ক্লাস রুমে গিয়ে দেখে- এক কর্ণারে দু'তিন জন ছেলে একসাথে গোল হয়ে কি যেন দেখছে আর অল্প-অল্প ঘামছে। তরুণীটি কেন জানি বারবার ডিসপ্লের দিক থেকে লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে, আর তরুণটি বারবার তাকে দেখানোর চেষ্টা করছে।
১৮ বছর পার হলে কি সব অপরাধ মাফ? আপনি যে পেজটি দেখতে চান সেটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য, আপনি যদি ১৮+ হন তবেই প্রবেশ করতে পারেন। এর মানে কি?
১৮ বছর পার হলে পর্ণগ্রাফি দেখা বৈধ? হ্যা বৈধ। কারণ আপনি মুসলিম নন। এরকম না লিখে লেখা উচিৎ আপনি কি মুসলিম? মুসলিম না হলে চালিয়ে যান।
যারা মনে করেন পর্ণগ্রাফী দেখা স্বাভাবিক, তাদের জন্য এ লেখা নয়।
পর্ণগ্রাফী বা নীল ছবি, অথবা এডাল্ট কন্টেন্ট যাই বলুন ইসলামে হারাম।
আপনি একজন মুসলিম। আপনার ১৩-৩৫ বছর বয়সী ছেলে, ভাই, ভাগ্নে, বন্ধু, ছাত্র, শিক্ষক বা প্রতিবেশী রয়েছে। আপনি কি জানেন এদের মধ্যে অধিকাংশেই কোনো না কোনোভাবে পর্ণগ্রাফি দেখে? চটি গল্প পড়ে?
এমনকি এক শ্রেণীর অমানুষেরা পরিবারের সবচেয়ে ভালবাসা এবং শ্রদ্ধার পাত্রদের নিয়ে এমন সব বিকৃত সম্পর্ক স্থাপনের গল্প ফাঁদে যা পড়লে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন যে কোনো মানুষের বমি আসবে। এই সম্পর্ককে অজাচার বলা হয় ।
হয়তো গাছ থেকে পড়বেন, অথবা গালি দিতে চাইবেন। অসম্ভব! এ হতেই পারে না। সবাই একরকম না, ইত্যাদি বলে উড়িয়ে দিবেন তাই না? দিলে দেন আমার কথা বন্ধ করতে পারবেন না।
মানুষ কিভাবে পর্ণগ্রাফি্র প্রতি আসক্ত হয় আসুন দেখে নিই-
২০০৫ সাল; রসু এস এস সি পাশ করে শহরের এক কলেজে ভর্তি হয়। কলেজ সংলগ্ন হোস্টেলে ওঠে সে। গ্রামের ছেলে, শহরের অনেক কিছুই জানে না, বোঝে না।
একদিন
সে তার বিছানা পরিস্কার করতে গিয়ে বিছানার তলায় একটি পাতলা বই আবিষ্কার করে। কৌতুহলি হয়ে সে একটু উল্টে-পাল্টে দেখে। কয়েক লাইন পড়ে সে তো হতবাক।
ছি! ছি! মানুষ এত খারাপ হয় কি করে? এই বই এখানে আসল কি করে?
মাথাটা তার গরম হয়ে গেল। যে ছেলে গ্রামে থাকতে রেডিওর বাংলা গান, আর বিটিভির বাংলা সিনেমা ছাড়া নারী-পুরুষের মধ্যে যে সম্পর্ক কতো ধরণের থাকতে পারে তার ধারণা ছিলনা। এই বইয়ের মধ্যে পরিবারের রক্তের সম্পর্কের মানুষগুলিকে নিয়ে যে অশ্লীল কথা লেখা সে দেখল তাতে সে ভাবল, এ বই কি কোনো মানুষ লিখতে পারে?
এভাবেই পরিচয়।
২০০৮ সাল। মদন ঢাকা শহরের এক বিখ্যাত স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ে। সারাদিন ক্লাসের পর আবার তাকে ক্রসিং সেন্টারে যেতে হয়। একদিন সে কোচিং এ গেল ক্লাস শুরু হওয়ার কিছু আগে। ক্লাস রুমে গিয়ে দেখে- এক কর্ণারে দু'তিন জন ছেলে একসাথে গোল হয়ে কি যেন দেখছে আর অল্প-অল্প ঘামছে। একটু কৌতুহলি হয়ে সে পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যা দেখল তাতে তার মাথা ঘুরে এল। ছি! তোরা এত নিচ! আমি স্যারকে সব বলে দেব। ছেলেরা বলে উঠল এ...হ...দরবেশ সেজেছে। যা যা বল গিয়ে।
২০১৫ সালের মার্চ মাস। কিছুক্ষণ আগেই সন্ধ্যা হয়েছে। ঢাকার নীলক্ষেত থেকে আজিমপুরের উদ্দেশ্যে ফুটপাত দিয়ে হাটছে রবি। এটিএম বুথ এর পর হতেই শুরু হয় প্রেমলীলা। এসব দেখে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কিছুদূর যাওয়ার পর এক জায়গায় বেশি অন্ধকার। তার মধ্যে সামান্য আলো, বড় স্মার্টফোনের ডিসপ্লে। সে আলোয় দুজন তরুণ-তরুণীর মুখ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তরুণীটি কেন জানি বারবার ডিসপ্লের দিক থেকে লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে, আর তরুণটি বারবার তাকে দেখানোর চেষ্টা করছে। কৌতুহলি হয়ে কয়েক সেকেন্ড সে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করল ঘটনা কি। সে যা দেখল তার জন্য কখনোই প্রস্তুত ছিল না।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এক দুপুর। ঢাবির রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এ জরুরি কাগজপত্র তোলার জন্য গিয়েছে রাহাত। ৩য় তলার ০০১ নং কক্ষে মুরব্বি টাইপের এক লোক বসা। বয়স দেখে মনে হয় বয়স ৬০ এর মতো হবে, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে, সরাসরি মুরব্বির পাশে চলে গেল সে। মুরব্বির হাতে একটা মাল্টিমিডিয়া মোবাইল। কাছে গিয়ে রাহাত কর্মকর্তার মোবাইলের ডিসপ্লেতে যা দেখল, তাতে মানুষ সম্পর্কে তার ধারণা বদলে গেল। পৃথিবীতে সে বয়স্ক মানুষকে শ্রদ্ধা করতে ভুলে গেল।