Sunday, July 31, 2016

মুহাম্মদ কি আল্লাহর বানীর নামে, শয়তানের বানী প্রচার করেছিল ?

মুহাম্মদ কি আল্লাহর বানীর নামে, শয়তানের বানী প্রচার করেছিল ?

মুহাম্মদ শয়তানের কাছ থেকে বানী পেততা বলা আছে কোরানে , হাদিসে , সিরাতেঅথচ তার পূর্বেকার কোন নবী রসুল যেমন - ইব্রাহিম , ইসহাক , যাকোব , দাউদ , সলোমন , মূসা ইত্যাদিরা কখনই বলে নি যে তারা শয়তানের কাছ থেকে বানী পেতবাইবেলের গসপেলেও দেখা যায় না যীশু শয়তানের কাছ থেকে বানী পেয়েছিল, যদিও শয়তান তাকে প্রলুব্ধ করছিল বলে দেখা যায় , কিন্তু যীশু তাতে প্রলুব্ধ হয় নি বরং অভিশাপ দিয়ে শয়তানকে তাড়িয়ে দিয়েছে
সুরা নাজম- ৫৩: ১৯-২১: তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও ওযযা সম্পর্কে এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে?পুত্র-সন্তান কি তোমাদের জন্যে এবং কন্যা-সন্তান আল্লাহর জন্য?
এই বানীগুলোর প্রেক্ষাপট হলো এরকম -
মুহাম্মদ দীর্ঘদিন ধরে মক্কায় ইসলাম প্রচার করছে কিন্তু তার গোত্রের লোকজন সেটা গ্রহন না করে বরং তাকে উন্মাদ পাগল বলে সাব্যাস্ত করছেতখন মুহাম্মদ খুব দু:খ ভারাক্রান্ত হলে নিচের আয়াত নাজিল হয় -
সুরা নাজম- ৫৩: ১৯-২১: তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও ওযযা সম্পর্কে এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে? এরা উচ্চে উড়ন্ত শারশ যারা আল্লাহর সাথে মধ্যস্থতাকারী
অর্থা এমন আয়াত নাজিল হলো যাতে স্বীকার করে নেয়া হলো যে পৌত্তলিক কুরাইশদের যে তিন প্রধান দেব-দেবী লাত , উজ্জা ও মানাত , তারা মানুষের প্রার্থনাকে আল্লাহর কাছে পৌছে দেয়এই আয়াত নাজিল হয়েছিল কাবা ঘরের মধ্যে অবস্থানকালেএ খবর শুনে কিছু কুরাইশ কাবা ঘরে আসলমুহাম্মদ তাদের দেব দেবীদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছে দেখে তারা খুবই আনন্দিত হলো তারপর মুহাম্মদ, তার সাহাবী ও কুরাইশরা সবাই কাবা ঘরে সিজদা দিলএই খবর মদিনা ও আবিনিসিয়াতে অবস্থিত প্রবাসী মুসলমানদের নিকট পৌছে গেল, তারা শুনতে পেল কুরাইশরা ইসলাম গ্রহন করেছে , তাই তাদের অনেকেই মদিনা ও আবিনিসিয়া থেকে ফিরে আসলতখন জিব্রাইল মুহাম্মদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করল- হে মুহাম্মদ , তুমি কি করেছ? আমি তোমাকে যা বলিনি তুমি তাই বলেছ তুমি তো শয়তানের বানী পেয়েছএ শুনে মুহাম্মদ খুবই দু:খিত হলোতার এ দু:খ দেখে আল্লাহ নাজিল করল -এমতাবস্থায় এটা তো হবে খুবই অসংগত বন্টন তখন মুহাম্মদ ২১ নং আয়াতের এরা উচ্চে উড়ন্ত শারশ যারা আল্লাহর সাথে মধ্যস্থতাকারী এই লাইনটা বাদ দিয়ে তার স্থলে -এমতাবস্থায় এটা তো হবে খুবই অসংগত বন্টন এই লাইনটা জুড়ে দিলএবং একই সাথে দু:খ ভারাক্রান্ত মুহাম্মদকে শান্তনা দেয়ার জন্যে নিচের আয়াত নাজিল হলো -
সুরা হাজ্জ- ২২: ৫২: আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছেঅতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করেএরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়
=======================================================
সূত্র : (Source: Ibn Ishaq, The Life of Muhammad: A Translation of Ishaq's Sirat Rasul Allah, Translated by A. Guillaume, Oxford University Press, Oxford, England, (Re-issued in Karachi, Pakistan, 1967, 13th impression, 1998) 1955, p. 165-166. https://archive.org/details/TheLifeOfMohammedGuillaume)
এখন অনেকেই এসে বলবে , ইবনে ইসহাকের এই বক্তব্য সহিহ ইসলাম নাকিন্তু সুরা হাজ্জেই কিন্তু স্বীকার করছে যে মুহাম্মদের কাছে শয়তানের বানী এসেছিল এমন কি সহিহ হাদিসেও সেটা বলা হয়েছে -
সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ১৯ :: হাদিস ১৭৭
মুসাদ্দার (র.)ইব্ন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) সূরা ওয়ান্-নাজ্‌ম তিলাওয়াতের পর সিজ্‌দা করেন এবং তাঁর সঙ্গে সমস্ত মুসলিম, মুশরিক, জ্বিন ও ইনসান সবাই সিজ্‌দা করেছিল
খেয়াল করতে হবে , মুহাম্মদের সাথে মুসলমান ও মুশরিক তথা কুরাইশরা সিজদা করলমুহাম্মদ শয়তানের আয়াত অনুযায়ী কুরাইশদের দেব দেবীদেরকে স্বীকার করে না নিলে তো কুরাইশরা মুহাম্মদ ও মুসলমানদের সাথে সিজদা করার কথা নয়
এটা খুবই বিস্ময়কর যে যখন শয়তান জিব্রাইলের বেশে মুহাম্মদের কাছে শয়তানের বানী দিচ্ছিল , তখন আল্লাহ তা টের পেল নাএমন কি আল্লাহ শয়তানকে ঠেকাতেও পারল নাএর মধ্যে অনেক দিন পার হয়ে গেছে , এ খবর সুদুর মদিনা ও আবিনিসিয়াতে চলে গেছে , তারপরও আল্লাহ টের পেল না , টের পেল জিব্রাইল যখন মুহাম্মদ তার কাছে সুরা নাজম বলছিল
তাহলে আমরা কিভাবে নিশ্চিত হবো যে , এই সুরা নাজম ছাড়া অন্য আরও অনেক আয়াত জিব্রাইলের বেশে শয়তান মুহাম্মদকে দিয়ে যায় নি? বরং কোরানের বিভিন্ন বানী দেখে তো মনে হয় কোরানের অধিকাংশ বানীই হলো শয়তানের , কারন দেখা যাচ্ছে কোরানের বানী মুহাম্মদকে ডাকাতি করার স্বীকৃতি দিচ্ছে ( সুরা বাকারা -২: ২১৭) , মুহাম্মদকে বন্দিনী নারী ধর্ষন ও মুতাহ বিয়ের স্বীকৃতি দিচ্ছে ( সুরা নিসা - ৪: ২৪), মুহাম্মদকে অবিশ্বাসীদেরকে নির্বিচারে হত্যা করতে বলছে ( সুরা তাওবা -৯: ৫) , মুহাম্মদকে নির্বিচারে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যেতে বলছে ( সুরা তাওবা -৯: ২৯)- এসব অনৈতিক ও হিংসাত্মক বানী তো পরম করুনাময় দয়াল সৃষ্টিকর্তার বানী হতে পারে না