আমার ভাবনায় ইশ্বরের অনৈশ্বরিক কর্মকান্ড। পর্ব : এক।
আমি পরিশ্রম করে উপার্জন করে এনে নিজের ছেলেমেয়েকে, বাবা মাকে, আত্নীয়কে ,কিংবা আমার বাড়ির বিড়ালটাকে,কুকুরটাকে খাওয়াতে পারিনা।
আমি এত কিছু করেও খাওয়ানোর কৃতিত্ব পাইনা,সব কৃতিত্ব নাকি ইশ্বরের, আল্লার।
আল্লাই নাকি সকলের খাবারের ব্যবস্থা করেন ( সূরা আনা-আম আয়াত ১৫১) ।
খাবারের ব্যবস্থা তিনিই করলে পৃথিবীতে এত মানুষ না খেয়ে মারা যায় কেন? সুমালিয়ার দুর্বিক্ষের সময় খাবার নিয়ে ইশ্বর কোথায় গিয়েছিলেন? আছে কোন উত্তর?
হ্যা,হয়তো উত্তরে বলবেন যে,'ওদের পরিক্ষা নেওয়া হচ্ছে'।
একেমন পরিক্ষা? যে শিশুর ভালমন্দ বুঝ জ্ঞানই হয়নি সে কিভাবে কী পরিক্ষা দিবে?একজন মায়ের জ্ঞাতার্থে মা বেচে থাকতে তার শিশুকে না খাইয়ে মরতে দিতে পারেনা।
এমনও হয়েছে সন্তানকে দারিদ্র্যের কারনে খাবার দিতে অক্ষম হওয়ায় মাবাবা কষ্টে নিজেরাই গত হয়ে গেছে।সন্তানও ক্ষুধার জন্ত্রনায় ছটফটিয়ে মারা গেসে।
সূরা আনাম আয়াত ১৫১ ,অনুযায়ী দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তানকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন, কারন খাবার আল্লাই দেন।
আল্লাহ অসীম দয়ালু, উনার তুলনায় বাবামাকে দয়া অল্পই দিয়েছেন। এই অল্প দয়া নিয়েই সন্তানের কষ্ট সইতে না পেরে মারা গেছেন আর আল্লাহ অসীম দয়ালু হয়েও একটা শিশুর ছটফটানি সহ্য করলেন কীভাবে? অথচ খাবারের দ্বায়িত্ব তিনি নিয়েছেন?
খাবারের দ্বায়িত্ব নিয়েও যে আল্লার বান্ধাকে খাবারের অভাবেই মরতে হয়,সেই নির্লজ্জ, অথর্ব, নিষ্ঠুর আল্লাকে আমি কীভাবে মনে স্থান দিব দয়ালু, রিযিকদাতা বলে?
