আপনার সময় গুলো হয়ত ভালোই কাটছিল। হাতে বাদামের ঠোঙা আর এক চিমটে লবণ দিয়ে কাটিয়ে দিতে পারতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। রাতের বাক্যালাপ শেষ হতে না হতেই মিষ্টি সকাল উঁকি দিতো আপনার ব্যল্কনিতে বা ছোট্ট জানালায়। আপনার প্রেম ছিল শুদ্ধ।
হঠাৎ ভবিষ্যতের কিঞ্চিৎ পরিকল্পনা বা চিন্তা আপনার মাথায় এলো কিংবা আপনার স্বার্থে ডট পরিমাণ আঁচর লাগলো কিংবা যেকোনো পক্ষ থেকে আপনার উপর এলো প্রবল চাপ। আপনি দিগ্বিদিকজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়লেন। ভবিষ্যৎ-পরিবার নিয়ে দিনরাত হাজারো চিন্তা করেও কোন কিনারা খুঁজে পেলেন না। বিচ্ছেদ ব্যতিত অন্য কোন সমাধান আপনার প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত নিউরণে ভর করল না। এবং আপনি তাই করলেন। আপনার প্রেম ছিল শুদ্ধ।
মেয়েটি অনেক চেষ্টা করল সবকিছু আগের মতো করে সাজাতে। কিন্তু পারল না। এভাবে চলল দু তিন মাস। আপনারও যে তার কথা মনে পড়ে না, তা না। কিন্তু আপনার প্রকোষ্ঠ যেন দড়ি দিয়ে বাধা, বাস্তবতার কুয়া'য় আপনি সাঁতার কাটছেন। এখন আপনিও তাকে চাইতে লাগলেন, অনুভব করতে লাগলেন আগের থেকে আরও বেশি মাত্রায়। তাকে ছাড়া আপনার দুনিয়াও এলোমেলো। এরকম ঝুলন্ত অবস্থায় চলল এক দের বছর। মেয়েটি সুন্দরী বলে তার কাছে প্রেমের প্রস্তাব আসা অব্যাহত থাকল বরাবরের মতই। তারও আপনার চুম্বকত্ব থেকে বেরিয়ে আসা দরকার বলে সে মনে করল। তাই শেষ পর্যন্ত সে একটি সম্পর্ক করেই ফেলল।
আর আপনি তাকে কোন এক সময় পাবার আশায় বা সকল সমস্যা সমাধানের অপেক্ষায় কোনমতে গড়িয়ে গড়িয়ে দিন কাটাতে লাগলেন। নতুন কোন সম্পর্কে আপনি জড়াতে পারলেন না কিংবা জড়ালেও পূর্ববর্তী জনের মুখায়ব আপনার চোখে ভেসে ওঠে সবসময়। আপনার প্রেম ছিল শুদ্ধ।
আপনি এখন মেয়েটাকে দোষারোপ করতে লাগলেন। আপনার ধারণা ছিল সেও হয়ত আপনার মতো প্রতি রাতে পুরনো স্মৃতি নিয়ে কবিতা লেখে। কিন্তু এখন আপনি বছর দুয়েক পর যখন জানতে পারলেন যে সে এখন অন্য কারও, তখন তাকে পতিতা বলতেও আপনি দ্বিধা বোধ করলেন না অথবা আপনার মুখে বিন্দু পরিমাণ আটকালো না। আপনি তাকে ঘৃণা করার চেষ্টা করতে লাগলেন। আপনার প্রেম ছিল শুদ্ধ।
এই ছিল আপনার প্রেম কাহিনী......
(এরকম, এভাবেই অসংখ্য প্রেমের ভবিষ্যৎ হারিয়ে যায় একজনের একটি ভুল সিদ্ধান্তে। দুটি প্রকোষ্ঠই ঠিক থাকে। দুজনের প্রেমেই থাকে শুদ্ধতা। চলতে থাকে সব ঠিক ঠাক মতই। ছেলেটিরও ওই পর্যায়ে কোন দোষ থাকে না। তবুও কারও দোষ ধরতে গেলে বা দুজনের একজনকে দায়ী করতে গেলে সব দোষ ছেলের উপরই বর্তায়। স্বাভাবিক ব্যাপার।
তাই এরকম সম্পর্কের ক্ষেত্রে বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। ছেলেটি তা বুঝতে পারলেও অনেক দেরী হয়ে যায় তখন। ছেলেটির প্রেম শুদ্ধ থাকলেও সে ওই সময় বাস্তবতার কষাঘাতে কিচ্ছু করতে পারে না। কিচ্ছু না। ভবিষ্যতেও পারে না। যেটা পারে সেটা এখন শুধু ঘৃণা করার চেষ্টা। ঘৃণা করে বেঁচে থাকার চেষ্টা)