Wednesday, October 21, 2015

ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ১,২,৩)


ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ১)

হযরত মূসা আঃ ইংরেজিতে Moses হিব্রু מֹשֶׁה ও আধুনিক Mošə তিবেরিয়ান Mפנeh এবং আরবি ভাষায় موسى Mūsa Geez Musse অথাৎ তিনি হলেন ইহুদি খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মে স্বীকৃত অথবা প্রেরিত একজন রাসুল । তিনি মোজেস নামেও পরিচিত ছিলেন । কোরআনে মুসা আঃ এর নাম অন্য নবীদের তুলনায় বেশি উল্লেখ করা হয়েছে । ধারনা করা হয় যে মুসা আঃ ১২০ বছর পৃথিবীতে ছিলেন । হযরত মুসা আঃ এর সম্প্রদায়ের নাম ছিল বনী ইসরাঈল । তার মুজেযাসমূহ বিগত অন্যান্য নবী রসূলগণের তুলনায় যেমন সংখ্যায় বেশী তেমনিভাবে প্রকাশের বলিষ্ঠতার দিক দিয়েও অধিক । এমনিভাবে তার সম্প্রদায় বনী ইসরাঈলের মূর্খতা এবং হঠকারিতাও বিগত উম্মত বা জাতিসমূহের তুলনায় বেশী কঠিন । তদুপরি এই কাহিনীর আলোচনা প্রসঙ্গে বহু জ্ঞাতব্য বিষয় এবং হুকুম আহকামের কথা এসেছে ।


হযরত মুসা আঃ এর সময় যে ফেরাউন ছিল তিনি ১৮তম রাজবংশের তার নাম কাবুস বলে উল্লেখ করা হয় । সে যুগে ফেরাউন হতো মিসরের সম্রাটের খেতাব । ফেরাউন যখন স্বপ্নে দেখলেন বনী ইসরাঈল বংশে জন্মগ্রহণকারী এক পুত্র সন্তানের কাছে তিনি বিতাড়িত হবেন । এবং তার রাজত্বের অবসান ঘটবে ও তার প্রবর্তিত দ্বীনের পরিবর্তন হবে । তখনই তিনি তার পারিষদবর্গকে এ বিষয় অবিহত করলেন এবং এ বিষয় জানতে চাইলেন । হামান ছিলেন ফেরাউনের মন্ত্রী । তাদের স্বপ্নের ব্যাখার তিত্তিতে ফেরাউন শাঙ্কিত হয় এবং তার প্রতিকার হিসেবে তিনি ফরমান জারি করেন যে বনী ইসরাঈলের কোন নবজাতক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করলেই যেন তাকে মেরে ফেলে । প্রতিটি সন্তান সম্ভবা মায়ের প্রতি যেন কঠর নজরদারী দেওয়া হয় এবং যাতে তাদের ঘরে কোন পুত্র সন্তান জম্মালে তাকে সাথে হত্যা করা হয় । এভাবে কিছুকাল অতিবাহিত হওয়ার পর বনী ইসরাঈলের পুত্র সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে এবং এতে করে ফেরাউনের সম্প্রদায়ের লোকজন আশংকা প্রকাশ করে যে বনী ইসরাঈল বংশের বিলুপ্ত ঘটলে তাদের দাস এবং শ্রমিকের অভাব হবে এবং দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে । তারা এ আশংকার বিষয়টি ফেরাউনকে অবহিত করেন । অতঃপর তিনি নির্দেশ দেন যে বছর অন্তর অন্তর যেন পুত্র সন্তান হত্যা করা হয় তবে গোপনে গোপনে সার্বিক হত্যার ঘটনা কার্যক্রম অব্যাহত থাকে । বর্ণিত আছে যে বছর হত্যার আদেশ রহিত ছিল সেই বছরই হযরত হারুন আঃ জন্মগ্রহণ করেন । আর হত্যার আদেশ যখন বলব এবং কার্যকরী ছিল সেই বছর হযরত মূসা আঃ তার মায়ের পেটে আসেন । বিষয়টি তার স্বীয় কন্যা মরিয়ম ব্যতীত আর কেউ জানত না । কাবেলা নামক এক কিবতী স্ত্রী মূসার মাতার প্রতি প্রহরী রূপে নিযুক্ত ছিলেন । ভূমিষ্ট কালীন সময়ে সে হাজির হয় সদ্যোজাত মূসার রূপ লাবণ্য দর্শনে কাবেলা মুগ্ধ হয়ে পড়ে এবং শিশুর প্রতি তার স্নেহ মায়া সৃষ্টি হয় । সে মূসার জননীকে অভয় দিয়ে বলে তুমি চিন্তা করো না আমি এই বিষয়ে বা তোমার বিষয় কিছু প্রকাশ করিব না । এভাবে মূসা জননী শিশু মূসাকে তিন চার মাস পর্যন্ত বুকের দুধা খাইয়ে গোপনে বড় করতে থাকেন । শিশু মূসার জন্মের পর থেকেই উম্মে মূসা বিচলিত হয়ে পড়েন এই ভেবে না জানি এই সংবাদ ফিরআউনের দরবারে কখন পৌছে যায় । নিষেধাজ্ঞার কালে গর্ভধারণ পুত্র সন্তান প্রশব এই সমগ্র বিষয়টি উম্মে মূসাকে সার্বক্ষণিকভাবে চিন্তাক্লিষ্ট এবং তটস্থ করে রাখতো। ভয় এবং শংকায় তার দিন অতিবাহিত হতে থাকে । কিভাবে শিশুটিকে বাচিয়ে রাখা যায় এই ভেবে তিনি সব সময় দুশ্চিন্তা থাকতেন । যখন আর মূসার উপস্থিতি গোপন রাখা সম্ভব ছিল না তখন তার মা তাকে আল্লাহুর হুকুমে শিশু মূসাকে স্থাপনপূর্বক চাদরে আবৃত করে একটি ঝুড়িতে রেখে নীল নদে ভাসিয়ে দেন । আল্লাহুতাআলা সূরা আল কাসাসের ৭ নং আয়াতে বলেনঃ
( আমি মূসা জননীকে আদেশ পাঠালাম যে তাকে স্তন্য দান করতে থাকো । অতঃপর যখন তুমি তার সম্পর্কে বিপদের আশংকা করো তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ কর এবং ভয় করো না দুঃখও করো না । আমি অবশ্যই তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে পয়গম্বরগণের একজন করবো । )

ঝুড়িটি ভাসতে ভাসতে ফেরাউনের প্রাসাদ সংলগ্ন বাগানে থেমে থাকে । ফেরাউনের লোকজন এটিকে উঠিয়ে নেন এবং পরবর্তীতে ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া তার নিকট নিয়ে এল । হযরত মূসা আঃ দেখতে ছিলেন অনেক সুন্দর । আর ফেরাউনেরও কোন পুত্র সন্তান ছিলো না । তার ছিলো শুধু একটি কন্যা সন্তান । পরবর্তীতে যে ফেরাউনের সিংহাসনের বসেন । শিশু দর্শনে সবার মন স্নেহসিক্ত হয়ে উঠে । বিশেষ করে ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়ার কোমল অন্তর মাতৃস্নেহে বিগলিত হয় । বিষয়টি ফেরাউনকে অবহিত করা হলে তিনি শিশুটিকে মেরে ফেরার নির্দেশ দেন কিন্তু এতে স্ত্রী আসিয়া বাঁধা দেন । আল্লাহু তাআলা কোরআনের সূরা আল কাসাসের ৯ নং আয়াতে উল্লেখ করেনঃ
"( ফেরাউনের স্ত্রী বলল এ শিশু আমার ও তোমার নয়নমণি তাকে হত্যা করো না । এ আমাদের উপকারে আসতে পারে অথবা আমরা তাকে পুত্র করে নিতে পারি । )"
সন্তানের থেকে বিচ্ছেদের ফলে মূসার মায়ের হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে ছিল । মূসার ভগিনীকে মরিয়ম বললেন তাকে অনুসরণ করার জন্য এবং সে তার কথামত অজ্ঞাতসারে অপরিচিতা হয়ে তাকে অনুসরণ করলো । ফেরাউনের স্ত্রীর তত্ত্বাবধানে এবার শিশু মূসা প্রতিপালিত হতে থাকে । এখানে একটি সমস্যা দেখা দেয় আর তা হল স্তনপান নিয়ে । শিশু মূসা কোন ধাত্রীরই স্তন তখন পান করতেছিলেন না । তখন বিষয়টি ফেরাউন স্ত্রী আসিয়াকে গভীরভাবে ভাবনায়ে ফেলে দেয় । অবশেষে মূসার ভগিনী যে গোপনে সমস্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছিল সে এসে আবেদন জানায় যে আমি এমন একজন মহিলার কথা জানি যার স্তন এই শিশু পান করতে পারে । তখন তাকে সেই মহিলাটিকে হাজির করতে আদেশ দেয়া হল । পরে সে নিজের মাতা অর্থাৎ মূসার জননীকে সবার সামনে উপস্থিত করেন । স্তন দেয়া হলপর মূসা নির্বিঘ্নে দুগ্ধ পান করেন । এই ঘটনায় সবাই বিস্ময়াভিভূত হয়ে পরে । উম্মে মূসাকে রাজপরিবারের অবস্থান করার অনুমতি প্রদান করা হল । কিন্তু তিনি সেখানে থাকতে অস্বীকার করেন এবং বলেন যে তার স্বীয় স্বামী পুত্র কন্যা পরিবার রয়েছে । অবশেষে কিছু শর্তসাপেক্ষে তাকে শিশুসহ নিজ গৃহে অবস্থান করার অনুমোদন দেয়া হয় । উম্মে মূসা অত্যন্ত প্রফুল্ল চিত্তে স্বীয় পুত্র শিশু মূসাকে নিয়ে নিজগৃহে প্রত্যাবর্তন করে । আল্লাহু তাআলা সূরা আল কাসাসের ১৩ নম্বর আয়াতে বলেনঃ
"( অতঃপর আমি তাকে তার জননীর কাছে ফিরিয়ে দিলাম যাতে তার চক্ষু জুড়ায় এবং তিনি দুঃখ না করেন এবং যাতে তিনি জানেন যে আল্লাহর ওয়াদা সত্য কিন্তু অনেক মানুষ তা জানে না । )"



একদিন মূসা যখন নগরীতে প্রবেশ করলো সম্ভবত তা ছিল মধ্যাহ্ন সময় যখন মিশরের ব্যবসা বাণিজ্য কিছুহ্মণের জন্য বন্ধ থাকে । বা সময় কালটি হয়ত রাত্রিকাল ছিল । যখন শহরের আধিবাসীরা সুপ্তির কোলে আশ্রয় গ্রহণ করেন । সূরা আল কাসাসের ১৮ নং আয়াতের বর্ণনা অনুসারে শেষের বর্ণনাটিই অধিক প্রযোজ্য মনে হয় । নগরীতে প্রবেশ করে তিনি দুই ব্যক্তিকে লড়াই করতে দেখলেন । এদের একজন ছিল তাঁর নিজ ইহুদি দলের এবং অন্য জন তার শত্রু মিশরবাসী দলের । মূসার উদ্দেশ্য ছিল মিশরবাসীকে আঘাত করে ইহুদীকে মুক্ত করার । কিন্তু ঘটনা চক্রে মিশরবাসীটি মূসার এক ঘুষিতেই মৃত্যুবরণ করে । এতে তিনি অনেক দুঃখ পান এবং অনুতপ্ত হয়ে পড়েন এবং আল্লাহ্‌র নিকট হ্মমা প্রার্থনা করেন এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন । তিনি প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি ভবিষ্যতে কখনও অপরাধীদের সাহায্য করবেন না । পরের দিন মূসা যখন ভীত শংকিত অবস্থায় সে নগরীতে প্রবেশ করেন । সূরা আল কাসাসের ১৮ নং আয়াতে উল্লেখ করেনঃ
"( অতঃপর তিনি প্রভাতে উঠলেন সে শহরে ভীত শংকিত অবস্থায় । হঠাৎ তিনি দেখলেন গতকল্য যে ব্যক্তি তার সাহায্য চেয়েছিল সে চিৎকার করে তার সাহায্য প্রার্থনা করছে । মূসা তাকে বললেন তুমি তো একজন প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট ব্যক্তি । )"

তিনি দেখতে পারলেন যে গতকাল যে ব্যক্তি তার সাহায্য চেয়েছিল সে চিৎকার করে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করছে । কিন্তু মূসা তাকে সাহায্যের জন্য আগ্রহ বোধ করলেন না কারণ তিনি আল্লাহুর নিকট প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি ভবিষ্যতে কখনও অপরাধীদের সাহায্য করবেন না । মূসা অত্যন্ত ক্রুদ্ধ বোধ করেন । তিনি আবার ধারণা করলেন যে মিশরবাসীটিই অন্যায়ভাবে ইহুদিটিকে মারধর করছে তিনি ব্যাপারটিতে হস্তহ্মেপ করতে পুণরায় মনস্ত করলেন । উভয়ের শত্রু অর্থাৎ মূসা এবং ইহুদিটির শত্রু মিশরবাসীটি । মিশরবাসীটি পূর্বের সম্পূর্ণ ঘটনাটি অবগত ছিল । তখন সে বলল গতকাল তুমি যেভাবে এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে সে রকম আমাকেও কি হত্যা করতে চাও ? তুমি তো একজন স্বেচ্ছাচারী আর কিছু না । আর তুমি সর্বদা ন্যায়ের এবং শামিতর কথা বল । যদি তুমি সত্যবাদী হও তবে পৃথিবীতে শামিত স্থাপন করবে । মিশরবাসীকে হত্যার গুজব চর্তুদ্দিকে রটনা হয়েছিল যা শেষ পর্যন্ত রাজপ্রাসাদেও পৌছে যায় । সেখানে ফেরাউনের সভাসদেশ্যবর্গের সভাতে মূসার জন্য মৃত্যুদন্ডের আদেশ ধার্য করা হয় । মূসা উপলব্ধি করতে পারলেন যে রাজপ্রাসাদ বা নগরী এমনকি ফেরাউনের রাজত্বের সীমানার মধ্যে তার জীবন নিরাপদ নয় । সুতরাং তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনের মনস্ত করলেন । কিন্তু কোথায় যাবেন জানেন না । প্রচন্ড মানসিক উদ্বেগ এবং উত্তেজনা তাকে অস্থির করে তোলে । তিনি একান্তভাবে সেই পরম করুণাময়ের নিকট প্রার্থনা করেন যার ফলে তিনি শামিত লাভ করেন এবং উদ্বেগ থেকে মুক্ত হন । অতঃপর তিনি মাদইয়ান দিকে যাত্রা শুরু করেন এবং যাত্রার পূর্বে আল্লাহুর নিকট অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন । তফসীরকারগণ বর্ণনা করেন যে এই সফরে মূসা আঃ এর সাথে খাদ্য ছিল বৃহ্মপত্র । হযরত ইবনে আব্বাস বলেন এটা ছিল মূসা আঃ এর সর্বপ্রথম পরীক্ষা । তার পরীক্ষাসমহের বিবরণ কোরআনের ২০ নং সূরা আত ত্বোয়া হা তে বর্ণিত রয়েছে বা আছে ।
★তথ্য শেষে দেওয়া হবে ।

ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ২)


প্রাচীন কালে যারা মরুভূমি অতিক্রম করতেন তারা তদের যাত্রাপথে একমাত্র উদ্দেশ্য থাকতে নির্দিষ্ট লহ্ম্যে পৌছানোর জন্য পথের মরুদ্যান বা কূপের নিকট পৌছানো । কারণ তা হলে গাছের ছায়াতে সূর্যের প্রচন্ড তাপ থেকে শরীরকে সুশীতল করা কূপের পানি প্রচন্ড তৃষ্ণা কে নিবারণ করা যায় । সর্বোপারি মরুভূমির জনশূন্যতা থেকে রহ্মা পেয়ে মানুষের সঙ্গ লাভ করা যায় । মূসা শেষ পর্যন্ত মাদইয়ানের একটি মরুদ্যানে পৌছাতে সহ্মম হলেন কিন্তু তিনি ছিলেন পথশ্রমে ক্লান্ত এবং তৃষ্ণার্থ সুতরাং স্বাভাবিকভাবে তিনি পানি পান করার জন্য আগ্রহী ছিলেন । কিন্তু কুপে তখন একদল রাখাল তাদের জন্তুদের পানি পান করাচ্ছিলেন । সে সময়ে তিনি লহ্ম্য করেন যে দুজন রমণীদ্বয় তাদের পশুপালকে আগলিয়ে রেখেছেন তাদের পশুদের পানি পান করানোর জন্য । তখন মূসা আঃ রমণীদ্বয়কে জিজ্ঞেস করলো তোমাদের কি ব্যাপার ? তোমরা তোমাদের পশুপালকে আগলিয়ে দাড়িয়ে আছ কেন ? অন্যদের ন্যায় কূপের কাছে এনে পানি পান করাও না কেন ? তারা জওয়াব দিল আমাদের অভ্যাস এই যে আমরা পুরুষের সাথে মেলামেশা থেকে আত্মরহ্মার জন্য পশুপালগুলোকে পানি পান করাই না যে পর্যন্ত তারা কূপের কাছে থাকেন । তারা চলে গেলে আমরা পশুপালগুলোকে পানি পান করাই । রমণীদ্বয় এটাও বলল যে আমাদের পিতা অতিশয় বৃদ্ধ ।

তিনি একাজ করতে পারেন না । তাই আমরা একাজ করতে বাধ্য হয়েছি । অতঃপর মূসা আঃ রমণীদ্বয়ের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে কূপ থেকে পানি তুলে তাদের পশুপালগুলোকে পান করিয়েছিলেন । কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে রাখালদের অভ্যাস ছিল তারা জন্তুদেরকে পানি পান করানোর পরে একটি ভারী পাথর দ্বারা কূপের মুখ বন্ধ করে দিতেন । ফলে রমণীদ্বয় তাদের উচ্ছিত পানি পান করাত । এই ভারী পাথরটি দশ জনে মিলে স্থানান্তরিত করতো । কিন্তু মূসা আঃ একাকী পাথরটি সরিয়ে দেন এবং কূপ থেকে পানি উত্তোলন করেন । আর এ কারণেই রমণীদ্বয়ের একজন মূসা আঃ সম্পর্কে সে রমনীদ্বয়ের পিতার কাছে বলেছিলেন যে সে অনেক শক্তিশালী । মূসা আঃ সাত দিন ধরে কোনকিছু আহার করেন নাই । তখন এক বৃহ্মের ছায়ায় এসে আল্লাহু তাআলার সামনে নিজের অবস্থা এবং অভাব পেশ করলেন । এটা দোয়া করার একটা সূহ্ম পদ্ধতি । রমণীদ্বয় নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই বাড়ী পৌছে গেলে বৃদ্ধ পিতা এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন । কন্যাদ্বয় ঘটনা খুলে বললেন । পিতা দেখলেন লোকটি অনুগ্রহ করেছেন তাকে এর প্রতিদান দেয়া উচিত ।

তাই তিনি কন্যাদ্বয়ের একজনকে তাকে ডেকে আনার জন্যে পাঠালেন । মূসা তখন সবেমাত্র বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ঠিক সে সময় মেয়েটি লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে সেখানে পৌঁছালো । প্রয়োজনবশত সেখানে পৌছে মেয়েটি লজ্জা সহকারে কথা বলেছে । বালিকাটি বিণীতভাবে বললেন মুসা আঃ কে যে আপনি আমাদের জন্য যা করেছেন তার জন্য আমার পিতা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ । তাই তিনি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য এবং পারিশ্রমিক দেবার জন্য ডেকেছেন । তাফসীরে আরোও বলা হয়েছে যে মূসা আঃ তার সাথে পথ চলার সময় বললেন তুমি আমার পশ্চাতে চল এবং রাস্তা বলে দাও । বলাবাহুল্য মেয়েটি প্রতি দৃষ্টিপাত থেকে বেঁচে থাকাই ছিল এর লহ্ম্য। সম্ভবত এই কারণেই মেয়েটি তার সম্পর্কে পিতার কাছে বিশ্বস্ততার সাহ্ম্য দিয়েছিলেন । এই মেয়েটির পিতা কে ছিলেন এ সম্পর্কে তফসীরকারকগণ মতভেদ করেছেন । কিন্তু কোরআনের আয়াতসমূহ থেকে বাহ্যত এ কথাই বোঝা যায় যে তিনি ছিলেন হযরত শোয়ায়ব আঃ ।


বৃদ্ধ পিতা এবং মূসার আঃ দেখা হওয়া মাত্রই তাদের মাঝে বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায় । মূসা তাকে তার জীবন কাহিনী সব খুলে বলেন । তিনি কে ছিলেন কিভাবে তিনি কোথায় থেকে এখানে এলেন কি পরিপ্রেহ্মিতে তিনি জন্মভূমি মিশর ত্যাগে বাধ্য হলেন । তার সকল ঘটনা পূর্ণ বিবরণ তিনি রমণীদ্বয়ের বৃদ্ধ পিতার কাছে বর্ণনা করলেন । সম্ভবত তাদের সাথে রমণীদ্বয়রাও এই কাহিনী শুনার জন্য সেখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন । রমণীদ্বয়ের এক জন্য তার বাবার কাছে যে বলতে লাগল এই যে গৃহের কাজের জন্য আপনার একজন চাকরের প্রয়োজন । আপনি চাইলে তাকেই নিযুক্ত করতে পারেন । মেয়েটির পিতা হযরত শোয়ায়ব আঃ নিজেই নিজের পহ্ম থেকে কন্যাকে হযরত মূসার আঃ এর সাথে বিবাহে দেওয়ার কথা ও ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন । তার প্রস্তাব ছিল মূসা তার যে কোন একটি কন্যাকে বিবাহ করতে পারে বিনিময়ে তাকে কমপহ্মে আট বছর তার পশুচারণের কাজ করতে হবে । অবশ্য তুমি ইচ্ছা করলে দশ বছরও থাকতে পার । সূরা আল কাসাসের ২৮ নং আয়াতে আল্লাহু তাআলা উল্লেখ করেন
( মূসা বললেন আমার ও আপনার মধ্যে এই চুক্তি স্থির হল । দুটি মেয়াদের মধ্য থেকে যে কোন একটি পূর্ণ করলে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকবে না । আমরা যা বলছি তাতে আল্লাহর উপর ভরসা । )

যখন হযরত মূসা আঃ দশ বছর পূর্ণ করলেন যখন তখন হযরত শোয়ায়ব আঃ এর কাছে প্রস্তাব করলেন এখন আমি জননী এবং ভগ্নির সাথে সাহ্মাতের উদ্দেশে মিসর যেতে চাই । ফেরাউনের সিপাহীরা তাকে গ্রেফতার এবং হত্যার জন্যে খোজ করছিল । এ আশঙ্কার কারণেই তিনি মিসর ত্যাগ করেছিলেন । দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার ফলে এখন সে আশঙ্কা অবশিষ্ট নেই । শোয়ায়ব আঃ তাঁকে স্ত্রী অর্থাৎ নিজের কন্যাসহ কিছু অর্থকড়ি এবং আসবাবপত্র দিয়ে বিদায় দিলেন । পথিমধ্যে শাম অঞ্চলের শাসকদের পহ্ম থেকে বিপদাশঙ্কা ছিল তাই তিনি পরিচিত পথ ছেড়ে অখ্যাত পথ অবলম্বন করলেন । তখন ছিল শীতকাল । স্ত্রী ছিলেন অস্তসত্তা এবং তার প্রসবকাল ছিল নিকটবর্তী । সকালে বা বিকাল যে কোন সময় প্রসবের সম্ভাবনা ছিল । রাস্তা ছিল অপরিচিত । তাই তিনি মরু অঞ্চলে পথ হারিয়ে তূর পর্বতের পশ্চিমে এবং ডান দিকে চলে গেলেন । গভীর অন্ধকার ছিল । কনকনে শীতও ছিল । মাটি ছিল বরফসিক্ত । সে দুর্যোগ ময় মুহুর্তে স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যায় । মূসা আঃ শীতের কবল থেকে আত্মরহ্মার্থে আগুন জ্বালাতে চাইলেন । কিন্তু তিনি আগুন জ্বালাতে ব্যর্থ হলেন । হঠাৎ তিনি দেখলেন তূর পর্বতে আগুলে দেখতে পেলেন । সেটা ছিল প্রকৃতপহ্মে নূর । তিনি পরিবারবর্গকে বললেন তোমরা এখানেই অবস্থান কর । আমি আগুন দেখেছি । সম্ভবত আগুনের কাছে কোন পথপ্রদর্শক ব্যক্তিও পেয়ে যেতে পারি যার কাছ থেকে আমরা পথের সন্ধান জানতে পারবো । পরিবারবর্গের মধ্যে স্ত্রী যে ছিলেন তা তো সুনিশ্চিত । কোন কোন রেওয়ায়েত থেকে জানা যায় যে কোন খাদেমও সাথে ছিল । তাকে উদ্দেশ করেও সম্বোধন করা হয়েছে । আবার কোন কোন রেওয়াতে আছে যে কিছুসংখ্যক লোক সফর সঙ্গীও ছিল । কিন্তু পথ ভুলে তিনি তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন ।

ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ৩)


মূসা (আঃ) এর নবুওয়ত লাভ

মূসা (আঃ) পাহাড়ের পাদদেশে এই ঘটনার সম্মুখীন হলেন । পাহাড়টি ছিল তার ডানদিকটায় । এই উপত্যকার নাম ছিল তুয়া । যখন তিনি আগুনের কাছে পৌঁছান মুসনাদে আহমদে ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বেহ্‌ বর্ণনা করন যে মূসা (আঃ) আগুনের কাছে পৌছে একটি বিস্ময়কর দৃশ্য দখতে পান । আর তিনি দেখলেন যে এটি একটি বিরাট আগুন যা একটি সতেজ এবং সবুজ বৃহ্মের উপর দাউ দাউ করে জ্বলছে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল এই যে এর কারণে বৃহ্মের কোন ডাল অথবা পাতা পুড়ছে না এক কথায় বৃক্ষের কোন ক্ষতি হচ্ছে না বরং আগুনের কারণে বৃহ্মের সৌন্দর্য সজীবতা এবং উজ্জ্বল্য আরও দ্বিগুন বেড়ে গেছে । মূসা (আঃ) এই বিস্ময়কর দৃশ্য কিছুহ্মণ পর্যন্ত দেখেন এবং অপেহ্মা করেন যে আগুনের কোন স্ফুলিঙ্গ মাটিতে পড়লে তিনি তা তুলে নেবেন । অনেকহ্মণ অতিবাহিত হওয়ার পরও যখন এমন হল না তখন তিনি কিছু ঘাস এবং খড়কুটা একত্রিত করে আগুনের কাছে ধরেন । তিনি ভেবে দেখলেন এতে আগুন লেগে গেলে তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে । কিন্তু এগুলো আগুনের কাছে নিতেই আগুন পেছনে সরে গেল । কোন কোন ইসলাম বিশেষজ্ঞদের মতে আগুন তার দিকে অগ্রসর হয় । এবং তা দেখে তিনি অস্থির হয়ে পেছনে সরে গেলেন । মোটকথা তার আগুন লাভ করার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল না । তিনি এই অত্যাশ্চর্য আগুনের প্রভাবে বিস্ময়াভিভূত ছিলেন । ইতিমধ্যে একটি গায়বী আওয়াজ হল ।
বাহরে মুহীত রূহুল মা আনী ইত্যাদি গ্রন্থে আছে যে হযরত মূসা (আঃ) এই গায়বী আওয়াজ চতুর্দিক থেকে সমভাবে শ্রবণ করেন । আর আওয়াজটি কোনদিক থেকে আসছিল তার কোন দিক নির্দিষ্ট ছিল না । শুনেছেনও অপরূপ ভঙ্গিতে শুধু কানে নয় সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা শুনেছেন । এটা ছিল একটা মু জেযার মত । আওয়াজের এই রকম ছিলঃ যে বস্তুকে তুমি আগুন মনে করছ তা আগুন নয় তা হল আল্লাহ তাআলার জ্যোতি । এতে আরো বলা হয় আমিই তোমার পালনকর্তা । রূহুল মা আনী মুসনাদে বরাতে ওয়াহাবের রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে যে মূসা (আঃ) কে যখন ইয়া মূসা শব্দ প্রয়োগে আওয়াজ দেওয়া হয় তখন তিনি লাব্বায়েক অর্থাৎ (হাজির আছি) বলে জওয়াব দেন এবং বলেন যে আমি আওয়াজ শুনছি । কিন্তু কোথা থেকে আওয়াজ দিচ্ছেন তা জানি না । এবং মূসার একটি প্রশ্ন করেন বা বলেন আপনি কোথায় আছেন ? উত্তরে বলা হয় আমি তোমার উপরে সামনে পশ্চাতে এবং তোমার সাথেই আছি । তারপর মূসা (আঃ) আরয করলেন আমি স্বয়ং আপনার কালাম শুনেছি, না আপনার প্রেরিত কোন ফেরেশতার কথা শুনেছি ? জওয়াবে বলা হয় আমি নিজেই তোমার সাথে কথা বলছি । সূরা আত ত্বোয়া-হা -এর ১২ নং আয়াতে আল্লাহু তাআলা উল্লেখ করেছেন
“ আমিই তোমার পালনকর্তা, অতএব তুমি জুতা খুলে ফেল, তুমি পবিত্র উপত্যকা তুয়ায় রয়েছ । ”
জুতা খোলার নির্দেশ দেওয়ার এক কারণ এই যে, স্থানটি ছিল সম্ভ্রম প্রদর্শনের এবং জুতা খুলে ফেলা তার অন্যতম আদব । দ্বিতীয় কারণ এই যে, কোন কোন তথ্য থেকে জানা যায়, মূসা (আঃ) এর পাদুকাদ্বয় ছিল মৃত জন্তুর চর্মনির্মিত । হযরত আলি, হাসান বসরী এবং ইবনে জুরায়জ থেকে প্রথমোক্ত কারণই বর্ণিত আছে । তাদের মতে মূসা (আঃ) এর পদদ্বয় এই পবিত্র উপত্যকার মাটি স্পর্শ করে বরকত হাসিল করুক এটাই ছিল জুতা খুলে রাখার উপকারিতা ।