আরেকটা উত্তর দিতে পারেন 'অন্যদের পরিক্ষা নিচ্ছেন, অন্যরা খাবার দেয় কীনা? ''
এটাও মাঠেই মারা যায়,কেননা আল্লাই বলছে রিজিকের মালিক আমরা না,মালিক আল্লাহ।এমনকি মিকাঈল ফেরেশতাও রাখা হয়েছে রিজিকের বন্টনের জন্য।উনি যার রিজিকে যতটুকু রেখেছেন ততটুকুই সে পাবে।
তারপরও যদি বলেন রিজিকের ব্যবস্থা করার ক্ষমতা মানুষেরও আছে তাহলে কুরানের (৬:১৫১) আয়াতের "দারিদ্রের জন্য সন্তানকে হত্যা করো না, রিজিক তুমরা দেওনা,তোমাদেরো রিজিক আমিই দেই"" এই অংশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
তারপর যদি বলেন রিজিক আল্লাই দেন আমাদের উছিলা করে।তাহলেও কথা থাকে যে,আমি আল্লার উপর নির্ভরশীল নই,আল্লাই আমার উপর নির্ভরশীল।
কেননা আমি যতক্ষন পর্যন্তনা আমার সন্তানের খাবারের ব্যবস্থা করবো ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লার অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই।
তিনি অসহায়ের মত আমার পানে চেয়ে থাকে কখন আমি ব্যবস্থা করবো আর উনি রিজিকের কৃতিত্ব নিবেন।এরুপ অসহায়, আমার উপর নির্ভরশীল ইশ্বরের উপাসনা আমি করবো? করবো না।
তারপরও যদি বলেন আমার সন্তানকে আমি খাওয়াইনি আল্লাই আমাকে দিয়ে খাইয়েছেন( আল্লার ইচ্ছায় আমি খাইয়েছি) বা আল্লার হুকুমেই আমি আমার সন্তানকে খাইয়েছি,সুতরাং রিজিকের মালিক আল্লাহ।
তাহলেও সমস্যা আছে,সেটা হল আল্লাহ যে বলেছেন 'মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন" তা মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়। আল্লাহর কাজে বা আল্লার ইচ্ছা পূরনের জন্য মানুষকে ব্যবহার করলে বা মানুষকে দিয়ে কিছু করালে তখন সেই মানুষের ইচ্ছাকে আর স্বাধীন ইচ্ছা বলা যায় না।
তাই আল্লাকে রিজিকদাতা হিসেবে আমি মানিনা।
ঈশ্বরের অনৈশ্বরিক কর্মকান্ড। পর্ব : দুই।
,
,
কেউ কোন অপরাধ করলে তাকে সেই অপরাধের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়,যেন সে আর অপরাধ না করে।আর এটাই সর্বজন স্বীকৃত।
এটা কখনই যুক্তিগত বা উচিৎ হবেনা সেই অপরাধীকে আরো অপরাধের সুযোগ করে দেওয়া।
যেমন, কেউ আপনার বাড়িতে চুরি করলো, সেই চোরকে ধরে আপনি বিচারের আওতায় আনবেন আর এমন ব্যবস্থা করবেন যাতে ভবিষ্যতে আর সে চুরি না করে।আপনি কিন্তু তাকে আরো অপরাধ করার জন্য বা আবার অন্যের বাড়িতে চুরি করতে পারে এমন সুযোগ করে দিবেননা, এটাই স্বাভাবিক।
,
,
তাহলে আসুন এবার ইসলাম ধর্ম মতে সৃষ্টিকর্তা আল্লার সম্পর্কে বলি।
,
আল্লাহ আযাযিল /ইবলিশকে বলেন আদমকে সেজদা করতে, ইবলিশ তা করেনি তাই সে আল্লার মতে অন্যায় করেছে।এর জন্য আল্লাহ তাকে তৎক্ষণাৎ শাস্তি না দিয়ে শুধু অভিশপ্ত করলেন আর এর পাশাপাশি তাকে আরো ক্ষমতা দিয়ে ছেড়ে দিলেন। ইবলিশ আল্লার সামনেই বললো সে মানুষের ক্ষতি করবে,তারপরও আল্লাহ তাকে আটকালেন না।
,
আল্লাহ তাকে তার শাস্তিস্বরুপ জাহান্নামে দিতে পারতেন বা আটকে রাখতে পারতেন।তা না করে ইবলিশকে আরো ক্ষমতা দিলেন যেন সে আরো কিছু মানুষকে অপরাধী বানাতে পারে।
যেমন, আপনি ঐ চোরটিকে ছেড়ে দিলেন যাতে সে আরো কয়েক জনকে চোর বানাতে পারে এই ব্যবস্থাও করে দিলেন,তারপর সেই চোর সহ অন্যান্য চোরদেরো (যাদের সে চুরি শিখিয়েছিল) সবাইকে শাস্তি দিবেন,এটা কোন যুক্তিক কথা হলো ? ??
