উত্তর-->
ইসলামের প্রধান ২ টি সেক্ট এই সুন্নি আর শিয়া। সুন্নিদের বলা হয় orthodox মুসলিম, অর্থাৎ মেইনস্ট্রিম মুসলিম বা প্রথাগত মুসলিম।
অনেকগুলো বই আর নেট ব্রাউজ করে এ পোস্টের তথ্যগুলো যোগাড় করা হয়েছে।
আর, পোস্টটি একটু বড়, তাই ধৈর্য নিয়ে পড়তে হবে।
শিয়া অরিজিনঃ
একদম প্রথম থেকে বলি। হিজরত এর ঘটনায় কুরাইশদের মধ্যে কেউ কেউ হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন, “আপদ গেল” বলে। কিন্তু কারা সবচেয়ে অখুশি হয় জানেন? মদিনার ইহুদীরা। তাদের নেতা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুল। মদিনার নেতা হওয়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় মুহাম্মাদ (সা) এর আগমনে। তখন থেকেই ইসলামের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়। তাই, মুহাম্মাদ (সা) ষড়যন্ত্রকারী ইহুদিদের ইয়াস্রিব (মদিনার আগের নাম) থেকে বহিষ্কার করেন।
এবার, ঘটনা ফাস্ট ফরওয়ার্ড করে উমার (রা) এর আমলে আসি। তাঁর সময় পারস্য জয় করে মুসলিমরা। তখনি সেই বিখ্যাত ঘটনা ঘটে, হরমুজান এর । এটা সবারই জানার কথা, আমরা সবাই ছোটো ক্লাস এ ধর্ম বই এ উমার (রা) এর মহানুভবতার কাহিনী পড়তে গিয়ে হরমুযান এর কাহিনী পড়েছি। পারস্য বাহিনীর কমান্ডার হরমুযান, যে কিনা মৃত্যুদণ্ড এড়াতে ছলনার আশ্রয় নেয়। পানি চেয়ে বলে এটাই তাঁর শেষ ইচ্ছা যে, এ পানি পান না করা পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করা হবে না, আর পরে সে এ পানি ফেলে দেয়। কিন্তু উমার (রা) তাঁকে হত্যা করেন নি। আমাদেরকে শেখান হয়েছিল, তাঁর মহানুভবতা দেখে হরমুজান ইসলাম “গ্রহণ” করে। আসলে, কিন্তু অতি দুঃখের ব্যাপার, সেটা লোকদেখানো ছিল।
মুক্তি পেয়ে হরমুজান বাস করতে থাকে মদিনায়। এবং, উমার (রা) কে হত্যা করার পরিকল্পনা সাজাতে থাকে। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয় জাফিনা আলখালিল (খ্রিস্টান) আর সাবা ইবনে শামুন (ইহুদী)।
কেন তারা একসাথে হল? কারনঃ
১/ হরমুজানের পারস্য বাহিনীকে হারিয়েছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
২/ জাফিনার রোমান বাহিনীকে হারিয়েছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
৩/ সাবার ইহুদী গোষ্ঠীকে বহিষ্কার করেছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
আর নতুন ধর্ম ইসলামের প্রতি সম্মিলিত বিতৃষ্ণা তো আছেই। আর, গুপ্তহত্যা করার ব্যাপারে ইহুদিদের সর্বদাই খ্যাতি ছিল। তো, ৭ নভেম্বর ৬৪৪ সালে ফিরোজ নামের এক আততায়ীকে দিয়ে উমার (রা) কে হত্যা করা হয়। ফিরোজ ৬ বার মতান্তরে ৩ বার ছুরিকাঘাত করে। সাহিহ বুখারি মতে, ফিরোজ ধরা পড়ার পর আত্মহত্যা করে। কিন্তু, শিয়ারা তা মানে না।
উমার (রা) এর ছেলে উবাইদুল্লাহ হরমুযান আর জাফিনাকে হত্যা করেন। অবশ্যই, ইহুদী সাবা বেঁচে যায়। (আড়ালে কাজ করেছিল সাবা) পরে, উবাইদুল্লাহকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। তাঁকে উপস্থিত করা হয় নতুন খলিফা উসমান (রা) এর সামনে। উযির আলি (রা) বললেন, উবাইদুল্লাহ বিনা প্রমাণে তৎক্ষণাৎ হত্যা করেছে, যেটা ইসলাম মানে না। এটা তাঁর করা উচিত হয়নি। আলি(রা) এর পক্ষে সমর্থন দেন অনেকে। আবার উবাইদুল্লার প্রতিও অনেকে সমর্থন দেন। তখন তারা ২ ভাগ হয়ে যান। পরে, উসমান (রা) উবাইদুল্লাহ এর পক্ষ হতে জরিমানা প্রদান করেন।
কিন্তু, ততদিনে বিভেদ যা হবার হয়ে গেছে। ইহুদী পরিকল্পনা সফল হতে শুরু করেছে। ইহুদী সাবা তখন যেটা করলেন, তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা কে বললেন, মুসলিমদের দেখিয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে, যেন এরপর থেকে সহজেই ইহুদীরা মুসলিমদের গোপন খবর পেতে পারে। ভিতর থেকে বিভেদ সৃষ্টি করতে একজনকে দরকার ছিল।
পরিকল্পনামত, আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা তাই করলেন। তিনি নিজেকে অতীব ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করলেন। আর বললেন, মুহাম্মাদ (সা) এর আপন আত্মীয় হিসেবে খেলাফত সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য আলি (রা) এর। তিনি আলি (রা) এর পক্ষে প্রচারনা করা শুরু করলেন। আর, উসমান (রা) এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার। শুধু উসমানই নন, আবু বকর(রা), উমার(রা) এবং উসমান(রা) ৩ জনের নামের বিরুদ্ধেই তিনি কুৎসা ছড়াতে লাগলেন। জনতা ক্ষিপ্ত হতে লাগল উসমান (রা) এর উপর। ইবনে সাবা হয়ে উঠলেন জনপ্রিয়। ফল কী দাঁড়ালো? ১৭ জুলাই ৬৫৬ সালে উসমান (রা) কে হত্যা করা হল।
আর আলি(রা) এর অনুসারীরা দাবি করতে লাগল, আলি (রা) যেন খলিফা হন। তারা নিজেদের ‘শিয়া’ নামে পরিচয় দিতে লাগল। শিয়া মানে পরিবার বা অনুসারী। “শিয়াতু আলি” থেকে “শিয়া”, মানে, আলির পরিবার বা আলির অনুসারী।
যাই হোক, প্রথমে আলি (রা) রাজি হননি খলিফা হতে। পরে লোকজন গিয়ে সাদ (রা), তালহা (রা), জুবায়ের (রা) প্রমুখের কাছে গিয়ে খলিফা হবার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তারাও রাজি হলেন না। শেষ পর্যন্ত আলি (রা) এই বলে রাজি হলেন, সবাই তাঁকে মানলেই তিনি খলিফা হবেন। পরে সবাই তালহা (রা) আর জুবায়ের (রা) কে সভায় হাজির করল। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনারা আলি(রা) কে মানবেন? তারা নীরব রইলেন। পরে উপস্থিত একজন তরবারি বের করে হুমকি দিলে তারা শর্তসাপেক্ষে রাজি হলেন। বিস্তারিত কাহিনী এখানে উল্লেখ করলাম না। অন্যদিকে মুয়াবিয়া (রা) মানলেন না তাঁর খেলাফত। মুয়াবিয়ার দূত মদিনায় এলে সেই ইহুদী ইবনে সাবার লোক তাঁকে হত্যা করতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু, মনে হল, আলি (রা) চেষ্টা করেছেন। ফলে আলি আর মুয়াবিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হল। তা দেখে এক পর্যায়ে, তালহা (রা) আর জুবায়ের (রা) মদিনা ত্যাগ করলেন।
অন্যদিকে আয়িশা (রা) হজ পালন শেষে মদিনা ফেরার পথে খবর পেলেন উসমান (রা) কেও গুপ্তহত্যা করা হয়েছে। তৎক্ষণাৎ তিনি তাঁর উটের উপর থেকে একটি উদ্দীপক ভাষণ দেন যে, উসমান (রা) হত্যার প্রতিশোধ নিতেই হবে। উপস্থিত মানুষজন তাঁর কথায় উদ্দীপ্ত হয়ে আন্দোলন সৃষ্টি করে। তালহা (রা) আর জুবায়ের(রা) মক্কা পৌঁছে আন্দোলনে যোগ দেন।
পরের ঘটনা, আলি (রা) আর আয়িশা (রা) এর বাহিনী মুখোমুখি হয়। কিন্তু আলি (রা) সংলাপে বসতে চাইলেন। ইবনে সাবা তখন প্রমাদ গুনলেন। কারণ, সন্ধি হলে বিভেদ হবে না, তাঁর উদ্দেশ্য সফল হবে না। চক্রান্ত শুরু করলেন তিনি। তো, সংলাপ সফল হল না। যুদ্ধ হবেই।
২ পক্ষই চাইল যুদ্ধ যেন না হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে ইবনে সাবার দল আলির (রা) শিবিরে আক্রমন করে। কিন্ত মনে হল, প্রতিপক্ষ আয়িশা (রা) এর বাহিনী আক্রমন করেছে। তাই তারাও পাল্টা আক্রমণ চালাল। যুদ্ধ হলই। যুদ্ধের এক পর্যায়ে আলি(রা) জুবায়ের (রা) এর কাছে গিয়ে বললেন, “মনে আছে? একদিন রাসুল বলেছিলেন তুমি ভবিষ্যতে অন্যায়ভাবে আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে?” জুবায়ের বললেন, “ও! হ্যাঁ! তাই তো!” সাথে সাথে জুবায়ের (রা) যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে চলে গেলেন। ইবনে সাবার এক লোক জুবায়েরের পিছু নেয়। পরে জুবায়ের (রা) জোহোর এর নামায শুরু করতেই তাঁকে খুন করল। আনন্দের সাথে আলি (রা) এর কাছে এল খুনি, এরপর জুবায়েরের (রা) তরবারি, বর্ম পেশ করল। আলি(রা) তাঁকে জাহান্নামের সুসংবাদ দিলেন। সাথে সাথে, সেই লোক পেটে তরবারি ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। অন্যদিকে তালহা (রা) যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করার সময় একটি তীরের আঘাতে মারা যান। আলি (রা) এ ২জনের মৃত্যুর কথা শুনে মনবেদনায় কাতর হয়ে পড়লেন।
আলি (রা) বুঝতে পারলেন, যুদ্ধ সহজে শেষ হবে না। যতক্ষণ আয়িশা (রা) উটের উপর থেকে উৎসাহ দিবেন, ততক্ষণ চলবে যুদ্ধ। ১০০০০ মুসলিম মারা যাবার পর আলির(রা) বাহিনীর একজন উট পর্যন্ত পৌঁছে পা কেটে ফেলেন। ফলে উট বসে পড়ল। আর আয়িশার (রা) বাহিনীর মন ভেঙ্গে গেল। পরে, আলি(রা) আয়িশার(রা) হাওদাটি অদুরে নিয়ে গিয়ে পর্দা দিয়ে ঘিরে দেয়ার ব্যবস্থা করলেন। এরপর সেখানে ঢুকে কুশল জিজ্ঞেস করলেন। তারা পরস্পরের কাছে ক্ষমা চাইলেন। যুদ্ধ বন্ধ হল। এ যুদ্ধ জামাল (উট) যুদ্ধ নামে পরিচিত। কারণ, আয়িশা (রা) উটের উপর থেকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন।
মুসলিমদের যতই ক্ষতি হোক, লাভ হল ইসলামের শত্রুদের। আলি (রা) ইবনে সাবা আর তাঁর অনুসারীদের নির্বাসিত করলেন। তারা নির্বাসনে গিয়েও একটি secret societyর অনুরুপ কাজ করতে লাগল, যার সমতুল্য বর্তমান FreeMasons, Illuminati ইত্যাদি। সাবায়িরা (ইবনে সাবার অনুসারী) আলি (রা) কে পরে হত্যা করে।
আর এরপরের কাহিনী মোটামুটি সবারই জানা। সেই যে মুয়াবিয়া (রা) অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন, পরে খিলাফত চাইলেন, এরপর, হাসান (রা), হুসাইন (রা), ইয়াজিদ(রা) এর কাহিনী... আর এরপর কারবালা। এ পর্যন্ত এবং এর পরেও যারা আলি (রা) আর তাঁর বংশকে অনুসরণ করেছে, তারাই হলো... আজকের শিয়া সম্প্রদায়।
সুন্নি আর শিয়া বিশ্বাসের কী পার্থক্য?
শিয়াদের অনেক ভাগ-উপবিভাগ আছে। এখানে তাদের মৌলিক বিশ্বাস এর সাথে সুন্নিদের বিশ্বাস তুলনা করা হলঃ
# সুন্নিঃ চার খলিফাতে বিশ্বাসী। আবু বকর (রা), উমার (রা), উসমান (রা), আলি(রা)
শিয়াঃ আবু বকর, উমার, উসমান খলিফা হয়েছিলেন অবৈধভাবে (নাউযুবিল্লাহ); কেউ কেউ তাঁদের কাফির বলে। উমার (রা) এর হত্যাকারী ফিরোজ এর কবর সযত্নে সংরক্ষণ করেছে তারা।
# সুন্নিঃ ইমাম প্রথার উপর তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় নি।
শিয়াঃ তাঁদের মূল বিশ্বাস এ ইমাম প্রথা। ১২ ইমামে বিশ্বাসী। প্রথম ইমাম আলি(রা)। এবং মনে করে ইমামরা মাসুম । তারা গায়েবের খবর জানেন । যেটা শিরক ( নাউযুবিল্লাহ ) ।
# সুন্নিঃ সুন্নীরা বিশ্বাস করে বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দিতে হবে।
শিয়াঃ আর শিয়ারা প্রয়োজনে বিশ্বাস গোপন রাখাকে জায়েজ মনে করে।যা তাকিয়া নামে পরিচিত।
# সুন্নিঃ মাহদি আসবেন মুসলিম জাতিকে নেতৃত্ব দিতে।
শিয়াঃ মাহদি হবেন ১২শ ইমাম। ইমাম মাহদি। (সুন্নিরা উপমহাদেশীয় শিয়াদের সংস্পর্শে এসে মাহদির আগে ইমাম বলে) তারা অতি সম্মানার্থে মাহদির পরে আলাইহিস সালামও বলে।
# সুন্নিঃ সাহিহ হাদিস বলতে সিহাহ সিত্তাহ কে বুঝান হয়।
শিয়াঃ তাঁদের হাদিস আলাদা। তারা বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির হাদিস বর্জন করে। যেমন, আয়িশা (রা), আবু হুরাইরা (রা) প্রমুখ।
# সুন্নিঃ রাসুল (সা) মৃত্যুশয্যায় ইহুদীর বিষ যন্ত্রণা ভোগ করেন।
শিয়াঃ (সবার বিশ্বাস না) সেই বিষ খায়বারের ইহুদী নারীর না। এ বিষ নবী (সা) কে প্রয়োগ করেন আয়িশা (রা) আর হাফসা (রা) যারা যথাক্রমে, আবু বকর (রা) আর উমার (রা) এর মেয়ে। (নাউজুবিল্লাহ)
# সুন্নিঃ দুনিয়ার সর্বত্র নামাযের সিজদা করা যাবে।
শিয়াঃ সাধারনত কারবালার মাটিতে তৈরি বস্তু সামনে রেখে সেটার উপর সিজদার সময় কপাল রাখা হয়।
# সুন্নিঃ পাঁচ ওয়াক্তে নামাজ পড়া হয়।
শিয়াঃ তিন বারে পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করা যায়। ফযর, এরপর জোহর+আসর, এরপর মাগরিব+এশা ।
# সুন্নিঃ নামাযে হাত বেধে রাখা হয়। তবে, মালিকি মাযহাবের অনুসারীরা হাত ছেড়ে পড়ে। উভয়টিই গ্রহণযোগ্য।
শিয়াঃ হাত ছেড়ে নামাযে দাঁড়ায়।
# সুন্নিঃ হিজাবের ক্ষেত্রে ২টি মতবাদ আছে। মুখ খোলা রাখা, আর মুখ ঢাকা।
শিয়াঃ মুখ খোলা রাখা।
# সুন্নিঃ মুতাহ বিয়ে নিষিদ্ধ ।
শিয়াঃ মুতাহ বিয়েকে তারা জায়েজ বলে । ( কিছুদিনের চুক্তির বিয়ে )
এসব ছাড়াও আরও কিছু পার্থক্য এর কথা বলা হয়, যেগুলো প্রমানিত না। তাই ওগুলো বাদ দিলাম। আর এমনিতে আরও কিছু ছোটোখাটো পার্থক্য আছে।
এবার আপনার আরেক প্রশ্নে আসি।
কুর্দি কারা?
উত্তরঃ
পশ্চিম এশিয়ার একটি জাতি কুর্দি। ( کورد, Kurd)
ইরান ইরাক সিরিয়া আর তুরস্কের কিছু অঞ্চল মিলিয়ে কুরদিস্তান গঠিত, এ অঞ্চলের অধিবাসীকে কুর্দি বলে।
সারা বিশ্বে ৩ কোটি কুর্দি আছে। বেশির ভাগ থাকেন কুর্দিস্তানে। এছাড়াও তারা থাকেন পশ্চিম তুরস্ক, আরমেনিয়া, জর্জিয়া, ইসরাইল, আজেরবাইজান, রাশিয়া, লেবানন, কিছু ইউরোপীয় দেশ আর যুক্তরাষ্ট্রে।
তাদের ভাষা কুরদিশ।
বেশিরভাগ মুসলিম কুর্দিরা শাফিয়ি মাজহাবের সুন্নি মুসলিম। তবে কিছু শিয়াও আছে।
আর অন্যান্য ধর্মের অনুসারীও আছে, "আহলে হক" ধর্ম, ইয়াজিদি ধর্ম- এসব নবউদ্ভাবিত ধর্ম যেমন আছে তেমন আছে প্রাচীন ধর্মের অনুসারীও যেমন, ইহুদি আর খ্রিস্টান।
আশা করি আপনার উত্তর পেয়েছেন
আল্লাহ ভাল জানেন।
★ প্রথমবার্তা, ডেস্ক : আমার প্রশ্ন হলো সুন্নি-শিয়াদের মধ্যে কেন এত বিরোধ লেগে থাকে?
