মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১
তাহলে এখন প্রশ্ন আসে , মোহাম্মদ কোন আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা হিসাবে মেনে নিচ্ছেন?
মোহাম্মদ স্পষ্টতই পৌত্তলিকদের আল্লাহকে স্বীকার করে নিচ্ছেন। তবে পৌত্তলিকরা যেমন বিশ্বাস করত আল্লাহর তিনটি কন্যা লাত , উজ্জা ও মানাত আছে, মোহাম্মদ সেটাকে
বর্জন করে সেই পৌত্তলিক ধর্মকেই একটা একেশ্বরবাদী রূপ দিয়েছেন। কেন মোহাম্মদের আল্লাহ ইহুদি ও খৃষ্টান দের বর্ণিত আল্লাহ নয় ? কারন বাইবেলে বর্নিত আল্লাহর সাথে কোরানে বর্নিত আল্লাহর আকাশ
পাতাল তফাৎ পরন্তু দেখা
যায় পৌত্তলিকদের কিছু প্রথা যেমন – কাল পাথরকে
চুম্বন করা, কাবা প্রদক্ষিন করা, পশু কোরবানী ইত্যাদি ইসলামে প্রবেশ করেছে। এ ব্যপারে বিস্তারিত পরের পর্বে তুলে ধরা হবে।
সাম্প্রতিক দুনিয়াতে ইসলাম সবচাইতে আলোচিত
ও সমালোচিত বিষয়। একদল ইসলাম ধর্মের গুণগান গাইছে, ইসলাম কতটা সত্য ও আদর্শ ধর্ম, এর মধ্যে কি পরিমান বিজ্ঞান বিরাজমান আছে তা বের করার প্রানান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছে
তো অন্য দল নিন্দাবাদ জ্ঞাপন করছে, বের করার চেষ্টা করছে
এটা কতটা বর্বর আর এর মধ্যে কি পরিমান মিথ্যা গাল গল্প ও অপবিজ্ঞান নিহিত। এখন এর মধ্যে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা সেটা জানাই দুরুহ হয়ে পড়ে মাঝে মাঝে। কিন্তু কেউ যদি প্রকৃত সত্য জানতে চায় তা কিন্তু মোটেও দুরুহ না। কিন্ত তার আগে জানা দরকার কেন ইসলাম নিয়ে সারা দুনিয়াতে এত তোলপাড় ?
তার একটাই কারন সারা দুনিয়ার দেশে দেশে ইসলামী জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে
পড়েছে। গাড়ীবোমা, মানববোমা, বিমান বোমা এসবের আকারে এসব জঙ্গীবাদীরা আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে
নিরীহ মানুষ মারছে। কেন তারা মানুষ মারছে? তারা দুনিয়া ব্যপী ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যারা অমুসলিম তাদেরকে ইসলামের ছায়া তলে আনতে চায়। যদি এ ব্যপারে কোন বাধা আসে তখন যুদ্ধ করে তাদেরকে ইসলামে দীক্ষিত করতে বাধ্য করতে
হবে। একে বলে জিহাদ যা কোরান ও হাদিসে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে- জিহাদ একটা চলমান যুদ্ধ যা প্রত্যেকটি সক্ষম মুসলমানের আবশ্যক কর্তব্য,
যা কেয়ামতের আগ পর্যন্ত চলবে। ঠিক একারনেই ইসলাম নিয়ে সারা দুনিয়ায় টাল মাটাল কান্ড কারখানা চলছে। এখন আমাদের বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে- ইসলাম সত্যি সত্যি সভ্য জগতের সাথে তাল মিলিয়ে
চলতে পারে কি না। আরও দেখতে হবে – ইসলাম মানব জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে কি না।
ইসলামের প্রথম ও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন বিষয়
হলো- ইমান অর্থাৎ বিশ্বাস। কিসে বিশ্বাস ?
আল্লাহ ও তার রসূল মোহাম্মদের ওপর বিশ্বাস। শুধু আল্লায় বিশ্বাস করলে হবে না, আল্লা ও তার
রসূল মোহাম্মদকে একই সাথে বিশ্বাস করতে হবে। আর এ বিশ্বাসটা করতে
হবে বিনা প্রশ্নে। আল্লা বা সৃষ্টি কর্তা নিয়ে আমাদের দ্বিধা
দ্বন্দ্ব সন্দেহ থাকতে পারে। সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের
বিপক্ষে দশটা যুক্তি হাজির করলে বিপক্ষেও দশটা যুক্তি দেয়া সম্ভব। তাই কেউ নি:সন্দেহভাবে প্রমান করতে পারবে না সৃষ্টিকর্তা আছে অথবা নেই। অর্থাৎ যুক্তির খাতিরে
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব benefit of doubt তত্ত্ব মোতাবেক
টিকে যেতে পারে। সুতরাং আলোচ্য নিবন্ধ থেকে সৃষ্টিকর্তাকে
বাদ দেয়া যেতে পারে। বাকী থাকে মোহাম্মদ। এখন প্রশ্ন হলো মোহাম্মদ সত্যি কোন আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত রসূল কি না।
যেখানে খোদ সৃষ্টিকর্তার সম্পর্কেই সঠিক সিদ্ধান্তে
আসা যায় নি, সেখানে অবশ্যই মোহাম্মদের নবুয়ত্ব সম্পর্কে
সঠিক সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। অর্থাৎ কেউ নিশ্চিত করে বলতে
পারবে না যে মোহাম্মদ হলো আল্লাহর রসূল। বিষয়টা এভাবে ব্যখ্যা
করা যেতে পারে। এক লোকের যক্ষ্মা রোগ হলো ও ডাক্তারের কাছে
যাওয়ার মত টাকা না থাকায় অথবা ডাক্তারের ফি না দেয়ার ধান্ধায় সোজা একটা ওষুধের
দোকানে গেল ওষুধ কিনতে। দোকানে নতুন কম্পাউন্ডার যে কোন ওষুধের নাম
ও তার কাজ কি তা জানে না। সে শুধু ব্যবস্থাপত্র
পড়ে সে অনুযায়ী তাক থেকে খুঁজে খুঁজে ওষুধ দিতে পারে। যক্ষ্মা রোগীটি সেই কম্পাউন্ডারের কাছে গিয়ে বলল ওষুধ দিতে। কম্পাউন্ডার নতুন হলেও বেশ চালিয়াৎ। সে ভাব দেখালো সে অনেক কিছু জানে। রোগীটিকে বোকা পেয়ে
তাই সে তাক হাতড়ে যা সামনে পাওয়া গেল তেমন একটা ওষুধ দিয়ে দিল। এক্ষেত্রে রোগীর রোগ সারার সম্ভাবনা কতটুকু ? কম্পাউন্ডার জানে দোকানের হাজারো ওষুধের মধ্যে কোন একটা যক্ষ্মার ওষুধ। তার পরেও রোগীর রোগ সারার সম্ভাবনা অতিশয় সামান্য। এক্ষেত্রে সঠিক ওষুধ বাই চান্সে পাওয়াকে আল্লাহ আর মোহাম্মদ কে যক্ষ্মার আরোগ্য
ধরলে, যুক্তি অনুযায়ী মোহাম্মদের নবুয়ত্বের সঠিকতা
অতিশয় সামান্য। সঠিক ওষুধ বাই চান্সে পাওয়া- কে আল্লাহ ধরার
কারন, আল্লাহ নিশ্চিতভাবে প্রমানিত না, বহু যুক্তি দেয়া যায় আল্লাহ নেই, তবে সামান্য সম্ভাবনা আছে অর্থাৎ যে ওষুধটা কম্পাউন্ডার দিচ্ছে তার সামান্য সম্ভাবনা আছে সেটা
সঠিক ওষুধ হওয়ার আর সেটা যদি সত্যি সঠিক হয় তাহলে রোগীর রোগ সারবে অর্থাৎ মোহাম্মদ নবী হবে। বিষয়টা স্বয়ং মোহাম্মদ বুঝতে পেরেছিল বলেই সে সবচাইতে বেশী জোর দিয়েছিল ঈমান
অর্থাৎ বিশ্বাসের
ওপর। তার মানে মোহাম্মদ যা বলছে তার কোন পরীক্ষা করা যাবে না,
বিনা প্রশ্নে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হবে। মোহাম্মদ আরও জানত একবার কিছু লোককে তার কথা বিশ্বাস করাতে পারলে, আস্তে আস্তে বাকীগুলোকেও বিশ্বাস করানো যাবে। কিভাবে মোহাম্মদ সেটা টের পেল? তার তীক্ষ্ণ মেধা,
বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার দ্বারা। খেয়াল রাখতে হবে মোহাম্মদ তার ৪০ বছর বয়েসে সর্বপ্রথম দাবী করে সে আল্লাহর নবী। যথেষ্ট জ্ঞান, বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এটা বেশ দীর্ঘ
সময়। সেই শৈশব থেকে মধ্য বয়স পর্যন্ত সে তার আশ পাশের মানুষগুলো
সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছে, তাদের মানসিক স্তর
ভালমতো পর্যবেক্ষন করেছে। এর মধ্যে সে ভালমতো
জেনেছে ইহুদী ও খৃষ্টানদের ধর্মমত ও ধর্মীয় কিচ্ছা কাহিনীগুলো।
কথিত আছে মোহাম্মদ মক্কার অদুরে হেরা গুহার
মধ্যে বসে নির্জনে চিন্তা ভাবনা করত। এ ভাবে চিন্তা ভাবনা
করার সময় হঠাৎ করে এক ফিরিস্তা
জিব্রাইল তার নিকট এসে আল্লাহর ওহী বলা শুরু করে। দেখা যাক্ কিভাবে ফিরিস্তা ওহী প্রদান করত। এ সম্পর্কে হাদিস দেখা যাক-
আয়শা হতে বর্নিত, হারেছ ইবনে হেশাম হুযুরকে জিজ্ঞেস করিয়াছিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার নিকট ওহী আসে কিভাবে? তিনি বলিলেন, প্রতিটি ওহীর সময় ফিরিস্তাই আগমন করে। কখনও কখনও ঘন্টার মত শব্দ করিয়া আসে। যখন ওহী সমাপ্ত হয়
তখন ফিরিস্তা যা বলিল, আমি তাহা মুখস্ত করিয়া
লই। এই ঘন্টার শব্দের মত ওহীটিই আমার কাছে অত্যন্ত কঠিন অনুভুত হয়। আর কখনও কখনও ফিরিস্তা মানবরূপে আগমন করে, আমার সাথে কথা বলে। সে যাহা বলে, আমি তাহা মুখস্ত করিয়া লই। সহী বুখারী,
বই-৫৪, হাদিস-৪৩৮
আচ্ছা বোঝা গেল জিব্রাইল মোহাম্মদের কাছে
আল্লাহর কাছ থেকে ওহী নিয়ে আসে। কেউ কখনও দেখেছে জিব্রাইলকে
মোহাম্মদের কাছে আসতে? কোন সাক্ষী আছে ?
না, কোন সাক্ষী নেই। তার মানে মোহাম্মদ যা কিছু বলবে তা যত উদ্ভট ও অদ্ভুত হোক বিশ্বাস করতে হবে। বিষয়টা তার প্রিয়তমা বুদ্ধিমতী কিশোরী বধু আয়শার মনে মনে হয় কিঞ্চিত সন্দেহের
উদ্রেক করে। একারনে হয়ত সে বায়না ধরে ও বলে –
হে আল্লাহর রসূল, আপনার কাছে
হর হামেশা জিব্রাইল আসা যাওয়া করে, আপনি দেখতে
পান, কথাবার্তা বলেন, কিন্তু আমরা
দেখতে পাই না কেন? বুদ্ধিমান মোহাম্মদ বুঝল এটা একটা চ্যলেঞ্জের
মত। আর এ ধরনের কৌতুহল বেশীদিন চলতে দেওয়াও বুদ্ধিমানের মত কাজ
নয়। তাই মোহাম্মদ একদিন বলল-
আয়শা হ’তে বর্নিত, হুজুর একদিন তাঁহাকে বলিয়াছেন, আয়শা! ঐ দেখ জিব্রাইল তোমাকে সালাম দিতেছেন। আয়শা সালামের জবাব দিলেন- ওয়া আলাইহি সালামু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকতুহু। এবং বলিলেন আপনি তো এমন কিছুও দেখেন যাহা আমরা দেখিতে পাই না। আয়শা হুযুর কে লক্ষ্য করিয়াই কথাগুলি বলিয়াছিলেন। সহি বুখারী, বই-৫৪, হাদিস-৪৪০
দেখা যাচ্ছে- মোহাম্মদ আয়শার চ্যলেঞ্জ এর
কোন উত্তর দিতে পারেনি। আয়শা খুব পরিস্কারভাবেই বলছে যে সে জিব্রাইলকে
দেখে নি। কিন্তু না দেখলেও এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করারও কোন সুযোগ তার নেই,
কারন তার পিতা আবু বকর অনেক আগেই মোহাম্মদকে বিশ্বাস করেছে আর
মোহাম্মদ যতই উদ্ভট কথা বার্তা বলুক না কেন তা সে বিনা প্রশ্নেই বিশ্বাস করে।
বিষয়টাকে এবার ভিন্ন আঙ্গিকে দেখা যাক। বর্তমান কালের বিখ্যাত অনলাইন লেখক আলী সিনা তার এক প্রবন্ধে যেমন বলেছেন- ইসলাম
একটা প্রকান্ড মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত ( তার লেখা পাওয়া যাবে www.faithfreedom.org
এখানে)। সাধারন মানুষ ছোট খাট
মিথ্যা বলতেই ভয় পায় , যদি বলে ফেলেও খুব
তাড়াতাড়ি তা ধরা খেয়ে যায়। কিন্তু কোন লোক যদি
প্রকান্ড মিথ্যা কথা বলে তাহলে সাধারন মানুষ তা বিশ্বাস করার আগে প্রচন্ড রকম চমকে
যায়। আর তাদের সামনে দুটো পথ মাত্র খোলা থাকে – এক. হয় লোকটাকে পাগল বা উন্মাদ সাব্যাস্ত করা, অথবা দুই. তার কথা বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করা। আর একবার যদি কিছু লোক তাকে বিশ্বাস করে বসে তাহলে তাদের পক্ষে লোকটার যাবতীয়
সবকিছুই বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করতে হবে অন্ধের মত।মোহাম্মদ সেই যৌবনের প্রারম্ভ থেকে তার আশ পাশের লোকজনকে ভাল মতো পর্যবেক্ষন করেছে,
জেনেছে তাদের মন মানসিকতার স্তর। তাই দীর্ঘদিন সময় নিয়ে তারপরই সে তার প্রকান্ড মিথ্যা কথাটা বলেছে, অবশ্যই একটা বড় রকমের রিস্ক নিয়ে। কিন্তু কেন মোহাম্মদ এ ধরনের প্রকান্ড মিথ্যা কথা বলল প্রচন্ড রিস্ক নিয়ে ?
তার কি প্রয়োজন ছিল ? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে গেলে সেই মোহাম্মদের সময়কার মক্কার সমাজ ব্যবস্থা জানা
অত্যন্ত জরুরী। সে সময় মক্কার সমাজ কতকগুলো গোষ্ঠিতে বিভক্ত
ছিল। এসব গোত্রের মধ্যে প্রায়ই সময় বিবাদ লেগে থাকত। অতি তুচ্ছ কারনে তারা অনেক সময় বিবাদ বাধাত, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হতো। যেমন- কাবা ঘরের মধ্যে
সেই কাল পাথর বসানো নিয়ে তারা প্রায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হ’তে গেছিল যা পরে মোহাম্মদের হস্তক্ষেপে প্রশমিত হয়। মোহাম্মদ সেই বাল্য কাল থেকেই চিন্তাশীল ছিল, তেমনি ছিল বুদ্ধিমান। যা তার ব্যবসায়িক
কাজে সাফল্য ও আসওয়াদ পাথরকে কাবায় বসানোর ঘটনা থেকে নি:সন্দেহে বোঝা যায়। তার মূল চিন্তা ছিল মক্কার বিভক্ত গোষ্ঠীগুলিকে একত্র করে একটা জাতি হিসাবে গড়ে
তোলা যাতে মক্কা তথা আরব দেশে প্রাথমিক ভাবে একটা শক্তিশালী রাজ্য গড়ে তোলা যায়। অর্থাৎ তার চিন্তা
ছিল রাজনৈতিক। স্বজাতীর প্রতি ভালবাসা বা দেশপ্রেম থেকেই
এটা উৎসারিত। বস্তুত:সেই তখনকার আমলের আরবগুলোর মধ্যে উৎকট দেশপ্রেমিকতা প্রবল
ছিল। মোহাম্মদ তাদের সেই দেশপ্রেমের শক্তিকে কাজে লাগাতে চাইল।এ চিন্তা তার মাথায় আসে রোম বা পারস্য সাম্রাজ্যের শান শওকতের কাহিনী শুনে,
এমনকি পার্শ্ববর্তী সিরিয়ার চাকচিক্যও তাকে এ চিন্তায় অনুপ্রাণিত
করেছিল। মক্কার গোষ্ঠীগুলি ছিল পৌত্তলিক আর কাবার মধ্যে ছিল তিনশ ষাটটি
পুতুল যাদেরকে তারা দেব দেবী মনে করত। বিভিন্ন কেন্দ্রিক
দেব দেবতার আধিপত্য নিয়েও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাত বেধে যেত,
তারা প্রমান করার চেষ্টা করত কোন দেবতা বা দেবীর শক্তি বেশী। বুদ্ধিমান মোহাম্মদ বুঝল- এদেরকে যদি একেশ্বরবাদী ধর্মে রূপান্তরিত করা যায়,
তাহলে তার অধীনে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব। তার এহেন চিন্তা ভাবনার পরিচয় আমরা পাই তার পরবর্তী জীবনের কাজকর্ম দেখে। ধর্মপ্রচারক নবীর চাইতে রাজনৈতিক নবীর সাফল্য তাই অনেক বেশী। মক্কায় তার ১০ বছরের বেশী সময় গেছে ইসলাম প্রচারে কিন্তু তেমন সাফল্য আসে নি। কিন্তু মদিনায় গিয়ে মদিনাবাসীদেরকে একত্রিত করে যখনই মোহাম্মদ রাজনৈতিক ক্ষমতার
অধীকারী হয়েছে তখনই তার সাফল্য আকাশচুম্বি। নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিয়ে
দেখলে দেখা যাবে- নবী হিসাবে মোহাম্মদের চাইতে শাসক মোহাম্মদের সাফল্য অনেক অনেক বেশী,
যদিও সে সাফল্যকেই ইসলামী পন্ডিতরা নবী মোহাম্মদের সাফল্য হিসাবে
দেখাতে চায়।
মোহাম্মদ ও ইসলাম নিয়ে গবেষণা করতে গেলে
সবচাইতে বড় যে সমস্যায় পড়তে হয় তা হলো-আরবে মোহাম্মদ তার ইসলাম প্রচার ও প্রসারের
পর আরবের অতীত ইতিহাস ও নিদর্শন সব ধ্বংস করে ফেলেছে। শুধু আরব দেশই নয়, এর পরে যে সব দেশে
ইসলাম প্রসারিত হয়েছে সেখানেও একই অবস্থা পরিলক্ষিত। তবে আরব দেশের জন্য এটা খুব বেশী প্রযোজ্য। ইসলামের আগেকার আরব দেশের ইতিহাস পাওয়া তাই খুবই দুরুহ। কোন সঠিক প্রামান্য ইতিহাস নেই। আইয়ামে জাহিলিয়াত
বা বর্বর যুগের নামে তা সব ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, সংরক্ষন করা হয় নি।ইসলামের চরিত্র হলো
সর্বাত্মক।সে যেখানেই যাবে সেখানকার ইতিহাস, এতিহ্য, সংস্কৃতি সব ধ্বংস করে দিয়ে আরব সংস্কৃতির
প্রসার ঘটাবে। এটা এতটাই সর্বাত্মক যে – একজন বাংলাদেশী মুসলমান এক সময় মনে করবে-সে একজন বাঙালী নয়
বরং আরব, আর তা ভেবে সে গর্ব অনুভব করবে। একারনে মোহাম্মদ ও তার ইসলাম নিয়ে গবেষণা করতে গেলে মূলত; মুসলমানদেরই লেখা কিতাবের ওপর নির্ভর করতে হবে। কিন্তু বিজয়ীরা সব সময় তাদের স্বপক্ষেই ইতিহাস রচনা করে যেখানে বিজিত লোকরা হয়
সব শয়তান আর বিজয়ীরা হয় সাধু। যেমন-একজন নিবেদিত
প্রান মুসলমান কখনই এমন কিছু লিখবে না যাতে মোহাম্মদের চরিত্রের সামান্য নেতি বাচক
দিক ফুটে ওঠে। বরং মোহাম্মদের নেতিবাচক কিছু থাকলেও সে তা
এড়িয়ে যাবে ও যে সব গুন মোহাম্মদের ছিল না বা যেসব ঘটনা মোহাম্মদ ঘটায় নি সেধরনের
অনেক মনগড়া বিষয় সুন্দর শব্দ ও বাক্য চয়ণ করে লিখে যাবে। নিবেদিত প্রান মুসলমানের দ্বারা লেখা সব গুলি কিতাবেই এটা অত্যন্ত উৎকটভাবে প্রকাশ্য। কিন্তু তার পরেও তাদের রচনায় কিছু কিছু বিষয় থাকবে যা থেকে আসল ঘটনা বা বিষয়
টের পাওয়া যেতে পারে। কেউ যদি গোলাম মোস্তফা বা ড. এনামুল হকের
মহানবীর জীবনী পড়েন তিনি তা ভালমতোই টের পাবেন।
সর্বপ্রথমেই দেখা যেতে পারে তার আল্লাহর ধারনা
সম্পর্কিত বিষয়টিকে। দেখা যায়- আল্লাহ শব্দটি নতুন কিছু না,
এটা সম্পূর্নই আরব পৌত্তলিকদের একজন দেবতা, প্রধান দেবতা। ইবনে ইসহাকের সিরাত
রাসূলুল্লাহ বা রসূলুল্লাহর জীবনীতে এসব দেখা যায়। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে- ইসহাক কিন্তু আল্লাহ কে প্যগানদের প্রধান দেবতা
হিসাবে উল্লেখ করতে ভুলে গেছেন। কারনটাও বোধগম্য। প্যাগানদের দেবতার নাম বহাল থাকলে তা ইসলামের ভাবমূর্তি তথা মোহাম্মদের ভাব মূর্তির
জন্য ক্ষতিকর।
যখন মোহাম্মদ জন্মাল তখন রেওয়াজ ছিল,
ধাত্রী দিয়ে তাদেরকে দুধ পান করানো ও লালন পালন করা। মোহাম্মদ জন্মানোর পর সে এতীম বলে কোন ধাত্রী তাকে নিতে রাজী হলো না। হালিমা নামের এক ধাত্রী তাকে নেয়ার জন্য তার স্বামীর কাছে অনুরোধ করলে তার স্বামী
তাকে বলল- “তাকে নাও , সম্ভত এর মধ্যে আল্লাহ আমাদের জন্য কোন আশীর্বাদ দেবেন।” এর পরে এক সময় সে হালিমাকে বলল- “হালিমা ,
আল্লাহর কসম, তুমি আমাদের
জন্য একটা আশীর্বাদযুক্ত আত্মা এনেছ।” এর পরেও বহুবার সে
আর হালিমা “আল্লাহ” শব্দটি উচ্চারন করেছে (সিরাত রাসূলুল্লাহ, ইবনে ইসহাক, পৃ-৮-৯)
তখন তো ইসলাম ধর্ম ছিল না, আরবরা ছিল পৌত্তলিক ইসলাম অনুসারে, তাহলে হালিমা আর তার স্বামী আল্লাহ শব্দটি কোথা থেকে পেল? কাকেই বা আল্লাহ বলে সম্বোধন করল? যদি ইসলাম ধর্ম সম্মত আল্লাহ হয়ে থাকে তাহলে আরবরা যে বহু ঈশ্বরবাদী ছিল তা প্রমানিত
হয় না, আর ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আরবরা যদি বহু ঈশ্বরবাদী
হয় তাহলে আল্লাহ এখানে একজন অন্যতম ঈশ্বর বা দেবতা বা দেবী। সিরাত রাসুলাল্লাহ গ্রন্থে এভাবে বহুবার তথাকথিত পৌত্তলিকদেরকে আল্লাহ শব্দটি উচ্চারন
করতে দেখা যায়।
Allah was not considered the sole divinity; however, Allah
was considered the creator of the world and the giver of rain. The notion of
the term may have been vague in the Meccan religion.[8] Allah was associated
with companions, whom pre-Islamic Arabs considered as subordinate deities.
Meccans held that a kind of kinship existed between Allah and the jinn.[21]
Allah was thought to have had sons[22] and that the local deities of al-ʿUzzā,
Manāt and al-Lāt were His daughters.[23] The Meccans possibly associated angels
with Allah.[24][25] Allah was invoked in times of distress.[25][26] Muhammad’s
father’s name was ʿAbd-Allāh meaning “the slave of Allāh”[25](
http://en.wikipedia.org/wiki/Allah)
এখন আরব প্যাগানরা আল্লাহ শব্দটি কোথা থেকে
পেল?সোজা কথা , আল্লাহ শব্দটি মোহাম্মদের
কোন নতুন আবিস্কৃত শব্দ না। ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের
অনেক আগ থেকেই মধ্যপ্রাচ্যীয় খৃস্টানরা তাদের ঈশ্বরকে আল্লাহ বলেই সম্বোধন করত এবং
এখনও অনেকেই তা করে থাকে(http://www.christiananswers.net/q-eden/allah.html)। এখন জানা দরকার এ আল্লাহ শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে? উৎপত্তি যেখান থেকেই
হোক না কেন খৃষ্টিয় ও ইহুদীদের আল্লাহ বা God এবং মুসলমানদের আল্লাহ কি এক ?
