আসলে ঐতিহাসিক সত্য হলো, শিয়াদের কাছে নবী নন আলী (রা) বড়; মুসলমান নয় শিয়ারা বড়; মসজিদ নয় মাজার বড়! মানবতা নয় রাজনীতি বড়!
বুদ্ধিবয়স থেকেই দেখছি ইরান ইসরাইল ও পাশ্চাত্যকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ৷ দেখছি বরাবর ইরান সৌদির
সমালোচনা করছে ইসরাইলের সঙ্গে চোখ বুজে যুদ্ধে না নামায়৷ শুধু এ ভূমিকার জন্যও বহু মুসলিম না বুঝে
ইরানকে মুসলিমবিশ্বের মডেল ভাবেন৷অথচ ইসলামী ইতিহাস ও আকিদা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল প্রত্যেকেই জানেন এ তাদের ঐতিহাসিক কপটতাপূর্ণ কৌশলের অংশ মাত্র৷ পশ্চিমের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধ কোনোদিনই হবে না৷ বুশ ইরান ও দক্ষিণ
কোরিয়াকে শয়তানের অক্ষশক্তি বলেছিলেন৷ তিনি দুই দফায় পূর্ণ মেয়াদ যুক্তরাষ্ট্র শাসনকালে খোঁড়া
অজুহাতে হামলা করেছেন আফগান ও ইরাকে৷ অশান্তির আগুনের পুড়িয়েছেন বহু মুসলিম দেশ৷ অথচ ইরানকে বহু হুমকি
দিলেও আক্রমণ করেননি৷ লোক দেখানো অর্থনৈতিক অবরোধেও ইরান দিব্যি এগিয়ে গেছে৷ ওবামাযুগে যুদ্ধখেলা বন্ধ৷ অতিসম্প্রতি
আমেরিকার সঙ্গে ইরানি ইশকে মৃদুমন্দ বাতাসও বইতে শুরু করেছে৷ সিয়িয়ায় সৌদির মিত্র হিসেবে আমেরিকার অবস্থান অসংখ্য মুসলিম হত্যাকারী শিয়া বাশারের বিপক্ষে৷ কিন্তু ইরানের প্রাণের মিত্র রাশিয়া দামেস্কে যখন যুদ্ধে জড়ালো সুন্নিদের
বিপক্ষে, তখন রসুনের কোয়াগুলো যথানিয়মেই এক হয়ে গেল৷ বাশার- ইরান-রাশিয়া সৌদি-সুন্নিদের মোকাবেলায় এক৷ সৌদির মিত্র
মার্কিন সেনারাও এদের দ্বারা আক্রান্ত হবার কথা৷ কিন্তু কী আশ্চর্য দেখুন, যুদ্ধক্ষেত্রে এরা মার্কিনিদের আক্রমণ করছে না! করবে না বলে
জানিয়েও দিয়েছে৷ এমনকি পরশু ওবামা স্বীকারই করেছেন বাশারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়া ঠিক হয়নি!ইরান কখনো মুসলমানের ব্যথায় দুঃখিত হয়নি৷ দুখ পেয়েছে কেবল কোথাও
শিয়ারা আক্রান্ত হলে৷ সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিদের ইয়ামানে হুথি শিয়াগোষ্ঠী বৈধ সুন্নি প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করল ইরানের মদদে৷ এতে কোনো দোষ খুঁজে পায়নি ইরান৷ অপরাধ দেখল কেবল অসহায় সুন্নিদের সাহায্যে সৌদির এগিয়ে আসায়৷ রেডিও তেহরান বাংলা ওয়েবে গিয়ে দেখুন ইয়ামানে সৌদিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে (?) তারা কত সোচ্চার৷ সৌদির চারপাশে শিয়া কর্তৃক সুন্নি নিধন চলছে৷ সিরিয়া,
লেবানন, ইয়ামানসহ সবখানে একই চিত্র৷
সাদ্দামের বিদায়ের পর ইরাকে চলছে নীরব সুন্নিনিধন৷ শিয়াদের ইরাকে এখন সুন্নিদের জীবন মরুভূমির বালুর চেয়েও
সস্তা৷ ঠিক ইরানের মতো৷ যেখানে সুন্নিদের ঠাঁই নেই৷ কিছু থাকলেও তারা বাধ্য শিয়া হতে নয়তো ঈমান
লুকিয়ে রাখতে৷ ইসলামী সভ্যতার গৌরবময় ইতিহাসের ইরাকে যেখানে যাকেই তারা পাচ্ছে উমর নামে,
নির্বিচারে হত্যা করছে৷ মা আয়েশা (রা)কে তাদের কথা মত গালি না দিলেও হত্যা-নির্যাতন করছে৷
শিয়াদের ঈমানের অংশ ইসলামের প্রথম দুই খলিফা, রাসূল (সা) এর দুই
শ্বশুর, জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ দুই মহামানব আবু বকর ও উমর (রা)কে গালি দেয়া৷ তাঁদেরকে এবং তাদের হাতে
বায়াতকারী সকল সাহাবীকে কাফের (নাউযুবিল্লাহ) মনে করা৷ চলতি অক্টোবরের ৯ তারিখ থেকে জারজ রাষ্ট্র ইসরাইল নতুন করে
ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে৷ বরাবরের মতোই ওদের অজুহাত ঠুনকো,অসহায় ফিলিস্তিনিদের অস্ত্রও ইট-
পাথরের টুকরো এবং নীরব আন্তর্জাতিকবিশ্ব৷ প্রায় শতাব্দীকালের পীড়নে ফিলিস্তিনি নারী-শিশুরাও আর লুকিয়ে থাকতে
পারছে না৷ নিশ্চিত মৃত্যুকেও উপেক্ষা করে বুক সটান করে দাঁড়াচ্ছে অভিশপ্ত বর্বর ইহুদি সেনাদের বন্দুকের সামনে৷
বোরকা-হিজাব পরা বিদূষী ফিলিস্তিনি তরুণীরা যখন আধুনিক মারণাস্ত্রের মোকাবেলায় নামছে পাথর হাতে৷ মনে করিয়ে দিচ্ছে যখন
সারা পৃথিবীর সব মুসলিম পুরুষকে তাদের চুরি পরে ঘরে থাকার কথা, তখন সমরশক্তিতে আত্মগর্বী ইরান একটা
রুটি কি রাইফেলও এগিয়ে দিচ্ছে কুদুসবাসীর দিকে? যে ইরান অস্ত্র সরবরাহ করছে সিরিয়া, ইয়ামান,
লেবানন, ইরাকসহ তাবৎবিশ্বের শিয়ামিলিশিয়াদের তারা তো সামান্য অস্ত্রও সরবরাহ করছে না
ফিলিস্তিনিদের!
আসলে ঐতিহাসিক সত্য হলো,
শিয়াদের কাছে নবী নন আলী (রা) বড়;
মুসলমান নয় শিয়ারা বড়; মসজিদ নয় মাজার বড়! মানবতা নয় রাজনীতি বড়!
মুল লেখকঃ- তরুণ তুর্কি, গবেষক আলেম, তারুণ্যের প্রতিক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সাব এডিটর মুহতারাম আলী হাসান তৈয়্যব সাহেব ।