আর আমি অনেকের কাছেই শুনেছি- শিয়ারা রাসূল (সা.)কে নবী হিসেবে স্বীকার করেন না, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না? আল্লাহর পরেই তো রাসূলকে সম্মান করতে হবে? শিয়ারা কি আসলেই প্রকৃত মুসলিম? আসলে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বর্ণনাগুলোর ব্যখ্যা নিয়ে মতভেদের কারণেই মুসলমানদের মধ্যে নানা মাজহাব বা মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে। এটি সব ধর্মের মধ্যেই দেখা যায়। এ জাতীয় মতভেদ কেবল তর্ক বা মত-বিনিময়ের পর্যায়ে সীমিত থাকলেই তা স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু এ নিয়ে সহিংসতা ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা সব পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর বলে এ ব্যাপারে মুসলমানদের সতর্ক থাকা উচিত। কারণ, পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রশি বা রজ্জুকে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।
আসলে শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে মতভেদ থাকলেও অনেক মৌলিক বিষয়েই রয়েছে মতের মিল। যেমন, উভয় মাজহাবই এক আল্লাহ, অভিন্ন ধর্মগ্রন্থ তথা পবিত্র কুরআন এবং বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে সর্বশেষ নবী হিসেবে মানেন। উভয় মাজহাবই পরকালের প্রতি তথা পুনরুত্থান ও বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত ও নারীদের পর্দা করা ফরজ হওয়ার বিষয়সহ আরো অনেক বিষয়েই একমত। এইসব বিষয়ের খুঁটিনাটি দিকে কিছু মতভেদ রয়েছে যা সুন্নি ভাইদের চার মাজহাবের মধ্যেও রয়েছে ।
তবে শিয়া ও সুন্নি মাজহাবের মধ্যে মতবিরোধের একটা দিক হলো- বিশ্বনবী (সা.)’র পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত তথা খলিফা বা প্রতিনিধি নিয়োগ নিয়ে। সুন্নি ভাইয়েরা মনে করেন এ বিষয়টি আল্লাহর সর্বশেষ রাসূল মুসলমানদের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন এবং সাহাবাগণ নির্বাচন পদ্ধতিতে খলিফা নির্বাচন করেছেন। অন্যদিকে শিয়া মুসলমানরা মনে করেন, বিশ্বনবী (সা.)’র স্থলাভিষিক্ত তথা খলিফা বা প্রতিনিধি নিয়োগের বিষয়টি মহান আল্লাহই নির্ধারণ করেন ও তা রাসূল (সা.)-কে জানিয়ে দেন। আর এরই ভিত্তিতে হযরত আলী (আ.) এবং এরপর তাঁর বংশধরগণ ছিলেন মুসলমানদের প্রকৃত খলিফা। তবে শিয়াদের সম্পর্কে একটি মিথ্যা অভিযোগ তথা অপবাদ হলো তারা বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে নবী বা শেষ নবী হিসেবে স্বীকার করেন না। বরং শিয়া মুসলমানরাও সুন্নি ভাইদের মতই মনে করেন যে, বিশ্বনবী (সা.)’র পর আর কোনো নবী আসবেন না এবং যারাই এ বিশ্বাস পোষণ করবে না তারা মুসলমান হিসেবে স্বীকৃত হবে না।
আমিরুল মু’মিনিন আলী (আ.)’র ভাষণ ও বক্তৃতামালার সংস্করণ ‘নাহজুল বালাগ্বা’ শিয়াদের জন্য শীর্ষস্থানীয় প্রামাণ্য বই। আল্লাহ ও বিশ্বনবী (সা.)’র বাণীর পরই এ বইকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তারা। আবার সুন্নি মুসলমানের কাছেও এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য বই। এ বইয়ে স্বয়ং আলী (আ.) থেকে বার বার বলা হয়েছে যে রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বশেষ নবী। দৃষ্টান্ত হিসেবে এ বইয়ে উল্লেখিত আলী (আ.)’র ৭১ ও ২৩৩ নম্বর খোতবা দেখুন। তাই শিয়ারা রাসূল (সা.)-কে নবী ও রাসূল বলে মানেন না- এমন দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ইসলামের শত্রুদের পক্ষ থেকে প্রচারিত একটি অপবাদ। শিয়া মুসলমানরা যে কোনো সমাবেশে কিংবা একা থাকলেও বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র নাম শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরুদ পাঠ করে সম্মান প্রদর্শন করেন তাঁকে ও এমনকি তাঁর আহলে বাইতকেও। এছাড়াও শিয়া মুসলমানরা বিশ্বনবী (সা.)’র নবুওত প্রাপ্তির দিবসকে উৎসব হিসেবে পালন করে থাকেন।
শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে কোনো কোনো বিষয়ে মতভেদ থাকলেও তারা যুগ যুগ ধরে পরস্পরের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করে এসেছে। তাদের মধ্যে বড়জোর জ্ঞানগত তর্ক-বিতর্ক বা যুক্তি বিনিময় হতো। আসলে ইসলামের শত্রুরাই মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টির জন্য শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে সহিংস দাঙ্গা বাধানোর জন্য সুন্নি নামধারী একদল ওয়াহাবিকে উস্কে দিয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এই ওয়াহাবিদের দৃষ্টিতে সুন্নিদের চার মাজহাবের তিন মাজহাবের ইমামগণ এবং তাদের অনুসারীরাও কাফির ও হত্যার যোগ্য! আপনারা হয়তো জানেন যে ভারত বর্ষে মোঘল শাসকদের অনেকেই ছিলেন শিয়া মুসলমান। নবাব সিরাজউদদৌলাও ছিলেন শিয়া মুসলমান। দানবীর ও ভারত বর্ষে মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের জন্য সবচেয়ে বেশি সম্পদ ওয়াকফকারী মহান ব্যক্তিত্ব হাজি মুহাম্মাদ মুহসিন ছিলেন একজন শিয়া মুসলমান। ভারতবর্ষ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে শিয়া ও সুন্নি মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেনসহ উপনিবেশবাদী কাফির শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
