২০১০ সালের নভেম্বরে ইসলাম ধর্ম বিষয়ক অনুবাদ সংকলন গ্রন্থ ‘ইসলাম
বিতর্ক’ প্রকাশ করে ব-দ্বীপ প্রকাশনী। ষাটের দশকের ছাত্রনেতা এবং সমাজ
বিশ্লেষক ও গবেষক শামসুজ্জোহা মানিক বইটির সম্পাদক। ২০১৫ সালে বাংলা
একাডেমি কর্তৃক মুক্তচিন্তার বই প্রকাশনী ‘রোদেলা প্রকাশনী’ বন্ধ,
আল-কায়েদার বাংলাদেশ শাখা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম দ্বারা মেলা প্রাঙ্গণে
মুক্তমনা লেখক ও মুক্তমনা সম্পাদক অভিজিৎ রায়কে হত্যা, বিজ্ঞান লেখক বন্যা
আহমেদের উপর আক্রমণের মাধ্যমে বাংলাদেশীদের ‘প্রাণের মেলা, বইমেলা’র
অস্তিত্ব শেষ হয়। এ বছর থেকে নিজের দ্রোহের রূপ হারিয়ে মৌলবাদ তোষণ কারী
মেলার সূচনা হয়, যেই মেলাটিকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক
শামসুজ্জামান খান দেখতে চেয়েছেন ‘উস্কানিহীন মেলা’ হিসেবে। প্রাথমিক
প্রস্তুতি হিসেবে মেলায় লেখক অভিজিৎ রায় এবং জাগৃতির প্রকাশক ফয়সাল
আরেফীন দীপনকে স্মরণ তো দূরের কথা- তাদের জন্য কিছু করা হচ্ছে না এমন
গর্বিত ঘোষণা দিয়ে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে মৌলবাদ তোষণ কারী বইমেলার সূচনা
হয়।
মেলার অর্ধেক না পেরোতেই, মৌলবাদী অপশক্তিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব-দ্বীপ প্রকাশনীর ‘ইসলাম বিতর্ক’ বইটিতে ইসলামের নবীকে ব্যাঙ্গ করার অভিযোগ তোলে। বইয়ে সত্যিকার অর্থেই কি লেখা আছে সেটা না জেনেই অভিযোগের পর ‘ব-দ্বীপ’ প্রকাশনী বন্ধ, আগুন, প্রকাশককে হত্যা করার হুমকিতে মৌলবাদী শক্তি একত্রিত হয়ে ওঠে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেমন করে এই ভয়ংকর কাজটি সাধন করা হবে সেটির জন্য বিভিন্ন ইভেন্ট, গ্রুপ খোলা শুরু হতে থাকে। আক্রমণের জন্য প্রকাশ করা হয় শামসুজ্জোহা মানিকের বাসার ঠিকানা, অফিস ঠিকানা, ফোন নম্বর। বইটি নিয়ে মৌলবাদীদের হুমকির সাথে সাথেই আমরা শামসুজ্জোহা মানিকের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করি। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এলায়েন্সের মাধ্যমে শামসুজ্জোহা মানিককে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মুক্তমনার পক্ষ থেকে আমরা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য অনুরোধ করি। প্রায় এক বছর আগে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হলেও, এখনও হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ক্লু-লেস বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকে শামসুজ্জোহা মানিক আদৌ নিরাপত্তা পাবেন কিনা এই সংশয় প্রকাশ করেন অনেক মুক্তমনা সদস্য।
জঙ্গিদের ব্যাপারে ক্লু লেস থাকলেও অভিযোগের একদিন পরেই শাহবাগ থানা পুলিশ কোনো ধরণের তদন্ত, ক্লু এর সন্ধান ছাড়াই বইমেলায় ব-দ্বীপের স্টল বন্ধ করে দেয়। রাত নয়টায় নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রকাশক মানিককে, যিনি ছিলেন আইয়ুব বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা এবং বাঙ্গালীর স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতির অন্যতম প্রধান সংগঠক। এখন পর্যন্ত কেনো বাংলা একাডেমির মেলা প্রাঙ্গণে পুলিশ এসে কেনো ‘ব-দ্বীপ’ প্রকাশনীর স্টল বন্ধ করেছে সেটা সম্পর্কে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করে নি বাংলা একাডেমি। এখনও পর্যন্ত মৌনতার মাধ্যমে তারা সম্মতি জানানোর অবস্থায় আছেন, আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে তারা মৌনতা ভেঙ্গে পুলিশী একশনের সম্মতি জানাবেন। আপডেট: পাঠকের বিবেচনার জন্য শামসুজ্জামান খানের বিবিসিতে দেওয়া সাক্ষাৎকার পোস্টের সাথে সংযুক্ত হলো।
