Friday, August 12, 2016

শিয়াদের ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা !

ভূমিকাঃ ইমাম হোসাইন রাঃ উপর লেখাগুলি প্রকাশিত হবার পর, অবধারিত ভাবেই আমার কিছু পাঠক শিয়া-এবং-সুন্নি বিভাজনের কথা তুলে এনেছেন। এ ব্যাপার গুলিতে অনেকেরই পরিষ্কার ধারনা নেই। সেজন্য, আমি ইতিহাসের প্রক্ষাপটে শিয়াদের অবস্থান এবং বর্তমান কালের শিয়াদের ধর্মিয় অবস্থান ব্যাক্ষা করার চেষ্টা করেছি।

প্রাথমিক যুগের শিয়াঃ রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর পর মদীনার কিছু লোক "সাকিফাহ" নামক ঘরে সমাবেত হয় রাজনিতিক শূন্যতা পূরনের লক্ষ্যে। এই খবর আবু বকর সিদ্দীকী রাঃ কাছে পৌছালে তিনি, হযরত উমর রাঃ, এবং হযরত আবু উবায়দাহ রাঃ সেখানে পৌছান যেন মানুষ কোন ভুল সিদ্ধান্তে উপনিত না হয়। তখন হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর দাফন কার্যের দায়িত্বে ছিলেন। "সাকিফাহ"-য় সমেবেত জনতা হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রাঃ কে খলিফা হিসাবে বায়াত করে। কিন্তু কিছু লোক হযরত আলী রাঃ কে খলিফা হিসাবে দেখতে চাইতো। কারণ গুলি ক্রমান্নয়েঃ
  1. কেউ কেউ আব্দুল মোত্তালিব কে মক্কার শাষক তথা আরবের শাষক মনে করত। কারণ মক্কা ছিল আরবের কেন্দ্রভূমি। সেই কারণে রাসূল সাঃ আব্দুল মোত্তালিবের বংশ হিসাবে নিজেই শাষকে পরিনত হন এবং এই ধারায় হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর স্থলাভিষিক্ত হওয়া উচিত।
  2. কেউ কেউ হযরত আলী রাঃ কে রাসূল সাঃ এর ছেলের মত মনে করতেন। কারণ, তিনি রাসূল সাঃ এর পালিত ছিলেন, রাসূল সাঃ এর মেয়ের জামাতা ছিলেন এবং রাসূল সাঃ এর সরাসরি বংশ হাসান এবং হোসেনে রাঃ এর পিতা ছিলেন। আবার কোন কোন সময় বড় ভাই এবং ছোট ভাইয়ের (যদিও হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ এর চাচাতো ভাই) বয়স বেশী পার্থক্য হল, ঐ সম্পর্ককেও পিতা-ছেলের সম্পর্কের মত ধরা হয়। 
  3. কেউ কেউ হয়ত ছিলেন এ রকম, তারা জাস্ট মনে করতেন আলী রাঃ শাষক হিসাবে ভাল হবেন।
হযরত আলী রাঃ কে খলিফা দেখতে চান এমন লোকদের বর্নিত প্রথম দুই ধারার ব্যাক্তিদের চিন্তা ধারা এক প্রকার রাজতন্ত্রীক। এবং হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ কে রাজতন্ত্রীয় চিন্তা ধারার মোকাবেলা করতে হয়েছিল। যাইহোক, তারা সকলেই হযরত আবু বকর রাঃ এবং পরবর্তিতে হযরত উমর রাঃ কে মেনে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে ছিলেন। তারা কখনই আলাদা ধর্মিয় দল নন, এটা শুধু সমর্থন ও মতামতের ব্যাপার।
প্রথম যুগের শিয়াদের সম্পর্কে হযরত ইবনে তাইমিয়া রঃ বর্ননা করেন, "প্রাথমিক যুগের শিয়ারা যারা আলী রাঃ কে সমর্থন করেছিল বা ঐযুগে ছিল তারা হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এর উচ্চ মর্যাদা নিয়ে কোন মতবিরোধে ছিলেন না, তবে তাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল আলী রাঃ নাকি উসমান রাঃ বেশী মর্যাদা সম্পন্ন"(মিনহাজ আস-সুন্নাহ,১/১৩; Cited by Dr Sallabi, Ali bin abu talib, v=2)
পরবর্তীতে হযরত আলী রাঃ এর খেলাফত কালে, মুসলিমদের বিশাল অংশ আলী রাঃ এর সমর্থনে ছিল। এর মধ্যে অনেক বদরী সাহাবা, আনসার ছিলেন। এই লিস্ট বিশাল। কিন্তু তারা কখনই আলাদা আকিদাহ বিশিষ্ট দল নন। তারা শধু মাত্র হযরত আলী রাঃ এর জীবিত কালেই ছিলেন। তারা আর বর্তমান সুন্নি একই দল, কারণ বর্তমান সুন্নিরা খেলাফতে রাশিদিন বলতে বুঝায়, হযরত আবু বকর রাঃ, উমর রাঃ, উসমান রাঃ, আলী রাঃ এবং হাসান রাঃ এর শাষনকাল।