বর্তমান যুগে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞ থেকে মুসলমানদের দৃষ্টি আড়াল করতে এবং মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য ও বিভেদ উস্কে দিয়ে তাদেরকে সহজেই শোষণ করার জন্য দেশে দেশে শিয়া-সুন্নি বিভেদ উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছে সাম্রাজ্যবাদীরা। সাম্প্রতিক সময়ে ইরাক ও সিরিয়ায় এ ধরনের তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে আলকায়দা বা আইএসআইএল-এর ওয়াহাবি সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে। কিন্তু এই দুই দেশের শিয়া ও সুন্নি আলেমগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ওয়াহাবি ও বিজাতীয় শক্তিকে মোকাবেলার আহ্বান জানানোর পর সন্ত্রাসীরা শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের সম্মিলিত শক্তির কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান রূপকার ইমাম খোমেনী (র.)ও বলেছেন, যারা মুসলমানদের মধ্যে শিয়া-সুন্নির নামে অনৈক্য সৃষ্টি করে তারা শিয়াও নয়, সুন্নিও নয়, বরং সাম্রাজ্যবাদীদের দালাল।
ইসলামের প্রধান ২ টি সেক্ট এই সুন্নি আর শিয়া। সুন্নিদের বলা হয় orthodox মুসলিম, অর্থাৎ মেইনস্ট্রিম মুসলিম বা প্রথাগত মুসলিম।
অনেকগুলো বই আর নেট ব্রাউজ করে এ পোস্টের তথ্যগুলো যোগাড় করা হয়েছে।
আর, পোস্টটি একটু বড়, তাই ধৈর্য নিয়ে পড়তে হবে।
শিয়া অরিজিনঃ
একদম প্রথম থেকে বলি। হিজরত এর ঘটনায় কুরাইশদের মধ্যে কেউ কেউ হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন, “আপদ গেল” বলে। কিন্তু কারা সবচেয়ে অখুশি হয় জানেন? মদিনার ইহুদীরা। তাদের নেতা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুল। মদিনার নেতা হওয়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় মুহাম্মাদ (সা) এর আগমনে। তখন থেকেই ইসলামের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়। তাই, মুহাম্মাদ (সা) ষড়যন্ত্রকারী ইহুদিদের ইয়াস্রিব (মদিনার আগের নাম) থেকে বহিষ্কার করেন।
এবার, ঘটনা ফাস্ট ফরওয়ার্ড করে উমার (রা) এর আমলে আসি। তাঁর সময় পারস্য জয় করে মুসলিমরা। তখনি সেই বিখ্যাত ঘটনা ঘটে, হরমুজান এর । এটা সবারই জানার কথা, আমরা সবাই ছোটো ক্লাস এ ধর্ম বই এ উমার (রা) এর মহানুভবতার কাহিনী পড়তে গিয়ে হরমুযান এর কাহিনী পড়েছি। পারস্য বাহিনীর কমান্ডার হরমুযান, যে কিনা মৃত্যুদণ্ড এড়াতে ছলনার আশ্রয় নেয়। পানি চেয়ে বলে এটাই তাঁর শেষ ইচ্ছা যে, এ পানি পান না করা পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করা হবে না, আর পরে সে এ পানি ফেলে দেয়। কিন্তু উমার (রা) তাঁকে হত্যা করেন নি। আমাদেরকে শেখান হয়েছিল, তাঁর মহানুভবতা দেখে হরমুজান ইসলাম “গ্রহণ” করে। আসলে, কিন্তু অতি দুঃখের ব্যাপার, সেটা লোকদেখানো ছিল।
মুক্তি পেয়ে হরমুজান বাস করতে থাকে মদিনায়। এবং, উমার (রা) কে হত্যা করার পরিকল্পনা সাজাতে থাকে। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয় জাফিনা আলখালিল (খ্রিস্টান) আর সাবা ইবনে শামুন (ইহুদী)।
কেন তারা একসাথে হল? কারনঃ
১/ হরমুজানের পারস্য বাহিনীকে হারিয়েছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
২/ জাফিনার রোমান বাহিনীকে হারিয়েছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
৩/ সাবার ইহুদী গোষ্ঠীকে বহিষ্কার করেছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
আর নতুন ধর্ম ইসলামের প্রতি সম্মিলিত বিতৃষ্ণা তো আছেই। আর, গুপ্তহত্যা করার ব্যাপারে ইহুদিদের সর্বদাই খ্যাতি ছিল। তো, ৭ নভেম্বর ৬৪৪ সালে ফিরোজ নামের এক আততায়ীকে দিয়ে উমার (রা) কে হত্যা করা হয়। ফিরোজ ৬ বার মতান্তরে ৩ বার ছুরিকাঘাত করে। সাহিহ বুখারি মতে, ফিরোজ ধরা পড়ার পর আত্মহত্যা করে। কিন্তু, শিয়ারা তা মানে না।
উমার (রা) এর ছেলে উবাইদুল্লাহ হরমুযান আর জাফিনাকে হত্যা করেন। অবশ্যই, ইহুদী সাবা বেঁচে যায়। (আড়ালে কাজ করেছিল সাবা) পরে, উবাইদুল্লাহকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। তাঁকে উপস্থিত করা হয় নতুন খলিফা উসমান (রা) এর সামনে। উযির আলি (রা) বললেন, উবাইদুল্লাহ বিনা প্রমাণে তৎক্ষণাৎ হত্যা করেছে, যেটা ইসলাম মানে না। এটা তাঁর করা উচিত হয়নি। আলি(রা) এর পক্ষে সমর্থন দেন অনেকে। আবার উবাইদুল্লার প্রতিও অনেকে সমর্থন দেন। তখন তারা ২ ভাগ হয়ে যান। পরে, উসমান (রা) উবাইদুল্লাহ এর পক্ষ হতে জরিমানা প্রদান করেন।
কিন্তু, ততদিনে বিভেদ যা হবার হয়ে গেছে। ইহুদী পরিকল্পনা সফল হতে শুরু করেছে। ইহুদী সাবা তখন যেটা করলেন, তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা কে বললেন, মুসলিমদের দেখিয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে, যেন এরপর থেকে সহজেই ইহুদীরা মুসলিমদের গোপন খবর পেতে পারে। ভিতর থেকে বিভেদ সৃষ্টি করতে একজনকে দরকার ছিল।
পরিকল্পনামত, আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা তাই করলেন। তিনি নিজেকে অতীব ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করলেন। আর বললেন, মুহাম্মাদ (সা) এর আপন আত্মীয় হিসেবে খেলাফত সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য আলি (রা) এর। তিনি আলি (রা) এর পক্ষে প্রচারনা করা শুরু করলেন। আর, উসমান (রা) এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার। শুধু উসমানই নন, আবু বকর(রা), উমার(রা) এবং উসমান(রা) ৩ জনের নামের বিরুদ্ধেই তিনি কুৎসা ছড়াতে লাগলেন। জনতা ক্ষিপ্ত হতে লাগল উসমান (রা) এর উপর। ইবনে সাবা হয়ে উঠলেন জনপ্রিয়। ফল কী দাঁড়ালো? ১৭ জুলাই ৬৫৬ সালে উসমান (রা) কে হত্যা করা হল।
আর আলি(রা) এর অনুসারীরা দাবি করতে লাগল, আলি (রা) যেন খলিফা হন। তারা নিজেদের ‘শিয়া’ নামে পরিচয় দিতে লাগল। শিয়া মানে পরিবার বা অনুসারী। “শিয়াতু আলি” থেকে “শিয়া”, মানে, আলির পরিবার বা আলির অনুসারী।
যাই হোক, প্রথমে আলি (রা) রাজি হননি খলিফা হতে। পরে লোকজন গিয়ে সাদ (রা), তালহা (রা), জুবায়ের (রা) প্রমুখের কাছে গিয়ে খলিফা হবার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তারাও রাজি হলেন না। শেষ পর্যন্ত আলি (রা) এই বলে রাজি হলেন, সবাই তাঁকে মানলেই তিনি খলিফা হবেন। পরে সবাই তালহা (রা) আর জুবায়ের (রা) কে সভায় হাজির করল। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনারা আলি(রা) কে মানবেন? তারা নীরব রইলেন। পরে উপস্থিত একজন তরবারি বের করে হুমকি দিলে তারা শর্তসাপেক্ষে রাজি হলেন। বিস্তারিত কাহিনী এখানে উল্লেখ করলাম না। অন্যদিকে মুয়াবিয়া (রা) মানলেন না তাঁর খেলাফত। মুয়াবিয়ার দূত মদিনায় এলে সেই ইহুদী ইবনে সাবার লোক তাঁকে হত্যা করতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু, মনে হল, আলি (রা) চেষ্টা করেছেন। ফলে আলি আর মুয়াবিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হল। তা দেখে এক পর্যায়ে, তালহা (রা) আর জুবায়ের (রা) মদিনা ত্যাগ করলেন।
অন্যদিকে আয়িশা (রা) হজ পালন শেষে মদিনা ফেরার পথে খবর পেলেন উসমান (রা) কেও গুপ্তহত্যা করা হয়েছে। তৎক্ষণাৎ তিনি তাঁর উটের উপর থেকে একটি উদ্দীপক ভাষণ দেন যে, উসমান (রা) হত্যার প্রতিশোধ নিতেই হবে। উপস্থিত মানুষজন তাঁর কথায় উদ্দীপ্ত হয়ে আন্দোলন সৃষ্টি করে। তালহা (রা) আর জুবায়ের(রা) মক্কা পৌঁছে আন্দোলনে যোগ দেন।
পরের ঘটনা, আলি (রা) আর আয়িশা (রা) এর বাহিনী মুখোমুখি হয়। কিন্তু আলি (রা) সংলাপে বসতে চাইলেন। ইবনে সাবা তখন প্রমাদ গুনলেন। কারণ, সন্ধি হলে বিভেদ হবে না, তাঁর উদ্দেশ্য সফল হবে না। চক্রান্ত শুরু করলেন তিনি। তো, সংলাপ সফল হল না। যুদ্ধ হবেই।
২ পক্ষই চাইল যুদ্ধ যেন না হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে ইবনে সাবার দল আলির (রা) শিবিরে আক্রমন করে। কিন্ত মনে হল, প্রতিপক্ষ আয়িশা (রা) এর বাহিনী আক্রমন করেছে। তাই তারাও পাল্টা আক্রমণ চালাল। যুদ্ধ হলই। যুদ্ধের এক পর্যায়ে আলি(রা) জুবায়ের (রা) এর কাছে গিয়ে বললেন, “মনে আছে? একদিন রাসুল বলেছিলেন তুমি ভবিষ্যতে অন্যায়ভাবে আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে?” জুবায়ের বললেন, “ও! হ্যাঁ! তাই তো!” সাথে সাথে জুবায়ের (রা) যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে চলে গেলেন। ইবনে সাবার এক লোক জুবায়েরের পিছু নেয়। পরে জুবায়ের (রা) জোহোর এর নামায শুরু করতেই তাঁকে খুন করল। আনন্দের সাথে আলি (রা) এর কাছে এল খুনি, এরপর জুবায়েরের (রা) তরবারি, বর্ম পেশ করল। আলি(রা) তাঁকে জাহান্নামের সুসংবাদ দিলেন। সাথে সাথে, সেই লোক পেটে তরবারি ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। অন্যদিকে তালহা (রা) যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করার সময় একটি তীরের আঘাতে মারা যান। আলি (রা) এ ২জনের মৃত্যুর কথা শুনে মনবেদনায় কাতর হয়ে পড়লেন।
আলি (রা) বুঝতে পারলেন, যুদ্ধ সহজে শেষ হবে না। যতক্ষণ আয়িশা (রা) উটের উপর থেকে উৎসাহ দিবেন, ততক্ষণ চলবে যুদ্ধ। ১০০০০ মুসলিম মারা যাবার পর আলির(রা) বাহিনীর একজন উট পর্যন্ত পৌঁছে পা কেটে ফেলেন। ফলে উট বসে পড়ল। আর আয়িশার (রা) বাহিনীর মন ভেঙ্গে গেল। পরে, আলি(রা) আয়িশার(রা) হাওদাটি অদুরে নিয়ে গিয়ে পর্দা দিয়ে ঘিরে দেয়ার ব্যবস্থা করলেন। এরপর সেখানে ঢুকে কুশল জিজ্ঞেস করলেন। তারা পরস্পরের কাছে ক্ষমা চাইলেন। যুদ্ধ বন্ধ হল। এ যুদ্ধ জামাল (উট) যুদ্ধ নামে পরিচিত। কারণ, আয়িশা (রা) উটের উপর থেকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন।
মুসলিমদের যতই ক্ষতি হোক, লাভ হল ইসলামের শত্রুদের। আলি (রা) ইবনে সাবা আর তাঁর অনুসারীদের নির্বাসিত করলেন। তারা নির্বাসনে গিয়েও একটি secret societyর অনুরুপ কাজ করতে লাগল, যার সমতুল্য বর্তমান FreeMasons, Illuminati ইত্যাদি। সাবায়িরা (ইবনে সাবার অনুসারী) আলি (রা) কে পরে হত্যা করে।
আর এরপরের কাহিনী মোটামুটি সবারই জানা। সেই যে মুয়াবিয়া (রা) অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন, পরে খিলাফত চাইলেন, এরপর, হাসান (রা), হুসাইন (রা), ইয়াজিদ(রা) এর কাহিনী... আর এরপর কারবালা। এ পর্যন্ত এবং এর পরেও যারা আলি (রা) আর তাঁর বংশকে অনুসরণ করেছে, তারাই হলো... আজকের শিয়া সম্প্রদায়।
সুন্নি আর শিয়া বিশ্বাসের কী পার্থক্য?
শিয়াদের অনেক ভাগ-উপবিভাগ আছে। এখানে তাদের মৌলিক বিশ্বাস এর সাথে সুন্নিদের বিশ্বাস তুলনা করা হলঃ
# সুন্নিঃ চার খলিফাতে বিশ্বাসী। আবু বকর (রা), উমার (রা), উসমান (রা), আলি(রা)
শিয়াঃ আবু বকর, উমার, উসমান খলিফা হয়েছিলেন অবৈধভাবে (নাউযুবিল্লাহ); কেউ কেউ তাঁদের কাফির বলে। উমার (রা) এর হত্যাকারী ফিরোজ এর কবর সযত্নে সংরক্ষণ করেছে তারা।
# সুন্নিঃ ইমাম প্রথার উপর তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় নি।
শিয়াঃ তাঁদের মূল বিশ্বাস এ ইমাম প্রথা। ১২ ইমামে বিশ্বাসী। প্রথম ইমাম আলি(রা)। এবং মনে করে ইমামরা মাসুম । তারা গায়েবের খবর জানেন । যেটা শিরক ( নাউযুবিল্লাহ ) ।
# সুন্নিঃ সুন্নীরা বিশ্বাস করে বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দিতে হবে।
শিয়াঃ আর শিয়ারা প্রয়োজনে বিশ্বাস গোপন রাখাকে জায়েজ মনে করে।যা তাকিয়া নামে পরিচিত।
# সুন্নিঃ মাহদি আসবেন মুসলিম জাতিকে নেতৃত্ব দিতে।
শিয়াঃ মাহদি হবেন ১২শ ইমাম। ইমাম মাহদি। (সুন্নিরা উপমহাদেশীয় শিয়াদের সংস্পর্শে এসে মাহদির আগে ইমাম বলে) তারা অতি সম্মানার্থে মাহদির পরে আলাইহিস সালামও বলে।
# সুন্নিঃ সাহিহ হাদিস বলতে সিহাহ সিত্তাহ কে বুঝান হয়।
শিয়াঃ তাঁদের হাদিস আলাদা। তারা বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির হাদিস বর্জন করে। যেমন, আয়িশা (রা), আবু হুরাইরা (রা) প্রমুখ।
# সুন্নিঃ রাসুল (সা) মৃত্যুশয্যায় ইহুদীর বিষ যন্ত্রণা ভোগ করেন।
শিয়াঃ (সবার বিশ্বাস না) সেই বিষ খায়বারের ইহুদী নারীর না। এ বিষ নবী (সা) কে প্রয়োগ করেন আয়িশা (রা) আর হাফসা (রা) যারা যথাক্রমে, আবু বকর (রা) আর উমার (রা) এর মেয়ে। (নাউজুবিল্লাহ)
# সুন্নিঃ দুনিয়ার সর্বত্র নামাযের সিজদা করা যাবে।
শিয়াঃ সাধারনত কারবালার মাটিতে তৈরি বস্তু সামনে রেখে সেটার উপর সিজদার সময় কপাল রাখা হয়।
# সুন্নিঃ পাঁচ ওয়াক্তে নামাজ পড়া হয়।
শিয়াঃ তিন বারে পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করা যায়। ফযর, এরপর জোহর+আসর, এরপর মাগরিব+এশা ।
# সুন্নিঃ নামাযে হাত বেধে রাখা হয়। তবে, মালিকি মাযহাবের অনুসারীরা হাত ছেড়ে পড়ে। উভয়টিই গ্রহণযোগ্য।
শিয়াঃ হাত ছেড়ে নামাযে দাঁড়ায়।
# সুন্নিঃ হিজাবের ক্ষেত্রে ২টি মতবাদ আছে। মুখ খোলা রাখা, আর মুখ ঢাকা।
শিয়াঃ মুখ খোলা রাখা।
# সুন্নিঃ মুতাহ বিয়ে নিষিদ্ধ ।
শিয়াঃ মুতাহ বিয়েকে তারা জায়েজ বলে । ( কিছুদিনের চুক্তির বিয়ে )
এসব ছাড়াও আরও কিছু পার্থক্য এর কথা বলা হয়, যেগুলো প্রমানিত না। তাই ওগুলো বাদ দিলাম। আর এমনিতে আরও কিছু ছোটোখাটো পার্থক্য আছে।
এবার আপনার আরেক প্রশ্নে আসি।
কুর্দি কারা?
উত্তরঃ
পশ্চিম এশিয়ার একটি জাতি কুর্দি। ( کورد, Kurd)
ইরান ইরাক সিরিয়া আর তুরস্কের কিছু অঞ্চল মিলিয়ে কুরদিস্তান গঠিত, এ অঞ্চলের অধিবাসীকে কুর্দি বলে।
সারা বিশ্বে ৩ কোটি কুর্দি আছে। বেশির ভাগ থাকেন কুর্দিস্তানে। এছাড়াও তারা থাকেন পশ্চিম তুরস্ক, আরমেনিয়া, জর্জিয়া, ইসরাইল, আজেরবাইজান, রাশিয়া, লেবানন, কিছু ইউরোপীয় দেশ আর যুক্তরাষ্ট্রে।
তাদের ভাষা কুরদিশ।
বেশিরভাগ মুসলিম কুর্দিরা শাফিয়ি মাজহাবের সুন্নি মুসলিম। তবে কিছু শিয়াও আছে।
আর অন্যান্য ধর্মের অনুসারীও আছে, "আহলে হক" ধর্ম, ইয়াজিদি ধর্ম- এসব নবউদ্ভাবিত ধর্ম যেমন আছে তেমন আছে প্রাচীন ধর্মের অনুসারীও যেমন, ইহুদি আর খ্রিস্টান।
আশা করি আপনার উত্তর পেয়েছেন
আল্লাহ ভাল জানেন।
★ প্রথমবার্তা, ডেস্ক : আমার প্রশ্ন হলো সুন্নি-শিয়াদের মধ্যে কেন এত বিরোধ লেগে থাকে?
