Saturday, August 18, 2018

কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব-১ : জান্নাতে দুধ-মধু-মদের নহর , পর্ব ২ : মুহাম্মদ পাগল নন, পর্ব ৩: অদৃশ্যে বিশ্বাস করতে হবে কোরানের বাণী, পর্ব ৪: ফেরেশতার ডানা, জিবরাইলের ডানা


 

হ্যা, জান্নাতের কথা বলছি। কোরানের আয়াত দেখি। লিংক ১, লিংক ২
পরহেযগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যারা স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে? [সুরা মুহাম্মদ, ৪৭; আয়াত ১৫]
(সব নিচে কোরানের এই আয়াতের তিনটি প্রসিদ্ধ অনুবাদ যোগ করে দেয়া হয়েছে।)
নহর মানে হচ্ছে নদী।
অর্থাৎ জান্নাতে চারটি নহর বা নদী থাকবে
১। পানির নদী
২। নির্মল দুধের নদী
৩। সুস্বাদু মদের নদী
৪। পরিশোধিত মধুর নদী
পানি, দুধ, মদ, নদী এই চারটি দ্রব্যই মুহাম্মদের যুগে মক্কায় চরম আকাঙ্ক্ষার বস্তু ছিল। নদী স্বভাবতই পানির। কিন্তু অপর তিনটি লক্ষ করুন। কী কষ্ট-কল্পনা! দুধের নদী! দুধ আমরা পাই প্রাণী থেকে। তৎকালীন পশুপালক সমাজে দুধের প্রচণ্ড চাহিদা ছিল। কিন্তু পশু থেকে যে দুধ আহরিত হত তা সব সময়ই ছিল অতি অল্প। আধুনিক যুগের আগে একই অবস্থা ছিল সর্বত্র। মুহাম্মদ এমন এক জান্নাতের কথা কল্পনা করলেন যেখানে গাভীর দুধ আসবে নদী দিয়ে, এমন প্রতিশ্রুতি শুনে আত্মঘাতী হামলা করে নয় বরং হেসেই মরে যেতে ইচ্ছে হয়। আচ্ছা, এই এক নদী দুধ একজন মানুষ পান করবে কিভাবে? এর দরকার কী? এত দুধ দিয়ে একজন জান্নাতি করবেটা কী? জান্নাতে না যা ইচ্ছে তা পাওয়া যায়, তাহলে আলাদা ভাবে এই লোভ দেখানোর মানে কী? একই প্রশ্ন মধু আর মদ নিয়েও। দুধ, মদ আর মধু এর আগে ব্যবহৃত বিশেষণগুলো দেখেন। জান্নাতে নদী দিয়ে দুধ আসবে, সেটা যে নির্মল হবে, ভেজাল থাকবে না তা বলে দিতে হয়। মদ সুস্বাদু হবে, কিন্তু অন্যত্র বলা হয়েছে এটা পান করে নাকি কেউ মাতাল হবেনা! তাহলে সেটা আবার মদ হল কিভাবে? আর পরিশোধিত মধু! সর্বশক্তিমান, সবজান্তা আল্লাহপাক যিনি ´কুন´ বললেই হয়ে যায় তিনি মধুর পরিশোধনাগার বসাবেন জান্নাতে। মধু তো থাকবে মৌচাকে। মৌমাছরা মধু আহরণ করে তাদের ছানাপোনাদের জন্য, মানুষের জন্য নয়। মানুষ মৌমাছিদের তাড়িয়ে মধু সংগ্রহ করে। এই মধু নদী দিয়ে আসবে কেন? এক গ্লাস মধুই যেখানে যথেষ্ট সেখানে মধুর স্রোতে ভাসিয়ে দেয়ার চিন্তাটা একেবারেই আজগুবি। একবার কল্পনা করেন, নদী দিয়ে মধু প্রবাহিত হচ্ছে! আবার ভেবে দেখেন নদী দিয়ে শুধু মদ আর মদ আসছে। কল্পনার একটা সীমা থাকা কি উচিত ছিল না?
একজন মানুষকে প্রতিদান হিসাবে পানি, মধু আর দুধের নহর দেয়া হচ্ছে সেটা অসুস্থ আদিম চিন্তা। এখনকার কোনো একজন সুস্থ বুদ্ধির মানুষকে এরকম প্রতিদান দেয়ার কথা বললে সে কি তা গ্রহণ করবে? দেড় হাজার বছর আগে এসব দ্রব্যের অভাবে প্রবলভাবে ভোগা মরুভূমির মানুষগুলোকে মুহাম্মদ ভালই ধোঁকা দিয়েছিলেন। আমাদেরকে মাথা খাটাতে হবে। বিরাট প্রতিদান শুনলেই মাথা খারাপ করা চলবে না। মানুষের অতি-লোভ তার স্বাভাবিক চিন্তা ভাবনার ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। এজন্য প্রতারকরা মোবাইল ফোনে, ইমেইলে বিশাল অংকের লটারী বিজয়ের ভুয়া সংবাদ দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের টাকা হাতিয়ে নেয়।
আর মদও পান করত লোকে মুহাম্মদের সময়ে। তাই এ বস্তুরও লোভ দেখাতে হয়েছে তাদেরকে বশ করতে। এক্কেরে নদী দিয়ে বয়ে যাবে মদ, হাহ হা
আয়াতটির পরের অংশে আসি। বলা হচ্ছে, জান্নাতে ফলমূল থাকবে আবার সাথে থাকবে ক্ষমা। এখানে জান্নাতীরা কি পাপ করতে থাকবে যাতে মহান ক্ষমাশীল আল্লাপাক তাদের ক্ষমা করে দিতে পারেন? জান্নাতে তো কোনো অপরাধ থাকার কথা না, তারপরেও এই ক্ষমার ব্যাপারটা এলো কোত্থেকে?
আর জাহান্নাম নিয়ে থ্রেট আছে তো! উপরোক্ত আয়াতে দেখেন, জাহান্নামীদের পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে! কী পৈশাচিক চিন্তা ছিল আমাদের দয়াল নবীর! আল্লাহকে কী নৃশংস রূপে চিত্রিত করেছেন তিনি!
আসুন হাসি, হাসা দেহ-মন উভয়ের জন্য স্বাস্থ্যকর। আর ভাবি, এগুলো বিশ্বাস করার মত বোকা মানুষ হয় কিভাবে।
------------------
------------------
------------------
------------------
[তোরাহ এর Garden of Eden এর বর্ণনায় চারটি নদীর কথা বলা হয়েছে। নবীজি স্পষ্টত এখান থেকে এই ধারণা পেয়েছেন। বেশ কিছু হাদিসেও এই ব্যাপারটি এসেছে।
Genesis 2: "10 A river issues forth from Eden to water the garden, and from there it is divided and becomes four headwaters 11 the name of the first is Pishon…13 The name of the second river is Gihon…14 The name of the third river is Hiddekel (Dijla/ Tigris)… and the fourth river is the Purat/ Euphrates"]
আর তিনটি ইংরেজি অনুবাদ এই আয়াতের
047.015
YUSUFALI: (Here is) a Parable of the Garden which the righteous are promised: in it are rivers of water incorruptible; rivers of milk of which the taste never changes; rivers of wine, a joy to those who drink; and rivers of honey pure and clear. In it there are for them all kinds of fruits; and Grace from their Lord. (Can those in such Bliss) be compared to such as shall dwell for ever in the Fire, and be given, to drink, boiling water, so that it cuts up their bowels (to pieces)?
PICKTHAL: A similitude of the Garden which those who keep their duty (to Allah) are promised: Therein are rivers of water unpolluted, and rivers of milk whereof the flavour changeth not, and rivers of wine delicious to the drinkers, and rivers of clear-run honey; therein for them is every kind of fruit, with pardon from their Lord. (Are those who enjoy all this) like those who are immortal in the Fire and are given boiling water to drink so that it teareth their bowels?
SHAKIR: A parable of the garden which those guarding (against evil) are promised: Therein are rivers of water that does not alter, and rivers of milk the taste whereof does not change, and rivers of drink delicious to those who drink, and rivers of honey clarified and for them therein are all fruits and protection from their Lord. (Are these) like those who abide in the fire and who are made to drink boiling water so it rends their bowels asunder.
কল্পনার ফানুশ

কৃতজ্ঞতা: শিরোনামটি ধর্মকারী থেকে নেওয়া। নিশ্চয় সকল প্রশংসা তারই।


কোরানের বাণী, কেন এত ফানি, পর্ব ২ : মুহাম্মদ পাগল নন

মুহাম্মদ নিজেকে নবি বলে ঘোষণা করে জোড়াতালি দিয়ে ও নিজে নিজে কিছু আয়াত রচনা করে যখন দাবি করলেন এসব কৌতুকধর্মী আয়াত আল্লাহ তার কাছে পাঠায় তখন অনেকেই তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এর সমাধান দিচ্ছে আবার সেই কোরান। সেখানে বলা হচ্ছে, আপনাদের সঙ্গী (মুহাম্মদ) পাগল নন। সবাই বলেন সুবানাল্লাহ! আমাদের পেয়ারা নবি পাগল নন, আলহামদুলিল্লাহ!
আরবিতে পাগলকে বলা হয় মাজনুন। আপনারা লাইলি-মজনুর কাহিনী শোনেছেন নিশ্চয়ই। লাইল মানে হচ্ছে রাত আর মজনু মানে হচ্ছে পাগল। সাহাবিদের কথা শুনেছেন, সাহাবি মানে সঙ্গী, ছাহিবুকুম মানে আপনাদের সঙ্গী। বলা হচ্ছে, ওয়ামা ছাহিবুকুম বিমাজনুন, মানে আপনাদের সঙ্গী পাগল নন। (সুরা তাকবির, আয়াত ২২)
২২.) আর (হে মক্কাবাসীরা!) তোমাদের সাথী পাগল নয়।
তাফহিমুল কোরানের তাফসির: সাথী বলতে এখানে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বুঝানো হয়েছে। তাঁকে মক্কাবাসীদের সাথী অভিহিত করে আসলে তাঁকে এ বিষয়ের অনুভূতি দেয়া হয়েছে যে, তিনি তাদের জন্য কোন আগন্তুক বা অপরিচিত লোক নন। বরং তিনি তাদেরই জাতি ও গোত্রভুক্ত। তাদের মধ্যেই সারা জীবন তিনি অবস্থান করেছেন। তাদের শহরের প্রতিটি আবালবৃদ্ধবনিতা তাঁকে চেনে।
আর হ্যা, তাকে চিনে বলেই পাগল বলছে। আর মহান আল্লাপাক আয়াত নাজিল করে মানুষ জনকে জানিয়ে দিচ্ছেন উনি পাগল নন। সে আয়াত আবার নাজিল হচ্ছে যার উপর তার সম্পর্কেই সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়া হচ্ছে।

সুরা সাবার ৪৬ তম আয়াতে বলা হচ্ছে, তোমাদের সাথির মধ্যে এমন কি কথা আছে যাকে প্রলাপ বলা যায়?
এখন উক্ত প্রশ্নের জবাব আপনারা দেন তো!
সুরা ফুরকানের ৮ম আয়াতে বলা হয়েছে,
আর জালেমরা বলে, “তোমরা তো একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছো।”
তাফহিমুল কোরানের তাফসির: অর্থাৎ পাগল। আরবদের দৃষ্টিতে পাগলামির কারণ ছিল দু'টো। কারো উপর জ্বীনের ছায়া পড়লে সে পাগল হয়ে যেতো অথবা যাদু করে কাউকে পাগল করা হতো।
সুরা আরাফের ১৮৪ তম আয়াতে, তারা কি কখনো চিন্তা করে না, তাদের সাথীর ওপর উন্মাদনার কোন প্রভাব নেই?
হাহ হাহ হা! এমন কী হয়েছিল আল্লাকে মুহাম্মদের উন্মাদনা যে নেই সেটাও নিশ্চিত করতে হয়েছিল মুহাম্মদের উপরই আয়াত নাজিল করে।
পাগলের উপরওয়ালা যিনি, নিশ্চয় তিনি ছাগল হবেন, তাতে সন্দেহ কোথায়?
তাই তো ধর্মকারী
.

কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব ৩: অদৃশ্যে বিশ্বাস করতে হবে



আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা সুরা বাকারায় বলছেন,
আলিফ লাম মীম। ইহা সেই কিতাব যাহাতে কোনো সন্দেহ নাই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য, যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।
প্রথমেই গোঁজামিল। আলিফ লাম মীম – এর মানে কী তা কেউ জানে না। যার মানে কেউ জানেনা তাকে অর্থহীন বলাই উচিত। যে গ্রন্থ সকল মানুষের উদ্দেশ্যে প্রণীত সে গ্রন্থে এরকম উদ্ভট হুরুফে মুক্বাত্তাত থাকার কী মানে কে জানে।
তারপরের মহান বাণী, ইহা সেই কিতাব যাহাতে কোনো সন্দেহ নাই। সেই সন্দেহ কি আল্লাহ পাকের নাকি মুহাম্মদের না মুমিন উজবুকদের? এমনভাবে সন্দেহের কথা বলা হচ্ছে যেন আল্লাহপাক নিজেকে প্রবোধ দিচ্ছেন বিশাল সন্দেহের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে। অথবা নিজের বাণী আল্লাহর নামে চালিয়ে দিতে দিতে মুহাম্মদের মধ্যে প্রায়শ যে সন্দেহের দোলাচল কাজ করত তারই বহি:প্রকাশ। নাহলে এমন বিনোদনধর্মী কথাবার্তা এখানে আসবে কেন? এক্কেরে প্রথমেই সন্দেহ, এর নামই কোরান। ২য় পর্বে লেখেছি, আল্লাহ পাক মুহাম্মদকে নিশ্চিত করছেন, তিনি পাগল নন। এখন আবার কোরানের প্রথমে আপনি যখন পড়া শুরু করেছেন মাত্র তখনই নিয়ে এসেছেন সন্দেহের আয়াত। ঠিক যেমন জোকের তেল বিক্রেতা তার মহা-গুণধর ঔষধ জনসমক্ষে প্রদর্শনের আগে যে বক্তৃতা দেয়, আপনাদেরকে এখন যা ঔষধটি দেখাব সেটা সেবন করলে আর কোনো দুর্বলতা থাকবে না!

যেজন্য এটা লেখা। সেটা হচ্ছে অদৃশ্যে বিশ্বাস। কেন কোরানের একদম প্রথমেই এই অদৃশ্যের ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে আসা হল? সন্দেহের আয়াতের ঠিক পরেই।
যেহেতু একটু পরেই শুরু হবে অদৃশ্য-অবাস্তব-গাঁজাখুরি বস্তু নিয়ে মহাকীর্তন। আল্লাহপাক নিজেই অদৃশ্য, ফেরেশতা অদৃশ্য, পরকাল অদৃশ্য, জান্নাত-জাহান্নাম সবই অদৃশ্য। আর মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তিনিও অদৃশ্য, তার কোনো ছবিও আঁকতে দেন নি কাউকে। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে আজ থেকে এক দুই বা শত নয়, দেড় হাজার বছর আগে সুদূর মক্কার কোনো এক লোকের সাথে আল্লার ডাইরেক্ট কানেকশন ছিলো। এরকম জিনিসে বিশ্বাস না করলে কিন্তু পুরাই খবর আছে।
এছাড়া বিশ্বাস ব্যাপারটা নিয়েও কথা হোক। বিশ্বাসের প্রয়োজন হয় তখনই যখন তা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ থাকে। যা প্রমাণ সম্ভব তাকে কেউ বিশ্বাস করতে বলে? আর যে বস্তুতে বিশ্বাস করতে বলা হয় তাতে যেকোনো যুক্তিবাদির সন্দেহ করা উচিত সবার আগেই। ধর্মগুলোতে বিশ্বাসের আদেশ করা হয়, আহবান করা হয় – এগুলো যাচাই করতে বলা হয় না। আপনি যাচাই করেন আর না করেই বিশ্বাস করে ফেললে অনন্ত স্বর্গ। হাশেম মোল্লার ছেলে বাপের দেখে কোরানে হাফেজ হয়ে জান্নাতে হুরি ভোগে চলে যাবে, আর আমরা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে ইমান হারিয়ে অনন্ত জাহান্নামে। How funny!
মূল প্রসঙ্গে চলে আসি। শাস্ত্রে নির্দেশ থাকলেই অদৃশ্য বিষয়ে আমাদের কি বিশ্বাস স্থাপন করা উচিত? তাহলে আগে দেখি দৃশ্যমান বস্তুতেই আমরা কতটুকু বিশ্বাস স্থাপন করতে পারি।
আমাদের সকল অঙ্গের ব্যাপক ত্রুটি রয়েছে। তাই সব কটি ইন্দ্রিয়তে হেলুসিনেশন হয়। চোখের দেখার মধ্যে অনেক ভুল থাকে, ভিজুয়াল হেলুসিনেশন হয়, ইল্যিউশন হয়। আমরা দড়িকে সাপ ভেবে ভুল করি। ভয়ের মধ্যে থাকলে ভুত দেখে ফেলি এবং পরে ব্যাপক আত্মবিশ্বাসের সাথে তা বলেও বেড়াই। দুটি বস্তুর দৈর্ঘ-প্রস্থের তুলনায় ভুল করি। মরিচীকা দেখি। আবার আমাদের দেখার ভুল আর মস্তিষ্কের অনুধাবনের সমস্যার কারণে pareidolia এর প্রাদুর্ভাব হয়। খ্রিস্টানরা আকাশে, দেয়ালে যিশুকে দেখে ফেলে, হিন্দুরা গরুর দেহে ওম দেখতে পায়, মুসলমানরা মাংসের টুকরোয় আল্লাহ লেখা দেখতে পায় ইত্যাদি।
আবার সূর্যকে আমরা অতি ছোট্ট দেখি, মনে হয় সে যেন চাঁদের তুলনায় খুব একটা বড় নয়। আমরা দেখি সূর্য আর চাঁদ উভয়টাই পৃথিবীকে ঘুরছে। আমরা দেখি সূর্য সাগরে অস্থ যাচ্ছে। আমরা দেখি তারাগুলো বড্ড ছোট আকারের। আমরা দূরের পাহাড়গুলোকে কাছে দেখতে পাই। অর্থাৎ এমনকী দৃশ্যমান বস্তু ও এর সম্পর্কিত ব্যাপারগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই ছাড়া বিশ্বাসযোগ্য নয়, গ্রহণযোগ্য নয়। সেখানে আল্লাহ বলছেন, অদৃশ্যে বিশ্বাস করতে। How funny!


কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব ৪, ৫ ও ৬


(এই তিন পর্ব ব্লগ আপডেটের প্রাক্কালে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। লিংক পর্ব , , )
কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব ৪: ফেরেশতার ডানা, জিবরাইলের ডানা

সবজান্তা মহান আল্লাহ পাকের কাছ থেকে বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে নবি-রসুলগণের নিকট চুপিচুপি পৌছে দেন জিবরাইল। আল্লাহর বার্তা বলে কথা, সেগুলো খুব দ্রুত পৌছে দিতে হবে। তাই জিবরাইলের দরকার ডানা। যত বেশি ডানা তত দ্রুত পৌঁছাবে। কিন্তু পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে একশ’ কিলো মিটার উপরে মানে কার্মান লাইনের উপরে বিমান চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়ে, সেখান থেকেই আমরা মহাশূন্যের শুরু বলে ধরে নেই। পৃথিবী থেকে বাইরে বায়ুশূন্য স্থানে যেতে প্রয়োজন হয় রকেট। বিমান চালানোর সময় তা বায়ুর উপর নির্ভরশীল থাকে। অপরদিকে পাখিদের কথা ভাবুন, তারা বায়ুর উপর ভর দিয়ে ভেসে থাকে, চলাফেরা করে। বায়ুশূন্য স্থানে পাখি উড়া অসম্ভব, বিমান চালানো অসম্ভব। এগুলো দেড় হাজার বছর আগে মুহাম্মদ জানার কথা নয়। তিনি নিশ্চয়ই ভেবেছিলেন পৃথিবী থেকে উর্ধ্বে আল্লাহ পাকের সিংহাসন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ বায়ু আছে, তাই অনেক গুলো ডানা নিয়ে জিবরাইল দ্রুত সংবাদ বহন করতে পারবেন।
যাই হোক, সর্বজ্ঞানের উৎস ও বিজ্ঞানময় কিতাব আল-কোরানে ফেরেশতাদের ডানা সম্পর্কে কী আছে আগে দেখি
‘‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।’’ (ফাতির, আয়াত ৩৫)
আয়াতে বিনোদনের অভাব নাই। প্রথমেই সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। এ কথা আল্লাপাক বাববার নিজে স্মরণ করেন আবার আমাদেরকেও স্মরণ করিয়ে দেন যাতে তার সাথে অন্য কাউকে শরিক করে না দেই। আমরা যদি অন্য কাউকে তার সাথে শরিক করে ফেলি তবে তার অপরিসীম মান-সম্মানের আর কী অবশিষ্ট থাকলো? আলহামদুলিল্লাহি ফাত্বিরিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা। হামদ মানে প্রশংসা, ফাত্বির মানে স্রষ্টা, সামাওউয়াত মানে আকাশ আর আরদ মানে পৃথিবী। এ আয়াত বেশ সরল, সহজেই বুঝা যায়।

আল্লাহ পাক বলেছেন, তিনি ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম। ‘ইন্নাল্লাহা আ’লা কুল্লি সাইইন ক্বাদির’ বা ‘নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম’ কথাটি থেকে আর এর আগের কথা ‘তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন’ থেকে এটাই বুঝা যায় যে আল্লাপাক ইচ্ছা করলে আরো ডানা সংযোজন করে দিতে পারেন যাতে তার পেয়াদা ফেরেশতারা আরো দ্রুত তার আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারেন। হাহ হাহ হা। নিশ্চয়ই তিনি মহাজ্ঞানী।

আবার আল্লাহ পাক পরাক্রমশালী হওয়া স্বত্ত্বেও কেন তার ফেরেশতাদের প্রয়োজন হয় সেটা নিয়ে আরজ আলী মাতুব্বর প্রশ্ন তুলেছিলেন। মুহাম্মদ আল্লাহকে কল্পনা করেছেন মহারাজা হিসাবে, তার তো আরশ বা সিংহাসন লাগবে, পেয়াদা লাগবেই। ডিজিটাল আইডিয়া মুহাম্মদের থাকার কথা না। সেসময় বেশ শক্তিশালী বিভিন্ন রাজার অস্তিত্ব ছিল বিশ্বব্যাপী। এগুলো দেখে তিনি নিজের কল্পনায় সাজিয়ে নিয়েছেন পৌত্তলিকদের ঈশ্বর আল্লাহকে।
জিবরাইল মুহাম্মদের কাছে বার্তা নিয়ে আসতেন। এটা আল্লাহ ও মুহাম্মদ দুই জনের কাছেই অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তাই কল্পনার গরুকে গাছে তুলে দিতে হবে। আমরা বুখারি শরীফের হাদিস দেখি
‘‘মুহাম্মদ জিবরাইলকে দেখেছেন ৬০০ ডানাবিশিষ্ট অবস্থায়’’ সহীহ বুখারি, ৪:৫৪:৪৫৫, লিংক
পেয়ে গেলেন তাহলে ৬০০ ডানার জিবরাইল। এগুলো দিয়ে তিনি আরশ থেকে পৃথিবী অবধি দাপিয়ে বেড়াতেন নিশ্চয়ই। সুভানাল্যাহ!
নিশ্চয় আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য কোরানকে করেছেন বিনোদনময়। আর প্রেরণ করেছেন এক মহানবী যিনি হাদিসকে করেছেন আবেদনময়। সকল প্রশংসা তারই।


¤

কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব ৫: নূহ নবি ৯৫০ বছর বেচেছিলেন
হ্যা, ভুল শোনেন নাই। এই হচ্ছে মহাবিজ্ঞানময় কোরানের বাণী। একদম সরল, নূহ নবি ৯৫০ বছর জমিনে ছিলেন। সুরা নম্বর ২৯, আন-কাবুত, আয়াত নম্বর ১৪
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَى قَوْمِهِ فَلَبِثَ فِيهِمْ أَلْفَ سَنَةٍ إِلَّا خَمْسِينَ عَامًا فَأَخَذَهُمُ الطُّوفَانُ وَهُمْ ظَالِمُونَ

আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তাদেরকে মহাপ্লাবণ গ্রাস করেছিল। তারা ছিল পাপী।
We (once) sent Noah to his people, and he tarried among them a thousand years less fifty: but the Deluge overwhelmed them while they (persisted in) sin.
তফসিরে বলা হচ্ছে, বস্তুত নূহ নবি আরো বেশি দিন বেচেছিলেন। এই আয়াতে শুধু তাঁর ধর্ম প্রচারের সময় কাল সম্পর্কে বলা হচ্ছে। আরবি জানেন না তাই প্রকৃত বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, এটা ঠিক নয়। আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি। এখানেও দেখতে পারেন। আয়াতটি একদম সরল। বলা হচ্ছে, নূহ তাঁর ক্বওম বা জাতির লোকদের নিকট ‘আলফা সানাতিন ইল্লা খামসিনা’ মানে পঞ্চাশ কম হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। বাংলা ‘সন’ শব্দের সাথে আপনারা পরিচিত। এই শব্দটি আরবি থেকে এসেছে, এই আয়াতে ‘সন’ শব্দটি আছে। ‘আলফা সানাতিন’ মানে হাজার সন বা বছর, ‘আলফা’ মানে হাজার। আর ‘ইল্লা খামসিন’ মানে ‘পঞ্চাশ কম বা ব্যতীত’। একদম সহজ সরল ভাষায় আল্লাপাক বিনোদন দিচ্ছেন। আর আল্লাপাকের দেয়া বিনোদনের মধ্যে কোনো বক্রতা নেই। সুভানাল্লাহ!

মুহাম্মদ এই বিনোধধর্মী আয়াতখানি বাইবেল থেকে পেয়েছেন। হয়ত কোনো খ্রিস্টান সেটা বলেছে, পুরোটা বুঝেন নি, কিন্তু বানিয়ে দিয়েছেন একখানা মহান আয়াত। আর বাইবেল মানেই সে আর বড় মাপের বিনোদন, সেটা নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করব।
আসুন ত্যানা প্যাঁচাই
তো আসুন ইমান আর বিজ্ঞানময় কিতাবের মান সম্মান রক্ষার জন্য একটু ত্যানা প্যাঁচাই, তাতে যদি ওটা রক্ষা হয়।
প্রথমেই ধরে নেই, আল্লাপাক এটা দ্বারা অন্য কিছু বুঝিয়েছেন। এক্ষেত্রে সমস্যা যেটা দেখা যায় সেটা হচ্ছে, এ আয়াত সবজান্তা আল্লাপাক কিন্তু নুহ নবি আর ঐ সময়কার কারো উপর নাজিল করছেন না, এটি আমাদের জন্য দয়াময় নবির উপর নাজিল করা হচ্ছে। অর্থাৎ আমাদেরকে মেসেজ দেয়া হচ্ছে। যখন আমাদেরকে কোনো তথ্য সরবরাহ করা হবে তখন অবশ্যই আমাদের ভাষায় কথা বলতে হবে। আর আল্লাপাক তো সবজান্তা, তিনি জানেন তাঁর কোন কথার দ্বারা আমরা কী বুঝব। সেক্ষেত্রে আল্লাপাক এমনভাবে কথা বলতে পারেন না যাতে আমরা ভুল বুঝি কেননা তাঁর উদ্দেশ্য আমাদের সঠিক জ্ঞান দেয়া।
আবারো চেষ্টা করি মান সম্মান বাচানোর। ধরি, সে যুগে মানুষ হাজার বছর বাচতো। এতে বিষয়টা হাস্যকর হয়ে উঠে। হিন্দুরা যেভাবে বলে সত্য যুগে মানুষ আকাশে-বাতাসে ঘুরে বেড়াত কারণ সেটা ছিল সত্য যুগ, হনুমান এক লাফে সাগর পাড়ি দিতে পেরেছিল, ব্যাপারটা সেরকম হয়ে যায়।
আধুনিক যুগের আগে মানুষের গড় আয়ু ছিল খুব কম। ডায়রিয়া-কলেরা ইত্যাদিসহ নানান সক্রামক রোগে অসংখ্য মানুষ মারা যেত। দুই থেকে তিন দশক আগেও গ্রাম থেকে গ্রাম উজাড় হয়ে যেত কলেরায়। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যেত অনেক মা। নবজাতকের মৃত্যুহারও ছিল অত্যন্ত বেশি। রোগ-শোক ছাড়াও যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকত, হিংস্র পশু ছিল সর্বত্র। প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ছিল খুবই অপ্রতুল। প্রস্থর যুগে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৩৩ বছর। সব সময়ই দেখা যায় এর আশেপাশেই ছিল মানুষের গড় আয়ু। ১৭শ শতকে ইংলিসদের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩৫ বছর। আধুনিক যুগে এসে টিকা, উন্নত চিকিৎসা, সার্জারি, ওষধ-পত্রের কল্যাণে মানুষের গড় আয়ু ষাটের অধিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আর মানুষের রোগ-ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তেই থাকে বয়সের সাথে। ক্যান্সার, হার্টের রোগ সহ অনেক রোগের প্রকোপ হয় বয়স বাড়লে।
তাই কয়েক হাজার বছর আগে একজন মানুষ ৯৫০ বছর বেচেছিলেন, এটি আজগুবী নয় বরং গাঁজাখুরি। এই ধরণের গাঁজাখুরি বাণীর মান-সম্মান রক্ষা করতে হলে চাপাতি ছাড়া আর কিসের উপর ভরসা করা যায়?

আর নুহের সময় সারা পৃথিবী পানিতে ডুবে গিয়েছিল বলে যে মিথ প্রচলিত আছে সেটা সম্পূর্ণ অসম্ভব।
হাদিস থেকে চুটকি
এবার হাদিস থেকে একটি চুটকি শোনাই। নুহের জীবনকাল সম্পর্কে জানলেন। এবার বলুন আমাদের আদি পিতা হজরত আদুমের উচ্চতা কতটুকু ছিল?
আল্লাহ আদমকে ৯০ ফুট উচ্চতা-সম্পন্ন করে সৃষ্টি করেছিলেন- সহীহ বুখারি, ৪.৫৫.৫৪৩
৬০ কিউবিট বা ৯০ ফুট মানে কততলা উঁচু ভাবেন এবার!
তাঁর দেহ যদি এত উচু হয়ে তবে ইয়ে মানে দুই পায়ের মাঝে যে ঠ্যাঙ এর উচ্চতা কতটুকু ছিল? আর আদুমের গার্লফ্রেন্ড বিবি হাউয়ার জননাঙ্গের গভীরতাই বা কতটুকু ছিল? যাই হোক, আদুমের উচ্চতা, ভালভাবে কল্পনা করেন, তালগাছের চেয়েও বেশি ছিল। সুভানাল্লাহ!
আরেকটি চুটকি শোনাই। এটি সহীহ আবু দাউদ থেকে। এ হাদিস পড়ে হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ। একদম শেষের দিকটা বলি-
সপ্তম আকাশের উপর একটা সাগর আছে, এই সাগরের পৃষ্ঠতল থেকে নিচের তল এক আকাশ থেকে আরেক আকাশের মধ্যবর্তী দূরত্বের সমান। এর উপরে আছে একটা বিশাল ছাগল যার খুর থেকে পাছার দূরত্ব এক আকাশ থেকে আরেক আকাশের মধ্যবর্তী দূরত্বের সমান। - সুনানে আবু দাউদ, বই নম্বর ৪০, হাদিস নম্বর ৪৭০৫
দেখছেন আল্লাপাক কত্ত মহান, তিনি ছাগলকে সাত আকাশের উপরে তুলে ফেলেন। সুভানাল্লাহ!
তিনি মহান যিনি তোমাদের জন্য এত বিনোদনের ব্যবস্থা রেখেছেন কোরান-হাদিসে, অত:পর তোমরা প্রভুর আর কোন অবদান অস্বীকার করবে? ফাবি আইয়্যি আলা ই রাব্বি কুমা তুকাজ্জিবান?
যাই হোক, একদিন মানুষ এসব গোবর্জনায় আর বিশ্বাস করবে না। সেদিন এসব বিনোদন থেকে বঞ্চিত হব।


¤
কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব ৬: ফেরেশতারা আদমকে সেজদা করল

এই কাহিনীর গুরুত্বই আলাদা। মানুষ যে সৃষ্টির সেরা জীব, এমনকি তারা যে ফেরেশতাদের চেয়েও উন্নত এই কাহিনী তার প্রমাণ।
সুরা বাকারার ২৯ নম্বর আয়াত থেকে শুরু করি
আয়াত ২৯:
তিনিই সে সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত।
মন্তব্য: জমিনে সব কিছু সৃষ্টি করার পর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। অথচ আমরা জানি বিগব্যাং এর প্রায় এক হাজার কোটি বছর পর পৃথিবীর উদ্ভব হয়েছে । পৃথিবীর বয়স ৪৫০ কোটি বছর যেখানে মহাবিশ্বের বয়স ১৪০০ কোটি বছর। এরপর বলা হয়েছে সাত আসমানের কথা, সেই প্রাচীন মানুষের বিশ্বাস।
আয়াত ৩০:
আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।
মন্তব্য: অর্থাৎ আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের সাথে পরামর্শ করছেন। এখানে খেয়াল করে দেখেন, এটা বড্ড মনুষ্যোচিত ব্যবহার। তা নাহলে আল্লাহ কেন তার রোবট সদৃশ ফেরেশতাদের এটা বলবেন আর ফেরেশতারা আবার দাঙ্গা-হাঙ্গামা আর রক্তপাতের ব্যাপারে আল্লাহকে সতর্ক করার দৃষ্টতা দেখাবে। এরপর আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না। তা-ই যদি হয় তবে ফেরেশতাদের সাথে এই মানুষের মত করে পরামর্শ করার কী দরকার ছিল? এখানে খেয়াল করেন, শুধু আল্লাহর উপরে নয় এমনকি ফেরেশতাদের উপরও মনুষ্য স্বভাব আরোপ করা হয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা, ফেরেশতাদের এই ভবিষ্যতবাণী কি পরে সঠিক হয় নি? আদম-হাওয়া আল্লাহর আদেশ অমান্য করলেন, পৃথিবীর অতি অল্প কিছু মানুষ ছাড়া সকলেই নাফরমানিতে লিপ্ত। তাহলে ফেরেশতারা কি আল্লাহর তুলনায় অধিক জ্ঞানী ছিল?
আয়াত ৩১ ও ৩২
আর আল্লাহ তাআলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর (ফেরেশতাদের) বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক।
তারা(ফেরেশতারা) বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।
মন্তব্য: এরপর আল্লাহ পাক যা করলেন সেটা কৌতুককর। আদমকে শিখিয়ে দিলেন সকল বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক। কী অদ্ভূত! আদমকে সমগ্র বস্তুর নাম শেখানো হয়েছে অথচ ফেরেশতাদের এগুলোর নাম না শিখিয়েই জিজ্ঞেস করা হচ্ছে এদের নাম। আল্লার লীলাখেলার নমুনাটা দেখেন। যেন তিনি পুরাই ঘিলুহীন, ফেরেশতাদের কিছুই না শিখিয়ে তাদের পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছেন।
বিনোদন এখানেই শেষ নেই। পরের আয়াত দেখেন
আয়াত ৩৩ ও ৩৪:
তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর!
এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল।
মন্তব্য: তারপর আল্লাপাক আদমকে বললেন ফেরেশতাদের এসব দ্রব্যের নাম বলে দিতে। তারপর ফেরেশতাদের বললেন, আদমকে সিজদা দিতে। ইবলিশ ছাড়া সকলেই সিজদা দিল। এসবের মানে কী? আল্লাহ আদমকে বস্তুগুলোর নাম শেখালেন কিন্তু ফেরেশতাদের শেখালেন না। তাতে কিভাবে প্রমাণ হল যে আদম শ্রেষ্ট? যদি আদম নিজের চেষ্টায় শিখে ফেলত তাহলে নাহয় একটা কথা ছিল। আর আল্লাহর আদেশ সরাসরি আমান্য করার মত ক্ষমতা তুচ্ছ ইবলিশের হয়ে গেল আর সে কাফিরদের অন্তর্ভূক্ত হল। উদ্ভট ব্যাপার-স্যাপার!
এর পরে কী হল? আল্লাপাক আদম আর হাওয়াকে জান্নাতে রাখলেন। আবার আদেশ দিলেন এক গাছের ফল না খেতে। আল্লাপাক ঐ গাছটাকে জান্নাত থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হলেও সেটা কিন্তু তিনি করলেন না। এবং শয়তানকে আদমের নাগাল পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। আর শয়তানও তার অপকর্ম করে গেল। কী অদ্ভূত! কী উদ্ভট! আল্লাপাকের কাজকর্ম, পরিকল্পনার কোনো আগামাথাই নাই! আবার আদমের জন্য আগে থেকেই পৃথিবীকে তৈরী করে রেখেছেন। তাহলে এদেরকে জান্নাতে রেখে এত আজব লীলাখেলা দেখানোর মানে কী?
আফসোসের বিষয়, মুমিনেরা বারবার কোরান পাঠ করলেও ইমান বিভ্রাটের দরুন এসব বিনোদন মোটেও উপভোগ করতে পারেন না।
এ থেকে আমরা কী বুঝলাম? হয় আল্লাহ পাক সম্পূর্ণ কাণ্ডজ্ঞানহীন এক খেয়ালি মানুষ-রাজা অথবা তিনি কোনো উন্মাদের কল্পনার ফসল।
এই সিরিজের অন্যান্য লেখাগুলোর লিংক
কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব ৩: অদৃশ্যে বিশ্বাস করতে হবে
কোরানের বাণী, কেন এত ফানি, পর্ব ২ : মুহাম্মদ পাগল নন
কোরানের বাণী, কেন এত ফানি? পর্ব-১ : জান্নাতে দুধ-মধু-মদের নহর