মুক্তমনার পক্ষ থেকে আমরা সরকারের কাছ অনুরোধ করছি, বিষবৃক্ষে আর পানি ঢালবেন না। যারা লেখক-প্রকাশকদের লেখালেখির জন্য মৃত্যু হুমকি দেয় এবং সত্যি হত্যা করে, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনুন, লেখক-প্রকাশকদের নয়। আজ বইমেলার সত্যিকার পরিচয় দখল করে ফেলেছে মৌলবাদী শক্তি, আপনারা দেখেও না দেখার ভান করলে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পরিচয় ছিনতাই হতে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।
‘ইসলাম বিতর্ক’ বইটি খুব দ্রুত মুক্তমনা পাঠকদের হাতে ই-বুক আকারে তুলে দেবার জন্য কাজ চলছে। আমরা নিশ্চিত অনেক পাঠকই এই বইটি পড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। এক নজরে বইটি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
সম্পাদকের ভূমিকা
ইন্টারনেট ও ওয়েবসাইটের কল্যাণে বর্তমান পৃথিবীর ভাবজগতে যে বিপ্লব চলছে তার ঢেউ আছড়ে পড়ছে ইসলাম ধর্মের উপরেও। যে ধর্ম এতকাল চরমতম অসহিষ্ণুতা ও হিংস্রতা দিয়ে তার বিরুদ্ধে সকল সমালোচনার মুখ বন্ধ রাখতে অভ্যস্ত ছিলো তা এখন এই নূতন প্রযুক্তির প্রচার মাধ্যমের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছে। বোমাবাজি, হামলা, সন্ত্রাস, হত্যা কোনটা দিয়ে ইন্টারনেটকে ঠেকানো সম্ভব নয়। সুতরাং সারা পৃথিবীতে যারা এতকাল ইসলামের বিষয়ে বিচার ও বিশ্লেষণমূলক চিন্তা করলেও প্রচারের সুযোগের অভাবে নিশ্চুপ থেকেছেন তারা এখন সরব হতে শুরু করেছেন। তাদের কলম বা কম্পিউটার থেকে এখন অঝোর ধারায় ঝরে পড়ছে ইসলামের উপর আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা। বিদেশের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ ধরণের কয়েকটি ইংরেজি নিবন্ধের অনুবাদ নিয়ে প্রকাশ করা হল ইসলাম বিতর্ক নামক সংকলন গ্রন্থটি। উল্লেখ করা যায় যে, এখানে মুদ্রিত সবগুলি অনূদিত লেখাই ওয়েব সাইট ‘বঙ্গরাষ্ট্রে’ (www.bangarashtra.org) প্রকাশিত হয়েছে।
শামসুজ্জোহা মানিক
ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০১০
সূচীপত্র
অবিলম্বে শামসুজ্জোহা মানিককে মুক্ত করে তাঁর এবং পরিবারের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দাবী জানাচ্ছে মুক্তমনা। আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
মেলার অর্ধেক না পেরোতেই, মৌলবাদী অপশক্তিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব-দ্বীপ প্রকাশনীর ‘ইসলাম বিতর্ক’ বইটিতে ইসলামের নবীকে ব্যাঙ্গ করার অভিযোগ তোলে। বইয়ে সত্যিকার অর্থেই কি লেখা আছে সেটা না জেনেই অভিযোগের পর ‘ব-দ্বীপ’ প্রকাশনী বন্ধ, আগুন, প্রকাশককে হত্যা করার হুমকিতে মৌলবাদী শক্তি একত্রিত হয়ে ওঠে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেমন করে এই ভয়ংকর কাজটি সাধন করা হবে সেটির জন্য বিভিন্ন ইভেন্ট, গ্রুপ খোলা শুরু হতে থাকে। আক্রমণের জন্য প্রকাশ করা হয় শামসুজ্জোহা মানিকের বাসার ঠিকানা, অফিস ঠিকানা, ফোন নম্বর। বইটি নিয়ে মৌলবাদীদের হুমকির সাথে সাথেই আমরা শামসুজ্জোহা মানিকের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করি। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এলায়েন্সের মাধ্যমে শামসুজ্জোহা মানিককে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মুক্তমনার পক্ষ থেকে আমরা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য অনুরোধ করি। প্রায় এক বছর আগে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হলেও, এখনও হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ক্লু-লেস বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকে শামসুজ্জোহা মানিক আদৌ নিরাপত্তা পাবেন কিনা এই সংশয় প্রকাশ করেন অনেক মুক্তমনা সদস্য।
