঠিকানা  : গ্রাম- শিমুলতলী, ডাকঘর- পাঁচগাঁও
                               উপজেলা- শাহজাদপুর, জেলা- পাবনা।
জন্ম তারিখ         : ২৪/০৯/১৯৮৮খ্রি.।
জাতীয়তা            : বাংলাদেশী
ধর্ম                       : ইসলাম
শিাগত যোগ্যতা : 
পরীক্ষার নাম      শাখা/বিষয়  পাশের সন    ফলাফল        বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়
এস.এস.সি        মানবিক      ২০০৩         জিপিএ ৩.৯    রাজশাহী
এইচ.এস.সি      মানবিক       ২০০৫        জিপিএ ৪.২৫   রাজশাহী
বি.এ (সম্মান)     রাষ্ট্রবিজ্ঞান   ২০০৮         দ্বিতীয় শ্রেণী     জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
এম.এ              রাষ্ট্রবিজ্ঞান   ২০০৯         দ্বিতীয় শ্রেণী     জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

অভিজ্ঞতা: একটি বেসরকারি সংস্থায় শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে ২ বছর 'কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

অতএব, মহোদয় সমীপে বিনীত আরজ, উল্লিখিত তথ্য সুবিবেচনাক্রমে আমাকে ‘সহকারী পরিদর্শক’ পদে নিয়োগ দান করে আমার শ্রম ও মেধা প্রয়োগের মাধ্যমে চাকরি করার সুযোগ দানে মর্জি হয়। 

নিবেদক


(ফাহিম ফেরদৌস)

সংযুক্তিঃ 
১। ছবি ২ কপি।
২।একডেমিক সকল সনদপত্রের সত্যায়ি কপি।
৩। চারিত্রিক সনদপত্র।
৪। নাগরিকত্ব সনদপত্র।
৫। ২০০ টাকার পোস্টাল অর্ডার নং- ..................

চাকরির আবেদন

সাধারণত চাকরিতে নিয়োগের জন্য পত্রিকা বা ওয়েবসাইট-এ দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এর  পরিপ্রেক্ষিতে প্রার্থীরা নির্দিষ্ট পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য আবেদন করেন । অনেক সময় কোন প্রতিষ্ঠানে  উপযুক্ত কোন পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। তখন একটি আবেদনপত্র লেখার প্রয়োজন হয়। প্রথম ক্ষেত্রে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ যদি নিদিষ্ট করে শুধু জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে উল্লেখ করেন, তখন আবেদনপত্র পাঠানোর প্রয়োজন পড়ে  না। আবেদনপত্রটি এমন হওয়া চাই যেন নিয়োগকর্তা খুব অল্প সময়েই এটি দেখে আবেদনকারীর সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন যে, আবেদনকারীর যোগ্যতা সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রাসঙ্গিক কি না এবং তাকে নিয়োগ পরীক্ষায় আমন্ত্রণ জানানো যায় কিনা। এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি আবেদনপত্র হচ্ছে একজন নিয়োগকর্তাকে প্রভাবিত করার একটি প্রাথমিক মাধ্যম, যেখানে প্রার্থী তার গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরবেন যা সংশ্লিষ্ট পদ বা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক। 
আপনার আবেদনপত্র কোনভাবেই এক পাতার বেশী হওয়া উচিত নয়। সাদা কাগজে (A4 Size) কম্পিউটার কম্পোজ করে আবেদনপত্র লিখবেন। বাংলায় হোক বা ইংরেজিতেই হোক অবশ্যই যে কোন একটি অফসিয়াল ফন্ট ব্যবহার করবেন। কোনভাবেই রঙ্গিন এবং মাল্টি সাইজের ফন্ট ব্যবহার করবেন না। নিয়োগ কর্তৃপক্ষ যদি স্বহস্তে আবেদনপত্র লেখার কথা উল্লেখ করেন, তাহলে তা অবশ্যই স্বহস্তে লিখতে হবে।       আবেদনপত্র  বামদিকে লেখা থেকে শুরু করবেন। প্রথমে যাকে উদ্দেশ্য করে আবেদনপত্র লিখবেন তার পদবী, প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা লিখবেন।
এরপর বিষয় লাইন এ আপনি বোল্ড ফন্ট এ উল্লেখ করতে পারেন কোন পদের জন্য আপনি আবেদন করছেন। যেমন: সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র
এরপর আপনি মূল লেখা শুরু করবেন। প্রথম অনুচ্ছেদে উল্লেখ করবেন চাকুরির বিজ্ঞাপনের সূত্র এবং কোন পদের জন্য আবেদন করছেন। যেমন- সবিনয় নিবেদন এই যে, গত ২২ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে  দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম, আপনার অধীনে '
সিনিয়র অফিসার ' পদে লোক নিয়োগ করা হবে। আমি উক্ত পদে নিয়োগ পেতে জন্য একজন আগ্রহী প্রার্থী।
এর পরের অনুচ্ছেদটিকে আপনি ব্যবহার করবেন বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদের বিপরীতে আপনার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য। আপনি কেন এই চাকরির জন্য উপযুক্ত তার সঙ্গত কারণ 
সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরতে পারেন। অর্থাৎ আপনার সেসব যোগ্যতা, যেগুলো বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদের জন্য  পরিপূরক। খেয়াল রাখবেন এই অংশটি পাঠ করে যেন  নিয়োগকর্তা আপনাকে অগ্রাধিকার দিতে প্রভাবিত হন।  
এর পরের অনুচ্ছেদ-এ খুব সংক্ষিপ্তভাবে আপনি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা (এক্ষেত্রে ডিগ্রির  নাম ও পাসের করার বছর) উল্লেখ করতে পারেন। আপনার কোন প্রশিক্ষণ থাকলে এবং যদি তা কাঙ্ক্ষিত পদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে তা 
উল্লেখ করতে পারেন। আপনি যদিবর্তমানে কোন প্রতিষ্ঠানে  কর্মরত থাকেন অথবা আপনার কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকে তা খুবই সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করবেন। সেইসাথে যদি অসাধারণ কোন অর্জন থেকে থাকে তবে তা উল্লেখ করতে পারেন।
সবশেষ অনুচ্ছেদটি হচ্ছে আপনার আবেদনপত্র এর উপসংহার। এখানে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করার ব্যাপারে আপনার আগ্রহ ব্যক্ত করবেন। যদি আপনি এ পদে নিয়োগ পান তবে আপনার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও মেধা কাজে লাগিয়ে আপনি সফলভাবে কাজ সম্পাদন করতে পারবেন  বলে আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করুন। সবশেষে আপনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ কামনা করুন।
আবেদনপত্রের শেষাংশে সই করে তার নিচে সংযুক্তি হিসাবে আপনি যে সকল কাগজপত্র (যেমন: সিভি, সার্টিফিকেটস, ছবি) দিচ্ছেন তার তালিকা দেবেন।

                          যেসব ভুল-ত্রুটি পরিহার করা উচিত 
¤   একই আবেদনপত্র বিভিন্ন নিয়োগকর্তার কাছে পাঠাবেন না।
¤   প্রতিটি আবেদনপত্র আপনাকে যে পদে বা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছেন তার চাহিদার বিপরীতে সাজাতে হবে।
¤   বানানগুলো সতর্কতার সাথে খেয়াল করুন।
¤   একাধিকবার আবেদনপত্র সংশোধন করুন।
¤   কোন কিছুর সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার পরিহার করুন।
¤   আবেদনপত্রে আপনার সই দিতে ভুলবেন না।

কিভাবে লিখবেন আবেদনপত্র


কাঙ্ক্ষিত কিছু পেতে আমাদের প্রায়ই আবেদনপত্র লিখতে হয়। আবেদনপত্রের উপস্থাপনা স্বভাবতই হতে হবে নমনীয়। এর ভাষা হতে হবে প্রাঞ্জল বা সহজবোধ্য। বাহুল্য কথা লিখে আবেদনপত্রটি দীর্ঘ করা মোটেও ঠিক নয় । আবেদনপত্রটি যাতে এক পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করা যায় সে চেষ্টা করতে হবে। তবে প্রয়োজনে একাধিক পৃষ্ঠা ব্যবহার করা যাবে।  আবেদনপত্রে সরাসরি কোন প্রশ্ন করা যাবেনা । তবে এমনভাবে লেখা যাবে যেমন- "কেন এমন করা হল তা আমার বোধগম্য নয়"।

আজকাল আবেদনপত্র দুটি স্টাইলে লেখা হচ্ছে। একটি স্টাইল হচ্ছে আবেদনের সবগুলো প্যারাই বাম দিক থেকে শুরু করা হয়। যেমন- 

তারিখ......................................

বরাবর
জেলা প্রশাসক
গাজীপুর।

বিষয়ঃ ............................................................

জনাব,
........................................................................
.......................................................................
......................................................................
........................................................................

অতএব ...............................

নিবেদক
..........................
.........................

সংযুক্তিঃ ...................


অপর স্টাইলটি হচ্ছে প্রতি প্যারায় লেফ্ট ইনডেন্ট ব্যবহার করা। যেমন-
বরাবর
         জেলা প্রশাসক
         গাজীপুর।

বিষয়ঃ ............................................................

জনাব,
          ..............................................................
........................................................................
........................................................................
.......................................................................

          অতএব ...............................


                                                    নিবেদক
তারিখ- 
                                             ......................

বর্তমানে দুটি স্টাইলেরই প্রচলন থাকলেও প্রথমোক্ত স্টাইলটির প্রতিই বেশি আকৃষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে।
বিষয়বস্তু বিবেচনায় আবেদনপত্রের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। এই  পোস্ট-এ আবেদন নিয়ে আর আলোচনা করছি না। তবে সচরাচর যে ধরণের আবেদনপত্র লেখা হয়ে থাকে তা নিয়ে এ ব্লগের অন্যান্য পোস্ট-এ আলোচনা করছি।