পর্ব-১
আবহমান কাল থেকে জ্বীন নামক একটি অদৃশ্য জাতির (!) নাম প্রচলিত রয়েছে। শুধু নামেই নয়, জ্বীনদের নিয়ে রয়েছে কত সব রহস্যজনক কাহিনী। এই কাহিনী কি শুধুই লোকমুখেই? মোটেও না, জ্বীনদের উপস্থিতি রয়েছে সাহিত্যে, গল্পে, উপন্যাসে, আরব্যরজনীর অধ্যায়ে, ধর্মগ্রন্থে, গবেষণায়, কল্পনায়, ভয়ে, আরাধনায়। জ্বীনদের উপস্থিতি রয়েছে বিভিন্ন মিথোলজিক্যাল সংস্কৃতিতে, অন্ধকার জগতে, আত্মাদ্ধিক বিচরণে, ভর ও শক্তির পারস্পারিক পরিবর্তনে, ইতিহাস বিখ্যাত মনীষীদের দর্শনে। জ্বীনের প্রভাব রয়েছে সুপার নেচারাল ঘটনার জন্ম প্রক্রিয়াতে, প্রেমিক-প্রেমিকার কল্পনায়, কবিরাজের লাঠির শরীরে, কবরখানায়, শশ্মান ঘাটে, প্রেতাত্মার ডাকে, কোয়ান্টাম মেডিটেশনে, আলো-আধারের লুকোচুরিতে। হালের এনার্জি ক্রাইসিসও নাকি মিটতে পারে এই জ্বীন জাতির অস্তিত্ব আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে! তাহলে কিভাবে বলি জ্বীন মিথ্যা বা বানোয়াট?? চলুন দেখি নিচের ব্যাখ্যা গুলো কি বলে:
লোকনাথপুর গ্রামের আজিবর কবিরাজ জ্বীনদের বড় ওস্তাদ। দুনিয়ার এমন কোন জ্বীন নেই যে তার কথা শুনে না, মানে না। আজিবর কবিরাজের শুধু মুখের কথায় জ্বীনরা ওঠা বসা করে, গান-বাজনা করে, সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে এনে দেয় চাহিবা মাত্র বস্তু। একদা নিজের চোখের দেখা দশ-বারো জন লোক অচেনা যুবককে (বয়সে ২৮/৩০ হবে) মোটা দড়ি আর লোহার শিকলে বাঁধা অবস্থায় নিয়ে আসলো আজিবর কবিরাজের কাছে। যুবককে নাকি জ্বীনে ধরেছে! কোন লোকের কাছে রেফারেন্স পেয়ে তারা এসেছে এই আজিবর কবিরাজের কাছে। সামনে আসতেই আজিবর বুঝতে পারে এটা জ্বীন ধরা রোগী, আর তৎক্ষনাৎ সে আগত লোকদের বলে যুবকের হাত পায়ের শিকল খুলে দিতে। লোকজন জানায় এটা করলে সে এখনই রক্তারক্তি বইয়ে দিবে, খুনোখুনি করবে কেই ঠেকাতে পারবে না। জড় হয়ে গেল শত শত লোক! সবাই দেখল কিভাবে আজিবর কবিরাজ ঐ অচেনা যুবকের জ্বীন ছাড়িয়ে দিল সবার সামনেই। অথচ গত ১০ বছর ধরে পরিবারটা ভুগছে এই সমষ্যায়। কি বলবেন তাহলে? অবশ্যই জ্বীন আছে!
রুমেল-জয়া বড়লোক দম্পত্তির একমাত্র মেয়ে সোহানার বয়স ৬ বছর। সোহানা হাটতে পারে না সেই ছোট বেলা থেকেই। মেয়ের হাটার শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছে দেশ বিদেশের বড় বড় ডাক্তার, হসপিটাল এমনকি আজমির শরীফের মত বড় বড় মাজারে। নাহ, কোন কিছুতেই কোন কাজ হয়নি। লোক মুখে শুনে সেও এসেছিল আজিবর কবিরাজের কাছে, মেয়েটি কয়েক মিনিটের মন্ত্রবলেই ভালো হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনাটিও অন্তত ১০/১৫ জন মানুষের সামনে আর সবচাইতে বড় সাক্ষি তার বা-মা এবং সোহানা নিজেই। কি বলবেন তাহলে? অবশ্যই জ্বীন আছে!
