Saturday, October 3, 2015

অভিজিৎ রায়ের যুক্তির খণ্ডন ৪ঃ ফাইন টিউনিং যুক্তি


"ফাইন টিউনিং যুক্তি"দীর্ঘদিন ধরেই আমার মত আস্তিকগন স্রষ্টার অস্তিত্তের পক্ষে বিতর্কের ক্ষেত্রে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে এসেছেন। সাধারনত এই যুক্তি ব্যবহার করা হলে কোন নাস্তিক্যবাদীই ভালো কোন উত্তর দিতে পারতেন না।

কিন্তু এক নাস্তিক বন্ধুর সুবাদে জেনেছিলাম এই যুক্তি অভিজিৎ রায় খণ্ডন করেছেন।অভিজিৎ রায়ের বইতেও দেখলাম তিনি খুব দক্ষতার সাথেই ফাইন টিউনিং এর বিপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন আমি সমস্যায় ছিলাম। অভিজিৎ রায়ের এই যুক্তি খণ্ডনের কোন দুর্বলতা কিছুতেই বের করতে পারছিলাম না। কিন্ত দার্শনিক প্লেটোর সেই উক্তি আমাকে সাহায্য করেছিল যা আমি এর আগে কোনদিন উপলব্ধি করিনি। উক্তিটি ছিল Know thyself ( নিজেকে জানো )

পোস্টের শেষে আবার আমরা Know thyself এ ফিরে যাব। তার আগে ফাইন টিউনিং যুক্তিটি জেনে নেইঃ

ফাইন টিউনিং যুক্তিকে অনেকসময় সৃষ্টির বুদ্ধিদীপ্ত অনুকল্পও বলা হয়। আমরা জানি মহাবিশ্বে কিছু বিষয় আছে যা সুনির্দিষ্ট। যেমনঃ মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, দুর্বল পারমানবিক বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য, আমাদের দেহের আঙ্গিক অনুপাত ইত্যাদি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যদি এই মহাকর্ষীয় বল বা দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য এখন যা আছে তার চেয়ে অল্প কিছু কম বা বেশি হলে আমাদের মহাবিশ্বে প্রান সৃষ্টিই হত না। যেমনঃ দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য এখন যা আছে যদি তার চেয়ে কিছু বেশি হত তাহলে এই পুরো পৃথিবীর বায়ুর ১০০% ই হত হাইড্রোজেন। আর তাহলে কোন প্রান থাকতনা। কেননা প্রানের জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন ও কার্বন। আবার এই মহাবিশ্বে সুনির্দিষ্ট এনজাইম,এসিড ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট পরিমানে সমন্বয়ের ফলে প্রানের বিকাশ ঘটেছে। অর্থাৎ মহাবিশ্বে এই সকল রাশির মান সুনির্দিষ্ট না হলে কোন প্রানের বিকাশ হত না। যদি প্রশ্ন করা হয় এই সকল রাশির মান এত নির্দিষ্ট কিভাবে হয়েছে?? এটা কি শুধুই দুর্ঘটনা? এটি কিভাবে একটি দুর্ঘটনা হয় যেখানে এতগুল রাশির মধ্যে একটি রাশির মানও তার সুনির্দিষ্ট মানের চেয়ে কোন ক্ষেত্রে বেশি বা কম হয় নি।তাহলে এ ঘটনা দ্বারা কি বোঝা যায় না যে কেউ একজন খুব সুস্পষ্টভাবে এই সকল রাশির মান নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন?? অবশ্যই এটাই মনে হয় যে কোন এক সত্তা এই সকল রাশির মান নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যাতে মহাবিশ্ব অস্তিত্ত লাভ করতে পারে এবং প্রানের বিকাশ হতে পারে। আর এই সত্তাই সৃষ্টিকর্তা।

অভিজিৎ রায় এ যুক্তির খণ্ডন করেছেন ৩ ভাবে

ফাইন টিউনিং যুক্তির বিপক্ষে অভিজিৎ রায়ের যুক্তি ১ঃ

অভিজিৎ রায় দেখিয়েছেন যে মাটির নিচে অক্সিজেন ছাড়াও ব্যাকটেরিয়া জীবন ধারন করছে। সমুদ্রের গভীর তলদেশে এমনকি কেরসিন তেলের ভেতরেও প্রানের বিকাশ ঘটেছে।অভিজিৎ রায়ের মতে তাই প্রানের বিকাশ ঘটতে হলে যে সুনির্দিষ্ট পরিবেশ, বায়ুতে নির্দিষ্ট অক্সিজেনের পরিমান ইত্যাদি থাকতে হবে এমন নয়। যদি বর্তমান পরিবেশ নাও থাকত তবুও অন্য ধরনের পরিবেশের সাথে খাপ খায় এমন প্রানের বিকাশ হত অথবা সকল জীব ওই পরিবেশের সাথে বিবর্তনের মাধ্যমে খাপ খাইয়ে নিত।


অভিজিৎ রায়ের যুক্তি খণ্ডনঃ

অভিজিৎ রায় এক্ষেত্রে যে যুক্তি দিয়েছেন তা খুব সহজেই খণ্ডন করা সম্ভব। এ জন্য ক্লাস ৯-১০ এর পদার্থবিজ্ঞান জানা থাকাই যথেষ্ট।

অভিজিৎ রায় বলেছেন প্রানের বিকাশ ঘটতে হলে যে সুনির্দিষ্ট পরিবেশ, বায়ুতে নির্দিষ্ট অক্সিজেনের পরিমান ইত্যাদি থাকতে হবে এমন নয়। কিন্তু যদি কোন মহাবিশ্বই না থাকে তবে প্রানের বিকাশ হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নিশ্চয়ই নেই?? আমরা লক্ষ্য করি, মহাবিশ্বে যে সকল রাশির মান সুনির্দিষ্ট তাদের মধ্যে একটি হলঃ মহাকর্ষীয় ধ্রুবক। এখন মহাকর্ষীয় ধ্রুবক যদি সুনির্দিষ্ট মানের চেয়ে অল্প কিছু কম বা বেশি হত তবে গ্রহ, নক্ষত্রের আবর্তন এবং পদার্থের স্থিতিস্থাপকতা বলতে কিছুই থাকত না। তাহলে কোন মহাবিশ্বই সৃষ্টি হত না ফলে প্রানের বিকাশও হত না।

ধরে নিলাম সুনির্দিষ্ট পরিবেশ, বায়ুতে নির্দিষ্ট অক্সিজেনের পরিমান ছাড়াও প্রানের বিকাশ সম্ভব। কিন্তু মহাকর্ষীয় ধ্রুবকই যদি সুনির্দিষ্ট না হত তবে তো মহাবিশ্বই সৃষ্টি হত না, প্রানের বিকাশ দুরের কথা।

যেহেতু মহাকর্ষীয় ধ্রুবক তার সুনির্দিষ্ট মানের চেয়ে কোন ক্ষেত্রে বেশি বা কম হয় নি তাই এই মহাবিশ্ব তৈরি হতে পেরেছে। আমরা ধরে নিতেই পারি এই সুনির্দিষ্ট মানের পেছনে কোন এক মহানসত্তা ছিল।


ফাইন টিউনিং যুক্তির বিপক্ষে অভিজিৎ রায়ের যুক্তি ২ঃ

ফাইন টিউনিং এর পক্ষে যেসকল পদার্থবিজ্ঞানী আছেন তারা বলেন এই মহাবিশ্বে মহাকর্ষীয় বল বা দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য সহ এতগুল ভৌত রাশি এত নিখুঁতভাবে সুনির্দিষ্ট আছে যা দেখে বোঝা যায় এই মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনেক উপযুক্ত।আর এভাবে একে উপযুক্ত করেছেন স্রষ্টা।


ফাইন টিউনিং এর পক্ষে যেসকল জীববিজ্ঞানী আছেন তারা আবার বলেন এই মহাবিশ্ব প্রানের জন্য একেবারেই উপযুক্ত ছিল না। স্রস্টাই এই মহাবিশ্বে সুনির্দিষ্ট এনজাইম,এসিড ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট পরিমানের সমন্বয়ে প্রানের বিকাশ ঘটিয়েছেন এবং এভাবে অনুপযুক্ত মহাবিশ্বকে উপযুক্ত করেছেন স্রষ্টা।

অর্থাৎ ফাইন টিউনিং এর পক্ষে যেসকল পদার্থবিজ্ঞানী আছেন তারা বলেন এই মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনেক উপযুক্ত।আর এভাবে একে উপযুক্ত করেছেন স্রষ্টা। আবার এর পক্ষে যেসকল জীববিজ্ঞানী আছেন তারা বলেন এই মহাবিশ্ব প্রানের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত ।
অনুপযুক্ত মহাবিশ্বকে উপযুক্ত করেছেন স্রষ্টা।

যেহেতু এই একই যুক্তিটি সমর্থন করতে গিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীরা বলেছেন মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনেক উপযুক্ত আবার জীববিজ্ঞানীরা বলেছেন মহাবিশ্ব প্রানের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত। তাই বোঝাই যাচ্ছে এই যুক্তিতে বড় ধরনের ফাঁক আছে।

অভিজিৎ রায়ের যুক্তি খণ্ডনঃ

আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে ফাইন টিউনিং সমর্থন করতে গিয়ে পদার্থবিজ্ঞানী এবং জীববিজ্ঞানীরা বিপরীত বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু
পদার্থবিজ্ঞানীদের বক্তব্য পদার্থবিজ্ঞান এর দৃষ্টিতে এবং জীববিজ্ঞানীদের বক্তব্য জীববিজ্ঞান এর দৃষ্টিতে দেখলে তাদের কথার আসল অর্থ প্রকাশ পায়।

আমরা জানি, মহাবিশ্বে মহাকর্ষীয় বল বা দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য ইত্যাদি নিখুঁতভাবে সুনির্দিষ্ট আছে বলেই
গ্রহ, নক্ষত্রের আবর্তন এবং পদার্থের স্থিতিস্থাপকতা আছে। যদি গ্রহ, নক্ষত্রের আবর্তন এবং পদার্থের স্থিতিস্থাপকতা নাই থাকত তবে মহাবিশ্বই সৃষ্টি হত না। তাই কোন প্রাণেরও বিকাশ হত না।যেহেতু মহাকর্ষীয় বল বা দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য ইত্যাদি নিখুঁতভাবে সুনির্দিষ্ট আছে তাই বলা যায়। মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনেক উপযুক্ত। এবং এই কথাটি সঠিক।

আবার মহাবিশ্ব তৈরি হওয়ার পরই সেটা প্রানের জন্য উপযুক্ত হয়নি। এ জন্য মহাবিশ্বে সুনির্দিষ্ট এনজাইম,এসিড ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট পরিমানের সমন্বয় প্রয়োজন ছিল। যেহেতু সুনির্দিষ্ট এনজাইম,এসিড ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট পরিমানের সমন্বয় ঘটার আগে মহাবিশ্ব প্রানের বিকাশের জন্য পুরোপুরি অনুকুল ছিল না তাই বলা যায় সে সময় মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনুপযুক্ত ছিল। এবং এই কথাটিও সঠিক।

এক্ষেত্রে ২টি বক্তব্যই সঠিক। কিভাবে?? একটি উদাহরন দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবেঃ

মনে করুন একটি কলম রাখা আছে। একজন লোক বললেন কলমটি লেখার জন্য উপযুক্ত। আরেকজন লোক বললেন কলমটি লেখার জন্য অনুপযুক্ত। এক্ষেত্রে ২ জন লোকই সঠিক হতে পারেন কি?? পারলে কিভাবে?

এক্ষেত্রে ২ জন লোকই সঠিক হতে পারেন। যে লোক বলেছেন কলমটি লেখার জন্য উপযুক্ত তিনি চিন্তা করেছেন যে আমরা হাতুড়ি বা লাঠি বা অন্য কোন যন্ত্র দিয়ে তো আর লিখতে পারি না তাই কলমই লেখার জন্য উপযুক্ত।যে লোক বলেছেন কলমটি লেখার জন্য অনুপযুক্ত, তিনি কলমটি দিয়ে লেখার চেষ্টা করে দেখলেন কালি নেই। তাই তার মতে কলমটি লেখার অনুপযুক্ত।

একইভাবে পদার্থবিজ্ঞানীদের মতে মহাবিশ্বে মহাকর্ষীয় বল বা দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যকার শক্তির ভারসাম্য ইত্যাদি নিখুঁতভাবে সুনির্দিষ্ট আছে একারনেই মহাবিশ্ব টিকে আছে। আর টিকে থাকাতেই তাতে প্রানের বিকাশ হয়েছে।তাই মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনেক উপযুক্ত। স্রষ্টা মহাবিশ্বকে তৈরি করেছিলেন প্রানের বিকাশের জন্য টিকে থাকার উপযুক্ত করে।

আবার জীববিজ্ঞানীদের মতে মহাবিশ্ব টিকে থাকলেও তাতে প্রানের বিকাশ হতে সুনির্দিষ্ট এনজাইম,এসিড ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট পরিমানের সমন্বয় ঘটা প্রয়োজন ছিল। তাই সেই সমন্বয় ঘটার আগে মহাবিশ্ব প্রানের জন্য অনুপযুক্ত ছিল।ওই মহাবিশ্বের পরিবেশকেই প্রানের বিকাশের জন্য অনুপযুক্ত থেকে উপযুক্ত করে তুলেছেন।

এখানে মহাবিশ্ব হল কলম। আর এনজাইম,এসিড ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট পরিমানের সমন্বয় হল কালি। এক্ষেত্রে ২টি বক্তব্যই আসলে সঠিক।
পদার্থবিদ ও জীববিদরা হচ্ছেন উদাহরনের ওই দুই ব্যক্তি।

স্রষ্টা মহাবিশ্বকে তৈরি করেছিলেন প্রানের বিকাশের জন্য টিকে থাকার উপযুক্ত করে।এক্ষেত্রে মহাবিশ্ব টিকে থাকার উপযুক্ত ছিল। কিন্তু মহাবিশ্বের পরিবেশ প্রানের বিকাশের জন্য অনুপযুক্ত ছিল। আবার ওই স্রস্টাই মহাবিশ্বের পরিবেশকেই প্রানের বিকাশের জন্য অনুপযুক্ত থেকে উপযুক্ত করে তুলেছেন।



ফাইন টিউনিং যুক্তির বিপক্ষে অভিজিৎ রায়ের যুক্তি ৩ঃ

জ্যোতির্বিদ ভিক্টর স্তেঙ্গর প্রমান করে দেখিয়েছেন যে আমাদের মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোকে পরিবর্তন করে অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরি করা যায়। এরকম অসংখ্য মহাবিশ্ব থাকতেও পারে। মাঙ্কি গড নামক একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামে নিজের ইচ্ছামত মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোকে পরিবর্তন করে অসংখ্য ভার্চুয়াল মহাবিশ্ব তৈরি করা যায়।যা বৈজ্ঞানিকভাবে সত্যিকারেই সম্ভব বলে স্বীকৃত। যেহেতু আমাদের মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোকে পরিবর্তিত হলেও অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরি হওয়া সম্ভব তাই বলা যায় ফাইন টিউনিং যুক্তি অমুলক।

অভিজিৎ রায়ের যুক্তি খণ্ডনঃ

এই যুক্তিটি খণ্ডন করতে গিয়ে আমি মহা সমস্যায় পড়েছিলাম। কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না যদি মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোকে পরিবর্তিত হলেও অসংখ্য মহাবিশ্ব তৈরি হওয়া সম্ভব হয় তবে স্রষ্টা থাকেন কি করে??

কিছুদিন থেকেই আমি প্লেটোর দর্শন পড়ছিলাম। যখনই এই যুক্তিটি খণ্ডন করতে চাইছিলাম তখনই মাথায় প্লেটোর একটি কথা ঘুরপাক খেতঃ Know thyself ( নিজেকে জানো )। যদিও প্রথমে এই কথাটিকে অপ্রাসঙ্গিক ভেবে মাথা থেকে দূর করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু পরে মাথায় বিদ্যুতের মত খেলে গেল প্লেটোর এই জ্ঞানগর্ভ কথার সত্যিকার অর্থ। আর পেয়ে গেলাম অভিজিৎ রায়ের যুক্তির দুর্বলতা।

অভিজিৎ রায়ের যুক্তি দিয়েই তাঁর যুক্তি খণ্ডন সম্ভব। কিভাবে??

লক্ষ্য করুন "মাঙ্কি গড নামক একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামে নিজের ইচ্ছামত মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোকে পরিবর্তন করে অসংখ্য ভার্চুয়াল মহাবিশ্ব তৈরি করা যায়।যা বৈজ্ঞানিকভাবে সত্যিকারেই সম্ভব বলে স্বীকৃত।"

এক্ষেত্রে একটি মন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কি করে মহাবিশ্ব তৈরি করা যায়। একটি মন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোর কি কি মান সে প্রোগ্রামে বসাবে। অর্থাৎ মহাবিশ্ব তৈরির জন্য প্রয়োজন কোন এক সত্তার মন। যেই মন নির্ধারণ করবে মহাবিশ্বের সুনির্দিষ্ট রাশিগুলোর কি কি মান হবে।


কিন্তু মানুষের মন শুধু মান বসাতে পারে।ভার্চুয়াল মহাবিশ্ব তৈরি করতে পারে। সত্যিকার মহাবিশ্ব তৈরি করতে পারে নিশ্চয়ই কোন মহামন। আর এই মহামনই হলেন স্রষ্টা।

মহাবিশ্বের পিছনে কোন মহামনের অস্তিত্ব থাকা কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান দ্বারা ও ব্যাখ্যা করা যায়ঃ


কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রিতেশন এ নিলস বোর ও ওয়ারনার হাইজেনবার্গ এর মত কালজয়ী বিজ্ঞানীদের কাজের ফলে কোয়ানটাম পদার্থবিজ্ঞানে এক নতুন জগতের আবির্ভাব হয়।

যার ফলশ্রুতিতে প্রমানিত হয় যে সাব এটমিক লেভেলে অবজারভার বা পর্যবেক্ষক এর সিদ্ধান্তের ওপরই ক্ষুদ্র কনার স্পিন ও অবস্থান নির্ভর করে।অর্থাৎ কোন পরীক্ষণের সময় একজন বিজ্ঞানী কোন ক্ষুদ্র কনার যে অবস্থান ও ঘূর্ণনের কথা চিন্তা করেন। কণাটি ঠিক সেই অবস্থানে সেভাবে ঘূর্ণন করে।

অর্থাৎ একজন মানুষের চেতনা দিয়ে বস্তুজগতের ক্ষুদ্র কনা নিয়ন্ত্রন করতে পারে। তাহলে এই মহাবিশ্ব কি এমন কোন মহাচেতনার সিদ্ধান্ত অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে??

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদের কে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন।-----আল কুরান ৬ঃ১৬৫

প্রতিনিধি কে? যিনি তার প্রেরনকর্তার কিছু ক্ষমতার অধিকারি হন এবং প্রেরনকর্তা প্রদত্ত একটি স্থানে যার কিছু ক্ষমতা থাকে তিনিই প্রতিনিধি ।

তাহলে মানুষের চেতনা দিয়ে বস্তুজগতের ক্ষুদ্র কনা নিয়ন্ত্রন করতে পারা কি মানুষকে পৃথিবীতে স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে প্রমান করে না?? যদি মানুষ স্রস্টার প্রতিনিধি হয় তাহলে স্রস্টাও নিশ্চয়ই আছেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
এতক্ষন কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।আপনারা আমার গঠনমূলক সমালোচনা করলে আমি যারপরনাই আনন্দিত ও উপকৃত হব।

প্রিয় পাঠক সত্যর পথে যাত্রায় প্রথমে নিজের ভেতরে ডুব দিন।আপনি সত্য খুঁজে পাবেন। Know thyself ( নিজেকে জানুন )