Friday, February 26, 2016

ডায়াবেটিস কি? আর কি তার প্রতিকার?

ডায়াবেটিস-এই নামটি এখন সবাই কম-বেশী জানে। কেউ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে শুনলেই ভয়ে আঁতকে ওঠে। ভাবে, সব খাওয়া দাওয়া ছেড়ে গালে হাত দিয়ে মৃত্যুর জন্য প্রহর গুনতে হবে। ব্যপারটা আসলেই কি তাই? না, মোটেই তা নয়। বরং মধ্যপন্থা অবলম্বন করে কম আর বেশীর মাঝামাঝি অর্থাৎ পরিমিত মাত্রায় সময়মত আহার করতে হবে। গালে হাত দিয়ে বসে না থেকে নিয়মিত হাঁটতে হবে ও হালকা শরীর চর্চা করতে হবে। আর তাহলেই একজন ডায়াবেটিক রোগী সেইসব মানুষদের চেয়ে ভালভাবে সুখে সাচ্ছন্দে দিন কাটাতে পারবেন যারা ডায়াবেটিস হয়নি ভেবে বেশী বেশী খেয়ে ভুঁড়ি বানান আর অলসভাবে সময় কাটান। একজন ডায়াবেটিক রোগী যদি রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তবে সুস্থভাবে জীবন কাটাতে পারবেন। তবে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে তো তাকে ভুগতেই হবে। এমনও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে যে, ডায়বেটিক রোগীদের মধ্যে অনেকেই ৪০-৪৫ বছর যাবত রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন এবং বয়স ৮০ বছর পার করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নিয়ম মাফিক জীবন যাপনের ফলে তারা ডায়াবেটিস হয়নি এমন অনেক বৃদ্ধের তুলনায় বেশ ভাল অছেন। এজন্য একজন ডায়াবেটিক রোগীকে ঘুমের ব্যপারে যেমন নিয়ম মানতে হবে তেমনি জেগে থাকা অবস্থাতেও নাওয়া, খাওয়া, প্রার্থণা, দৈনন্দিন কাজ-কর্ম, চলাফেরা, ব্যায়াম, পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা, ওষুধ সেবন ইত্যাদি সব বিষয়েই নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলতে হবে। এগুলো জানার আগে ডায়াবেটিস রোগটি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকলে বুঝতে সুবিধা হবে
ডায়াবেটিস কি?
ডায়াবেটিস অর্থাৎ ডায়াবেটিস মেলাইটাস বলতে শারীরিক এমন এক অস্বাভাবিক অবস্থাকে বোঝায় যার লক্ষণসমষ্টি শরীরে গ্লুকোজ অর্থাৎ শর্করা/চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রকাশলাভ করে।
ডায়াবেটিক রোগীর রক্তে উচ্চ মাত্রায় গ্লুকোজ থাকে। তার কারণ-
তাদের প্যাংক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় পর্যাপ্ত পরিমাণে ইন্সুলিনউৎপাদন করতে পারে না।
তাদের মাংসপেশী, চর্বি ও লিভারের কোষগুলো ইন্সুলিনের প্রতি স্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া করেনা।
অথবা একসাথে উভয়টিও হতে পারে।
ইন্সুলিন হলো এক ধরনের হর্মোন, যা প্যাংক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় থেকে উৎপন্ন হয়ে রক্তের গ্লুকোজ/শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডায়াবেটিস কি তা বুঝতে হলে দেহে খাদ্য কিভাবে ভাঙ্গে ও শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় তা জেনে রাখা উচিত। খাদ্য হজমের সময় বেশ কিছু ঘটনা ঘটে-
খাদ্য হজমের পর যে গ্লুকোজ বা শর্করা রক্তে অনুপ্রবেশ করে তা দেহে জ্বালানীর প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে।
আমরা আগেই জেনেছি যে, প্যাংক্রিয়াসে ইন্সুলিন তৈরি হয়। এটি রক্তের মধ্যে প্রবাহিত গ্লুকোজকে মাংসপেশী, চর্বি ও লিভারের কোষে নিয়ে যায়। সেখানে এই গ্লুকোজ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ডায়াবেটিস প্রধানত ২ ধরনের হয়-
ধরন-১ ডায়াবেটিস, এটি সাধারনত শিশুকালেই লক্ষণ দেখে নির্ণয় করা যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়স পার হবার পর ধরা পড়ে। এই ধরনটিতে শরীরে খুবই কম ইন্সুলিন তৈরী হয় অথবা একদমই তৈরী হয় না। ফলে প্রতিদিন ইন্সুলিন ইনজেক্সন নিতে হয়। ডায়াবেটিসে আত্রান্তদের ৫%-১০% কে এই ধরনটিতে ভুগতে দেখা যায়। এর প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে জেনেটিক, ভাইরাস এবং সতোপ্রতিষেধক সমস্যা বা জটিলতা হয়ত এ ব্যপারে কিছুটা ভূমিকা পালন করে।
ধরন-২ ডায়াবেটিস, এটি ধরন-১ অপেক্ষা অনেক বেশী সাধারণ প্রকৃতির। বেশীর ভাগ
ডায়াবেটিক রোগী এর অন্তর্ভূক্ত। এটি সাধারনত পূর্ণ বয়সেই দেখা যায়। তবে যুবক-যুবতীরাও দিন দিন অনেক বেশী হারে এর অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিসে আত্রান্তদের মধ্যে ৯০% - ৯৫% কে এই ধরনটিতে ভুগতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে প্যাংক্রিয়াসরক্তের গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত ইন্সুলিন তৈরী করতে পারেনা এবং প্রায়শই ইন্সুলিনের প্রতি দৈহিক প্রতিক্রিয়া ঠিকমত হয় না। অনেকে আক্রান্ত হয়েও অনেকদিন যাবত বুঝতেই পারেন না যে তারা এ ধরনের ডায়াবেটিসে ভুগছেন। অথচ এটি কিন্তু একটি জটিল অবস্থা। যত দিন যাচ্ছে, অতিশয় স্থুলতা ও ব্যায়াম বিমুখতা- মূলত এ দুটি কারণে এই ধরনের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।
এছাড়াও রয়েছে-
গর্ভধারণকালীন ডায়াবেটিস- এটি গর্ভাবস্থায় দেখা যায়। এক্ষেত্রে গর্ভবতীর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা গর্ভকালীন যে কোন সময়ে বৃদ্ধি পায়। অথচ গর্ভবতী হওয়ার পূর্বে তাদের ডায়াবেটিস ছিল না। সেই সমস্ত স্ত্রীলোক সাধারনত এই ডায়াবেটিসে ভোগেন যারা স্থুলকায় এবং যাদের পরিবারের অন্যান্য (রক্ত-সম্পর্কীয়) সদস্যরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে মায়ের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অবশ্যই স্বাভাবিক রাখতে হবে। তা না হলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। যারা গর্ভধারনকালীন ডায়াবেটিসে ভোগেন তাদের মধ্যে ৫%-১০% স্ত্রীলোককে পরবর্তীতে ধরন-২ ডায়াবেটিসেভুগতে দেখা যায় এবং এক্ষেত্রে ২০%-৫০% এর ৫-১০ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
অন্য নির্দিষ্ট ধরনের ডায়াবেটিস- এটি বিভিন্ন কারণে হয়, যেমন- জিনগত অবস্থা, শল্যচিকিৎসা, ওষুধ, পুষ্টিহীনতা, ইনফেক্সন ও অন্যান্য অসুস্থতা। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে ১%-৫% এই ধরনটিতে ভোগে
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা-
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে উপসর্গ মুক্ত থেকে সুস্থ্যভাবে জীবন যাপনের জন্য সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কীত জটিলতা যেমন- অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডণী রোগ, পচন জনিত অঙ্গহানী ইত্যাদি থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এটা মনে রাখতে হবে যে ডায়বেটিস নির্মূল করা যায় না। নিয়মিত ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, বিশ্রাম ও প্রয়োজনে ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
পথ্য- ডায়াবেটিক রোগীরা খাদ্যের সাথে কি পরিমাণ চর্বি, আমিষ ও শর্করা গ্রহণ করবেন তা নিকটতম ডায়াবেটিক সেন্টারে গিয়ে অথবা ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান এর নিকট থেকে জেনে নিতে হবে। প্রয়োজনে পথ্যবিশারদের নিকটে গিয়ে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। তবে একজন ডায়াবেটিক রোগির প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কার্বহাইড্রেট বা শর্করা ৫০-৬০% (এর মধ্যে আঁশ যুক্ত খাবার ২০-৩৫ গ্রাম), ফ্যাট বা চর্বি ৩০% এবং প্রোটিন বা আমিষ ১০-২০% থাকা প্রয়োজন।
ধরন-২ ডায়াবেটিস- এ আক্রান্তদের সুষম ও কম চর্বিযুক্ত খাদ্য সঠিক পরিমাণে সময়মত গ্রহণ করা উচিত।
ব্যায়াম- ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন ব্যায়াম করা উচিত। এটা একদিকে যেমন রক্তের গ¬ুকোজ বা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে, তেমনি ওজন কমাতে ও উচ্চ-রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না তাদের তুলনায় যারা করেন তারা অনেক কম হারে হার্ট-এ্যটাক ও স্ট্রোকের শিকার হন।
ব্যায়ামের নিয়মাবলী-
o
ব্যায়াম আরম্ভ করার পূর্বে এবং বিশেষ করে ব্যায়ামের ধরন পরিবর্তনের সময় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উচিত।
o
নিজের শারীরিক উপযুক্ততা অনুসারে আনন্দ- দায়ক ব্যায়ামের বিষয় নির্বাচন করতে হবে।
o
প্রতিদিন এবং সম্ভব হলে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটতে হবে।
o
মাঝে মাঝে হাঁটার আগে ও পরে রক্তে ¬ুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
o
হাঁটার সময় শর্করা সমৃদ্ধ কিছু খাবার সাথে রাখতে হবে। যে কোন মূহুর্তে রক্তে গ¬ুকোজের মাত্রা কমে জাওয়ার ভাব অনুভূত হলে তা খেয়ে নিতে হবে।
o
জরুরী অবস্থার প্রয়োজনে নিজের সাথে সব সময় ডায়াবেটিক কার্ড বা সর্বশেষ চিকিৎসা পত্রের ফটোকপি সাথে রাখতে হবে।
o
হাঁটার আগে ও পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও চিনিমুক্ত তরল খাবার খেতে হবে।
(
ব্যায়ামের ধরন ও সময় এবং রক্তে গ¬ুকোজের মাত্রা বেশী বা কম হওয়ার উপর ভিত্তি করে খাদ্য ও ওষুধের ধরন এবং পরিমাণ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।)
বিশ্রাম- সময়মত ও নির্দিষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম ও ঘুম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অতি জরুরী। দুপুরের আহার ও প্রার্থণার পর (জায়নামাজ বা শীতল পাটির উপর) ১৫-২০ মিঃ চোখ বুঝে চুপচাপ সটান শুয়ে থাকাত পারলে খুবই ভাল হয়। তবে রাতে ৬-৭ ঘুমানো অপরিহার্য। কারণ রক্তের গ¬ুকোজ নিয়ন্ত্রণে এই ঘুমের বেশ বড় ভূমিকা রয়েছে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে ওষুধ- ইন্সুলিন ও মুখে খাওয়ার বড়ি দ্বারা ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করা হয়।
o
ধরন-১ ডায়াবেটিক- রোগীর শরীরে ইন্সুলিন তৈরি হয় না। তাই ইন্সুলিন ইনজেক্সন নিতে হয়। ইন্সুলিনের ধরণ অনুসারে দিনে একবার থেকে চারবার পর্যন্ত ইনজেক্সন নিতে হয়। কেউ কেউ ইন্সুলিন-পাম্পব্যবহার করে। এটা সব সময় বহন করতে হয় এবং তা থেকে সমস্ত দিনভর নির্দিষ্ট হারে ইন্সুলিন সরবরাহ হতে থাকে। অনেকে আবার শ্বাসের সাথে ইন্সুলিন নেয়ার জন্য ইন্সুলিন-শ্বাসকব্যবহার করে।
o
ধরন-২ ডায়াবেটিস- নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যায়াম, খাদ্য পরিবর্তন ও মুখে খাওয়া ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হয়। প্রসূতি ও দুগ্ধবতী মায়েদের চিকিৎসার জন্য ইন্সুলিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
পায়ের যত্ন: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই পায়ের সমস্যায় ভুগে থাকে। ডায়াবেটিস হলে রক্তনালী ও ্লায়ুকোষের ক্ষয় হয় এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। অনেক সময় পায়ে ক্ষত হলে তাতে ইনফেক্সন না হওয়া পর্যন্ত টের পাওয়া যায় না। এমন কি চামড়া ও অন্যান্য কোষে পচন ধরতে পারে। ঠিকমত চিকিৎসা করা না হলে জীবন রক্ষার্থে পা কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে। পা কেটে ফেলার যতগুলো কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস অনেকটা এগিয়ে আছে। সুতরাং পায়ের ক্ষত ও ক্ষতি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে প্রতিদিন পায়ের পরীক্ষা ও পরিচর্যা করতে হবে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যা করা প্রয়োজন:
শরীরের ওজন আদর্শ মাপের মধ্যে রাখা ও কর্মময় জীবন যাপন করার মাধ্যমে ধরন-২ ডায়াবেটিসপ্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে।
তবে বর্তমানে ধরন-১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের তেমন কোন উপায় নেই এবং উপসর্গ না থাকলে তা ঢালাওভাবে নির্ণয়ের জন্য যাচাই বাছাই করার তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
ধরন-২ ডায়াবেটিস- এ আক্রান্ত না হয়ে থাকলে এবং কোনরূপ উপসর্গ দেখা না দিলেও যাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত-
o
অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট শিশুদের ক্ষেত্রে যদি ডায়াবেটিসের সহায়ক আশংকাজনক কারণগুলো বিদ্যমান থাকে, তবে ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করে প্রতি ২ বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে।
o
অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক যাদের বিএমআই (ওজন=কেজি /উচ্চতা=মিটার২) ২৫ অপেক্ষা বেশী এবং সেইসাথে ডায়াবেটিসের সহায়ক অন্যান্য আশংকাজনক কারণগুলো বিদ্যমান, তাদের ক্ষেত্রে প্রতি ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে।
o
বয়স ৪৫ বছরের বেশী হলে প্রতি ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে।
ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা থেকে রক্ষা পেতে হলে মাঝে মাঝে অর্থাৎ বছরে অন্তত চার বার ডায়াবেটিক হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। কোন সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
নিয়মিত যে বিষয়গুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে-
o
মাঝে মাঝে রক্তচাপ মেপে দেখতে হবে এবং তা অবশ্যই ১২০/৮০মিমি.মার্কারি বা তার নীচে রাখতে হবে।
o
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রতি ৬ মাস পর পর HbA1c পরীক্ষা করে দেখতে হবে। নিয়ন্ত্রণে না থোকলে প্রতি তিন মাস অন্তর তা পরীক্ষা করতে হবে। HbA1c এর মাত্রা < ৬.৫% রাখতে হবে।
o
প্রতি বছর রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে রক্তে যেন- এল.ডি.এল < ১০০মি.গ্রাম/ ডেল, এইচ.ডি.এল> ৪০মি.গ্রাম/ডি.এল ও ট্রাইগ্লিসারাইড < ১৫০ মি.গ্রাম/ডি.এল থাকে।
o
প্রতি বছর কিডনীর কার্যকারীতা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিশেষ করে সেরাম ক্রিয়েটিনিন ও মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া কিরূপ অবস্থায় আছে তা নির্ণয় করে দেখতে হবে।
o
প্রতি বছর অন্তত একবার চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ বিশেষ করে যারা ডায়বেটিক রেটিনোপ্যাথি সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের কাছে গিয়ে চোখ দেখাতে হবে। অসুবিধা থাকলে মাঝে মাঝে যেতে হবে।
o
দাঁতের যত্ন নিতে হবে এবং ৬ মাস পর পর দন্ত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাঁত পরিষ্কার করাতে হবে।
o
চিকিৎসা কর্মীর কাছে গেলে অবশ্যই পা পরীক্ষা করাতে হবে।
o
সংক্রামক ব্যাধির প্রতিষেধক নেয়ার ব্যপারে সচেতন থাকেতে হবে।