,
আপনি প্রথমেই যদি সে চোরটিকে শাস্তি দিতেন বা অন্যভাবে সঠিকপথে আনতে ন ,তাহলে পরের মানুষগুলো হয়ত চোর নাও হতে পারতো। ।
,
আপনি অপরাধির শাস্তি দানে বিলম্ব করে আরো অপরাধী তৈরি করতে পারেননা । ছোট ক্ষতি এড়াতে গিয়ে বড় ক্ষতি করতে পারেননা।
তাই আল্লাহ যদি ইবলিশকে রুখতে পারত তাহলে কোটি কোটি মানুষ বিপথে যেত না আর তথাকথিত পরিক্ষাও( বিস্তারিত পরের পর্বে) সুষ্ঠ হত।
,
ইবলিশ নাকি এত ক্ষমতা পেয়েছে আল্লার অনেক ইবাদত করেছে এর বিনিময়ে চেয়ে,আর আল্লাও; ইবলিশ ওনার ইবাদত করেছে বলে আবেগে আপ্লুত হয়ে অন্যায় আবদারও মেনে নিলেন???
,
যেমন ধরুন ঐ চোরটি আপনার বাড়িতে চুরি করেছে ঠিকই আবার কিছু ছাড়ও দিয়েছে যেমন আপনার ঘুমের ডিস্টার্ব করেনি,তালা না ভেংগে খুলে নিয়েছে ইত্যাদি। তাই আপনি আবেগাপ্লুত হয়ে কী চুরের মর্জি মানবেন,তাকে আরো চুরি করার জন্য ছেড়ে দিবেন?? সে চুরি করে ভুল করেছে আপনিও কি ভুল করে তাকে অসৎ পথে ছেড়ে দিবেন ?? না।
,
তাহলে ইবলিশের ভুল হয়েছে বলে আল্লাও তাকে সুপথে না এনে বিপথে ঢেলে দিলেন কেন??
,
পথের মাঝে একটা গাছ পড়ে আছে,এখন সবাইকে অন্যদিকে ঘোরে যেতে না বলে গাছটকেই সরিয়ে ফেললেই ভাল, তেমনি কোটি মানুষকে সচেতন করার চেয়ে ইবলিশ শয়তানকে সরিয়ে ফেলাই ভাল।
আল্লাহ কী জানেনা " Prevention is better than cure,,""
,
,
এখানে ত্যানা প্যাচাতে পারেন এই বলে যে" আল্লাই ইবলিশকে পাঠিয়েছে মানুষের ইমানের পরিক্ষা করার জন্য,যে মানুষ আল্লাকে ভুলে শয়তানকে অনুসরণ করে কিনা??""
ঈশ্বরের অনৈশ্বরিক কর্মকান্ড। পর্ব : তিন ।
,
,
এই জীবনটা হল পরিক্ষা ,পৃথিবী হল পরিক্ষার হল
আর আল্লাহ হল পরিক্ষক; কুরান, হাদিস ও ইসলামিস্টদের মতে।
,
,
আল্লাহ মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কে আল্লাহ ,নবির কথা মত চলল আর কে চলল না, ন্যায়,অন্যায়, সত্য,মিথ্যা, আচরণ এসবের উপরই পরিক্ষা।।এর ফলাফল জানা যাবে রোজ হাশরের দিনে।
আল্লাহ যেহেতু পরিক্ষক তাই পরিক্ষা যেন সুষ্ঠ হয় সেই দ্বায়ভার আল্লাহর উপরই।
যে যেরকম পারে সেরকমই পরিক্ষা দিবে।এখানে যদি পরিক্ষক কোন ছাত্রকে সাহায্য করে তাহলে পরিক্ষা সুষ্ঠ হয়না এবং পরিক্ষকও অসাধু বলে অখ্যায়িত হয়।তেমিনি ডিস্টার্ব করলেও তাই।
,
তাহলে আসুন দেখা যাক, আল্লাহ উনার দায়িত্ব পালনে কতটা নিষ্ঠাবান।
,
সকলকে সমান চোখে দেখে আল্লাহ কি সবাইকে যার যার মত করে পরিক্ষা দিতে দিয়েছে ? ?? না। যেমন----
,
,
ক)আল্লাহ নুহকে সৎপথে পরিচালিত করেছিলেন (সূরা আনাম : 84) আল্লাহ কেন পরিক্ষার হলে হস্তক্ষেপ করে কাউকে সুযোগ করে দিবেন, স্বজনপ্রীতি দেখালে কী পরিক্ষা সুষ্ঠ হয়??
,
খ)আল্লাহ না চাইলে ইসলাম গ্রহণ আকাশে আরোহনের মত কঠিন। এবং তিনি যাকে পথ দেখাতে চান তার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দেন (আনাম :১২৫) তাহলে ইসলাম মানা অর্থাৎ পরিক্ষা শুধু ছাত্র চাইলেই ভাল হবেনা পরিক্ষকের উপর নির্ভর করে!!!
,
গ)//সূরা আল আন-আম:123 - আর এমনিভাবে আমি প্রত্যেক জনপদে অপরাধীদের জন্য কিছু সর্দার নিয়োগ করেছি-যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করে। //
আল্লাই যদি অপরাধ বৃদ্ধির জন্য সর্দার নিয়োগ করে তাহলে আপরাধিদের শাস্তি দিলে মুলহুতা আল্লাহকেও শাস্তি দিতে হয় !!!!!
,
ঘ)আল্লাহ কাফেরদের নিধনের জন্য মুসলিমদের পক্ষে এক হাজার ফেরেশতারা লাগিয়ে দিয়ে কাফিরদের পরাজিত করে (আনফাল আয়াত ৯)
তাহলে পরিক্ষা কিভাবে সুষ্ঠ হয়?
কাফেরদের আল্লাহ কেন পরিক্ষার হলেই শাস্তি দিয়ে দিলেন? তারা কি মরতো না? মরার পর অর্থাৎ পরিক্ষার ফলাফলের পরে কিি শাস্ দেওয়া যেতনা? ?
,
,
নুহের সময় অনেককেই ডুবিয়ে মারলেন পরিক্ষার হলেই পরিক্ষা শেষ হবার আগেই।
পরিক্ষার সময় শেষ হবার আগেই কেন কিছু ছাত্রের খাতা নিয়ে নিবেন হয়ত বলতে পারেন, হলে খারাপ আচরন করলে খাতা নেওয়া যায় ।।
কিন্তু আল্লাহ এক্ষেত্রে পারবেন না কেননা পরিক্ষাই হচ্ছে আচরনের।আবার ভাল খারাপ দুইটাই করার ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছে।তাহলে অন্যদের কেন ডুবিয়ে মারলো পরিক্ষার শেষ না হতেই??
,
আবার হাজার ফেরেশতা পাঠিয়ে কেন কাফিরদের মারা হল পরিক্ষা শেষ হবার আগেই??
,
,
যদি বলেন'কাউকে সাহায্য করার জন্য আল্লাহ ওদের মারেনি, ঐ কাফেরদের মৃত্যু ওভাবেই হবে লেখা ছিল ।আর আল্লাহ পরিক্ষার হলে সাহায্য বা ডিস্টার্ব করেননা ""
,
***তাহলে আল্লাহ নবিকে সাহায্য করার জন্য ফেরেশতা পাঠায়নি? তাহলে আল্লাকে আমদের মিথ্যা বললেন কেন?যে,তিনি বিভিন্ন নবিকে যেমন ইউনুসকে সাহায্য করেছেন মাছের পেট থেকে উদ্ধার করেছেন??? হলে মানে দুনিয়াতে যদি কাউকে সাহায্য না করেন তাহলে দুয়া ইউনুসের নাকি অনেক ফজিলত? এর কি হবে?? আল্লা সাহায্য না করলে আল্লার কাছে সাহায্য চেয়ে সময় নষ্ট করবো কেন??
,
এর পরও যদি মুমিন উত্তর দিতে পারে
,
---- "ভাল কাজের জন্য সাহায্য চাইলে সাহায্য করবেন"
,
***এটাও ঠিক না,কারন চোরও ত আল্লার কাছে সাহায্য চায় যেন সে ধরা না পড়ে" আল্লা ত তাকেও সফলভাবে চুরিতে সাহায্য করেন???
,
----আরে না,আল্লাহ চুরির ক্ষেত্রে সাহায্য করেননা।
,
****তাহলে আল্লার সাহায্য ছাড়াই শুধু নিজ শক্তিতেই চুর সফল হয়ে যায়??
---- আরে না,চোর ত ধরাও পড়ে,,,
****তাই নাকি? তাহলে যে ক্ষেত্রে ধরা খেয়েছে সেক্ষেত্রে আল্লাহ জয়ী, কারন তিনি সাহায্য করেনি তাই ধরা পড়েছে,আর যেক্ষেত্রে ধরা পড়েনি সেক্ষেত্রে চোর জয়ী কেননা আল্লার সাহায্য ছাড়াই সফল।
----আল্লাহই জানেন
,
,
,মোদ্দাকথা হল,আল্লাহ সাহায্যই বা করতে যাবেন কেন,নিজের মত করে পরিক্ষা দিতে দিক।।।।
,
,
, #এবার আসি ঝামেলা করার প্রসংগে, ,
,
আল্লাহ পরিক্ষায় ঝামেলা করার জন্য পার্মানেন্ট ভাবে ইবলিশকে নিযুক্ত করেছেন (গত পর্বে প্রমান করেছি ইবলিশের চেয়ে দোষ আল্লার বেশি এক্ষেত্রে ) মানুষকে পরিক্ষায় ডিস্টার্ব করার জন্য।
,
ধরেন,একটা দৌড় প্রতিযোগিতা চলার সময়ই কোন দৌড় বিদকে আটকে রাখলেন কিছুক্ষণ পর ছাড়লেন তারপর সে যদি পুরষ্কার না পায় তাকে কিন্তু দোষ দেওয়া যায় না।
তাহলে মানুষের পরিক্ষা চলার সময়ে ইবলিশ কেন ডিস্টার্ব. করবে? তাহলেতো পরিক্ষা সুষ্ঠ হল না।
,
এখন যদি বলেন, "আল্লাহ এটাই পরিক্ষা করছে আমরা আল্লার দেখানো পথে চলি নাকি ইবলিশের দেখানো পথে চলি??
,
,
*** সবচে' বড় প্যারাডক্স টা তো এখানেই ,কিভাবে কেউ বুঝবে কোনটা আল্লার দেখানো আর কোনটা ইবলিশের দেখানো কাজ।
,
#আল্লাহ ও #ইবলিশ দু'জনই ত একই ছাচে গড়া।তাই দু'জনই কাজকে শোভন করে দেখায়,,,,,যেমন
,
সূরা আল আন-আম:108 - তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে দিয়েছি।//
,
এবার শয়তানের ক্ষেত্রে,,,
,
//সূরা আল-আনফাল):48 - আর যখন তাদের কাজকে শোভন করে দিল শয়তান তাদের দৃষ্টিতে এবং বলল যে, আজকের দিনে কোন মানুষই তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর আমি হলাম তোমাদের সমর্থক,,,, //
ঈশ্বরের অনৈশ্বরিক কর্মকান্ড। পর্ব : চার ।
,
#কোরবানী_উপলক্ষে_স্পেশাল_পর্ব
,
ধরেন এক মায়ের দুটি সন্তান। সেই মায়ের আদেশে বড় সন্তানটি ছোট সন্তানটিকে মেরে ফেললো আর মা খুব খুশি হলেন ।
তাহলে বুঝতে হবে মা ও বড় ছেলে, দুজনেরই মাথায় সমস্যা আছে।
,
এবার আসুন , ঈশ্বর ও উনার সৃষ্টি নিয়ে কথা বলা যাক ,,,,,,,
,
দুটোজ়ীবন মানুষ ও প্রাণী। এ দুটোই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সৃষ্টি ।
এক সৃষ্টিকে অন্য সৃষ্টি হত্যা করলে যদি ঈশ্বর খুশি হন তাহলে সেই ঈশ্বরের ঈশ্বরত্ব নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উঠে।
,
মুসলিমদের আল্লাহ উনার বান্দাদের হুকুম করেন নিরীহ পশুদের জবাই করতে আর এটা করতে পারলে আল্লাহ ও বান্দা উভয়ই খুব খুশি হয়।অন্যদিকে ভগবানও উনার ভক্তদের পশু বলি করতে বলেন এবং এটা করতে পারলে উভয়ই খুব খুশি হন।
এরপরও এদেরকে দয়ালু বলে মনে স্থান দিতে হবে।
,
#যতসব_নির্দয়_কাজ_করে_এইসব_ঈশ্বরকে_খুশি_করতে_হয়_কেননা_ঈশ্বর_যে_দয়ালু_তাই_তিনি_নির্দয়কাজ_পছন্দ_করেন
,
এখানে যে যে প্রশ্ন গুলো করতে পারেন,,,
ক)আপনি কি প্রাণী হত্যা করেননা?
,
উত্তর : হ্যা,করি।আর সেটা আমি বাধ্য হয়েই করি এবং এক্ষেত্রেও কথিত দয়ালু ঈশ্বরই দ্বায়ি কেননা তিনিই আমাকে এমনভাবে সৃস্টি করেছেন যে আমাকে জীব হত্যা করেই বেচে থাকতে হয় তিনি এই খাদ্যশৃঙ্খল অন্যভাবেও করতে পারতেন যেভাবে করলে আমাকে জ়ীব হত্যা করতে হতনা।
,
আর আমি হত্যা করি এটা যদা আমার অপরাধ হয় যদিও বাধ্য হয়ে করি তাহলে ঈশ্বরের অনেক উপায় থাকতেও যে তিনি জীব হত্যা করলর খুশি হন এটাও নেহায়েত কম অপরাধ নয় কথিত ঈশ্বরের জন্য
,
খ)উপরের উদাহরনে যদিও বলতে পারেন যে ছোট ছেলেটি হয়তো অপরাধ করেছিল তাই হত্যা করা হয়েছে।
,
উত্তর: আচ্ছা মানলাম মাও বড় ছেলে অপরাধী ছেলেকে মেরেছে কিন্তু প্রাণী কী অপরাধে আল্লাহ, ভগবান যথাক্রমে জবাই ও বলি করতে বলে।
আবার যে ব্যক্তি জবাই বা বলি করলো ঈশ্বর তার প্রতিই খুশি হন যে জবাই বা বলি হল তার প্রতি নজর নেই।।।
,
#শেষ করছি বাঙালি দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর এর একটা কথা দিয়ে" যে কুরবানি দিল তার যদি বেহেস্ত নসিব হয় তাহলে যে কুরবানি হল তার কেন বেহেস্ত নসিব হবেনা " ।
ঈশ্বরের অনৈশ্বরিক কর্মকান্ড। পর্ব : পাঁচ ।
,
,আস্তিকদের যদি বলা হয়"আপনার ঈশ্বরকে তো কাউকে সাহায্য করতে দেখিনা?"
তখন আস্তিকরা স্ব স্ব ঈশ্বরের ঈশ্বরত্ব টিকানোর জন্য এই বাক্যটিই ব্যবহার করেন"" ঈশ্বর সরাসরি কাউকে সাহায্য করেননা,উনি উসিলার মাধ্যমে সাহায্য করে,যেমন ধরেন ;ডাক্তার হল উসিলা আসলে রোগ ভাল হয় ঈশ্বরের কৃপায়। ।""
,
,
,,তো আসুনা দেখি এতে ঈশ্বরের ঈশ্বরত্ব টিকে কিনা?
,
,তাহলে আমরা জানলাম যে,ঈশ্বর উসিলার মাধ্যমে সাহায্য করে কিন্তু কেন উনার উসিলার প্রয়োজন হয়? তবে কি তিনি সর্বশক্তিমান নন??
,
,মানুষ যখন কাউকে সাহায্য করতে চায় কিন্তু অক্ষম তখন সে অন্য জনের মাধ্যমে সাহায্য করে।তাহলেতো মানুষই এগিয়ে ঈশ্বরের চেয়ে কেননা ঈশ্বরের উসিলার প্রয়োজন হয় আর মানুষ সরাসরি ও অন্যেরমাধ্যমে দুইভাবেই করতে পারে।,ধরেন
,
,
,এক বনে এক শিশু হারিয়ে গিয়ে কাঁদছে। তখন ঈশ্বরের ইচ্ছা থাকা সত্বেও শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারবেনা কারন তখন তিনি উসিলার অপেক্ষায় থাকবেন। কখন কোন মানুষ ঐ পথে যাবে তো উদ্ধার করবে।।,হয়ত
,
কোন আস্তিক ভাই ঈশ্বরকে কূলষিত হওয়া থেকে বাঁচাতে বলতে পারেন""ঈশ্বর উদ্ধার করার ইচ্ছা করলে অপেক্ষা করার প্রয়োজন নাই, তিনিই মানুষকে ওই পথে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেন ।",
,
---যদি আপনার কথা মেনেও নেই এখানে দুইটা সমস্যা থেকেই যায়,,,যেমন
,
ক)ঈশ্বর উসিলা হিসেবে মানুষকে ব্যবহার করছে। আবার ঈশ্বর বলছে উনি মানুষকে দিয়েছেন স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ।যা পরস্পর বিরোধী
। ঈশ্বরের ইচ্ছা পুরনের জন্য কোন মানুষকে ব্যবহার করলে সেই মানুষের আর স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু থাকেনা।
,
,খ)ঈশ্বর কি কোন কাজে ব্যর্থ হন? কখনই না,তাইতো? ?
ত যদি শিশুটি উদ্ধার না হয়, তাহলে কি বলতে পারি ঈশ্বর শিশুটিকে উদ্ধার করতে বা উসিলা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন??
,
***না,ঈশ্বর হয়তো চায়নি শিশুটি উদ্ধার হোক,এর মাধ্যমে পরিক্ষা নিচ্ছেন হয়তো,যে সে বিপদে পরলেঈশ্বরকে ব্যাতিত অন্য কাউকে ডাকে কিনা??? ,
,
,
---পরিক্ষা? যে শিশু ঈশ্বর কি এটাই বুঝেনা সে কিভাবে পরিক্ষা দিবে??
,
,***হয়ত তার বাবা-মার পরিক্ষা নিচ্ছেন, ,
,
,---বাবা-মার অপরাধের জন্য শিশুকে শাস্তি দিলে,ঈশ্বর ন্যায়বিচারক হন কিভাবে??
,
***বাবা-মার কাছ থেকে সন্তান দুরে সরিয়ে বাবামাকে শান্তি দিচ্ছেন,,
,
---ভাল কথা।বাবামাকে শাস্তি দিবেন কিন্তু ছোট্ট শিশুকে কেন কষ্ট সইতে হচ্ছে???,
,
,
,,যাক সে কথা, ,কিছুদিন আগে শাজাহানপুরে একটি শিশু পাইপ লাইনে পড়ে যায়,,,তখন ঈশ্বর ত সরাসরি সাহায্য করেননা তাই উসিলা আনলেন এক জন দুইজন নয় শতাশত মানুষ দিয়েও উদ্ধারকরতে না পারলেন না শেষে স্থানীয় মানুষকে দিয়ে অভিনব যন্ত্র বানিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করলেন কিন্তু ইশ্বর উসিলা তৈরিতে বেশি সময় নিয়ে ফেলেছিলেন তাই শিশুটি মারা যায়।
,
,
তাহলে কি বলতে পারি জিবিত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করতে ঈশ্বর ব্যর্থ হয়েছেন?
