Wednesday, October 7, 2015

পর্নোগ্রাফির দিকে একটা মানুষের ঝুঁকে যাওয়ার কারণ কি ?


★★★
১) পর্নোগ্রাফির এভেইলএবল যোগান,
২) মানুষের অনৈতিক বস্তুর বিরুদ্ধে নৈতিক রেজিসটেন্স কমে যাওয়া,
৩) আসক্ত হওয়ার পর, নির্দ্দিষ্ট সময় পর পর পর্নোগ্রাফির চাহিদা দেহে অনুভব করা।
★প্রথম কারণটির দিকে তাকান,
পর্নোগ্রাফির এভেইলএবল যোগান। মানে যখন খুশি তখন পর্নোগ্রাফি পাচ্ছেন। সেটা পিসিতে হোক, কিংবা মোবাইলে হোক। এই এভেইলএবল যোগানটা আগে বন্ধ করে দিতে হবে। এখন আপনি বলতে পারেন, তাহলে কি পিসি/মোবাইল/ইন্টারনেট ইউজ বন্ধ করে দিবো ? না আমি সেটা বলছি না। এভেইলএবল’ যোগানটা বন্ধ অর্থ হচ্ছে আপনার দ্বারা ঐ অনৈতিক কাজটি হয়ত প্রকাশ্যে হচ্ছে না, একটু আড়ালে হচ্ছে। ঐ আড়ালটি শুধু সরিয়ে দিন। পিসি/ মোবাইল ইউজটা প্রকাশ্যে জনসম্মুখে নিয়ে আসুন। দেখবেন, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পর্নেোগ্রাফীর দিকে কম ঝুকতে হচ্ছে।
★দ্বিতীয় কারণটির দিকে খেয়াল করুন,
‘নৈতিক রেজিসটেন্স কমে যাওয়া’। এটা একটা বড় জিনিস। আজকাল সবাই কিন্তু নীতি কথা বলে, ভালো কাজ করলে স্যালুট দেয়। কিন্তু ভালো কাজের সাথে ধর্মকে জড়াতে চায় না। বলে “ভালো কাজ আলাদা, ধর্ম বস্তুটাও আলাদা, দুটো পৃথক”। মানে ভালো কাজ করার জন্য ধর্মকে টেনে আনার দরকার নেই। অথচ সমাজে নৈতিকতার মূল ভিত্তি হচ্ছে ‘ধর্ম’। ধর্ম আপনাকে এত শক্ত নৈতিকতার ভিত্তির উপর দাড় করাতে পারে, যেটা দিয়ে আপনি বহু অনৈতিকতার বাধা একবারে টপকে যেতে পারেন। একটা মা যখন ছোট বেলায় তার সন্তানকে শেখায় “অমুক কাজটি কিন্তু আমাদের ধর্মে নিষেধ, সেটা কখনও করো না”, ঐ সন্তানটি কিন্তু কখণই তার মা’র ঐ ধর্মীয় উপদেশটা ফেলতে পারে না। যেহেতু বর্তমানে সমাজে ধর্ম ও নৈতিকতাকে পৃথক করে ফেলা হয়েছে, তাই সেখানে পর্নোগ্রাফীর মত অনৈতিক বিষয়গুলো ভাইরাসের মত বিস্তার করে চলেছে। অর্থাৎ সমাজ থেকে পর্নোগ্রাফিসহ সকল অনৈতিক বস্তু দূর করার জন্য প্রয়োজন ব্যাপক ধর্মীয় নৈতিকতা চর্চা করা, ছোট বেলা থেকেই ধর্মীয় উপদেশ দান করা এবং ধর্মের দিক থেকে তার খারাপ ফলাফলগুলো বর্ননা করা।
★তৃতীয় কারণটা লক্ষ্য করুন,
‘পর্নোগ্রাফির চাহিদা দেহে অনুভব করা’। একজন মানুষ পর্নোগ্রাফি দেখার পর তার ব্রেনে পর্নোগ্রাফির চাহিদা নেশাদ্রব্যের মত অনুভব করছে। এটা থেকে বেচা উঠার উপায় কি ? এখানে বিষয় জানা জরুরী, মানুষের শরীরে জৈবিক চাহিদাটা কিন্তু সৃষ্টিগত। এটা বৈধ ব্যবহারটিকে আমরা খারাপ বলছি না, খারাপ বলছি তার অনৈতিক ব্যবহারকে। আপনারা জানেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা ৫টি (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা), কিন্তু ইসলামীক নিয়মে (যেহেতু বাংলাদেশ একটি মুসলিম কান্ট্রি তাই বলছি) মৌলিক চাহিদা হচ্ছে ৬টি। ঐ ৫টি চাহিদার পরে আরেকটি চাহিদার নাম হচ্ছে ‘বিয়ে’। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা জারি হলে, শাসন ব্যবস্থার তরফ থেকে ৫টি বিষয় ছাড়াও বিয়ের বিষয়টিও নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
সত্যিই বলতে একটা মানুষ তার প্রথম ৫টি মৌলিক চাহিদার জন্য যেমন বয়স বাধার সম্মুক্ষিন হয় না, তাহলে ৬ষ্ঠ মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে কেনো তাকে বয়স বাধার সম্মুখিন হতে হবে ? যার সামর্থ্য হবে সেই বিয়ে করবে। আজকাল বাবা-মা ছেলে মেয়ের সকল চাহিদা পূরণ করে দেয়। একের জনের পেছনে মাসে ১০-২০ হাজার টাকা খরচ করে। তবে বাবা-মা’র যদি সামর্থ্য থাকে ছেলেমেয়েকে বিয়ে দেওয়ার এবং ছেলে মেয়ের যদি চাহিদা বেশি থাকে তবে সেই চাহিদা পূরণ করে দিতে হবে। আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগে এমনই ঘটতো। এখানে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সমাজের নব্য দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন করতে হবে, ‘৩০ বছর না হলে ছেলেরা বিয়ে করতে পারবে না, ২৫ বছর না হলে মেয়েরা বিয়ে করতে পারবে না’ সমাজ থেকে এই নব্য দৃষ্টিভঙ্গীটা তুলে দিতে হবে, যার যখন প্রয়োজন তখনই বিয়ে করতে পারবে, এটাই চালু করতে হবে।
এখন দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্র বিয়ের জন্য বষয় নির্ধারণ করে দিচ্ছে। কেন ? খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসার জন্য যদি বষয় না থাকে তবে বিয়ের জন্য বয়ষ থাকবে কেন ? এটা সবাই জানে, আজকাল বিয়ে না করলেও ছেলেটি ঠিকই তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে, পতিতালয়ে গিয়ে কিংবা পর্নোগ্রাফি দেখে জৈবিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি এমন, সমাজ বৈধ বস্তুর অনুমতি দিচ্ছে না, কিন্তু অবৈধ বস্তুর স্বাদ আশ্বাদনের ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে রয়েছে। দেখেও না দেখার ভান করছে। যে মেয়েটার ১৩ বছর বয়সে শারীরিক চাহিদা তৈরী হচ্ছে তাকে ২৫ বছর পর্যন্ত আটকে রাখছে। যে ছেলেটার ১৫ বছর বয়সে শারীরিক চাহিদা তৈরী হচ্ছে তাকে ৩৫ বছর পর্যন্ত আটকে রাখছে। মানুষকে যখন বৈধভাবে খেতে না দিবেন, তখন তো চুরি করে খাবেই। অর্থাৎ পর্নোগ্রাফির ভয়াবহ ছোবল থেকে সমাজকে রক্ষার জন্য ‘বিয়ে’ নামক বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মন-মানসিকতা ও আইন পরিবর্তন করাও জরুরী।
এ ব্যাপারে আরো আলোচনা করার ইচ্ছা আছে। আশাকরি পাশে থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ।