Wednesday, October 7, 2015

ভীন গ্রহে যদি সত্যিই প্রাণের অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়, তাহলে ধর্মের পরিণতি কী হবে?


বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশামত মঙ্গলগ্রহে (অথবা অন্য কোন গ্রহে) যদি সত্যি সত্যি প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়- তখন কি হবে? প্রধান বিশ্বধর্মগুলো (অর্থ্যাৎ ইসলাম, খ্রিষ্ট, ইহুদী) কি বাতিল বলে গণ্য হবে? সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কে ধর্মের ব্যাখ্যা কি গ্রহণযোগ্যতা হারাবে ? নাস্তিকতার প্রসারে এটা কতটুকু কাজে দেবে?

সত্যি বলতে কী, ভীনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ত্ব পাওয়া গেলে সেটা সেমেটিক ধর্মগুলোর সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক হবে না। এর মাধ্যমে ধর্মকে অসার প্রমান করা যাবে না, কিন্তু ডারউইনের বিবর্তনবাদ নতুন করে একটা ভিত্তি পাবে। সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কে ডারউইন যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন- সেটার স্বপক্ষে একটা জোরালো যুক্তি পেয়ে যাবে বিবর্তনে বিশ্বাসী নাস্তিকরা। আদম-হাওয়া তত্ত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার নতুন উপলক্ষ্য পাওয়া যাবে। কেননা সৃষ্টিকর্তার হস্তক্ষেপ ছাড়াই আপনা-আপনি প্রাণের সৃষ্টি সম্ভব- নাস্তিকদের এই দাবী পাবে নতুন মাত্রা।

যদিও কুরআন-হাদীসের কোথাও এমনটি দাবী করা হয়নি যে, পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথাও প্রাণী থাকতে পারবে না। কিন্তু ইসলাম ও অন্য সেমেটিক ধর্মগুলো আদম-হাওয়ার যে সৃষ্টিতত্ত্বের কথা বলে, সেই হিসেবে ভীনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ত্ব থাকার কথা নয়। কেননা পৃথিবীতে যে লক্ষ লক্ষ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে তা মানুবজাতির প্রয়োজনে সৃষ্টি করা হয়েছে, কোন না কোনভাবে তারা মানুষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও প্রকৃতি গঠনে অবদান রাখছে। ধর্মগুলোর মতে, মানুষকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণীকূল। এখন যদি দেখা যায় অন্য কোন গ্রহেও প্রাণী আছে (!), তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে- ঐ প্রাণীকে কার প্রয়োজনে সৃষ্টি করা হয়েছে? যে গ্রহে মানুষই নাই সেখানে অন্য কোন প্রাণী সৃষ্টি করার কোন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। আর যেহেতু সৃষ্টিকর্তা যথাযথ কারন ব্যতিরেকে কিছুই করেন না, তাই এই প্রাণ সৃষ্টির পেছনে কোন ভূমিকা থাকতে পারে না। এই প্রাণ অবশ্যই আপনা-আপনিই সৃষ্টি হয়েছে। আর ভীনগ্রহের এই প্রতিকূল পরিবেশে যদি এভাবে আপনাআপনি প্রাণের সৃষ্টি হতে পারে তাহলে পৃথিবীতে কেন নয়?

সেক্ষেত্রে ধর্মের প্রতি সংশয়বাদীদের অবিশ্বাস  আরো বাড়বে এবং নতুন করে আরো অসংখ্য মানুষ নাস্তিকতা গ্রহণ করবে।
তবে এতকিছুর পরও যারা ধর্ম ও বিজ্ঞান দু'টোকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে এবং নিজেদের চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগাবে, তারা ঠিকই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব প্রমানকারী হাজারো নিদর্শন প্রকৃতির মধ্য থেকেই খুজে বের করে নিতে সক্ষম হবে।