Tuesday, August 22, 2017

ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী মৃত্যু-পরবর্তী ৩ ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার নিকট ভিসা ইন্টার্ভিউ বোর্ডে।


 সৃষ্টিকর্তা:তুৃমি জীবিত থাকাকালে কী কী করেছ?

১ম ব্যক্তি:
আমি আপনার অন্যতম সেরা সামর্থক ছিলাম।দিন-রাত আপনার নাম নিয়েছি।যতই অন্যায় করি না কেন দিন শেষে আপনার কাছে প্রতিবার মাফ চেয়েছি।যত টাকা অবৈধ ভাবে আয় করেছি তার থেকে সব সময় আপনার উপাসনালয় বানানোর জন্য দান করেছি।আমি অন্য দলের সামর্থকদের বুঝিয়ে শুনিয়ে আপনার দলে নিয়ে এসেছি,যারা আসতে চায় নি তাদের পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করেছি।নাস্তিক কুপিয়েছি।আপনার উপাসানলায় বানানোর নাম করে সংখ্যালঘু ও সরকারী জমি দখল করে টাকা আয় করেছি।প্রতিদিন চাঁদা নিয়েছি।এছাড়া আরো অনেক এধরনের পূণ্য করেছি।কোন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হলে সাথে সাথে আপনার কেতাব থেকে একটা উক্তি বের করে দেখিয়ে দিয়েছি যে এই বৈজ্ঞানিক ফরমুলা আপনার কেতাব থেকে গোপনে চুরি করেছে।এতে আপনার ব্যবসাটা আরো জমজমাট হতো।

সৃষ্টিকর্তা:
বা!বা!খুব ভাল,খুব ভাল।যাও বাবা,স্বর্গের গ্রীন কার্ড নিয়ে যাও।আমার জন্য জীবিত কালে এত কিছু করেছ এবার আয়েশ কর।নেক্টস।

২য় ব্যক্তি:
হুজুর,১ম জন যে সব কাজ করেছে আমিও তাই করেছি।কিন্তু আমি তো অন্য পর্টির জন্য করেছি,আমি যে অন্য পার্টির সদস্য।

সৃষ্টিকর্তা:
অন্য পার্টি!!!!ক্যান আমার পার্টি কেতাবে দেখ নাই আমি বড় করে লিখে দিয়েছি যে ক্ষমতায় শুধু আমিই আছি।

২য় ব্যক্তি:
হুজুর সেটা তো আমাদের পার্টি কেতাবেও লেখা আছে।

সৃষ্টিকর্তা:
তারা তো এখন ক্ষমতায় নাই,ক্ষমতা বদল হয়েছে।

২য় ব্যক্তি:
হুজুর মরার আগে যদি জনাতাম আপনার পার্টি এখন ক্ষমতায় আছে তাহলে তো মরার বছর দুই আগে লাফায়ে দল চেন্জ করে আপনার পার্টিতে জয়েন দিতাম।আপনি তো দয়ার সাগর।দেখেন না কোন ভাবে স্বর্গে ঢুকানো যায় কিনা।

সৃষ্টিকর্তা:
নাহ্!কোন পথ তো দেখছি না।তোমাকে স্বর্গে ঢোকানো তো অন্যায় ও অবিচার।আর আমি তো আমার পার্টি কেতাবে লিখে দিয়েছি আমি কোন অন্যায় সামর্থন করি না।তাও,তুমি আমাকে খুশি করার মতো যদি কিছু করতে তাহলে মানতাম।আচ্ছা তুমি নাস্তিক কুপায়েছ?

২য় ব্যক্তি:
জি,অবশ্যই হুজুর।আমিও নাস্তিক কুপায়েছি।আমাগো পার্টি কেতাবেও কোপানোর নির্দেশ ছিল।শালারা হেব্বী শয়তান।তারা সব পার্টির লোকদের একই ভাবে।এ কেমন কথা বলেন?আমরা ও আপনার পার্টির মেম্বাররা তো আলাদা।এটা তো সব পার্টির কেতাবে লেখা আছে।তাই শুয়োরগুলোরে ইচ্ছামতো কুপায়েছি।

সৃষ্টিকর্তা:
(সামনে ভাব ভেতরে সেই খুশি)ও,তাই নাকি।তবুও  তুমি যখন নাস্তিক কুপায়েছ তখন তুমি অন্য পার্টি হলেও তোমারে কিছুটা ছাড় দেওয়া যায়।হাজার হোক আমি তো ক্ষমার সাগর।আমরা যতই আলাদা পার্টির মালিক হই না কেন,নাস্তিক শুয়রগুলোতো আমাদের সব পার্টির কমন শত্রু।যাও তোমারে ১ মাসের জন্য স্বর্গের ভিসা দিলাম।তারপর কিন্তু নরক।অবশ্য কিছু কমিশন দিলে ভিন্ন কথা।ঔ পরেরজন তাড়াতাড়ি আয়।নে তোর কাহিনী  বলা শুরু কর।

৩য় ব্যক্তি:
আমি আপনার সেই কথিত নাস্তিকদলের সদস্য।আমি নিজেকে পৃথিবীতে ৪০০০ পার্টির মধ্য কোন পার্টির সদস্য মনে করতাম না।আমি মানবতার সদস্য ছিলাম।আমার নিকট সব মানুষই এক আর আপনাদের বানানো মানুষের ভেদাভেদ অলৌকিক ও ভিত্তিহীন।আর এজন্যই আমাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

সৃষ্টিকর্তা:
ও,তুই সেই দলের মাল।এইবার তোরে পাইছি।শালা হারামজাদা সব পার্টির কেতাবে উল্লেখ আছে তারা তাদের পার্টির সদস্যদের সৃষ্টি করেছে।এক পার্টির সদস্য অন্য পার্টি সদস্য থেকে আলাদা।আর তুই তারে মিথ্যা বলিস।আমার সৃষ্টি আর আরেক পার্টির মালিকের সৃষ্ট মেম্বার এক ভাবিস?কতবড় সাহস।এজন্যই সব পার্টি কেতাবে তোর মতো "মানুষ"নামে উদ্ভট পার্টির নীতিবাদীদের হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া আছে।তোর চৌদ্দগুষ্টি আমার পার্টির সদস্য আর তুই শালা বেঈমান আমার পার্টির সাথে বেঈমানি করে  সব পার্টির সদস্যদের এক ভাবিস?
দেখ এখন তুই নরকে পুড়ে মরবি আর তোরে কোপানো আমার পার্টির সেই অদম্য সদস্যরে আমি সবকিছু দিয়ে স্বর্গে পাঠাব।এটা হল পার্টির বেঈমানের শাস্তি।

(কথাগুলো বলার পর  ৩য় ব্যক্তি অট্টহাসিতে  দেখে)

সৃষ্টিকর্তা:
কিরে তুই হাসছিস কেন?নরকে পোড়ার ভয় নাই?

৩য় ব্যক্তি:
হাসছি আপনাকে দেখে।এমন একজন সৃষ্টিকর্তা হয়েছেন যে তার অবাস্তব অস্তিত্ব টেকানোর জন্য মানুষকে তীব্র ভয় পায়।আপনারা এতই ভয় পান যে আপনারা সব পার্টির সৃষ্টিকর্তারা নিজেদের কেতাবে নাস্তুিকদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন আর এতে নাকি কোন পাপ হয় না।

কেতাব শুরুই করেন হত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের নির্দেশ দিয়ে,আর সেই কেতাবে নীতি বাক্য দেন,নিজেরে ক্ষমতার সাগর ভাবেন,মানবতার ফাঁপড় মারেন?আপনারা সত্যই মহান।দেখি সাইডে সরেন,নরকে যাওয়া লাগবে।যত্তসব।