Wednesday, August 30, 2017

সমকামীতা, লুত নবী এবং ডেড সি

১৯মে তারিখে কেরানীগঞ্জে একটি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে সমকামীরা কোনো এক ধরনের গেট টুগেদার করছিল । পুলিশ সেখানে রেইড দিয়ে ২৯ জন সমকামীকে আটক করে । (খবরের লিংক-http://www.bbc.com/bengali/news-39971977 ) এই ঘটনার পর বেশ কিছু ফেসবুক গ্রুপে সমকামীতা নিয়ে আলোচনা -সমালোচনা দেখলাম । আমি সমসাময়িক ঘটনা প্রবাহ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আপনাদের প্রাচীন একটি ঘটনা শোনাতে চাই । লুত (আঃ) এর সময়েও সমকামীদের অস্তিত্ত্ব ছিল বলে বাইবেলে এবং কোরানে উল্লেখ আছে । আসুন তাদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি ।
 
———————————
কোরানের বিভিন্ন জায়গায় লুত (আঃ) এর কওমের কথা উল্লেখ রয়েছে । যেমন ৭ নাম্বার সূরা , সূরা আরাফ এর ৮০-৮৪ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে ,
 
এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ?
 
তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।
 
তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়।
 
অতঃপর আমি তাকে ও তাঁর পরিবার পরিজনকে বাঁচিয়ে দিলাম, কিন্তু তার স্ত্রী। সে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল, যারা রয়ে গিয়েছিল। আমি তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করলাম।
 
অতএব, দেখ গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে।
 
———————————————-
 
১১ নাম্বার সূরা (সূরা হূদ)এর ৭৪-৮৩ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
অতঃপর যখন ইব্রাহীম (আঃ) এর আতঙ্ক দূর হল এবং তিনি সুসংবাদ প্রাপ্ত হলেন, তখন তিনি আমার সাথে তর্ক শুরু করলেন কওমে লূত সম্পর্কে।
ইব্রাহীম (আঃ) বড়ই ধৈর্য্যশীল, কোমল অন্তর, আল্লাহমুখী সন্দেহ নেই।
 
ইব্রাহীম, এহেন ধারণা পরিহার কর; তোমার পালনকর্তার হুকুম এসে গেছে, এবং তাদের উপর সে আযাব অবশ্যই আপতিত হবে, যা কখনো প্রতিহত হবার নয়।
আর যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূত (আঃ) এর নিকট উপস্থিত হল। তখন তাঁদের আগমনে তিনি দুচিন্তাগ্রস্ত হলেন এবং তিনি বলতে লাগলেন, আজ অত্যন্ত কঠিন দিন।
আর তাঁর কওমের লোকেরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে তার (গৃহ) পানে ছুটে আসতে লাগল। পূর্ব থেকেই তারা কু-কর্মে তৎপর ছিল। লূত (আঃ) বললেন-হে আমার কওম, এ আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং অতিথিদের ব্যাপারে আমাকে লজ্জিত করো না, তোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নেই।
 
তারা বলল তুমি তো জানই, তোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই। আর আমরা কি চাই, তাও তুমি অবশ্যই জান।
 
লূত (আঃ) বললেন-হায়, তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা আমি কোন সূদৃঢ় আশ্রয় গ্রহণ করতে সক্ষম হতাম।
 
মেহমান ফেরেশতাগন বলল-হে লূত (আঃ) আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখনো তোমার দিকে পৌঁছাতে পারবে না। ব্যস তুমি কিছুটা রাত থাকতে থাকতে নিজের লোকজন নিয়ে বাইরে চলে যাও। আর তোমাদের কেউ যেন পিছনে ফিরে না তাকায়। কিন্তু তোমার স্ত্রী নিশ্চয় তার উপরও তা আপতিত হবে, যা ওদের উপর আপতিত হবে। ভোর বেলাই তাদের প্রতিশ্রুতির সময়, ভোর কি খুব নিকটে নয়?
অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছাল, তখন আমি উক্ত জনপদকে উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর পাথর বর্ষণ করলাম।
যার প্রতিটি তোমার পালনকর্তার নিকট চিহ্নিত ছিল। আর সেই পাপিষ্ঠদের থেকে খুব দূরেও নয়।
 
———————————————-
১৫ নাম্বার সূরা (সূরা হিজর) এর ৫৮-৭৭ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
তারা বললঃ আমরা একটি অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি।
 
কিন্তু লূতের পরিবার-পরিজন। আমরা অবশ্যই তাদের সবাইকে বাঁচিয়ে নেব।
 
তবে তার স্ত্রী। আমরা স্থির করেছি যে, সে থেকে যাওয়াদের দলভূক্ত হবে।
 
অতঃপর যখন প্রেরিতরা লূতের গৃহে পৌছল।
 
তিনি বললেনঃ তোমরা তো অপরিচিত লোক।
 
তারা বললঃ না বরং আমরা আপনার কাছে ঐ বস্তু নিয়ে এসেছি, যে সম্পর্কে তারা বিবাদ করত।
 