আর আমি অনেকের কাছেই শুনেছি- শিয়ারা রাসূল (সা.)কে নবী হিসেবে স্বীকার করেন না, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না? আল্লাহর পরেই তো রাসূলকে সম্মান করতে হবে? শিয়ারা কি আসলেই প্রকৃত মুসলিম? আসলে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বর্ণনাগুলোর ব্যখ্যা নিয়ে মতভেদের কারণেই মুসলমানদের মধ্যে নানা মাজহাব বা মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে। এটি সব ধর্মের মধ্যেই দেখা যায়। এ জাতীয় মতভেদ কেবল তর্ক বা মত-বিনিময়ের পর্যায়ে সীমিত থাকলেই তা স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু এ নিয়ে সহিংসতা ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা সব পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর বলে এ ব্যাপারে মুসলমানদের সতর্ক থাকা উচিত। কারণ, পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রশি বা রজ্জুকে আঁকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।
আসলে শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে মতভেদ থাকলেও অনেক মৌলিক বিষয়েই রয়েছে মতের মিল। যেমন, উভয় মাজহাবই এক আল্লাহ, অভিন্ন ধর্মগ্রন্থ তথা পবিত্র কুরআন এবং বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে সর্বশেষ নবী হিসেবে মানেন। উভয় মাজহাবই পরকালের প্রতি তথা পুনরুত্থান ও বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত ও নারীদের পর্দা করা ফরজ হওয়ার বিষয়সহ আরো অনেক বিষয়েই একমত। এইসব বিষয়ের খুঁটিনাটি দিকে কিছু মতভেদ রয়েছে যা সুন্নি ভাইদের চার মাজহাবের মধ্যেও রয়েছে ।
তবে শিয়া ও সুন্নি মাজহাবের মধ্যে মতবিরোধের একটা দিক হলো- বিশ্বনবী (সা.)’র পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত তথা খলিফা বা প্রতিনিধি নিয়োগ নিয়ে। সুন্নি ভাইয়েরা মনে করেন এ বিষয়টি আল্লাহর সর্বশেষ রাসূল মুসলমানদের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন এবং সাহাবাগণ নির্বাচন পদ্ধতিতে খলিফা নির্বাচন করেছেন। অন্যদিকে শিয়া মুসলমানরা মনে করেন, বিশ্বনবী (সা.)’র স্থলাভিষিক্ত তথা খলিফা বা প্রতিনিধি নিয়োগের বিষয়টি মহান আল্লাহই নির্ধারণ করেন ও তা রাসূল (সা.)-কে জানিয়ে দেন। আর এরই ভিত্তিতে হযরত আলী (আ.) এবং এরপর তাঁর বংশধরগণ ছিলেন মুসলমানদের প্রকৃত খলিফা। তবে শিয়াদের সম্পর্কে একটি মিথ্যা অভিযোগ তথা অপবাদ হলো তারা বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে নবী বা শেষ নবী হিসেবে স্বীকার করেন না। বরং শিয়া মুসলমানরাও সুন্নি ভাইদের মতই মনে করেন যে, বিশ্বনবী (সা.)’র পর আর কোনো নবী আসবেন না এবং যারাই এ বিশ্বাস পোষণ করবে না তারা মুসলমান হিসেবে স্বীকৃত হবে না।
আমিরুল মু’মিনিন আলী (আ.)’র ভাষণ ও বক্তৃতামালার সংস্করণ ‘নাহজুল বালাগ্বা’ শিয়াদের জন্য শীর্ষস্থানীয় প্রামাণ্য বই। আল্লাহ ও বিশ্বনবী (সা.)’র বাণীর পরই এ বইকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তারা। আবার সুন্নি মুসলমানের কাছেও এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য বই। এ বইয়ে স্বয়ং আলী (আ.) থেকে বার বার বলা হয়েছে যে রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বশেষ নবী। দৃষ্টান্ত হিসেবে এ বইয়ে উল্লেখিত আলী (আ.)’র ৭১ ও ২৩৩ নম্বর খোতবা দেখুন। তাই শিয়ারা রাসূল (সা.)-কে নবী ও রাসূল বলে মানেন না- এমন দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ইসলামের শত্রুদের পক্ষ থেকে প্রচারিত একটি অপবাদ। শিয়া মুসলমানরা যে কোনো সমাবেশে কিংবা একা থাকলেও বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র নাম শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরুদ পাঠ করে সম্মান প্রদর্শন করেন তাঁকে ও এমনকি তাঁর আহলে বাইতকেও। এছাড়াও শিয়া মুসলমানরা বিশ্বনবী (সা.)’র নবুওত প্রাপ্তির দিবসকে উৎসব হিসেবে পালন করে থাকেন।
শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে কোনো কোনো বিষয়ে মতভেদ থাকলেও তারা যুগ যুগ ধরে পরস্পরের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করে এসেছে। তাদের মধ্যে বড়জোর জ্ঞানগত তর্ক-বিতর্ক বা যুক্তি বিনিময় হতো। আসলে ইসলামের শত্রুরাই মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টির জন্য শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে সহিংস দাঙ্গা বাধানোর জন্য সুন্নি নামধারী একদল ওয়াহাবিকে উস্কে দিয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এই ওয়াহাবিদের দৃষ্টিতে সুন্নিদের চার মাজহাবের তিন মাজহাবের ইমামগণ এবং তাদের অনুসারীরাও কাফির ও হত্যার যোগ্য! আপনারা হয়তো জানেন যে ভারত বর্ষে মোঘল শাসকদের অনেকেই ছিলেন শিয়া মুসলমান। নবাব সিরাজউদদৌলাও ছিলেন শিয়া মুসলমান। দানবীর ও ভারত বর্ষে মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের জন্য সবচেয়ে বেশি সম্পদ ওয়াকফকারী মহান ব্যক্তিত্ব হাজি মুহাম্মাদ মুহসিন ছিলেন একজন শিয়া মুসলমান। ভারতবর্ষ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে শিয়া ও সুন্নি মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেনসহ উপনিবেশবাদী কাফির শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
বর্তমান যুগে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞ থেকে মুসলমানদের দৃষ্টি আড়াল করতে এবং মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য ও বিভেদ উস্কে দিয়ে তাদেরকে সহজেই শোষণ করার জন্য দেশে দেশে শিয়া-সুন্নি বিভেদ উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছে সাম্রাজ্যবাদীরা। সাম্প্রতিক সময়ে ইরাক ও সিরিয়ায় এ ধরনের তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে আলকায়দা বা আইএসআইএল-এর ওয়াহাবি সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে। কিন্তু এই দুই দেশের শিয়া ও সুন্নি আলেমগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ওয়াহাবি ও বিজাতীয় শক্তিকে মোকাবেলার আহ্বান জানানোর পর সন্ত্রাসীরা শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের সম্মিলিত শক্তির কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান রূপকার ইমাম খোমেনী (র.)ও বলেছেন, যারা মুসলমানদের মধ্যে শিয়া-সুন্নির নামে অনৈক্য সৃষ্টি করে তারা শিয়াও নয়, সুন্নিও নয়, বরং সাম্রাজ্যবাদীদের দালাল।