Sunday, July 31, 2016

বুড়ো বয়সে মুহাম্মদ এক ডজন সুন্দরী যুবতী স্ত্রী নিয়ে মহা বিপদে পড়েন।


লিখেছেনঃ  Nilhan Chowdhury

নিজের পালিত পুত্র যায়িদের সুন্দরী স্ত্রী জয়নবের সাথে মুহাম্মদের পরকীয় প্রেম দেখে তার স্ত্রীগণ বিশেষত আয়েশা এবং হাফসা তারই শিখানো পদ্ধতিতে পরকীয় প্রেম-মহব্বতে জড়িয়ে পড়েন ।
জীবিকার তাগিদে মুহাম্মদ যুদ্ধবিগ্রহ আর লুণ্ঠন-লুটতরাজে অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকায় তার অনুপস্থিতিতে সুন্দরী স্ত্রীগণ তরুণ সাহাবীদের সাথে চুটিয়ে প্রেমপিরিতি চালিয়ে যান। পরিস্থিতি এতোটাই গুরুতর হয় যে একসময় রসুলের স্ত্রীগণ রীতিমতো প্রকাশ্য প্রেমালাপ শুরু করেন।
রসুল পরিস্থিতি সামাল দিতে নিম্নোদ্ধৃত আয়াত নাযীল করে স্ত্রীদের এইরূপ আচরণ করতে নিষেধ করেন।
يَا نِسَاء النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاء إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا
হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।
[সুরা আল আহযাব -৩২]
তাতে রসুলের স্ত্রীগণ আদৌ কোনো কান না দেওয়ায় এবং তারা প্রকাশ্য তাদের প্রেম-পিরিতি যথারীতি চালিয়ে যাওয়ায় অসহায় বুড়ো মুহাম্মদ স্ত্রীগণকে পরকালীন কঠোর শাস্তির ভয় দেখিয়ে থামাতে চেষ্টা করেন। এইজন্য তিনি নিম্নের আয়াত নাযীল করেন।
يَا نِسَاء النَّبِيِّ مَن يَأْتِ مِنكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ يُضَاعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا
হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।
[সুরা আল আহযাব - ৩০]
এইসময় বাধ্য হয়ে তিনি নির্দিষ্ট করে দেন কাদের সাথে তার স্ত্রীগণ দেখা করার অনুমতি পাবে আর কাদের সাথে পাবেনা, এই বিষয়ে তিনি কোরানের আয়াত নাযীল করে দেন যে উল্লেখিত তালিকার বাইরে কারো সাথে দেখা করা যাবেনা। স্ত্রীগণ লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেমিকদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করলে মুহাম্মদ তার সর্বজ্ঞানী সর্বদ্রষ্টা বন্ধু আল্লাহর মাধ্যমে ঠিকই সব খবর জানতে পারবেন বলে ভয়ও দেখান।
لَّا جُنَاحَ عَلَيْهِنَّ فِي آبَائِهِنَّ وَلَا أَبْنَائِهِنَّ وَلَا إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء أَخَوَاتِهِنَّ وَلَا نِسَائِهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ وَاتَّقِينَ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدًا
নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন।
[সুরা আল আহযাব -৫৫]
এতোকিছুর পরেও কিছুতেই যখন স্ত্রীগণকে থামানো যাচ্ছিলোনা তখন মুহাম্মদ একদম নিরুপায় হয়ে তাদেরকে তালাক দিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। মুহাম্মদ জানতেন যৌবনজনিত উত্তেজনায় পরকীয় প্রেম-পিরিতি করলেও অবলা নারী আয়েশা বা হাফসা কারোরই তাদের পিতা এবং মুহাম্মদের দোস্ত আবুবকর বা ওমরের অবাধ্যতা করে তালাকপ্রাপ্ত আশ্রয়হীন হওয়ার সাহস হবেনা।
এইসময় তিনি নিম্নোদ্ধৃত আয়াত নাযীল করেন-
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيلًا
হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভোগ-বিলাসিতা কামনা করো, তবে আসো, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় করে দেই।
