যাদের বৈদ্যুতিক ক্যাপাসিটর সম্বন্ধ ধারনা আছে তারা জানেন একটি ধনাত্মক ও একটি ঋনাত্মক পাত মিলে একটি ক্যাপাসিটর তৈরি হয় এবং এই দুইপাতের মাঝে অপরিবাহী থাকতে হয়। ক্যাপাসিটর চার্জ ধারন করে রাখে। যেহেতু উলম্ব ও আনুভুমিক রেখাগুলো দুই ধরনের বিদ্যুৎ পরিবহণ করে তাই এরা যেই বিন্দুগুলোতে একে অপরের উপর দিয়ে চলে যায় সেখানে একধরনের ক্ষুদ্র ক্যাপাসিটর তৈরি হয়। মাঝের কাচ অপরিবাহী হিসেবে কাজ করে। এই টাচস্ক্রিনের সাথে আমরা যে স্ক্রিনে ছবি দেখি তার সরাসরি কোনো যোগাযোগ থাকে না এবং দেখার স্ক্রিনটি আরো নিচে অবস্থান করে (নিচের চিত্র দ্রষ্টব্য)।

টাচ স্ক্রিনের বিভিন্ন স্তর

টাচস্ক্রিনের এই বৈদ্যুতিক রেখাগুলো ফোনের ভেতরের প্রসেসরের সাথে যুক্ত। প্রসেসর যখন বুঝতে পারে কিছু ক্যাপাসিটরের চার্জ হ্রাস পেয়েছে সে রেখাগুলোর বৈদ্যুতিক পরিবর্তনটি মাপার মাধ্যমে সেই স্থানটি সনাক্ত করে। সে তখন প্রোগ্রামের দৃশ্যমান অংশ যেটি নিয়ন্ত্রন করে সেখানে মিলিয়ে দেখে ওই অংশের নিচে কি বাটন রয়েছে এবং সফটওয়্যারের কাছ থেকে নির্দেশনা পায় ওই অংশে স্পর্শ করলে কি করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়।
যেমন: আপনি যদি টাচ কিবোর্ডে কাজ করেন এবং ‘অ’ অক্ষরটি চাপেন তখন প্রসেসর স্পর্শের জায়গাটিকে দৃশ্যমান অংশ নিয়ন্ত্রনের জায়গার সাথে মিলিয়ে দেখবে যে সেখানে ‘অ’ অক্ষরটি আছে। এবং সফটওয়্যারে নির্দেশনা আছে ‘অ’ অক্ষর যেখানে আছে সেখানে স্পর্শ করলে ‘অ’ অক্ষরটি টাইপ করতে হবে। প্রসেসর সফটওয়্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী তখন ‘অ’ অক্ষরটি টাইপ করে। এভাবে অন্যান্য নির্দেশনাও বাস্তবায়িত হয়।
ক্যাপাসিটেন্স নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে কাজ করে বলে এই স্ক্রীনকে ক্যাপাসিটেটিভ টাচস্ক্রিন বলা হয়। তবে এখনকার ক্যাপাসিটেটিভ টাচস্ক্রিনগুলো আরেকটু অগ্রসর নীতিমালা ব্যবহার করে। এই ক্ষেত্রে স্ক্রিন পুরোপুরি স্পর্শ না করলেও চলে। স্ক্রিনের খুব কাছাকাছি পরিবাহী বস্তু নিয়ে আসলেই এগুলোতে একধরনের তড়িৎ-চৌম্বক ক্ষেত্র আবিষ্ট হয়। ফলে আপনি এই স্ক্রিনগুলোর উপরে প্রোটেকটিভ ফিল্মও ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে বলা হয় projected capacitance বা প্রো-ক্যাপ প্রযুক্তি।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক