Wednesday, August 12, 2015

অনুগল্পঃ সাইলেন্ট ভালবাসা---

পর্যাপ্ত জ্বালানীর অভাবে চোখদুটো তখন একেবারে নিভু নিভু অবস্তা। তার সাথে মাথার উপরে নিচে একটি করে বালিশ দিয়ে কৃত্রিম নিশ্বব্দ পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে। এর মাঝেই গোঁ গোঁ টাইপের কর্কশ শব্দে কাপা শুরু করলো বিছানা। বিরক্ত হয়েই ফোনটা বালিশের নিচ থেকে হাতরে বের করে আনলাম। বেজে উঠা ফোন কলটা বার্ধক্যে উপনিত হওয়ার আগেই রিসিভ করলাম।
‘হ্যালো বলার অগেই ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো, ভালো আছো তুমি? ফোনে লাইভ নারী কন্ঠ শোনার অভ্যাস নাই বল্লেই চলে। নিভু চোখের পুরো জ্বালানীটা যেন শুধু হৃৎপিন্ডের গতি বৃদ্ধিতেই ব্যাবহৃত হচ্ছিল সেই মুহূর্তে। কি বলব না ভেবেই, স্বভাব সুলভ বলে বসলাম, মারাত্বক আছি
কথাটাযে সত্যি ছিল, তা উপলব্ধি করতে পেরেছি অনেক পরে। ততক্ষণে আর মিথ্যা বলার উপায় নেই। ইতোমধ্যে নারীকণ্ঠটি স্ক্যান হয়ে, তার পরিচয় বের করে, পুরনো সৃতি গুলো একে একে জমা করে যাচ্ছিল আমার মস্তিষ্ক। অচেনা নারীকণ্ঠটি একদম পরিষ্কার রঙিন হয়ে গিয়েছে ততক্ষনে।
“তোমার বাচ্চা কয়টা এখন?” – এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য নিজেও প্রস্তুত ছিলাম না একেবারেই। মন থেকে এক ঢিলে ২ পাখি মারার উদ্দেশ্যে প্রশ্নটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলে এসেছে। আসলে যার সাথে কথা হচ্ছে, সে আমার ছাত্রজীবনের প্রেমিকা। ভালবাসতাম, ভালবাসা ছিল, আজো হয়তো আছে তবু যোগাযোগ নেই প্রায় ৭ কি ৮ বছর যাবৎ। সে বিয়ে করেছে কবে, এরেঞ্জ নাকি প্রেম বা আদৌ করেছে কিনা সেটাও জানি না। সবগুলো উত্তর একত্রে পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রশ্ন।
“তোমার কয়টা?” – উত্তর না দিয়ে উল্টা প্রশ্ন তার। সাথে সাথে তার সঙ্গে ভালবাসা  সম্পর্ক ছিন্ন করার অপ্রিয় ঘটনাও মনে পরে গেল। উল্টা প্রশ্ন করার অভ্যাসটা এখনও যায়নি তার। এগুলোর পাশাপাশি কি উত্তর দিব ভাবাচ্ছিলাম। দুটো খরগোশের বাচ্চা আছে আমার। কয়েক বছর যাবত পুষচ্ছি। সেগুলোর কথাই কি বলে দিব? এই দুষ্টামি টা করা কি ঠিক হবে এই মুহূর্তে? জ্বালানীর অভাবে মস্তিষ্কটাও যেন একেবারে ধীরে কাজ করচ্ছিল। উত্তর দেব নাকি আমার প্রশ্নের উত্তর না দেয়ার দরুন ঝগড়া চালিয়ে যাব, ভেবে পাচ্ছিলাম না।