পর্ব -৫----মোহাম্মদ ও ইসলাম,
************************************************************************
ইসলাম দাবী করে তার আবির্ভাব হলো ইহুদি,
খৃষ্টান এদের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সংস্করন। যুক্তির খাতিরে আমরা সেটাকে যদি সত্য বলে গ্রহণ করি তাহলে কি দেখা যায়?
পূর্ববর্তী নবীসমূহ যেমন- ইব্রাহিম, মূসা, ইসা তাঁদের সাথে যখন কোন ফিরিস্তা দেখা করত
তখনও কি তারা দৈহিক কষ্ট অনুভব করত বা ভয় পেতেন? তোরাহ ও গসপেলে কোথাও তেমন কোন নজীর পাওয়া যায় না। শুধু তাই নয়, তাদের কিতাব সমূহে লেখা আছে উক্ত তিনজন নবীর
সাথেই আল্লাহ সরাসরি দেখা করত এ দুনিয়াতে এসেই , কথা বলত, আদেশ, নির্দেশ উপদেশ দিত। অথচ সর্বশেষ ও সর্ব শ্রেষ্ট নবী, যাকে সৃষ্টি না করলে দুনিয়া সৃষ্টি করত না আল্লাহ তাঁর সাথে
কখনই আল্লাহ দুনিয়াতে দেখা করে নি। শুধু তাই নয়,
যখন প্রথম জিব্রাইল ফিরিস্তা তাঁর সাথে হেরা গুহায় দেখা করে,
তখন মোহাম্মদ ভীষণ ভয়ে ভীত হয়ে পড়েন, তার চাইতে বিস্ময়কর ব্যপার হলো- প্রথম সাক্ষাতে জিব্রাইল পরিচয়ই দেয় নি সে কে ,
কোথা থেকে এসেছে, কে তাকে পাঠিয়েছে। প্রথম সাক্ষাতের বিবরণ পাওয়া যায় নিম্নের হাদিসটি থেকে-
আয়শা বর্ণিত- হুজুরে পাক এর নিকট প্রথমে যে
ওহী আসত তা ছিল নিদ্রার মাঝে তার সত্য স্বপ্ন হিসাবে আসত, অত:পর তা দিবালোকের মত প্রকাশ পেত। এভাবে কিছুদিন চলবার
পর তাঁর নিকট নির্জন যায়গা প্রিয় হয়ে উঠল, তাই তিনি হেরা
গুহায় নির্জনে বসবাস করতে লাগলেন। তিনি তাঁর সাথে কিছু
খাবার নিয়ে যেতেন , তা ফুরিয়ে গেলে আবার খাদিজার নিকট ফিরে আসতেন
আবার খাবার নিতে, এবং এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন তাঁর নিকট সত্য
প্রকাশিত হলো যখন তিনি হেরা গুহায় ছিলেন। ফিরিস্তা তার নিকট
আসল, তাকে পড়তে বলল। নবী উত্তর দিলেন- আমি
পড়তে পারি না। নবী আরও বললেন- ফেরেস্তা আমাকে সজোরে আলিঙ্গন
করলেন তাতে আমার ভীষণ কষ্ট বোধ হচ্ছিল। সে তখন আমাকে ছেড়ে
দিল এবং আবার আমাকে পড়তে বলল, আমি আবার উত্তর দিলাম-
আমি তো পড়তে পারি না। আবার সে আমাকে দ্বিতীয়বারের মত চেপে ধরল যা
ভীষণ কষ্টদায়ক ছিল, তারপর ছেড়ে দিল এবং বলল- পড়, তোমার প্রভুর নামে যিনি মহিমাময় ( তখন সূরা-৯৬: আলাক,
০১-০৩ নাজিল হলো)। হুজুরে পাক উক্ত আয়াতসমূহ
হৃদয়ঙ্গম করত: বাড়ী ফিরে আসলেন ও তাঁর প্রচন্ড হৃদ কম্পন হচ্ছিল। তারপর তিনি খাদিজার নিকট গমন করলেন ও বললেন- আমাকে আবৃত কর, আবৃত কর। তাঁরা তাঁকে ততক্ষন
পর্যন্ত আবৃত করে রাখলেন যতক্ষন পর্যন্ত না তাঁর ভয় দুর হলো এবং এর পর তিনি সমস্ত বিষয়
বিবৃত করলেন যা ঘটেছিল এবং বললেন- আমার আশংকা আমার উপর কিছু ভর করেছে। খাদিজা উত্তর দিলেন- কখনো নয়, আল্লাহর কসম,
আল্লাহ কখনো আপনাকে অমর্যাদা করবেন না। আপনি বরং দুস্থ লোকজন ও গরীব আত্মীয় স্বজনদের সেবা যত্ন করুন। অত:পর খাদিজা মোহাম্মদকে সাথে নিয়ে তার পিতৃব্য পূত্র অরাকা ইবনে নওফেলের নিকট
নিয়ে গেলেন। তিনি অন্ধকার যুগের সময় খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ
করেছিলেন। তিনি ইব্রানী ভাষায় ইঞ্জিল লিখতেন। তিনি এত বৃদ্ধ ছিলেন যে তিনি ঠিকমতো দেখতে পেতেন না। খাদিজা তাকে বললেন- হে পিতৃব্যপূত্র ! তোমার ভ্রাতুষ্পূত্রের কথা শোনো। অরাকা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন- হে ভ্রাতুষ্পূত্র কি দেখেছ? হুজুর সমস্ত ঘটনা তার নিকট বর্ণনা করলেন। তিনি সব শুনে তাঁকে বললেন, ইনি সেই রহস্যময় জিব্রাইল
ফিরিস্তা যাকে আল্লাহ হযরত মূসার নিকট পাঠিয়েছিলেন।…..কিছুদিন পর অরাকা মারা গেলেন ও ওহী আসাও কিছুদিন বন্দ রইল।
ইবনে শেহাব যহরী বলেন, আবু সালমাহ ইবনে আবদুর রহমান বলেছেন যে , জাবের ইবনে আবদুল্লাহ ওহী বন্দ থাককালীন অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে
বলেন, হুযুরে পাক এশাদ করেছেন, একদা আমি পথ চলবার কালে উর্ধ্ব দিকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন আমি উর্ধ্ব দিকে তাকিয়ে দেখলাম , হেরা গুহায়
যিনি আমার নিকট এসছিলেন , সেই ফিরিস্তা আসমান
ও যমিনের মাঝখানে এক কুরসীতে বসে আছেন। এতে আমি ভীত হয়ে বাড়ী
ফিরে গেলাম এবং বললাম আমাকে চাদর দিয়ে ঢাক, আমাকে চাদর দিয়ে ঢাক। তখন আল্লাহ তায়ালা
নাযিল করলেন- হে চাদরাবৃত ব্যাক্তি! ওঠ আর তুমি সতর্ক কর, আর তোমা প্রভুর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর, তোমার কাপড়
পবিত্র কর, অপবিত্রতা পরিহার কর। (৭৪:০১-০৫ আয়াত নাজিল হয়)। বুখারী, বই-১, হাদিস-৩
উপরোক্ত ঘটনা যদি মোহাম্মদ সম্পর্কিত না হয়ে
সাধারণ কোন মানুষ সম্পর্কে হতো, তাহলে নির্ঘাত ডাক্তাররা
বর্তমান যুগে তাকে মানসিক রোগী হিসাবে আখ্যায়িত করত। যাহোক, উপরের হাদিস থেকে কতকগুলি জিনিস খুব পরিস্কার। মাঝে মাঝেই মোহাম্মদ হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত হতেন ও নানারকম ছবি তার কাছে উদ্ভাসিত
হয়ে উঠত যাকে বলা হচ্ছে সত্য স্বপ্ন।জিব্রাইল ফিরিস্তাকে
তিনি চিনতে পারেন নি। ফিরিস্তাও তাকে বলেনি সে কে, কেন এসেছে। ফিরিস্তার আলিঙ্গনে
তাঁর প্রচন্ড কষ্ট হয়। তিনি ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন, মনে হয়েছিল কোন অশুভ আত্মা তার ওপর ভর করেছে। এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে শরীরে প্রচন্ড জ্বর এসে গেছিল, হার্ট বিট বেড়ে গেছিল, শরীর থর থর করে কাপছিল
যার জন্য তার গায় কম্বল জড়াতে হয়েছিল। এটা হিস্টিরিয়া রোগের
প্রকট লক্ষন। জিব্রাইল কিন্তু বলে নি যে তাকে আল্লাহ পাঠিয়েছে। তবুও খাদিজা কিন্তু বলছে- আল্লাহর কসম , আল্লাহ আপনাকে কখনো অমর্যাদা করবেন না। প্রশ্ন হলো- তাহলে
কোন্ আল্লাহর কসম দিচ্ছিল খাদিজা? কারন তখনও মোহাম্মদ
জানেন না যে জিব্রাইলের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর নিকট ওহী পাঠিয়েছে এবং তিনি তখনও ইসলাম
প্রচার শুরু করেন নি। সে যে একজন ফেরেস্তা, তাও সে বলেনি মোহাম্মদের কাছে,এমন কি মোহাম্মদও তা বুঝতে পারে নি। কখন মোহাম্মদ বুঝতে
পারলেন? যখন অরাকার কাছে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো। অরাকাই তাকে জানাল হেরা গুহায় দেখা দেয়া সেই অদ্ভুত প্রানী ছিল জিব্রাইল। ইতোপূর্বেকার কোন নবী কোন ফিরিস্তার সাথে সাক্ষাত হওয়ার সময়ে কোন রকম ভীতিকর অনুভূতির
সম্মুখীন হয়েছেন বা তাঁরা আশুভ আত্মার দ্বারা আক্রান্ত বলে কখনো মনে করেছেন এমন কোন
বর্ণনা বাইবেলে পাওয়া যায় না। অথচ সর্বশ্রেষ্ট নবী,
নবীদের নবী, আল্লাহর দোস্ত সামান্য
এক জিব্রাইল ফিরিস্তার সাথে দেখা হওয়ার সময়ে ভীষণ ভীত হয়ে পড়লেন ও মনে করলেন যে তিনি
কোন অশুভ আত্মার দ্বারা আক্রান্ত। বিষয়টি নবীদের নবী
মোহাম্মদের জন্য ভীষণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
এখন নিচের হাদিস টি পড়া যাক-
আয়শা থেকে বর্ণিত, আল হারিথ বিন হিসাম আল্লাহর নবীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে নবী ! কিভাবে আল্লাহর ওহী আপনার নিকট আসত? তিনি উত্তর দিলেন- মাঝে মাঝে ঘণ্টা ধ্বনির মত শব্দ শুনতে পেতাম, এরপর ওহী নাজিল হতো এবং এটা ছিল সবচেয়ে কঠিন কষ্টদায়ক,
এরকম অবস্থা পার হলে যা আমার কাছে নাজিল হতো আমি তা আত্মস্থ
করে নিতাম।
মাঝে মাঝে ফিরিস্তা আমার কাছে মানুষ রূপে আসত , আমার সাথে কথা বলত, এবং আমি আত্মস্ত
করে নিতাম যা আমার নিকট বলা হতো।
আয়শা বলেন, আমি নবীকে দারুণ শীতের দিনেও দেখতাম ওহী আসার পর তাঁর কপাল দিয়ে ঘাম নির্গত হতো। বুখারী, বই-১, হাদিস-২
উপরের হাদিসে দুটি ঘটনা দেখা যাচ্ছে- এক.
ঘন্টাধ্বনির মত আওয়াজ শোনা ও ফিরিস্তাকে মানুষ রূপে দেখতে পাওয়া এবং দুই. দারুন শীতের
মধ্যেও কপালে ঘাম ঝরা ও কষ্ট অনুভব করা। যদি উপরোক্ত হাদিস
থেকে ওহী নাজিলের বিষয়টি বাদ দেয়া যায় তাহলে বিষয়টা দাড়াচ্ছে- মোহাম্মদ বাস্তব নয় এমন
শব্দ শুনতে ও ব্যাক্তিকে দেখতে পেতেন এবং এর জন্যে শারিরীক কষ্ট অনুভব করতেন। দুটি বিষয়ই বর্তমানে আধুনিক মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টি দিয়ে ব্যখ্যা করা যায়। তাঁর মাঝে মাঝে হ্যলুসিনেশন বা দৃষ্টি বিভ্রম হতো ও তার ফলে তাঁর শারিরিক কষ্ট
হতো, যা এক রকম হিস্টিরিয়া রোগের লক্ষন। এ ধরণের কোন লক্ষন বর্তমান কালে কারো ঘটলে আমরা তাকে সরাসরি মনোবিজ্ঞানীদের কাছে
নিয়ে যাই। এসব লক্ষনে আক্রান্ত অনেক ব্যক্তিকেই আমরা অনেক সময় আমাদের আশে
পাশেই দেখতে পাই আর দেখতে পাই তারা নানা রকম প্রলাপ বকছে, শারিরীক কষ্ট পাচ্ছে, তার চোখ মুখ লাল হয়ে
যাচ্ছে, কপাল থেকে ঘাম নির্গত হচ্ছে। এসময় তারা এমন ভাবেও কথা বলে যেন ভিন্ন কোন এক ব্যক্তি তার মধ্য থেকে কথা বলছে। এটাকে তাদের অলৌকিক দর্শন হিসাবেও আখ্যা দেয়া যায়। তারা কিন্তু তাদের দর্শন সম্পর্কে একশত ভাগ নিশ্চিত থাকে কিন্তু পাশের কাউকে তা
দেখাতে পারে না । এমন অবস্থায় অনেকেই হয়ত বেশ আজে বাজে কথা
বলে এসময় কিন্তু অনেকেই আবার বেশ দার্শনিক ভঙ্গিতে জ্ঞানীর মত কথাও বলে। মোহাম্মদ যে কাজটি করেছেন তা হলো- তাঁর এ হ্যালুসিনেশন এর মাধ্যমে যে দর্শন পেয়েছিলেন
তার সাথে ধর্মকে জুড়ে দিয়েছেন। যে কারনে তিনি কখনই
তাঁর কাছে বহুবার আসা যাওয়া জিব্রাইল ফেরেস্তাকে দ্বিতীয় কাউকে দেখাতে পারেন নি। একবার আয়শা তাঁকে অনেকটা চ্যলেঞ্জের সাথেই দাবী জানায় ও বলে যে – সে তো কোন ফেরেস্তাকে দেখতে পায় না। জিব্রাইলকে দেখা তো দুরের কথা, সে যখন বানী নিয়ে এসে
মোহাম্মদের কাছে বলত- তখনও কেউ তার কোন আওয়াজ শুনতে পেত না। এমনও ঘটেছে, মোহাম্মদ তাঁর সঙ্গী সাথী নিয়ে কোথাও চলেছেন,
পথে হঠাৎ করে তাঁর ওহী নাজিল শুরু হলো, তার চোখ মুখ লাল হয়ে গেল, তাড়াতাড়ি সাহাবীরা
তাঁর পাশে কাপড় দিয়ে ঘেরা দিয়ে দিল, জিব্রাইল এসে
কথা বলে যাচ্ছে অথচ না দেখতে পাচ্ছে কেউ জিব্রাইলকে না তার আওয়াজ। এ বিষয়ে কোরাণ বা হাদিস লেখকরা বেশ বোকামীর পরিচয় দিয়েছে। কারণ, বাস্তবে মোহাম্মদ কোন রকম অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে
না পারলেও দেখা যায় হাদিসে নানা রকম অলৌকিক ঘটনার সমাহার কিন্ত তারা কখনই জিব্রাইলকে
কেউ দেখেছে বা তার কথা শুনেছে এমন কথা লিখে রেখে যায় নি। বাইবেল লেখকরা এদের চাইতে অনেক বেশী চালাক ছিল বলে মনে হয়। কারন তারা তাদের কিতাবে মূসা বা ঈসার বহুবিধ অলৌকিক ঘটনার বর্ণনা ছাড়াও ফিরিস্তারা
যে অহরহ সেসব নবীর কাছে আসত সেসব বর্ণনাও লিখে রেখেছে। এ ঘটনা দৃষ্টে মনে করা যেতে পারে যে, আরবের লোকজনরা
সেসময় প্যলেষ্টাইনের লোকদের চেয়ে অনেক বেশী সহজ সরল ছিল। তারা যে বাস্তবে আসলেই সহজ সরল ছিল তা কোরাণ ও হাদিস পাঠ করলে সহজেই বোঝা যায়। অনাড়ম্বর ও সরল ভাষায় লেখা ওসব কিতাব। অনাবশ্যক জটিলতা নেই
তাতে কোন। কোরাণ সম্পর্কে যে সব অতিরঞ্জিত কথা শুনা যায়, যেমন- কোরান সুন্দর ছন্দ, প্রাঞ্জল ভাষা, চমৎকার ধারাবাহিকতা এসব
আছে কোরাণে। কিন্তু আসলে কি তাই?এখানে ভাষা একটা বড় সমস্যা। অনারবীদের কাছে কোরাণের সৌন্দর্য আসলে কিছুই ধরা পড়ে না, তাই পূর্ব বিশ্বাস থেকে তাদের কাছে কোরাণ কে অতুলনীয় মনে হয়
।কিন্তু আরবী ভাষাটা জানলে তেমন মনে হবে না কিছুতেই। এছাড়া সুর করে কোরান তেলাওয়াত অনেকের কাছে শ্রুতি মধুর মনে হয়, কিন্তু সেটা কোরাণের জন্য নয়, এটার কারন আরবী ভাষায় সুরেলা একটা ভাব আছে। কোরাণের বানী ছাড়াও আরবী ভাষার কোন গালাগালিও যদি সুর করে তেলাওয়াত করা হয় তা অনারবীদের
কাছে হুবহু কোরাণ তেলাওয়াতের মতই সুমধুর মনে হবে ও মনে হবে সেগুলো কোরাণের বানী। কোরাণ যে আসলেই খুব সহজ সরল ভাষায় রচণা করা হয়েছে তার ঘোষণা খোদ কোরাণেই আছে বহুবার,
যেমন-
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?সূরা-কামার-৫৪: ১৭
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা-কামার-৫৪:২২
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা-কামার-৫৪:৩২
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা-কামার-৫৪:৪০
তবে এক আরবী জানা মৌলভীকে জিজ্ঞেস করে জানা
গেল মূল আয়াতে যিকির শব্দটা থাকাতে এর অর্থ হবে- আমি কোরাণকে মনে রাখার জন্য সহজ করে
দিয়েছি। তখন তাকে দেখানো হলো নীচের আয়াত-
আল্লাহ তোমাদের জন্যে কাজের কথা স্পষ্ট করে
বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।কুরাণ, ২৪: ১৮
এবার আর কোন সঠিক উত্তর পাওয়া গেল না। তখন মৌলভী বলল যে উক্ত আয়াতের অর্থ সব সূরা বা আয়াতের জন্য প্রজোয্য নয়। তাকে প্রশ্ন করা হলো-সব সূরা বা আয়াতের জন্য প্রজোয্য না হলে আল্লাহ একথা বলতে
গেল কেন? এরকম হলে তো আল্লাহ বলতে পারত- আল্লাহ তোমাদের
জন্য কিছু রহস্যময় বিষয় ছাড়া বাকি সব কাজের কথা স্পষ্ট করে বর্ণনা করেন। তা ছাড়া তাকে প্রশ্ন করা হলো- কোন কোন সূরা বা আয়াতের জন্য প্রজোয্য হবে?
