Saturday, August 6, 2016

মহানবী মুহাম্মদের হারেম পরিচিতি


(লেখাটি লিখেছিলেন মুমিন সালিহ, নবযুগ ব্লগে। ব্লগের লিঙ্ক কাজ করছে না। লেখাটির গুরুত্ব বুঝে রেফারেন্স হিসেবে এখানে কপি করে রাখা হলো)
মুসলিমরা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদের অনেক বিবাহ ও অন্যান্য সাধারণ মুসলিমদের চেয়ে তাঁর অধিক স্ত্রী গ্রহণের আল্লাহ-প্রদত্ত অধিকারের কথা জানে। তাদের বিশ্বাস যে, নবীর সবগুলো বিয়েই ছিল কল্যানমূলক কারণে – যেমন কোন গোত্রের সাথে ভাল সম্পর্ক স্থাপন অথবা উক্ত মহিলাকে সাহায্যের উদ্দেশ্যে। মুসলিমরা এটাও বিশ্বাস করে যে, মহানবীর বেশীরভাগ স্ত্রীই অক্ষত কুমারী ছিল না, এবং বয়স্ক ও যৌনগতভাবে আকর্ষণহীন ছিল।
কিন্তু এসব দাবীর কোনটিই সত্য নয়। এগুলো নিতান্তই বানানো ছুতা, যা কোরান, সিরা (নবীর জীবনী) বা ইসলামি ইতিহাস দ্বারা সমর্থিত নয়। এ রচনাটি লিখার আগ পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করতাম যে, নবীর অন্তত একজন স্ত্রী তাঁর জন্য অতিশয় বয়স্ক ছিলেন। কিন্তু আমার শংকাঃ মুসলিমদের এ দাবী পুরোপুরি এক বানোয়াট মহা মিথ্যে। নবীর কোন স্ত্রীই তাঁর জন্য অতিশয় বয়স্ক ছিল না, বরং তাদের অধিকাংশই নিজ-নিজ গোত্রে ‘সর্বাধিক সুন্দরী’ হিসেবে পরিচিত ছিল।
এ রচনাটিকে অধিক লম্বা না করতে আমি আয়শাকে ঘিরে নবীর ‘শিশু কামিতা’ ও ‘বাল্য বিবাহ’প্রসংগে আলোচনায় যাব না। একই কারণে আমি নবীর পুত্রবধূ জয়নবকে বিয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনায় যাব না, যা আমার আরেক রচনায় (নবযুগ ব্লগের লিঙ্ক, কাজ করছে না) আলোচিত হয়েছে।
নবীর বিবাহের কথা তুললে প্রায়শই মুসলিমরা তাঁর স্ত্রীদের কুমারীত্বহীন হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে। অথচ কুমারীত্বের প্রতি নবীর বিশেষ খায়েশ ছিল, যা কোরান ও হাদিসে বার বার এনেছেন তিনি। অথচ মুসলিমদের একটি বিশেষত্ব যে, নবীর স্ত্রীদের কুমারী না-হওয়ার বিষয় নিয়ে তারা একদিকে গর্ব করে, অথচ তারাই আবার বিয়ের জন্য কুমারীত্বের উপর সবচেয়ে বেশী জোর দেয় বা অপরিহার্য মনে করে। বাস্তবে ঠিক যেমনটি ভাবতেন নবী নিজে।
পবিত্র কোরানে বিশেষ জোর আরোপ করা ইসলামের এক অপরিহার্য বার্তা হচ্ছে, মুহাম্মদ হলেন চিরন্তন মানবীয় আদর্শ, এবং সকল মুসলিদের উচিত তাঁকে অনুকরণ করা। অথচ এক নির্মম সত্য হচ্ছে, নবীর বিয়েগুলোর অধিকাংশই শরীয়তের পরিপন্থী। আর আদর্শ হওয়ার কি মানে আছে যদি মুসলিমদেরক্যা নবীকে অনুকরণের  সুযোগই না দেওয়া হলো? কেননা নবীর বিবাহ ও স্ত্রীদের সহিত তাঁর সম্পর্ক প্রধানত শরীয়তের বাইরে পড়ে, যা কিনা কেবলই নবীর জন্য আল্লাহ-প্রদত্ত বিশেষ সুবিধা। কাজেই নবীর বিবাহ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন মুসলমানদের কোন কাজেই আসবে না, যদি সে-সবই কোরান, হাদিস ও সিরার বিশেষ অংশ দখল করে আছে।
কতজন স্ত্রী?
এ প্রশ্নের নিশ্চিত কোন উত্তর নেই, যা নবীর ইতিহাস সম্পর্কে যথেষ্ট ইঙ্গিত দেয়। ঘটনাটিকে সহজ করতে এ রচনাটি রচিত হবে কেবলই সুবিখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত ইবন কাথীরের ‘আল কামেল’ গ্রন্থে উদ্ধৃত তথ্যের ভিত্তিতে, যাকে মুসলিমরা ‘উম্মাহাত আল কুতুব’ (গ্রন্থের মাতা) হিসেবে গণ্য করে। ইবন কাথীরের তথ্য মতে, মৃত্যুর সময় মুহাম্মদের ৯ জন স্ত্রী ছিল, যদিও সমগ্র জীবনে স্ত্রীর সংখ্যা ছিল আরও অনেক বেশী।
১) খাদিজাঃ নবীর প্রথম স্ত্রী ছিল খাদিজা নামক এক অত্যন্ত ধনী মহিলা, যিনি তাঁকে ব্যবসা দেখভালের জন্য নিয়োগ করেছিলেন। বিয়ের সময় নবীর বয়স ছিল মাত্র ২৫, কিন্তু খাদিজার বয়স ৪০। নবী খাদিজার মাধ্যমে ৮ সন্তানের পিতা হন, যাদের মধ্য থেকে সব ছেলে-সন্তান মারা যায়, কেবল মেয়েরা বেঁচে থাকে।
খাদিজা জীবিত থাকাকালে নবী দ্বিতীয় বিবাহ করেন নি। এ তথ্যের ভিত্তিতে মুসলিমরা প্রচার করে বেড়ায় যে, নবীর বিবাহগুলোর পীছনে কোন যৌন-লালসা ছিল না, বরং সেগুলো ছিল কেবলই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে। তাদের নিয়ন্ত্রিত মন এটা ধরতে ব্যর্থ যে, খাদিজা ছিলেন নবীর বাড়িঘর ও ধন-সম্পদের আসল মালিক, নবী ছিলেন তার নিয়োগকৃত কর্মচারী মাত্র।ফলে, স্বভাবতই খাদিজা জীবিত থাকাকালীন দ্বিতীয় বিবাহের কথা চিন্তাও করতে পারতেন না নবী।
ওদিকে খাদিজার মাধ্যমে নবীর ৮ সন্তানের পিতা হওয়ার ব্যাপারে শিয়া মুসলিমরা বলে যে, কেবল ফাতিমা ব্যতীত বাকী সব ছেলেমেয়েরা ছিল খাদিজার আগের বিয়েগুলো থেকে। প্রকৃতপক্ষে, এটা গ্রহণ করা কঠিন যে, নবী ৪০ বছর বয়সী খাদিজার মাধ্যমে ৮ জন সন্তানের জন্ম দিবেন, অথচ পরবর্তী এতগুলো অত্যন্ত সুন্দরী ও যুবতী স্ত্রীদের মাধ্যমে একজন সন্তানেরও জন্ম দিতে পারেন নি।
ইসলামি সূত্র মতে, নবীর অন্যান্য স্ত্রীদের কেউই সন্তানের জন্ম দান, এমনকি কারোরই কখনো গর্ভশ্রাব বা গর্ভবতী হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। এমনকি ইসলামি ঐতিহাসিক তথ্যে খাদিজারও “গর্ভবতী” হওয়ার কোন হদিস পাওয়া যায় না। মুসলিমরা নবীর জীবনী গুলোর এ কৌতুহল উদ্দীপক বিষয়টির দিকে একদমই নজর দেয় না। আর যদি অন্য কেউ বিষয়টি উত্থাপণ করে, তারা কেবলই বলবে, “আল্লাহ চান নি যে নবী পুত্র সন্তানের জন্ম দিক।” আর শুরু হতে-না-হতেই সেখানেই বিতর্কের সমাপ্তি।
অবশ্য ইব্রাহিম নামে নবীর এক পুত্র-সন্তান হয়েছিল মারিয়ার গর্ভে। তবে মারিয়া নবীর স্ত্রী ছিলেন না। তিনি ছিলেন মিশরীয় শাসক কর্তৃক উপহার হিসেবে প্রদানকৃত নবীর যৌনদাসী। মারিয়া ছিল শ্বেত বর্ণের, অত্যন্ত সুন্দরী এবং মুহাম্মদ স্পষ্টত তার প্রতি কামাসক্ত ছিলেন। মদিনায় পৌঁছানোর পরপরই মারিয়ার ঋতুবর্তী হওয়ার আভাস পাওয়া যায়। সন্তান জন্মদানে বহুদিন ব্যর্থ নবী মুহাম্মদ নিজেরই সন্তান ভেবে উল্লসিত হলেও শীঘ্রই তার উল্লাসে ঠাণ্ডা পানি ঢেলে দেওয়া হয়, যখন মারিয়া ও মিশর থেকে আসা-কালীন তার রক্ষীর মাঝে দৈহিক সম্পর্কের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবের পর নবী আলীকে নির্দেশ দেন সে রক্ষীকে হত্যা করার জন্য। কিন্তু রক্ষী যখন গাছে উঠছিল, তখন আলী লক্ষ্য করেন যে, সে খোজা ছিল। ফলে সে রক্ষীকে হত্যা থেকে বিরত থাকে।
গাছে চড়া-কালীন কারও গুপ্তাংগের দিকে তাকিয়ে একজন ডাক্তারের পক্ষেও বলা কঠিন, সে খোজা কি না। তদুপরি, খোজাকরণ কোন সহজ পদ্ধতি নয়, যে তা নিশ্চিত সফল হবে। মিশর থেকে মদিনায় আসার পথে রক্ষীটি মারিয়ার সাথে একাকী ছিল কয়েক সপ্তাহ ধরে। কাজেই এটা প্রত্যাশিত যে, পথে সে মারিয়ার সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হবে এবং একাধিক বার। তবুও রক্ষীটিকে হত্যার নির্দেশ অবশ্যই নিজের সন্তান জন্মদান ক্ষমতা ও তাঁর বহুল মহিমান্বিত অসাধারণ যৌন ক্ষমতার প্রতি নবীর আত্ম-বিশ্বাসের ঘাটতির পরিচয় দেয়। নবীর আত্ম-বিশ্বাসের ঘাটতির আরও পরিচয় পাওয়া যায়, যখন তিনি বাচ্চাটিকে আয়শার কাছে আনেন নবীর সাথে দেখতে মিল আছে কিনা, তা যাচাইয়ের জন্য। এবং নবীকে নিদারুন হতাশ করে আয়শা বলেন, বাচ্চাটি দেখতে আদৌ নবীর মত ছিল না।
ইব্রাহিম যে নবীরই সন্তান ছিল, ইসলামী সূত্রই তা অত্যন্ত সন্দিহান ক’রে তোলে। এবং খাদিজার সন্তানদেরকে ঘিরেও যে সন্দেহ বিরাজমান, তা থেকে মনে হয় নবীর নিজস্ব কোন সন্তানই ছিল না। এবং তা নবীর সন্তান জন্মদান ও অসামান্য যৌন ক্ষমতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে। নবীর লিঙ্গোত্থাণ ও সেই সাথে সন্তান জন্মদানে অনুর্বরতার সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করা যায় না। সে কারণেই হয়ত নবী তার স্ত্রীদের বিয়ে নিষিদ্ধ করে কোরানে একটি আয়াত সন্নিবেশিত করেছেন, কেননা তিনি সম্ভবত তাঁর এ লজ্জাস্কর অক্ষমতার ব্যাপারটি চাপা দিতে চেয়েছিলেন। আজও আরব সংস্কৃতিতে কোন পুরুষের যৌন-অক্ষম বা অনুর্বর হওয়া তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত হানিকর। নবীর দাবী যে, তাঁর ৪০ জন পুরুষের সমান যৌন-ক্ষমতা ছিল[i], তা কেবল অবিশ্বাস্য ও হাস্যকরই নয়, তা বরং বিশেষ কিছু ঢাকার জন্যেও ছিল হয়ত।
২) সাওদাঃ আধুনিক ইসলামি গ্রন্থে সাওদাকে একজন “বৃদ্ধ” মহিলা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যার ভিত্তিতে মুসলিমরা বলে বেড়ায় যে, নবীর অধিকাংশ স্ত্রীই ছিল বাড়তি বয়সের। এ রচনাটি লেখার আগ পর্যন্ত আমারও ধারণা ছিল যে, সাওদা হয়ত ৬০ বছর বয়সের ছিল, কিন্তু যখন জানতে পেলাম বিয়ের সময় সাওদার বয়স ছিল ৩০-এর মত, তখন আমি খুবই আশ্চর্য হই। নবী ৬৩ বছর বয়সে মারা যাওয়ার সময় সাওদার বয়স ছিল মাত্র ৪৬ বছর। এ সত্যতা মুসলিমদের চিরাচরিত কপটতা ও প্রতারণার আরেক প্রমাণ।
সাওদার পর মুহাম্মদ বিয়ে করেন তাঁর সর্বাধিক প্রিয় স্ত্রী ৯-বছর-বয়সী আয়শাকে, যখন তিনি মদিনায় এক শক্তিশালী নেতা হয়ে উঠেছেন। সাওদা কচি মেয়ে আয়শার তুলনায় অনেক বেশী বয়সী হওয়ার কারণে নবী তাকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। একথা শুনে মর্মাহত সাওদা অশ্রু-ভরা নয়নে নবীর কাছে এসে তাকে তালাক না-দেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করে। নবী সাওদাকে রাখতে রাজী হন, তার সাথে নবীকে আর কোনদিন শুতে হবে না সে শর্তে। ৫২-বছর-বয়সী নবীর অসুস্থ মনে ৩৫-বছর-বয়সী সাওদা তাঁর জন্য ছিল অতিশয় বৃদ্ধ, কিন্তু ৯ বছরের কচি মেয়ে আয়শা ছিল মানান-সই। যাহোক, এটা সুস্পষ্ট যে, প্রাপ্ত-বয়স্ক স্ত্রীর চেয়ে ৯-বছর-বয়সী আয়শার সাথে যৌন-সম্ভোগ মুহাম্মদের কাছে বেশী উপভোগ্য ছিল। এবং সাওদার সাথে নবীর না-শোবার শর্তটি বৈধ করতে একটি আয়াত নাজিল করলেন আল্লাহ (কোরান ৪.১২৮): “এবং কোন নারী যদি স্বামীর কাছ থেকে অবজ্ঞা বা ফাঁকির ভয় করে, তাহলে তারা তাদের মাঝে কোন বোঝাপড়া স্থির করলে তাতে পাপের কিছুই থাকবে না
৩) আয়শাঃ আয়শা ছিল মুহাম্মদের চাচাতো ভাই আবু বকরের কন্যা এবং ৬ বছর বয়সে ৫০-বছর-বয়সী নবীর সাথে তার বাগদান হয়। তাঁদের বিয়ে হয় মদিনায়, যখন আয়শার বয়স ছিল ৯ বছর। নবীর মৃত্যুকালে আয়শা ছিল ১৮ বছরের কিশোরী। নবীর স্ত্রীদের মাঝে বিবাহকালে আয়শা ছিল একমাত্র কুমারী, যা নিয়ে সে খুব গর্ব করতো।
নিজের কাছে তার কুমারীত্বের বিশেষ গুরুত্ব ছিল এবং সে কারণে নবীর স্ত্রীদের মাঝে আয়শা নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবতেন। স্পষ্টতই মুহাম্মদ কুমারীত্বকে পছন্দ করতেন বলেই আয়শা সে ভিত্তিতে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবতে পারতো। নবী নিজেই বলেছেন, “আমি তোমাদের জন্য অক্ষত-যোনী কুমারীর সুপারিশ করছি” (আল মগনি, লেখক আল মাকদিসি, ৪৬৮/৭)।আল্লাহ ও মুহাম্মদের কাছে অক্ষত-যোনী কুমারীরা শ্রেয় হওয়ায় কোরান ও হাদিসে মরিয়মের কুমারীত্বকে মহিমান্বিত করা হয়েছে, বেহেস্তে হুরীদেরকে চিরন্তন কুমারী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, বিরামহীন যৌনকর্ম সত্ত্বেও যারা কুমারীত্ব হারাবে না। এবং নবীর মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় সাহাবাগণ উত্তরাধিকারী নির্বাচনে নবীর স্ত্রীদের মধ্য থেকে আয়শাকে সমর্থন দিয়েছিলেন সে একমাত্র কুমারী স্ত্রী হওয়ার যুক্তিতে। কাজেই আয়শাও বেশকিছু হাদিস বর্ণনা করেছেন তার কুমারীত্বকে মহিমান্বিত ক’রে। এক হাদিসে আয়শা বলেন, অন্য স্ত্রীদের সাথে থাকাকালে জিব্রাইল ফেরেস্তা নবীর কাছে আসতেন না, কেননা তারা নবীর সাথে বিয়ের আগে অন্য পুরুষের সাথে সহবাসের কারণে তারা পুত-পবিত্র ছিল না।
মুসলিমরা গর্ব করে যে, ইসলাম সমতার ধর্ম; কোরানে আল্লাহ মুসলিমদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন সব স্ত্রীকে সমান চোখে দেখার; কোন স্ত্রীর প্রতি স্বামী অধিক ভালবাসা অনুভব করলে তা প্রকাশ না করে হৃদয়ে লালন করতে বলা হয়েছে ইত্যাদি। কিন্তু আয়শার প্রতি মুহাম্মদের বেশী অনুরাগ ও ভালবাসা প্রদর্শন মুসলিম সমাজে সর্বজনবিদিত এবং তা নিয়ে মুসলিমরা অহংকারও করে। কিন্তু আল্লাহর উপরোক্ত নির্দেশের সাথে নবীর আয়শা-প্রীতি কিভাবে খাপ খায়? মুসলিমরাও কিভাবে আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে স্ত্রীদেরকে সমানভাবে ভালবাসবে এবং একই সাথে নবীর দৃষ্টান্তও মানবে?
নবীর স্ত্রীদের মাঝে আয়শা সর্বাধিক সংখ্যক হাদিস বর্ণনা করেছেন, যা নিয়েও মুসলিমরা গর্ব করে। নবীর সাথে তার যৌনতা সম্পর্কিত সব হাদিসেরই উৎস আয়শা নিজে। আয়শাকে সর্বাধিক ভালবাসলেও তার ১৮ বছর বয়সে নবীর মৃত্যু আয়শার প্রতি এক বড় অবিচার হয়ে দাঁড়ায়। কেননা নবীর সাথে আয়শার যৌন-সহবাস হয় তার বাচ্চা বয়সকালে, যখন তার এরূপ কর্ম থেকে দূরে থাকার কথা ছিল। আর প্রাপ্ত-যৌবনে, যখন তার যৌন জীবন উপভোগ করার কথা, সে বসয়ে পা দিতেই নবীর মারা গেলেন তাকে বিধবা করে এবং সেই সাথে আর বিয়ে না-করার স্বর্গীয় আদেশ জারী করে।
পরিপূর্ণ যৌবন-সহ বাকী জীবন আয়শাকে কেবল যৌন-উপভোগ বঞ্চিত জীবনই যাপন করতে হয় নি, পাশাপাশি তাকে শৈশব ও কৈশরে এক মৃত্যুমুখী বৃদ্ধের হাতে যৌনগত অপব্যবহারের স্মৃতি নিয়েও বাঁচতে হয়। আয়শা বর্ণিত অনেক হাদিসই নবীর কুৎসিত যৌনাচার প্রতিফলিত করে, যা সভ্য মানুষের পক্ষে পড়াও কঠিন। ভরা-যৌবনে যৌন-সহবাস থেকে বঞ্চিত হওয়ায় দানা-বাধা হতাশার কারণেই কি আয়শা নবীর সাথে ঘটা তার সামান্য যৌনাচারের অভিজ্ঞতা এতটা নির্লজ্জ ও কুৎসিতভাবে চিত্রিত করেন?
