জিনের গপ্পো-১
অনেকদিন আগে বেশ অসুস্থ বোধ করায় আমি গেলাম এক কার্ডিওলজিস্ট এর কাছে। তিনি আমাকে পরীক্ষা নিরিক্ষা করলেন, কয়েকটি টেস্ট করাতে বললেন। তখন তার সাথে যে সব কথাবার্তা হয়েছিল তা অনেকটা এই রকম -
ডাক্তার - আপনার তো দেখছি হাই ব্লাডপ্রেসার (হাইপারটেনশন)। তা এই বয়সে আপনার ব্লাড প্রেসার এত বেশী কেন? এই টেস্টগুলো করান, রিপোর্ট দেখে ঔষধ দিবো, আপাতত এই ঔষধ গুলো খেতে থাকুন।
আমি - আসলে আমার মনে হয় ব্যস্ততা, টেনশন, ঘুম কম এবং হজমে সমস্যার জন্য এখন ব্লাড প্রেসার বেশী হচ্ছে। এছাড়া আমার উপর জিনের আছর আছে।
শুনেতো ডাক্তার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন - শুনেছি জ্বিনের আছরে মানুষের নানা রকম অসুখ হয়, হাই ব্লাড প্রেসার, এটাতো আগে শুনিনি। একটু বুঝিয়ে বলুনতো। আপনার মত শিক্ষিত লোক একথা বিশ্বাস করেন?
আমি - হ্যা, অবশ্যই বিশ্বাস করি।
ডাক্তার - আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন যে, আপনার উপর জ্বিনের আছর আছে?
আমি - জিনের আছর মানে হচ্ছে জিনের প্রভাব আছে আমার উপর, তাইতো?
ডাক্তার - হ্যাঁ
আমি- আর জিনেটিক হ্যারিডিটি (বংশ গতির বাহক জিন) মানে তো জিনের প্রভাব তাই না?
ডাক্তার - অ্যা...
জিনের গপ্পো-২
আগ্রার দুর্গের সামনে থেকে আমি জীবনে প্রথম জিনের উপর বসে আধঘন্টা ঘুরেছিলাম। এর পর আর একবার ঘুরলাম গাজীপুর ন্যাশনাল উদ্যানে, তারপর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। জিনের উপর বসে এদিক সেদিক ঘুরতে ভালোই লাগে, প্রথম প্রথম একটু ভয় ভয় লাগে তারপর আর লাগে না।
কবে কোথায় এই জিন ব্যবহার শুরু হয়েছিলো তা আমার জানা নেই। তবে বহুকাল পূর্ব থেকেই জিন ব্যবহার শুরু হয়েছিলো। পৃথিবীর সব রাজা বাদশাগনই যুদ্ধক্ষেত্রে জিন ব্যবহার করতেন। দ্রুততম যাতায়াতের জন্য জিন একটি অপরিহার্য উপাদান ছিলো যতদিন রেলগাড়ী বা মোটরগাড়ী আবিস্কার হয়নি। আধুনিক প্রযুক্তি মানব জাতিকে সহজলভ্য দ্রুততম বাহন উপহার দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত, তা সত্যেও সমগ্র পৃথিবীতে জিন ব্যবহার বিলুপ্ত হয়ে যায়নি বরং গুরুত্বের সাথেই জিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
পৃথিবীতে জিন ব্যবহার অব্যাহত থাকুক এই কামনাই করি।
ব্লগার বন্ধুগন, এটা কিন্তু আগুনের তৈরি জ্বিন নয় এটা হলো ঘোড়ার পিঠে বসার জন্য আরামদায়ক এক প্রকার গদি।
জিনের গপ্পো-৩
আলোচ্য জীন অত্যন্ত শক্তিশালী জীন। এর আছরে মানব জাতি অস্বাভাবিক কথাবার্তা এবং আচরন করতে শুরু করে। কবে থেকে এ জীন মানব জাতির উপর আছর করে চলেছে তা আমার জানা নেই। এ জীন সাধারনত রাজা বাদশা, উচ্চবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্তদের উপর বেশী আছর করে থাকে। এর আছরে মানব জাতি অনেক সময় বেহুস হয়ে পরে, বাঙ্গালিকে দেখা যায় হিন্দি, উর্দ্দু বা কখনো ইংরেজীতে প্রলাপ বকছে সাথে নানা রকম মজাদার শারিরীক অঙ্গভঙ্গি, আছর তীব্র হলে মানব জাতি বমি করতেও শুরু করে।
পৃথিবীর প্রায় সবদেশের মানুষের উপর এ জীন আছর করে থাকে। এ জীন জন্মের পর থেকে বোতলে বন্দি থাকে। বোতলের মুখ খুললে বাতাসে উড়তে শুরু করে শরীরের গন্ধ ছড়াতে ছড়াতে, তারপর মানব দেহে প্রবেশ করে রক্তের সাথ মিশে যায়, তখন দেহের সমস্ত স্নায়ু এবং মস্তিস্কে আছর করে। আর তখনই শুরু হয়ে যায় জীনের কারিশমা।
পৃথিবীতে বহুকাল পূর্ব থেকেই জীনের কারিশমা নিয়ে নানা রকম গপ্পো প্রচলিত আছে, যা লিখে শেষ করা যাবে না। একবার দুই ভাই নিতাই এবং বলাই এর উপর মাঝরাতে এ জীন আছর করলো, তখন দুই ভাই গলাগলি ধরে রাস্তা দিয়ে গান গাইতে গাইতে যাচ্ছে, একটা ছোট বাজারের মধ্যে গিয়ে বলাই ধপাস করে মুখ থুবরে পরে গেল, গেল তো গেল আর উঠে না। নিতাই ডাকে - বলাই উঠ, বাড়ী চল, সন্ধা হয়ে এলো। নিতাই কোনো সাড়া দেয় না। নিতাই আবার ডাকে, বলাই চুপ। হঠাৎ বলাই হাই তুললো, নিতাই বললো- বলাই তোর কি খিদা লাগছে? বলাই কোনো কথা বলে না, নিতাই পাশের দোকান থেকে একটা ঠান্ডা পরাটা কিনে রোল বানিয়ে বলাই এর পায়ুমুখে ধরে বলছে - নে বলাই খা, খেয়ে বাড়ী চল, সন্ধা হয়ে এলো যে। বলাই চুপ। নিতাই আবার বলছে - নে বলাই খেয়ে নে। হঠাৎ বলাই ফুস করে বায়ু নির্গত করলো, নিতাই তখন বলছে - বলাই ফুয়াইচ না, ফুয়াইচ না, পরাটা ঠান্ডা আছে
এটা এক প্রকার বদজীন। মানব জাতি এ জীনকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলে বেশ উপকার পায়। এ জীনের আছরে ক্লান্তি, অবসাদ দুর হয়ে জীবনী শক্তি বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায় যৌন আকাঙ্খা এবং ক্ষমতা (৬০, ৭০ এমনকি ৮০ বছর পর্যন্ত ধরে রাখা যায়, যেমন আমাদের প্রাক্তন প্লেবয় প্রেসিডেন্ট)। আর নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারলে নির্ঘাৎ সর্বনাশ।
আমি এযাবৎ কালে দুই প্রকার জীনের সাক্ষাৎ পেয়েছি - ১) ড্রাই ২) লেমন।
আরো হয়তো থাকতে পারে, জানা নেই।
এ জীনের সমগোত্রীয়রা হলো - ব্রান্ডি, হুইস্কি, ভদকা, রাম, স্যাম্পেন ইত্যাদি।
জিন সম্পর্কে আরো জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।