Monday, October 9, 2017

ইন্টারভিউতে প্রত্যাখ্যান হওয়া খারাপ কিছু নয়।/ ইন্টারর্ভিউ টিপস : আমাদের জন্য কেনো কাজ করতে চান?

আপনার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান হতে কয়েকবার ইন্টারভিউ শেষে একজন নিয়োগকর্তা দ্বারা প্রত্যাখ্যান হওয়া কোন মজার অভিজ্ঞতা নয়। আমাদের সবার জীবনে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু আপনার ক্যারিয়ার এখনও শেষ হয়ে যায় নি। আপনার সামনে অনেক সুযোগ রয়েছে। আপনাকে হয়তো কিছু কারণে আপনার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান হতে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে কিন্তু এটা বুঝায় না যে আপনি একজন খারাপ পারফর্মার।
প্রতিবার প্রত্যাখ্যান হবার পর আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে এর মাধ্যমে পরবর্তী ইন্টারভিউতে আপনার আরও ভালো পারফর্ম করার সুযোগ আসবে। এইখানে আমরা প্রত্যাখ্যান হতে কি ভাবে শিক্ষা নেওয়া যায় সেটা নিয়ে কথা বলবো ।

প্রত্যাখ্যান গ্রহণ করতে শিখা

রাগ বা খারাপ বোধ করার থেকে প্রত্যাখ্যান ভালো করে গ্রহণ করা সব থেকে ভালো সমাধান। এরপর নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী ইন্টারভিউ এর জন্য নিজেকে তৈরি করা দরকার। একটি প্রত্যাখ্যানের জন্য চাকরি খোঁজা বন্ধ করা উচিত নয়। সবসময় চিন্তা করতে হবে ক্যারিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান অথবা একটি ইন্টারভিউ এর উপর নির্ভর করছে না। বরং বারবার ইন্টারভিউ দিবার মাধ্যমে অনেক রকম অভিজ্ঞতা এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস অর্জনে সহায়তা করে।

ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া

মানুষের জীবনে সবসময় উপর নিচ থাকে। প্রথমে আপনাকে সকল অসফল কাজের উজ্জ্বল দিকগুলো চিহ্নিত করতে হবে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে সকাল প্রকার বাধাকে অতিক্রম করতে হবে। নিজের কর্মক্ষমতার উন্নতির জন্য নিজের ভুল চিহ্নিত করা খুব জুরুরি। নিজের ভবিষ্যতের উন্নতির জন্য নিয়োগকর্তা হতে নিজের ভুল গুলো ঠিক করে নেওয়া খুব দরকার। নিয়োগকর্তার সাথে সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে যাতে কোন সুযোগ আসলে আপনি সেটা জানতে পারেন।

সামনে এগিয়ে যাওয়া

নিজের আত্মবিশ্বাসের উন্নতির জন্য সবসময় অনুরূপ পরিস্থিতি মুখোমুখি হওয়া মানুষের সাথে কথা বলতে হবে। এতে আপনি সহজে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হবেন আর দ্রুত উন্নতি করতে পারবেন। কোন ভুল থেকে শিক্ষা নিবার পর সেই ভুল আবার করা অনেক বিপজ্জনক। সবসময় মনে সাহস রেখে এবং উদ্দীপনা নিয়ে ইন্টারভিউ এর মুখোমুখি হতে হবে। কোন ক্ষেত্রে আপনি কাজ করতে চান সেটা সম্পর্কে আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব জুরুরি। একটি কর্মক্ষেত্র থেকে বারবার প্রত্যাখ্যান হবার মানে আপনি ভুল জায়গায় চেষ্টা করছেন। সময় নিয়ে আপনার কাজের ক্ষেত্র এবং কি ধরনের কাজ করতে চান সেটা ঠিক করুন। আপনি যদি বুঝতে না পারেন কি ধরনের কাজ আপনি করে সফল হবেন তাহলে নিজে কি ধরনের কাজ করে সবসময় নিজেকে সুখী মনে করেন সেই ধরনের কাজ বেছে নিন। এরপর কাজে সফলতার জন্য বিভিন্ন রকমের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। এতে আপনি নানা ধরনের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির কাছে আসার সুযোগ পাবেন। নিজেকে সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ব্লগ, সংবাদপত্র এবং চাকরি সম্পর্কিত সকল ধরনের খবর সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। নিজের সম্পর্কে পূর্ণ ধারনা থাকতে হবে। নিজে কি করতে পারবেন সেটা নিজেকে বুঝতে হবে। নিয়োগকর্তা আপনি কি করতে পারেন, প্রতিষ্ঠানে আপনার ভূমিকা কি হতে পারে সেটা সম্পর্কে আপনার কাছে জানতে চাইবে। তাই সময় থাকতে নিজের সম্পর্কে পূর্ণ ধারনা নিতে হবে। সবসময় এমন কিছু করতে হবে যাতে নিজের অভিজ্ঞতা আর সাহস বাড়ে এবং দৃঢ় মনে সকল ধরনের ইন্টারভিউ এর মুখোমুখি হতে পারে।

ইন্টারর্ভিউ টিপস : আমাদের জন্য কেনো কাজ করতে চান?


প্রশ্নটি অনেক অর্থহীন মনে হলেও সঠিক উত্তরের কারনে হয়তো স্বপ্নের চাকরিটা হাতছাড়া হয়ে যাবে।
প্রশ্নটি আসলে অনেক সহজ। কেনো আমাদের হয়ে কাজ করতে চান ? কিন্তু উত্তরটি যদি এমন হয় যে এই প্রতিষ্ঠানে পদ খালি রয়েছে এবং আমি চাকরিটি চাই, তাহলে চাকরি হবার কেনো আশা নেই। এইখানে আপনাকে ইন্টারর্ভিউের কিছু সাধারন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হবে।  
একটি প্রশ্ন আপনাকে নানারকম ভাবে করা হতে পারে। যেমন –
  • আমাদের হয়ে কেনো কাজ করতে চান ?
  • এই চাকরির কোন দিকটি আপনার অনেক পছন্দ ?
  • আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোন দিকটি আপনার ভালো লেগেছে?
আপনাকে কেনো এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ?
  • কারন প্রতিষ্ঠান বুঝতে চায় চাকরির জন্য উপযুক্ত প্রার্থী কে ।
  • প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য কতোটুক পরিমান কাজ করতে পারবে সেটা বুঝার জন্য।
  • চাকরিটি প্রার্থীর জন্য কতোটা জুরুরি এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রার্থীর ধারনা কেমন ।

কিভাবে নিজেকে তৈরি করবেন

ইন্টারভিউতে যাবার পূর্বে নিজেকে তৈরি করে নেওয়া খুব জরুরী। প্রতিষ্ঠা্নকে আপনি কি দিতে পারবেন এবং প্রতিষ্ঠা্ন আপনার কাজের বিপরতে আপনাকে কি দিবে সেই সম্পর্কে ধারনা রাখা খুব দরকার। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ইন্টারভিউয়ের সময় প্রতিষ্ঠা্নের উন্নতিতে আপনার কতোটুক অবদান রাখতে পারবেন সেটা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠা্নকে জানানো।
 

নিজের ক্যারিয়ের লক্ষ্য স্থির করা

কোন চাকরিতে আবেদন করার পূর্বে ক্যারিয়ের লক্ষ্য স্থির করার খুব প্রয়োজন। প্রথমে নিজের অবস্থান সম্পর্কে জানা খুব প্রয়োজন না হলে প্রতিষ্ঠানে নিজের কর্মদক্ষতা দেখানো অথবা নিজের কাজ সম্পাদন করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।

প্রতিষ্ঠা্ন সম্পর্কে বিস্তারিতো জানা

কিছু সময় অতিবাহিত করে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানা খুব প্রয়োজন।নিজের লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি এবং অন্যান্য সহকর্মী সম্পর্কে জানা দরকার। প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং লক্ষ্য সম্পর্কে জানা থাকলে ইন্টারভিউয়ের সময়কালীন অনেক প্রশ্নের উত্তর সহজে দেওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সবসময় জানার জন্য প্রতিষ্ঠানের সামাজিক মাধ্যম গুলা ব্যবহার করতে হবে।
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সকল কাজ সম্পর্কে বিশদ জানা যায়।

নিজের কাজ সম্পর্কে জানা-

কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাবার পূর্বে নিজের কাজ সম্পর্কে এবং এর সাথ  জড়িত সকল কিছু সম্পর্কে জানা খুব জুরুরি। এর মাধ্যমে বুঝা যায় আপনি প্রতিষ্ঠান প্রেরিত কাজ করতে সক্ষম কিনা। আপনি যখন সকল কিছু সম্পর্কে জেনে নিবেন তখন নিজের অবস্থান অনুসারে কাজ নির্ধারণ করতে সক্ষম হবেন। প্রতিষ্ঠা্নের সকল প্রকার প্রত্যাশা পূরণ নিজের লক্ষের দিকে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।

নিম্নে কিছু সঠিক উত্তর আপনার জন্য দেওয়া হলো –

১. অনেক বাধা অতি অতিক্রম করে প্রতিষ্ঠান যেমন করে সফল হয়েছে সেটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। এই প্রতিষ্ঠান আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে যে অনেক কঠিন সময়ে হাল না ছাড়া। আমি বিশ্বাস করি আমি এই প্রতিষ্ঠানে নিজের সাধ্যমত সকল প্রচেষ্টা দিয়ে কাজ করবো ।
২. এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে সবসময় সকল কিছু জানার চেষ্টা করেছি। এর মাধ্যমে আমি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সকল ধরনের সফলতা , কাজ এবং পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত ছিলাম। আমি অনুধাবন করলাম প্রতিষ্ঠানের সাথে আমি সফলতার সাথে কাজ করতে পারবো। এই সকল কারনে আমি এই প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজের ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে চাই।