৪) হাফসাঃহাফসা ছিল নবীর প্রিয় সাহাবা ওমরের মেয়ে। সে নবীর মৃত্যুর পর আরও ৫০ বছর বেঁচে ছিল। কাজেই নবীর মৃত্যুকালে হাফসা নিঃসন্দেহে অল্প বয়সের ভরা-যৌবনা যুবতী ছিল।
একদিন নবী হাফসার ঘরে যান (নবীর প্রত্যেক স্ত্রীর আলাদা ঘর ও দাসী ছিল)। নবীর স্ত্রীদেরকে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হত তাঁর সাথে রাত কাটানোর সুযোগের জন্য। নিঃসন্দেহে হাফসা অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন দিনটির জন্য। কিন্তু নবী এসে হাফসাকে বলেন যে, তার বাবা ওমর কি কারণে যেন হাফসাকে ডেকে পাঠিয়েছেন। হাফসা বাবার বাড়ি উদ্দেশ্যে বেরুলে, নবী হাফসার মিশরীয় সুন্দরী দাসী মারিয়ার সাথে হাফসারই বিছানায় যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েন। হাফসা বাবার বাড়িতে গিয়ে জানতে পান, তাকে আসলে ডেকে পাঠানো হয় নি। কাজেই হাফসা নবীর সাথে শোয়ার জন্য জলদি ফিরে এসে নবী ও মারিয়াকে যৌনকর্মে লিপ্ত দেখে উন্মত্ত হয়ে উঠেন। সে চিৎকার করে উঠে, “আমার বিছানায়! আমার বিছানায়!!
হাফসাকে শান্ত করতে নবী আর মারিয়ার সাথে যৌন-সহবাসে লিপ্ত না-হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন। কিন্তু মারিয়া মত অতি-সুন্দরী মেয়ে সাথে যৌন-সহবাস থেকে বিরত থাকা ইসলামের মহানবীর পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠে। নবীর হৃদয়-জ্বালা ও বঞ্চনা নির্বাপিত করতে সদা-প্রস্তুত আল্লাহ এক আয়াত (৬৬:১) পাঠালেন মারিয়াকে তাঁর যৌন-জীবনের বাইরে রাখার জন্য মুহাম্মদকে ভড়ৎসনা করে। ফলে নবীর স্ত্রীরা মারিয়ার সাথে তাঁর যৌন-সহবাসে লিপ্ত হওয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সুযোগ হারাল।  সুনিয়ন্ত্রিত মুসলিমদের মনে, উক্ত আয়াতটিই প্রমাণ করে যে, কোরান আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে, নবীর নিজস্ব সৃষ্টি নয়। তাদের যুক্তি যে, তাহলে নবী নিজেই কেন নিজেকে ভড়ৎসনা করবেন? অথচ তাদের বদ্ধমূল মন এটা উপলব্ধি করতে পারে না যে, উক্ত আয়াতটি আসলে নবীকে ভড়ৎসনা নয়, বরং নবীর হৃদয়ের কামনা-বাসনা পূরণ করার উদ্দেশ্যে মাত্র।
৫) উম্মে সালমাঃ  উম্মে সালমা ছিলেন নবীর এক শিষ্যের বিধবা স্ত্রী। জানা যায়, সে এতই আকর্ষণীয় ছিল যে, শীর্ষস্থানীয় মুসলিম নেতা আবু বকর ও ওমরও নাকি তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু উম্মে সালমা তাদের প্রস্তাবে রাজী হন নি, “কেননা সে তার পূর্বতন স্বামীর মত এক যোগ্য স্বামী খুঁজছিল।” এ ঘটনা জানতে পেয়ে নবী নিজেই তাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন, কেননা নবী আগের স্বামীর সমান নয়, বরং অধিক যোগ্য ছিলেন। উম্মে সালমাও ভরা-যৌবনা যুবতী ছিলেন, কেননা নবীর মৃত্যুর পরও তিনি প্রায় ৫০ বছর জীবিত ছিলেন।
মনে হচ্ছে, মৃত স্বামীর প্রতি উম্মে সালমার গভীর ভালবাসার প্রতি নবী হিংসা-পরায়ন ছিলেন। বাস্তবত, উম্মে সালমা নবীকে বিয়ে করতে বাধ্য হন এবং নবী তাকে স্বীকার করান যে, তিনি তার আগের স্বামীর চেয়েও ভাল ছিলেন। এবং নবী এটাকে ইসলামের এক অপরিহার্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন, যে প্রত্যেক মুসলিমের নবীর প্রতি ভালবাসা হবে তাদের নিজস্ব সন্তান, বাবা-মা, এমনকি নিজ জীবন বা সমগ্র মানবজাতির প্রতি ভালবাসার চেয়েও বেশী। নইলে সে মুসলিমের ইসলামে বিশ্বাস অর্থহীন হয়ে যাবে। নবীর সম্মান রক্ষার্থে এ-সম্পর্কিত আয়াত (৯:২৪) ও হাদিসগুলো (বুখারী ১/২/১৪, ৮/৭৮/৬২৮.১) দিয়ে মসজিদের ইমামগণ মুসলিমদেরকে রাস্তায় নেমে সহিংসতা চালাতে উদ্বুদ্ধ করে।
ইতিহাসে কোন নেতাই তাঁর শিষ্যদের একচ্ছত্র ভালবাসা আদায় করতে সক্ষম হন নি একমাত্র মুহাম্মদ ছাড়া। ‘ইসলাম’ তথা বশ্যতা স্বীকারের ধর্মের বদৌলতে মুহাম্মদ তা অর্জনে সক্ষম হন, এবং ১৪০০ বছর ধরে তা অকাতরে বহাল রেখেছেন।
৬) জয়নব বিন্তে জাহশঃ জয়নব ছিলেন নবীর ৩০-বছরের পালকপুত্র জায়েদের স্ত্রী। নবী সদ্য-বিবাহিত জায়েদকে বাধ্য করেন সুন্দরী জয়নবকে তালাক দিতে এবং ইসলামে পালক-সন্তান গ্রহণের প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে জয়নবকে নিজ স্ত্রী বানান (দেখুনপুত্রবধূ জয়নবের সঙ্গে নবী মুহাম্মদের স্বর্গীয় বিবাহ ও পুত্র জায়েদের জীবন ধ্বংস)। (নবযুগ ব্লগের লিঙ্ক, কাজ করছে না)

৭) জুবেইরিয়া বিন্তে আল-হারিথঃ  জুবেইরিয়া ছিলেন ইহুদি বনী আল-মুস্তালিক গোত্রপতির স্ত্রী। নবী বনী মুস্তালিক গোত্রকে আক্রমণ করলে তার স্বামী নিহত হন এবং অন্যান্য নারীদের সাথে জুবেইরিয়া ক্রীতদাসী হিসেবে ধৃত হন। ভরা-যৌবনা পরম সুন্দরী জুবেইরিয়ার সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে নবী তাকে নিজের জন্য চয়ন করেন। তার কাহিনী নিচে বর্ণিত সাফিয়ার কাহিনীর অনুরূপ।
৮) সাফিয়া বিন্তে হুয়াইঃ ইসলাম ও নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে বাকী সবকিছুও যদি ভাল হয়, তথাপি নবীর সাফিয়াকে বিয়ে করার কাহিনীটি একাই যে-কোন সুস্থ-মস্তিষ্কের মুসলিমের ইসলাম ত্যাগের জন্য যথেষ্ট হবে, এবং সে এ সিদ্ধান্তে পৌছাবে যে, মুহাম্মদ ছিলেন একজন বিপজ্জনক ও বিকারচিত্ত দস্যুদল নেতা।
মুহাম্মদ বনী নাদের গোত্রের বসতি খাইবার সাত-সকালের অন্ধকারে অতর্কিতে আক্রমণ করে তুমুল যুদ্ধের পর ইহুদীদেরকে পরাজিত করেন। তাদের বেশীরভাগ পুরুষদেরকে হত্যা করা হয় এবং নারী-শিশুদেরকে ক্রীতদাস হিসেবে কব্জা করা হয়। নাদের গোত্রপতি কিনানাকে গ্রেফতার করে নবীর নির্দেশে বুকে আগুন জ্বালিয়ে অমানুষিক অত্যাচার করার পর হত্যা করা হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নবী তাঁর শিষ্য দিহায়াকে অনুমতি দেন সাফিয়াকে নিজ দাসী হিসেবে নেওয়ার জন্য। কিন্তু নবীর কিছু শিষ্য সাফিয়াকে দেখে তার অনিন্দ সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় এবং সে কিনানার স্ত্রী ছিল তা জানার পর দিহায়ার প্রতি হিংসা অনুভব করে। তারা মুহাম্মদের কাছে গিয়ে সাফিয়ার অপূর্ব সৌন্দর্যের কথা জানায় এবং বলে যে, সে কেবল নবীরই যোগ্য। শুনেই নবী নির্দেশ দিলেন সাফিয়াকে তাঁর সামনে হাজির করতে। এবং সাফিয়াকে দেখেই নবী তাকে নিজের কাপড় দ্বারা ঢেকে ফেলেন, যার মানে নবী সাফিয়াকে নিজের জন্য চয়ন করেছে। সেদিনই মুহাম্মদ সাফিয়াকে নামেমাত্র বিয়ে করে বিছানায় নেওয়ার চেষ্টা করেন।
নবীর শিষ্য বিল্লাল আরেকটি মেয়ের সাথে সাফিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে পড়ে থাকা মৃতদেহের মধ্য দিয়ে নবীর সামনে আনেন। অন্য মেয়েটি স্বজনদের মৃতদেহের সারি দেখে সইতে না-পেরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। মুহাম্মদ তাঁর লোকদেরকে আদেশ করল, “সে শয়তান মহিলাকে সরিয়ে নিয়ে যেতে”। এবং তারপর নবী পরম সুন্দরী সাফিয়াকে দেখতেই যেন সভ্য হয়ে উঠলেন এবং তাকে মৃতদেহগুলোর মধ্য দিয়ে আনার জন্য বিল্লালকে ভড়ৎসনার সুরে বললেন, “সে কি বিল্লাল! তোমার হৃদয়ে কি এতটুকু দয়ামায়া নাই।” অথচ কোন আক্ষেপ বা লাজ-লজ্জার বালাইহীন মুসলিম পণ্ডিতরা মৃতদেহের সারি দেখে কান্না-কাতর সে মহিলাটিকে “শয়তান মহিলা” বলে চিহ্নিত করেছে, অথচ এমন বর্বরতা ঘটনকারী মুহাম্মদের নামের পীছনে PHUH (Peace Be Upon Him বা তার উপর রহমত বর্ষিত হোক) যোগ করেছে।
পরিবার-পরিজন ও গোত্রীয় স্বজনদেরকে নিপাত-করা সাফিয়া বুঝতে পেরেছিল তার ভাগ্যে কী আছে? নবী যখন তাকে বিয়ে করতে চাইলেন, তা না-মেনে উপায় ছিল না, কেননা একমাত্র বিকল্প ছিল যৌনদাসীত্ব। এবং যুদ্ধ ক্ষেত্রে নামেমাত্র বিয়ে সেরে সে রাতেই নবী সাফিয়াকে শয্যাসংগী করতে চাইলেন। স্বামী, ভাইবোন ও গোত্রের সকল স্বজনকে হারিয়ে সাফিয়া নিঃসন্দেহে মানসিকভাবে চরম বিমর্ষ ছিলেন। ফলে নবী সাফিয়ার অনুরোধে তাকে শোক ও যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠতে কয়েক দিন সময় দিলেন।
এমন রক্তপাতের পর কোন মানুষ বা প্রাণীই বিয়ে বা যৌন-সহবাসের কামনা-বাসনা হারাতে বাধ্য। আর সে গণহত্যায় কোন মহিলার নিজ স্বামী, ভাইবোন, ও সকল আপনজনের মৃত্যু ঘটলে, তার সাথে তৎক্ষণাৎ বিয়ে বা যৌন-সংগমের তো কথাই উঠে না। কেবলই চরমভাবে বিকারগ্রস্থ অসুস্থ মনের মানুষই তা করতে পারে এবং তাঁর অন্ধ নির্বোধ অনুসারীরাই তা ন্যায্য ভাবতে পারে।
কেবল মুহাম্মদই সাফিয়ার প্রতি নিষ্ঠুরতা চালান নি, এমনকি আজকের মুসলিমরাও কম যায় না। উপরোক্ত ঘটনার সবকিছু জেনেও তারা তার মাঝে মুহাম্মদের মহানুভবতার নিদর্শন খুঁজে পায়, কেননা নবী সাফিয়াকে দাসী থেকে স্ত্রীর মর্যাদায় উন্নীত করেছিলেন। এ বিয়েকে নবীর ইহুদীদের সাথে ভাল সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখাতে চায় তারা।
দিনের বেলায় ইহুদী গোত্রটির উপর গণহত্যা চালিয়ে রাতের বেলায় মুহাম্মদ ও তাঁর শিষ্যরা ধৃত মেয়েদের সাথে যৌন-সংগমে লিপ্ত হচ্ছিল। ইহুদীদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের কি চমৎকার পন্থা। কেবল মুসলিমরাই এমন চমৎকার “যুক্তি” দেখাতে পারে!
৯) জয়নব বিন্তে খুজাইমা

১০) উম্মে হাবিবাঃ তিনি ছিলেন মুহাম্মদের এক শিষ্যের স্ত্রী এবং মুহাম্মদের অন্যতম শত্রু আবু সুফিয়ানের কন্যা। উম্মে হাবিবা স্বামীর সাথে ইথিওপিয়াতে অভিবাসিত হয়েছিলেন। সেখানে খৃষ্টধর্মে আকৃষ্ট হয়ে তার স্বামী যীশুর অনুসারী হন। উম্মে হাবিবা মারা যান উমায়াদ শাসককালে অর্থাৎ নবীর মৃত্যুর প্রায় ৩০ বছর পরে। তাঁর মানে, উম্মে হাবিবাও বিয়ের সময় যুবতী বয়সের ছিলেন।
১১) মায়মুনা
১২) নাম না-জানা বনী কিলাবের এক মহিলা
১৩) গাজিয়াঃ নবী তাঁর সাথে যৌন-সংগমে অগ্রসর হলে চক্রান্তকারী অন্যান্য স্ত্রীদের মন্ত্রণায় গাজিয়া উচ্চারণ করেঃ “আমি আল্লাহর কাছে তোমার থেকে আশ্রয় চাই।” শুনেই নবী তাকে তৎক্ষণাৎ তালাক দেন।
১৪) আসমা বিন্ত নুমানঃ নবী আবিষ্কার করেন যে, তার শরীরে সাদা দাগ ছিল, যা তিনি অপছন্দ করতেন। ফলে তাকেও তৎক্ষণাৎ তালাক দেন নবী।
সে কি মহানুভব ও সুসভ্য মানুষ ছিলেন মুহাম্মদ!
১৫) বিন্তে যাবিয়ান
১৬) কাতিলাঃ কাতিলার সাথে বিয়ে হতে-না-হতেই নবী অসুস্থ হয়ে পড়েন ও যৌন-সহবাসের সুযোগ হওয়ার আগেই মারা যান। নবীর মৃত্যুর পর কাতিলা ইসলাম ত্যাগ করেন।
১৭) ফাতিমা বিন্তে সারা
১৮) খাওলা বিন্তে হুযাইল
১৯) লাইলা বিন্তে খাতিম
উপসংহার
সুস্পষ্টত মহানবীর কোন কোন স্ত্রীর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্যের ঘাটতি রয়েছে, যাদের কারও কারও সম্পর্কে কেবল নাম ছাড়া আর কিছুই জানা যায় না; এমনকি কারও কারও নামও জানা যায় না। কাজেই যথার্থই বলা যায় যে, নবীর কোন কোন স্ত্রীর স্মৃতি ইতিহাসের পাতা থেকে পুরোপুরি মুছে ফেলা হয়েছে।
তবে মুসলিম ঐতিহাসিকদেরকেও দোষ দেওয়া যায় না, কেননা তাদের জন্য বিষয়টি আদৌ সহজ ছিল না। মুহাম্মদ কোন কোন স্ত্রীকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে রেখেছিলেন, কোন কোন স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন, কোন কোন মহিলার সাথে তার বাগদান হয়েছিল কিন্তু বিবাহ সম্পন্ন হয় নি এবং কোন কোন স্ত্রীর সাথে বিবাহ হয়েছিল কিন্তু যৌন-সহবাস সম্পন্ন হয় নি। অনেক মহিলা ছিল, যারা নবীর কাছে বিনা শর্তে সমর্পনও করতেন। এমন সব নারীদের সাথে যৌন-সংগমের অধিকার আল্লাহ কেবল নবীর জন্যই জায়েজ করেছিলেন, অন্যান্য মুসলিমদের জন্য নয়। অধিকন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর দাসী এবং যৌনদাসীও ছিল, যাদেরকে অনেক মুসলিমরা স্ত্রী হিসেবে গণ্য করেন, যদিও তারা কোনক্রমেই নবীর স্ত্রী ছিলেন না।
এমন জটিলতার মাঝে কে-কে তাঁর স্ত্রী ছিল, কে-কে ডানহাতের মাল বা যৌনদাসী ছিল, কে-কে বিনাশর্তে সমর্পনকারী ছিল এবং মোট স্ত্রীর সংখ্যা কত ছিল – তা নির্ণয় করতে সম্ভবত মহানবী নিজেই হাবুডুবু খেতেন।
————————
১) কোরান ৯.২৪:
২) বুখারী ১/২/১৪ –
আনাস বর্ণিতঃ নবী বলেন, “তোমাদের কারোরই বিশ্বাস গৃহিত হবে না, যদি-না তোমরা আমাকে তোমাদের বাবা-মা, সন্তান-সন্ততি এবং সমগ্র মানবজাতির চেয়ে বেশী ভালবাসো।
৩) বুখারী ৮/৭৮/৬২৮.১ –
“না, যার হাতে আমার জানমাল তার কসম, (তোমাদের বিশ্বাস সম্পূর্ণ হবে না) যতক্ষণ-না আমি তোমাদের কাছে নিজ প্রাণের চেয়েও বেশী প্রিয় হবো।”
[i]. আল জামি আল কবীর, লেখক আল সুয়ুতী, পৃ ২৭২: নবী বলেন, “জিব্রাইল আমার কাছে এক পানপাত্র আনে, আমি তা থেকে পান করি, এবং আমি চল্লিশ জন পুরুষের সমান যৌন-ক্ষমতা অর্জন করি।