সংখ্যাধিক্যের কারণে ঘটনাগুলোর গুরুত্ব আপনার কাছে হ্রাস পেতে পারে, কিন্তু কোন ঘটনাই গুরুত্বহীন নয়, এই চরম সত্যটা উপলব্দিতে আসবে তখনি যখন আপনিও হবেন ভুক্তভোগীদের একজন। মূল কথা বার্তায় যাওয়ার আগে দুএকটি ঘটনার উল্লেখ করছি।
দৃশ্যপটঃ ১
বাড়িতে বৃদ্ধ মা এবং অবিবাহিত ছোট ভাই। ফ্যামিলির দেখভালো করার দায়িত্ব পড়ে ছোট ভাইটির উপর। সংসারের দায়িত্বই শুধু নয়, এক সময় দেহভোগ করার বরের খাস অধিকারটুকু ভাবী দেবরের হাতে তুলে দেয়। কয়েক বছর পর ভাসুর বিদেশ থেকে এসে আবিষ্কার করে এবং হাতে নাতে ধরেও। বরের কানে বিষয়টি বারবার পাচার করার পরেও কোন অজানা কারণে আজও তিনি নীরব নির্বার। হয়ত চারজন সাক্ষী আনার ঝামেলা এড়াতে অথবা মান সম্মানের ভয়ে কবি নীরব!
দৃশ্যপটঃ ২
বউয়ের আবদার শহরে একটা বাড়ি চাই। বউয়ের আবদার মেটাতে সংসারের অন্যসব সদস্যদের জন্য টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এদিকে বউ তার চমৎকার প্রতিদান হিসেবে দেবরের সাথে নিষিদ্ধ সম্পর্কে মেতে ওঠে। বিষয়টি জেনেও সব টাকা পয়সা বউয়ের হাতে দেওয়ায় তালাকও দিতে পারে না, এই নষ্টাকে নিয়েই ঘর করতে বাধ্য হয়। দেশে এসে বউকে শহরে একলা বাসায় ছেড়ে দিয়ে আবার উড়াল মারেন। যে নারী ভরা বাড়িতে যৌনাঙ্গের হেফাজত করতে পারে না, সে যে একলা বাসায় দেবর অথবা অন্য কাউকে ডাকবে না, তা নিশ্চিত করে কিভাবে বলা যায়!
দৃশ্যপটঃ ৩
নতুন বউকে রেখে বর বিদেশ যায়। এদিকে সামান্য ক’দিনের ব্যবধানে আপন দেবরসহ পাড়াতো, চাচাতো, মামাতো, খালাতো দেবরদের সাথে নিষিদ্ধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমন কি, বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকা দিয়ে প্রেমিক পুরুষদের তাজা করে। এতো কিছুর পরেও কোন অজানা কারণে আবাল স্বামী আজও স্ত্রীর আচলেই বাঁধা পড়ে আছে।
দৃশ্যপটঃ ৪
শ্বশুর বাড়ি আসার পর শ্যালক/সম্বন্ধীর বউদের সাথে হাসি তামাসা না করলে শ্বশুর বাড়ির ভাতই হজম হয় না। হাসি ঠাট্টা ধীরে ধীরে নিষিদ্ধ সম্পর্কে রূপ নেয়। অতঃপর একদিন চাচাতো শ্যালকের বউয়ের সাথে শারীরিক মেলামেশায় ধরা পড়ে।
দৃশ্যপটঃ ৫
স্বামী-স্ত্রী দুজনই প্রেক্টিচিং ইসলাম ফ্যামিলি থেকে বেড়ে ওঠা। বর পেশায় ব্যাংকার। বদলির কারণে স্ত্রী এবং ছোট দুটি সন্তান থেকে দূরে থাকতে হয়। সপ্তাহে একবার আসে, খাওয়া ঘুম, সংসারের কিছু হিসেব নিকেষ, তারপর ছুট লাগায়। এসব ছাড়াও যে, স্ত্রীর মনো-দৈহিক চাহিদা আছে, সেদিকে খেয়াল নেই। যার ফলে ফেসবুকে কাউকে ভাই বা বন্ধু, আবার সমআদর্শের কাউকে পেলে চ্যাট করে একাকীত্ব দূর করার চেষ্টা করে। এভাবে ধীরে ধীরে চলে যায় অন্য দুনিয়ায়।
বিবাহিতা স্ত্রী অথবা স্বামীকে আপনি কি ভাবেন? আর সবার থেকে বিশেষ কিছু, নাকি স্বামী/স্ত্রী নামে অথর্ব টাইপের কিছু যাদের কাজ সময়ে সময়ে বিছানায় সঙ্গী হওয়া, কত্তগুলো পোলা মাইয়া জন্মানো, একজনে কাজের বুয়া অন্যজনে কামলাগিরি করা? আপনি কি ভাবেন স্বামী স্ত্রীর মিলন এবং পশুপাখিদের মিলনে কোন পার্থক্য নেই? মা-বাবা, ভাই-বোন, পাড়া প্রতিবেশি, তেষ্টা পেলে যাকে সামনে পায় তার সাথেই দৈহিক চাহিদা মেটায় পশুরা, আপনি কি মনে করেন বউ হতে পারে পশুদের মত এজমালি সম্পত্তি?
