Wednesday, August 12, 2015

একটা করে গালী আর সেই তালে থাপ্পর----

স্টেডিয়াম থেকে সবে মাত্র ভারত – দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনাল খেলা দেখে বেরুচ্ছি। স্টেডিয়ামের ৪ (চার) নাম্বার গেট তখনো পার হইনি। দেখি এক টোকাই অকথ্য ভাষায় গালী দিচ্ছে মোটাসোটা লম্বা আমার সমবয়সী এক ছেলেকে। আর মোটা ছেলেটা টোকাই এর গলা চেপে ধরে গালে থাপ্পর দিচ্ছে গালীর তালে তালে।
একটা করে গালী বের হচ্ছে আর সেই তালে থাপ্পর। স্টেডিয়ামের গেট থেকে বেরুলেই LG এর স্টল। সেখানে জোরে গান বাজানো হচ্ছে। গানের শব্দে গালী ভালভাবে শোনা না গেলেও, থাপ্পরের আওয়াজ ঠিকই শোনা যাচ্ছিল। কেউ দমবার পাত্র নয়। থাপ্পর/গালী সমানতালে। কিছু বিনে পয়সার দর্শক জর হয়ে গিয়েছিল। আমিও ছিলাম তাদেরই একজন। বুঝতে চাচ্ছিলাম আসল ঘটনা কি। বুঝতে বুঝতেই টোকাইটা অই ছেলের হাত থেকে ফসকে দৌড়। নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে চোখ মুছতে মুছতে আরো তীব্র গালাগালি। দেখার মত দৃশ্য।
এক হাতে তালি বাজে না। দোষ দুজনেরই আছে। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে টোকাই ছেলেটা অশিক্ষীত, হয়ত পেটের দায়ে কোন কাজে এসেছে। আর আমার সমবয়সী ছেলেটা সার্টিফিকেটধারী শিক্ষীত তা দেখি আন্দাজ করা যাচ্ছিল এবং এসেছে বিনোদন খোঁজার আশায়।
বিবেকের হিসাব খুব কম ভুল হয়। আমার বার বার ইচ্ছে হচ্ছিল নাদুস নুদুস ছেলেটাকে গলা চেপে ধরে বলি, আমাকে গালী দে হারামজাদা আর আমি তোকে কিছুক্ষন থাপড়াই। কিন্তু না, সেটা পারলাম না, কারণ টোকাইটার মত আমারও পেছনে কোন ব্যাকাপ ছিল না, যেটা সেই নাদুস নুদুসের ছিল। খুঁটির জোর সত্যিই দরকারী জিনিস। আর পৃথিবীর সব সিকিউরিটি শুধু ধনীদের জন্যই। একারনেই বিনে পয়সার নিশ্চুপ দর্শকদের মাঝে কিছু পুলিশ ও আনসার ও ছিল। হয়ত তাদের ব্যাকাপ টোকাইটার থেকেও কম ছিল।রক্ষা এই যে, নাদুস ছেলেটার কিছু বন্ধু তাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল।