Saturday, August 6, 2016

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫


পর্ব ১ ও ২ ঃ-
★ মহাশক্তিধর ও মহাক্ষমতাধর আল্লাহ বিশ্বাস নামক প্রতারণার আশ্রয় নিলেন কেন এবং কেন তার গর্বের সাথে বলার সাহস নেই যে, আমাকে অবিশ্বাস করো - অস্বীকার করো?
★ মহাশক্তিধর ও মহাক্ষমতাধর আল্লাহ কেন মানুষের মতো একটা অতি ক্ষুদ্র প্রাণীর কাছে নামাজ-রোজার মতো অপ্রয়োজনীয় ধর্মকর্ম ভিক্ষা করেন এবং কেন আল কোরআনের কথাগুলি জোর করে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেন?
★ মহাশক্তিধর আল্লাহ কেন মানুষের মতো একটা ক্ষুদ্র প্রাণীর সাহায্য ছাড়া ধর্মগ্রন্থ প্রকাশ করতে পারেন না এবং কেন ধর্মপ্রচারক নামক মানুষের মতো অতি ক্ষুদ্র প্রাণীর সাহায্যে ছাড়া ধর্মপ্রচার করতে পারেন না?
★ মহাশক্তিধর আল্লাহ কেন ফেরেশতাদের সাহায্য ছাড়া কোনো মানুষের হিসেব রাখতে পারেন না এবং কেন ফেরেশতাদের সাহায্য ছাড়া কোনো মানুষকে হত্যা করতে পারেন না, যেখানে মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কারো সাহায্য ছাড়াই খুব সহজে এসব করতে পারে?
★ আল কোরআন ও আল হাদিসের বাণীগুলো কেন বিজ্ঞানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং আল কোরআন ও আল হাদিসের বাণীগুলো প্রমাণিত বিজ্ঞান ও পৃথিবীর বাস্তব সত্যগুলোর বিরুদ্ধে যায় কেন?
★ ধর্মগ্রন্থ হয় সম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ এবং চিরস্থায়ী। কিন্তু ইসলামের কথা মানলে ইসলামের কোরআন-পুর্ব গ্রন্থগুলো বাতিল। তার মানে, আগের ধর্মগ্রন্থগুলোর বিষয়বস্তু এবং বাণীগুলোও বাতিল, যেহেতু আগের ধর্মগ্রন্থের ভেতর থাকা বাণী এবং বিষয়গুলো কোরআনে আসেনি, তাই প্রশ্ন জাগে ধর্মগ্রন্থ সাময়িক এবং অসম্পূর্ণ হয় কী করে?
★ একই লেখক বা স্রষ্টার চারটি সৃষ্টি একই রকম হওয়ার কথা, কিন্তু চারটা আসমানী কিতাবের মাঝে মিলের পরিমাণ অতি নগণ্য। ইসলামী মতে - আগের তিনটি আসমানী কিতাব বিকৃত করা হয়। বিকৃত মানে নিজস্বতা বজায় রেখে শুধু কিছু কথা ও শব্দের পরিবর্তন। তার মানে, বিকৃত তিনটি আসমানী কিতাবের সাথে কোরআনের প্রচুর মিল থাকার কথা। কিন্তু সেগুলো কোরআনের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা প্রমাণ হয় কেন?
★ আল্লাহ সবাইকে খাদ্য দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন, কিন্তু পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ ক্ষুধার্ত কেন?
★ আল্লাহ মুসলমানদের রক্ষা করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন, কিন্তু পৃথিবীর সকল ধর্মের মধ্যে একমাত্র মুসলিমরাই অরক্ষিত এবং নিকৃষ্ট অবস্থানে কেন?
★ কোরআনকে বিজ্ঞান বলে দাবি করা হয়, অথচ কোরআন গবেষণা করা কোটি কোটি মুসলিম হাফেজ-বিজ্ঞানী মিলেও অন্তত একজন অমুসলিম বিজ্ঞানীর লোমের যোগ্য হতে পারে না কেন?
★ আল্লাহ নিজে ঘোষিত মহাবিশ্বের সর্বশক্তিমান ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, কিন্তু তিনি ইসলাম ঘোষিত চারটি আসমানী কিতাবের মধ্যে তাওরাত, যবুর ও ইঞ্জিলকে মানুষের হাতে বিকৃত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারলেন না কেন?
★ ধর্মগ্রন্থগুলি পৃথিবীতে লিখন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার পরে আত্মপ্রকাশ করে কেন? তার আগে কেন পারেনি? তবে কি আল্লাহ শক্তি ও ক্ষমতায় মানুষের চেয়ে পিছিয়ে?
★ আসমানী কিতাবের মধ্যে যবুর ছিলো একটা গীতিকবিতা, যার মাধ্যমে সুরে-সুরে তালে-তালে নগ্ন নৃত্য করা হতো। সেই বই ইসলাম ঘোষিত আসমানী কিতাব বা মহাগ্রন্থের একটি হয় কী করে?
★ ১ লাখ ২৪ হাজার নবী-রাসূলের নাম আল্লাহ বলতে পারেন নি কেন?
★ ১লাখ ২৪ হাজার নবী-রাসূলের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি কেন, অথচ যেখানে খুব সহজেই আদিম মানুষের ফসিল পর্যন্ত খুজে পাওয়া যায়?

★ ১ লাখ ২৪ হাজার নবী-রাসুল মিলেও কেন ইসলাম এবং অন্তত একজন মুসলিমের উদাহরণ রক্ষা করতে পারলেন না, যেটা প্রমাণ করতো যে, মুহাম্মদের জন্মের পূর্বে ইসলাম ও মুসলিম ছিলো?
★ ইসলামী মতে পৃথিবীর সবাই শুরুতে মুসলিম ছিলো, কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পরে অমুসলিম হয়ে যায়। তার মানে কি সর্বশক্তিমান আল্লাহর চেয়ে ইবলিশ-শয়তানের শক্তি ও ক্ষমতা বেশি?
★ ইসলাম ঘোষিত চারটি আসমানী কিতাব - তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল ও কোরআনের মধ্যে মিল নেই কেন?
★ ইসলাম ঘোষিত চারটি আসমানী কিতাবের মধ্যে তাওরাত, যবুর ও ইঞ্জিলে ইসলাম, কাবা শরীফ, মসজিদ, নামাজ এসবের উল্লেখ নেই কেন?
★ আল কোরআনে নামাজ, মসজিদ এবং আযানের উল্লেখ নাই কেন?
★ ইসলাম ঘোষিত চারটি আসমানী কিতাবের মধ্যে তাওরাত, যবুর ও ইঞ্জিল আরবি ভাষায় এবং সৌদি আরবে নাযিল হলো না কেন?
★ ইসলাম যদি পৃথিবীর প্রথম ধর্ম হয়, তবে অন্তত একজন হলেও প্রাচীন মুসলিম পাওয়ার কথা। কিন্তু শুধু মুহাম্মদের প্রচার করার সময় থেকেই মুসলিমদের পাওয়া গেলো কেন?
★ শিশুদের যৌনকাজে ব্যবহার করার বৈধতা, নারীদের যৌনদাস হিসাবে উপস্থাপন, মারাত্মক অসম বয়সের বিয়ে, বহু বিয়ের মাধ্যমে নারীদের যৌনদাস বানানো, নাস্তিক ও অমুসলিমদের খারাপ চোখে দেখা, অমুসলিম এবং যুদ্ধবন্দীদের গনিমতের মাল বা বিকৃত যৌনতার উপাদান বানানো, হিযরাদের মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, নারীদের পুরুষদের সমান অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, বিয়ের মাধ্যমে বউকে জোর করে ধর্ষণে রক্তাক্ত করার জঘন্যতা, মৌখিক তালাকের মাধ্যমে মন চাইলেই সুন্দর সাজানো সংসার ভাঙার নিয়ম, হিল্লা বিয়ের মাধ্যমে নিজের বউকে জোর করে পর পুরুষের সাথে অবৈধ সেক্স করতে বাধ্য করা পুণ্যের কাজ - এগুলো আল্লাহর-নবীর-ধর্মের আদেশ হয় কী করে?
★ মুহাম্মদের এত অলৌকিক শক্তি ও ক্ষমতা ছিলো যে, হাতের আঙুলের ইশারায় চাঁদকে দিখণ্ডিত করতেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের দৌড়ানি খেয়ে প্রাণের ভয়ে গুহার ভেতর লুকাতেন কেন?
★ মহাশক্তিধর আল্লাহ মুসলিমদের সাথে আছে, তারপরেও মুসলিমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ সব বিষয়ে - সব দিক দিয়ে - সব সময় অমুসলিমদের চেয়ে পিছিয়ে এবং অমুসলিমদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত কেন?
★ যে মুহাম্মদের জন্ম না হলে পৃথিবী ও পৃথিবীর কোনোকিছুই সৃষ্টি হতো না, সেই মহাগুরুত্বপূর্ন মুহাম্মদের কেন প্রয়োজন হলো তারচেয়ে বেশি বয়সী এক বয়স্ক ধনী নারীকে বিয়ে করার?
★ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু এবং আল্লাহর কাছ থেকে অলৌকিক সাহায্য পাওয়া মুহাম্মদ কেন অনেক যুদ্ধে (বেশিরভাগ যুদ্ধে) শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন? কেন তিনি যুদ্ধে দাঁত হারান? কেন তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রোগে ভুগতে ভুগতে নিকৃষ্ট করুণ মৃত্যু হয়?
★ মুহাম্মদ এবং সকল মুসলিমদের নাম অমুসলিম মূর্তিপূজারিদের নামে পরিচিত হলো কেন?
★ আল্লাহ নামটা একটা মূর্তির নাম থেকে নেয়া হলো কেন?
★ মসজিদ কেমন হবে, আযান কেমন হবে এবং নামাজ কেমন হবে - সেই ব্যাপারগুলো আল্লাহ এবং মুহাম্মদ দুজনের কেউই বলতে পারলো না কেন?
★ মসজিদ, আযান এবং নামাজের উদ্ভাবক আল্লাহ এবং মুহাম্মদ দু'জনের কেউই না হয়ে নতুন স্বেচ্ছাসেবী মুসলিমরা হলো কেন?

পর্ব ৩ঃ

অর্থাৎ সাহাবীদের কাছেও এই হাজরে আসওয়াদ পাথর টার আলাদা কোনো গুরুত্ব ছিল না।
হজ্বের আর পালনীয় রীতিগুলোর মধ্যে আর একটা হচ্ছে মুযদালিফায় রাত্রিযাপন। জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখে আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তন করে মুযদালিফায় রাত কাটাতে হয়। এখানে একটা জিনিস লক্ষণীয়, এশার নামাজের সময় মাগরিব ও এশার নামাজ একই আযানে সাথে সাথে আদায় করা লাগে। মানে এক আযানে দুই নামাজ। এটা কেমনে ঠিক হয়? এরকম অন্য আর কোন সময় দেখা যায় না। বলা হয় যে, এটা বিশেষ নিয়ম, তবে এই বিশেষ ব্যক্তি (পয়গম্বর ) ব্যতীত সাধারণের এই কর্ম পালন করার যৌক্তিকতা কোথায়?
হজ্বের আর একটা ব্যাপার হচ্ছে শয়তান কে লক্ষ করে পাথর নিক্ষেপ। এখানেও সেই একই পৌত্তলিকতার ছোঁয়া। কথিত আছে, ইব্রাহীম (আঃ) নাকি শয়তানকে উদ্দেশ্য করে পাথর মেরেছিলেন। তাই ১০ তারিখ জামরাতুল আকাবাতে শয়তানকে উদ্দেশ্য করে প্রত্যকের ৭টা করে পাথর মারা লাগে। ১১ ও ১২ তারিখেও কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থানে একইভাবে পাথর মারতে হয়। শয়তানকে প্রতি বছর এইভাবে পাথর মারতে গিয়ে যে, কত লোক যে মারা যায়! এ বছর ও এই পাথর মারতে গিয়ে ৭১৭ জন নিহত ও ১০০০+ গুরুতর আহত যদিও এই কম সংখ্যক তথ্যের সত্যতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে।
কিন্তু এই পাথর মারায় শয়তানের মৃত্যু হয়েছে বলে আদৌ শোনা যায় না। পৌত্তলিক রীতি বলেই এখনো এগুলোকে অনুসরণ করা হয়।
আবার দেখি মুছলিমদের মধ্যে সিয়াম বা রোজা রাখার বিধান রাখা হয়েছে। এই রোজার নিয়ম ইহুদিদের থেকে ধার করা। ইছলাম-পূর্ব আরবে আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মহরম মাসের (হিব্রু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ‘তিশরি’ মাস) দশম দিনে ইহুদিরা রোজা রাখতেন। আরবি ভাষায় ‘আশুরার দিন (হিব্রু ভাষায় আশর)’ নামে এই দিবস পরিচিত। ইহুদি ধর্মে এদিনের অনুষ্ঠানের নাম ‘জম কিপার’; ইহুদিরা জম কিপারের সময় ২৫ ঘণ্টা উপবাস পালন করে এবং সিনাগগে গিয়ে প্রার্থনা করেন এবং দান খয়রাত করে।
নবী মুহাম্মদ মদিনায় গমনের পরে এবং প্রার্থনার দিক তখন জেরুজালেমে থেকে মক্কার দিকে পরিবর্তিত হল, রোজার সময়সীমা তখন একদিন থেকে বেড়ে দাড়ালো দশ দিনে, অর্থাৎ মহরম মাসের দশ দিন নামে পরিচিত হলো। পরবর্তীতে মুসলমান ও ইহুদিদের মাঝে যখন চূড়ান্ত বিচ্ছেদ হয়, তখন পুরো রমজান মাসকে রোজা পালনের জন্য সংরক্ষণ করা হলো।
নামাজ বেহেশতের চাবি, কিন্তু এই চাবির ব্যাপারে কোরানে কোনো প্রকার বিস্তারিত নির্দেশনা দেয়া হয়নি। মদিনায় হিজরতের প্রথম দেড় বছর মুসলমানরা ইহুদিদের মতো একই দিক অভিমুখ (কিবলা) প্রার্থনা করতেন, যা মূলত জেরুজালেমে অবস্থিত সবচেয়ে দূরের মসজিদ (বা প্রার্থনাস্থান) হিসেবে পরিচিত ছিলো।
ইছলামী মতে নাকি প্রত্যেক পুরুষ সর্বোচ্চ ৪ জন স্ত্রী রাখতে পারবেন। আদতেই কি তাই? দেখি কোরান কি বলে।
মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। (সুরা নিসা-৩)
খাদিজা, সাওদা, আয়েশা,হাফসা, যায়নাব, উম্ম সালমা, যায়নাব বিনত জাহাশ – পুত্রবধু, জুয়াইরিয়া, উম্ম হাবিবা, রায়হানা, সাফিয়া, মায়মুনা। মোহাম্মদ তার জীবনে এই নারীদের নিয়ে সংসার করেন। আসলে এটাকে সংসার না বলে হেরেম বলাই যুতসই মনে হয়। আরও নিন্দুকের মুখে শোনা যায়, উম্মে হানির সাথেও নাকি তার প্রেম চলছিলো।
শুধু তাই নয়। খলিফাদের মধ্যে সবচেয়ে কম স্ত্রী ছিলো প্রথম খলিফা হযরত আবু বক্করের - মোট ৪ জন স্ত্রী।
আবু বক্কর কন্যা আয়েশা ছিলেন মোহাম্মদের প্রিয় স্ত্রী। দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমরের ১০ জন স্ত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে উম্মে কুলসুমের বয়স যখন ৪/৫ বছর, ওমর তাকে বিয়ে করেন। আবার ওমর কন্যা হাফসা ছিলেন মোহাম্মদের স্ত্রী। তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমানের মোট স্ত্রীর সংখ্যা ৮ এবং হযরত মোহাম্মদের দুই মেয়ে রুকাইয়া এবং উম্মে কুলসুম দু'জনেই তার স্ত্রী। চতুর্থ খলিফা হযরত আলীর মোট ৮জন স্ত্রী ছিল। তিনি চাচাত ভাই হযরত মোহাম্মদ কন্যা ফাতিমাকে বিয়ে করেন। আবার তিনি হযরত মোহাম্মদের বড় মেয়ে জয়নবের মেয়ে উমামা-কেও বিয়ে করেন, অর্থাৎ তিনি চাচাতো ভাই মোহাম্মদের নাতনীকেও বিয়ে করেন। ইমাম হাসানের ৩ জন স্বীকৃত স্ত্রী ছিল, তাদের মধ্যে একজন তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে ।
শুধু তাই নয়, ইছলামের আঁতুড়ঘর সৌদি আরবের রাজ পরিবারে এমন বিয়ের রীতি এখনও প্রচলিত আছে, এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইছলাম বলছে ৪ বিয়ের কথা কিন্তু এখানে এমন কেন?

পর্ব-৪

হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) বর্ণিত রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কুরান ছাড়া আমার কোনো কথা লিখো না, যদি লিখে থাকো তবে তা নিশিহ্ন করে দাও।” - ইবনে হিশাম – পৃষ্ঠা দশ। এই উক্তির কারনেই কেউ লিপিবদ্ধ করার সাহস পায়নি। তাদের যুক্তি ও জোরালো দাবি ছিল এই যে, কুরান নাজিল হবার কালে মোহাম্মদের উক্তি লিখে রাখলে কোরানের সাথে তা মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে পারে - এরূপ আশংকা ছিল। ‘শুধুমাত্র এই মিশ্রণ এড়ানোর জন্যই যে এই নিষেধাজ্ঞা উচ্চারিত হয়েছিল এবং তা যে কোরান নাজিল-কালের জন্যই সীমাবদ্ধ ছিল, সে কথা না বললেও চলে।’
কোরান সম্বন্ধে নানা তথ্য পাওয়া যায়। যেমন, কোরানের আয়াত নিয়ে আছে এক অদ্ভুত মতভেদ। খোদ সৌদি আরব থেকেই কোরান দুই রকমের প্রকাশিত হয়ে থাকে। শিয়া সম্প্রদায় দাবি করে, শুরুতে কোরানের আয়াত সংখ্যা ছিল ১৭০০০, এবং কোরানের মধ্যে বেলায়েত নামে একটি সুরা ছিল, যে-সুরায় হযরত আলি, ফাতিমা ও হাসান-হোসেনের গুরুত্ব বিষয়ে লিখিত ছিল। পরবর্তী কালে আয়াত সংখ্যা হয় ৬৬৬৬ এবং সেখান থেকে কমে এ পর্যন্ত তা ৬২৩৬-এ দাঁড়িয়েছে। কমেছে ৪৩০ টি আয়াত। পূর্বে সুরা আনামের আয়াত-সংখ্যা ছিল ১৬৬ টি, কিন্তু বর্তমান কোরানে সুরা আনামের আয়াত সংখ্যা ১৬৫ টি।
আবার বিভিন্ন কোরানের আয়াতেও নানা রকম গরমিল লক্ষ্যণীয়। আমাদের দেশের সাধারণ মুছল্লি থেকে শুরু করে বিভিন্ন আলেমও দাবি করে যে, কোরান নাযিল কালের পরে থেকে নাকি একটা আয়াত দূরে থাক, একটা হরফেরও কম-বেশি ঘটেনি। এমনকি এমন কাজও কেউ করেনি। আসলেই কি তাই?
একটা সামান্য জিনিস দেখা যাক প্রথমেই। "পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমার পালনকর্তা" - এই আয়াতটি সুরা আলাকের ৫ নম্বরে বিদ্যমান। এখানে মজার বিষয় হলো যে, এই আয়াতটি কোরানের প্রথম সুরায় নেই। কেন নেই? জানতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে কোরানের ইতিহাস। নবী মোহাম্মদ ও কোরান এই দুইয়ে মিলেই আজকের ইছলাম। হাদিস ও সিরাতও কম উল্লেখযোগ্য নয়। আর বর্তমান সময়োপযোগী করার জন্য কিছু নিয়ম কানুন বের হয়েছে যার নাম ইজমা কিয়াস। ইছলামের সব থেকে বেশি বিতর্কিত ব্যাপারগুলোর মধ্যে ইজমা কিয়াস অন্যতম। এক স্কলার একভাবে মত দেয়, তো অন্য স্কলার অন্যভাবে। সে যাই হোক, আজকে আলোচনার বিষয় এটি নয়।
কোরাইশ বংশের দুই গোত্র উমাইয়া ও হাশিমী। হাশিমি গোত্রে মোহাম্মদ জন্ম নেন। তিনি নবী হবার প্রথম পর্যায়ে দীর্ঘ ১০ বছর (২৪-৪০) তেমন কোনো সুবিধাই করতে পারেননি। তার নব্য ও একমাত্র সত্য (!) ধর্ম ইছলাম গ্রহণকারীর সংখ্যা সর্বমোট মাত্র শ দেড়েকের মত! অথচ এই সময়েই (যদি সবার কাছে সুগ্রহনযোগ্য মনে হতো) ইছলামের ছায়াতলে চলে আসার কথা ছিলো সমগ্র বিশ্বের মানুষের। আল্লা তথা স্রষ্টার অনুমোদিত একটা মাত্র ধর্ম, যার নাম ইছলাম ও মোহাম্মদ তার বার্তা বাহক। দুনিয়ার আর কোনো ধর্মই সত্য নয় ইছলাম ব্যতীত। সেই ইছলামের শুরুর দিকে গ্রহণকারীর সংখ্যা এত কম কেন, সে প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই যে কোনো মোহমুক্ত মানুষের মনে জাগ্রত হয়। যারা ইছলাম গ্রহণ করেছিল, সে সময়ে তারা প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে সুবিধাবঞ্চিত। এক্ষেত্রে বলা যায়, যেহেতু সমাজে সুবিধাবঞ্চিত, দরিদ্র, কিছু মানুষকে নতুন আশার আলো, সাম্যের গান [এখানে গান বলা যাবে না, কেননা ইহা শরিয়তে নিষিদ্ধ] শোনালেন, স্বভাবতই তার দলে ভিড়ে গেল কিছু মানুষ। প্রকাশ্যে তখনও ইছলাম প্রচার শুরু হয়নি।
“তোমরা একে অন্যের প্রতি জুলুম করিও না”, “অভাবীকে অন্ন দাও”, “যে ব্যক্তি অভাবীকে খাদ্য দিলো, সে ব্যক্তি আল্ল্যার নিকট অতি প্রিয়”, “যে ব্যক্তি একজন ক্রীতদাসকে আযাদ করে দিলো, সে যেন একখানা জান্নাত কিনে নিল আল্যার কাছ থেকে এরই বিনিময়ে” (তৃতীয়টি হাদিস, যা ওমর একবার এক দাসকে মুক্ত করায় মোহাম্মদ ওমরকে উদ্দেশ্য করে এই কথাটা কথা বলেছিলেন) - দেখা যাচ্ছে, কতই না ভালো ভালো কথাবার্তা!