জঙ্গিদের ব্যাপারে ক্লু লেস থাকলেও অভিযোগের একদিন পরেই শাহবাগ থানা পুলিশ কোনো ধরণের তদন্ত, ক্লু এর সন্ধান ছাড়াই বইমেলায় ব-দ্বীপের স্টল বন্ধ করে দেয়। রাত নয়টায় নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রকাশক মানিককে, যিনি ছিলেন আইয়ুব বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা এবং বাঙ্গালীর স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতির অন্যতম প্রধান সংগঠক। এখন পর্যন্ত কেনো বাংলা একাডেমির মেলা প্রাঙ্গণে পুলিশ এসে কেনো ‘ব-দ্বীপ’ প্রকাশনীর স্টল বন্ধ করেছে সেটা সম্পর্কে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করে নি বাংলা একাডেমি। এখনও পর্যন্ত মৌনতার মাধ্যমে তারা সম্মতি জানানোর অবস্থায় আছেন, আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে তারা মৌনতা ভেঙ্গে পুলিশী একশনের সম্মতি জানাবেন। আপডেট: পাঠকের বিবেচনার জন্য শামসুজ্জামান খানের বিবিসিতে দেওয়া সাক্ষাৎকার পোস্টের সাথে সংযুক্ত হলো।
মুক্তমনার পক্ষ থেকে আমরা সরকারের কাছ অনুরোধ করছি, বিষবৃক্ষে আর পানি ঢালবেন না। যারা লেখক-প্রকাশকদের লেখালেখির জন্য মৃত্যু হুমকি দেয় এবং সত্যি হত্যা করে, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনুন, লেখক-প্রকাশকদের নয়। আজ বইমেলার সত্যিকার পরিচয় দখল করে ফেলেছে মৌলবাদী শক্তি, আপনারা দেখেও না দেখার ভান করলে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পরিচয় ছিনতাই হতে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না।
‘ইসলাম বিতর্ক’ বইটি খুব দ্রুত মুক্তমনা পাঠকদের হাতে ই-বুক আকারে তুলে দেবার জন্য কাজ চলছে। আমরা নিশ্চিত অনেক পাঠকই এই বইটি পড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। এক নজরে বইটি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
সম্পাদকের ভূমিকা
ইন্টারনেট ও ওয়েবসাইটের কল্যাণে বর্তমান পৃথিবীর ভাবজগতে যে বিপ্লব চলছে তার ঢেউ আছড়ে পড়ছে ইসলাম ধর্মের উপরেও। যে ধর্ম এতকাল চরমতম অসহিষ্ণুতা ও হিংস্রতা দিয়ে তার বিরুদ্ধে সকল সমালোচনার মুখ বন্ধ রাখতে অভ্যস্ত ছিলো তা এখন এই নূতন প্রযুক্তির প্রচার মাধ্যমের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছে। বোমাবাজি, হামলা, সন্ত্রাস, হত্যা কোনটা দিয়ে ইন্টারনেটকে ঠেকানো সম্ভব নয়। সুতরাং সারা পৃথিবীতে যারা এতকাল ইসলামের বিষয়ে বিচার ও বিশ্লেষণমূলক চিন্তা করলেও প্রচারের সুযোগের অভাবে নিশ্চুপ থেকেছেন তারা এখন সরব হতে শুরু করেছেন। তাদের কলম বা কম্পিউটার থেকে এখন অঝোর ধারায় ঝরে পড়ছে ইসলামের উপর আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা। বিদেশের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ ধরণের কয়েকটি ইংরেজি নিবন্ধের অনুবাদ নিয়ে প্রকাশ করা হল ইসলাম বিতর্ক নামক সংকলন গ্রন্থটি। উল্লেখ করা যায় যে, এখানে মুদ্রিত সবগুলি অনূদিত লেখাই ওয়েব সাইট ‘বঙ্গরাষ্ট্রে’ (www.bangarashtra.org) প্রকাশিত হয়েছে।
শামসুজ্জোহা মানিক
ঢাকা, ১৫ নভেম্বর, ২০১০
সূচীপত্র
অবিলম্বে শামসুজ্জোহা মানিককে মুক্ত করে তাঁর এবং পরিবারের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দাবী জানাচ্ছে মুক্তমনা। আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।