প্রথমেই আমাদের জানা দরকার , আল্লাহ শব্দটি কোথা থেকে এসেছে আর আরব প্যগানরা কাকেই বা আল্লাহ
বলত। নিরপেক্ষ সূত্র মতে আল্লাহ শব্দটি এসেছে আরবী al
–‘the’ and ‘ilah’- deity or god থেকে। পরে উচ্চারন সহজ করার জন্য ilah শব্দটির i
কে বাদ দিয়ে al+lah= allah এভাবে আল্লাহ শব্দটি উদ্ভুত হয়েছে। অথচ মুসলিম পন্ডিত
দের মতে এটা এসেছে আরবী elah শব্দ থেকে । উপরোক্ত শব্দ থেকে বোঝাই যাচ্ছে elah শব্দটা এসেছে
ilah শব্দ থেকেই আর তা এসেছে উচ্চারনে সহজতা আনার জন্য। বাংলা ভাষায় ভুরি ভুরি এর নজীর দেয়া যায় যেমন-ইসহাক→ এসহাক, বিড়াল্→বেড়াল, পিতল→ পেতল ইত্যাদি। এখানে বোঝা দরকার , ইসলামী পন্ডিতরা এরকম কেন ব্যাখ্যা দিচ্ছে? তার কারন তারা প্যাগানদের উচ্চারিত আল্লাহ শব্দটির সাথে একটা
ভিন্নতা সৃষ্টি করতে চাইছে। কেন তারা তা চাইছে
? কারন তারা বুঝাতে চায় প্যাগানদের কথিত আল্লাহ কিন্তু মোহাম্মদ
কথিত আল্লাহ নয়। এরা প্রমান করতে চায় মোহাম্মদ কথিত আল্লাহই
হলো তৌরাত, বাইবেলের কথিত আল্লাহ, তথা এ আল্লাহ মোহাম্মদকে শেষ নবী হিসাবে দুনিয়ায় প্রেরন করেছে,
বাইবেলের ভবিষ্যদ্বানী অনুযায়ী, তাই সকল ইহুদি ও খৃষ্টানদের উচিত মোহাম্মদের ধর্ম অনুসরণ করা। প্রাক-ইসলামী যুগে কথিত পৌত্তলিকদের ৩৬০ টি মূর্তি ছিল কাবা ঘরে। এর মধ্যে প্রধান ছিল- আল্লাহ ও তার তিন কন্যা যারা দেবী- আল-লাত, উজ্জা ও মানাত। এ তিন দেবীর কথা কোরানেও
উল্লেখ আছে।
তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও ওযযা সম্পর্কে। এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে? সূরা- আন-নাজম
৫৩: ১৯, মক্কায় অবতীর্ন।
উপরোক্ত আয়াতে মোহাম্মদ পৌত্তলিক কোরাইশদের
দেবতাদের স্বীকার করে নিচ্ছেন। এ আয়াতটিই বিখ্যাত
শয়তানের আয়াত বলে ইসলামি জগতে পরিচিত যা আবার বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত। এর ফলে কুরাইশদের মধ্যে উৎফুল্লতা সৃষ্টি হলো। তারা দেখল অবশেষে মোহাম্মদ
তাদের দেবীদেরকে স্বীকার করে নিল, এরপর তারা সবাই কাবায়
একসাথে প্রার্থনা করল। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই তার হঠাৎ মনে হলো যে কাজটা
ঠিক হয় নি। এসব দেব দেবীদেরকে স্বীকার করে নিলে ইহুদি
ও খৃষ্টানদের কাছে তার নবুয়ত্বের যৌক্তিকতা থাকবে না। তাহলে তার নবূয়ত্ব ও ইসলাম দুটোই ব্যর্থ হয়ে যাবে।তিনি তো ইব্রাহীম, মূসা আর ইশার পরে সর্বশেষ
নবী দাবীকারী। শুধু পৌত্তলিকদের নবী বা ধর্মগুরু হলে তার
স্বপ্ন সফল হবে না। তাই সাথে সাথে তিনি সূরা নাজিল করলেন-
পুত্র-সন্তান কি তোমাদের জন্যে এবং কন্যা-সন্তান
আল্লাহর জন্য? এমতাবস্থায় এটা তো হবে খুবই অসংগত বন্টন। এগুলো কতগুলো নাম বৈ নয়, যা তোমরা এবং তোমাদের
পূর্ব-পুরুষদের রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল নাযিল করেননি। তারা অনুমান এবং প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে। অথচ তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে।কোরান, সূরা- আন-নাজম ৫৩: ২০-২২, মক্কায় অবতীর্ন।
অর্থাৎ তিনি আগের আয়াতে
দেবীদেরকে যে স্বীকার করে নিয়েছিলেন তা অস্বীকার করে ফেললেন। সেই সময়ে আরবদের কাছে পূত্র সন্তান ছিল কাম্য আর কন্যা সন্তান ছিল অপাংক্তেয়। আয়াতে তাই বলা হচ্ছে- পূত্র সন্তান হবে তোমাদের আর আল্লাহর হবে কন্যা সন্তান?
এটা যৌক্তিক নয় ও গ্রহনও করা যায় না।তখন বলা হলো – আগের আয়াত ওটা শয়তান জিব্রাইলের বেশ ধরে
মোহাম্মদকে বলে গেছিল। কি আশ্চর্য কথা! আল্লাহর সবচাইতে পেয়ারা
নবী, শ্রেষ্ট নবী, যার একজন সামান্য
উম্মত হওয়ার জন্য আগের নবীরা হা পিত্যেশ করেছে, অথচ শয়তান এসে তার কাছে আয়াত বলে গেল আর তিনি টেরটি পেলেন না , তার আল্লাহ তাকে সাথে সাথে বলেও দিলেন না। অথচ তিনি কখন কার সাথে সহবাস করবেন, কাকে বাদ দিয়ে
কার ঘরে রাত কাটাবেন, কাকে বিয়ে করবেন এসব আল্লাহ তাকে ক্ষিপ্র
গতিতে জানিয়ে দেয়। কখন জিব্রাইল তাকে ভুলটি শুধরিয়ে দিল ?
যখন মোহাম্মদ দেখল কুরাইশরা তার ইসলাম গ্রহন
করছে না , তার বয়সও বেড়ে যাচ্ছে, অথচ কোন সাফল্য আসছে না তখন অনেকটা মরিয়া হয়ে তিনি এমন পথ
ধরার চিন্তা করলেন যা কুরাইশদেরকে আকৃষ্ট করে তার দলে আসতে সাহায্য করবে। তখনই তিনি উক্ত সূরা নাজিল করেন। কুরাইশরা এটা শুনে
আনন্দিত হলো। এ খবর একটা সময়ে মদিনা ও আবিনিসিয়ায় প্রবাসী
হয়ে থাকা মুসলমানদের কাছে গেল ও তারা মক্কায় নিজ ঘরে ফিরে আসার তোড়জোড় শুরু করল। আর তখনই জিব্রাইল এসে বলল- হে মোহাম্মদ আপনি কি করেছেন? আল্লাহ যা আপনাকে বলেন নি আপনি সেটাই প্রচার করেছেন। আর তখনই ৫৩ নং সূরার ২০-২২ নং আয়াত নাজিল হয়। এছাড়াও মোহাম্মদকে আশ্বস্থ করার জন্য নিচের এ আয়াত সমূহ নাজিল হয়-
আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ
করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়,
প্রজ্ঞাময়। এ কারণে যে,
শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে,
যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়। গোনাহগাররা দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে। এবং এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞানদান করা হয়েছে; তারা যেন জানে যে এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য;
অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন
এর প্রতি বিজয়ী হয়। আল্লাহই বিশ্বাস স্থাপনকারীকে সরল পথ প্রদর্শন
করেন। সূরা হাজ্জ-২২: ৫২-৫৪, মদীনায় অবতীর্ণ।
এখানে পরিস্কার করে বলা হচ্ছে মোহাম্মদের
কাছে প্রেরিত ওহীতে মাঝে মাঝে শয়তান তার কল্পনা মিশ্রণ করে দেয়। সেটা আবার কেমন ? এমন আজগুবি ও উদ্ভট ঘটনা কিভাবে সম্ভব ?
আল্লাহ ওহী প্রেরণ করে জিব্রাইল ফেরেস্তার মাধ্যমে, তার মাঝখানে আবার শয়তান তার কল্পনা মিশ্রন করে কিভাবে?
সর্ব শক্তিমান আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত জিব্রাইলকে কে পথে আটকিয়ে
তার মধ্যে অন্য বার্তা ঢুকায়ে দিতে পারে ? তা যদি পারে তাহলে আল্লাহ সর্ব শক্তিমান হয় কিভাবে? শয়তান যদি সেটা করতে পারে তাহলে তো বলতে হবে শয়তান আল্লাহর চাইতেও শক্তিশালী। কিছুটা বুদ্ধি যার ঘটে আছে সে খুব ভালমতো ধরে ফেলবে যে এটা একটা চালাকি আর সেটা
ঢাকতেই সাথে সাথে বলা হচ্ছে- শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে,
যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়। এখানে ঢাক দিতে গিয়ে কেঁচে গন্ডুস করে ফেলেছে আল্লাহ। কারন যাদের অন্তরে রোগ আছে আর যারা পাষাণ হৃদয় তাদের জন্য আবার পরীক্ষা কিসের?
তাদেরকে তো আল্লাহ করুণা করে অত্যন্ত সহজ ভাবে নিজের পথে আনবে। পরীক্ষা করতে পারে একমাত্র বিশ্বাসী লোকদেরকে এটা দেখতে যে তাদের বিশ্বাস কতটা
অটুট, যেমন সেটা আল্লাহ করেছিল ইব্রাহীমের উপর,
মূসার উপর। ফিরাউনের উপর তো আল্লাহ
পরীক্ষা করতে পারে না কারন তার হৃদয় তো এমনিতেই পাষাণ। তাকে আল্লাহ শিখানো পড়ানোর পর বিশ্বাসী হলেই পর একমাত্র পরীক্ষা করতে পারে। আল্লাহর কি অদ্ভুত যুক্তি! কুরাইশরা খুব ভাল মতো মোহাম্মদের এ চালাকি ধরতে পেরেছিল
বলেই এর পর তার ওপর বেশী ক্ষাপ্পা হয়ে যায়। এর কারণটাও যৌক্তিক। তাদের দেবীদেরকে স্বীকার
করে পরে তা প্রত্যাখ্যান করেছে, এর পর আবার উদ্ভট কথামালা
দিয়ে তা ঢাকা দেয়ার চেষ্টা করছে।
এখানে আরও একটা বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্য করতে
হবে। সেটা হলো- কোরান কতটা এলোমেলো ভাবে বর্নিত অথবা সংকলিত করা হয়েছে
অর্থাৎ কোন সামঞ্স্য
এতে নেই। শয়তানের আয়াত যা ৫৩ নং সূরা যা মক্কাতে অবতীর্ণ অথচ সে সম্পর্কিত
সান্তনা সূচক আয়াত হলো ২২ নম্বর সূরায় যা নাকি আবার মদীনায় অবতীর্ণ। কোরানের মধ্যে এত গোলমাল আছে তা অতি ধৈর্য ও মনযোগ সহকারে না পড়লে বোঝাই যায়
না। বলাবাহুল্য, মক্কায় অবতীর্ণ সূরা
আগে অবতীর্ণ, আর মদিনায় অবতীর্ণ সূরা পরে অবতীর্ণ। সে হিসাবে ৫৩ নং সূরা ২২ নং সূরার আগে থাকা উচিত আর তাহলেই কোরান পড়ে বুঝতে সুবিধা। কিন্তু এখানে উক্ত সকল আয়াত একই সূরাতে থাকা উচিত , তাহলে পরিস্কার ভাবে সব কিছু বোঝা যায়, কোন অস্পষ্টতা থাকে না। এখানে যে ভাবে ভিন্ন
ভিন্ন সূরা সাজানো হয়েছে একই ঘটনার প্রেক্ষিতে কার বাপের সাধ্য তা বুঝবে ?
অথচ আল্লাহ এর চাইতে কত সামান্য ব্যপারে অতি
দ্রুত ওহী পাঠিয়ে দেয় তার সামান্য একটু নমূনা-
মুহাম্মদ ইবনে হাতেম ইবনে মায়মুন এবং মুহাম্মদ
ইবনে রাফে বর্ণনা করেছেন– আনাস বলেন যে,
যয়নব এর ইদ্দত পূর্ণ হইলে রাসূলুল্লাহ যায়েদকে বললেন,
তুমি যয়নবের নিকট আমার বিয়য় বল। আনস বললেন, যায়েদ তার নিকট চলে গেলেন। তখন তিনি আটার খামির করিতেছিলেন।যায়েদ বলেন,
আমি যখন তাকে দেখিলাম, তখন আমার অন্তরে তার মর্যাদা এমনভাবে জাগ্রত হলে যে আমি তার প্রতি আর তাকাইতে পারলাম
না। কেনান রাসূলে পাক তাকে গ্রহণ করেছেন; সুতরাং আমি তার দিক হইতে মূখ ফিরাইয়া পিছনে সরিয়া আসিলাম। তারপর বললাম, হে যয়নব! রাসূলুল্লাহ আপনাকে স্মরণ করে আমাকে
প্রেরণ করেছেন। আমার কথা শুনে তিনি বললেন আমি এই সম্পর্কে
কিছুই বলিব না ও করিব না যে পর্যন্ত না আল্লাহর তরফ হতে আমার নিকট কোন নির্দেশ আসে। এর পর তিনি নামাজের স্থানে গিয়ে দন্ডায়মান হলেন। এদিকে কুরআনে পাকের আয়াত নাযিল হলো এবং রাসূলুল্লাহ এসে যয়নবের অনুমতি ছাড়া
তার ঘরে প্রবেশ করলেন। আনাস বলেন, আমরা দেখিলাম, রাসূলুল্লাহ যয়নবের সেই বিবাহের সময় দ্বিপ্রহরে
আমাদেরকে রুটি ও গোশত আহার করালেন। সহি মুসলিম,
হাদিস নং-৩৩৩০
অর্থাৎ যয়নব একটু নিমরাজি
হওয়ার সাথে সাথেই আল্লাহ সেকেন্ডের মধ্যে ওহি পাঠিয়ে দিলেন ও যে কাজ ইসলামে প্রচন্ডভাবে
নিষেধ সেই কাজ নিজেই করলেন, তা হলো- কোন নারী একা
গৃহে থাকলে তার ঘরে প্রবেশ করা যাবে না। গৃহে প্রবেশ করলেন
তাও বিনা অনুমতিতে। অথচ তখনও মোহাম্মদের সাথে যয়নবের বিয়ে হয়
নি।
আরও একটা নমুনা দেখা যাক্ -
আবু কুরাইব মুহাম্মদ ইবনে আলা বর্ণনা করেছেন—-
আয়শা বলেন যে মহিলারা রাসূলুল্লাহ এর স্ত্রী হওয়ার জন?
যে গায় পড়িয়া আত্মনিবেদন করত তাদের নির্জলজ্জতার কারণে আমি
বিস্মিত হতাম এবং বলতাম যে কোন নারী কি এভাবে আত্ম নিবেদন করে? এর পর আল্লাহ নাজিল করলেন এ ওহী- আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা
দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি যাকে দূরে রেখেছেন, তাকে কামনা করলে তাতে
আপনার কোন দোষ নেই। এতে অধিক সম্ভাবনা আছে যে, তাদের চক্ষু শীতল থাকবে; তারা দুঃখ পাবে না এবং আপনি যা দেন, তাতে তারা সকলেই
সন্তুষ্ট থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ,
সহনশীল। সূরা আল আহযাব,
৩৩:৫১, মদীনায় অবতীর্ণ। আয়শা বলেন এই আয়াত নাজিল হলে আমি বললাম , আল্লাহর কসম, আমি তো দেখতেছি আপনার প্রতিপালক আপনার ইচ্ছা
পূরণ করতে সাথে সাথে সাড়া দিয়ে থাকেন। সহি মুসলিম,
হাদিস-৩৪৫৩
এখানেও দেখা যাচ্ছে , আল্লাহ অতি দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য মোহাম্মদের কাছে ওহী
পাঠিয়ে দেয়। বিন্দু মাত্র দেরী করে না। বিষয়টি আয়শার কাছে সন্দেহের সৃষ্টি করে। আর করবেই বা না কেন। যে নারী এসে মোহাম্মদকে
বিয়ে করতে চায়, মোহাম্মদ অকাতরে তাকে বিয়ে করে ফেলে। কোন আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন নারী তার স্বামীর এহেন কর্মকান্ড মেনে নিতে পারে না। যতদুর জানা যায় আয়শা ছিল খুবই বুদ্ধিমতী। তার নিজের বাপের ছিল একটি মাত্র বৌ, অথচ আল্লাহর
নবী একের পর এক বিয়ে করে চলেছেন। বিষয়টা তার খুবই দৃষ্টি
কটু লাগে।আর সেই সন্দেহের কারনেই সে উক্ত কথাগুলো বলে। সন্দেহ না হলে সে এ ব্যপারে চুপ থাকত, কোন মন্তব্য
করত না। আরও খেয়াল করতে হবে-প্রায় সাথে সাথেই ওহী চলে এসেছে যখন মোহাম্মদ
নারী ঘটিত কোন ঝামেলায় জড়িয়ে গেছেন তখন। অথচ খোদ ইসলামের ভিত্তি
মূলে আঘাত করার যে শয়তানের আয়াত যা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে ইসলামেরই অস্তিত্ব বিপন্ন
হতো, ইসলাম হয়ে যেত আরবেদের সেই পৌত্তলিক ধর্ম, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ নিলেন বেশ লম্বা সময়। সেই সময় মক্কা থেকে মদিনা বা আবিনিসিয়া যাওয়া ছিল বেশ কয়দিনের ব্যাপার। শয়তানের আয়াতের খবর মক্কা থেকে মদিনা ও আবিনিসিয়া চলে গেছে, তারপর মোহাম্মদের কিছু অনুসারী মক্কায় ফিরেও এসেছে। তার মানে কম পক্ষে ১৫/২০ দিন কেটে গেছে বা আরও বেশীদিন। আর এর পরেই আল্লাহ বুঝতে বা জানতে পারল যে মোহাম্মদের কাছে শয়তান গিয়ে শয়তানের
বানী জিব্রাইলের রূপ ধরে পৌছে দিয়ে গেছে, আর তখনই সে
তার পরিবর্তে অন্য আয়াত প্রেরণ করল মোহাম্মদকে উদ্ধার করতে। অথচ যয়নব বায়না ধরা মাত্রই অতি দ্রুত আল্লাহ সেটা টের পেল আর মোহাম্মদকে উদ্ধার
করতে ওহী পাঠিয়ে দিল বা আয়শা নারীদের ব্যপারে জিজ্ঞেস করা মাত্রই সাথে সাথে আল্লাহ
ওহী পাঠিয়ে দিয়ে মোহাম্মদকে রক্ষা করল। মোহাম্মদের প্রতি আল্লাহর
এ অপার করুণা আমাদেরকে বিস্মিত করে বৈ কি! তবে যুক্তিতে মেলে না।
************************************************************************
পর্ব-২--মোহাম্মদ ও ইসলাম,
আল্লাহ শব্দটি কোথা থেকে এল এ বিষয়ে আলোকপাত
করা যাক। আগেই দেখা গেছে যে, ইসলাম পূর্ব
যুগেও প্যাগান আরবরা আল্লাহকে ডাকত। কিন্ত সে আল্লাহ কোন
আল্লাহ? কোরান হাদিসের বক্তব্য- এ আল্লাহ সেই আল্লাহ
যাকে ইব্রাহিম, ইসহাক, মূসা নবীরা যাকে তাদের প্রভু বলেছে। কিন্তু আসলেই কি তাই?সেই আরব দেশে বিশেষ করে মক্কা মদিনায় যেখানে মোহাম্মদের জন্ম
ও ইসলাম প্রচার, সেখানকার প্যগানরা তারাও আল্লাহ কে ডাকত। উদারহরন স্বরূপ- মোহাম্মদের পিতার নাম ছিল আব্দুল্লাহ, আবদ+আল্লাহ= আব্দুল্লাহ। আরবী আবদ অর্থ- দাস,
অর্থাৎ আল্লাহর দাস। কিন্তু কোন্ আল্লাহর
দাস?তখন তো মক্কায় ইসলাম প্রচার হয় নি। অর্থাৎ মক্কার কুরাইশরা
ছিল সবাই প্যাগান। যেমন- মোহাম্মদের নিজ চাচা আবু তালিব যার
কাছে মোহাম্মদ লালিত পালিত হন, তিনি সর্বাত্মকভাবে
মোহাম্মদকে রক্ষা করলেও নিজে ইসলাম গ্রহন করেন নি, প্রকাশ্যেও না, গোপনেও না। আবু তালিব যখন মৃত্যু শয্যায় শায়িত, মোহাম্মদ তার
কাছে এসে সর্বশেষ আর্জি জানান ইসলাম গ্রহণ করতে, কিন্তু তা সত্ত্বেও আবু তালিব ইসলাম কবুল করেন নি।তার মানে আবু তালিব ছিলেন প্যাগান আর তিনিও আল্লাহকে ডাকতেন কিন্তু সেই আল্লাহ
অবশ্যই ইসলাম কথিত আল্লাহ নয়, নয় ইহুদী খৃষ্টান
কথিত ঈশ্বর। ইসলাম কথিত আল্লাহ হলে মোহাম্মদের আব্দার
রক্ষা করা তার পক্ষে অতীব সহজ হতো। অন্যদিকে প্যাগানদের
কথিত আল্লাহ ইহুদী বা খৃষ্টানদের আল্লাহও নয়, তা যদি হতো তাহলে তারা প্যাগান বা পৌত্তলিক হতো না।
কিন্তু বাস্তবে ইসলাম কথিত আল্লাহই ছিল প্যগানদের
আল্লাহ কিন্তু মোহাম্মদ দাবী করতেন তা হলো ইহুদী ও খৃষ্টানদের ডাকা আল্লাহ। আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ করেনি কারন মোহাম্মদ আল্লাহকে স্বীকার করলেও বাকী দেব দেবীকে
অস্বীকার করেছিলেন। অন্যদিকে ইহুদি ও খৃষ্টানরা মোহাম্মদ কথিত
আল্লাহকে গ্রহন করেনি কারন এ আল্লাহর নাম তাদের তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাবে উল্লেখ নেই,
উল্লেখ ছিল না কাবা ঘরের নাম তাদের কিতাবে। এটাও উল্লেখ ছিল না যে ইসরায়েলিটিস এর বাইরে কোন নবী আগমন করবে।মোহাম্মদ ছিলেন ইসরায়েলিটিস এর বাইরের।মোহাম্মদ কাবা ঘর পৌত্তলিকদের
মত প্রদক্ষিন করতেন, কাবার ভিতরের কাল পাথরকে চুমু খেতেন যা ছিল
ইহুদী খৃষ্টানদের ঐতিহ্য বিরোধী। একারনে তারা বুঝতে
পারত মোহাম্মদ যে আল্লাহকে ডাকেন তা তাদের কিতাব বর্ণিত ঈশ্বর বা আল্লাহ নয়। অর্থাৎ মূলত: মোহাম্মদ
কোরাইশদের আল্লাহকে গ্রহণ করলেও কুরাইশরা তা বুঝতে পারেনি, কিন্তু ইহুদী খৃষ্টানরা তাদের কিতাব অনুযায়ী বুঝতে পারে মোহাম্মদ আসলে প্যগানদের
আল্লাহকেই ডাকছে। এভাবে মোহম্মদ পৌত্তলিক কুরাইশ ও ইহুদী-খৃষ্টান
দু পক্ষের কাছেই অগ্রহণীয় হয়ে যান।কিন্তু এ ধরনের রিস্ক
নেয়া ছাড়া মোহাম্মদের উপায়ও ছিল না। কারন শুধুমাত্র কুরাইশদের
দলে টানলে তার আজন্ম লালিত স্বপ্ন আরব সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, কারন তাদের সংখ্যা খুব বেশী না যাদেরকে দিয়ে একটা সাম্রাজ্য
প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাকে ইহুদী-খৃষ্টানদেরকেও দলে টানতে হবে,
ছলে বলে কলে কৌশলে।
অতীব দু:খজনক বিষয় হলো- ইসলাম সম্পর্কিত
কোন উৎস বা কিতাবে
কুরাইশ প্যাগানরা কোন আল্লাহর উপাসণা করত এ ব্যপারে কোন ধারনা দেয়া হয়নি।আর ইসলাম পূর্ব কোন ইতিহাসও মুসলমানরা সংরক্ষন করেনি যার মাধ্যমে জানা যেতে পারে
প্যাগানদের আল্লাহ আসলে কে। ইসলাম পূর্ব যুগকে
মুসলমানরা অন্ধকার যুগ বা বর্বরতার যুগ হিসাবে আখ্যায়িত করে আর সেকারনে তারা সে যুগের
কোন ইতিহাস সংরক্ষন করেনি। তাদেরকে শুধুমাত্র
পৌত্তলিক বা প্যগান হিসাবেই আখ্যায়িত করা হয়েছে ও তাদেরকে ভীষণভাবে ঘৃণা ও অভিসম্পাত
করা হয়েছে। সুতরাং প্যগানদের আল্লাহ আসলে কে ছিল তা জানতে
আমাদেরকে অন্য উৎসের সাহায্য নিতে হবে। তবে এখানেও একটা সমস্যা আছে তা হলো-যা ইসলামের পক্ষে যায় এরকম কোন ঘটনা যদি ইসলাম
নিরপেক্ষ সূত্রে উল্লেখ থাকে তা মুসলমানদের গ্রহণ করতে অতিশয় আতিশয্য লক্ষ্য করা যায়,
কিন্তু যা বিপক্ষে যায় তাকে বিকৃত বলে আখ্যায়িত করতে তাদের
সামান্যতম দেরী হয় না। এখন তারা নিজেরাও ইতিহাস সংরকক্ষণ করেনি,
আবার অন্যের নিরপেক্ষ ইতিহাসও তারা গ্রহণ করবে না এটা একটা মারাত্মক
গোয়ার্তুমী। যারা শালিস মানবে অথচ তালগাছটা তাদের দাবি
করে বসে থাকবে তাদের সাথে কোন যুক্তি তর্ক করা যায় না। বিষয়টাও আদতে তাই। মুমিন বান্দারা কোন যুক্তি তর্কের ধার ধারে
না।যুক্তির ধার তারা না ধারলেও তাদেরকে ব্যখ্যা দিতে হবে প্যগানরা
কাকে আল্লাহ ডাকত। দু:খের বিষয় এব্যাপারে তারা কোন তথ্য প্রমান
ছাড়াই মনগড়া কথা বলে। Allah শব্দটি আরবী বা আরামাইক বা হিব্রু যে ভাষা
থেকেই উদ্ভুত হোক না কেন তার অর্থ একজন দেবতা বা বড়জোর প্রধান দেবতা এরকম অর্থ মেনে
নেয়ার কারন প্রাগ ঐতিহাসিক যে নিদর্শণাদি দেখা যায় সেসব।।এর আরও একটা জোরালো কারন হলো-তৌরাত ও নুতন নিয়মের কোথাও আল্লাহ শব্দটি লেখা নেই। আল্লাহ শব্দটি তৌরাত ও নুতন নিয়মে লেখা হয় যখন ইসলামী সাম্রাজ্যে সেগুলোকে আরবীতে
অনুবাদ করা হয় তখন।আর ইসলামী পন্ডিতরা এটাকেই মহা উৎসাহে প্রচার করে যে-
ইহুদী ও খৃষ্টানদের কিতাবে আল্লাহ শব্দটি লেখা আছে। এটা অনেকটা সম্রাট আকবরের আমলে কিছু ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে রচিত ভবিষ্যপূরাণ নামক
একটা ভুয়া তথাকথিত হিন্দু কিতাবে মোহাম্মদের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বানী করার ঘটনার মত। কথা হচ্ছে প্যগানরা এ শব্দটি দিয়ে কি বুঝাত বা তারা কোন্ আল্লাহর উপাসণা করত। এখানে http://en.wikipedia.org/wiki/Allah উৎস বলছে,
প্রাক ইসলামি যুগে আরবরা আল্লাহ বলতে একজন প্রধান দেবতা বুঝাত
যার আবার তিনজন কন্যা ছিল যাদের নাম- আল-লাত, উজ্জা ও মানাত। শয়তানের আয়াত বলে যে আয়াত কোরানে আছে তার
উৎপত্তির কিচ্ছাও
কিন্ত এটাই। কুরাইশরা চাইত মোহাম্মদ তার ইসলাম প্রচার
করুক সমস্যা নাই, কারন তিনি তো তাদেরই আল্লাহকে ডাকে,
কিন্তু তারা চাইত মোহাম্মদ যেন তাদের ওই তিন দেবীকেও স্বীকার
করে নেয়। দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ ইসলাম প্রচার করছেন কিন্তু কোন ক্রমেই
কুরাইশদেরকে দলে ভিড়ানো যাচ্ছে না, একারনে তার
মনে দারুন হতাশা। একারনেই মোহাম্মদ শয়তানের আয়াত নামক আয়াত
নাজিল করেন যাতে করে কুরাইশরা দলে ভেড়ে। মোহাম্মদের এ আয়াত
নাজিলের মাধ্যমেই বোঝা যায় তিনি আসলেই কুরাইশদের আল্লাহকে ডাকতেন। ইহুদী বা খৃষ্টানদের আল্লাহ নয়।
শয়তানের আয়াতটা ছিল মূলত এরকম:
তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও ওযযা সম্পর্কে। এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে? সূরা- আন-নাজম
৫৩: ১৯, মক্কায় অবতীর্ন।
এর পরের আয়াত ছিল – যারা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে।অর্থাৎ এ তিন দেবী
কুরাইশ ও আল্লাহর মাঝে মধ্যস্থতা করে।
পরবর্তীতে মোহাম্মদ উক্ত শেষ আয়াতটি পরিবর্তন
করে তার পরিবর্তে নিচের আয়াত সংযুক্ত করেন এই অজুহাত দিয়ে যে জিব্রাইল এসে তাকে জানিয়েছে
শয়তান নাকি তার রূপ ধরে এসে মোহাম্মদের কাছে শয়তানের আয়াত বলে গেছে ,কিন্তু আল্লার সর্বশ্রেষ্ট নবী যিনি আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া তার
স্ত্রীর সাথে সহবাস করেন না(তার ৯ টা স্ত্রীর কোন জনের সাথে কবে রাত কাটাবেন তাও আল্লাহ
বলে দেন), কাউকে বিয়ে করেন না, এমনকি পায়খানা প্রস্রাব পর্যন্ত করেন না , তার কাছে শয়তান এসে তার আয়াত বলে গেল, মনে হয় আল্লাহ তখন ঘুমাচ্ছিল আর জিব্রাইল বসে গাঁজা টানছিল
আর তাই তারা টের পায়নি।
পুত্র-সন্তান কি তোমাদের জন্যে এবং কন্যা-সন্তান
আল্লাহর জন্য? এমতাবস্থায় এটা তো হবে খুবই অসংগত বন্টন। এগুলো কতগুলো নাম বৈ নয়, যা তোমরা এবং তোমাদের
পূর্ব-পুরুষদের রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল নাযিল করেননি। তারা অনুমান এবং প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে। অথচ তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে।কোরান, সূরা- আন-নাজম ৫৩: ২০-২২, মক্কায় অবতীর্ন।
সুতরাং এ থেকে পরিষ্কার যে, প্যগানদের আল্লাহ খৃষ্টান বা ইহুদীদের ঈশ্বর বা আল্লাহ নয়। মোহাম্মদের পিতা আব্দুল্লাহ ছিল প্যগানদের আল্লাহ বা প্রধান দেবতা আল্লাহর দাস
অন্তত নামকরনের দিক থেকে।http://www.muslimhope.com/OriginsOfIslam.htm উৎস বলছে প্রায় একই কথা।এটা বলছে আরবী ভাষায় ইহুদী ও খৃষ্টানরা স্রষ্টার নামকে আল্লাহ হিসাবে ব্যবহার
করলেও আরব প্যগানদের কাছে ছিল তা প্রধান দেবতা যার ছিল তিন কন্যা ও তাছাড়া যে ছিল
কাবা ঘরে রক্ষিত ৩৬০ টি দেব দেবীর প্রধান। এ ছাড়াও আল্লাহ ছিল
কুরাইশদের প্রধান দেবতা যাকে তারা মানত।মূলত: কুরাইশরা অন্য
দেব দেবীর চাইতে এই প্রধান দেবতা আল্লাহ সহ তার তিন কন্যাকেই বেশী মান্য গন্য করত ও
তাদের উপাসণা করত। এমনকি বছরের একটা নির্দিষ্ট দিনে বা দিনসমূহে
কুরাইশরা উপবাস করত(রোজা), দান করত(যাকাত/ফিতরা),
মক্কার কাবা শরিফে পূজা দিত বা উপাসনা করত, তা ছাড়া আরবের বিভিন্ন স্থান হতে মক্কায় আসত(হজ্জ)। আর বলাই বাহুল্য, প্রাক ইসলামী যুগের এসব বিধানই পরবর্তীতে
ইসলামে যুক্ত হয়েছে সামান্য ভিন্ন আকারে। ইসলামের বহু আগে গোটা
আরব ভূমিতে লোকজন চন্দ্র দেবতার উপসনা করত যার বহু প্রত্নতত্ত্বিক নজীর পৃথিবীর বিভিন্ন
যাদুঘরে বিদ্যমান, এমনকি চন্দ্র দেবতার অনেক মন্দিরও আরবের বিভিন্ন
অঞ্চলে আবিষ্কৃত হয়েছে। এ ব্যপারে প্রত্নতাত্ত্বিক
ছবি সহ তথ্য প্রমান দেখতে হলে যেতে হবে এখানে-http://www.journeytojesus.com/ArchaelogicalGallery.pdf,
http://www.creationstudies.org/Education/moon-god.html,
http://www.yoel.info/moonotheism.htm,
http://www.investigateislam.com/moonGod.htm, । আরব অঞ্চলে প্রচলিত
চন্দ্র দেবতার জন্যই একটা মন্দির পরবর্তীতে মক্কাতে গড়ে ওঠে যেখানে এক সময় কুরাইশরা
প্রাধান্য বিস্তার করে। এ চন্দ্র দেবতারই ছিল তিনটি কন্যা যাদের নাম
ওপরে দেয়া আছে। মূলত: এ চন্দ্র দেবতাকেই কুরাইশরা উপাসণা
করত যাকে তারা Al-Ilah বা সংক্ষেপে Allah
বলে ডাকত। এ চন্দ্র দেবতার প্রতীক
ছিল বাঁকা চাঁদ। কুরাইশদের আল্লাহ যে মুলত সেই চন্দ্র দেবতা
তা বোঝা যায় প্রাক ইসলামী যুগে যেসব উপসণালয় আকিষ্কৃত হয়েছে তাতে চন্দ্র দেবতা ও
বাঁকা চাঁদের ব্যপক উপস্থিতি দেখে। আমরা লক্ষ্য করি ইসলামেও
চাঁদের সাথে একটা গভীর সম্পর্ক।যদিও কোরানে বলা হয়েছে-
চাঁদ সময় নির্নয়ের জন্য আল্লাহ তৈরী করা হয়েছে, কিন্তু তার পরও ইসলামের সব ক্ষেত্রে যেভাবে বাঁকা চাদেঁর ব্যবহার সেই ইসলামের প্রাথমিক
যুগ থেকে চলে আসছে তাতে বোঝা যায় আল্লাহর সাথে চাদেঁর একটা অলিখিত গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। চাদেঁর চেয়ে সূর্যই বরং আমাদের দৈনন্দিন সময় নির্নয়ের জন্য বেশী সহায়ক,
অথচ ইসলামের কোথাও সূর্যের প্রতীক ব্যবহার করা হয়না। তার অর্থ চাঁদ ইসলামে শুধু সময় নির্নয়ের উপাদানের চাইতে অনেক বেশী কিছু। যা পরিস্কারভাবে নির্দেশ করে যে মোহাম্মদের আল্লাহ এ চাঁদ সম্পর্কিত আল্লাহ তথা
পৌত্তলিকদের কথিত আল্লাহ, কোন ক্রমেই ইহুদী ও
খৃষ্টানদের কথিত ঈশ্বর বা আল্লাহ নয়। এ চন্দ্র দেবতাকে আরবরা
হাবুল বলেও সম্বোধন করত। অর্থাৎ এ হাবুলই হলো চন্দ্রদেবতা
আর এ চন্দ্র দেবতাই হলো কোরানের আল্লাহ।যেমন ইসলাম অনুযায়ী-
আল্লাহর নাম হলো ৯৯ টা। এছাড়াও প্রাক ইসলামি যুগে আরবের প্যগানরা
কোন কোন সময় বিশেষ পাথর খন্ডকে দারুন শ্রদ্ধার চোখে দেখত যেমন বর্তমানে হিন্দুরা তা
করে থাকে শিবলিঙ্গ নামক পাথর খন্ডকে।মক্কার কাবার মধ্যে
যে কাল পাথর খন্ড আছে সেটাকেই তেমনি প্যগানরা ভক্তি শ্রদ্ধার সাথে দেখত, যা মোহাম্মদ তার ইসলামেও চালু করেছেন, কারন একে ভক্তি করলে একে চুমু দিলে নাকি সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।অর্থাৎ, মোহাম্মদ মূলত
কোরাইশদের পৌত্তলিক প্রথাকে একটু পরিবর্তিত ফর্মে প্রতিষ্ঠা করেছেন। অথচ এই পাথরকে পূজা করতে মোহাম্মদের একজন বড় সাহাবী ওমর ইবনে খাত্তাব অনেকটাই
অস্বীকার করেছিল যা দেখা যায় নিচের হাদিসে-
আবিস বিন রাবিয়া বর্নিত- ওমর কাল পাথরের
নিকট আসলেন এবং একে চুমু দিলেন, তারপর বললেন-আমি জানি
তুমি একটা পাথর বৈ আর কিছু নও, তুমি কারও উপকারও করতে
পার না, অপকারও করতে পার না। আমি যদি রাসুলুল্লাহকে না দেখতাম তোমাকে চুমু খেতে আমি তোমাকে চুমু খেতাম না। বুখারী, বই-২৬, হাদিস-৬৬৭
যায়েদ বিন আসলাম বর্নিত- ওমর বিন খাত্তাব
কাল পাথরকে উদ্দেশ্য করে বললেন- আল্লাহর কসম, আমি জানি তুমি একটা পাথর ছাড়া আর কিছু নও, তুমি না পার কারো উপকার করতে, না অপকার। নবীকে যদি আমি না দেখতাম তোমাকে চুমু খেতে আমি তোমাকে কখনও স্পর্শ করতাম না। বুখারী, বই-২৬, হাদিস-৬৭৫
অর্থাৎ সেই মোহাম্মদের আমলেও
নব্য মুসলমানদের কাছে এ কাল পাথরকে এত সম্মান করার বিষয়টি বিসদৃশ লেগেছিল আর তারই
বহি:প্রকাশ দেখা যায় উক্ত হাদিস দু'টিতে। কিন্তু ইহুদি বা খৃষ্টানরা কখনই এ কাল পাথরকে চুমু খেত না বা কখনই কাবা ঘরে এসে
উপসণা করত না, কাবা ঘরকে প্রদক্ষিন করত না।কারন তারা একে পৌত্তলিক আরবদের একটা কুসংস্কার হিসাবে মনে করত।ইহুদী খৃষ্টান ধর্মে তাদের উপাসনালয়কে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিন করার কোন প্রথা চালু
ছিল না কখনও। এ ধরনের রীতি ভারতেও দেখা যায় যে পূণ্যার্থীরা
কোন কোন মন্দিরের চারপাশে পূণ্য লাভের আশায় প্রদক্ষিন করছে। ইসলাম যদি ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সংস্করন হয়ে থাকে- তাহলে
তাদেরও এ পাথরকে সম্মান করার কথা, তাদের উপাসনালয়গুলিকে
প্রদক্ষিন করার রীতি চালু থাকার কথা, কিন্তু তা তারা
করত না বা ছিল না। বস্তুত এ কাল পাথর ছিল নিতান্তই পৌত্তলিক
কুরাইশ বা আরবদের একান্ত নিজস্ব ধর্মীয় ঐতিহ্য। মোহাম্মদ এ পৌত্তলিক ঐতিহ্য যেমন- কাবা ঘরের চারপাশে প্রদক্ষিন, কাল পাথরকে পূজা বা চুম্বন করা এসব তার ইসলামে বহাল করেছেন। ইসলামের দাবী অনুযায়ী যারা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারও ইবাদত করে না,
অথচ তারা পূন্যের আশায় কাবা ঘরে রক্ষিত কাল পাথরকে চুমু খাচ্ছে,
এটা বড়ই বেমানান। একটা সামান্য পাথরকে
শ্রদ্ধা সহকারে চুমু খাচ্ছে পূণ্য লাভের আশায় এটা যদি পাথর পূজা না হয় তো কিসে পাথর
পূজা হয় তা ঠিক বোধগম্য নয়। বিষয়টি বর্তমানে অনেক
আধুনিক মনা মুসলমানকে বিব্রত করে বলে লক্ষ্য করা যায় ও এর কোন যুক্তি গ্রাহ্য ব্যখ্যাও
দিতে পারে না। একটাই ব্যখ্যা যা আবার সেই বিশ্বাস সম্পর্কিত। তা হলো - এ পাথর নাকি এসেছে বেহেস্ত থেকে, যখন মক্কায় পতিত হয় তখন তার বর্ন ধবধবে সাদা ছিল। শত শত বছর ধরে মানুষের পাপ গ্রহন করার ফলে নাকি তা কাল হয়ে গেছে। একটা স্বেত পাথর মানুষের পাপ গ্রহন করে কাল হয়ে গেছে এ ধরনের উদ্ভট কথা একমাত্র
কুসংস্কারাচ্ছন্ন অজ্ঞ ও মূর্খ মানুষরা ছাড়া কারাই বা বিশ্বাস করবে। এ ধরনের একটা বিশ্বাস হিন্দুদের মধ্যেও দেখা যায়। তাদের অন্যতম দেবতা শিব দেবতাদের সমূদ্র মন্থনকালে যে বিষ উৎপন্ন হয়েছিল তা সে
নিজেই গ্রহন করে দুনিয়াকে রক্ষা করে, এর ফলে তার
কন্ঠ বা গলা নীল বর্ণ ধারন করে। হিন্দুদের আচরিত ধর্মকে
যদি পৌত্তলিক ধর্ম বলে ধরা হয়, তাহলে পৌত্তলিকতার
দোষে ইসলামও দুষ্ট। যাহোক, একটা পাথর শত শত বছর ধরে মানুষের স্পর্শের কারনে তা কিভাবে সাদা রং থেকে কাল রং
এ পরিবর্তিত হয় তা সম্ভবত ইসলামী বিজ্ঞানীরা এর একটা ভাল ব্যখ্যা দাড় করাতে পারবে।
মক্কার পত্তন কখন হয় সে সম্পর্কে একটা তথ্য
এরকম-
The early Arabian population consisted primarily of warring
nomadic tribes. When they did converge peacefully, it was usually under the
protection of religious practices.[24] Writing in the Encyclopedia of Islam,
Wensinck identifies Mecca
with a place called Macoraba mentioned by Ptolemy. His text is believed to date
from the second century AD, about 500 years before the coming of Muhammad,[25]
and described it as a foundation in southern Arabia,
built around a sanctuary. It probably did not become an area of religious
pilgrimage until around 500 A.D. It was then that the Quraysh tribe (into which
Muhammad was later born) took control of Macoraba, and made an agreement with
the local Kinana Bedouins for possession.[26] The sanctuary itself, located in
a barren valley surrounded by mountains, was probably built at the location of
the water source today known as the Zamzam Well, an area of considerable
religious significance.( http://en.wikipedia.org/wiki/Kaaba )
According to Sarwar,[31] about 400 years before the birth of
Muhammad, a man named “Amr bin Lahyo bin Harath bin Amr ul-Qais bin Thalaba bin
Azd bin Khalan bin Babalyun bin Saba”, who was descended from Qahtan and king
of Hijaz (the northwestern section of Saudi Arabia, which encompassed the
cities of Mecca and Medina), had placed a Hubal idol onto the roof of the
Kaaba, and this idol was one of the chief deities of the ruling Quraysh. The
idol was made of red agate, and shaped like a human, but with the right hand
broken off and replaced with a golden hand. When the idol was moved inside the
Kaaba, it had seven arrows in front of it, which were used for divination (http://en.wikipedia.org/wiki/Kaaba)
এখানে দেখা যাচ্ছে মোহাম্মদের জন্মের ৫০০
বছর আগে মক্কার পত্তন ঘটে ও একটা উপাসণালয় তৈরী করা হয়, তবে ৫০০ খৃষ্টাব্দের আগে এটা ধর্মীয়ভাবে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে আসে না। আর কুরাইশরা এখানে প্রাধান্য বিস্তার করে মোহাম্মদের আবির্ভাবের আনুমানিক ৪০০ বছর
আগে। তবে আমি নিশ্চিত ভাবে জানি মুমিন বান্দারা এ ধরনের তথ্য গ্রহণ
করবে না। পক্ষান্তরে, তারা এর বিপরীতে কোরান
হাদিসে বর্নিত মোহাম্মদের কল্প কথা ছাড়া আর কোন তথ্যই হাজির করতে পারে না,
পারবেও না।
ইসলামে এটা দাবী করা হয়-ইসলামের আল্লাহ সেই
আল্লাহ যাকে ইব্রাহিম, মূসা , ইসা উপাসণা করেছেন। তাহলে তৌরাত ও বাইবেলের
নূতন নিয়মে তারা সৃষ্টিকর্তাকে যে নামে ডাকবে বার বার না হলেও দু একবার তার উল্লেখ
কোরানে থাকার কথা। তৌরাতের হিব্রু ও আরামাইক ভাষায় স্রষ্টাকে
অসংখ্যবার বলা হয়েছে- Yehweh ও Elohim। কোরানে স্রষ্টার নাম বলতে গিয়ে একবারও এ শব্দ দুটি উচ্চারন করা হয় নি। অথচ হিব্রু ভাষা ও আরবী ভাষার উৎস এক ও এদের মধ্যে অনেক শব্দেরই মিল আছে।অনেকটা আমাদের বাংলা ও অসমীয়া ভাষার মত। তৌরাত কিতাবে যে সব নবীর কথা বলা হয়েছে যেমন- আদম, নুহ, ইব্রাহীম, ইসহাক, মুসা ইত্যাদির নাম অনেকবার নেয়া হয়েছে আসল
হিব্রু উচ্চারনে। কিন্তু তৌরাত বা ইঞ্জিল শরিফে যেমন একবারও
আল্লাহ শব্দটি নেই, তেমনি কোরানে নেই একবারও স্রষ্টার নাম হিসাবে
Yehweh ও Elohim শব্দ দুটি। এ দিয়ে এটা পরিষ্কার বোঝা যায়- বাইবেলের
ঈশ্বরের সাথে কোরানের ঈশ্বরের কোন সম্পর্ক নেই। কিছু ইসলামী পন্ডিত দাবী করে-খৃষ্টানরা যে alleluyah শব্দটি উচ্চারন করে তার প্রথম অংশ alle এটা নাকি আল্লাহ। কিন্তু alleluyah শব্দটা হলো এরকম- alle- praise, lu-to, yah-Yaweh অর্থাৎ এখানে স্রষ্টা
যাকে তারা হিব্রুতে Yaweh বলে ডাকে তার প্রশংসা
করছে অথচ আরবীতে Allah শব্দের অর্থ praise
বা প্রশংসা নয় , বরং তার অর্থ
Al-The, Ilah/lah- Deity অর্থাৎ প্রধান দেবতা। এছাড়া তারা আরও দাবী করে যে যীশু খৃষ্টকে যখন ক্রুশে বিদ্ধ করে ঝুলিয়ে রাখা হয়
তখন তিনি বলেছিলেন - Eli, Eli Sabbathani এটা আরামাইক
শব্দ যার অর্থ হে ঈশ্বর হে ঈশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ
করেছ? এখানে বিষয় হলো আরামাইকে Eli অর্থ ঈশ্বর, কোন দেবতা বা দেবী
নয় আর Eli থেকে Allah শব্দও উদ্ভুত হয় নি, হয়েছে Al ও Ilah দুটি আরবী শব্দ থেকে। তার চেয়ে বড় আজব খবর হলো- ইসলাম কিন্তু বিশ্বাসই করে না যে যীশু খৃষ্টকে ক্রুশে
বিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।অথচ তারা আবার Eli
এর সাথে Allah এর কিছুটা উচ্চারনগত
মিল থাকাতে যীশু যখন ক্রুশে বিদ্ধ হয়ে Eli Eli উচ্চারণ করেছেন তখন তিনি যে কুরানের Allah কে ডাকা ডাকি করছেন তা অতি শীঘ্রই আবিষ্কার করে ফেলেছে। এখন বিষয়টা যে ভীষণ রকম আজগুবি শুনায় এজন্যে ইসলাম কিচ্ছা তৈরী করতে দেরী করেনি। আর তা হলো- যীশুকে যখন ক্রুশে বিদ্ধ করা হয় তখন আল্লাহ তাড়াতাড়ি তাকে জীবিত
বেহেস্তে তুলে নিয়ে যায় আর যীশুর পরিবর্তে যিহুদা নামের এক লোককে সেখানে ঝুলিয়ে
রাখে আল্লাহ (এটা অবশ্য আমার শোনা কথা, কোন রেফারেন্স
দিতে পারব না)।এ কিচ্ছা শুনতে যতই আজগুবি হোক, বাইবেলের নতুন নিয়মে যে আল্লাহ শব্দটি আছে তা প্রমান যে করতেই হবে তা সে যত গোজামিল
লাগুক তা দিতে হবে কোন সমস্যা নেই। বাইবেলের পুরাতণ নিয়ম
বা নুতন নিয়মের কোথাও আল্লাহ শব্দটি নেই। কিন্তু আরবী বাইবেলে
আল্লাহ শব্দটি আছে। কেন আছে? অত্যন্ত সহজ এর উত্তর। খৃষ্টিয় নবম শতাব্দিতে
মূলত: বাইবেলের আরবী অনুবাদ করা হতে থাকে আর ততদিনে গোটা আরব সহ আশপাশের অনেক যায়গাতে
ইসলাম তার সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। তাই তাদের শাসনামলে
আরব মুসলিম বা আরব খৃষ্টানদের অনুবাদকৃত বাইবেলে যদি আল্লাহ শব্দটির উল্লেখ থাকে তাতে
আশ্চর্য হওয়ার তো কিছু নেই। কিন্তু প্রকৃত বিষয়
হলো বাইবেলের এ আল্লাহ ইসলামের আল্লাহ নয়। এটা অনেকটা সম্রাট
আকবরের আমলে রচিত ভবিষ্য পূরাণে উল্লেখিত মোহাম্মদ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বানীর মত। অনেক মুসলিম পন্ডিতই এসব ভবিষ্যদ্বানী দেখিয়ে অমুসলিমদেরকে বিশেষ করে হিন্দুদেরকে
ধোকা দেয়, আর যারা এসব কিতাবের উৎস সম্পর্কে জানে না,
তারা ধোকা খায়ও। যেকারনে দেখা যায়
- এদের ধোকায় পড়ে মাঝে মাঝে দু একজন ইসলাম ধর্মেই দীক্ষাও গ্রহন করে। যা আবার তারা ইসলামের মহিমা হিসাবে প্রচার করে থাকে (উৎস: http://www.letusreason.org/islam6.htm)। যেমন গিরীশ চন্দ্র সেন তার বাংলায় অনুবাদিত কোরানে আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করেন
নি, ব্যবহার করেছেন ঈশ্বর। তাহলে তো হিন্দু বা খৃষ্টানরা বলতে পারে- কোরানে তাদের স্রষ্টার নাম লেখা আছে। কিন্তু হিন্দু বা খৃষ্টানরা এখনও অতটা উজবুক হয় নি যে সেটা করতে যাবে। কারন তারা ভালমতই জানে যে কোরান মোহাম্মদ কথিত ও তার সাহবীদের রচিত একটা জগাখিচুড়ি
কিতাব ছাড়া আর কিছুই নয়।এরকম জগাখিচুড়ি কিতাবে
তাদের ধর্ম সম্পর্কে উল্লেখ আছে প্রমান করতে যেয়ে তারা নিজেদের ধর্মকে জগাখিচুড়ি
বানানোর মত অত বোকা নয় যদিও তাদের ধর্ম ইসলামের চাইতেও আরও বেশী জগাখিচুড়ী মার্কা।
মক্কার কাবা ঘর আসলে ছিল পৌত্তলিক আরবদের
একটা মন্দির যেখানে বহু দেব দেবীর মূর্তি ছিল। সেকারনে কাবা ঘর আরব পৌত্তলিকদের জন্য একটা পবিত্র ঘর ছিল আর তাই তারা প্রতি বছর
একটা নির্দিষ্ট সময়ে এখানে জড় হতো, দেব দেবীদের
পূজা করত, দেবতাদের উদ্দেশ্যে পশু বলি দিত। কাবা ঘরকে প্রদক্ষিন করত, কাল পাথরকে পবিত্র
জ্ঞান করে তার সামনে মাথা নোয়াত ও চুমু খেত। ইহুদী ও খৃষ্টানরা কখনই এসব ধর্মীয় আচার আচরন কাবা ঘরে পালন করত না, আর কাবা ঘর তাদের কাছে কোন পবিত্র ধর্মীয় উপাসনালয়ও ছিল না। ইসলাম দাবী করে ইব্রাহীম, ইসহাক, মূসা, ইসা এদের ধারাবাহিকতায়
সর্বশেষ নবী মোহাম্মদের আগমন।তাই যদি হবে,
তাহলে মোহাম্মদের আবির্ভাবেরও বহু আগে থেকে মক্কার কাবা ঘর ইহুদি
ও খৃষ্টানদের কাছেও পবিত্র উপাসনালয় হওয়ার কথা। কারন তা মোহাম্মদের মতে পৃথিবীর সর্বপ্রথম আল্লাহর ঘর যার নাকি পত্তন হয়েছিল প্রথম
মানব আদমের হাতে। এর পর হযরত ইব্রাহীম ও তার পূত্র ইসমাইলের
হাতে নতুন করে এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয় কারন তা ইতোপূর্বে নূহ নবীর আমলকার কথিত
মহাপ্লাবনে ধ্বংস হয়ে গেছিল। এটাই যদি সত্যি হয়,
ইসলামের আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত তো ইসলামের সাথে খৃষ্টান ও ইহুদী
ধর্মের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব ছিল না, আর এরা উভয়ই আদম,
নূহ, ইব্রাহীম, ইসহাক, যীশূকে নবী হিসাবে
সম্মান করে (সম্পূর্ন বা আংশিক), তাহলে তাদেরই ধারাবাহিকতায়,
মক্বার কাবা ঘর ইহুদি ও খৃষ্টানদের জন্যও পরিত্র উপাসনালয় হওয়াই
স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তা কোন কালেই ছিল না বা হয় নি। তবে মক্কা বা মদিনায় বসবাস কারী ইহুদি ও খৃষ্টানরা পৌত্তলিকদের কাবা ঘরকে অসম্মানও
করত না। কারন কাবা ঘরের সামনে বৎসরে একটা নির্দিষ্ট
সময় আরবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পৌত্তলিকরা এসে জড় হতো, এর ফলে সেখানে ব্যবসা বানিজ্য করার সুযোগ ছিল আর ইহুদী খৃষ্টানরা সে সুযোগ গ্রহণ
করত। মক্কা বা মদিনায় বসবাসকারী সকল খৃষ্টান ও ইহুদীদের মহা পবিত্র
উপাসনালয় ছিল যেরুজালেমের সলোমনের মন্দির যাকে পরে মুসলমানরা নাম দেয় মসজিদুল আকসা। এর কারন কি? খুব সহজেই বোঝা যায়, কাবা আদৌ আদম বা ইব্রাহীম দ্বারা তৈরী হয় নি, এ ধরনের কোন তথ্য তৌরাত ও ইঞ্জিল শরিফে উল্লেখ নেই। অথচ কবে সলোমনের মন্দির বা বায়তুল মুকাদ্দাস জেরুজালেমে তৈরী হয়েছিল তার বিস্তারিত
উল্লেখ আছে।আর তখনই ইসলামী পন্ডিতরা বলে বাইবেলকে বিকৃত করা হয়েছে। কি আজব ব্যপার, ইসলাম আবির্ভাবের বহু পূর্বেই তৌরাত সংকলিত
হয়েছে, আর সেটার শত শত কপি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা খৃষ্টান
বিশ্বে।এটা কি করে সম্ভব যে মোহাম্মদের জন্মের বহু পূর্বেই ইহুদী ও
খৃষ্টানরা শলাপরামর্শ করে তাদের কিতাব থেকে মক্কার কাবা ঘর সম্পর্কিত বিষয়াবলী বাদ
দিয়ে দেবে ? ইসলামি মতে কাবা ঘর যদি দুনিয়াতে আল্লাহর
প্রথম ঘর হয়ে থাকে আর তার সাথে যদি ইব্রাহীমের স্মৃতি জড়িত থাকে তাহলে তার উল্লেখ
অবশ্যই তৌরাত ও ইঞ্জিল গ্রন্থে থাকার কথা, কারন ধারাবাহিকতার
সূত্র ধরে তৌরাতের পর ইঞ্জিল এর পর কোরান অবতীর্ণ হয়েছে বলেই দাবী মোহাম্মদ তথা মুসলমানদের। কিন্তু দুর্ভাগ্য জনকভাবে মক্কার কাবা ঘর তো দুরে কথা, খোদ মক্কার কথাও কোথাও লেখা নেই তৌরাত ও ইঞ্জিল শরিফে। এ থেকে এটাও বোঝা যায়- প্যলেষ্টাইনের থেকে প্রায় হাজার মাইলেরও বেশী দুরের অত্যন্ত
রুক্ষ্ম ও কঠিন মরুভূমিতে অবস্থিত এ মক্কার তখনও পত্তন ঘটেনি, আর ঘটে থাকলেও তার নাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ার মত তেমন অবস্থা
ছিল না। আর তাই তা কখনই ইহুদি ও খৃষ্টানদের পবিত্র স্থান ছিল না। ইহুদী ও খৃষ্টান উভয়েই বিশ্বাস করে তাদের পূর্ব পুরুষ হলো ইব্রাহিম যার বংশধর
তারা, তাহলে তার তৈরী মসজিদ বা উপাসণালয় তাদের
কাছেও পবিত্র হওয়ার কথা। অথচ তা কখনই ছিল না। কারন কি? তার কারন, এটা ছিল আরবের অন্যান্য পৌত্তলিক পুজারী গোষ্ঠির মত একটা গোষ্ঠী কুরাইশদের নিজস্ব
চন্দ্রদেবতার মন্দির, এর সাথে ইব্রাহিমের কোন সম্পর্ক কোনকালেই
ছিল না। মোহাম্মদই মূলত: এর সাথে ইব্রাহীমের সম্পর্ক তৈরীর প্রচেষ্টা
চালায়, ইব্রাহীমের সাথে নিজেকে সম্পর্কিত করার জন্য
যাতে ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে তার অনুসারীতে পরিনত করা যায়। ইতোপূর্বেকার কোন ইতিহাস বা এমনকি বাইবেল সাক্ষ্য দেয় না, কাবা ঘর আসলে ইব্রাহীম ও তার পূত্র ইসমাইল কর্তৃক তৈরী হয়েছিল। এটা সম্পূর্নত:ই, কোরান তথা মোহাম্মদের নিজস্ব দাবী। আর যেহেতু বাইবেল সাক্ষ্য দেয় না যে কাবা ঘর ইব্রাহীমের দ্বারা তৈরী, তাই মোহাম্মদ ও তার অনুসারীরা জোর গলায় আওয়াজ তোলে- বাইবেলকে
বিকৃত করা হয়েছে। যেমন কোরানে উল্লেখ আছে-
স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন
করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের থেকে কবুল কর। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। কোরান, ২:১২৭
অথচ এটা কোরানে উল্লেখ পর্যন্তই সার। কোরানের পূর্ববর্তী কিতাব তৌরাত ও ইঞ্জিলে এ বিষয়ের কোন উল্লেখ নেই। এমন কোন ঐতিহাসিক প্রমান নেই যে এটা ইব্রাহীম ও ইসমাইল তৈরী করেছিল যেখানে জেরুজালেমের
আল আকসা উপাসনাগৃহ কবে তৈরী হয়েছিল তার কিছুটা ঐতিহাসিক প্রমান আছে। তা ছাড়া তৌরাতে তো এর পূরা মাপ জোকের বর্ননাও দেয়া আছে আর বলা আছে কে তৈরী করেছিল,
খোদ কোরানও তার সাক্ষ্য দেয়। কোরান কেন তার সাক্ষ্য দেয়? কারন এটা ছিল মোহাম্মদের
একটা কৌশল যাতে ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে দেখানো যায় যে ইসলাম ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মেরই
শেষ সংস্করন। ইসলাম তো আরও অগ্রসর হয়ে বলে- কাবা হলো পৃথিবীর
সর্বপ্রথম তৈরী ঘর যা আদম কর্তৃক তৈরী হয়েছিল। যেমন-
আবু দার বর্নিত- আমি বললাম, ও আল্লাহর রসুল, কোন্ মসজিদ
সর্বপ্রথম তৈরী হয়েছিল? তিনি বললেন- মসজিদুল
হারাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম- এর পর কোন্ টা ? তিনি উত্তর দিলেন- মসজিদুল আকসা। আমি জিজ্ঞেস করলাম-
এদের মধ্যে কত সময় ব্যবধান ছিল ? তিনি উত্তর দিলেন-
চল্লিশ বছর।বুখারী, বই-৫৫, হাদিস-৬৩৬
উল্লেখ্য, এটা কিন্তু সম্পূর্নতই মোহাম্মদের নিজের কথা, এর পিছনে কোন রকম ঐতিহাসিক তথ্য প্রমান নেই। মসজিদুল আকসা বা সলোমনের মন্দির কবে কখন তৈরী হয়েছিল তার কিছু কিছু ঐতিহাসিক তথ্য
প্রমান আছে কিন্তু কবে কাবা ঘর তৈরী হয়েছিল তার তেমন কোন ঐতিহাসিক তথ্য নেই,
যা কিছু তথ্য তা মোহাম্মদ বর্নিত।তবে একেবারেই নেই তা বলা যাবে না।আরবের সর্বত্র ইসলামী
রাজত্ব কায়েম হলে সকল ইতিহাসই ধ্বংস করা হয়েছে কিন্তু নানা ভাবে কিছু কিছু ইতিহাস
তো পাওয়া যাবেই চেষ্টা করলে। যাহোক, কাবা সৃষ্টির ইসলামিক তত্ত্বটা কি? সেটা হলো- আল্লাহই সর্বপ্রথম কাবা মসজিদ তৈরী করে, তারপর নুহের আমলে মহাপ্লাবনে তা ধ্বংস হয়ে গেলে পূনরায় ইব্রাহীম কর্তৃক নির্মিত
হয়, যার কোন ঐতিহাসিক প্রমান নেই, আছে কেবল পৌরাণিক কাহিনী আকারে।যদি কোন ইসলামিক সোর্স
থেকে কাবা ঘর তৈরীর ইতিহাস জানতে চাওয়া হয়- সেখানে একটাই বক্তব্য থাকে তা হলো-কোরানে
আল্লাহ ইব্রাহীমকে কাবা ঘর নির্মান করতে বলেছে, তাই ইব্রাহীম ও তার পূত্র ইসলাম দুজনে মিলে তা তৈরী করেছে। আর যে টুকু প্রামান্য ইতিহাস পাওয়া যায় তা সবই মোহাম্মদের মক্কা দখলের পর। একজন মুমিন বান্দা মাত্রেই এটুকুতে সন্তুষ্ট ও আর কিছু জানার দরকার বোধ সে করে
না। এখন যেহেতু কোরান কোন ইতিহাসের কিতাব নয়, তাই নিরপেক্ষ পাঠক মাত্রই জানতে চাইবে নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক সূত্র
থেকে কাবা ঘর নির্মানের উৎসটা কি। আর তখন যা জানা যায়
, তার সাথে দু:খজনক ভাবে কোরান বর্নিত কোন কাহিনীর মিল নেই। যে সব কাহিনী জানা যায় তা ইতোপূর্বে ব্যখ্যা করা হয়েছে আর তা হলো – আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত যে পৌত্তলিক ধর্ম যার প্রধান দেবতা
ছিল চন্দ্র, তারই মন্দির ছিল কাবা আর এটা তৈরী হয়েছিল
আনুমানিক খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে।বিভিন্ন উৎস হতে যে তথ্য পাওয়া
যায় তাতে দেখা যায়, আনুমানিক ২০০০ খৃষ্টপূর্বে তথাকথিত নবী ইব্রাহিম
দুনিয়াতে ছিল, আর খৃষ্টপূর্ব ১০০০ এর দিকে ছিল রাজা সলোমন। রাজা সলোমনই প্রথম তৈরী করে সলোমনের মন্দির তথা মসজিদুল আকসা (এ নাম মুসলমানদের
দেয়া)। তার মানে ইব্রাহীম যদি কাবা ঘর নির্মান করেও থাকে তাহলে কাবা
ঘর ও মসজিদুল আকসা এ দুইয়ের নির্মান কালের তফাৎ কমবেশী ১০০০ বছর,
কোন ক্রমেই ৪০ বছর নয়। অথচ কি আজব কথা, একজন সাহাবী জিজ্ঞেস করা মাত্রই কি নির্বিকারভাবে
মোহাম্মদ তার মনগড়া তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন।আর গোটা মুসলমান সমাজ
কোন রকম বাছ বিচার ছাড়াই,পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই
সেটাই বিশ্বাস করছে।কারন সেটা মোহাম্মদ বলেছেন।আর যদি আদমকে কাবা ঘরের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে ধরা হয় যা মোহাম্মদ বিশ্বাস করতেন
ও বর্তমানকার মুমীন বান্দারা বিশ্বাস করে, তাহলে তো মসজিদুল
আকসার সাথে বয়সের তফাৎ হয় হাজার হাজার বছর। ভৌগলিক অবস্থাকে বিচার করলেও স্পষ্ট বোঝা যায় ইব্রাহীম কখনই মক্কায় যায় নি বা
তার কথিত স্ত্রী হাজেরা ও তার সন্তান ইসমাইলকে মক্কায় নির্বাসন দেয় নি। ইব্রাহীমের বিচরন স্থল ছিল জেরুজালেম, জর্ডন,
সিরিয়া, গাজা, মিশর এসব অঞ্চলে। এর যে কোন স্থান থেকে
সোজা মক্কা পর্যন্ত বিমান উড্ডয়ন দুরত্ব কমপক্ষে ১০০০ কিলোমিটার। মরুপথে এ দুরত্ব আরো বেশী।ইব্রাহীম হাজেরা ও
তার শিশু পূত্র ইসমাইলকে এতদুরের মরুভূমির কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে মক্কায় রেখে যাবে যা
বিশ্বাস করা একমাত্র নির্বোধ মানুষের পক্ষেই সম্ভব। নির্বাসন যদি দিতেই হয়, বড়জোর ২০০/৩০০ কিলোমিটার
দুরেই সেটা সেই তৎকালে দেয়াটাই সঙ্গত। কারন সে যুগে সেই ২০০/৩০০
কিলোমিটারই ছিল অনেক বড় দুরত্ব।হাজেরা কখনো এ দুরত্ব
বিপদ সংকুল পথ পাড়ি দিয়ে পুনরায় ইব্রাহীমের কাছে যেতে পারত না। বিষয়টি ভালভাবে উপলব্ধি করার জন্য নিচের মানচিত্র দেয়া হলো। আরব দেশের মানচিত্র দেখলেই বোঝা যাবে, হাজেরা ও ইসমাইলকে
নির্বাসন দেয়ার কিচ্ছা কতটা অসার ও ভিত্তিহীন।
আগেই বলা হয়েছে- মুসলমানরা প্রাক ইসলামী
যুগের কোন ইতিহাস সংরক্ষন করে নি। তাই কাবা ঘর কখন প্রতিষ্ঠিত
হয় বা তার প্রতিষ্ঠাতা কে তা জানতে আমাদেরকে অবশ্যই অমুসলিম উৎসের দ্বারস্থ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বে দেখা যায় Alfred Guillaume এর একটা ব্যপক গ্রহনযোগ্যতা আছে।কারন ইনি মাঝে মাঝে
এমন সব বক্তব্য দিয়েছেন যা ইসলামের পক্ষে যায়।আসলে উনি নিরপেক্ষভাবে কথা বলেছেন, কারও পক্ষ বা
বিপক্ষ চিন্তা করে কিছু বলেন নি। তো তিনি কি বলেছেন
একটু দেখা যাক-‘”… there is no historical evidence for the assertion that
Abraham or Ishmael was ever in Mecca, and if there had been such a tradition,
it would have to be explained how all memory of the Old Semitic name Ishmael
(which was not in its true Arabian form in Arabian inscriptions and written
correctly with an initial consonant Y) came to be lost. The form in the Quran
is taken either from Greek or Syriac sources.” (Alfred Guillaume, Islam
[Penguin Books Inc., Baltimore, 1956], pp. 61-62). তো স্পষ্ট তিনি নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলছেন যে এমন কোন নজীর নেই যে ইব্রাহীম
বা ইসমাইল কখনো মক্কাতে গমন করেছিল। তার অর্থ ইব্রাহীম
ও ইসমাইল কাবা ঘর তৈরীও করেনি। আমি নিশ্চিত মুসলিম
পন্ডিত ও মুমিন বান্দারা Guillaume এর অন্যান্য অনেক রেফারেন্সকে
অকাট্য হিসাবে গ্রহন করলেও এ রেফারেন্স একেবারেই গ্রহন করবে না, বলবে এটা বিকৃত বক্তব্য বা তিনি কি সবজান্তা নাকি, এ প্রশ্নও কেউ কেউ করতে পারে। আর এটাই সমস্যা। যা ইসলামের পক্ষে যায় না, তার পক্ষে অকাট্য যুক্তি প্রমান থাকলেও তা তাদের কাছে বিকৃত। মুমিন বান্দা মাত্রই মোহাম্মদকে সবজান্তা সর্বজ্ঞানী মনে করে যদিও তিনি জানতেন
না সূর্য অস্ত গেলে কোথায় যায়, দিন ও রাত কেন ঘটে,
জানতেন না পৃথিবী গোলাকার নাকি সমতল, কে শয়তান আর কে জিব্রাইল চিনতে পারতেন না, জানতেন না রাতের আকাশে তারগুলো আসলে কি বা উল্কাখন্ডের প্রকৃতি কি এবং আরও অনেক
কিছুই জানতেন না।তবুও সবাই তাকে সবজান্তা মনে করে, মোহাম্মদ তার অনুসারীদের মাথাটা এমন ভাবেই নষ্ট করে দিয়ে গেছেন সেই চৌদ্দশ বছর
আগে।ভাবতে আশ্চর্য লাগে, সেই সব মানুষগুলো পড়েও দেখার চেষ্টা করে না তাদের কিতাবে মহা জ্ঞানের কথা নাকি
বোগাস কথা বার্তা লেখা আছে।
কথিত আছে আদম দুনিয়াতে অবতরণ করার পর আল্লাহ
তাকে একটা মসজিদ করার জন্য আদেশ করেন আর আদম এ বিরাট দুনিয়ার আর কোথাও জায়গা না পেয়ে
উষর ও কঠিন মরুভুমি মক্কাতে সেই মসজিদ বানায় যাকে বলা হয় কাবা। প্রথম প্রশ্ন জাগে - দুনিয়ায় এত ভাল ভাল সুজলা শস্য শ্যামলা জায়গা থাকতে আদম
মক্কার মত একটা কঠিন যায়গাতে মসজিদ বানাতে গেল কেন? এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মত সুজলা সুফলা দেশ একটা উত্তম জায়গা হতে পারত বসবাসের জন্য। দ্বিতীয়ত: হাদিস থেকেই জানা যায়- ইব্রাহিম তার পূত্র ইসমাইল ও তার মা হাজেরাকে
যখন মক্কাতে নির্বাসন দিয়ে যায় তখন সেখানে কোন পানির উৎস ছিল না। রুক্ষ শুষ্ক কঠিন উষর যায়গা ছিল সেটা।জিব্রাইলের পায়ের
ধাক্কা বা ইসমাইলের পায়ের ধাক্কাতেই জমজম কুপ সৃষ্টি হয় যা ছিল তখনকার মক্কার একমাত্র
পানির উৎস। তো আদম যখন সেখানে মসজিদ নির্মান করে, তখন তো সেখানে
পানি ছিল না।তাই এরকম একটা যায়গায় যেখানে বাস করার মত পরিবেশও ছিল না,
কারন পানি ছাড়া তো আর বাঁচা যায় না, অথচ সেখানে মসজিদ নির্মান করার অর্থই হলো সেখানে আদম তার স্ত্রী
হাওয়াকে নিয়ে বসবাস করত। প্রশ্ন হলো- যেখানে
বাঁচার মত পরিবেশ ছিল না, সেখানে আদম একটা মসজিদ
তৈরী করে বসবাস করছে, এটা কতটা বাস্তব সম্মত? তৃতীয়ত: কাবা ঘর নাকি পৃথিবীর কেন্দ্র স্থলে অবস্থিত। আবার কাবা ঘরের ঠিক সোজা উপরে নাকি ৭ম তথা শেষ বেহেস্তের বায়তুল মামুর অবস্থিত
যেখানে প্রতি নিয়ত ৭০,০০০ ফিরিস্তা আল্লাহর
কাছে মুনাজাত করে। পৃথিবী যেহেতু গোল তাই এর পৃষ্ঠদেশের যে কোন
বিন্দুকেই পৃথিবীর কেন্দ্র ধরা যায়, এতে আশ্চর্য
হওয়ার কিছু নাই। কিন্তু পৃথিবী প্রতিদিন নিজ অক্ষের ওপর একবার
করে পাক খাচ্ছে, ও ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরে আসছে যার ফলে দিন ও রাত
হয়। তার মানে প্রতি নিয়ত পৃথিবী পৃষ্ঠে অবস্থিত কাবা ঘরের অবস্থানের
পরিবর্তন ঘটছে কিন্ত তার সোজা উপরের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকছে। এর ফলে প্রতি নিয়ত ৭ম বেহেস্ত তার বাকী ৬ টি বেহেস্ত সহ পৃথিবীর অবস্থান পরিবর্তনের
সাথে সাথে নিজেরাও তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে কি?আরো সোজা কথায়, পৃথিবী ঘোরার সাথে সাথে বায়তুল মামুর সহ
সকল বেহেস্তেই কি ঘুরতে থাকে চরকির মত? তাছাড়া ৩৬৫
দিনে পৃথিবী তো সুর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসে, তার ফলে আহ্নিক ও বার্ষিক গতি মিলিয়ে পৃথিবীর গতি, তার অবস্থান ও তার পৃষ্ঠদেশে অবস্থিত কাবা ঘরের অবস্থান মহাবিশ্ব সাপেক্ষে খুব
জটিল হয়ে পড়ে। এর সাথে কিভাবে ৭ম বেহেস্তের বায়তুল মামুর
তাল মিলিয়ে তার অবস্থান ঠিক রাখে? এ রকম উদ্ভট ধারণার
মূল কারনই হলো মোহাম্মদ পৃথিবীকে স্থির ভাবতেন, তিনি কল্পনাই করতে পারেন নি যে পৃথিবী বন বন করে ঘুরছে। বোধ হয়, পৃথিবীর এ বন বন করে ঘোরার কারনেই মুমিন বান্দাদের
মাথাটাও সব সময় একটা ঘোরের মধ্যে থাকে আর সে কারনেই তাদের মাথায় অন্য কিছু প্রবেশ
করতে পারে না।
মক্কার কাবা ঘর যে দুনিয়াতে আল্লাহর প্রথম
ঘর ছিল না আর তার কথিত আল্লা যে বাইবেলের আল্লাহ ছিল না, তার সবচাইতে বড় প্রমান হলো ৪০ বছর বয়সে মোহাম্মদ নবুয়তি পাওয়ার পরও তিনি যেরুজালেমের
বায়তুল মোকাদ্দস এর দিকে মূখ করে ইবাদত তথা নামাজ পড়তেন। কাবা ঘরই যদি আল্লাহর প্রথম ও আসল ঘর হতো তাহলে নবুয়তির দিনই জিব্রাইল তাকে সেটা
বলে যেত। তখন তো বলেই নি, বরং দেখা যাচ্ছে,
মোহাম্মদ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মক্কাতে ইসলাম প্রচার করার সময়ও
জিব্রাইল সেটা বলতে ভুলে গেছে বা আল্লাহও তাকে বলে নি। এমন কি বোরাক নামক পাখা বিশিষ্ট গাধায় চড়ে সাত আসমান পার হয়ে আল্লাহর সাথে দেখা
করার সময়ও আল্লাহ তাকে সেটা জানাতে ভুলে গেছে।অথচ আল্লাহ তাকে ৫ বার নামাজ পড়ার কথা বলেছে কিন্তু বলেনি কোন দিকে মুখ করে নামাজ
পড়তে হবে।
শুধু কি এখানেই শেষ? এর পর মক্কাতে মোহাম্মদ সুবিধা করতে না পেরে দলবল সহ মদিনায় গমন করলেন এবং সেখানেও
দেড় বছরের বেশী কাল অতিক্রম করলেন কিন্তু আল্লাহ তারপরও তাকে জানায়নি কোন দিকে মুখ
করে নামাজ পড়তে হবে।তখনও মোহাম্মদ ও তার দলবল বায়তুল মোকাদ্দসের দিকে মুখ করে নামাজ
পড়ে চলেছেন। অত:পর আসল সেই আয়াত যার মাধ্যমে আল্লাহ বলে
পাঠাল যে কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে হবে। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, কাবা ঘর বাইবেলে কথিত
আল্লাহর প্রথম ঘর তো নয়ই , এমনকি আল্লাহর ঘরই
নয়। বিষয়টি এখানে শেষ হলে ভাল হতো কিন্তু না এখানেই শেষ নয়। মদিনায় যাওয়ার দেড় বছর পর যখন মোহাম্মদ কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া শুরু
করলেন, তখন কাবা ঘরের মধ্যে সেই আল্লাহ তথা চন্দ্র
দেবতা সহ ৩৬০ টি মূর্তি ছিল। তার মানে তিনি কুরাইশদের
আল্লাহ ও তার সঙ্গী দেব দেবীদের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তেন, আর তাতে তার কোন অসুবিধা হতো না। এভাবেই তিনি মদিনায়
যে পরে আরও সাড়ে আট বছর ছিলেন, কাবার ভিতরের মূর্তিগুলোর
দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে গেছেন। এতে অসুবিধা না হওয়ার
কারন কাবার মধ্যে যে আল্লাহ নামক প্রধান দেবতা ছিল সে তো মোহাম্মদেরই আল্লাহ। তার শুধু দরকার পড়েছিল ইহুদী খৃষ্টানদেরকে বোকা বানানো আর তাই তিনি প্রধান দেবতা
বাদে কোন দেব দেবীকে স্বীকার করতে রাজী ছিলেন না।কারন ইহুদী ও খৃষ্টানরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন দেব দেবীতে বিশ্বাসী ছিল না। আর তাদের এ ধর্ম বিশ্বাসের সাথে মিল রাখতে গিয়েই এ কায়দাটা প্রয়োগ করেন। মুলত: ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্যই এতকাল তিনি যেরুজালেমের দিকে মুখ
করে নামাজ পড়েছিলেন। কিন্তু যখন দেখা গেল ইহুদী ও খৃষ্টানরা ইসলাম
কবুল করবে না, তখনই মোহাম্মদ সিদ্ধান্ত নিলেন কিবলার দিক
পরিবর্তনের। আর এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সাথে সাথেই আয়াত নাজিল
হয়ে গেল। কি সেই আয়াত?
এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায়
করেছি যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে এবং যাতে রসূল সাক্ষ্যদাতা
হন তোমাদের জন্য। আপনি যে কেবলার উপর ছিলেন, তাকে আমি এজন্যই কেবলা করেছিলাম, যাতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুসারী
থাকে আর কে পিঠটান দেয়। নিশ্চিতই এটা কঠোরতর
বিষয়, কিন্তু তাদের জন্যে নয়, যাদেরকে আল্লাহ পথপ্রদর্শন করেছেন। আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান নষ্ট
করে দেবেন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ, মানুষের প্রতি
অত্যন্ত স্নেহশীল, করুনাময়। সূরা বাক্কারা, আয়াত-১৪৪, মদিনায় অবতীর্ণ।
আর যে স্থান থেকে তুমি বের হও, নিজের মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফেরাও-নিঃসন্দেহে এটাই হলো তোমার
পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্ধারিত বাস্তব সত্য। বস্তুতঃ তোমার পালনকর্তা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনবহিত নন। সূরা- বাক্কারা, আয়াত-১৫০, মদিনায় অবতীর্ণ।
কখন এ আয়াত নাজিল হয়?
আল বারা বর্নিত- নবী বায়তুল মুকাদ্দাসের
দিকে মুখ করে ষোল বা সতের মাস নামাজ পড়তেন কিন্তু তিনি ইচ্ছা করতেন মক্কার কাবা ঘর
হবে কিবলা।
তাই আল্লাহ উক্ত ০২: ১৪৪ আয়াত নাজিল করলেন এবং তিনি কতিপয়
সাহাবী সহ আসরের নামাজ পড়লেন কাবার দিকে মুখ করে। সহি বুখারি, বই – ৬০, হাদিস-১৩
কি সুন্দর সহজ সরল স্বীকারোক্তি।মোহাম্মদ চাইতেন কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে অর্থাৎ কুরাইশদের আল্লাহর
ঘরকেই তিনি কিবলা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখতেন সব সময় কিন্তু শুধুমাত্র ইহুদী
ও খৃষ্টানদেরকে দলে টানার জন্যই বায়তুল মোকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তেন। অর্থাৎ মোহাম্মদ তার
কুরাইশ বংশের পছন্দনীয় আল্লাহর পথেই ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে আনতে চাইতেন কিন্তু তারা
শেষ পর্যন্ত আসল না। অগত্যা তাকে তাদের আশা ত্যাগ করতে হলো ও নিজের
বহুদিনের লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করতে উদ্যোগী হলেন। অবশ্য তাতে কিছু অসুবিধাও নেই। ততদিনে মদিনাতে তিনি
প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন, মদিনার পাশ দিয়ে যাওয়া
বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করে ধন সম্পদ লুটপাট করা যাচ্ছে, লুটের ভাগ পাওয়ার জন্য মদিনাবাসীরাও তার পিছনে সব কাতার বন্দী হয়ে পড়ছে। তাই ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে অতটা দরকার তার আর নেই কারন ক্ষমতা হাতে পাওয়া গেছে
আর তা পুঞ্জিভুত করে ঠিক মতো চালাতে পারলে পরে ইহুদী খৃষ্টানদেরকে জোর করে মুসলমান
বানানো যাবে, না হলে তাদেরকে চিরতরে দুনিয়া থেকে বিদায়
করে দেয়া যাবে, বা মক্কা মদিনা থেকে উচ্ছেদ করে দেয়া যাবে।আর বাস্তবেও আমরা সেটা খোদ মোহাম্মদের জীবনেই দেখেছি, যা তার সাহাবীরা পরবর্তীতে নিষ্ঠা সহকারে অনুসরণ করে এসেছে আর বর্তমানে এ একবিংশ
শতাব্দীতেও বাস্তবায়ণ করার তালে আছে।
************************************************************************