Thursday, August 25, 2016

কুরআনে কি ভুল নেই?

 পর্ব-১

লিখেছেন: চাঁদসওদাগর — 

সরলমনা মুসলিম সমাজ কুরআনকে অভ্রান্ত কিতাব হিসেবে মনে করে। অনেক সময় অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে চেলেঞ্জ করে কেউ যদি কুরআনে একটা ভুল দেখাতে পারে তবে আমি নাস্তিক হয়ে যাব। আসুন তবে দেখি কুরআন কি সত্যিই ভূলের উর্ধ্বে? আমার আলোচ্য বিষয় সূরা নাহলের ৬৮-৬৯ নং আয়াত। এ আয়াতে উল্লেখ আছেঃ " আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেনঃ পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরী কর, এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। "

এবার ৬৯ নং আয়াতের কিছু অনুবাদ দেখা যাকঃ
Sahih International Then eat from all the fruits and follow the ways of your Lord laid down [for you]. There emerges from their bellies a drink, varying in colors, in which there is healing for people. Indeed in that is a sign for a people who give thought.

মুহসিন খানের অনুবাদঃ Then, eat of all fruits, and follow the ways of your Lord made easy (for you).There comes forth from their bellies, a drink of varying colour wherein is healing for men. Verily, in this is indeed a sign for people who think.

পিকথালের অনুবাদঃ Then eat of all fruits, and follow the ways of thy Lord, made smooth (for thee). There cometh forthfrom their bellies a drink divers of hues, wherein is healing for mankind. Lo! herein is indeed a portent for people who reflect.

ইয়ুসুফ আলির অনুবাদঃ Then to eat of all the produce (of the earth), and find with skill the spacious paths of its Lord: there issues from within their bodies a drink of varying colours, wherein is healing for men: verily in this is a Sign for those who give thought.

শাকিরের অনুবাদঃ Then eat of all the fruits and walk in the ways of your Lord submissively. There comes forth from within it a beverage of many colours, in which there is healing for men; most surely there is a sign in this for a people who reflect.

আল্লাহপাক মৌমাছির খাদ্য হিসেবে ফলকে উল্লেখ করেছেন। এখন এ ব্যাপারে কারও সন্দেহ থাকা উচিৎ না। কিন্তু আমরা সকলে জানি মৌমাছি ফল খায় না। শ্রমিক মৌমাছিরা ফুলের মিষ্টি রস শুষে নেয় এবং তা জমা করে পাকস্থলীর উপরে এক বিশেষ অঙ্গে যাকে মধুথলি বলে। ফুলের মিষ্টি রস মধুথলিতে জমা করার সময় এর সঙ্গে লালা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন উৎসেচক মেশায়। এর ফলে মিষ্টি রস পরিবর্তিত হয়ে আংশিক মধু তৈরী হয়। সুতরাং এটা নিঃসন্দেহে কুরআনের একটি ভূল।

মন্তব্যসমূহ মন্তব্য করেছেন: চাইল্ড অব গড—
আমার ধারনা , মক্কা তো একটা উষর মরুভূমির অঞ্চল, সেখানে ফুল ফুটত এমন গাছের অভাব ছিল ব্যপক।তাই ফুল থেকে মধু সংগ্রহের সুযোগ মৌমাছিদের মক্কাতে তেমন ছিল না। তবে বেশ কিছু খেজুর গাছ হতো । খেজুর গাছে যখন খেজুর ধরে সেগুলো পেকে যেত ,তখন সেই পাকা খেজুর থেকে রস নিতে ঝাকে ঝাকে মৌমাছি খেজুর কাঁদিতে পড়ত।মোহাম্মদ সেটা লক্ষ্য করে থাকবেন। এই প্রত্যক্ষ দর্শন থেকেই উক্ত আয়াতের আবির্ভাব। মোহাম্মদ যদি আমাদের মত দেশে জন্মাতেন , তখন তিনি দেখতেন ,মৌমাছি মূলত: ফুল থেকেই মধু সংগ্রহ করে থাকে। আর তখন যদি তিনি কোরান রচনা করতেন ,তাহলে তাতে ফল থেকে মধু সংগ্রহের কথা না বলে ফুল থেকে মধু সংগ্রহের কথাই বলতেন।

প্রতিমন্তব্য অরুন আলো এর ছবি মন্তব্য করেছেন: অরুন আলো—
কোরানের ভুল গুলো তো মুসলিমরা মানতে চায়না!! — অরুন আলো প্রতিমন্তব্য মন্তব্য করেছেন: পার্থিব— আসুন তবে দেখি কুরআন কি সত্যিই ভূলের উর্ধ্বে? হ্যা কোরান ভুলের উর্ধে, কিন্তু আপনি নন। কোরানের বিরোধিতা করতে চাইলে যথেষ্ট পড়াশোনার দরকার আছে ভায়া। নীচের ভিডিওটাই আপনার ভুল ধারনা ভেংগে দেবে-- মৌমাছি।
https://www.youtube.com/watch?v=yJL_17WFaT0

প্রতিমন্তব্য মন্তব্য করেছেন: চাইল্ড অব গড—
ভাই , মৌমাছি ফুলের মধু পেলে খেজুরের ওপর বসে না। মৌমাছি স্বভাবত: ফুলই খোজে মধুর জন্যে, ফল না। মক্কাতে ফুল ছিল না তেমন , তাই মৌমাছি খেজুরের ওপর পড়ত। মোহাম্মদ সেটা দেখেই এই আয়াত বলেছে। এতে কোন সন্দেহ নাই। এখন কার না কার বক্তৃতা তো সেটা ভুল প্রমান করতে পারবে না কারন ঘটনাটা তো খোদ কোরানই বলেছে, তাই না ?

প্রতিমন্তব্য চাঁদসওদাগর এর ছবি মন্তব্য করেছেন: চাঁদসওদাগর— 
মৌমাছি খেজুর খায় কখনও শুনি নি। কথাও পাই নি। — chadsaowdagor

প্রতিমন্তব্য মন্তব্য করেছেন: দিন মজুর—
 যারা অবিশ্বাসের ভাইরাসে আক্রান্ত তারা কি কখনো খেজুরের দোকানে গিয়ে দেখেনি মৌমাছি খেজুরের উপর বসে কি করে। নাকি মৌমাছি খেজুরের উপর বসে ডারোইন আর ডক্সিন চর্চা করে?

প্রতিমন্তব্য মন্তব্য করেছেন: বেহুলার ভেলা—
মৌমাছি মানুষের জন্য মধু সংগ্রহ করেনা। করে তাদের বাচ্চাদের জন্য। মানুষ একে জোর জবরদস্তি দখল করে। কোরানে মধুর যে বিবরণ সেটা শিশু সুলভ ও হাস্যকর। মুহাম্মদের মধুর প্রতি আসক্তি ছিল মনে হয়। এখন কৃত্রিম ভাবে মৌমাছি চাষ হচ্ছে, মধু বেশ সহজলভ্য।

রতিমন্তব্য মন্তব্য করেছেন: Vitu

প্রতিমন্তব্য মন্তব্য করেছেন: পৃথু স্যন্যাল
আশ্চর্য হয়ে যাই, যখন কেউ বলে কোরান ভাল করে পড়ে তারপর তর্ক করতে, অথচ সে নিজেই কোরান পড়েনি। পড়তে চায় না, পাছে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়!! — আমি কারো দেখানো পথে চলি না। আমার ইচ্ছে মত পথের তৈরী করি।



পর্ব- ২



মুসলীমদদের জিজ্ঞাসা করুন,"কোরআনে কি ভূলের উর্দ্ধে?"তারা এর উত্তরে সরাসরি বলবে, "হ্যাঁ "কোরআনে কোন ভূল নেইকোরআন স্বয়ং আল্লাহর বানীএতে কোন ভূল থাকতে পারে না 
তাহলে বিষয়টা একটু দেখা যাকঃ
 



" আর যদি কন্যাগন দুইজনের অধিক হয় তাহলে তারা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে দুই তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে "।-সূরা আনফাল ৮:১২




" আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমানঅতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু' এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেকমৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকেযদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগঅতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পরতোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান নাএটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদআর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকেযদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তির, যা তারা ছেড়ে যায়; ওছিয়্যতের পর, যা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পরস্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকেআর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পরযে পুরুষের, ত্যাজ্য সম্পত্তি, তার যদি পিতা-পুত্র কিংবা স্ত্রী না থাকে এবং এই মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে, তবে উভয়ের প্রত্যেকে ছয়-ভাগের এক পাবেআর যদি ততোধিক থাকে, তবে তারা এক তৃতীয়াংশ অংশীদার হবে ওছিয়্যতের পর, যা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্থায় যে, অপরের ক্ষতি না করেএ বিধান আল্লাহরআল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।"-সূরা নিসা ৪ঃ ১১-১২




" মানুষ আপনার নিকট ফতোয়া জানতে চায় অতএব, আপনি বলে দিন, আল্লাহ তোমাদিগকে কালালাহ এর মীরাস সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেন, যদি কোন পুরুষ মারা যায় এবং তার কোন সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকে, তবে সে পাবে তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদি নিঃসন্তান হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবেতা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ 

পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমানতোমরা বিভ্রান্ত হবে আল্লাহ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেনআর আল্লাহ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত।"- সুরা নিসা৪ঃ১৭৬



উপরিক্ত আয়াত থেকে বলা যায়,একজন ব্যক্তি যদি একজন স্ত্রী,তিন কন্যা,পিতা-মাতা রেখে মারা যায় তবে,
স্ত্রী পাবে ১/৮ অংশ,কন্যা পাবে ২/৩ অংশ,মাতা পাবে ১/৬, পিতা পাবে ১/৬ অংশ
সুতরাং মোট সম্পত্তি পাবে ২৭/২৪ অংশ= ১.১২৫ অংশ যা মোট ১ অংশের বেশি
সুতরাং বলা যায় এটা কোরআনের অন্যতম একটা ভূল

মন্তব্যসমূহ

আপনি যে চূড়ান্ত পর্যায়ের গাধা সেটা কি বুঝেন? কোরানে কে কতটুকু অংশ পাবে তার অনুপাত বলেছেকিন্তু কোন যোগফল বলে নাইওয়ারিশের সংখ্যা বেশী হলে মূল যোগফল ১ এর বেশী হবেইতাতে সমস্যা নাইবাড়তি অংশ সমানুপাতিক হারে কমান বা বাড়ান যায় গানিতিক ভাবে
  • প্রতিমন্তব্য
দুখিতআপনি অনুপাতের গনিত কখনো করেছেন? করলে আক্তু ভেবে নেন কে গাধা
  • প্রতিমন্তব্য
আপনি মনের অজান্তেই ইসলামের প্রচার চালাচ্ছেন ইসলাম ১৪০০ বছর আগেই মা, কন্যা সন্তান, স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকার দিয়েছে
অথচ আপনারা নাস্তিকরা শুধু লিভটুগেদার করে মজাটা নেন, কিন্তু নারীদের ফুটা পয়সার অধিকার কোনদিন কি দেন?
  • প্রতিমন্তব্য
যৌনদাসীর চেয়ে লিভ টুগেদার কি বেশি খারাপ জিনিস?


পর্ব- ৩

চাঁদসওদাগর
অতঃপর তিনি সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেনতারা বললঃ হে মারইয়াম, তুমি একটি অঘটন ঘটিয়ে বসেছহে হারূণ-ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিনী।-সূরা মরিয়মঃ২৭-২৮
উক্ত আয়াতদ্বয়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যিশু মাতা মরিয়ম হারুন (আ) এর বোনঅর্থাৎ মেরি ছিলেন মুসা (আ) ও হারুন (আ) এর বোন
এবার দেখি সূরা আত-তাহরীমের ১২ নং আয়াতে কি বলা হয়েছেঃ
 
" আর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন এমরান-তনয়া মরিয়মের, যে তার সতীত্ব বজায় রেখেছিলঅতঃপর আমি তার মধ্যে আমার পক্ষ থেকে জীবন ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বানী ও কিতাবকে সত্যে পরিণত করেছিলসে ছিল বিনয় প্রকাশকারীনীদের একজন। "
এই আয়াতেও একই কথা বলা হয়েছে একটু ভিন্নভাবেএই আয়াতে মরিয়মকে মূসা (আ) এর বোন অর্থাৎ ইমরানের কন্যা বলা হয়েছে
 
এরপর সূরা আল -ইমরানের ৩৫ এবং ৩৬ নং আয়াত লক্ষ করি একই কথা বলা হয়েছেঃ
" এমরানের স্ত্রী যখন বললো-হে আমার পালনকর্তা! আমার গর্ভে যা রয়েছে আমি তাকে তোমার নামে উৎসর্গ করলাম সবার কাছ থেকে মুক্ত রেখেআমার পক্ষ থেকে তুমি তাকে কবুল করে নাও, নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞাতঅতঃপর যখন তাকে প্রসব করলো বলল, হে আমার পালনকর্তা! আমি একে কন্যা প্রসব করেছি বস্তুতঃ কি সে প্রসব করেছে আল্লাহ তা ভালই জানেনসেই কন্যার মত কোন পুত্রই যে নেইআর আমি তার নাম রাখলাম মারইয়ামআর আমি তাকে ও তার সন্তানদেরকে তোমার আশ্রয়ে সমর্পণ করছিঅভিশপ্ত শয়তানের কবল থেকে।"
 
এই আয়াতেও মেরিকে ইমরানের কন্যা তথা মূসা (আ) ও হারুন (আ) এর বোন বলা হয়েছে
প্রকৃত পক্ষে মূসা,হারুন ও মরিয়ম ভাইবোন ছিলেনকিন্তু যিশু মাতা মরিয়ম এদের থেকে আলাদা ছিলেন এবং মূসা (আ) এবং যিশুর মধ্যে ১৫০০ বছরের ব্যবধান ছিলকিন্তু উপরিক্ত আয়াতগুলো প্রমান করে যে কোরআন লেখক যিশুমাতা মরিয়ম এবং মূসা (আ) এর বোন মরিয়ম সম্পর্কে কনফিউজড ছিলেনএথেকে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে কোরআন ঈশ্বর প্রেরিত কোন কিতাব না
তথ্যসূত্রঃ
1. http://www.quraanshareef.org/
2. https://unityteacher.wordpress.com/