****************************************************************
পর্ব-২
এ পর্বেও চলবে আজিবর কবিরাজের কয়েকটি ঘটনা। আজিবর কবিরাজের বড় ছেলে রাসেলের সঙ্গে আমার ভাব সেই ছোটবেলা থেকেই, সে একাধারে আমার ক্লাসমেট, বন্ধু, ভাই, প্রতিবেশী, খেলার সাথী, ন্যায়-অন্যায় কাজের সর্বসময়ের সাথী। খুব সাধারণ থেকে অসাধারণ যে কোন ঘটনায় যদি আমার অন্তরালে হয়ে থেকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সে আমার সাথে শেয়ার করে।
একবার রাসেল ওর আব্বুর সঙ্গে ওর নানীর কবর জিয়ারত করতে যায়, কবরটি অনেক পুরোনো আর মাঠের মধ্যে যে মাঠে যেতে হলে পার হতে হয় অনেক বড় জঙ্গল। যায় হোক, পথ, পথের ধারে জঙ্গল পার হয়ে ওরা পৌঁছে নানীর কবরের কাছে। কবরের পাশে অনেক লম্বা তালগাছ। রাসেল নিজের চোখে দেখল ধবধবে সাদা কাপড় পরিহিতা এক সুন্দরী মহিলা তাল গাছে বেয়ে নেমে এসে ঠিক ওদের পিছনে দাঁড়ালো। রাসেল ওর আব্বুর জ্বীনের উপর বিদ্যার কথা জানতো তাই ভয় না পেয়ে মনে মনে সাহস সন্চয় করে আব্বুর সাথে কবর জিয়ারত করে ফেরৎ আসার পথেই আবার দেখলো ঐ মহিলা খুব দ্রূত আবার তালগাছের উপর এক লাফে উঠে গেল। রাসেল তার পরদিনই ঘটনাটি আমার সাথে শেয়ার করলো। তাহলে কি বলব? অবশ্যই জ্বীন আছে!
আজিবর কবিরাজের যে ঘটনাটি সবচাইতে আমাকে ভাবিয়ে তোলে এখন সেটি তুলে ধরব। ঘটনাটি আমাদের প্রতিবেশি আসাদ মিয়ার বাড়ীর ঘটনা। তখন আমি এ পৃথিবীতে আসিনি। কিন্ত আমার গ্রামের যত সব মরুব্বী আর বয়স্ক লোকজন রয়েছে তারা সবাই ঐ ঘটনার সাক্ষী! এবং তারা যে মিথ্যা বলে না সেটা সহজেই অনুমেয়।
আসাদ মিয়া তার মাঠের এক জমি থেকে ৫০ বছরের পুরোনো এক তেতুল গাছ কেটে ফেলে। গাছটি কাটার আগে সে কয়েক রাতে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে দেখেছিল যেন গাছটি সে না কাটে। এবং জ্বীনরা নাকি তাকে সেই স্বপ্ন দেখাতো। কিন্ত ঐসব স্বপ্নকে পাত্তা না দিয়ে গাছটি কেটে ফেলার পর শুরু হয় আসাদের বাড়ীর উপর অসহ্য রকমের যন্ত্রনাদায়ক ব্যাপার স্যাপার।
বাড়ীতে তেমন কেউ-ই নেই, কিন্ত হটাৎ ছাদের বাড়ীর ছাদের উপর শুরু হয় আর্মি প্যারেড। ভয়ে যবু থবু বাড়ীর লোক কেউ তখন আর বাইরে বের হয় না। প্যারেডের আঘাতে মনে হয় যেন ছাদ এখনি ভেঙ্গে পড়বে।
বাড়ীতে সবাই আছে, হটাৎ দেখা গেল ধান ভাঙ্গা ঢেকিটা ঢেকির ঘর থেকে বাইরে এসে শুন্যের উপর ভাষতেছে। হটাৎ করে কোত্থেকে যেন শত শত হাড় আর মাথার খুলি বাড়ীর উঠানে বৃষ্টির মতন বর্ষণ হতে লাগলো।
অবশেষে আজিবর কবিরাজকে আনা হয়েছিল, এবং ৫০ জন আলেম ব্যাক্তিকে সাথে নিয়ে সিরিজ ওজিফার মাধ্যমে আসাদ মিয়ার বাড়ীর সেই আশ্চার্য্যজনক ঘটনা বন্ধ করেছিল আজিবর কবিরাজ। তাহলে কি বলব? অবশ্যই জ্বীন আছে!