তাও কেন সংখ্যায় এত কম মুছলিম তখন? কেউ রহস্যের জট খুলে দিয়ে যেতে পারলে বড়ই উপকৃত হতাম। যাই হোক, এরপরে একটু চোখ বোলাই ইছলামি ইতিহাসের দিকে। মোহাম্মদের প্রথম দিককার কোরান লেখক ছিলেন (কাতিবান) ইবনে সা’দ। আবার প্রথম গোমর ফাঁসকারীও হলেন এই ইবনে সা’দ। হযরত আল বাদাওয়ী র তফসির ‘আছরাবুত তানজিল ওয়া আছরাবুত তা’য়ীল’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন:
একদিন মোহাম্মদ (দঃ) সুরা আলমুমিনুন এর ১২ থেকে ১৪ পর্যন্ত আয়াত লেখার জন্য আব্দুল্লাহ বিন সা’দকে বললেন: “আয়াতটা আর আমরা নিশ্চয়ই মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটির নির্যাস থেকে । অতঃপর আমরা তাকে বীর্যরূপে এক নিরাপদ অবস্থান স্কলে স্থাপন করি। এরপর আমরা বীর্যকে তৈরি করে, অতঃপর হাড়গুলোকে মানস দ্বারা আবৃত করেছি। অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি” রসুল মোহাম্মদ ১৪ নং বাক্যটুকু বলার পর আব্দুল্লাহ বিন সা’দ তাঁর সাহিত্যিক ভাষায় বলে উঠলেন ‘নিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান’! মোহাম্মদ বললেন এই বাক্যটাও লাগিয়ে দাও। আবদুল্লাহ বিন সা’দ হতবাক হয়ে গেলেন। মনে মনে বললেন বিষয়টা কি, আমার মুখের কথা আল্লাহর বাণী হয় কীভাবে?
আস্তে আস্তে আব্দুল্লাহ বিন সা’দ নিশ্চিত হয়ে গেলেন যে, কোরান মোহাম্মদ বানিয়ে বানিয়ে তৈরি করেছেন। এসব কোনো আল্লা বা স্রষ্টার বাণী নয়। এর পরেই তিনি ইছলাম ত্যাগ করেন।
এখানে আরও একটা উদাহরন দেয়া যেতে পারে। যেমন, ওকাজের মেলায় (তৎকালীন মূর্তি-উপাসকদের মিলনমেলা ও উৎসব) শ্রেষ্ঠ কবিদের কবিতা কাবার দরজায় দামি কাপড়ের ওপর সোনার অক্ষরে খোদাই করে ঝুলিয়ে রাখা হতো। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী কিন্দার রাজপরিবারের যুবরাজ ইমরুল কায়েস প্রাক-ইসলামিক যুগের আরবের শ্রেষ্ঠ কবিদের একজন। তাঁর কবিতাও ওকাজ মেলায় বিজয়ী হয়। কাবা ঘরের দরজায় তা ঝোলানো ছিল। এখানে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখা জরুরি যে, কবি ইমরুল কায়েস নবী মোহাম্মদের জন্মের অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন। তবুও তাঁর জনপ্রিয় কবিতাগুলো তৎকালীন আরবীয়দের মুখে-মুখেই ছিলো। আমাদের দেশে যেমন রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুল।
একদা নবী কন্যা ফাতেমা কোরানের কামার সুরার ৫৪ নং আয়াত বারে বারে আবৃত্তিকালে কবি ইমরুল কায়েসের মেয়ে সেখান উপস্থিন হন। তিনি জিজ্ঞেস করেন, "কী বলছো, ফাতিমা?"
ফাতেমা জবাব দেন, তিনি আল্লাহর ওহি কোরানের আয়াত পাঠ করছেন। কায়েসের মেয়ে রাগান্বিত হয়ে বললেন, "সর্বনাশ! এ তো আমার বাবার লেখা কবিতার একটি পংক্তি। তোমার বাবা, দেখি, আমার বাবার কবিতা নকল করে বেহেশত থেকে আগত আল্লাহর বাণী বলে কোরানে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।" ফাতিমা ও কায়েসের মেয়ের এই ঘটনাটি সারা আরব জুড়েই ব্যাপকভাবে প্রচলিত। (The Origins Of the Koran, page, 236) কোরানের সাথে ইমরুল কায়েসের কবিতার আরও মিল চাইলে
এখানে ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন।

পর্বঃ- ৫


সর্বপ্রথম খলিফা ওসমান কোরান সংকলনের কাজে হাত দেন। কিন্তু এর পরেও কথা থেকে যায়। যেমন দেখি, ওমরের নির্দেশে তৈরি সংকলিত কোরান, যা যায়েদের কাছে এবং পরবর্তীতে তার মেয়ে হাফসার কাছে যে-কোরানটা ছিল, সেটাকে কেন ধ্বংস করা হলো? সে খবর বা কারণ সারা জীবনই গুপ্ত রয়ে যাবে মানুষের জন্য। কেউই জানবে না। কী ছিলো সে কোরানে? কেনই বা পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হলো সে কোরান? তা অজানাই রয়ে যাবে। তাছাড়া সুরা ফাতিহা থেকে শুরু করে অনেক আয়াত আছে, যেগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, কোরান শুধু তথাকথিত আল্লাহর বাণীই নয়। এখানে মোহাম্মদের কথাবার্তায় ভরপুর! একটা উদাহরণ দেয়া যাক।
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা' আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। যিনি বিচার দিনের মালিক। আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
ওপরের সুরাটি কোরানের প্রথম ফাতিহা সুরা এবং নামাজের প্রত্যেকে রাকাতে এই সুরা পড়া বাধ্যতামূলক। পাঠক, এই সুরায় লক্ষ্য করুন, বলা হচ্ছে, “শুরু করছি আল্লাহর নামে” - এখানে আল্লাহ নিজেই কি নিজের নামে শুরু করছেন? আর একটা আয়াত দেখি:
পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু।
এখানে দেখা যাচ্ছে, “পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন” - অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, জিব্রাইল মোহাম্মদকে পাঠ করতে নির্দেশ দিচ্ছেন পক্ষান্তরে আল্লা পাঠ করতে বলছেন। এবার প্রশ্ন আসে কোরানে সুরা সবই কি তথাকথিত আল্লাহর বাণী? কোরানে আল্লার বাণী নয়, মোহাম্মদের বাণী তার নমুনা আরও কিছু দেখে নিতে পারেন এই আয়াতগুলো থেকে - ১৪:১, ১৬:১০২, ২০:৪, ২৬:১৯২-১৯৪, ২৭:৬, ৩২:২, ৪৫:২, ৭৬:২৩, ৯৭:১; শুধু তাই নয়, আয়েশা নিজেও বলেছেন, আল্লা নাকি সর্বদাই প্রস্তুত থাকে যুতসই আয়াত নাজিলের জন্য, যা মোহাম্মদের পক্ষে সুবিধে হয়। (বুখারী শরীফ, খণ্ড ৭, বই ৬২, হাদিস ৪৮)
ইছলাম ধর্মে বলা হয়, নবীদেরকে পাঠানো হয়েছিলো মানুষের চরিত্র পরিবর্তনের জন্য। শেষ নবী মোহাম্মদকে মানবজাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ মানব বলে দাবি করেন ইছলাম অনুসারীগণ। আদতে তিনি কোন দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ, সেটা প্রশ্নের দাবি রাখে। একটু অন্যভাবে শুরু করা যাক।
মোহাম্মদের দাদা আব্দুল মোত্তালিব এবং পিতা আব্দুল্লাহ বিয়ে করেন একই সময়ে যথাক্রমে অয়াহাব ইবন আবদ মানাফের ভাগ্নি হালা এবং কন্যা আমেনাকে। হালা ও মোত্তালিবের ঘরে জন্ম নেন মোহাম্মদের চাচা হামজা। এবং আমিনা ও আব্দুল্লাহর ঘরে জন্ম নেন মোহাম্মদ। প্রথম দিককার সময়ে কাবায় দখল নিতে গেলে মোহাম্মদ যখন আক্রমণের শিকার হন, তখন হামজা নিজে ইছলাম গ্রহণ করেছেন বলেন এবং সে সময়ে কোরাইশ নেতাদের বিরুদ্ধাচরণকারী মোহাম্মদ সে যাত্রায় তার কারণেই বেঁচে যান। ইছলামী ধর্মের অনেক যায়গায় এই হামজা ছিলেন 'রক্ষাকবচ' বিশেষ। উহুদ যুদ্ধে আবু সুফিয়ানের বোন হিন্দ-এর দাস কৃষ্ণাঙ্গ তীরন্দাজের তীরের আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন এবং হিন্দ তার কলিজা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন।
আব্দুল্লাহর সাথে আমিনার সংসার খুব বেশি দিনের ছিলো না। এখানে লক্ষ্যণীয় যে, আব্দুল্লাহ-আমেনার বিয়ের ৬ মাসের মধ্যেই মোহাম্মদের পিতা (!) মারা যান। মোহাম্মদ জন্মের পর আব্দুল্লাহকে পাননি। এদিকে আবার হালার সন্তান হামজা মোহাম্মদের থেকে ৪ বছরের বড়। লক্ষ্য করা যায়, একই সময়ে দু'টি বিয়ে এবং একজন প্রাকৃতিক নিয়ম মেনেই হামজাকে জন্ম দিলেন। অন্য জনের বেলায়ও সেটাই হবার কথা ছিলো। হামজা মোহাম্মদের ৪ বছরের বড় আর আব্দুল্লাহ বিয়ের ৬ মাসের মধ্যেই মারা যান। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করা যায়, তবে মোহাম্মদের পিতা কে? এই জন্ম প্রসঙ্গ ইছলামী তথ্যমতেই প্রশ্ন করা যায় - তিনি কি আব্দুল্লাহর পুত্র? এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।
ধর্মীয় তথ্য-উপাত্ত দেখিয়েই এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, জানতে চেয়েছেন তিনি আসলেই আব্দুল্লাহর পুত্র কি না। যদি তিনি সত্যিই আব্দুল্লাহর পুত্র হন, তবে এসব প্রশ্নের দাবি করা অযৌক্তিক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো ধর্মীয় পণ্ডিত দেখাতে পারেননি কোনো শক্ত যুক্তি; আর সেটা সম্ভবও নয়। কেননা এটাই ইছলামী দলিল-প্রমাণ, যা নির্দেশ করে, মোহাম্মদের পিতা আব্দুল্লাহ নন। ইছলামী মতে, পিতৃপরিচয়হীন কেউ মসজিদের ইমামতিও করতে পারবে না বলে মত দেয়া আছে। এখন কথা হচ্ছে, এমন একজনকে নবী মানতে মুছলিমদের কেন বাধে না?
(চলবে)
ধর্মপচারক-এর পক্ষ থেকে:
'নাস্তিকদের বাপের/জন্মের ঠিক নাই' - এমন কথা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় আস্তিকীয় খিস্তিখেউড়ে। এদের মতে, ধর্মসম্মত উপায়ে রেজিস্ট্রিকৃত বিবাহবন্ধনে দম্পতিদের জন্ম দেয়া সন্তানগুলো ছাড়া বাকি সমস্ত সন্তান জারজ।

নিজের জন্মের ওপরে কারুর হাত থাকে না। আর তাই ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনও সন্তান অবৈধ তথা জারজ ঘোষিত হলেও তাকে ঘৃণা, অবজ্ঞা বা হেয় করার ভেতরে আছে ছোটোলোকি, অমানবিকতা ও বর্বরতা।
ইছলামী তথ্যসূত্রই প্রমাণ করে: ইছলামের নবীর জন্ম, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, নিশ্চিতভাবেই অবৈধ। কিন্তু আমরা, অন্তত এ বিষয় নিয়ে, ব্যঙ্গ বা বিদ্রূপ করবো না। তার কঠোর সমালোচনা করবো তার কর্মকাণ্ডের জন্য, কিন্তু গালিকামিল মমিনদের পথ ধরে আমরা অঙ্গুলি নির্দেশ করে বলবো না, "দ্যাখ, তোদের নবীর বাপের/জন্মের ঠিক নাই।"