,
ঈশ্বরকে বাচাতে হয়তো কেউ বলবেন,
,
,***ঈশ্বর নয় মানুষই ব্যর্থ হয়েছে,
,
,--- বাহ,কি সুবিধাবাদী আপনার ঈশ্বর বেচে গেলে উনি বাঁচিয়েছেন আর মরে গেলে মানুষের ব্যর্থতায়,
,
,
***আসলে হয়েছে কি,ঈশ্বর শিশুটির মৃত্যু ওখানে ওভাবেই রেখেছিলেন তাই মানুষ শত চেষ্টা করেও বাচাতে পারলো না।,
,
---তাহলেতো আরো সমস্যায় ফেলে দিলেন,,,ভবিষ্যতে কেউ বিপদে পড়লে তাকে উদ্ধারের নামে বৃথা চেষ্টা আর করবো না কারন বিপদগ্রস্থের কপালে উদ্ধার থাকলে এমনিতেই উদ্ধার হবে অন্যথায় শত চেষ্টা করেও লাভ নেই,,
,
,
,***ভাই,ঈশ্বর ভাল কাজ করতে বলেছেন, আপনি আপনার চেষ্টা চালিয়ে যান,,,
,
---দিলেনতো আরো সমস্যা বাধিয়ে,,ধরেন ঈশ্বর মাস্টার প্লেন করে রেখেছেন যে একজনের পানিতে পড়েমৃত্যু হবে,এখন আমি তাড়াতাড়ি করে যদি তাকে উদ্ধার করে ফেলি,,,আর সে যদি বেচে যায় তাহলেতো ঈশ্বরের মাস্টার প্লেনের বারো ঘটিকা বেজে যাবে,,,এত গুনাহের কাজ আমি কিভাবে করবো?
,
***আরে না,আপনাকে রেখেই উনি প্লেন করেছেন,আপনি চাইলেও এর অন্যথা করতে পারবেননা ,
,
,
,---তার মানে আমিও মাস্টার প্লেনের অংশ ,তাহলে আমার স্বাধীন ইচ্ছা কোথায়??
,
,
উনি যদি আমাকে গুনাহগারের ভুমিকায় রাখেন,তবেতো আমি শেষ, ,
আমার মনে হয় উনি আমাকে নাস্তিকের ভুমিকায় অভিনয় করতে দিয়েছেন,আচ্ছা আমি যদি আমার রুল অর্থাৎ নাস্তিকতা ঠিকমতো করতে পারি আমাকেও কি জান্নাত,হুর,স্বর্গ ইত্যাদি দিবেন???
,
,
এখন শেষ করবো বিভিন্ন ধর্মের কথিত ইশ্বরের কিছু উসিলার উদাহরণ দিয়ে,,
,
,
ক) ইসলাম ধর্মের মতে ঈশ্বর আল্লাহ যিনি সর্বশক্তিমান। অথচ উনার বান্ধাদের ( মানুষের) কাছে উনার বানী পাঠাতে হয় নবীদের উসিলা হিসেবে ব্যবহার করে,এখানেই শেষ নয়,,সেই নবীর কাছে বানী পৌঁছাতে হয় আবার জীবরাঈলকে মাধ্যম বা উসিলা করে,,,এই না হলে সর্বশক্তিমান! ,
,
,
খ)হিন্দু ধর্মে মহা শক্তিধর রামের উসিলা বা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে হয় হনুমানকে সীতাকে খোজার জন্য,,,
,
আরো অনেক আছে এত বলে পোস্ট আর দীর্ঘ করবো না,,।
,
সময় নিয়ে, ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ।