পর্ব-১ (সাফা ও মারওয়া পাহাড় তাওয়াফ)
লিখেছেন: কাঠমোল্লা —
কিন্তু এই হজ্জ কি ইসলামের অংশ ? তা কিভাবে? এটা তো পৌত্তলিকদের একটা প্রথা। তাহলে এটা আবার ইসলামের অংশ হয় কিভাবে ? পৌত্তলিকতা জাহেলি যুগের ভ্রান্ত প্রথা হিসাবে বাতিল করার জন্যেই তো ইসলামের আগমন। পৌত্তলিকতা যদি বাতিল করার জন্যেই ইসলামের আগমন ঘটে , তাহলে পৌত্তলিকতার কোন কোন প্রথা আবার ইসলামের আবশ্যকীয় অংশ হয় কেমনে ?
ইসলামেরও আগে মক্কার বাইরের পৌত্তলিকরা বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় মক্কার কাবা ঘরের সামনে জড় হতো। সেখানে তারা তাদের দেবতাদের উদ্দেশ্যে নানারকম অনুষ্ঠান করত। সেটাই ছিল হজ্জ। সেই অনুষ্ঠানের অন্যতম একটা ঘটনা ছিল সাফা ও মারওয়া পাহাড়দুটোর মধ্যে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করা। এই দৌড়াদৌড়ি করার প্রথা আসলে কি উদ্দেশ্যে করা হতো সেটা বলা আছে হাদিসে , যেমন -
সহিহ বুখারী :: খন্ড ৬ :: অধ্যায় ৬০ :: হাদিস ২২:
আবদুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ (র).................উরওয়া (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (সা)-এর সহধর্মিনী আয়িশা (রা)-কে জিজ্ঞাসা করলাম আর সে সময় আমি অল্প বয়স্ক ছিলাম।
মহান আল্লাহর বাণী ...............এ আয়াত সম্পর্কে আপনার অভীমত কি? ‘‘সাফা এবং মারওয়া পর্বদ্বয় আল্লাহ তা‘আলার নিদর্শসমূহের অমত্মর্ভুক্ত। কাজেই যে বায়তুল্লাহর হজ্জ বা উমরা ইচ্ছা করে তার জন্য উভয় পর্বতের মধ্যে তাওয়াফ করায় কোন দোষ নেই।’’ (২:১৫৮) আমি মনে করি উক্ত দুই পর্বত তাওয়াফ না করণের জন্যে কোন ব্যক্তির উপর গুনাহ বর্তাবে না। তখন আয়িশা (রা) বললেন, কখনই এরূপ নয়। তুমি যা বলছ যদি তাই হতো তা হলে বলা হতো এভাবে...........................‘‘উভয় পর্বত তাওয়াফ না করলে কোন গুনাহ বর্তাবে না। বস্ত্তত এই আয়াত নাযিল হয়েছে আনসারদের শানে। তারা ‘‘মানাত’-এর পূজা করত। আর ‘মানাত’ ছিল কুদায়েদের পথে অবস্থিত। ইসলাম গ্রহনের পর আনসারগণ সাফা ও মারওয়ার মধ্যে তাওয়াফ করা মন্দ জানতো। ইসলামের আগমনের পর তারা এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা)-কে জিজ্ঞাসা করল। তখন আল্লাহ উক্ত আয়াত নাযিল করেন।
সহিহ বুখারী :: খন্ড ৬ :: অধ্যায় ৬০ :: হাদিস ২৩:
মুহাম্মদ ইব্ন ইউসুফ (র)..............আসিম ইব্ন সুলাইমান (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস ইব্ন মালিক (রা)-কে সাফা ও মারওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা ঐ দু’টিকে জাহেলী যুগের প্রথা বলে বিবেচনা করতাম। এরপর যখন ইসলাম আসলো, তখন আমরা উভয়ের মধ্যে সায়ী করা থেকে বিরত থাকি। তখন উক্ত আয়াত নাযিল হয়।
দেখা যাচ্ছে মদিনাবাসীরা হজ্জের সময় সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে যে তাওয়াফ করত সেটা করত তাদের দেবতা "মানাত" এর উদ্দেশ্যে। তার মানে এই হজ্জ ছিল সম্পূর্নই একটা পৌত্তলিক ধর্মের অংশ। হাদিসে বলছে মদিনাবাসীরা ইসলাম গ্রহন করার পর উক্ত তাওয়াফকে মন্দ বা খারাপ বলে জানত। কারন কি ? কারন একটাই কারন তারা ইসলাম গ্রহনের পর বিবেচনা করেছিল যে তাদের পূর্ববর্তী পৌত্তলিক ধর্মের সকল প্রথাই ইসলামে হারাম বা মন্দ। কিন্তু কি আজব কারবার , মুহাম্মদের আল্লাহ সেই প্রথাকে খারাপ বা হারাম বিবেচনা না করে বলছে -
সুরা বাকারা-২: ১৫৮: নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’আলার নিদর্শন গুলোর অন্যতম। সুতরাং যারা কা’বা ঘরে হজ্ব বা ওমরাহ পালন করে, তাদের পক্ষে এ দুটিতে প্রদক্ষিণ করাতে কোন দোষ নেই। বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকীর কাজ করে, তবে আল্লাহ তা’আলার অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তার সে আমলের সঠিক মুল্য দেবেন।
