**১।পৃথিবী ঘুর্ননশীল হলে আমরা বুঝতে পারি না কেনো?**
**২।পৃথিবী ঘূর্ননশীল হলে আমরা বাইরের দিকে ছিটকে যাই না কেনো?**
**১.উত্তরঃ** আপনি আপনার চারপাশের অবস্হার গতিশীলতা অনুভব করতে পারবেন শুধুই আপনাদের মধ্যকার আপেক্ষিক গতির ব্যবধানের মাধ্যমে। যেমনঃ আপনি যদি ১০০কি.মি/সে বেগে গতিশীল কোন ট্রেনের সীটে বসে থাকেন, তবে আপনিও কিন্তু ট্রেনেে সাথেই সমবেগে গতিশীল৷ আপনার স্বাপেক্ষে ট্রেনের আপেক্ষিক গতির পার্থক্য ১০০-১০০= ০ কি.মি/সে। সুতরাং, ট্রেনকে আপনার কাছে স্হির মনে হবে খুব স্বাভাবিক। তবে আপনি ট্রেন চলা অবস্হায় ঝাঁকির জন্যে বুঝতে পারবেন ট্রেনটি চলছে৷ কারণ, মাটি উঁচুনিচু হওয়া সে জায়গার রেল ট্র্যাকের উপর দিয়ে ট্রেন সেদিক দিয়ে যাওয়ায় সময় হালকা হেলে দুলে যায়। কিন্তু পৃথিবী? পৃথিবীর পৃষ্ঠে সংলগ্ন থাকা অবস্হায় পৃথিবী আমাদেরকে নিয়েই সে ঘুরছে। ট্রেনের সাথে তুলনা করলে ট্রেন তো না, বরং রেল ট্র্যাক নিজেই গতিশীল! তাহলে কি আদৌ টের পাবেন? এজন্যেই, পৃথিবীকে আমাদের কাছে ঘুর্ননশীল মনে হয় না। কিন্তু পৃথিবী ঘুর্ননশীল।
**২.উত্তরঃ** পৃথিবী ঘোরা সত্যেও আমরা পরে যাই না কেন? এটার উত্তরে প্রায় সবাই বলবেন, পৃথিবী আমাদের টেনে ধরে রেখেছে অর্থ্যাৎ অভিকর্ষের জন্যে! কিন্তু অভিকর্ষ এক্ষেত্রে কিভাবে কাজ করে? এরজন্যে সাধারন গানিতিক টার্মগুলো দেখা যাক।
আমরা জানি,
পৃথিবীর বিষুবীয় অন্ঞ্চলে ব্যাসার্ধ,r = 6378 km
সুতরাং, পরিধি = 2πr = 40074 km = 40074000m.
এখন, এই দূরত্ব অতিক্রম করতে পৃথিবী সময় নেয় প্রায় 23 ঘন্টা 56 মিনিট 4 সে. = 86164 সেকেন্ড।
সুতরাং, পৃথিবীর রৈখিক বেগ তথা আহ্নিক গতি = 40074000 m/86164s = 465.1 m/s
তাহলে,পৃথিবীর এ আহ্নিক গতির জন্যে সৃষ্ট কেন্দ্রবিমুখী ত্বরণের মান = v^2/r = 465.1^2 / (6378×1000)
= 0.03391 m/s^2
অপরদিকে কেন্দ্রমুখী, অভিকর্ষজ ত্বরণের মান= g = GM/R^2 = 9.81 m/s^2.
তাহলে, কেন্দ্রমুখী এ অভিকর্ষজ ত্বরণ পৃথিবীর গতির জন্যে সৃষ্ট বহির্মুখী কেন্দ্রবিমুখী ত্বরণের তুলনায় প্রায় 9.81/0.03391= 289 গুণ বেশি শক্তিশালী। অর্থ্যাৎ, কেন্দ্রবিমুখী বলের চেয়ে কেন্দ্রমুখী বল ২৮৯ গুন বেশি শক্তিশালী হওয়ায় তা আমাদের বাইরে ছিটকে যেতে না দিয়ে টেনে ধরে রাখে। তাই, আমরা বাইরে ছিটকে পড়ে যাই না।