সে কিছু আর বলতে পারল না তবে বলল- সেটা একমাত্র আল্লাহ জানেন। পরিশেষে বলল- আগে ইমান না আনলে কোরাণ পড়ে কিছুই বোঝা যাবে না। তার মানে আগে অন্ধবিশ্বাসী হলেই কোরাণের অর্থ সব দিবালোকের মত ফকফকা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো- কোরাণ খুব সহজ সরল ভাষায়
লেখা যে কোন মানুষই একটু মনযোগ দিয়ে পড়লেই পরিষ্কার বুঝতে পারবে এতে কি বলা হয়েছে। ইসলামী পন্ডিত হওয়ার কোনই দরকার নেই। তবে তা পড়তে হবে অবশ্যই
নিজ মাতৃভাষায়। আর এখানেই অনেকে বলে থাকে- কোরাণকে বুঝতে
হলে আরবী ভাষাতে পড়তে হবে, না হলে কিছু বোঝা যাবে
না।তার অর্থ আরবীবিশারদ লোকজন যারা কোরাণ অনুবাদ করেছে তারা ঠিকমতো
সেটা করতে পারে নি। দুনিয়ার অন্য কোন ধর্মের কিতাব অনুবাদ করে
পড়লে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না, একমাত্র কোরাণের ক্ষেত্রে
এ অদ্ভুত নিয়ম কেন? আর সেটা যদি সত্য হয়, আল্লাহ কেন প্রতিটি ভাষার একটা করে কোরাণ পাঠায় নি? আর এর কোন প্রশ্নই সঠিক না হলে বলতেই হবে – একমাত্র আরবী ভাষী আরবদের জন্যই কোরাণ তথা ইসলাম, ভিন্নভাষী মানুষদের জন্য এটা নয়।
এ ছাড়াও কোরাণের কিছু আয়াত পড়লে বোঝা যায়
যে- কোরাণ আসলে আরবদেশের কতিপয় জনগোষ্ঠী ছাড়া মানবজাতির জন্য নাযিল হয় নি। যে কারনে আল্লাহ বার বার বলছে-
এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং
যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। কোরাণ, ০৬:৯২
আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি,
যাতে তোমরা বুঝতে পার। কোরাণ, ১২:০২
আমি একে করেছি কোরআন, আরবী ভাষায়, যাতে তোমরা বুঝ। কোরাণ, ৪৩:০৩-০৪
আমি আপনার ভাষায় কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি,
যাতে তারা স্মরণ রাখে। কোরাণ, ৪৪:৫৮
উক্ত আয়াত সমূহ পরিস্কারভাবে প্রকাশ করে যে,
আল্লাহর তথা মোহাম্মদের মূল লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র আরব তথা মক্কাবাসীদেরকে
হেদায়েত করা ও তাদেরকে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতিরূপে সংগঠিত করা। বলা হচ্ছে- আরবী ভাষায় কোরাণকে সহজ করে দিয়েছি যাতে তোমরা বুঝতে পার। তো আরবী ভাষার কোরাণ তো একমাত্র আরবী ভাষী আরবরাই বুঝতে পারবে। তাই না ? আমরা যারা পাতি বাঙালী তাদের পক্ষে আরবী কোরাণ
বোঝা তো দুরের কথা, বহু কসরত করে আরবী শেখার পরও শুধুমাত্র পড়াটাই
একটা বিশাল কষ্টসাধ্য ব্যপার। তার অর্থ আমরা প্রকৃতপক্ষে
কখনোই আরবী কোরাণ সম্যক বুঝতে পারব না আর তাই তা আমাদের জন্য নয়। শুধু এ পর্যন্ত হলেও হতো। কোরাণ মূলত মোহাম্মদের
কাছে কুরাইশ উচ্চারণে নজিল হয়েছে, কারণ মোহাম্মদ কোরাইশ
বংশজাত ছিলেন। তিনি কুরাইশ আঞ্চলিক আরবী ভাষা ছাড়া কিছু
জানতেনও না। তাই কুরাইশ আঞ্চলিক ভাষায় কোরাণ নাজিল না
হয়ে কোন উপায়ও ছিল না। বলা হয় – কোরাণ নাকি লাওহে মাহফুজে লেখা আছে। সে কোরাণ কি তাহলে
কুরাইশদের আঞ্চলিক আরবী ভাষায় লেখা ?সর্বজ্ঞানী
আল্লাহর কোন কিতাব যে লিখে রাখার দরকার পড়ে না, এটা বোঝার মত প্রজ্ঞা মোহাম্মদের ছিল বলে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
কোরাণ কিভাবে সংকলিত হয়েছিল সেটা দেখা যায়
নীচের হাদিসে-
আনাস বিন মালিক বর্ণিত- হুদায়ফিয়া বিন আল
ইয়ামান ওসমানের কাছে আসল যখন কিছু শাম ও ইরাকি দেশীয় লোক তাঁর কাছে উপস্থিত ছিল। হুদায়ফিয়া শাম ও ইরাক দেশীয় লোকদের ভিন্ন উচ্চারণে কোরাণ পাঠ নিয়ে ভীত ছিলেন,
তাই তিনি বললেন- হে বিশ্বাসীদের প্রধাণ, ইহুদী ও খৃষ্টানরা যেমন তাদের কিতাব বিকৃত করেছিল তেমনটি থেকে
কোরাণকে রক্ষা করার জন্য আপনি কিছু করুন। সুতরাং ওসমান হাফসা
( নবীর স্ত্রী ও ওমরের কন্যা) এর নিকট এক বার্তা পাঠালেন- দয়া করে আপনার নিকট রক্ষিত
কোরাণের কপিটা আমাদের কাছে পাঠান যাতে করে আমরা তার একটা বিশুদ্ধ কপি করতে পারি ও তারপর
সেটা আপনার নিকট ফিরিয়ে দেয়া হবে। হাফসা সেটা ওসমানের
নিকট পাঠালেন। ওসমান তখন যায়েদ বিন তাবিত, আব্দুল্লাহ বিন আয যোবায়ের, সাদ বিন আল আস ও আব্দুর রহমান বিন হারিথ বিন হিসাম এদেরকে কোরাণের পান্ডুলিপি পূন:
লিখতে আদেশ করলেন। ওসমান তিনজন কুরাইশ ব্যাক্তিকে বললেন- যদি
তোমরা কোন বিষয়ে যায়েদ বিন তাবিত এর সাথে কোরাণের কোন বিষয়ে দ্বিমত পোষণ কর,
তাহলে তা কুরাইশ উচ্চারণে লিখবে, কারণ কোরাণ সে উচ্চারণেই নাজিল হয়েছিল। তারা সেরকমই করলেন
আর যখন অনেকগুলো কপি লেখা হলো তখন ওসমান আসল কপিটা হাফসার নিকট ফেরত দিলেন। অত:পর ওসমান একটি করে কপি প্রতিটি প্রদেশে পাঠিয়ে দিলেন এবং একই সাথে বাকী সব পান্ডুলিপি
যা সম্পূর্ণ বা আংশিক ছিল সেসব পুড়িয়ে ফেলার হুকুম করলেন। যায়েদ বিন তাবিথ আরও বলেন- আল আহযাব সূরার একটি আয়াত আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম যখন
আমরা কোরাণ সংকলন করছিলাম ও আমি তা আল্লাহর নবীকে তেলাওয়াত করতে শুনেছি। তাই এটা আমরা খুজতে শুরু করলাম ও খুজাইমা বিন তাবিথ আল আনসারি এর নিকট তা পেলাম। আয়াতটা ছিল ৩৩: ২৩ । সহী বুখারী,
বই-৬১, হাদিস-৫১০
উপরের হাদিসে পরিষ্কার যে -কোরাণ কোন বিশুদ্ধ
ও আদর্শ লেখ্য আরবী ভাষাতে নাযিল হয় নি। কেন ? কারণ লেখাপড়া না জানা মোহাম্মদ সেটা জানতেন না। যে কারণেই তাঁকে আঞ্চলিক কথ্য ভাষাকেই বেছে নিতে হয়েছে কোরাণ নাযিল করতে। যেমন বাংলা ভাষী একজন মানুষ নিরক্ষর বা অশিক্ষিত হলেও চমৎকার ভাবে সে আঞ্চলিক
ভাষায় নানা রকম গল্প করতে পারঙ্গম হতে পারে, এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। গ্রাম বাংলায় এখনও
এরকম বহু মানুষ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু তাকে একটা দাপ্তরিক
দলিল লেখার ভাষা বলতে গেলে সে তা পারবে না। শুধু এটা হলেও মেনে
নেয়া যেত। বিষয়টি আরও গভীর। কারণ উক্ত হাদিস থেকে
দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন কথ্য রীতিতে কোরাণ তেলাওয়াত করত। এর ফলে একই আয়াতের নানা রকম অর্থ হয়ে যাচ্ছিল। কখনও সম্পূর্ন ভিন্ন অর্থ হয়ে যাওয়াটাও বিচিত্র ছিল না। আর তা থেকেই কোরাণকে রক্ষা করার জন্য ওসমান এ পদক্ষেপ গ্রহণ করে, এতে আপাত: দৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে বিষয়টিতে মোটেও দোষের কিছু
ছিল না। আসলেই কি দোষের কিছু নেই ? দেখা যাক নীচের হাদিসটি-
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস বর্ণিত- আল্লাহর নবী
বলেছিলেন, জিব্রাইল আমার কাছে কোরাণকে এক রীতিতে উচ্চারণ
করত। অত:পর আমি তাকে বলতাম তা অন্য রীতিতে উচ্চারণ করতে এবং সে বিভিন্ন
রীতিতে তা উচ্চারণ করত এবং এভাবে সে সাতটি রীতিতে উচ্চারণ করে আমাকে শিখাত। সহী বুখারী, বই-৬১, হাদিস-৫১৩
বোঝাই যাচ্ছে জিব্রাইল সাতটি আঞ্চলিক ভাষায়
কোরাণকে বর্ণনা করেছে। কেন ? কারণ বাংলাদেশেই যেমন বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা প্রচলিত, সেই আরবেও বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা ছিল। সেহেতু জিব্রাইল বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাতে কোরাণ উচ্চারণ করে দিয়ে মোহাম্মদের পরিশ্রম
লাঘব করে দিয়েছে। কিন্তু বিষয়টা কি অত সোজা ? মোটেই না। ইসলামের দাবী মোতাবেক
কোরাণ একটা সুস্পষ্ট দলিল। সুস্পষ্ট দলিল সব সময়
দাপ্তরিক, বিশুদ্ধ, লেখ্য একক ভাষাতেই লেখা হয়। কোন আঞ্চলিক কথ্য ভাষাতে
তা কখনো লেখা হয় না। যেমন- আমরা যখন কোন দাপ্তরিক চিঠি পত্র বা
দলিল লিখি তা কথ্য বা কোন আঞ্চলিক ভাষায় লিখি না। বাংলাভাষী সকল অঞ্চলের মানুষ বুঝতে পারে এমন একটা আদর্শ দাপ্তরিক ভাষাতেই তা লিখে
থাকি। যেমন বর্তমান এ নিবন্ধটা আমি লিখছি তা একটা দাপ্তরিক চলতি ভাষা,
কোন আঞ্চলিক ভাষা নয়। কিন্তু এ দাপ্তরিক
ভাষায় লিখিত কোন পত্র কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষকে বোঝাতে গেলে আমি হয়ত তার আঞ্চলিক
কথ্য ভাষার সাহায্য নিয়ে তাকে বুঝাতে পারি যদি সে দাপ্তরিক ভাষা না বোঝে।কোরাণ নাজিল বা লেখার ক্ষেত্রে এ রীতি অনুসরণ করা হয় নি তা বোঝা যাচ্ছে উপরোক্ত
দুটি হাদিসে। দেখা যাচ্ছে কোরাণের বাণী বিভিন্ন অঞ্চলে
বিভিন্ন আঞ্চলিক কথ্য ভাষাতেই নাযিল হয়েছিল আর তা সেভাবেই লেখা হয়েছিল। কারণ মোহাম্মদ মক্কা ও মদীনা দু যায়গাতেই দীর্ঘ দিন থেকেছেন আর তাদের ভাষা আরবী
হলেও আঞ্চলিক ভাষায় বহু পার্থক্য বিদ্যমান ছিল। আল্লাহই যদি কোরাণ নাযিল করে থাকবেন তাহলে তার সেটা করার কথা আদর্শ দাপ্তরিক আরবী
ভাষাতেই। তারপর মোহাম্মদ সেটা বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে তাদের আঞ্চলিক
ভাষায় বুঝিয়ে দিতেন তাতে কোন দোষ দেখা যায় না। কিন্তু ওসমান কর্তৃক একটা পূর্ণ কোরাণ সংকলনের আগে দেখা যাচ্ছে- কোরাণের বহুরকম
কথ্য রীতি প্রচলিত ছিল আর বলাবাহুল্য মোহাম্মদ সেটা সেভাবেই বলেছিলেন। সম্ভবত বিষয়টি কিছু লেখাপড়া জানা মানুষকে সন্দিহান করে তোলে যে আল্লাহ যদি লাওহে
মাহফুজে একটা কোরাণ সৃষ্টির পর পরই লিখে রেখে থাকে তাহলে তা কোন্ আদর্শ বা দাপ্তরিক
ভাষায় লেখা আছে অথবা আল্লাহ কেনই বা আরবীর একটা সুনির্দিষ্ট লেখ্য দালিলিক রূপ ব্যবহার
না করে ভিন্ন ভিন্ন কথ্য রূপ ব্যবহার করবে তার দলিল নাযিলের জন্য। কারণ তারা দলিল লেখার জন্য যে একটা আদর্শ লেখ্য ভাষার দরকার সেটা ভালমতোই জানত। তাই তারা মোহাম্মদকে প্রশ্ন করে- এত বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় কোরাণ নাযিল হলো কেন?