এবং আমরা আপনার কাছে সত্য বিষয় নিয়ে এসেছি এবং আমরা সত্যবাদী।
 
অতএব আপনি শেষরাত্রে পরিবারের সকলকে নিয়ে চলে যান এবং আপনি তাদের পশ্চাদনুসরণ করবেন না এবং আপনাদের মধ্যে কেউ যেন পিছন ফিরে না দেখে। আপনারা যেখানে আদেশ প্রাপ্ত হচ্ছেন সেখানে যান।
 
আমি লূতকে এ বিষয় পরিজ্ঞাত করে দেই যে, সকাল হলেই তাদেরকে সমুলে বিনাশ করে দেয়া হবে।
 
শহরবাসীরা আনন্দ-উল্লাস করতে করতে পৌছল।
 
লূত বললেনঃ তারা আমার মেহমান। অতএব আমাকে লাঞ্ছিত করো না।
 
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার ইযযত নষ্ট করো না।
 
তার বললঃ আমরা কি আপনাকে জগৎদ্বাসীর সমর্থন করতে নিষেধ করিনি।
 
তিনি বললেনঃ যদি তোমরা একান্ত কিছু করতেই চাও, তবে আমার কন্যারা উপস্থিত আছে।
 
আপনার প্রাণের কসম, তারা আপন নেশায় প্রমত্ত ছিল।
 
অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তাদেরকে প্রচন্ড একটি শব্দ এসে পাকড়াও করল।
 
অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর কঙ্করের প্রস্থর বর্ষণ করলাম।
 
নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
 
জনপদটি সোজা পথে অবস্থিত রয়েছে।
 
নিশ্চয় এতে ঈমানদারদের জন্যে নিদর্শণ আছে।
 
———————————————————-
২১ নাম্বার সূরা (সূরা আম্বিয়া) এর ৭৪-৭৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
এবং আমি লূতকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান এবং তাঁকে ঐ জনপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম, যারা নোংরা কাজে লিপ্ত ছিল। তারা মন্দ ও নাফরমান সম্প্রদায় ছিল।
 
আমি তাকে আমার অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। সে ছিল সৎকর্মশীলদের একজন।
———————————————————–
 
২৬ নাম্বার সূরা (সূরা শুয়ারা) এর ১৬০-১৭৩ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
160. লূতের সম্প্রদায় পয়গম্বরগণকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
161. যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললেন, তোমরা কি ভয় কর না ?
162. আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
163. অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।
164. আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না।
আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা দেবেন।
165. সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর?
166. এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যে স্ত্রীগনকে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর?বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।
167. তারা বলল, হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তবে অবশ্যই তোমাকে বহিস্কৃত করা হবে।
168. লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।
169. হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এবং আমার পরিবারবর্গকে তারা যা করে, তা থেকে রক্ষা কর।
170. অতঃপর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করলাম।
171. এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।
172. এরপর অন্যদেরকে নিপাত করলাম।
173. তাদের উপর এক বিশেষ বৃষ্টি বর্ষণ করলাম।ভীতি-প্রদর্শিত দের জন্যে এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট।
 
————————————————
 
২৭ নাম্বার সূরা (সূরা নামল) এর ৫৪-৫৮ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
স্মরণ কর লূতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর পরিণতির কথা তোমরা অবগত আছ!
 
তোমরা কি কামতৃপ্তির জন্য নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরা তো এক বর্বর সম্প্রদায়।
উত্তরে তাঁর কওম শুধু এ কথাটিই বললো, লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা তো এমন লোক যারা শুধু পাকপবিত্র সাজতে চায়।
 
অতঃপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করলাম তাঁর স্ত্রী ছাড়া। কেননা, তার জন্যে ধ্বংসপ্রাপ্তদের ভাগ্যই নির্ধারিত করেছিলাম।
 
আর তাদের উপর বর্ষণ করেছিলাম মুষলধারে বৃষ্টি। সেই সতর্ককৃতদের উপর কতই না মারাত্নক ছিল সে বৃষ্টি।
 
——————————————-
 
২৯ নাম্বার সূরা (সূরা আনকাবুত) এর ২৮-৩০ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে ,
 
আর প্রেরণ করেছি লূতকে। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ করেনি
 
তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে গর্হিত কর্ম করছ? জওয়াবে তাঁর সম্প্রদায় কেবল একথা বলল, আমাদের উপর আল্লাহর আযাব আন যদি তুমি সত্যবাদী হও।
 
——–
একই সূরার ৩৩-৩৪ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূতের কাছে আগমন করল, তখন তাদের কারণে সে বিষন্ন হয়ে পড়ল এবং তার মন সংকীর্ণ হয়ে গেল। তারা বলল, ভয় করবেন না এবং দুঃখ করবেন না। আমরা আপনাকে ও আপনার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবই আপনার স্ত্রী ব্যতীত, সে ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
 
