Saturday, August 6, 2016

ধর্মানুভূতি, মিডিয়া ও অবাঞ্চিত নাস্তিক্য চিন্তা – ১

ধর্মানুভূতি, মিডিয়া ও অবাঞ্চিত নাস্তিক্য চিন্তা – ১

যুক্তিনির্ভর বিজ্ঞান ছাড়া এই মানব সভ্যতা এগুতে পারে কি? সেটা যদি নাই হয়ে থাকে, তবে ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ দিয়েই রোগ-বালাই দূর করার চেষ্টা চালানো যেতে পারে। নিউটনের আপেল মাথায় না পড়ে উড়ে গেলো না কেন, এমন চিন্তাটাই মুক্তমনা হওয়ার প্রধান লক্ষণ। প্রচলিত ধ্যাণ-ধারণা এবং বদ্ধতার বাইরে ভাবেন বলে, আমরা পদার্থবিদ্যার জগতে আইনস্টাইনকে পাই, আর জীববিদ্যার জগতে ডারউইনকে। বলা হচ্ছে যে, জীববিজ্ঞান ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বের উপরে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত – এর স্বপক্ষে রয়েছে হাজারো উদাহরণ। ক্যানাডার টোরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে ২য় বর্ষে পড়ুয়া আমার বোনঝিও যখন বলে, “Life science is based on evolution theory”, বাংলা ব্লগের কোন এক মহারথী বিবর্তনবাদকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে উঠে পড়ে লাগেন, তখন তার জ্ঞানের দৌরাত্ম কতটুকু, তা নিয়ে আর প্রশ্নের অবকাশ থাকে না।

রিচার্ড ডকিন্স মূলতঃ একজন জীববিজ্ঞানী। তিনি তার জ্ঞানের আলোকে ধর্মকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, এবং সবই দিয়েছেন নিজের পর্যবেক্ষণ এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে। সুতরাং তার রেফারেন্স টেনে কথা বলাটা তাকে নবী-র স্তরে উন্নীত না করে বলা যেতে পারে, বিজ্ঞানসম্মত তার বিশ্লেষণকে উদ্ধৃত করা। মজার ব্যাপার হলো, বিজ্ঞানের যতদূর অগ্রগতি হয়েছে, এখন পর্যন্ত কেউই কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কোন ধর্ম বা ধর্মীয় গ্রন্থের কোন বিষয়-আশয়কে রেফারেন্স হিসেবে উপস্থিত করতে পারেন নি। এইখানে ধর্ম সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আর সম্ভবতঃ এই কারণেই এমেরিকার সংবিধানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা পুরোপরি নিষিদ্ধ। আমরা বিবর্তনবাদ নিয়ে পড়াশুনা করবো (যদিও বাংলাদেশে বিবর্তনবাদ নিয়ে যে পড়াশুনা হয়, তাকে আধা-খ্যাঁচড়া বললে অত্যুক্তি হবে না), আবার বিপরীত দিকে বিবর্তন মনস্ক চিন্তাধারাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবো, তাতো হতে পারে না! তবে কি বিবর্তনবাদ মিথ্যা বা বিবর্তনবাদের মত এমন একটা বিদ্‌ঘুটে তত্ত্ব এই জগতে প্রচলিত আছে, সেটা জানার জন্য আধা-খ্যাঁচড়াভাবে বিবর্তনবাদ পড়ছি? অদ্ভূত তো! পড়ারই বা দরকার কি?

আপনি দেশে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ চাইবেন, আবার বিপরীতে যুক্তিবাদী এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার বিরুদ্ধে চাপাতিহস্ত হবেন, অথবা চাপাতিহস্তদের ফাঁদে পা দিয়ে তথাকথিত আস্তিক-নাস্তিকের বিভেদের ফর্মূলায় উঠতে-