শুধু ভোগ করার জন্যই যদি কাউকে দরকার, তাহলে বিয়ের বদলে রক্ষীতা রাখাই বেটার। কাবিনের টাকাসহ বিয়ের আগে পরের অন্যান্য খরচতো বাঁচবেই। স্বামীর টাকা দিয়ে যদি বউ প্রেমিক পুরুষকে তাজা করে তাহলে পতিতার কাছে যাওয়াই ভাল, তাতে কিছুটা টাকা অন্তত সেইভ হবে।
আর যদি শুধু কাজ করানোর জন্য একজন মানুষ দরকার, তাহলে বিয়ে না করে চাকরানী রাখলেই পারেন। বউকে ছোট ভাইদের ভোগ করাতে যদি আপত্তি না থাকে, তাহলে হাজার জনে ভোগ করাতেও আপত্তি থাকার কথা নয়, ঘরটাকে পতিতালয় বানালেই পারেন।
পতিতাকে ভোগ করায় সামান্য হলেও প্রেম জন্মায়, কিন্তু ওই একই পতিতাকে আরো অসংখ্য খদ্দর ভোগ করাতে আগের খদ্দরের কিছু যায় আসে না। বউয়ের ব্যভিচারে অনুভূতিহীন থাকা মানে বউকে পতিতাদের কাতারে শামিল করা। নষ্টাকে ডিভোর্স দিতে ভয়! ১৫/২০লাখ টাকা কাবিন লিখিয়ে বড়লোকিপনা দেখান, তালাক দিতে গেলেইতো বাপের ভিটাসহ টান পড়বে। বউ এখন গলার কাটা, না পারছেন গিলতে, না পারছেন ফেলতে!
দেবর যদি সমস্যা না হত, তাহলে যে চৌদ্দ জনকে বিয়ে করা যায় না বা দেখা দেয়া যায়, তাদের মধ্যে দেবরও থাকতো। দেবর ভাইয়ের মত কিন্তু ভাই নয়। ভাবী মায়ের মত, মা নয়। পোশাকে অসতর্ক বোনকে দেখে ভাই বিব্রত হয়, কামনা জাগে না অথচ ভাবীকে একই অবস্থায় দেখে বিব্রত এবং কামনা দুটোই হয়। ভাইয়ের মৃত্যু অথবা তালাক দানের পরে ছোট ভাই ভাবিকে বিয়েও করতে পারে এবং তা অনুমোদিত।
ইসলাম ব্যাকডেটেড, দেবরের সাথে ভাবীকে মিশতে দেয় না অথবা শ্যালিকার সাথে দুলাভাইকে, মেনে চলতে হয় নির্দিষ্ট সীমারেখা। আপনারাতো আধুনিকতার ধ্বজাধারী, দেবরের সাথে মিশবেন, গল্প ঠাট্টা করতেই পারেন, বিছানায় যান কেন? এক ভাইয়ের বউকে সবাই ভোগ করা জানোয়ারের কাজ, আপনি আধুনিক কিন্তু জানোয়ারও!
মায়ের পেটের ভাই ভাইয়ের বউকে লুটে পুটে খায়, বিবেকে বাঁধে না, আর কিনা বন্ধুর বাঁধবে! আপনার হাজারটা বন্ধু থাকতেই পারে, কেননা বন্ধু ছাড়া জীবনে চলা খুব কঠিন কিন্তু বন্ধুদের ভিড়ে বউকে টেনে আনা কেন? বউ বন্ধুদের সামনে আসতে চায় না তবুও জোর করে নিয়ে আসেন, আর পরে যখন বন্ধুদের দ্বারাই বউ হয় এজমালি সম্পত্তি, তখন থাকে না কিছু করার।
আপনি কি মনে করেন, যে সমস্যাগুলো উপরে বর্ণিত হয়েছে, তা আপনার ঘরে সংঘটিত হবে না বউ ইসলামী আন্দোলনের পথে সক্রিয় বলে? কিন্তু এটা ভুলে যান কেন কর্মী হলেও আগে পরে সে একজন মানুষ। আর দশ জন মানুষের মত তারও মাঝেও কুপ্রবৃত্তিগুলো বর্তমান রয়েছে যা সে দাবিয়ে রেখেছে অনুশীলনের মাধ্যমে, নৈতিকতার বাঁধন শিথিল হয়ে গেলে কুপ্রবৃত্তিগুলো তাকে পরিচালিত করবে, যা দৃঢ় করতে আপনার ভূমিকা অনন্য। অতএব আপনার দাওয়াতী কাজসহ নানান ব্যস্ততার ভীড়ে তাকে গাইড করার সময় যদি না হয়, তাহলে আপনি অক্ষত থাকলেও তাকে কিন্তু গুনে খাওয়া শুরু করবে!
স্বামী বিদেশ, যৌবন জ্বালা সইতে না পেরে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছেন! কেন, অকালেই যাদের স্বামী মারা গেছে, তারা কিভাবে সহ্য করে। তবুও জ্বলন যদি এতোই তীব্র হয়, দু চার মাস অথবা ছর অপেক্ষা করা অসম্ভব, পর পুরুষকে বুকে টানতেই হয় তাহলে আপনাকে সংসারধর্ম মানায় না, বেশ্যাগিরিতে নাম লেখান। জ্বালাও মিটবে, উপড়ি পাওনাতো আছেই!
আপনার যা করণীয় তা কতটুকু করেছেন?
ধর্ষণ, বলাৎকার ইত্যাদি অধিকাংশক্ষেত্রে আকস্মিক উত্তেজনার বশে হয়ে থাকে কিন্তু পরকীয়া স্বাভাবিক ওঠাবসায় ভাললাগা থেকে, সময়ের ব্যবধানে তা দৈহিক সম্পর্কে রূপ নেয়। আপনি কি বোধ শক্তিহীন? এতোকাল এক সাথে থেকেও মতি গতি বুঝতে পারেন না? আমার ধারণা মতে, পরকীয়ায় নিমজ্জিত প্রায় সবাই প্রথম দিকে কাজটাকে পাপ বলেই বোধ করে, পরকালীন ভয়ে অথবা কেউ জানাজানি হওয়ার ভয়ে এগোতে চায় না। ঠিক এই সময়, চূড়ান্ত রূপ নেওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
যে কাজগুলো করতে বউকে বারবার পরপুরুষের দারস্থ হতে হয় সে কাজগুলো আপনি ব্যবস্থা করে দিন, অনিচ্ছাসত্ত্বেও পুরুষদের অবিরাম খোঁচাখুঁচিতে নারীর পদস্খলনের যে সম্ভাবনা থাকে তা অন্তত আপনার বউয়ের দ্বারা হবে না।
বাড়ির বউয়েরা অধিকাংশ সময় পাড়ার পুরুষদের লালসার বস্তুতে পরিণত হয়, পুকুরে খোলামেলা গোসল, কলতলা বা হাউজে যথাযথ পর্দার ব্যবস্থা না থাকা, ঘরের রুমগুলো আর সরাইখানায় কোন পার্থক্য না থাকায়। মা, বোন আর বউয়ের জন্য আলাদা ঘর, টয়লেট, গোসল খানা, বাড়ির চারপাশে দেয়াল, দরজায় পর্দা টাঙ্গাতে পারেন না? টাকাতো কম খরচ করেন না! এইসব ব্যবস্থা নিন, অন্তত আরো একটা সম্ভাবনা কমে যাবে।
বরের পরনারী আসক্তি থামানোর শক্তি নেই? বিশাল অংকের টাকা কাবিন লেখিয়েছেন যাতে স্বামী তালাক দিতে না পারে, আর সেটাই এখন উল্টো ঝামেলা হয়ে দাঁড়ালো। স্বামী তালাক দিতে গেলে এই টাকা দিতে বাধ্য, কিন্তু আপনি তালাক নিতে গেলে টাকা পাওয়ার চান্স কম, তাই সবকিছু জেনেও পরকীয়ায় আসক্ত স্বামীকে নিয়েই বসবাস করছেন। বেশি বুঝলে যা হয়! অতএব, ছোট বোনদের বিয়েতে নিশ্চয় এই লোভটার পুনরাবৃত্তি করবেন না!
তাছাড়া আপনার ভালবাসায় জোর এতো কম কেন, বিয়ের আগেই নিশ্চিত হয়ে যান স্বামী ছেড়ে দিবে! অল্প বেতনের চাকুরী আপনার পোষায় না, বেশি টাকা আয় করতে স্বামীকে সক্ষমতার বাইরে গিয়ে ঘুষ খেতে, অবৈধপথে টাকা আয় করতে স্বামীকে বাধ্য করতে পারেন, চোখ রাঙ্গানীতে বাবা, মা, ভাই বোন ছেড়ে আপনার কথায় উঠবস করাতে পারেন অথচ বিপথগামী থেকে বাচাতে পারেন না কেন? ছোট বোনসহ নানা সম্পর্কীয়া বোন, ভাবীদের সাথে স্বামীর অবাধ মেলামেশা দেখেও কখনো বাধা দিয়েছেন কি? না দিয়ে থাকলে বাধা দিন তবে কৌশলে, আশা করা যায় আপনি সফল হবেন।
স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে অন্যায় কাজ থেকে ফেরাতে বা কৃত অপরাধের শাস্তিস্বরূপ যে ব্যবস্থা ইসলাম বাতলে দিয়েছেন, এটাকে যারা সেকেলে মনে করেন, তারা এথিকস না নৈতিকতা দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চান। অথচ এথিকস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পর তার জন্য চূড়ান্ত শাস্তি ও পুরষ্কারের ব্যবস্থা না থাকলে এথিকসের কার্যকারিতা খুব কম। ইসলামে আছে এথিকস এবং চুড়ান্ত পরিণতি (জান্নাত ও জাহান্নাম) যা কেবল পারে ব্যভিচার রোধ করতে পারে।
হারার আগেই হেরে গেলে চলবে? সৃষ্টিকর্তার নির্দেশিত পথে একটু চেষ্টা করে দেখেন। খোলামেলা কথা বলুন, তাতে মাইন্ড করলে সাধারণভাবে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরুন তাতে করে তার দ্বারা সংঘটিত অপরাধটির উল্লেখ না করলেও শুনতে শুনতে তার ভেতরে অনুশোচনার আগুন দায় দায় করে জ্বলে উঠবে, নিজের ভেতরে পরিবর্তন আনতে মন ছটপট করবে।
যদি ভেবে থাকেন, ভালবাসা দিয়ে তার সব জয় করবেন, রাখবেন পাপ থেকে দূরে, তাহলে বলব, এই কমন কোয়ালিটি কম বেশি সবার মধ্যেই থাকে। অন্য কারো কাছে গেলেও ভালবাসা পাবে। হয়ত আপনি ছাড়া আর কারো কাছে যাওয়া হয় নি বলে ভালবাসাও পাইনি, তাই আপনিই তার ধ্যান-জ্ঞান। শুধু ভালবাসবেন, তা নয়, সাথে সাথে অলঙ্ঘনীয় বিধানগুলো নিজে অনুশীলন করুন এবং আপনার জীবন সঙ্গীকেও অনুশীলন করান, তবেই হবে পাপ পংকিলতামুক্ত একটি সংসার, সর্বোপরি বিশ্ব সমাজ। আপনার প্রচেষ্টায় আল্লাহ সহায় হোন।
দৃশ্যপটঃ ১
বাড়িতে বৃদ্ধ মা এবং অবিবাহিত ছোট ভাই। ফ্যামিলির দেখভালো করার দায়িত্ব পড়ে ছোট ভাইটির উপর। সংসারের দায়িত্বই শুধু নয়, এক সময় দেহভোগ করার বরের খাস অধিকারটুকু ভাবী দেবরের হাতে তুলে দেয়। কয়েক বছর পর ভাসুর বিদেশ থেকে এসে আবিষ্কার করে এবং হাতে নাতে ধরেও। বরের কানে বিষয়টি বারবার পাচার করার পরেও কোন অজানা কারণে আজও তিনি নীরব নির্বার। হয়ত চারজন সাক্ষী আনার ঝামেলা এড়াতে অথবা মান সম্মানের ভয়ে কবি নীরব!
দৃশ্যপটঃ ২
বউয়ের আবদার শহরে একটা বাড়ি চাই। বউয়ের আবদার মেটাতে সংসারের অন্যসব সদস্যদের জন্য টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এদিকে বউ তার চমৎকার প্রতিদান হিসেবে দেবরের সাথে নিষিদ্ধ সম্পর্কে মেতে ওঠে। বিষয়টি জেনেও সব টাকা পয়সা বউয়ের হাতে দেওয়ায় তালাকও দিতে পারে না, এই নষ্টাকে নিয়েই ঘর করতে বাধ্য হয়। দেশে এসে বউকে শহরে একলা বাসায় ছেড়ে দিয়ে আবার উড়াল মারেন। যে নারী ভরা বাড়িতে যৌনাঙ্গের হেফাজত করতে পারে না, সে যে একলা বাসায় দেবর অথবা অন্য কাউকে ডাকবে না, তা নিশ্চিত করে কিভাবে বলা যায়!
দৃশ্যপটঃ ৩
নতুন বউকে রেখে বর বিদেশ যায়। এদিকে সামান্য ক’দিনের ব্যবধানে আপন দেবরসহ পাড়াতো, চাচাতো, মামাতো, খালাতো দেবরদের সাথে নিষিদ্ধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমন কি, বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকা দিয়ে প্রেমিক পুরুষদের তাজা করে। এতো কিছুর পরেও কোন অজানা কারণে আবাল স্বামী আজও স্ত্রীর আচলেই বাঁধা পড়ে আছে।
দৃশ্যপটঃ ৪
শ্বশুর বাড়ি আসার পর শ্যালক/সম্বন্ধীর বউদের সাথে হাসি তামাসা না করলে শ্বশুর বাড়ির ভাতই হজম হয় না। হাসি ঠাট্টা ধীরে ধীরে নিষিদ্ধ সম্পর্কে রূপ নেয়। অতঃপর একদিন চাচাতো শ্যালকের বউয়ের সাথে শারীরিক মেলামেশায় ধরা পড়ে।
দৃশ্যপটঃ ৫
স্বামী-স্ত্রী দুজনই প্রেক্টিচিং ইসলাম ফ্যামিলি থেকে বেড়ে ওঠা। বর পেশায় ব্যাংকার। বদলির কারণে স্ত্রী এবং ছোট দুটি সন্তান থেকে দূরে থাকতে হয়। সপ্তাহে একবার আসে, খাওয়া ঘুম, সংসারের কিছু হিসেব নিকেষ, তারপর ছুট লাগায়। এসব ছাড়াও যে, স্ত্রীর মনো-দৈহিক চাহিদা আছে, সেদিকে খেয়াল নেই। যার ফলে ফেসবুকে কাউকে ভাই বা বন্ধু, আবার সমআদর্শের কাউকে পেলে চ্যাট করে একাকীত্ব দূর করার চেষ্টা করে। এভাবে ধীরে ধীরে চলে যায় অন্য দুনিয়ায়।
বিবাহিতা স্ত্রী অথবা স্বামীকে আপনি কি ভাবেন? আর সবার থেকে বিশেষ কিছু, নাকি স্বামী/স্ত্রী নামে অথর্ব টাইপের কিছু যাদের কাজ সময়ে সময়ে বিছানায় সঙ্গী হওয়া, কত্তগুলো পোলা মাইয়া জন্মানো, একজনে কাজের বুয়া অন্যজনে কামলাগিরি করা? আপনি কি ভাবেন স্বামী স্ত্রীর মিলন এবং পশুপাখিদের মিলনে কোন পার্থক্য নেই? মা-বাবা, ভাই-বোন, পাড়া প্রতিবেশি, তেষ্টা পেলে যাকে সামনে পায় তার সাথেই দৈহিক চাহিদা মেটায় পশুরা, আপনি কি মনে করেন বউ হতে পারে পশুদের মত এজমালি সম্পত্তি?
শুধু ভোগ করার জন্যই যদি কাউকে দরকার, তাহলে বিয়ের বদলে রক্ষীতা রাখাই বেটার। কাবিনের টাকাসহ বিয়ের আগে পরের অন্যান্য খরচতো বাঁচবেই। স্বামীর টাকা দিয়ে যদি বউ প্রেমিক পুরুষকে তাজা করে তাহলে পতিতার কাছে যাওয়াই ভাল, তাতে কিছুটা টাকা অন্তত সেইভ হবে।
আর যদি শুধু কাজ করানোর জন্য একজন মানুষ দরকার, তাহলে বিয়ে না করে চাকরানী রাখলেই পারেন। বউকে ছোট ভাইদের ভোগ করাতে যদি আপত্তি না থাকে, তাহলে হাজার জনে ভোগ করাতেও আপত্তি থাকার কথা নয়, ঘরটাকে পতিতালয় বানালেই পারেন।
পতিতাকে ভোগ করায় সামান্য হলেও প্রেম জন্মায়, কিন্তু ওই একই পতিতাকে আরো অসংখ্য খদ্দর ভোগ করাতে আগের খদ্দরের কিছু যায় আসে না। বউয়ের ব্যভিচারে অনুভূতিহীন থাকা মানে বউকে পতিতাদের কাতারে শামিল করা। নষ্টাকে ডিভোর্স দিতে ভয়! ১৫/২০লাখ টাকা কাবিন লিখিয়ে বড়লোকিপনা দেখান, তালাক দিতে গেলেইতো বাপের ভিটাসহ টান পড়বে। বউ এখন গলার কাটা, না পারছেন গিলতে, না পারছেন ফেলতে!
দেবর যদি সমস্যা না হত, তাহলে যে চৌদ্দ জনকে বিয়ে করা যায় না বা দেখা দেয়া যায়, তাদের মধ্যে দেবরও থাকতো। দেবর ভাইয়ের মত কিন্তু ভাই নয়। ভাবী মায়ের মত, মা নয়। পোশাকে অসতর্ক বোনকে দেখে ভাই বিব্রত হয়, কামনা জাগে না অথচ ভাবীকে একই অবস্থায় দেখে বিব্রত এবং কামনা দুটোই হয়। ভাইয়ের মৃত্যু অথবা তালাক দানের পরে ছোট ভাই ভাবিকে বিয়েও করতে পারে এবং তা অনুমোদিত।
ইসলাম ব্যাকডেটেড, দেবরের সাথে ভাবীকে মিশতে দেয় না অথবা শ্যালিকার সাথে দুলাভাইকে, মেনে চলতে হয় নির্দিষ্ট সীমারেখা। আপনারাতো আধুনিকতার ধ্বজাধারী, দেবরের সাথে মিশবেন, গল্প ঠাট্টা করতেই পারেন, বিছানায় যান কেন? এক ভাইয়ের বউকে সবাই ভোগ করা জানোয়ারের কাজ, আপনি আধুনিক কিন্তু জানোয়ারও!
