Saturday, August 6, 2016

ইসলাম কি বিচিত্র, দেখাব তার চিত্র। পর্ব-৩


এবারের বিষয় ইসলামে নারীর অধিকার।
********
বন্ধুরা ধারাবাহিক পর্বের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করার পরই রিপোর্টের কারনে আইডি ডিসেবল হয়ে যায়। কিন্ত জুকার মামু হয়ত আমারে অনেক ভালবাসে, তাই আইডিটা ফেরত দিছে  তাই একটু সময় নিয়ে এই পর্ব প্রকাশ করলাম। বর্তমান সময়ে ইসলামি স্কলাররা হাস্যকর ভাবে একটা কথা বলে থাকেন যে, ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্য সম্মান  অথচ আমরা জানি বর্তমান বিশ্বে মুসলিম নারীরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। ইতিমধ্যেই হয়ত উনাদের ধর্মানুভুতি খান খান হতে শুরু করেছে। বন্ধুরা লেখাটা শেষ পর্যন্ত না পড়ে কেউ হাসবেন না। আসুন দেখি কি কি সম্মান ইসলাম এই শস্যক্ষেত্রকে দিয়ে থাকে।
এর পক্ষে তারা যে যুক্তিগুলা দিয়ে থাকেন বলা হয়, আইয়্যামে
জাহেলিয়াতের যুগে নারীর
বিন্দুমাত্র কোন অধিকার ছিল না,
নারী শিশুকে জন্মানো মাত্রই
জীবন্ত মাটিতে পুতে ফেলা হতো,
বিক্রি করে দেয়া হতো, তাদের
সম্পত্তির কোন অধিকার ছিল না,
তাদের মানুষ হিসেবেই গন্য করা
হতো না ইত্যাদি। এই সব কথা শুনে
বড় ভাল লাগে, মনে শান্তি পাই যে
ইসলাম নারীকে খুব উঁচু সম্মান
দিয়েছে।
কিন্ত একটু বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় ইহা সম্পুর্ন মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। প্রথমত তারা আইয়্যামে জাহেলিয়াত যুগের যে নিদর্শন গুলা দেখায় সেটা পরিপুর্ন সঠিক নয়।
দ্বিতীয়ত, তারা যে ইসলামে নারী অধিকার বলে গলা ফাটায় সেটা সম্পুর্ন ভুয়া, যেটা কোরান হাদিস আর নবীর জীবনী দেখলে বোঝা যায়। সেদিকে পরে যাব, আগে দেখাব আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারীদের যে চিত্র দেখান হয় তা সঠিক নয়। অনেকে হয়ত নড়েচড়ে বসেছেন কিন্ত সত্যি সেটাই।
জীবন্ত কবর দেওয়াঃ আইয়্যামে
জাহেলিয়াতের যুগে নারী শিশুদের
এভাবে জীবন্ত মাটিতে পুতে ফেলা
হলে ইসলামের নবী এবং তার
সাহাবাগন ১০-১৫ টা করে বিবাহ এবং
দাসী রাখার মত পর্যাপ্ত নারী
কোথায় পেতেন? আবার তারা চারটি বিবাহের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়ে থাকে তখন আরবীয়রা অধিক বিবাহ করত বিধায় তাদের কে ৪ টির সীমা বেধে দেওয়া হয়েছিল। জীবন্ত কবর দিলে আরবীয়রা বিবাহের জন্য এতো নারী কোথায় পেত?
সম্পত্তিতে নারীর অনধিকারঃ সম্পত্তিতে
বিন্দুমাত্র অধিকার না থাকলে
মুহাম্মদের প্রথম স্ত্রী হযরত
খাদিজা, যিনি ছিলেন বিধবা,
সম্ভ্রান্ত একজন মহিলা ব্যবসায়ী,
তিনি এত বিপুল সম্পদের মালিক
কিভাবে হয়েছিলেন? বিধবা হবার
পরেই তাকে কেন লোকজন বাজারে
নিয়ে বিক্রি করে দিলো না? তিনি
সম্পত্তির অধিকার কিভাবে
পেয়েছিলেন? ভীষণ গোলমেলে
ব্যাপার স্যাপার বটে! খাদিজা যে
একজন বিধবা এবং সম্ভ্রান্ত
সম্মানিত ব্যবসায়ী ছিলেন, তা
ইসলামী সুত্র থেকেই জানা যায়।
এখন দুটো ব্যাপার হতে পারে, হয়
আইয়্যামে জাহেলিয়াত আমলে
নারীর যেই অবস্থানের কথা বলা হয়
তা মিথ্যা, অথবা খাদিজা সম্পর্কে
যা বলা হয় তা মিথ্যা। দুটো একই
সাথে সত্য হতে পারে না। কারণ
এইদুটো পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য।
খাদিজার মত আরো অসংখ্য উদাহরণ
দেখানো যেতে পারে, অথচ কন্যা
সন্তানকে জীবন্ত পুঁতে ফেলা, বা
সম্পত্তিতে অধিকার বঞ্চিত করার
বিশেষ কোন উদাহরণই পাওয়া যায় না।
আসেন দেখি কোরান নারীকে কতটা অধিকার দিয়েছে।
*কোরানে বলা হচ্ছে, নারীকে
সৃষ্টি করা হয়েছে পুরুষের জন্য, পুরুষের
বিনোদন এবং অবসন্নতা কাটাবার
জন্য। এটা চরমভাবে অমর্যাদাকর
নারীর জন্য। নারীর সৃষ্টি যদি
পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য হয়ে থাকে,
তা অবশ্যই নারীকে একটি স্বাধীন
এবং স্বাভাবিক সত্বা হিসেবে
চিহ্নিত করে না, বরঞ্চ পুরুষের জন্য
একটি উপভোগ্য বস্তু হিসেবে
নির্দেশ করে, একটি যৌনযন্ত্র
হিসেবে চিহ্নিত করে।
*নারী পুরুষের অর্ধেক, ১ জন পুরুষ সমান দুইজন নারী, (কোরান, ২:২৮২) একজন পুরুষের সাক্ষ দুজন নারীর সাক্ষীর সমান। পুরুষ নারীর থেকে সর্বদাই শ্রেষ্ট।
শিক্ষায়, মেধায়, জ্ঞানে নারী যত
কিছুই করুক না কেন, পুরষই শ্রেষ্ট।
প্রাইমারী স্কুল ফেল পুরুষও পিএইচডি
করা নারীর চাইতে শ্রেষ্ট, এটা
কোরানের ঘোষণা।
*কোরানে(2:223) বলা হচ্ছে, নারী
পুরুষের জন্য শষ্যক্ষেত্রস্বরুপ, পুরুষ
যেভাবে খুশি তাকে ব্যবহার করতে
পারে। নারীকে অত্যন্ত
কুরুচিপুর্ণভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই
আয়াতে।
*পুর্বের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে
যদি স্বামী আবার ঘরে তুলতে চায়,
তাহলে আরেকজন লোকের সাথে সেই
নারীকে বিবাহ দিয়ে রাত্রি যাপন
করিয়ে তারপরে বিবাহ করতে হবে।
নারীটি যেন খেলার পুতুল, খেললাম,
তালাক দিলাম, অন্য আরেকজনের
কাছে খেলতে দিলাম, সে খেলে
টেলে ফেরত দিলে এরপরে সেই নারী
হালাল।
*দাসী নারীদের সাথে যৌনসম্পর্ক
আল্লা এবং দয়াল নবী, নারীপ্রেমিক
নবী মুমিনদের জন্য হালাল করে
দিয়েছেন। এমনকি যুদ্ধবন্দী নারীরাও হালাল। (কোরান ৪:২৪)
*একজন পুরুষ একই সাথে চার চারজন
স্ত্রী রাখতে পারবে। বেহেশতেও
সে পাবে ৭২ চির যৌবনা হুর। কিন্তু
নারী পৃথিবীতে একটিই স্বামী
রাখতে পারবে। এবং বেহেশতে সে
হবে তার পুন্যবান স্বামীর
হুরবাহিনীর সর্দার্নী। (৪:৩)
*যেকোন সময় স্বামী চাইলেই
স্ত্রীকে তালাক দিয়ে নতুন স্ত্রী
আনতে পারবে। (৪:১২৯)
*স্বামী চাইলে স্ত্রীকে পেটাতেও
পারবে। কিন্তু স্বামী ভদ্রলোক যাই
করুকনা কেন, স্ত্রী কোনমতেই তাকে
পেটানো দুরের কথা, গালিও দিতে
পারবে না। নারীর সুমহান
মর্যাদাদানের অতি উৎকৃষ্ট নমুনা!! আল কোরান (৪:৩৪)
*বয়ষ্ক পুরুষ অপ্রাপ্তবয়সী কন্যাকেও
বিয়ে করতে পারবে। যেমন মুহাম্মদ
করেছিলেন ৫৩ বছর বয়সে ৬ বছরের
আয়শাকে বিয়ে। এখানে নারীর সম্মতির কোন প্রয়োজন নেই। (৬৫:১,৪)
এবার দেখি হাদিস কি বলে, সহিহ বুখারী ভলিউম ৭ হাদিস ৩০
আবদুল্লাহ বিন ওমরের বর্ণনামতে
নবী বলেছেন, "তিন জিনিস অশুভ
আছে- নারী, বাড়ি এবং ঘোড়া"।
ঋতু কালে নারীর শারীরিক অবস্থা
কেমন থাকে ,তা আমরা নারী মাত্রই
জানি । ইসলাম অনুসারে, ঋতু মতি
নারী না-পাক। তাই সেই সময়
তাদের মসজিদে স্পর্শ করাও বারণ ।
পুরুষকেও একাধিকবার বারণ করা
হয়েছে ঋতুমতী নারীর সাথে সঙ্গম
করতে । নারীর শারীরিক কষ্টের
কথা ভেবে নয় , বরং পুরুষকে নাপাক
হওয়া থেকে বিরত রাখতে । তবে
পতিগণের কোনও চিন্তা নেই ।
কেননা কামনা মেটানর জন্য সেই
সময় অন্য স্ত্রী তো আছেই । তবে
সমস্যা যদি পুরুষটির সেই ঋতুমতী
পত্নীর সাথেই সঙ্গমের ইচ্ছা হয় ! কুছ
পরোয়া নেই , তার ও সমাধান আছে
ইসলামে… বিশ্বের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ
জীবন বিধানে । কি সমাধান ? আবু
দাউদ হাদিসের কিতাব আল নিকাহ
এর ২১৬৪-২১৬৫ নং হাদিসে বলা আছে
, ঋতুমতী পত্নীর সাথেও সঙ্গম করা
বৈধ । কিন্তু ঋতুর প্রথম দিকে হলে
এক দিনার এবং শেষ দিকে হলে আধ
দিনার সাদকাহ(দান) দিতে হবে ।
অধিকাংশ ব্যাখ্যাকারী বলেন সেই
দান টি প্রায়সচিত্য স্বরূপ(অর্থাৎ
গরিব কে দান করতে হবে) আবার কেউ
মনে করে সেই দান জরিমানা স্বরূপ
(অর্থাৎ পত্নী কেই সাদকাহ দিতে
হবে) । তবে সে যাই হোক , সাদকা-র
পরিমাণ এতো কম যে কোনও পুরুষ ই
তাকে গুরুত্ব দেবে না । অথচ পেয়ে
যাবে নিষিদ্ধ সময়ে স্ত্রী সঙ্গমের
অধিকার । স্ত্রী নাপাক হলেও পতি
সঙ্গম করলেও নাপাক হবে না !
অসাধারণ বিধান !
স্বামী চাহিবামাত্র স্ত্রী তার বিছানায় যেতে বাধ্য থাকিবে, তা যত কাজই থাক। স্ত্রী যেন স্বামীর যৌনযন্ত্র, এখানে স্ত্রীর অনিচ্ছার কোন মুল্য নেই। বরং স্ত্রী দিতে না চাইলে ফেরেস্তারা ঐ নারীর জন্য লানত দিতে থাকেন।
আবু
দাউদ হাদিসের ২১৩৮ নং হাদিস টি
দ্রষ্টব্য । “মুহাম্মাদ ইবন আমর… আবু
হুরায়রা (রা) নবী করিম হতে বর্ণনা
করেছেন । তিনি বলেন ,যখন কোনও
ব্যক্তি তার স্ত্রী কে তার বিছানায়
আহ্বান করে ,আর সেই স্ত্রী তার
নিকট গমন করে না , যার ফলে স্বামী
রাগান্বিত অবস্থায় রাত কাটায় , ওই
স্ত্রীলোকের উপর ফেরেস্তা গন
সকাল পর্যন্ত(অন্য একটি হাদিস
অনুযায়ী, বা যে পর্যন্ত না স্বামীর
কাছে আসছে, সেই পর্যন্ত )
অভিসম্পাত করতে থাকেন” ।
হাদিসে আরো আছে
*নারী পুরুষের যৌনদাসী। (Ibn
Hisam-al-Sira-al-nabawiyya,
Quran 4:251)
*তারা পুরুষের অধিকৃত সম্পত্তি।
(Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493,
1:9:486, Sahih Muslim 4;1032,
4:1034, 4:1038-39, Abu Dawud
2:704)
*এরা ভালোবাসার অযোগ্য। (Sahih
Bukhari 7:62:17, Abu Dawud
41:511)
*নারীরা কুকুরের সমতুল্য। (Sahih
Bukhari 1:9:490, 1:9:493, 1:9:486,
Sahih Muslim 4:1032, 4:1034,
* তাদের বন্ধক রাখা যায়। (Sahih
Bukhari 5:59:369)
* তারা নিকৃষ্ট (Sahih Bukhari
9:88:219) বুদ্ধিহীন (Sahih Bukhari
2:24:541) অকৃতজ্ঞ (Sahih Bukhari
1:2:28) খেলার পুতুল (Al- Musanat,
Vol no-1, part 2, p. 263) হাঁড়ের
মতো বক্রতাযুক্ত (Sahih Bukhari
7:62:113, 7:62:114, 4:55:548)
* তারা শয়তানের রূপ (Sohih
Muslim 8:3240)
* তাদের মাঝে নিহিত আছে
যাবতীয় খারাপ। (Sahih Bukhari
4:52:110, 4:52:112)
* তারা বিশ্বাসঘাতক। (Sahih
Bukhari 4:55:547)
* পুরুষের জন্য ক্ষতিকারক (Sahih
Bukhari 7:622:33)
* নারী হল সন্তান উৎপাদনের
কারখানা (আবু দাউদ ২০৪৬)
===============
সবাই বলেন সুবহানআল্লাহ, কি সুমহান মর্যাদা ইসলাম নারীকে দিয়ে থাকে।