বর্তমান যুগের শিয়াঃ বর্তমান যুগের শিয়াদের শিয়া নাম করনের মধ্যেই ভুল আছে। কারণ বর্তমান যুগের শিয়াদের শিয়া ডাকলে প্রথমিক যুগের শিয়ারাও এই নামে পরে যান। মূলত বর্তমান যুগের শিয়া দাবীকৃত দলগুলির সাহিত আদি কালের শিয়ার কোন সম্পর্ক নেই। বর্তমান যুগের শিয়াদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
  1. উগ্র-পন্থী শিয়াঃ শিয়াদের মধ্যে মাইনরিটি। ভয়ংকর সব আকিদাহ সম্পন্ন। তাদের অনেকেই আলী রাঃ কে নবী বা ডিভাইন কেউ বলার চেষ্টা করে।
  2. যায়েদিয়া শিয়াঃ তারা অন্যান্য শিয়াদের থেকে অনেকটা আলাদা। তারা জায়েদ বিন আলী বিন হুসাইন আল জয়নাল আবেদীনের অনুসারী। তারা মনে করেন, অত্যাচারী বাদশার বিপক্ষে যুদ্ধ করা ইমামদের দায়িত্ব। তারা আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃকেও ভালবাসে। শুধু মাত্র হযরত আলী রাঃ কে অন্যান্য সাহাবীদের থেকে উপরে স্থান দেয়।
  3. ইমামী শিয়াঃ এরা সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। (তাদের কেউ কাউকে অনেকে রাফিদি নামে ডাকেন। বলা হয়ে থাকে রাফিদিরাই হযরত আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এর প্রতি বিদ্দেষ ছড়ায়। রাফিদিদের নাম রাফিদি (রাফাদা-বাতিল) হয়েছে, যখন ১২১ হিজরীতে হিসামের বিপক্ষে যুদ্ধে, তারা যায়েদ বিন আলীর সৈন্যবাহিনীর অংশ হয়েও তাকে ফেলে চলে যায় (Dr Sallabi, Ali bin abu talib, v=2, p 316)। সকল ইমামী শিয়ারাই রাফিদি না, অর্থ্যাত সকল ইমমীরা আবু বকর সিদ্দিকী রাঃ এবং উমর রাঃ এর প্রতি বিদ্দেষ ছড়ায় না।)
  • ১২ ইমামি শিয়াঃ এরা শিয়াদের সর্ব-বৃহত দল। এরা ইরান, ইরাক এবং আজারবাইজানে সংখ্যা গরিষ্ট। ভারত ও পাকিস্থানে এদের সংখ্যা অনেক। 
  • ইসমাঈলি শিয়াঃ এরাও শিয়াদের মধ্যে একটী পড়িচিত দল। এই দলের দুটি নেতৃত্ব আছে। একটি দাওদিয়া বাহরা এবং অন্যটি আগা খান।
সতর্কতাঃ অনেক সুন্নি আলেমের মতে রাফিদিরা আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর দ্বারা প্রাতারিত হওয়া দল এবং তারা ফেতনায় আরষ্ট এবং মুসলিমদের ঐক্য বিনষ্টকারী। তবে শিয়াদের একটি গ্রুপ আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর অস্থিত্ব অস্বীকার করে এবং শিয়াদের বাকিরা আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর সাথে যেকোন প্রকার সম্পর্কহীন বলে দাবী করে।

ইমামী শিয়াদের আকিদাহ গত সমস্যাঃ এখানে যায়েদিইয়াহ শিয়া এর অন্তরভুক্ত নয়। এই সমস্যা ইমামী শিয়াদের। দুইটি সমস্যা রয়েছেঃ
  • তারা বিশ্বাস করেন, ইমামরা ভুলত্রুটির উর্ধ্বে। এটাকে ইসমাহ শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন এটা শুধু মাত্র আল্লাহ পাকের বৈশিষ্ট। অতএব, শিয়ারা শিরক কারী। কিন্তু সুন্নিদের কেউ কেউ নবীদের এই যোগ্যতা দান করেন এইভাবে যে, মহান আল্লাহ পাক বিশেষ অনুগ্রহহের দ্বারা নবীদের ভুল থেকে মুক্ত রাখেন। শিয়ারাও একইভাবে যদি এই বিশ্বাস রাখে যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক বিশেষ অনুগ্রহ করে ইমামদের ভুল থেকে মুক্ত রাখেন। তাহলে তারা (ইমামী শিয়ারা) শিরককারী হয়ে যান না।
  • তারা আরো বিশ্বাস করেন, ইমামত নবুয়তের চেয়ে উপরে, কিন্তু রাসুল সাঃ একই সাথে নবী এবং ইমাম, এবং তিনি সকলের থেকে সম্মানিত। । "ইমামতের স্ট্যাটাস নবুয়তের উপরে" একটা বিপদজনক বিশ্বাস। কিন্তু এই বিশ্বাস রাসূল সাঃ এর কাছে আশা মেসেইজ কে অস্বীকার করেনা কারণ ইমামদের দায়িত্ব হল নবুয়তের মাধ্যমে পাওয়া অহীর ব্যাক্ষা করা। তাই এতোদসত্তেও তাদেরকে অমুসলিম বলা যায় না। কিন্তু সংদ্দেহজনক। মহান আল্লাহ পাক সর্ব বিষয়ে সব থেকে ভাল জানেন। (লিংকে ক্লিক করলে জানতে পারবেন তারা কোন যুক্তিতে এটা বিশ্বাস করেন)

ইসলামে পার্সিয়ানদের অবস্থানঃ ইবনে খালেদুন বর্ননা করেন,
"Most of the hadith scholars who preserved traditions for the Muslims also were ajams (Persians), or Persian in language and upbringing, because the discipline was widely cultivated in the ‘Iraq and the regions beyond. (Furthermore,) all the scholars who worked in the science of the principles of jurisprudence were ajams (Persians), as is well known. The same applies to speculative theologians and to most Qur’an commentators. Only the ajams (Persians) engaged in the task of preserving knowledge and writing systematic scholarly works. Thus, the truth of the following statement by the Prophet [in Sahih Muslim] becomes apparent: “If scholarship hung suspended at the highest parts of heaven, the Persians would (reach it and) take it.”
সাফাবীদ তুর্কি মিক্স রাজ বংশ যারা উসমানীয়ান তুর্কিদের প্রতিপক্ষ ছিল, তারা রাজনিতিক কারণে অনেকটা জোরপূর্বক ইরান(পার্সিয়ানদের মধ্যমনী) কে ১২ ইমামী শিয়াতে রূপান্তর করে। উল্লেখ্য, পার্সিয়ানরা ছিল ইসলামের চ্যাম্পিয়ন। তারা অন্যান্য মুসলিমদের লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট, এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের কারুকাজে সহযোগিতা করত। কিন্তু ইরানীরা শিয়া হয়ে যাওয়ার ফলে, বৃহত্তর পার্সিয়ান জাতি (তাজিক, কিছুটা আফগান, কুর্দি) একে উপর থেকে আলাদা হয়ে যায়। অন্যদিকে তুরান (তুর্কমেনিস্থান, কাজাকিস্থান, উজবেকিস্থান, কিরগিজস্থান ইত্যাদি) দুর্বল ও বন্ধুহীন হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে রাশিয়ার কাছে স্বাধীনতা হারায়। এবং ভারতের মুসলিমরাও আরব এবং তুর্কি মুসলিমদের সাথে সংযোগ হারায় এবং আস্তে আস্তে স্বাধীনতা হারায়। ইরানের শিয়া হয়ে উঠা ছিল, মুসলিম ইউনিটির জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর। 

