Wednesday, October 21, 2015

স্থান-কালের শুন্যতা, শুন্য স্থান-কাল, আলোকের দ্বৈতনীতি এবং আমার অনুভূতিl


আমরা জানি আলোকে পদার্থ এবং শক্তির দ্বৈতচরিত্র বিদ্যমান । অর্থাৎ আলোক যুগপৎ শক্তি এবং কণা, যেটা আমার কাছে সূক্ষ্মত্রুটি বলেই মনে হয় ।
১) আলোক যদি কনিকার মতো আচরণ করে, তবে মহাকর্ষ বলে তার ক্রিয়া থাকবে এবং আলোকের বেগ শুন্যমাধ্যমে ধ্রুব না হয়ে কম বেশীও হতে পারে । কিন্তু মহাবিশ্বে শুন্যস্থান কি আসলেই শুন্য, যেখানে সবগুলো ভৌতরাশি যুগপৎ শুন্য হয়ে যাবে ? আসলে দৃশ্যমান মহাবিশ্বে এমন কোন শুন্যস্থান নেই, কারন তাতে স্থান শুন্যতার সংকটে পড়বে মহাবিশ্ব, সেই সাথে কল্পিত ধর্মের ঈশ্বরও অস্তিত্ত্ব সংকটে পড়বে, যেটা বিগব্যাঙ্গের আগের কল্পিত অবস্থাকে বোঝায়, যা বর্তমান মহাবিশ্বে আদৌ সম্ভব নয় । তারমানে মহাবৈশ্বিক সকল শুন্যতা আপেক্ষিক, পরম শুন্যতা নয় ।
২) আলোক যদি শক্তিই হয়, তাহলে বৃহৎ ভরের বস্তুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গতিপথ বেকে যায় কীভাবে ? আলোক কি মহাকর্ষ বলে ক্রিয়া করে কিংবা সংবেদনশীল ? অথবা মহাকর্ষ বল কি (আলোকসহ অন্যান্য) শক্তির উপর ক্রিয়াশীল ? বৃহৎ ভরের বস্তুর পাশ দিয়ে আলোকের গতিপথে কল্পিত স্থানের বেকে যাওয়া আমার কাছে কৌতুক বলেই মনে হয় । তাহলে স্থান কি কণিকা সম্বলিত একটি ভৌত রাশি ? মহাকর্ষ বল সেই কণিকাকে আকর্ষণ করে ঠিকই তবে ফোটনকে নয়, কিন্তু জানামতে ফোটন কনিকার নামমাত্র ভর আছে, তাহলে আলোক মহাকর্ষ বলে কেন আকর্ষিত হবেনা ? তাহলে স্থানিক বক্রতার কল্পিত ধারনা প্রনয়ন কেন ? তবে এও ঠিক আলোক চলার পথে(স্থানে) কখনই পরম শুন্যতা পাবেনা, এবং আলোকের বেকে যাওয়া মুলত স্থানিক কনিকার বঙ্কিম গতিপথের ধারনা, যেটা কণাবাদী কল্পিত রাশির স্বেচ্ছা বঙ্কিম চিন্তামাত্র ।
৩) ভরসম্পন্ন কোন কণার বেগই আলোকের বেগে পৌছাতে পারবেনা, কোন বস্তু আলোকের বেগে ছুড়ে দিলে তা সম্পুরণ শক্তিতে রূপান্তর হয়ে যাবে, তাহলে বলা যায় আলোক কনা নয় । অথবা আলোক তরঙ্গ এবং কনার অস্থিতিশীল আপেক্ষিক অবস্থামাত্র । তাহলে বুঝতে হবে কোন বস্তুকেই সম্পূর্ণ শক্তিতে যেমন রূপান্তর করা যায়না, তেমনি কোন শক্তিই সম্পূর্ণ ভরমুক্ত নয়, কিছু না কিছু ক্ষুদ্রতর ভর শক্তিও বহন করে যেটা পরিমাপ করার মতো সুক্ষ্মতায় আমাদের পদারথবিজ্ঞান এখনও পৌছাতে পারেনি । তাই আলোকের দ্বৈতনীতি আমাদের সীমাবদ্ধ পর্যবেক্ষণগত একধরনের অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি বলেই মনে হয়, তার উপর একটি কনার স্থিরত্ত্ব বা গতিবেগকে মাপার ক্ষেত্রে রয়েছে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তানীতি বা পদার্থ বিজ্ঞানের চরম সীমাবদ্ধতা, কারন কোন একটি বিশেষ কণার স্থিতি বা গতির সঠিক দশা পর্যবেক্ষণ করতে হলে তার উপর আলোকপাত করতে হবে, কোথাও আলোকপাত করতে হলে কনাবাদী বলবিদ্যামতে কম্পক্ষে এক কোয়ান্টা বা কণিকাগুচ্ছ আলোক নিক্ষেপ করতে হবে, নিক্ষেপিত আলোক কনার সংস্পরশে পরযবেক্ষনীয় কনাটি অস্থির হবে, অস্থিরতায় অবস্থানের পরিবর্তন হবে, যাতে করে ঐ একক কনাটির সঠিক দশা আমরা কোনদিনই নির্ভুলভাবে জানতে পারবোনা, সেই সাথে কনাবাদী পদার্থবিজ্ঞানের মাধ্যমে কোনদিনই একটি কনার নিশ্চিত একটি রাশি পাবোনা, তার বদলে পাবো সম্ভাব্য সকল দশার ইতিহাসের সমষ্টি, কারন কণিকার একটিমাত্র গতিপথে চলাচল করেনা বরং যুগপৎ সম্ভাব্য সকল পথেই তাকে পাওয়া যেতে পারে, এটাই অনিশ্চয়তানীতির মুলকথা । আলোকের দ্বৈত চরিত্র চিহ্নিত করে একক চরিত্র দিতে পারলেই মহাকর্ষ বলকে গ্রান্ড ইউনিফায়েড থিউরিতে রূপান্তর করতে পারবো, যাতে করে পদার্থবিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা মহাবিশ্বের শুরু এবং পরিণতি বা গন্তব্যকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারি, সেই সাথে অনুধাবন করতে পারি আমাদের ধারন করা একমাত্র ক্ষুদে মানব বা অন্যান্য জীবনের নিঘুঢ় সত্যটিকেও, যেটা পদার্থবিজ্ঞানের চুড়ান্তভাবে অর্জনের লক্ষ্য । তবে সেটা চাট্টিখানি কথা নয়, অনেকটাই অন্ধকার গুহায় নিকষ কালো বিড়ালটাকে খুঁজে পাবার মতোই ।
পূর্বে বিদ্যুৎ এবং চুম্বকীয় বল আলাদা ধরে নিলেও ম্যাক্সওয়েল বলদুটিকে একত্র করে বিদ্যুত-চুম্বকীয় বলে রূপান্তর করেন, পরবর্তিতে উইনবারগ এবং আব্দুস সালাম নিউক্লীয় দুর্বল বলকে, ইলেক্ট্রো-ম্যাগ্নেটিক বলের সাথে একত্র করেন যা ইলেট্রো-উইক ফোরস হিসেবেই পরিচিত । কিন্তু এখনও আমরা নিউক্লিয় সবল বল এবং মহাকর্ষীয় বলকে একত্র করতে পারিনি, সেই দুটি বলের সম্পূর্ণ আচরণ এখনও অনেক অজানা । বিশেষ করে অতিভরের বস্তুর দূরবর্তী মহাকর্ষীয় বলের প্রাবল্য !!
৪) পুঞ্জিভুত আন্তঃআণবিক শক্তির কণিকা পর্যায়ে বিস্ফোরনই আলোকের সৃষ্টি, আলোকের বেগে E=mc2 , ব্যাপক আপেক্ষিকতাবাদের সমীকরণে, আলোকে রুপান্তরিত বস্তুর ভর কি শুন্য নাকি অসীম হয়ে যাবে যখন আলোকের বেগ c ? তাহলে m কি রূপান্তরিত বস্তুর ভর নাকি অবশিষ্ট বস্তুর ভর ? এমন অস্পষ্টতা মাঝে মাঝে স্মৃতিতে প্রতারণা করে বেড়ায় । সীমানাহীন মাল্টিভারসের আধুনিক ধারনাটা বেচে থাকার আশা জাগানিয়া, আমি মরে গেলেও কালে মানুষ বেচে থাকবে আলোকের তরঙ্গের অগ্রভাগের গতিপথেই, ভুত-ভবিষ্যত-অতীতের নিয়ন্ত্রন হাতে নিয়েই ।
৫) যাহা স্থান, তাহাই কাল । তাই স্থান-কাল একটি একক ভৌতরাশি, কালের বহুরূপতা আছে, যেমন, সমকাল, অতীতকাল, ভবিষ্যতকাল, মহাকাল, বাস্তবকাল এবং স্টিফেন হকিং প্রস্তাবিত কল্পিতকাল, যা মহাবিশ্বের ব্যাপক অর্থে বাস্তবকালের মতোই আচরণ করে । এখন অতীতকালকে ঋণাত্মক কালও বলতে পারি । মহাবিশ্ব শুন্যতা থেকে , তাহলে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক দুটি রাশিই যুগপৎ সৃষ্টি হওয়ার কথা, যেহেতু এন্টি-প্রোটন বা এন্টি-নিউট্রনের অস্তিত্ত্ব আমরা অনুধাবন করি ; আরেকটি এন্টিভারসের অস্তিত্ত্ব কল্পনা করিই তাহলে স্থান-কালের এমন ঋণাত্মক রাশি, বা এন্টিস্পেসের অস্তিত্ত্ব কেমন ? কনাবাদী পদারথবিজ্ঞানে মহাবিশ্ব সীমানাহীন, সীমানাহীন মহাবিশ্বে এন্টি স্পেসের আলাদা অস্তিত্ত্ব বা অবস্থান থাকার কথা নয়, থাকলে তাদের বিভেল তলের ক্রিয়া কী ? যেহেতু সকলি একই মহাবিশ্বের অধীন, একই মহাবিশ্বে স্পেস এবং এন্টি-স্পেস বিদ্যমান; তাহলে একই মহাবিশ্বাধীন পরস্পর বিপরীত কনা প্রতিকণার ঘটমান ক্রিয়া কেমন ?
যে দুটি স্পেস একত্র হলে মুহূর্তেই এ দৃশ্যমান বা অদৃশ্য মহাবিশ্ব বিকট বিস্ফোরণে শুন্যতায় ফের মিলিয়ে যাবে ! যার পূর্বে নিশ্চিত কোন পূর্বাভাসটুকু আমরা পাবোনা, আলোকের দ্বৈতনীতি এবং হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তানীতি এই দুই আপেক্ষিক-অনিশ্চয়তায় পর্যবেক্ষণগত চরম সীমাবদ্ধতার জন্য, যে সীমাবদ্ধতা আমরা কোনকালেই অতিক্রম করতে পারবোনা, যার জন্য অনাগত সেই শুন্যতায় মিলিয়ে যাওয়ার ভবিষ্যত বানীটুকু সম্ভাব্যতার দোলাচলেই রয়ে যাবে চিরকাল, মহাবিশ্বের নিিশ্চিত পরিণতির কোন ভবিষ্যত বানী নাই..সকলি সম্ভাব্যতার ইতিহাসের সমষ্টিমাত্র.।