[ সুরা আল আহযাব - ২৮ ]
তালাকের ভয় দেখিয়ে স্ত্রীগণকে থামাতে পারলেও মুহাম্মদ তার স্ত্রীগণের প্রেমিকদের থামাতে পারছিলেননা। বিশেষত মুহাম্মদের স্ত্রীগণের মধ্যে সেরা সুন্দরী কিশোরী আয়েশার প্রেমিক তালহা বিন উবায়দুল্লাহ রসুলের জীবদ্দশায় আয়েশাকে পাওয়ার আশা ত্যাগ করলেও বুড়ো মুহাম্মদের মৃত্যুর পর আয়েশাকে পাওয়ার আশা ছাড়লেননা। সুফিয়ান, মুক্বাতিল বিন হাইয়ান, আব্দুর রহমান বিন যায়েদ বিন আসলাম এবং আস-সুদ্দীর সিলসিলায় বর্ণিত তালহা বিন উবায়দুল্লাহ আয়েশার প্রেমে এতোটাই দিওয়ানা হোন যে তিনি লোক মারফত রসুলের জীবদ্দশায়ই তার মৃত্যুর পর আয়েশাকে বিবাহ করার অনুমতি চেয়ে প্রস্তাব পাঠান।
[তাফসীর ইবনে কাসীর, সুরা আল আহযাবের উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য ]
তরুণী-কিশোরী স্ত্রীগণের প্রেমিক তরুণ সাহাবীরা নানা বাহানায় রসুলের গৃহে উঁকিঝুঁকি দিয়ে তাদের প্রেমপ্রীতি চালিয়ে যেতে চেষ্টা করতেন। ইহুদীদের থেকে লুণ্ঠিত সম্পদে মুহাম্মদ তখন ব্যপক সম্পদশালী তাই তার গুণ্ডাপাণ্ডা সাহাবাদের জন্য প্রায়ই তার গৃহে ব্যপক রান্নাবাড়ার আয়োজন হতো। নবীর গৃহে খানাপিনার সুযোগে নবীর স্ত্রীগণের প্রেমিক সাহাবীরাও নবীর স্ত্রীগণের সাথে প্রেমালাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পরিস্থিতি এরূপ জটিল ঘোলাটে হয়ে উঠলে মুহাম্মদ নিম্নোদ্ধৃত আয়াত নাযীল করে তার ঘরে খানাপিনার পর বেশিক্ষণ থাকা নিষিদ্ধ করেন এছাড়া তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীগণকে বিয়ে করার স্বপ্ন চিরতরে থামিয়ে দিয়ে প্রেমিকগণকে সামাল দিতে চেষ্টা করেন।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنكُمْ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَن تَنكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِن بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِندَ اللَّهِ عَظِيمًا
হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।
[সুরা আল আহযাব - ৫৩
শুধু বিবাহ নিষিদ্ধ করেই তিনি কান্ত হননি উপরন্তু তার স্ত্রীগণকে সকলের মা বলে ঘোষনা দেন। সুরা আল আহযাবের ৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
" মুমিনদের নিকট রসুল তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা। "
অথচ বিপরীতে দেখুন।
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।
[সুরা আল-আহযাব - ৪০]
বুঝুন ব্যপারটি, মুহাম্মদের স্ত্রীগণ সকলের মাতা এবং মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তাদেরকে বিবাহ করাও নিষিদ্ধ অথচ মুহাম্মদ নিজে কারো পিতা বা পিতার মতো হতে রাজিনা।
মুহাম্মদ তার স্ত্রীগণকে মুমিনগণের মা বানিয়ে দিলেও নিজে কারো পিতার মতো হতে এমনকি সারাজীবন ধরে পুত্র হিসেবে পরিচয় দেওয়া পালিত পুত্রের পিতা হতে অস্বীকৃতি জানান যাতে সারাজীবন পুত্র পরিচয়ে বড় করা পালিত পুত্রের সুন্দরী স্ত্রীর সাথে পরকীয় প্রেম করে শেষতক বিয়ে করতে কোনো সমস্যা না হয়।
[পূর্ণ ঘটনার জন্য তাফসীর ইবনে কাসীরে সুরা আল আহযাবের উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য ]