সাধারণ শিয়াঃ "শিয়া আয়াতুল্লাহদের বাহিরে রেখে, সাধারণ জনসাধারণের কথা বলছি, যারা মুসলিমদের দুঃখে দুঃখ পায়, মুসলিমদের কষ্টে কষ্ট পায়। এবং তাত্ত্বিক বিষয় এত গভীর ভাবে জানে না, কিন্তু যা জানে তা কোরানের সহিত সাংঘর্ষিক না হয়ে থাকে, তাহলে তাদের মধ্যেও সঠিক দলীয় ব্যক্তি থাকা অসম্ভব নয়। সকল সাহাবীই সর্ব প্রকার হাদিস জানতেন না, তাই কিছু মানুষ যদি স্বল্প জানা হয়, কিন্তু যা জানে তা সহি ইসলামের বিপক্ষে নয়, ঐ সব নির্দোষ সহজ সরল ব্যক্তিগণ অবশ্যই ইব্রাহীম রাঃ এর ধর্মের উপর থাকা অসম্ভব নয়, আমি ব্যক্তিগত ভাবে সুন্নি ইমামের পিছনে শিয়া ব্যক্তিকে নামাজ আদায় করতে দেখেছি। কিন্তু যারা শিয়া পরিচয়টাকে মুখ্য ঘোষণা করে এর উপর অন্য মুসলিমদের দুঃখের কারণ হয়, তাহলে তারা সুস্পষ্ট রূপে দলাদলিতে লিপ্ত।"-[মুসলিমদের মধ্যে কোন দল সঠিক ?]

‘If loving the Wasi of the Prophet, Ali Murtadha a Rafidi,
then verily amongst all the people I am the greatest Rafidi
From the plain of Mina I will shout to all those standing or sitting,
if loving the family of the Prophet makes you a Rafidi,
then I testify before the mankind and Djinns I am a Rafidi”-Imam Shafi
(Sawaiq al Muhriqah, page 449 & 450 শাফেয়ী মাহযাবের ইমাম শাফি'য় রঃ এর কবিতাটি আগে থেকেই জানা কিন্তু মুখস্থ নেই বলে দুর্বল রেফারেন্স থেকে কপি করা হয়েছে)
সতর্কতাঃ ইমাম শাফেয়ী রাঃ এখানে নবী পরিবারের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি অন্য বর্ননায়, রাফিদিদের থেকে রেওয়াত গ্রহন করতে না বলেছেন। অর্থ্যাত রাফিদিরা গ্রহনযোগ্য নয়। তিনি নিজেও রাফিদি নন, কিন্তু নবী পরিবার ও আলী রাঃ কে ভালবাসেন সেটাই তিনি বুঝিয়েছেন।



আরোও সহযোগিতা যেখান থেকে নেওয়া হয়েছেঃ
S.H.M Jafri, The Origins and Early Development of Shi’a Islam, এটা শিয়া লেখকের বই।
Ibn al-Hashimi, Origins of the Shia Sect, এখান থেকে http://www.discoveringislam.org/origins_of_shiism.htm, এটা সুন্নি লেখকের লেখা।


মন্তব্যঃ-

 ১-

একজন মুমিন নিজেকে কখনই সুন্নী বা শিয়া বা কোন দলের বলে দাবী করতে পারে না। তার পরিচয় শুধু 'মুসলিম' (কোরান)।
বিদায় হজ্জে নবী(স) যখন ভাষণ দেন, তখন সাহাবীর সংখ্যা ছিল ১,১০,০০০০। বিদায় হজ্জ শেষে মদিনায় ফিরার পথে গাদিরে খুমে আবার ভাষণ দেন, তখন সাহাবীর সংখ্যা ছিল ৮৫,০০০। ওই ভাষণে নবী(স) বলেন, আমার পর আমার আহলে বায়াত-কে আনুসরন করো। আহলে বায়াত হল হযরত আলী, হাসান, হুসেন ও মা ফাতিমা। (মুসলিম শরিফ, হাদিস # ৬০০৭, ৬০০৮, ৬০০৯, ই ফাউ)
নবী(স) ইন্তেকাল করেন সোমবার। মারা যাবার ৩ দিন পূর্বে বৃহস্পতিবার দিন উনি হুইল করে দিতে চেয়েছিলেন পরবর্তী খলিফা এবং সেই জন্য যারা লিখতে পারে, তাদের তলব করেন। তাদের পিছনে ওমর(রা)-ও ছিলেন। উনি জানতেন, নবী(স) আলী-কে খলিফা নির্ধারন করে যাবেন।  উনি নবী(স)-কে বলেন, আপনার পরে কোরানই যথেষ্ট আমাদের জীবনের জন্য এবং কাজে ব্যঘাত ঘটান। নবী(স) বিরক্ত হয়ে সবাই-কে ঘর থেকে বের করে দেন। (বুখারী, আজিজুল হক, পৃ-২৬৭ + বুখারী ইংলিশ অনুবাদ, ডঃ মো মহসিন খান ১ম খণ্ড হাদিস-১১৪ এবং ৪র্থ খণ্ড হাদিস নং- ২৮৮ ও ৩৯৩)। ইতিহাসবিদ-গন বলেন, হযরত উমর যদি নবী(স) ব্যঘাত না ঘটাইতেন তাহলে পরবর্তীতে ইসলামে এত রক্তারক্তি হত না।

২- ইমাম হোসাইন রাঃ প্রতি ঘৃনা রেখে যেমন ভাল মুসলিম হওয়া যায় না, ঠিক তেমনি হযরত উমর রাঃ এর প্রতি ঘৃনা রেখেও ভাল মুসলিম হওয়া যায় না। আমাদের রেফারেন্স অনুযায়ী, রাসূল সা এর সকল স্ত্রীগণ আহলে বায়াতের অংশ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে বনী হাসিম গোত্র এর অন্তর্ভুক্ত। এবং বিদায় হজ্বের ভাষণে, কোরান শরীফ ও নবীর সুন্নাহ মোতাবেক চলার হকুম পাই।   আপনার শেষের অংশ ভয়ংকর শিয়া প্রপাগান্ডা, কারণ হযরত উমর রাঃ রাসূল সা এর মনে কি আছে না আছে সেটা কিভাবে জানবেন? উনার কাছে কি ওহী আসত? না, আসত না। তাই, আপনি জাস্ট উমর রা এর প্রতি ঘৃনা ছড়ানোর অপচেষ্টা করছেন।

৩-
শুরুতেই স্পষ্ট করে শিয়া, সুন্নী এবং সব রকমের দলাদলি-কে বাতিল করে দিয়েছি। তাহলে কেন বলেন "আপনি শিয়া হলে আলাদা বিষয়"?? 'সিরাতুল মুস্তাকীম'-র ভিতরেই একজন প্রকৃত মুসলিমের বসবাস। ঘৃণা বা বিদ্বেষ অন্তরে পোষণ করে কেউ প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। আমার মন্তব্যে উমর(র) উপর কোন ঘৃণা নেই (আমি তাঁকে সম্মান করি)। আমি বুখারী ও মুসলিম শরীফ থেকে হাদিস তুলে ধরেছি রেফারেন্স সহ। আমার ধারনা, আপনি ইসলামের ইতিহাস ভাল জানেন আর অষ্টম খলিফা-কে খুব ভালভাবে চিনেন।
আপনি বললেন, "বিদায় হজ্জের ভাষণে কোরান শরীফ ও নবীর সুন্নাহ মোতাবেক চলার হুকুম পাই"। কোথায় লিখা আছে এই কথা?? ৬-টি সিহা সিত্তার (বুখারী, মুসলিম, দাউদ, তিরমিযী, ইবনে-মাজাহ, নাসাই) কোন গ্রন্থে ইহা লিখা আছে?? আমিতো জানি, নবী(স) বিদায় হজ্জে বলেছেন, তোমাদের মাঝে একটি জিনিষ রেখে যাচ্ছি, তা হল আল্লাহর কোরান।

৪- খুবই সুন্দর ও দরকারি লেখা। খুব ভালো হয়েছে । সকল প্রকার চরমপন্থী মনোভাব সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন সুন্নিদের মধ্যেও কিছু কিছু ব্যাপারে অনেকের মধ্যে মতভেদ রয়েছে । এখন বিভ্রান্তি যাতে না ছড়ায় তার চেষ্টা করতে গিয়ে সামান্য ব্যাপারেও এক পক্ষ আরেক পক্ষকে অনায়াসে ইহুদিদের দালাল, মুনাফিক, মুশরিক বলে প্রচার করে। শিয়ারা নাসিবি বলে আহলে বাইতের শত্রু বলে যে দল আছে বলে দাবি করে তাঁরাও সত্যই আছে। কারন শিয়াদের প্রতিঘাত করতে গিয়ে হজরত মুয়াবিয়া রাঃ ও ইয়াজিদ কে ডিফেন্ড করতে গিয়ে হজরত আলী রাঃ ও হোসেন রাঃ ভুল করেছেন বলে কেউ কেউ দাবী করে।আহলে বাইত ইমাম জাফর সাদিক রঃ, মুসা কাজেম রঃ প্রমূখের নামে জঘন্য মিথ্যাচার করে, চরিত্র হনন করে। অথচ উ নারা সবাই ছিলেন তৎকালীন সম য়ের সেরা আলেম, মণীষি, অলি,নেতা। আমাদের চার ইমামসহ সবাই উনাদের বিশাল ভক্ত, সহযোগী ছিলেন ।ইমাম শাফিয়ি রঃ শিয়া আকিদার কারো কাছ থেকে হাদিস নিতেন না কারন শিয়ারা হাদিসের সনদ রাখে না এবং তাকিয়ার নামে মিথ্যা ও বলে। কোনটা সত্য আর কোনটা তাকিয়া বুজবেন কিভাবে? আইসিস ও আল কায়েদার পক্ষে প্রচারকারী কিছু নাসিবি দেখেছি ফেসবুকে।

৫-
  1. শিয়াদের অপপ্রচারে সাধারান মুসলিমরা যে কতোটা বিভ্রান্ত তা তাজুল ভইয়ের কমেন্টেই দেখা যায়। নিজের মনগড়া কিছু কথাকে গাদীর খুমে বলে চালিয়ে সাথে একটা ডাহা মিথ্যা সংযোগ  করে হাদীস হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে।  কেউই দেখি উত্তর দিচ্ছেনা, অথচ পোষ্টা ৫২৬ বার পড়া হয়েছে।  গাদীর খুম নিয়ে শিয়া অপপ্রচার জানতে পড়ুন,  

    শিয়াদের আরেকটা ডাহা মিথ্যা হলো আহলে বায়েত নিয়ে।  আহল = সদস্য  আর বায়েত = পরিবার, তার মানে আহলে বায়েতের অর্থ হলো পরিবারের সদস্য। তাহলে রাসূলের পরিবারের সদস্য শুধু হযরত ফাতিমা(রাঃ), আলী (রঃ), ইমাম হাসন(রঃ) এবং ইমাম হোসাইন (রঃ)  হয় কিভাবে। রাসূল (সঃ) এর সকল স্ত্রী এবং উনার বাকি তিন মেয়ে কি তার পরিবারের সদস্য বা আহলে বায়েত নয়?
    পুরা কোরান শরীফে আহলে বায়েত দুইবার ব্যবহার করা হয়েছে রাসূল(সঃ)  এর স্ত্রীদের বুঝাতে,  আরেকবার ইমরানের স্ত্রী  {হযরত মূসা(আঃ)এর মা} কে বুঝানো হয়েছে।  আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন
    শিয়াদের মূল গ্রুপ যেমন, দ্বাদশীটাদের আরেক অপপ্রচার হলো হযরত আলী(রাঃ) এর মর্যাদা রাসূল(সঃ) এর পরই, তাই সেই প্রথম খলীফা হবার দাবীদার, কারন উনি আহলে বায়েতের সদস্য।  তাহলে প্রশ্ন হলো যদি শুধু রাসূল (সঃ)  এর এক মেয়ে বিয়ে করার কারনে হযরত আলী(রঃ) এর ই অবস্হা হয়, তাহলে তো হযরত উসমান (রাঃ)  হযরত আলী(রাঃ) এর চেয়েও দ্বীগুন মর্যাদা এবং দ্বীগুন প্রথম খলীফা হবার দাবীদার। কারন উনি রাসূল(সঃ) এর দুই মেয়ে উম্মে কুলসুম(রাঃ)  এবং উম্মে রুকাইয়া (রাঃ) কে বিয়ে করেছেন। শিয়াদের ফ্যালাসি গুলো ওদের দাবী মোতাবেক এভাবে দ্বীখন্ডিত হয়ে যায়।
    তাহলে প্রশ্ন হলো কেন শিয়ারা আহলে বায়েত বা পরিবারের সদস্য বলতে  শুধু আলী(রাঃ), হাসান(রাঃ), হুসেন (রাঃ)ও ফাতিমা(রাঃ) কে বুঝায়? আসলে আবদুল্লাহ ইবনে সাবাহ এর সৃষ্ট শিয়ারা শুধু ফাতিমা(রাঃ) কে বেচে নিয়েছেন শুধু ফাতিমা(রাঃ)  হযরত আলী(রাঃ) এর স্ত্রী বলে, আর কিছু নয়। আহলে বায়েত হলে রাসূল (সঃ) সকল স্ত্রী ও সকল মেয়েকে না বুঝিয়ে শিয়ারা শুধু ফাতিমা(রাঃ) কে আনেন শুধু ফাতিমা(রাঃ) হযরত আলী(রাঃ)  এর স্ত্রী বলে।
    পয়েন্ট নাম্বার টু, প্রথম খলিফা কে হবে, তারপর কে হবে, এই সব ক্ষমতা নিয়ে চারজন খলিফার কেউই কোন মাথা ছিলোনা। বরং ক্ষমতা পেয়ে সঠিক ভাবে রাস্ট্র চালানো তাদের জন্যে আগের চেয়ে ও কঠীন হয়ে গিয়েছে। লিখতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। এরা অত্যন্ত দারীদ্রভাবে চলতেন, রাত জেগে প্রজাদের দেখাশোনা করতেন এবং আল্লাহর দরবারে কাদতেন যদিনা দায়িত্বে গাফিলতি হয়। এড়া কেউই ক্ষমতা চেয়ে নেয়নি বরং মজলিশে শূরা উনাদের উপর ক্ষমতার ভার দিয়েছে।
    শিয়া সম্পর্কে  আরো জানতে এই ভিডিও গুলো দেখুন,
    https://www.youtube.com/watch?v=wz0J6tdRsjU

    https://www.youtube.com/watch?v=Cg6jBKsOl40

    https://www.youtube.com/watch?v=JiA5d90jHdk

    https://www.youtube.com/watch?v=n-AJPuVKBcQ 

    https://www.youtube.com/watch?v=q_GVOvFUVyw 

    https://www.youtube.com/watch?v=6zhVO3REgjU




  2. শিয়ারা এখন তাদের ইমাম মাহদী মানে হিডেন ইমাম হাসান আকসারী আসার জন্যে অপেক্ষায় আছে। একথা মনে রাখবেন শিয়াদের ইমাম মাহদী কিন্তু মুসলিমদের ইমাম মাহদী নয় যার কথা হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলে গেছেন। এই শিয়ারা কেমন তা ইরাকে মুসলিমরা বুঝে ২০০৩ এর পর, সিরিয়ানরা বুঝে ২০১১ এর পর, ইয়েমেন বুঝে ২০১৫ হতে। চার চারটা আরব দেশ এদের দখলে – ইরাক, ইয়েমেন, লেবানন ও সিরিয়া।  বাদবাকি মুসলিমরা এখনো বুঝেনা শিয়া মানে কি। শিয়াদের তুচ্ছ ভাবা ভুল হবে, এরা একটা ভ্রান্তি বিশ্বাস করে যা তারা জীবন ও অর্থ বিত্ত দিয়ে হলেও প্রতিষ্ঠা করবে। এদের আরেক উদ্দেশ্য হলো কিছু মিথ্যা ও তাকিয়া করে মুসলিমদের ট্রাপে ফেলিয়ে শিয়া ধর্মে কনভার্ট করা।
    শেখ ইয়াসির কাদি বলেছেন, মুসলিমদের ৭৩ টি দলের মধ্যে শিয়াদের মত এত মিথ্যাবাদী  আর একটা দলও নেই।