অর্থাৎ আল্লাহ পৌত্তলিক ধর্মের অনুষ্ঠানকে ইসলামের অংশ বলে রায় দিচ্ছে। কিন্তু চতুর মুহাম্মদ বিষয়টা ধরতে পেরে একটা কিচ্ছা হাজির করেন। সেই বিখ্যাত ইব্রাহীম কর্তৃক হাজেরা ও শিশু পূত্র ইসমাইলকে মক্কায় নির্বাসন দেয়া ও হাজেরা কর্তৃক সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করা। অত:পর প্রচার করা হতে থাকল, সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যকার এই দৌড়াদৌড়ি আসলে হাজেরার সেই দৌড়াদৌড়িকে স্মরন করার জন্যে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো - ইব্রাহীমের হাজেরাকে তার শিশুপুত্রসহ নির্বাসনের সেই কাহিনী তো পৌত্তলিকদের জানার কথা না। ইব্রাহীমের সেই কাহিনী লেখা আছে ইহুদি ও খৃষ্টানদের বাইবেলে।তাই পৌত্তলিকদের পক্ষে সেই ঘটনাকে স্মরন করে সাফা ও মারওয়ার মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করারও কথা না। সুতরাং তারা যে দৌড়াদৌড়ি করত , সেটা সম্পূর্নই তাদের নিজস্ব ধর্মীয় রীতির কারনে। ইব্রাহিমের কাহিনী স্মরন করে না। আর সেটাই কিন্তু হাদিসে পরিস্কার বলা হয়েছে।
বাইবেলে হাজেরাকে মক্কায় নির্বাসন দেয়া হয়েছে বলে বলা হয়নি। বলা হয়েছে সিনাই পর্বতের আশপাশের কোথাও। আর সেটাই বাস্তব ও যুক্তিসঙ্গত হওয়ার কথা। ইব্রাহীম তার ধর্ম প্রচার করত বর্তমানের ইসরাইল ও সিনাই অঞ্চলে। সেই সময় যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই কঠিন ছিল, ইব্রাহিম কত দুরেই বা হাজেরাকে নির্বাসন দেবে ? বড়জোর ১০০ বা ২০০ কিলোমিটার দুরে। আর সেই দুরত্ব অতিক্রম করতেই তো জীবন যাওয়ার মত অবস্থা হয়ে যায়। অথচ মুহাম্মদ এসে দাবী করছেন হাজেরাকে তার শিশুপূত্র সহ ইসরাইল থেকে ১৩৫০ কিলোমিটার দুরে মক্কায় নির্বাসন দিয়েছিল, সেই সময় যখন উট ও পায়ে হেটে ইসরাইল থেকে সেখানে পৌছতে লাগত মাসের ওপর।
সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যকার এই দৌড়াদৌড়ি যে সত্যি সত্যি সম্পূর্ন পৌত্তলিক প্রথাই ছিল , তা বলা আছে আরও বহু হাদিসে যেমন -
সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ২৬ :: হাদিস ৭১০
আহমদ ইবন মুহাম্মদ (র)... ‘আসিম (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস ইবন মালিক (রা)-কে বললাম, আপনার কি সাফা ও মারওয়া সা’য়ী করতে অপছন্দ করতেন? তিনি বললেন, হাঁ। কেননা তা ছিল জাহেলী যুগের নিদর্শন। অবশেষে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেনঃ নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন। কাজেই হজ্জ বা ‘উমরাকারীদের জন্য এ দুইয়ের মধ্যে সা’য়ী করায় কোন দোষ নেই। (২ : ১৫৮)
অর্থাৎ মুহাম্মদ ইব্রাহীমের কিচ্ছা আবিস্কার করলেও তার সাহাবিরা কিন্তু ঠিকই বুঝতে পেরেছিল, সাফা ও মারওয়া পাহাড়েরর এই দৌড়াদৌড়ির ঘটনার সাথে এইসব কাহিনীর কোনই সম্পর্ক নেই। সেটাই তারা অকপটে তাদের বলা হাদিসে বলে গেছে। কিন্তু আজকের মুমিনেরা সেইসব সাহাবিদের চাইতে ইসলাম বেশী জানে। তাছাড়া মুহাম্মদ বলে গেছেন , তার আদেশ নিষেধ অন্ধভাবে প্রশ্ন ছাড়াই অনুসরন করতে হবে , না হলে খাটি মুমিন হওয়া যাবে না, খাটি মুমিন না হলে বেহেস্তে গিয়ে ৭২ টা কুমারি নারীর সাথে অনন্তকাল যৌন ফুর্তি করা যাবে না।
সুতরাং অন্ধ ও বধির মানসিক প্রতিবন্ধী মুমিনরা ৭২ টা কুমারী নারীর সাথে যৌন সংগমের সুযোগ ফস্কে যাওয়ার ভয়ে , এটা নিয়ে কোন প্রশ্নই করে না , না করে অন্ধভাবে মুহাম্মদের এই আদেশ পালন করে যাচ্ছে। বলুন সুবহান আল্লাহ !
- See more at:
http://www.istishon.com/?q=node/21849#sthash.El0d9KRm.dpuf
মন্তব্যসমূহ
মন্তব্য করেছেন: পার্থিব—
আপনি
হজ্জকে
পৌত্তলিক প্রথা প্রমান করতে চেয়েছেন। আপনার প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু একটু
ভুল হচ্ছে।
সেটি
আপনি ধরতে পারছেন না। ইব্রাহীম
আ এর পর
থেকেই হজ্জের প্রথা চালু আছে। কালের পরিক্রমায় হজ্জের প্রচলিত রীতির মধ্যে
পৌত্তলিক প্রথা ঢুকে পড়ে। এমনকি কাবা ঘরেও মুর্তি ঢুকিয়ে পূজা শুরু হয়।মুহাম্মদ সা এর মাধ্যমে আল্লাহ কাবা ঘরকে পৌত্তলিকদের হাত থেকে রক্ষা করেন।
এখন কাবা সহী নিয়মে হজ্জ হয়। কিন্তু পৌত্তলিক সমর্থক এখনও এটা মানতে পারে না। তাই হজ্জের প্রথাকে পৌত্তলিক প্রথা প্রমান করতে চায়। তাতে অবশ্য লাভের লাভ কিছুই হয় না। প্রতি হজ্জে লোকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
মন্তব্য করেছেন: কাঠমোল্লা—
ধন্যবাদ
আপনার প্রানপন চেষ্টার জন্য। কিন্তু সেই গোড়াতেই গলদ।ইব্রাহিম যদি সেই হজ্জের বিধান করে যায়< আর ইব্রাহিম যদি কাবা ঘর নির্মান করে যায়, তাহলে সেই হজ্জ পালন করার কথা সর্বপ্রথম ইহুদি ও খৃষ্টানদের। আর কাবা ঘর হবে তাদেরই কাছে সবচাইতে পবিত্র ঘর। কারন ইব্রাহিম এই ইহুদি ও খৃষ্টানদেরও আদি পিতা। তাই নয় কি ? ইব্রাহীম থেকে পরবর্তী বংশধর , কার নাম কি , তারা কোথায় বাস করত ইত্যাদি যাবতীয় কাহিনী লেখা আছে তৌরাত কিতাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইব্রাহিম কোনকালে মক্কায় আসছিল আর হাজেরা ও ইসমাইলকে সেখানে রেখে গেছিল তেমন কোন কথা তৌরাত কিতাবে নাই। সুতরাং মুহাম্মদ কথিত ও আবিস্কৃত উক্ত কিচ্ছার কোনই ভিত্তি নেই। ধরে নিলাম মুহাম্মদের কিচ্ছাও সত্য , তাহলেও , সহী বুখারী, বই-৫৫, হাদিস নং-৫৮৪ হাদিসে যেখানে এই ইব্রাহিম হাজেরা ও ইসমাইলকে মক্কায় নির্বাসন দিয়ে গেছে বলে কথিত আছে , দেখা যাচ্ছে , সেখানে শিশু পুত্রের সাথে ইব্রাহীমের তখন সর্বপ্রথম দেখা হয় যখন ইসমাইল যৌবন প্রাপ্ত হয়ে বিয়ে শাদি করে ঘর সংসার করছে। তাই মুহাম্মদ কথিত বা কোরান কথিত ইব্রাহিম কর্তক কিশোর ইসমাইলকে কোরবানী দেয়ার ঘটনা পুরাই ভুয়া প্রমানিত হচ্ছে।
অর্থাৎ প্রতি পদে পদেই অসামঞ্জস্য। এই অসামঞ্জস্য এড়ানোর জন্যে ১০ম শতকের দিকে সর্বপ্রথম প্রচার করা শুরু হয় যে তৌরাত কিতাব বিকৃত করা হয়েছে। কারন তৌরাত কিতাব সঠিক আছে ধরলে মুহাম্মদ , কোরান ও ইসলাম কারোরই কোন ভিত্তি থাকে না। এখন যদি ধরে নেই যে তৌরাত কিতাব বিকৃত করা হয়েছে , তার মানে , ইব্রাহিম কর্তৃক হাজেরা ও ইসমাইলকে যে মক্কায় নির্বাসন দেয়া হয়েছিল, সেই অংশটুকু বিকৃত করা হয়েছে। এছাড়া ইব্রাহিম যে কাবা ঘর নির্মান করেছিল সেই তথ্যটাও বিকৃত করা হয়েছে। তাই তো ?