মায়ের পেটের ভাই ভাইয়ের বউকে লুটে পুটে খায়, বিবেকে বাঁধে না, আর কিনা বন্ধুর বাঁধবে! আপনার হাজারটা বন্ধু থাকতেই পারে, কেননা বন্ধু ছাড়া জীবনে চলা খুব কঠিন কিন্তু বন্ধুদের ভিড়ে বউকে টেনে আনা কেন? বউ বন্ধুদের সামনে আসতে চায় না তবুও জোর করে নিয়ে আসেন, আর পরে যখন বন্ধুদের দ্বারাই বউ হয় এজমালি সম্পত্তি, তখন থাকে না কিছু করার।
আপনি কি মনে করেন, যে সমস্যাগুলো উপরে বর্ণিত হয়েছে, তা আপনার ঘরে সংঘটিত হবে না বউ ইসলামী আন্দোলনের পথে সক্রিয় বলে? কিন্তু এটা ভুলে যান কেন কর্মী হলেও আগে পরে সে একজন মানুষ। আর দশ জন মানুষের মত তারও মাঝেও কুপ্রবৃত্তিগুলো বর্তমান রয়েছে যা সে দাবিয়ে রেখেছে অনুশীলনের মাধ্যমে, নৈতিকতার বাঁধন শিথিল হয়ে গেলে কুপ্রবৃত্তিগুলো তাকে পরিচালিত করবে, যা দৃঢ় করতে আপনার ভূমিকা অনন্য। অতএব আপনার দাওয়াতী কাজসহ নানান ব্যস্ততার ভীড়ে তাকে গাইড করার সময় যদি না হয়, তাহলে আপনি অক্ষত থাকলেও তাকে কিন্তু গুনে খাওয়া শুরু করবে!
স্বামী বিদেশ, যৌবন জ্বালা সইতে না পেরে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছেন! কেন, অকালেই যাদের স্বামী মারা গেছে, তারা কিভাবে সহ্য করে। তবুও জ্বলন যদি এতোই তীব্র হয়, দু চার মাস অথবা ছর অপেক্ষা করা অসম্ভব, পর পুরুষকে বুকে টানতেই হয় তাহলে আপনাকে সংসারধর্ম মানায় না, বেশ্যাগিরিতে নাম লেখান। জ্বালাও মিটবে, উপড়ি পাওনাতো আছেই!
আপনার যা করণীয় তা কতটুকু করেছেন?
ধর্ষণ, বলাৎকার ইত্যাদি অধিকাংশক্ষেত্রে আকস্মিক উত্তেজনার বশে হয়ে থাকে কিন্তু পরকীয়া স্বাভাবিক ওঠাবসায় ভাললাগা থেকে, সময়ের ব্যবধানে তা দৈহিক সম্পর্কে রূপ নেয়। আপনি কি বোধ শক্তিহীন? এতোকাল এক সাথে থেকেও মতি গতি বুঝতে পারেন না? আমার ধারণা মতে, পরকীয়ায় নিমজ্জিত প্রায় সবাই প্রথম দিকে কাজটাকে পাপ বলেই বোধ করে, পরকালীন ভয়ে অথবা কেউ জানাজানি হওয়ার ভয়ে এগোতে চায় না। ঠিক এই সময়, চূড়ান্ত রূপ নেওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
যে কাজগুলো করতে বউকে বারবার পরপুরুষের দারস্থ হতে হয় সে কাজগুলো আপনি ব্যবস্থা করে দিন, অনিচ্ছাসত্ত্বেও পুরুষদের অবিরাম খোঁচাখুঁচিতে নারীর পদস্খলনের যে সম্ভাবনা থাকে তা অন্তত আপনার বউয়ের দ্বারা হবে না।
বাড়ির বউয়েরা অধিকাংশ সময় পাড়ার পুরুষদের লালসার বস্তুতে পরিণত হয়, পুকুরে খোলামেলা গোসল, কলতলা বা হাউজে যথাযথ পর্দার ব্যবস্থা না থাকা, ঘরের রুমগুলো আর সরাইখানায় কোন পার্থক্য না থাকায়। মা, বোন আর বউয়ের জন্য আলাদা ঘর, টয়লেট, গোসল খানা, বাড়ির চারপাশে দেয়াল, দরজায় পর্দা টাঙ্গাতে পারেন না? টাকাতো কম খরচ করেন না! এইসব ব্যবস্থা নিন, অন্তত আরো একটা সম্ভাবনা কমে যাবে।
বরের পরনারী আসক্তি থামানোর শক্তি নেই? বিশাল অংকের টাকা কাবিন লেখিয়েছেন যাতে স্বামী তালাক দিতে না পারে, আর সেটাই এখন উল্টো ঝামেলা হয়ে দাঁড়ালো। স্বামী তালাক দিতে গেলে এই টাকা দিতে বাধ্য, কিন্তু আপনি তালাক নিতে গেলে টাকা পাওয়ার চান্স কম, তাই সবকিছু জেনেও পরকীয়ায় আসক্ত স্বামীকে নিয়েই বসবাস করছেন। বেশি বুঝলে যা হয়! অতএব, ছোট বোনদের বিয়েতে নিশ্চয় এই লোভটার পুনরাবৃত্তি করবেন না!
তাছাড়া আপনার ভালবাসায় জোর এতো কম কেন, বিয়ের আগেই নিশ্চিত হয়ে যান স্বামী ছেড়ে দিবে! অল্প বেতনের চাকুরী আপনার পোষায় না, বেশি টাকা আয় করতে স্বামীকে সক্ষমতার বাইরে গিয়ে ঘুষ খেতে, অবৈধপথে টাকা আয় করতে স্বামীকে বাধ্য করতে পারেন, চোখ রাঙ্গানীতে বাবা, মা, ভাই বোন ছেড়ে আপনার কথায় উঠবস করাতে পারেন অথচ বিপথগামী থেকে বাচাতে পারেন না কেন? ছোট বোনসহ নানা সম্পর্কীয়া বোন, ভাবীদের সাথে স্বামীর অবাধ মেলামেশা দেখেও কখনো বাধা দিয়েছেন কি? না দিয়ে থাকলে বাধা দিন তবে কৌশলে, আশা করা যায় আপনি সফল হবেন।
স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে অন্যায় কাজ থেকে ফেরাতে বা কৃত অপরাধের শাস্তিস্বরূপ যে ব্যবস্থা ইসলাম বাতলে দিয়েছেন, এটাকে যারা সেকেলে মনে করেন, তারা এথিকস না নৈতিকতা দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে চান। অথচ এথিকস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পর তার জন্য চূড়ান্ত শাস্তি ও পুরষ্কারের ব্যবস্থা না থাকলে এথিকসের কার্যকারিতা খুব কম। ইসলামে আছে এথিকস এবং চুড়ান্ত পরিণতি (জান্নাত ও জাহান্নাম) যা কেবল পারে ব্যভিচার রোধ করতে পারে।
হারার আগেই হেরে গেলে চলবে? সৃষ্টিকর্তার নির্দেশিত পথে একটু চেষ্টা করে দেখেন। খোলামেলা কথা বলুন, তাতে মাইন্ড করলে সাধারণভাবে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরুন তাতে করে তার দ্বারা সংঘটিত অপরাধটির উল্লেখ না করলেও শুনতে শুনতে তার ভেতরে অনুশোচনার আগুন দায় দায় করে জ্বলে উঠবে, নিজের ভেতরে পরিবর্তন আনতে মন ছটপট করবে।
যদি ভেবে থাকেন, ভালবাসা দিয়ে তার সব জয় করবেন, রাখবেন পাপ থেকে দূরে, তাহলে বলব, এই কমন কোয়ালিটি কম বেশি সবার মধ্যেই থাকে। অন্য কারো কাছে গেলেও ভালবাসা পাবে। হয়ত আপনি ছাড়া আর কারো কাছে যাওয়া হয় নি বলে ভালবাসাও পাইনি, তাই আপনিই তার ধ্যান-জ্ঞান। শুধু ভালবাসবেন, তা নয়, সাথে সাথে অলঙ্ঘনীয় বিধানগুলো নিজে অনুশীলন করুন এবং আপনার জীবন সঙ্গীকেও অনুশীলন করান, তবেই হবে পাপ পংকিলতামুক্ত একটি সংসার, সর্বোপরি বিশ্ব সমাজ। আপনার প্রচেষ্টায় আল্লাহ সহায় হোন।