আমরা এই জনপদের অধিবাসীদের উপর আকাশ থেকে আযাব নাজিল করব তাদের পাপাচারের কারণে।
————————————————
 
৩৭ নাম্বার সূরা (সূরা আস সাফফাত) এর ১৩৩-১৩৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
নিশ্চয় লূত ছিলেন রসূলগনের একজন
 
যখন আমি তাকেও তার পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করেছিলাম;
 
কিন্তু এক বৃদ্ধাকে ছাড়া; সে অন্যান্যদের সঙ্গে থেকে গিয়েছিল।
 
————————————————
 
৫১ নাম্বার সূরা (সূরা আজ জারিয়াত) এর ৩২-৩৭ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
ইব্রাহীম বললঃ হে প্রেরিত ফেরেশতাগণ, তোমাদের উদ্দেশ্য কি?
 
তারা বললঃ আমরা এক অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি,
 
যাতে তাদের উপর মাটির ঢিলা নিক্ষেপ করি।
 
যা সীমাতিক্রমকারীদের জন্যে আপনার পালনকর্তার কাছে চিহিত আছে।
 
অতঃপর সেখানে যারা ঈমানদার ছিল, আমি তাদেরকে উদ্ধার করলাম।
 
এবং সেখানে একটি গৃহ ব্যতীত কোন মুসলমান আমি পাইনি।
 
যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে, আমি তাদের জন্যে সেখানে একটি নিদর্শন রেখেছি।
 
——————————————————
 
৫৪ নাম্বার সূরা (সূরা আর রহমান) এর ৩৩-৩৮ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
লূত-সম্প্রদায় সতর্ককারীদের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল।
 
আমি তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বর্ষণকারী প্রচন্ড ঘূর্ণিবায়ু; কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়। আমি তাদেরকে রাতের শেষপ্রহরে উদ্ধার করেছিলাম।
 
আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ। যারা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে, আমি তাদেরকে এভাবে পুরস্কৃত করে থকি।
 
লূত (আঃ) তাদেরকে আমার প্রচন্ড পাকড়াও সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। অতঃপর তারা সতর্কবাণী সম্পর্কে বাকবিতন্ডা করেছিল।
 
তারা লূতের (আঃ) কাছে তার মেহমানদেরকে দাবী করেছিল। তখন আমি তাদের চক্ষু লোপ করে দিলাম। অতএব, আস্বাদন কর আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী।
 
তাদেরকে প্রত্যুষে নির্ধারিত শাস্তি আঘাত হেনেছিল।
 
——————————–
 
৬৬ নাম্বার সূরা (সূরা আত তাহরিম) এর ১০ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,
 
আল্লাহ তা’আলা কাফেরদের জন্যে নূহ-পত্নী ও লূত-পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অতঃপর তারা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে নূহ ও লূত তাদেরকে আল্লাহ তা’আলার কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হলঃ জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে চলে যাও।
 
রেফারেন্স –কোরানের বাংলা অনুবাদ
 
——————————-
 
কোরানের সমালোচনা
——————————-
১। লুত (আঃ) এর কওমের প্রতি আসলে কি বর্ষন করা হয়েছিল ? সূরে হুদ অনুসারে কাকর সূরা আরাফে প্রস্তর, সূরা হিজর অনুসারে কংকরের প্রস্তর, সূরা শুয়ারা অনুসারে বিশেষ বৃষ্টি, সূরা নামল অনুসারে মুষলধারে বৃষ্টি, সূরা আনকাবুত অনুসারে আজাব, সূরা আজ জারিয়াত অনুসারে মাটির ঢেলা নিক্ষেপ করা হয়েছিল । একেক জায়গায় একেক কথা বলা । কনফিউজিং ।
 
২। কিছু কিছু জায়গায় (সূরা হুদ,সূরা হিজরে) বলা হয়েছে, শহরটিকে উলটো করে দেওয়া হয়েছিল । অন্যান্য সূরায় আবার এই বিষয়টা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি
 
৩। এলাকাবাসী ফেরেস্তাদের (ছেলে মেহমান) ধর্ষন করতে চাইলে লুত নবী বাধা দিয়ে বললেন, যদি তোমরা একান্ত কিছু করতেই চাও, তবে আমার কন্যারা উপস্থিত আছে (সূরা হিজর)। -হে আমার কওম, এ আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা। (সূরা হুদ) অনেক ধর্মীয় গল্পেই নবী রাসূলদের এমন অনেক কাজ করতে দেখা যায়, যেটা বর্তমান সমাজে একেবারেই অগ্রহনযোগ্য (যেমন ইব্রাহিম (আঃ) এর নিজের ছেলেকে জবাই করতে যাওয়া) ইব্রাহীম (আ) এর ক্ষেত্রে যুকতি হচ্ছে, আল্লাহ তাকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে হুকুম দিয়েছিলেন । কিন্তু লুত (আঃ) এর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ,সে ইন্সটান্টলি স্বতপ্রবৃত্ত হয়ে নিজের মেয়েদেরকে গনধর্ষন করার প্রস্তাব দিচ্ছে
 
———————————————
 
এবারে আসুন বাইবেলে এই ঘটনা সম্পর্কে কি লেখা আছে দেখে নেই । কোরানে ১০/১২ জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে সম্পূর্নভাবে গল্পটা বর্ননা করা আছে । তবে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টের বুক অফ জেনিসিসের ১৮ আর ১৯ নাম্বার চ্যাপ্টারেই একটানা বর্ননা দিয়ে শেষ করা হয়েছে । বাংলা বাইবেল থেকে কোট করছি—
 
————————————————————
চ্যাপ্টার ১৮
 
২০ তারপরে প্রভু বললেন, “য়ে নিদারুণ পাপ সেখানে সংঘটিত হচ্ছে, তার জন্য আমি সদোম এবং ঘমোরার বিরুদ্ধে তীব্র আর্তনাদ শুনেছি।
২১ যত খারাপ বলে শুনেছি তা সত্যিই তত খারাপ কিনা তা আমি নিজে গিয়ে দেখব। তাহলে আমি নিশ্চিতভাবে সব জানব।”
২২ তখন তাঁরা তিনজন সদোম অভিমুখে হাঁটতে শুরু করলেন। কিন্তু অব্রাহাম প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে রইলেন।
২৩ অব্রাহাম প্রভুর কাছে এলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, আপনি কি ভাল লোকেদেরও ধ্বংস করবেন য়েমন আপনি মন্দ লোকেদের ধ্বংস করেন?
২৪ সদোম নগরে যদি ৫০ জনও ভাল লোক থাকে তাহলে আপনি কি করবেন? তাহলেও কি আপনি নগরটা ধ্বংস করবেন? নিশ্চয়ই আপনি ঐ নগরবাসী ৫০ জন ভাল লোকের জন্যে নগরটা ধ্বংস করবেন?
২৫ তাহলে আপনি নিশ্চয়ই ঐ নগরটা বা ঐ খারাপ লোকেদের ধ্বংস করবেন না? যদি তা করেন তাহলে ভাল এবং মন্দ লোকেদের একই পরিণতি হবে। তার অর্থ, ভাল এবং মন্দ জাতীয উভয় লোকদেরই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। আপনি সমস্ত পৃথিবীর বিচারক। আমি জানি আপনি ঠিক বিচারই করবেন।”
২৬ তখন প্রভু বললেন, “আমি যদি সদোম নগরে ৫০ জন ভাল লোক পাই তাহলে আমি সমগ্র নগরটাকেই রক্ষা করব।”
২৭ তখন অব্রাহাম বললেন, “আপনার তুলনায় আমি নেহাতই ধুলো আর ছাই। কিন্তু একটা প্রশ্ন করে আবার আপনাকে বিরক্ত করছি।
২৮ যদি ভাল লোকদের থেকে ৫ জনেকে খুঁজে না পাওয়া যায় তখন কি করবেন? নগরে যদি মাত্র ৪৫ জন ভাল লোক থাকে? মাত্র ৫ জনকে পাওয়া গেল না বলে কি আপনি গোটা নগর ধ্বংস করে ফেলবেন?”তখন প্রভু বললেন, “যদি আমি ৪৫ জন ভাল লোককেও পাই তাহলে ঐ নগর ধ্বংস করব না।”
২৯ অব্রাহাম আবার বললেন, “সেখানে গিয়ে আপনি যদি মাত্র ৪০ জন ভাল লোককে পান তাহলে কি আপনি পুরো নগর ধ্বংস করবেন?”প্রভু বললেন, “আমি যদি ৪০ জন ভাল লোককেও পাই তাহলে আমি নগরটা ধ্বংস করব না।”
৩০ অব্রাহাম বললেন, “প্রভু দয়া করে আমার ওপর রাগ করবেন না। একটা প্রশ্ন করি! যদি নগরে মাত্র ৩০ জন ভাল লোককে পান তাহলেও কি আপনি ঐ নগর ধ্বংস করবেন?”তখন প্রভু বললেন, “আমি যদি ৩০ জন ভাল লোক পাই তাহলে নগরটা ধ্বংস করব না।”
৩১ তখন অব্রাহাম বললেন, “আপনাকে কি আর একবার বিরক্ত করতে পারি? যদি সেখানে মাত্র ২০ জন ভাল লোক পান তাহলে কি করবেন?”প্রভু বললেন, “আমি যদি ২০ জন ভাল লোক পাই তাহলে আমি নগরটা ধ্বংস করবো না।”
৩২ তখন অব্রাহাম বললেন, “প্রভু দয়া করে রাগ করবেন না, কিন্তু শেষবারের মতো আর একটি প্রশ্ন দিয়ে আপনাকে বিরক্ত করি। আপনি যদি সেখানে মাত্র ১০ জন ভাল লোক পান তাহলে আপনি কি করবেন?”প্রভু বললেন, “ঐ নগরে ১০ জন ভাল লোক পেলেও আমি তা ধ্বংস করব না।”
৩৩ প্রভুর অব্রাহামকে যা বলার ছিল, সব বলা হয়ে গেল। এবার প্রভু তাঁর পথে চলে গেলেন এবং অব্রাহাম নিজের বাসস্থানে ফিরে গেলেন।
 
চ্যাপ্টার ১৯
 
১ সেদিন সন্ধ্যায় সদোম নগরে দুজন দূত এলেন। তখন লোট নগরের প্রবেশ পথে বসেছিলেন। তিনি দূতদের আসতে দেখলেন। লোট ভাবলেন য়ে তারা সাধারণ পথিক, নগরের মধ্য দিয়ে কোথাও যাচ্ছে। লৌট উঠে গিয়ে তাঁদের অভিবাদন করে
২ বললেন, “মহাশয়গণ, অনুগ্রহ করে একবার আমার বাড়ীতে আসুন এবং আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। সেখানে আপনারা হাত-পা ধুয়ে রাত্রিবাস করতে পারেন। তাহলে কাল সকালে আবার আপনাদের গন্তব্য অভিমুখে যাত্রা করতে পারবেন।”দূত দুজন বললেন, “না, আমরা চকেই রাত্রিবাস করব।”
৩ কিন্তু লৌট নিজের বাড়ীতে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার জন্যে পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। তাই দূতরা শেষ পর্য্ন্ত লোটের বাড়ীতে থেকে রাজী হলেন। তাঁরা লোটের বাড়ীতে গেলেন। লোট তাঁদের কিছু পানীয় দিলেন। লৌট তাঁদের রুটি বানিয়ে দিলেন এবং তাঁরা সেই রুটি খেলেন।
৪ সেদিন সন্ধ্যায় ঘুমোতে যাওয়ার ঠিক আগে, নগরের নানা প্রান্ত থেকে নানা বয়সের বহু লোক লোটের বাড়িতে এল। সদোমের সেইসব লোকেরা লোটের বাড়ী ঘিরে ফেলল এবং লোটকে চিত্কার করে ডাকতে লাগল।
৫ তারা বলল, “আজ সন্ধ্যায় যারা এসেছে, কোথায় তারা? তাদের বাইরে নিয়ে এস – আমরা তাদের সাথে য়ৌন সহবাস করতে চাই।”
৬ লৌট বাইরে বেরিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিল।
৭ সেই জনতার উদ্দেশ্যে লোট বলল, “না! বন্ধুরা, আমি মিনতি করছি, এমন খারাপ কাজ কোরো না।
৮ দেখ, আমার দুটি মেয়ে আছে – কোনও পুরুষ তাদের স্পর্শ করে নি। তোমাদের জন্যে আমি নিজের কন্যাদের দেব। তোমরা তাদের নিয়ে যা খুশী করতে পারো। কিন্তু দয়া করে এই অতিথি দুজনের প্রতি কিছু কোরো না। এই দুজন আমার ঘরে এসেছে এবং আমার অবশ্যই এদের রক্ষা করা উচিত্‌।”
৯ য়েসব লোকেরা লোটের বাড়ী ঘিরে রেখেছিল তারা উত্তর দিল, “আমাদের পথ থেকে সরে যাও।” তারপর তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এই লোকটা একদিন অতিথি হিসেবে আমাদের নগরে বাস করতে এসেছিল। এখন জ্ঞান দিচ্ছে, আমরা কি করব না করব!” তখন সেই লোকেরা লোটকে বলল, “এখন তোমার প্রতি ওদের চেয়ে আরও বেশী খারাপ ব্যবহার করব।” অতএব সেই জনতা লোটের দিকে এগিয়ে য়েতে থাকল। ক্রমে দরজা ভেঙ্গে ফেলার উপক্রম।
১০ কিন্তু য়ে দুজন পুরুষ লোটের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা হঠাত্‌ দরজা খুলে বেরিয়ে এসে লোটকে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলেন এবং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
১১ তারপর তাঁরা বাইরের মারমুখো জনতার জন্যে কিছু একটা করলেন। ফলে যুবক, বৃদ্ধ, সব বদমাশ লোকেরা অন্ধ হয়ে গেল। এর ফলে যারা বাড়ির ভেতর জোর করে ঢোকার চেষ্টা করছিল তারা ভেতরে ঢোকার দরজাই খুঁজে পেল না।
১২ অতিথি দুজন লোটকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার পরিবারের আর কেউ কি এই শহরে বাস করে? তোমার জামাই, ছেলে, মেয়ে কিংবা পরিবারের আর কেউ কি এখানে আছে? যদি থাকে তাহলে তাদের এখনই এই জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলো।