কিন্তু দু:খের বিষয় আজকে যে তৌরাত আমরা দেখি , তা সংকলিত হয় মুহাম্মদের জন্মেরও প্রায় ৮/৯ শ বছর আগে। এমন কি আজকে যে ইঞ্জিল কিতাব দেখি সেটাও আজকের আকারে সংকলিত হয়েছে রোম সম্রাট কনস্টানটাইনের সময় সেই ৩৫০ খৃষ্টাব্দের দিকে। তার মানে দেখা যাচ্ছে , তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব আজকের আকারে সংকলিত হয়েছে মুহাম্মদের জন্মেরও কমপক্ষে ২২০ বছর আগে। তাহলে কি আপনি দাবী করছেন , ইহুদিরা মুহাম্মদ জন্মানোর ২২০ বছর আগেই টের পেয়েছিল আরবের মরুভুমিতে মুহাম্মদ নামের এক নবী আসবে আর তার হাত থেকে বাঁচার জন্যে তাদের কিতাবকে পরিবর্তন করতে হবে ?
আপনি কি এমন অসম্ভব, উদ্ভট ও অবাস্তব দাবী করছেন ?
বাস্তবে ইহুদি বা খৃষ্টানরা কখনই হজ্জকে তাদের ধর্মের অনুষ্ঠান মনে করে নি , কাবা ঘরকে তাদের পবিত্র ঘর হিসাবে মানে নি - ইব্রাহীম যদি সত্যিই এসব ঘটনার সাথে জড়িত থাকত , তাহলে কুরাইশরা না , বরং তারাই এসবকে বেশী মানত ও শ্রদ্ধা করত। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন। পৌত্তলিক কুরাইশরাই এসব করত আর তারা সেটা করত তাদের দেবতা আল্লাহ ও তার তিন কন্যা লাত , উজ্জা ও মানাতের নামে। কোরান সেটা বলে, হাদিস সেটা বলে আর সিরাতও সেটাই বলে। আপনি এখন আপনার সহিহ দলিলকে উপেক্ষা করে , নিজের মতামতকে ইসলাম বলে চালিয়ে দিলে তো হবে না।
মন্তব্য করেছেন: পার্থিব—
তাছাড়া
২-১৫৮
আয়াতে আল্লাহ স্বয়ং বলছেন সাফা মারওয়া আল্লাহর পক্ষ থেকে হজ্জের নিদর্শন । আর আপনি
বলছেন পৌত্তলিক প্রথা!! কোরানের দাবীর বিপরীতে আপনার দাবী যে ফুটা
পয়সার মূল্য রাখে না সেটা কি বুঝেন?
মন্তব্য করেছেন: কাঠমোল্লা—
তার মানে আল্লাহ তথা মুহাম্মদই পৌত্তলিক প্রথাকে ইসলামের অংশ বানিয়েছে। ইসলাম যদি আব্রাহামিক
ধর্মের ধারা হয়ে থাকে ,তাহলে পৌত্তলিক প্রথার কোন কিছুই ইসলামে থাকার কথা না। সুতরাং
প্রমানিত হলো কোরান আব্রাহামিক ধারার ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি। সেটা এসেছে মুহাম্মদের
কাছ থেকে যে নাকি পৌত্তলিকদের আল্লাহকে তার আরাধ্য হিসাবে গ্রহন করেছিল অথবা
মুহাম্মদ নিজের কথাকেই আল্লাহর কথা বলে চালিয়েছে।পর্ব-২ (কাল পাথর পুজা চালু)
লিখেছেন: কাঠমোল্লা
মুহাম্মদ সেই পৌত্তলিক প্রথাকেই তার ইসলামে চালু করে বস্তুত: ইসলামকে ১০০% পাথরপুজার প্রথা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন কিন্তু মুমিনেরা সেটা বুঝতে পারে না।
মুহাম্মদ দাবী করছেন তিনি হলেন ইব্রাহিম , ইসহাক , মুসা , ইসা ইত্যাদির ধারায় সর্বশেষ নবী। ইব্রাহীম ইহুদি ও খৃষ্টানদেরও আদি পিতা। কাবা ঘর যদি ইব্রাহিম কর্তৃক নির্মিত হতো ,তাহলে সেটা ইহুদি ও খৃষ্টানদেরও পবিত্র গৃহ আর হজ্জও তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসাবে গৃহীত হতো। কিন্তু মক্কা মদিনা ও তার আশপাশের ইহুদি খৃষ্টানরা হজ্জ পালন করত না বা কাবা ঘরকে তাদের পবিত্র গৃহ হিসাবে গন্য করত না। তাদের পবিত্র ঘর হল জেরুজালেমে অবস্থিত সলোমনের টেম্পল। মুহাম্মদ যেহেতু আব্রাহিম ধর্মের ধারার শেষ নবী হিসাবে নিজেকে দাবী করতেন ,তাই তার ইসলাম প্রচারের প্রথম ১৫ বছরের মত তিনি নিজেও সলোমনের টেম্পলকে নিজের কিবলা হিসাবে বিবেচনা করতেন, কাবাকে নয়। কাবা যদি আদম কর্তৃক প্রথম আল্লাহর ঘর হতো , আর ইব্রাহীম যদি সেটা পূন:নির্মান করে থাকত , তাহলে ইসলাম প্রচারের প্রথম দিনেই মুহাম্মদের আল্লাহ তাকে জানিয়ে দিত যে কাবা ঘরই হলো দুনিয়ার প্রথম আল্লাহর ঘর , আর মুসলমানদের কিবলা হলো সেটাই। কিন্তু আল্লাহর ১৫ বছর সময় লেগে গেল সেটা জানাতে। কারনটাও বোধগম্য।
মুহাম্মদ মক্কায় প্রথম ১২/১৩বছর ইসলাম প্রচার করেছেন আর তখন জেরুজালেমের সলোমনের মন্দির ছিল তার কিবলা। মক্কায় বার বার ইহুদি খৃষ্টানদেরকে ইসলাম গ্রহনের আহবান করলেও তারা সেটা গ্রহন করে নি ,কারন তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব অনুযায়ী, মুহাম্মদ কোনভাবেই নবী হতে পারেন না। মুহাম্মদ মদিনায় হিজরত করে , যখন একটা লুটেরা দল গঠন করে, মদিনার পাশ দিয়ে যাওয়া বানিজ্য কাফেলায় নিয়মিত আক্রমন ও লুটপাট করে কুরাইশদের বেশ দুর্বল করে ফেললেন , আর যখন তিনি নিশ্চিত হলেন যে ইহুদি ও খৃষ্টানরা কোনভাবেই তাকে নবী হিসাবে মানবে না , তখন হঠাৎ করেই তিনি জেরুজালেমের সলোমনের মন্দিরকে কিবলা বাদ দিয়ে কাবা ঘরকে কিবলা বানিয়ে ফেললেন। মুহাম্মদের সাগরেদরা সেটাই চাইত সব সময়, মুহাম্মদেরও সায় ছিল তাতে , আর তখনই মুহাম্মদের চাহিদা মোতাবেক আল্লাহ আয়াত নাজিল করে পাঠায় ---
সুরা বাকারা -২:১৪৪: নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে।
উক্ত আয়াত খুব পরিস্কার ভাবেই বলছে , মুহাম্মদ বার বার আকাশের দিকে তাকান , কারনটা কি ? কারনটা হলো তিনি কাবা ঘরকে কিবলা বানাতে চান। আর সাথে সাথেই আয়াত হাজির। কি অদ্ভুত ব্যপার ? কাবা ঘর যদি দুনিয়ায় প্রথম আল্লাহর ঘর হয়, আর সেটাই যদি ইসলামের মূল কিবলা হয়, তাহলে সেটা তো আল্লাহর আগেই জানা থাকার কথা। সুতরাং মুহাম্মদের ইসলাম প্রচারের প্রথম দিনেই সেটা মুহাম্মদকে আল্লাহ জানিয়ে দেবে , কারন ইসলামের সাথে সাথে আল্লাহকে ডাকাডাকি করারও তো একটা ব্যাপার আছে আর সেটাই তো শুরু। কিন্তু মুহাম্মদ ১২/১৩ মক্কায় কাটিয়েছেন , তারপর মদিনায় গেলেন , সেখানেও প্রায় দেড় বছর অতিক্রমন হয়ে গেল, আর তখন মুহাম্মদ বার বার আকাশের দিকে তাকাচ্ছেন মক্কাকে কিবলা বানানোর আয়াত পাঠানোর জন্যে, ঠিক তখন আল্লাহ তাড়াহুড়া করে আয়াত পাঠাল। আগে এই কিবলা যে জেরুজালেমের সলোমনের মন্দির ছিল সেটাও বলা আছে কোরানে -
সুরা বাকারা - ২: ১৪২:এখন নির্বোধেরা বলবে, কিসে মুসলমানদের ফিরিয়ে দিল তাদের ঐ কেবলা থেকে, যার উপর তারা ছিল? আপনি বলুনঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে চালান।
অর্থাৎ সলোমনের মন্দির থেকে কাবার দিকে কিবলা ফেরান হয়েছে। মদিনায় যাওয়ার কতদিন পর এটা পাল্টান হলো ? সেটা দেখা যাক হাদিস থেকে -
সহিহ মুসলিম :: খন্ড ৪ :: হাদিস ১০৭২
মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না ও আবু বকর ইবন খালাদ (র)……… বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা)-এর সাথে ষোল অথবা সতের মাস বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে সালাত আদায় করেছি। অতঃপর আমাদেরকে কাবার দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
অর্থাৎ দেড় বছর পর। তার মানে মুহাম্মদ ও তার দলবল মক্কা ও মদিনা মিলিয়ে প্রায় ১৪/১৫বছর জেরুজালেমের দিকে মুখ করেই আল্লাহর আরাধনা করেছেন। কিন্তু এবার যেটা ঘটল সেটা হলো বিস্ময়কর। এটা সবাই জানে যে , মদিনায় যাওয়ার পর অষ্টম/নবম বছরে মুহাম্মদ মক্কা দখল করে অত:পর কাবা ঘর থেকে ৩৬০টা দেব দেবীর মূর্তিকে বের করে দেন। শুধুমাত্র কাল পাথরটাকে রেখে দেন। কিন্তু মাঝের এই সাড়ে ছয় বা সাত বছর পর্যন্ত মুহাম্মদ ও তার দলবল মূর্তি ভর্তি কাবা ঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ আদায় করেছেন। এমন কি এই সময় মদিনা থেকে মুহাম্মদ মাঝে মাঝে হজ্জ করতে যেতেন মক্কায় তার লোকজন সহ , তখনও তারা সেই মূর্তি ভর্তি কাবা ঘরের সামনে গিয়ে নামাজ পড়েছেন ও সিজদা দিয়েছেন। কারন তখন তো কাবা ঘর কুরাইশদের দখলে ছিল। অর্থাৎ এই ছয় সাত বছর কাল মুহাম্মদ ও তার দলবল নামাজ বা সিজদা করার সময় বাস্তবে সেই দেব দেবী ও কাল পাথরের সামনেই মাথা নত করেছেন। মুহাম্মদ কিভাবে দেব দেবী ও কাল পাথরের সামনে মাথা নত করতে পারলেন ?
কিন্তু মুমিনেরা এসব জানে না। জানার দরকার বোধ করে না। কেউ যদি জানাতে যায় , তো সাথে সাথে চাপাতির কোপে তার মাথাটা ধড় থেকে আলাদা করে দেয়।
মক্কা দখলের পর মুহাম্মদ ৩৬০টা মূর্তি কাবা ঘর থেকে বের করে দেন কিন্তু কাল পাথরটা রেখে দেন। কি কারনে ? কারন তিনি পৌত্তলিকদের মতই বিশ্বাস করতেন , সেই কাল পাথর মানুষের পাপ মোচন করে। তাই তিনি যখনই কাবা ঘরে যেতেন তখন সযতনে নিজের পাপ মুক্ত হওয়ার জন্যে সেই কাল পাথরকে চুম্বন করতেন। সেটা দেখা যাক হাদিস থেকে -
সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ২৬ :: হাদিস ৬৭৩
আসবাগ (র)... ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে মক্কায় উপনীত হয়ে তাওয়াফের শুরুতে হাজরে আসওয়াদ ইস্তিলাম (চম্বুন ,স্পর্শ) করতে এবং সাত চক্করের মধ্যে প্রথম তিন চক্করে রমল করতে দেখেছি।
সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ২৬ :: হাদিস ৬৮০
মুসাদ্দাদ (র)... যুবাইর ইবন ‘আরাবী (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি হজরে আসওয়াদ সম্পর্কে ইবন ‘উমর (রা)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে তা স্পর্শ ও চুম্বন করতে দেখেছি। সে ব্যক্তি বলল, যদি ভীড়ে আটকে যাই বা অপারগ হই তাহলে (চুম্বন করা, না করা সম্পর্কে) আপনার অভিমত কি? তিনি বললেন, আপনার অভিমত কি? এ কথাটি ইয়ামনে রেখে দাও। আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে তা স্পর্শ ও চুম্বন করতে দেখেছি। মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ ফেরেবরী (র) বলেন, আমি আবূ জা’ফর (র)-এর কিতাবে পেয়েছি তিনি বললেন, আবূ ‘আবদুল্লাহ যুবাইর ইবন ‘আদী (র) তিনি হলেন কূফী আর যুবাইর ইবন ‘আরাবী (র) তিনি হলেন বসরী।
কি কারনে তিনি সেই কাল পাথরকে চুম্বন করতেন ? সেটা দেখা যাবে নিচের হাদিসে -
তিরমিজি , হাদিস -৮৭৭: ইবনে আব্বাস বর্নিত, নবী বলেছেন , হজরে আসওয়াদ(কাল পাথর) যখন বেহেস্ত থেকে পতিত হয় তখন তা দুধের চাইতেও সাদা ছিল। মানুষের পাপ মোচনের ফলে সে কাল হয়ে গেছে।
তিরমিজি, হাদিস -৯৫৯: ওমর বর্নিত , আমি নবীকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন , হজরে আসওয়াদ( কাল পাথর )ও রুক ইয়ামানী উভয়কে স্পর্শ করলে মানুষের পাপ মোচন হয়।
মানুষের পাপ মোচন করার ক্ষমতা একমাত্র কার ? আল্লাহরই একমাত্র সেই ক্ষমতা বিদ্যমান। কিন্তু মুহাম্মদ বলছেন কাল পাথরেরও সেই ক্ষমতা বিদ্যমান। তার মানে বস্তুত: কাল পাথরটা হয় স্বয়ং আল্লাহ না হয়, আল্লাহর সমতূল্য কিছু। ঠিক সেই কারনে , মুহাম্মদ কাল পাথরকে চিরকালের জন্যে কাবা ঘরে রেখে দেন যাতে তার উম্মতরা সেটা চুম্বন বা স্পর্শ করে পাপমুক্ত হতে পারে। কিন্তু উম্মতরা মুখে বলে তারা আল্লাহ পুজারি , কিন্তু বাস্তবে তাদের আচরন দেখাচ্ছে তারা পাথর পুজারি , মুহাম্মদ খুব কায়দা করে সেটাই শিখিয়ে গেছেন। বর্তমানে কিছু শিক্ষিত ও চতুর মুমিন দাবী করে , তারা পাথর পুজা করে না , আর পাথরের কোন গুনও নেই , সেটা তারা দাবি করে নিচের হাদিস দিয়ে -
সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ২৬ :: হাদিস ৬৬৭
মুহাম্মদ ইবনে কাসীর (র)... ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত যে, তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে এসে তা চুম্বন করে বললেন, আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র, তুমি কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না।
সহিহ বুখারী :: খন্ড ২ :: অধ্যায় ২৬ :: হাদিস ৬৭৫:
সা’ঈদ ইবন আবূ মারয়াম (র)... ‘আবদুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত যে, ‘উমর ইবন খাত্তাব (রা) হাজরে আসওয়াদকে লক্ষ্য করে বললেন, ওহে! আল্লাহর কসম, আমি নিশ্চিতরুপে জানি তুমি একটি পাথর, তুমি কারও কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। এরপর তিনি চুম্বন করলেন। পরে বললেন, আমাদের রমল করার উদ্দেশ্য কি ছিল? আমরা তো রমল করে মুশরিকদেরকে আমাদের শক্তি প্রদর্শন করেছিলাম। আল্লাহ এখন তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। এরপর বললেন, যেহেতু এই (রমল) কাজটি রাসূলুল্লাহ (সঃ) করেছেন, তাই তা পরিত্যাগ করা পছন্দ করি না।
ওমর বলছে , কাল পাথরের নাকি ভাল বা মন্দ করার কোন ক্ষমতা নেই। প্রশ্ন হলো - ইসলামের নবী কে? মুহাম্মদ, নাকি ওমর? কার কথা বা বিধান ইসলামের বিধান ?মুহাম্মদের কথা বা বিধান, নাকি ওমরের ? আর কে ইসলাম সবচাইতে বেশী জানে ? মুহাম্মদ, নাকি ওমর ? কার কথা ইসলামের চুড়ান্ত কথা ? মুহাম্মদের, নাকি ওমরের ? সুতরাং ওমর বললেই সেটা ইসলামের বিধান হবে না যেখানে একই বিষয়ে মুহাম্মদের বিধান আছে। ঠিক সেই কারনেই , ওমর না চাইলেও শেষে মুহাম্মদের বিধান অর্থাৎ কাল পাথরকে চুম্বন করতে বাধ্য হয়েছে ওমর। সুতরাং এখানে ওমরের বিধান তো মুহাম্মদের বিধান খন্ডাতে পারে না।
মুহাম্মদ খুব সুচতুরভাবে কাল পাথরটাকেই আল্লাহর প্রতিরূপ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে সেটা কাবা ঘরে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। সারা দুনিয়ার মুসল্লিরা সেই কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে , সিজদা দেয়। প্রশ্ন হলো : কাবা ঘরের মধ্যে কি আল্লাহ থাকে ? উত্তর সোজা ,সেটা হলো - আল্লাহ থাকে সাত আসমানের ওপর তার আরশে।
সুরা সেজদাহ- ৩২: ৪: আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?
অর্থাৎ আল্লাহ সাত আসমানের ওপর তার আরশে বসে আছে। কাবা ঘরের মধ্যে আল্লাহ না থাকলে , কাবা ঘরের কাছে সিজদা দেওয়ার অর্থ কি হবে ?
কাবা ঘরে আছে হজরে আসওয়াদ বা সেই কাল পাথর , যার আছে পাপ মোচনের ক্ষমতা, অর্থাৎ প্রকারান্তরে যাকে মুহাম্মদ আল্লাহর প্রতিরূপ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন , কাবা ঘরে সিজদা দেয়ার অর্থ হলো সেই কাল পাথরের কাছেই সিজদা দেয়া। যে নাকি পাপ মোচনের ক্ষমতা রাখে ,মানুষ তার কাছেই তো সিজদা দেবে। কাল পাথরের আছে সেই ক্ষমতা , তাই নামাজের নামে মুসল্লিরা সেই কাল পাথরের কাছেই সিজদা দেয়, কিন্তু সেটা তারা আসলে জানে না। কাবা ঘরের কাছে বা দুর থেকে যারা নামাজ পড়ে কাবা ঘরের দিকে মুখ করে , তারা মনে করে তারা আল্লাহর কাছেই সিজদা দিচ্ছে , কিন্তু বাস্তবে তারা সিজদা দিচ্ছে কাবার কাল পাথরের কাছেই। এটাই হলো মুহাম্মদের সাফল্য। তিনি বস্তুত: পাথর পুজা চালু করে গেছেন ইসলামের নামে , কিন্তু দুনিয়ার একটা মুমিনও সেটা উপলব্ধি করতে পারছে না।
বাস্তবে মুমিনদের কাল পাথরের প্রতি কি সীমাহীন আকর্ষন , সেটা বোঝা যায়, হজ্জের সময় সেই পাথরকে চুম্বন করার প্রান পন চেষ্টা থেকে। উপরে উপরে যতই বলুক না কেন ,তারা পাথর পুজা করে না , বা পাথরের কোনই গুন নেই , কিন্তু কাবার সামনে গেলে তারা সবাই উন্মাদ হয়ে যায় পাথরকে স্পর্শ বা চুম্বন করার জন্যে।পাথর স্পর্শ করার সময়কার উন্মাদনায় এ পর্যন্ত কত হাজার মানুষ যে পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছে , তার কোন ইয়ত্বা নেই ,কিন্তু তারপরেও তাদের পাথর স্পর্শ করা চাই , কিন্তু জিজ্ঞেস করলে মুখে বলবে - কাল পাথরের কি কোন গুন আছে নাকি ? তারা কি কাল পাথর পুজা করে নাকি ?
এটাই মুহাম্মদের বিস্ময়কর সাফল্য যে , তিনি ইসলামের নামে বস্তুত: পাথর পুজার প্রতিষ্ঠা করে গেছেন , কিন্তু দুনিয়ার একটা মুমিনও সেটা গত ১৪০০ বছর ধরে টের পায় নি।