*****************************************************************
পর্ব-৩
এই সব ঘটনা থেকে আজিবরকে আসলই জ্বীনদের গুরু মানতে আমার কোন আপত্তি হয়নি কোনদিন। আজ এ পৃথিবীতে রাসেল নেই, মন খুব খারাপ লাগে, রাসেল জেগে ওঠে আমার স্মৃতিতে প্রায়শ। আমি নিজেই যেন আজিবরের ছেলে এমনই মনে করে আজিবর, আমিও তাকে আমার বাবার মতই সম্মান করি। কথা হয় মাঝে মাঝে। কিন্ত জ্বীনদের নিয়ে কৌতুহুল আমার শেষ নেই! এই কৌতুহুলের প্রধান কারণ আল-কোরান। কারণ আজ প্রায় ১৫০০ বছর ধরে স্বমহিমায় উদ্ভাষিত এই আল-কোরান। কোরানকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, যারা নাস্তিক তাদের কথা আলাদা, তারা কি বললো না বললো সেসব নিয়ে কথা বলার জন্য পোষ্ট এটা না। তবে অনেক অনেক ইতিহাস প্রসিদ্ধ ব্যাক্তিত্ব, সায়েন্টিষ্ট, দার্শনিক তো এই কোরনাকে বিশ্বাস করে। কালকে জয় করে কোরান হয়েছে এক চির-সত্যের বাণী সংকলন। সেই কোরান-ই স্বয়ং জ্বীন আছে তা ঘোষণা করেছে বার বার। তাই বরাবর-ই আমি এই জ্বীন জাতির উপর কৌতুহল বটে।
আমার অনেক স্বপ্ন নিজে চোখে এই জ্বীনকে দেখা বা জ্বীনের অস্তিত্বকে বুঝতে পারে। কিন্ত আফসোস সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হলো না কখনই। তাই দ্বারস্ত হলাম আজিবর কবিরাজের কাছে। কেন যেন বিশ্বাস হয়েছে, পৃথিবীতে জ্বীন বলে যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে এই আজিবর কবিরাজ তা জানবে (কেন জানবে? সেটা প্রথম ২ পর্বের ঘটনাগুলই ব্যাখ্যা করে)। যাই হোক, অবশেষে নিজের ইচ্ছার কথা ব্যাক্ত করলাম আজিবরের কাছে। তিনি আমাকে হতাশ করলেন না, বরং একটা নিদির্ষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে দিলেন এবং আমাকে বললেন সেই সময় তার সাথে দেখা করতে, জায়গা হিসাবে ঠিক করে দিলেন একটা গোপনীয় জায়গা। কথামত কাজ। আজিবর মিয়া আমার সামনে, আমাকে প্রশ্ন করলেন কেন আমি জ্বীন দেখতে চাই? বললাম, আমি কোরান বিশ্বাস করি আর হাজার হাজার বছর ধরে জ্বীনদেরকে যে এত এত গল্প, কথা, গবেষণা প্রচলিত রয়েছে কিন্ত নিজ চোখে দেখি নাই তাই আমি এটা জানতে চাই। এর মাধ্যমে হয়তো সৃষ্টিজগতের আরো এক বিষ্ময় সম্পর্কে অবগত হওয়া যাবে।
বৃদ্ধ আজিবর মিয়া আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। আমাকে বললেন, বাবা রাজ আমার অনেক বয়স হয়েছে, কদিন-ই বাঁচবো দুনিয়াতে, তাই তোমার এই আশা আমি পূর্ণ করবো আমার সাধ্যমত। তিনি আমাকে জানালেন অনেক কিছু:
জ্বীন নিয়ে আজিবরের শিক্ষা শুরু হয় সেই বৃটিশ আমলে থেকে। বিরাট এক আলেম ব্যাক্তি তার প্রথম ওস্তাদ। এরপর এই পৃথিবীর বুকে জ্বীন নিয়ে যতধরনের গবেষণা/আরাধণা আছে সবই তিনি পালন করেছেন। তিনি রাতের পর রাত কাটিয়েছেন কবরখানায়, শশ্মানঘাটে, জনশুন্য মাঠে, পুরোনো মন্দিরে, গভীর জঙ্গলে, সমুদ্রের বুকে, শত শত বছরের বুড়ো নীম-বট গাছের ডালে। কিন্ত তার এই সব গবেষণায় তেমন কোন ফল আসে নি। হতাশ হয়েছে বারবার। তিনি কোনদিন কোন জ্বীনের দেখা পাননি!
এরপর উপসংহার হিসাবে বললেন, সারাটা জীবন জ্বীন নিয়ে কাটিয়ে দিলাম, কিন্ত জ্বীন বলে কিছু আছে বলে টার বিশ্বাস হয় না। তিনি মনে করেন জ্বীন জাতি যদি কখনও পৃথিবীর বুকে থেকেও থাকে তবে তারা এখন ধ্বংস হয়ে গেছে, এই পৃথিবীতে তাদের অস্তিত্ব এখন আর নেই! আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, তাহলে আপনাকে নিয়ে এট সব ঘটনা রয়েছে এইগুলো কিভাবে সম্ভব। তিনি উত্তর দিলেন, প্রত্যেকটির ঘটনার পিছনেই যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। এসব ঘটনার কোনটিতেই জ্বীনদের সংশ্লিষ্টতা ছিলা না। আজিবর কবিরাজকে আমি আরো বললাম, আপনি নিজে এরকম মনে করেন তাহলে কেন জনসম্মুখে এটা প্রকাশ করেন না? তিনি বললেন এতে করে শরীয়তের আলেমরা তাকে কাফের বলে ঘোষণা দিবেন, ঝামেলা শুরু হবে।
অবশেষে, কি আর করার! প্রিয় পাঠক আমিও হতাশ হয়েছি, কারণ জ্বীন বলে আদৌ কোন কিছু আছে এরকম কোন প্রমান আমি নিজ চোখে দেখিনি।
*****************************************************************
পর্ব-৪ (শেষ)
জ্বীন দেখিনি, জ্বীনের অস্তিত্ব আদৌ আছে কিনা তা আমার কাছে রহস্যই থেকে গেল! কিন্ত তবুও কথা থেকেই যায়। জ্বীন জাতি বলে কিছু আছে সেই অন্ধ বিশ্বাস আমি করতে পারছি না তবে নেই সেটাও বলছি না। মানুষ তার জ্ঞান দিয়ে যদি কোন দিন প্রমান করতে পারে সেই আশায়।
বিভিন্ন বর্ননায় জ্বীনদের যে চিত্র ফুটে ওঠে তার আলোকে হয়তো কোনদিন সম্ভব হবে জ্বীনদের অস্তিত্ব প্রমান করা!
জ্বীনদের মোটামুটি বর্ননাগুলো এরকম:
১) জ্বীন অদৃশ্য।
২) জ্বীন আলো দিয়ে তৈরি।
৩) জ্বীন খুব দ্রুত বেগে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে।
৪) জ্বীন আমরা যে সব প্রানী দেখি সে সবের রুপ ধারণ করতে পারে (হয়ত সব প্রানীর না তবে কিছু কিছু হয়তো)।
৫) জ্বীন পৃথিবী বাদে অন্য গ্রহ-নক্ষত্রে চলাফেরার করার ক্ষমতা রাখে।
৬) জ্বীনকে মানুষ নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা রাখে।
৭) জ্বীন অন্ধকারে থাকতে সাচ্ছন্দ বোধ করে! আলোতে ডিষ্টার্ব ফিল করে!
এই সব বর্ননাগুলো কি একে অপরের সাথে কনফ্লিক্ট করে? বর্তমান বিজ্ঞান অনুসারে কিন্ত তা করে না! কিভাবে?
মনে করি জ্বীন আলো দিয়ে তৈরি। আলোর বৈশিষ্ট্য সত্যিই অদ্ভুত! আলো আসলে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ। আলোকে যদি আমরা কোন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যাপ্তিতে সীমাবদ্ধ না রেখে, বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের সম্ভব্য পুরো ফ্রিকোয়েন্সিতে চিন্তা করি তাহলে কিন্ত বিষয়টি জটিল হয়ে গেল। কারণ তাত্বিকভাবে আমরা অসীম ফ্রিকোয়েন্সির বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ জেনারেট করতে পারি। তাহলে জ্বীন কোন ফ্রিকোয়েন্সিতে তার অদৃশ্য অস্তিত্ব ধারণ করে সেটা গবেষণার বিষয়। তবে আমরা মনে করতে পারি, জ্বীন যদি আলো তথা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে সে অদৃশ্য হতে পারে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব দ্রুত যেতেও পারে।
আমরা জানি বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ শক্তি বহন করে এবং সেই শক্তিকে ভরে পরিবর্তন করা সম্ভব। অন্যদিকে ভরকে শক্তিতেও পরিবর্তন করা সম্ভব। সুতরাং জ্বীন যদি আলো তথা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে তৈরি হয় তাহলে সে দৃশ্যমান ভরেও পরিবর্তন হতে পারে তবে সেই ভর দেখতে কেমন হবে সেটা আমি এখন ভাবতে পারছি না।
বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ অন্য কোন বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের সাথে ইন্টারএ্যাকশনে যেতে পারে এবং এতে করে তাদের বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয়ক্ষেত্রের পরিবর্তন হতে পারে। সুতরাং জ্বীন আলোতে ডিষ্টার্ব ফিল করতেই পারে। তবে এক্ষেত্রে কথিত যে হিউম্যান চোখে ভিজিবল আলোতেই তারা ডিষ্টার্বড হচ্ছে। এটা গবেষণার একটা ক্লু বৈকি!
জ্বীন যদি বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে বলায় যায় বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের বিচরণ সমস্ত মহাবিশ্বব্যাপি। আর এই মহাবিশ্বকেই তো নিয়ন্ত্রন করতে চায় মানুষ! সুতরাং জ্বীন তো নস্যি মাত্র।
জ্বীনদের নিয়ে কিন্ত আসলেই গবেষণা হয়! ১৯৮৮ সালে পাকিস্থানের নিউক্লিয়ার সায়েন্টিষ্ট সুলতান বশিরউদ্দীন মাহমুদ ওয়াল ষ্ট্রীট জার্নালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন জ্বীন হতে পারে রিনিউএবল এনার্জির এক অফুরন্ত উৎস।
যাই হোক ভবিষ্যত সময়ই হয়তো সঠিক তথ্যটি আমাদের সামনে নিয়ে আসবে, হয়তো আমরা জানবো না, কিন্ত মানুষ তো জানবে। আর সেই সাথে হয়তো শুরু হবে সভ্যতার এক নবদিগন্তের অধ্যায়। ক্রমান্বয়ে বস্তবাদী দুনিয়ার দিকে ধাববান বিশ্বে জ্বীন কি হতে পারে কোন গবেষণার বিষয়?
আবহমান কাল থেকে জ্বীন নামক একটি অদৃশ্য জাতির (!) নাম প্রচলিত রয়েছে। শুধু নামেই নয়, জ্বীনদের নিয়ে রয়েছে কত সব রহস্যজনক কাহিনী। এই কাহিনী কি শুধুই লোকমুখেই? মোটেও না, জ্বীনদের উপস্থিতি রয়েছে সাহিত্যে, গল্পে, উপন্যাসে, আরব্যরজনীর অধ্যায়ে, ধর্মগ্রন্থে, গবেষণায়, কল্পনায়, ভয়ে, আরাধনায়। জ্বীনদের উপস্থিতি রয়েছে বিভিন্ন মিথোলজিক্যাল সংস্কৃতিতে, অন্ধকার জগতে, আত্মাদ্ধিক বিচরণে, ভর ও শক্তির পারস্পারিক পরিবর্তনে, ইতিহাস বিখ্যাত মনীষীদের দর্শনে। জ্বীনের প্রভাব রয়েছে সুপার নেচারাল ঘটনার জন্ম প্রক্রিয়াতে, প্রেমিক-প্রেমিকার কল্পনায়, কবিরাজের লাঠির শরীরে, কবরখানায়, শশ্মান ঘাটে, প্রেতাত্মার ডাকে, কোয়ান্টাম মেডিটেশনে, আলো-আধারের লুকোচুরিতে। হালের এনার্জি ক্রাইসিসও নাকি মিটতে পারে এই জ্বীন জাতির অস্তিত্ব আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে! তাহলে কিভাবে বলি জ্বীন মিথ্যা বা বানোয়াট?? চলুন দেখি নিচের ব্যাখ্যা গুলো কি বলে:
লোকনাথপুর গ্রামের আজিবর কবিরাজ জ্বীনদের বড় ওস্তাদ। দুনিয়ার এমন কোন জ্বীন নেই যে তার কথা শুনে না, মানে না। আজিবর কবিরাজের শুধু মুখের কথায় জ্বীনরা ওঠা বসা করে, গান-বাজনা করে, সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে এনে দেয় চাহিবা মাত্র বস্তু। একদা নিজের চোখের দেখা দশ-বারো জন লোক অচেনা যুবককে (বয়সে ২৮/৩০ হবে) মোটা দড়ি আর লোহার শিকলে বাঁধা অবস্থায় নিয়ে আসলো আজিবর কবিরাজের কাছে। যুবককে নাকি জ্বীনে ধরেছে! কোন লোকের কাছে রেফারেন্স পেয়ে তারা এসেছে এই আজিবর কবিরাজের কাছে। সামনে আসতেই আজিবর বুঝতে পারে এটা জ্বীন ধরা রোগী, আর তৎক্ষনাৎ সে আগত লোকদের বলে যুবকের হাত পায়ের শিকল খুলে দিতে। লোকজন জানায় এটা করলে সে এখনই রক্তারক্তি বইয়ে দিবে, খুনোখুনি করবে কেই ঠেকাতে পারবে না। জড় হয়ে গেল শত শত লোক! সবাই দেখল কিভাবে আজিবর কবিরাজ ঐ অচেনা যুবকের জ্বীন ছাড়িয়ে দিল সবার সামনেই। অথচ গত ১০ বছর ধরে পরিবারটা ভুগছে এই সমষ্যায়। কি বলবেন তাহলে? অবশ্যই জ্বীন আছে!
রুমেল-জয়া বড়লোক দম্পত্তির একমাত্র মেয়ে সোহানার বয়স ৬ বছর। সোহানা হাটতে পারে না সেই ছোট বেলা থেকেই। মেয়ের হাটার শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছে দেশ বিদেশের বড় বড় ডাক্তার, হসপিটাল এমনকি আজমির শরীফের মত বড় বড় মাজারে। নাহ, কোন কিছুতেই কোন কাজ হয়নি। লোক মুখে শুনে সেও এসেছিল আজিবর কবিরাজের কাছে, মেয়েটি কয়েক মিনিটের মন্ত্রবলেই ভালো হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনাটিও অন্তত ১০/১৫ জন মানুষের সামনে আর সবচাইতে বড় সাক্ষি তার বা-মা এবং সোহানা নিজেই। কি বলবেন তাহলে? অবশ্যই জ্বীন আছে!
****************************************************************
পর্ব-২
এ পর্বেও চলবে আজিবর কবিরাজের কয়েকটি ঘটনা। আজিবর কবিরাজের বড় ছেলে রাসেলের সঙ্গে আমার ভাব সেই ছোটবেলা থেকেই, সে একাধারে আমার ক্লাসমেট, বন্ধু, ভাই, প্রতিবেশী, খেলার সাথী, ন্যায়-অন্যায় কাজের সর্বসময়ের সাথী। খুব সাধারণ থেকে অসাধারণ যে কোন ঘটনায় যদি আমার অন্তরালে হয়ে থেকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সে আমার সাথে শেয়ার করে।
একবার রাসেল ওর আব্বুর সঙ্গে ওর নানীর কবর জিয়ারত করতে যায়, কবরটি অনেক পুরোনো আর মাঠের মধ্যে যে মাঠে যেতে হলে পার হতে হয় অনেক বড় জঙ্গল। যায় হোক, পথ, পথের ধারে জঙ্গল পার হয়ে ওরা পৌঁছে নানীর কবরের কাছে। কবরের পাশে অনেক লম্বা তালগাছ। রাসেল নিজের চোখে দেখল ধবধবে সাদা কাপড় পরিহিতা এক সুন্দরী মহিলা তাল গাছে বেয়ে নেমে এসে ঠিক ওদের পিছনে দাঁড়ালো। রাসেল ওর আব্বুর জ্বীনের উপর বিদ্যার কথা জানতো তাই ভয় না পেয়ে মনে মনে সাহস সন্চয় করে আব্বুর সাথে কবর জিয়ারত করে ফেরৎ আসার পথেই আবার দেখলো ঐ মহিলা খুব দ্রূত আবার তালগাছের উপর এক লাফে উঠে গেল। রাসেল তার পরদিনই ঘটনাটি আমার সাথে শেয়ার করলো। তাহলে কি বলব? অবশ্যই জ্বীন আছে!
আজিবর কবিরাজের যে ঘটনাটি সবচাইতে আমাকে ভাবিয়ে তোলে এখন সেটি তুলে ধরব। ঘটনাটি আমাদের প্রতিবেশি আসাদ মিয়ার বাড়ীর ঘটনা। তখন আমি এ পৃথিবীতে আসিনি। কিন্ত আমার গ্রামের যত সব মরুব্বী আর বয়স্ক লোকজন রয়েছে তারা সবাই ঐ ঘটনার সাক্ষী! এবং তারা যে মিথ্যা বলে না সেটা সহজেই অনুমেয়।
আসাদ মিয়া তার মাঠের এক জমি থেকে ৫০ বছরের পুরোনো এক তেতুল গাছ কেটে ফেলে। গাছটি কাটার আগে সে কয়েক রাতে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে দেখেছিল যেন গাছটি সে না কাটে। এবং জ্বীনরা নাকি তাকে সেই স্বপ্ন দেখাতো। কিন্ত ঐসব স্বপ্নকে পাত্তা না দিয়ে গাছটি কেটে ফেলার পর শুরু হয় আসাদের বাড়ীর উপর অসহ্য রকমের যন্ত্রনাদায়ক ব্যাপার স্যাপার।
বাড়ীতে তেমন কেউ-ই নেই, কিন্ত হটাৎ ছাদের বাড়ীর ছাদের উপর শুরু হয় আর্মি প্যারেড। ভয়ে যবু থবু বাড়ীর লোক কেউ তখন আর বাইরে বের হয় না। প্যারেডের আঘাতে মনে হয় যেন ছাদ এখনি ভেঙ্গে পড়বে।
বাড়ীতে সবাই আছে, হটাৎ দেখা গেল ধান ভাঙ্গা ঢেকিটা ঢেকির ঘর থেকে বাইরে এসে শুন্যের উপর ভাষতেছে। হটাৎ করে কোত্থেকে যেন শত শত হাড় আর মাথার খুলি বাড়ীর উঠানে বৃষ্টির মতন বর্ষণ হতে লাগলো।
অবশেষে আজিবর কবিরাজকে আনা হয়েছিল, এবং ৫০ জন আলেম ব্যাক্তিকে সাথে নিয়ে সিরিজ ওজিফার মাধ্যমে আসাদ মিয়ার বাড়ীর সেই আশ্চার্য্যজনক ঘটনা বন্ধ করেছিল আজিবর কবিরাজ। তাহলে কি বলব? অবশ্যই জ্বীন আছে!
*****************************************************************
পর্ব-৩
এই সব ঘটনা থেকে আজিবরকে আসলই জ্বীনদের গুরু মানতে আমার কোন আপত্তি হয়নি কোনদিন। আজ এ পৃথিবীতে রাসেল নেই, মন খুব খারাপ লাগে, রাসেল জেগে ওঠে আমার স্মৃতিতে প্রায়শ। আমি নিজেই যেন আজিবরের ছেলে এমনই মনে করে আজিবর, আমিও তাকে আমার বাবার মতই সম্মান করি। কথা হয় মাঝে মাঝে। কিন্ত জ্বীনদের নিয়ে কৌতুহুল আমার শেষ নেই! এই কৌতুহুলের প্রধান কারণ আল-কোরান। কারণ আজ প্রায় ১৫০০ বছর ধরে স্বমহিমায় উদ্ভাষিত এই আল-কোরান। কোরানকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, যারা নাস্তিক তাদের কথা আলাদা, তারা কি বললো না বললো সেসব নিয়ে কথা বলার জন্য পোষ্ট এটা না। তবে অনেক অনেক ইতিহাস প্রসিদ্ধ ব্যাক্তিত্ব, সায়েন্টিষ্ট, দার্শনিক তো এই কোরনাকে বিশ্বাস করে। কালকে জয় করে কোরান হয়েছে এক চির-সত্যের বাণী সংকলন। সেই কোরান-ই স্বয়ং জ্বীন আছে তা ঘোষণা করেছে বার বার। তাই বরাবর-ই আমি এই জ্বীন জাতির উপর কৌতুহল বটে।
আমার অনেক স্বপ্ন নিজে চোখে এই জ্বীনকে দেখা বা জ্বীনের অস্তিত্বকে বুঝতে পারে। কিন্ত আফসোস সেই স্বপ্ন আমার পূরণ হলো না কখনই। তাই দ্বারস্ত হলাম আজিবর কবিরাজের কাছে। কেন যেন বিশ্বাস হয়েছে, পৃথিবীতে জ্বীন বলে যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে এই আজিবর কবিরাজ তা জানবে (কেন জানবে? সেটা প্রথম ২ পর্বের ঘটনাগুলই ব্যাখ্যা করে)। যাই হোক, অবশেষে নিজের ইচ্ছার কথা ব্যাক্ত করলাম আজিবরের কাছে। তিনি আমাকে হতাশ করলেন না, বরং একটা নিদির্ষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে দিলেন এবং আমাকে বললেন সেই সময় তার সাথে দেখা করতে, জায়গা হিসাবে ঠিক করে দিলেন একটা গোপনীয় জায়গা। কথামত কাজ। আজিবর মিয়া আমার সামনে, আমাকে প্রশ্ন করলেন কেন আমি জ্বীন দেখতে চাই? বললাম, আমি কোরান বিশ্বাস করি আর হাজার হাজার বছর ধরে জ্বীনদেরকে যে এত এত গল্প, কথা, গবেষণা প্রচলিত রয়েছে কিন্ত নিজ চোখে দেখি নাই তাই আমি এটা জানতে চাই। এর মাধ্যমে হয়তো সৃষ্টিজগতের আরো এক বিষ্ময় সম্পর্কে অবগত হওয়া যাবে।
বৃদ্ধ আজিবর মিয়া আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। আমাকে বললেন, বাবা রাজ আমার অনেক বয়স হয়েছে, কদিন-ই বাঁচবো দুনিয়াতে, তাই তোমার এই আশা আমি পূর্ণ করবো আমার সাধ্যমত। তিনি আমাকে জানালেন অনেক কিছু:
জ্বীন নিয়ে আজিবরের শিক্ষা শুরু হয় সেই বৃটিশ আমলে থেকে। বিরাট এক আলেম ব্যাক্তি তার প্রথম ওস্তাদ। এরপর এই পৃথিবীর বুকে জ্বীন নিয়ে যতধরনের গবেষণা/আরাধণা আছে সবই তিনি পালন করেছেন। তিনি রাতের পর রাত কাটিয়েছেন কবরখানায়, শশ্মানঘাটে, জনশুন্য মাঠে, পুরোনো মন্দিরে, গভীর জঙ্গলে, সমুদ্রের বুকে, শত শত বছরের বুড়ো নীম-বট গাছের ডালে। কিন্ত তার এই সব গবেষণায় তেমন কোন ফল আসে নি। হতাশ হয়েছে বারবার। তিনি কোনদিন কোন জ্বীনের দেখা পাননি!
এরপর উপসংহার হিসাবে বললেন, সারাটা জীবন জ্বীন নিয়ে কাটিয়ে দিলাম, কিন্ত জ্বীন বলে কিছু আছে বলে টার বিশ্বাস হয় না। তিনি মনে করেন জ্বীন জাতি যদি কখনও পৃথিবীর বুকে থেকেও থাকে তবে তারা এখন ধ্বংস হয়ে গেছে, এই পৃথিবীতে তাদের অস্তিত্ব এখন আর নেই! আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, তাহলে আপনাকে নিয়ে এট সব ঘটনা রয়েছে এইগুলো কিভাবে সম্ভব। তিনি উত্তর দিলেন, প্রত্যেকটির ঘটনার পিছনেই যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। এসব ঘটনার কোনটিতেই জ্বীনদের সংশ্লিষ্টতা ছিলা না। আজিবর কবিরাজকে আমি আরো বললাম, আপনি নিজে এরকম মনে করেন তাহলে কেন জনসম্মুখে এটা প্রকাশ করেন না? তিনি বললেন এতে করে শরীয়তের আলেমরা তাকে কাফের বলে ঘোষণা দিবেন, ঝামেলা শুরু হবে।
অবশেষে, কি আর করার! প্রিয় পাঠক আমিও হতাশ হয়েছি, কারণ জ্বীন বলে আদৌ কোন কিছু আছে এরকম কোন প্রমান আমি নিজ চোখে দেখিনি।
*****************************************************************
পর্ব-৪ (শেষ)
জ্বীন দেখিনি, জ্বীনের অস্তিত্ব আদৌ আছে কিনা তা আমার কাছে রহস্যই থেকে গেল! কিন্ত তবুও কথা থেকেই যায়। জ্বীন জাতি বলে কিছু আছে সেই অন্ধ বিশ্বাস আমি করতে পারছি না তবে নেই সেটাও বলছি না। মানুষ তার জ্ঞান দিয়ে যদি কোন দিন প্রমান করতে পারে সেই আশায়।
বিভিন্ন বর্ননায় জ্বীনদের যে চিত্র ফুটে ওঠে তার আলোকে হয়তো কোনদিন সম্ভব হবে জ্বীনদের অস্তিত্ব প্রমান করা!
জ্বীনদের মোটামুটি বর্ননাগুলো এরকম:
১) জ্বীন অদৃশ্য।
২) জ্বীন আলো দিয়ে তৈরি।
৩) জ্বীন খুব দ্রুত বেগে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে।
৪) জ্বীন আমরা যে সব প্রানী দেখি সে সবের রুপ ধারণ করতে পারে (হয়ত সব প্রানীর না তবে কিছু কিছু হয়তো)।
৫) জ্বীন পৃথিবী বাদে অন্য গ্রহ-নক্ষত্রে চলাফেরার করার ক্ষমতা রাখে।
৬) জ্বীনকে মানুষ নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা রাখে।
৭) জ্বীন অন্ধকারে থাকতে সাচ্ছন্দ বোধ করে! আলোতে ডিষ্টার্ব ফিল করে!
এই সব বর্ননাগুলো কি একে অপরের সাথে কনফ্লিক্ট করে? বর্তমান বিজ্ঞান অনুসারে কিন্ত তা করে না! কিভাবে?
মনে করি জ্বীন আলো দিয়ে তৈরি। আলোর বৈশিষ্ট্য সত্যিই অদ্ভুত! আলো আসলে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ। আলোকে যদি আমরা কোন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যাপ্তিতে সীমাবদ্ধ না রেখে, বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের সম্ভব্য পুরো ফ্রিকোয়েন্সিতে চিন্তা করি তাহলে কিন্ত বিষয়টি জটিল হয়ে গেল। কারণ তাত্বিকভাবে আমরা অসীম ফ্রিকোয়েন্সির বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ জেনারেট করতে পারি। তাহলে জ্বীন কোন ফ্রিকোয়েন্সিতে তার অদৃশ্য অস্তিত্ব ধারণ করে সেটা গবেষণার বিষয়। তবে আমরা মনে করতে পারি, জ্বীন যদি আলো তথা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে সে অদৃশ্য হতে পারে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব দ্রুত যেতেও পারে।
আমরা জানি বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ শক্তি বহন করে এবং সেই শক্তিকে ভরে পরিবর্তন করা সম্ভব। অন্যদিকে ভরকে শক্তিতেও পরিবর্তন করা সম্ভব। সুতরাং জ্বীন যদি আলো তথা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে তৈরি হয় তাহলে সে দৃশ্যমান ভরেও পরিবর্তন হতে পারে তবে সেই ভর দেখতে কেমন হবে সেটা আমি এখন ভাবতে পারছি না।
বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ অন্য কোন বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের সাথে ইন্টারএ্যাকশনে যেতে পারে এবং এতে করে তাদের বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয়ক্ষেত্রের পরিবর্তন হতে পারে। সুতরাং জ্বীন আলোতে ডিষ্টার্ব ফিল করতেই পারে। তবে এক্ষেত্রে কথিত যে হিউম্যান চোখে ভিজিবল আলোতেই তারা ডিষ্টার্বড হচ্ছে। এটা গবেষণার একটা ক্লু বৈকি!
জ্বীন যদি বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে বলায় যায় বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গের বিচরণ সমস্ত মহাবিশ্বব্যাপি। আর এই মহাবিশ্বকেই তো নিয়ন্ত্রন করতে চায় মানুষ! সুতরাং জ্বীন তো নস্যি মাত্র।
জ্বীনদের নিয়ে কিন্ত আসলেই গবেষণা হয়! ১৯৮৮ সালে পাকিস্থানের নিউক্লিয়ার সায়েন্টিষ্ট সুলতান বশিরউদ্দীন মাহমুদ ওয়াল ষ্ট্রীট জার্নালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন জ্বীন হতে পারে রিনিউএবল এনার্জির এক অফুরন্ত উৎস।
যাই হোক ভবিষ্যত সময়ই হয়তো সঠিক তথ্যটি আমাদের সামনে নিয়ে আসবে, হয়তো আমরা জানবো না, কিন্ত মানুষ তো জানবে। আর সেই সাথে হয়তো শুরু হবে সভ্যতার এক নবদিগন্তের অধ্যায়। ক্রমান্বয়ে বস্তবাদী দুনিয়ার দিকে ধাববান বিশ্বে জ্বীন কি হতে পারে কোন গবেষণার বিষয়?