১৩ আমরা এই নগর ধ্বংস করে দেব। এই নগর য়ে কত খারাপ তা প্রভু শুনেছেন। তাই এই নগর ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন।”
১৪ তখন লোট বেরিয়ে গিয়ে তাঁর অন্যান্য মেয়েদের যারা বিয়ে করেছে সেই মেয়েদের স্বামীদের অর্থাত্‌ জামাইদের সঙ্গে কথা বললেন। লোট বলল, “তাড়াতাড়ি করো! এক্ষুনি এই জায়গা ছেড়ে চলে যাও! প্রভু এখনই এই জায়গা ধ্বংস করবেন।” কিন্তু তারা ভাবল, লোট বোধহয় তামাশা করছেন।
১৫ পরদিন ভোরে সেই দূতেরা লোটকে তাড়া দিলেন। তাঁরা বললেন, “এই নগরবাসীদের শাস্তি দেওয়া হবে। সুতরাং তুমি, তোমার স্ত্রী এবং য়ে দুজন মেয়ে তোমার কাছে থাকে তাদের নিয়ে শীঘ্রই এই জায়গা ছেড়ে চলে যাও। তাহলে এই নগরের সঙ্গে তোমরা আর ধ্বংস হবে না।”
১৬ কিন্তু লোটের সব গুলিযে গেল এবং তিনি নগর ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাড়া করলেন না। সুতরাং ঐ দুজন লোট এবং তাঁর স্ত্রীর এবং দুই মেয়ের হাত চেপে ধরল। ঐ দুজন লোট এবং তাঁর পরিবারকে নিরাপদে নগরের বাইরে নিয়ে গেলেন। লৌট এবং তার পরিবারের প্রতি প্রভু দয়ালু ছিলেন।
১৭ তাই ঐ দুজন লোট এবং তাঁর পরিবারকে নগরের বাইরে নিয়ে এলেন। তাঁরা নগরের বাইরে চলে এলে সেই দুজন দুতের একজন বললেন, “এবার প্রাণ বাঁচাবার জন্যে তোমরা দৌড় দাও! আর পেছনের দিকে তাকাবে না। উপত্যকার কোনও জায়গাতে দাঁড়াবে না। যতক্ষণ না ঐ পর্বতে পৌঁছবে ততক্ষণ শুধুই দৌড়বে। থামলে, নগরের সঙ্গে তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে!”
১৮ কিন্তু লৌট এই দুজনকে বললেন, “মহাশয়গণ, দয়া করে আমায় অত দূরে দৌড়ে য়েতে বলবেন না!
১৯ আমি আপনাদের সেবকমাত্র, তবু আমার প্রতি আপনাদের অসীম দয়া। দয়া করে আমার জীবন রক্ষা করেছেন। কিন্তু ঐ পর্বত পর্য্ন্ত সমস্ত পথ দৌড়োবার ক্ষমতা আমার নেই। যদি আমি খুব ধীরে যাই তবে বিপদ ঘটবে এবং আমি নিহত হব!
২০ দেখুন, এখানে কাছেই একটা খুব ছোট শহর আছে। আমি সেই শহর পর্য্ন্ত দৌড়ে বেঁচে য়েতে পারি।”
২১ দূত লোটকে বললেন, “ভালো কথা আমি তোমার অনুরোধ স্বীকার করেছি। আমি তোমাকে সেটা করতে দেব। আমি ঐ শহর ধ্বংস করব না।
২২ কিন্তু সেখানে শীঘ্রই দৌড়ে যাও। যতক্ষণ না নিরাপদে ঐ শহরে তুমি পৌঁছোচ্ছ ততক্ষণ সদোম ধ্বংস করতে পারব না।” (ঐ শহরের নাম সোযর কারণ শহরটি খুব ছোট।)
২৩ সূর্য়োদযের সঙ্গে সঙ্গে লোট সোযরে পৌঁছলেন।
২৪ একই সময়ে প্রভু সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করা শুরু করলেন। প্রভু আকাশ থেকে আগুন আর জ্বলন্ত গন্ধক বর্ষণ শুরু করলেন।
২৫ অর্থাত্‌ প্রভু ঐ নগরগুলি ধ্বংস করলেন। সমস্ত গাছপালা, সমস্ত লোকজন, সমগ্র উপত্যকাটাই প্রভু ধ্বংস করলেন।
২৬ লোট যখন স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন তখন লোটের স্ত্রী নিষেধ ভুলে একবার পেছনে নগরের দিকে তাকালেন এবং তখনই লবণের মূর্ত্তি হয়ে গেলেন।
২৭ খুব সকালে অব্রাহাম আগে য়েখানটাতে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সেই স্থানটিতে তিনি আবার গিয়ে দাঁড়ালেন।
২৮ অব্রাহাম সদোম এবং ঘমোরার দিকে তাকিযে দেখলেন। সমগ্র উপত্যকার ওপর দৃষ্টিপাত করে অব্রাহাম দেখলেন য়ে সমস্ত উপত্যকা থেকে ধোঁযা উঠছে। দেখে মনে হল বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ফলস্বরূপ ঐ ধোঁযা
 
বাংলা বাইবেল
 
————————————–
বাইবেলের সমালোচনা
 
১। আব্রাহাম প্রভুর কাছ থেকে দর কষাকষি করছেন । ৫০ থেকে ৪০,৪০ থেকে ৩০,৩০ থেকে ২০,২০ থেকে ১০ এইভাবে দর কষাকষি করে শেষে মীমাংসা হল যে , ওই শহরে যদি ১০ জন ঈমানদার ব্যক্তি থাকে তাহলে শহরটি ধ্বংস করা হবেনা । এই গল্পের সাথে শবে মেরাজের গল্পের একটি পার্ট মিলে যাচ্ছে । আল্লাহ প্রথমে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ জারি করেছিলেন । পরে মহানবী (সাঃ) দরকষাকষি করে প্রতিবারে ৫ রাকাত করে কমিয়ে একেবারে শেষে ৫ রাতে স্থির করেছিলেন । বাইবেল আর কোরান –কেউ কি কোনোটা থেকে কপি করেছে ? আদি উতস কোনটা ? কোন বইটা বেশি পুরনো ?
 
২। কোরানে কেবলমাত্র একটা শহরের কথা বলা হয়েছে (সেই শহরের নাম বলা হয়নি) কিন্তু বাইবেলে ২ টা আলাদা শহর (সদোম আর ঘমোরা) এর কথা বলা হয়েছে ।
 
৩। দেখ, আমার দুটি মেয়ে আছে – কোনও পুরুষ তাদের স্পর্শ করে নি। তোমাদের জন্যে আমি নিজের কন্যাদের দেব। তোমরা তাদের নিয়ে যা খুশী করতে পারো। কিন্তু দয়া করে এই অতিথি দুজনের প্রতি কিছু কোরো না। –কেমন বাবা হলে এই ধরনের কথা কেউ বলতে পারে ?
 
৪।সদোম আর ঘমোরা উল্টানোর কথা উল্লেখ নেই । আকাশ থেকে আগুন আর জ্বলন্ত গন্ধক বর্ষনের কথা বলা হয়েছে (কোরানে উল্লেখ আছে পাথর/মাটির ঢেলা/বৃষ্টির কথা । আগুনের কথা বলা নাই)
 
৫। ওভারল ,কোরানের চেয়ে বাইবেলের বর্ননা বেশি ডেস্ক্রিপ্টিভ এবং বেশি ইনফর্মেটিভ। বাইবেল যেহেতু বেশি পুরনো, তাই এটা কি ধারনা করা যেতে পারে যে বাইবেল থেকে কপি করে এই গল্পটা কোরানে ঢুকানো হয়েছে ? কপি পেস্ট করতে গিয়ে কিছু অংশ বাদ পড়েছে , ২ টা শহরের জায়গায় ১ টা শহর হয়েছে ,বাইবেলের আগুনের বৃষ্টি
কোরানে এসে হয়ে গেছে পাথর আর কংকর বা অন্য অনেক হয়ে কিছুর বৃষ্টি——এটা কি অনুমান করা যায় ?
 
———————————-
ডেড সি’র লবনাক্ততার রহস্য
———————————-
 
অনেকে দাবি করেন, লুত নবীর ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির আবাসস্থল হচ্ছে বর্তমানের ডেড সি । ইসরাইল এবং জর্ডানের মাঝে অবস্থিত এই ডেড সিতে মানুষ কিংবা অন্যান্য প্রানীরা ভেসে থাকতে পারে । নদী বা সাগরের অন্যান্য পানির মত এই পানিতে নামলেই কেউ ডুবে যায়না । পর্যটকরা ডেডসিতে নেমে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে নিউজপেপার পড়তে পারে । যদিও অনেকে দাবি করেন যে , লুত নবীর আজাবপ্রাপ্ত জাতির আবাস স্থলি ডেড সি, কিন্তু ডাইরেক্ট কোরানে এই জায়গার কথা উল্লেখ নেই । ইনডাইরেক্টলি বলা হয়েছে যে, ”যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে, আমি তাদের জন্যে সেখানে একটি নিদর্শন রেখেছি।” এই আয়াতকে অনেকে ব্যবহার করে বুঝাতে চায় যে ডেড সি আল্লাহর একটি কুদরত । আল্লাহর আজাবের কারনেই এখানে সবাই ভেসে থাকে, কোনো জীবজন্তু এই পানিতে বেচে থাকতে পারেনা ।
 
প্রকৃতপক্ষে ডেড সি’র জন্ম হয়েছে কয়েক লাখ বছর আগে । ইহুদী ধর্ম কিংবা ইসলাম ধর্ম কিংবা লুত নবী আসার অনেক আগে থেকেই ডেড সি ছিল । এই সাগরে লবনের পরিমান অনেক বেশি । এই লবন বাইরে বের হওয়ার কোনো জায়গা নেই । লেকের পানি বাষ্পীভূত হয়ে আকাশে চলে যায়,কিন্তু লবন যেতে পারেনা । ফলে লবন জমতে থাকে এবং লেকের পানির ঘনত্ব বাড়তে থাকে । আর পদার্থের ধর্ম হচ্ছে, বেশি ঘনত্বের বস্তু ডুবে যাবে আর কম ঘনত্বের বস্তু ভেসে থাকবে । নরমাল সমুদ্রের পানির ঘনত্ব মানুষের শরীরের ঘনত্বের চেয়ে কম । তাই সাগরে নামলে মানুষ ডুবে যায় । কিন্তু ডেড সি’র পানির ঘনত্ব মানুষের বডির চেয়ে বেশি । তাই ডেড সি তে নামলে মানুষ ভেসে থাকে ।
 
ডেড সি’র মতই আরেকটি লেক আছে আমেরিকার উটাহতে । সেটার নাম গ্রেট সল্ট লেক। সাইজের দিক দিয়ে এটা গ্রেট সি’র চেয়েও বড় । সেইটা নিয়ে লুত নবীর মত কোনো মিথ প্রচলিত নেই, তাই সেইটার কথা মানুশজন কম জানে ।
 
আর ডেড সি আসলে একেবারে মৃত নয় । এখানে কিছু কিছু প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ এবং ভাইরাস -ব্যাক্টেরিয়া বেচে থাকতে পারে ।
 
রেফারেন্স
 
—————————–
প্রসঙ্গ-সমকামীতা
—————————–
 
বাইবেলের ঈশ্বর সদোম আর ঘমোরার উপরে আগুনের বৃষ্টি কেন নামালেন ? এটা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে । কিছু মানুষ মনে করেন , সমকামীতার কারনেই ঈশ্বর তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন । আবার অনেকে মনে করেন, ফেরেস্তাদের প্রতি যথাযথ মেহমানদারি না করা এবং ধর্ষন করতে চাওয়ার জন্যই ঈশ্বর অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন ।
 
একসময় ধারনা করা হত যে সমকামীতা এক ধরনের মানসিক রোগ । সূস্থ স্বাভাবিক মানুষ সমকামী হতে পারেনা । কিন্তু ১৯৭০ সালে আমেরিকান সাইকিয়াট্রিস্ট এসোসিয়েশন জানায় যে এটি কোনো রোগ নয় । সমকামী ব্যক্তি অন্য মানুষদের মতই স্বাভাবিক । পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে সমকামীদের গ্রহনযোগ্যতা বাড়ে । অনেক দেশ আইনগতভাবে সমকামীদের স্বীকৃতি দেয় । আমেরিকায় প্রায় ১০ লাখ সমকামী রয়েছে । বিশ্বের অন্যান্য দেশেও অনেক সমকামী রয়েছে (সঠিক আদম শুমারি রিপোর্ট পাওয়া যায়না)
 
রেফারেন্স
 
 
 
—————-
উপসংহার
—————-
 
সমকামীতা কোনো অপরাধ কিংবা মানসিক বিকৃতি কি না –এ প্রসংগ আসলেই একদল মানুষ লুত নবীর রেফারেন্স দেন । এখানে মনে রাখতে হবে যে, লত নবীর কওম (ছামুদ জাতি কিংবা সদোম আর ঘমোরা) কে শাস্তি দিয়েছিলেন আল্লাহ/ঈশ্বর নিজে । কোনো মানুষ/নবী কিন্তু ওদেরকে শাস্তি দেন নাই । সমকামীতা যদি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রে শাস্তি দিবেন আল্লাহ নিজে । কোনো মানুষের উচিত নয় সমকামীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা । আমাদের সমাজে ছেলে-মেয়ে,শহুরে-গেয়ো,ধনী-গরীব,সাদা-কালো,মুসলমান-হিন্দু,বাঙ্গালি-আদিবাসী যেমন মিলেমিশে আছি, সেইরকমভাবে সমকামীদেরকেও সমাজের অংশ হিসেবে ধরে নিয়ে তাদের সাথে শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করা উচিত ।
 
নিচের প্রথম ২ টা ছবি কাল্পনিক । বাইবেলের গল্প অবলম্বনে সদোম আর ঘমোরায় আগুনের বৃষ্টিকে আকা হয়েছে ছবিতে । পরবর্তী ছবিগুলো ডেড সি আর গ্রেট সল্ট লেক এর
18671110_298722907245298_5021983620196409779_n
18620283_298722947245294_7241945503594354711_n
18698186_298722983911957_4722079648709640427_n
18664330_298723007245288_6190176800945382411_n
18622685_298723063911949_2824484327142589661_n
18670816_298723047245284_7871432213277076342_n