এবং হাদীসে আছে রসূলুল্লাহ (সাঃ) বশীর ইবনে খাসাসিয়াকে কবরস্থানে জুতা পায়ে হাটতে দেখে বলেছিলেন
“ তুমি যখন এ জাতীয় সম্মানযোগ্য স্থানে অতিক্রম কর তখন জুতা খুলে ফেল । ”
সূরা আত ত্বোয়া-হা -এর ১৪ থেকে ১৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহু তাআলা হযরত মূসা (আঃ) কে ধর্মের সমুদয় মূলনীতি শিহ্মা দেওয়া হয়েছে আর্থাৎ তাওহিদ, রেসালাত ও পরকাল এবং তিনি বলেছেন
“ আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই । অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। কেয়ামত অবশ্যই আসবে আর আমি তা গোপন রাখতে চাই যাতে প্রত্যেকেই তার কর্মানুযায়ী ফল লাভ করেন । সুতরাং যে ব্যক্তি কেয়ামতে বিশ্বাস রাখে না এবং নিজ খাহেশের অনুসরণ করেন সে যেন তোমাকে তা থেকে নিবৃত্ত না করেন । নিবৃত্ত হলে তুমি ধবংস হয়ে যাবে । ”
এখানে নামাযের নির্দেশে করা হয়েছে । কিন্তু নামাযকে পৃথকভবে উল্লেখ করার কারণ হল এই যে নামায সমস্ত এবাদতের সেরা এবাদত । এবং হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী নামায ধর্মের সমস্ত ঈমানের নূর এবং নাময বর্জন করা মানে কাফেরদের আলামত । কেয়ামতের ব্যাপারটি আল্লাহ্‌ তাআলা সব সৃষ্টজীবের কাছ থেকে গোপন রেখেছেন এমনকি পয়গম্বর ও ফেরেশ্তাতাদের কাছ থেকেও । হযরত মূসা (আঃ) কে লহ্ম্য করে সতর্ক করা হয়েছে যে, তুমি কাফের এবং বেঈমানদের কথায় কেয়ামত সম্পর্কে অসাবধানতার পথ বেছে নিয়ো না তাহলে তা তোমার ধ্বংসের কারণ হয়ে যাবে ।

অতঃপর আল্লাহ্‌ তাআলা বললেন তোমার ডান হাতে ওটা কি ? মূসা (আঃ) বললেন এটা আমার লাঠি । আমি এর উপর ভর দেই । এর দ্বারা আঘাত করে আমার ছাগপালের জন্যে বৃহ্মপত্র ঝেড়ে ফেলি এবং এর দ্বারা আমার অন্যান্য কাজও উদ্ধার হয় । আল্লাহু তাআলা বললেন একে মাটিতে নিহ্মেপ কর । মূসা (আঃ) আল্লাহু তাআলা নির্দেশে তা মাটিতে নিহ্মেপ করার পর তা সাপে পরিনত হলো এবং নড়াচড়া করতে লাগলো । এই সাপ সম্পর্কে কোরআন পাকের এক জায়গায় ছোট ও সরু সাপ বলা হয়েছে । অন্য জায়গায় একে অজগর এবং বৃহৎ মোটা সাপ বলা হয়েছে । সম্ভবত এটি যেখানে যে রূপ আকৃতি ধারণের প্রয়োজন হতো সে রূপ ধারণের আকৃতি ধারণ করতে সহ্মম ছিল । ইমাম কুরতুবীর বর্ণনা অনুযায়ী এটি চিকন সাপের ন্যায় দ্রুতগতি সম্পন্ন ছিল বলে জান্নুন বলা হতো । লোকেরা দেখে ভীষণভাবে ভীত হতো বলে ছওবানুন বলা হতো । অতঃপর আল্লাহু তাআলা বললেন এখন তোমার লাঠিটি হাতে নেও আর তুমি একে ভয় করনো না । আমি একে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেব । হযরত মূসা (আঃ)কে দেওয়া আল্লাহু তাআলার দ্বিতীয় মু জেযা হল তার উজ্জ্বল হাত । ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত আছে আল্লাহ্‌ তাআলা বললেন তোমার হাত বগলের নীচ রেখে যখন বের করবে তখন তা সূর্যের ন্যায় ঝলমল করতে থাকবে । স্বীয় রসূলকে দুটি বিরাট মুজেযার অস্ত্র দ্বারা সুসজ্জিত করার পর আদেশ করা হয়েছে যে এখন উদ্ধত ফেরাউনকে ঈমানের দাওয়াত দেয়ার জন্যে চলে যাও ।

তথ্য ইন্টারনেট থেকে গুটিয়ে গুটিয়ে খুঁজে বের করলাম ।