তখন তিনি উক্ত হাদিস বর্ণনা করেন আর সব দায়িত্ব জিব্রাইলের ওপর
বর্তান। অত:পর ওসমান এসে হুকুম জারি করে – কোরাণকে কুরাইশ উচ্চারণে লিখতে। বর্তমানে আমরা যে কোরাণ
পাই তা সেই ওসমান নির্দেশিত কুরাইশ ভাষার কোরাণ। দাবী করা হয়- কোরাণ বিশুদ্ধ আরবী ভাষাতে লিখিত।কিন্তু উপরোক্ত হাদিস মোতাবেক দেখা যায়- কোরাণ হলো কুরাইশদের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত। পরবর্তীতে খলিফাদের নির্দেশে দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে কোরাণে বর্ণিত ভাষা ও ব্যকরণ
অনুসরণ করার নির্দেশ জারী করা হয়। এভাবেই চলে গেছে শত
শত বছর। এভাবেই কোরণের আঞ্চলিক ভাষা হয়ে উঠেছে আদর্শ আরবী। ঘটনা দৃষ্টে মনে হয়, মোহাম্মদ আমাদের বাংলাদেশের
নোয়াখালী অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করলে কোরাণ রচিত হতো নোয়াখালী ভাষায় আর পরবর্তীতে এ নোয়াখাইল্যা
ভাষাটাই হতো বাংলাদেশের সরকারী বা বিশুদ্ধ দাপ্তরিক বাংলা ভাষা। ৫১০ নং হাদিস থেকে দেখা যাচ্ছে- ওসমান তার মনমতো রচিত কোরাণ তৈরী করে বাকী সব লিখিত
দলিল পুড়িয়ে ফেলে। কি ভয়ংকর কথা ! কোরাণ পোড়ান? তাও আবার কে সেটা করছে? খোলাফায়ে রাশেদিনের মহান খলিফা হযরত ওসমান। এখন যে কেউ কোরাণ পোড়ালে বা মোহাম্মদের একটা কার্টুন আঁকলে মুমিন বান্দারা নাঙা
তলোয়ার নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে কল্লা কাটতে , খুন করে ফেলে
শত শত মানুষ, তাদের তো প্রথমেই সোচ্চার হওয়া উচিত ওসমানের
বিরুদ্ধে। সে বহু আগে মরে গিয়ে বেঁচে গেছে যদিও, তবে মুসলিম বিশ্ব থেকে তার বিরুদ্ধে একটা ফতোয়া জারি থাকা উচিত
তার এ মহা গুনাহ-এর কাজের জন্য।উক্ত হাদিসে দেখা যায়-
হাফসার কাছে একটা সম্পূর্ন কোরাণের কপি ছিল। আমরা যুক্তির খাতিরে
যদি ধরে নেই বিভিন্ন সাহাবীদের কাছে থাকা ভ্রান্তিপূর্ণ কোরাণের বানী সংগ্রহ করে তা
ধ্বংস করে একটা বিশুদ্ধ কোরাণ সংকলন ছিল ওসমানের উদ্দেশ্য। দেখা যায় হাফসা ছাড়াও আয়শার কাছেও একটা সম্পূর্ণ কোরাণ ছিল , যেমন-
ইউসূফ বিন মাহক বর্ণিত- যখন আমি আয়শা,
সমস্ত বিশ্বাসীদের জননী এর নিকট বসে ছিলাম , ইরাক থেকে এক লোক এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “ কোন ধরনের আচ্ছাদন সর্বোত্তম?” আয়শা বললেন- তোমার ওপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন। কিন্তু বিষয় কি? সে বলল- হে জননী, আমাকে আপনার কোরান থেকে দেখান। তিনি জিজ্ঞেস করলেন-
কেন ? সে বলল-কোরাণকে সেটার অনুযায়ী অনুলিপি করতে
চাই কারণ লোকজন এর সূরা সমূহ সঠিকভাবে উচ্চারণ করছে না।……অত:পর আয়শা তার কোরাণটা বের করলেন আর লোকটাকে কোরাণের সূরা কিভাবে সঠিকভাবে উচ্চারণ
করতে হবে তা শিখিয়ে দিলেন। সহী বুখারী,
বই-৬১, হাদিস-৫১৫
তার মানে শুধু হাফসা নয়, আয়শার কাছেও একটা সম্পূর্ন কোরাণ ছিল। সেকারণেই অনেক ইসলামী পন্ডিত বলে থাকে যে, কোরাণ মোহাম্মদের আমলেই লেখা হয়েছিল। যার সত্যতা এসব হাদিস
থেকে পাওয়া যায়। খুব ভাল কথা। কিন্তু প্রশ্ন হলো- সম্পূর্ন কোরাণ যদি মোহাম্মদের আমলে একটা কিতাব আকারে লেখা
হয়ে থাকে আর তার কপি যদি হাফসা ও আয়শার কাছে সংরক্ষিত থাকে তাহলে ওসমান তো সোজাসুজি
তার যে কোন একটা নিয়ে কপি করে বিভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়ে দিলেই লেঠা চুকে যেত। তার দরকার পড়ত না একটা কমিটি গঠণ করে তারপর তাদেরকে নির্দেশ দেয়া- যদি তোমরা কোন
বিষয়ে যায়েদ বিন তাবিত এর সাথে কোরাণের কোন বিষয়ে দ্বিমত পোষণ কর, তাহলে তা কুরাইশ উচ্চারণে লিখবে, কারণ কোরাণ সে উচ্চারণেই নাজিল হয়েছিল। এর পরও যদি ধরে নেই
যে এটা শুধুমাত্র উচ্চারণগত সমস্যা সমাধানের বিষয়ে ছিল, তাহলে কোথায় সেই হাফসা ও আয়শার কোরাণ এখন? কেন সেটা খলিফারা সংরক্ষন করে নি ? তখন তো ইসলামী
রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে, একটা প্রশাসন আছে,
খলিফা আছে, যে কোন কিতাব সংরক্ষনের
যাবতীয় ব্যবস্থাও তারা করতে পারত- তাহলে তারা কেন হাফসা ও আয়শার কাছে গচ্ছিত আদি ও
অকৃত্রিম কোরাণকে সংরক্ষন করার ব্যবস্থা করল না? সংরক্ষন করার যাবতীয় উপায় ও ব্যবস্থা তাদের ছিল কারণ ওসমান যখন নিজের কোরাণের সংকলন
সংরক্ষন করতে পেরেছিল তখন সেগুলোও তারা সংরক্ষন করতে পারত। কিন্তু তা কোন খলিফাই করে নি। করার প্রয়োজন বোধ করে
নি। কি কারণে দরকার মনে করেনি তারা ? তাদের কি কোন সংশয় বা ভয় ছিল? কেন সেগুলো সংরক্ষনের
দরকার ছিল? কারণ মোহাম্মদ নিজে বার বার অভিযোগ করেছেন
যে ইহুদি ও খৃষ্টাণরা তাদের কিতাব বিকৃত করেছে, তাদের আদি কিতাবগুলো ধ্বংস করে নতুন করে নিজেদের মত করে কিতাব লিখে নিয়েছে। হযরত আবু বকর, হযরত ওমর ও হযরত ওসমান সবাই এসব বিষয় জানত। তাদের কি বোঝা উচিত ছিল না যে ভবিষ্যতে ঠিক একই অভিযোগ তাদের কোরাণের ব্যপারে উঠতে
পারে ? নাকি প্রায় দীন হীন আরব্য জীবন থেকে একটা
বিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি হয়ে ক্ষমতার মদমত্তে তারা সবাই ভুলে গেছিল এসবের আর কোন দরকার
নেই ? সে কাজটা যদি তারা করে যেত আজকে ইসলামী পন্ডিতরা
প্রমান করতে পারত যে- তাদের হাতে আজকে যে কোরাণ আছে সেটা হুবহু মোহাম্মদ বর্ণিত কোরাণই।যেহেতু হাফসা বা আয়শার কোরাণের কোন হদিস নেই তার অর্থ উদ্দেশ্যমূলভাবে সেগুলোকে
ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। উক্ত ৫১০ নং হাদিস থেকে আরও বোঝা যায় যে,
হাফসার কাছে যে কোরাণ ছিল তা সম্পূর্ন ছিল না। কারন বলা হচ্ছে একটা আয়াত নাকি হারিয়ে ফেলেছিল। সম্পূর্ণ কোরাণ হাফসার কাছে থাকলে কোন একটা আয়াত হারিয়ে যাওয়ার প্রশ্নটা এখানে
উঠত না, প্রশ্ন উঠলেও সেটা খোজাখুজির দরকার পড়ত না। এখানে শুধু একটা হাদিসের হারানোর কথা বলা আছে। সঙ্গত কারণেই বহু হাদিস হারানোর কথা এখানে থাকবে না কারণ সেটা হবে তাদের দুর্বলতা,
যারা একটা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার মত শক্তি অর্জন করতে পারে
তাদেরকে অত বোকা মনে করাটা ঠিক নয়। সুতরাং আমরা কিভাবে
নিশ্চিত হবো যে অনেক আয়াত হারিয়ে যায় নি ? বলা হয় তখন
শত শত কোরাণে হাফেজ ছিল।কিন্তু হাদিস থেকেই
বোঝা যাচ্ছে, সেসব হাফেজরা যার যার মত করে তাদের নিজস্ব
আঞ্চলিক ভাষায় কোরাণ মূখস্ত করেছিল। ওসমান যাদেরকে কোরাণ
সংকলনের দায়িত্ব দিয়েছিল তারাও নিশ্চয়ই কোরাণে হাফেজ ছিল। তো তাদের যদি সম্পূর্ন কোরাণ মূখস্তই থাকে, তাহলে আর খামোখা কষ্ট করে সারা আরব দেশ থেকে খেজুর পাতা , হাড় গোড় এসবে লেখা আয়াত খুজতে গেল কেন? তার অর্থ বোঝা যাচ্ছে তারা নিজেরা হাফেজ হওয়া সত্ত্বেও তাদের
জানা কোরাণের ব্যপারে তার সম্পূর্ন আস্থাবান ছিল না। তাই তারা সমস্ত রকম পান্ডুলিপি জোগাড় করে বুঝতে চাচ্ছিল তাদেরটা ঠিক কি না। বলাবাহুল্য সেগুলোর মধ্যে যে যথেষ্ট অসঙ্গতি ছিল তা কিন্তু হাদিসেই পরিস্কার। সুতরাং এ সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক যে, হাফসার কোরাণ
সম্পূর্ণ না হলে, বিভিন্ন যায়গা থেকে সংগ্রহ করা চামড়া,
খেজুর পাতা বা হাড়ে লেখা আয়াতসমূহ এবং হাফসার কাছে রক্ষিত কোরাণ
থেকে ওসমান আর তার ভাড়া করা কর্মচারীরা তাদের সুবিধামত আয়াত সংকলন করে, সংশোধন, সংজোযন, পরিবর্তন করে, এমন কি নিজেরা
নতুন আয়াত বানিয়ে একটা সম্পূর্ণ নতুন কোরাণ তৈরী করে তা বিভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়েছে ওসমান
এবং ফরমান জারি করেছে- অত:পর এ কোরাণই অনুসরণ করতে হবে।তখন আরবের অবস্থা আর মোহাম্মদের আমলের মত ছিল না। পাকাপোক্ত খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। খলিফার আইন বিনা প্রশ্নে
মেনে চলার বিধাণ জারি হয়েছে। কোন কোন কোরাণে হাফেজ
যদি নতুন কোরাণে কোন অসংগতি দেখতেও পেত তা শোনার কেউ তখন ছিল না, কারণ এরই মধ্যে প্রচারিত হয়ে গেছিল যে বিভিন্ন যায়গাতে বিভিন্নভাবে
কোরাণ পড়া হয়, আর তাই নতুন করে কোরাণ সংকলন করা হয়েছে বিশুদ্ধতা
রক্ষা করে ও অত:পর এটাই সকলকে পড়তে হবে। সুতরাং এর পর আর কে
কথা বলতে যাবে এটা নিয়ে? সুতরাং সারমর্ম হলো-
হাদিসের বক্তব্য অনুযায়ী, আজকে যে কোরাণ আমরা
দেখতে পাই তাতে মোহাম্মদ বর্ণিত সার কথা থাকলেও তা মোটেও হুবহু মোহাম্মদ বর্ণিত সম্পূর্ন
কোরাণ নয়। যেহেতু হাফসার বা আয়শার কোরাণের কোন খোজ পাওয়া যায় না তাই এটা
নিশ্চিত যে হয় ওসমান অথবা ওসমানের নিয়োজিত কোন লোক পরবর্তীতে উক্ত কোরাণের কপি সংগ্রহ
করে তা ধ্বংস করে ফেলে। তারা ধ্বংস করে ফেলে একারণে যে সেগুলো সংরক্ষিত
হলে তাদের সংকলিত কোরাণের বিশ্বাসযোগ্যতা ভবিষ্যতে হুমকির মুখে পড়বে। সাধারণ মুমিন মুসলমানরা এতসব খবর বা ইতিহাস নিয়ে মাথা ঘামায় না। অন্যদিকে ইসলামি পন্ডিতরা প্রচার মাধ্যমে সাড়ম্বরে প্রচার করে বেড়ায় বিগত ১৪০০
বছর ধরে কোরাণ হুবহু এক আছে, তাই তারা চোখ বুজে
বিশ্বাস করে। এখন গত ১৪০০ বছর ধরে কার কোরাণ হুবহু অবিকৃত
অবস্থায় আছে তা তো আমরা হাদিস থেকেই দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে সৌদি পেট্রো ডলারের বলে বলীয়ান হয়ে যতই বহুরকম মিডিয়াতে উচ্চৈস্বরে চিৎকার করে বলা হোক যে-
বর্তমান কোরাণে কোন বিকৃতি নেই, এটা আল্লাহ কথিত মোহাম্মদের
অবিকল কোরাণ তাতে কিছু অন্ধ ও বধির লোকজনরা আস্বস্থ হলেও কৌতুহলী ও বুদ্ধিমান মানুষদেরকে
আস্বস্থ করা যাবে না। হাদিস যেহেতু বলছে- হাফসা ও আয়শার কাছে মোহাম্মদের
কোরাণ ছিল, তাই এখন এসব ইসলামী পন্ডিতদেরকে সেসব কোরাণ
যোগাড় করেই তাদের দাবী প্রমান করতে হবে। কোরাণ অবিকৃত দাবী
যেহেতু তারা করছে তাই প্রমানের দায়িত্বও তাদের। কিছু কিছু ইসলামী পন্ডিত ইদানিং ঠিক একারণেই হাদিসকে গ্রহণ করতে চায় না। উপরোক্ত ঘটনা সমূহ থেকে বোঝা যাচ্ছে হাদিস গ্রহণ বিশ্বাস করলে কোরাণের অস্তিত্ব
হুমকির মুখে পড়ে। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে- হাদিস ছাড়া মোহাম্মদের
অস্তিত্ব নেই, মোহাম্মদ ছাড়া তেমনি কোরাণও অস্তিত্বহীন। এছাড়া দেখা যায়, মোহাম্মদ জীবদ্দশায় কখনো সম্পূর্নরূপে কোরাণকে
লিখে রাখার তাগিদ বোধ করেন নি। মাঝে মাঝে দু একটি
বিচ্ছিন্ন আয়াত হয়ত লিখতে বলেছেন।তিনি জানতেন তাঁর পূর্ববর্তী
নবীগণ সে কাজটা কখনো করেননি। কিন্তু তার পরেও তাঁদের
বাণীসমূহ কিতাবাকারে পাওয়া যেত তখন, কারন তাঁদের
সাথীরা সেসব লিখে রাখত। তিনিও জানতেন যে তাঁর প্রচার করা তথাকথিত
আল্লাহর বাণীসমূহ সেভাবেই তাঁর সাহাবীরা লিখে রাখছে ও একই সাথে মুখস্ত করে রাখছে। এটা ছিল মূলত ইহুদী খৃষ্টানদেরকে বোঝানো যে তিনি নিজে পূর্ববর্তী নবীদের পদাংক
অনুসরণ করছেন একারণে তাঁকে বিশ্বাস করা উচিত তাদের। কোরাণে তিনি খুব জোরের সাথে বলেছেন-
আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং
আমি নিজেই এর সংরক্ষক।সূরা-আল-হিজর,১৫:০৯
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে আল্লাহ তার উপদেশ
গ্রন্থ কোরাণ সংরক্ষণ করে নি। দেখা যাচ্ছে নানা রকম
গোজামিল দিয়ে ওসমানের মাধ্যমে কিছু ভাড়াটে কর্মচারী দিয়ে কোরাণকে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। মোহাম্মদের লক্ষ্য ছিল একটা ঐক্যবদ্ধ আরব রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। যখন সেটা সম্পন্ন হয়ে গেছিল তখন আর তাঁর কোরাণ সংরক্ষনের চিন্তা মাথায় আসেনি। তার ধারণা ছিল রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে তা ধর্ম ছাড়া এমনিতেই চলতে থাকবে। যেমন চলেছে- রোমান, বাইজান্টাইন,পারস্য সাম্রাজ্য এসব। যদি যুক্তি দেয়া হয় যে – আল্লাহ তো মানুষকে
দিয়েই তার কাজ করায়। তাই যদি হতো- তাহলে মোহাম্মদ বললেই সাথে সাথে
তাঁর সাহাবীরা বহু কপি কোরাণ লেখা হয়ে যেত তাঁর জীবদ্দশায়। পরে আর ওসমানকে টাকা খরচ করে কিছু ভাড়াটে লেখক নিয়োগ করতে হতো না আর আজকে এত সমালোচণার
সামনে পড়তে হতো না। তাঁর স্বপ্ন যে আসলেই আরব সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা
ছিল তার প্রমানও কিন্তু কোরাণে মেলে, যেমন-
এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং
যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। কোরান, ০৬: ৯২
তার মানে তিনি শুধুমাত্র মক্কাবাসী ও তার
পার্শ্ববর্তী লোকজনদেরকে ভয় প্রদর্শন করার জন্য কোরাণ অবতীর্ণ করেছেন। কেন ? কারণ তার স্বপ্ন মক্কাবাসীরা বীরের জাতি,
তাদের দিয়ে তিনি একটা ঐক্যবদ্ধ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চান। যে রাজ্যের সবাই হবে আরব। এটা একটা আরব জাতিয়তাবাদী
রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। একারণেই আমরা দেখেছি
বার বার তিনি বলছেন- আমি কোরাণকে অবতীর্ণ করেছি সহজ আরবী ভাষায় যাতে তোমরা বুঝতে পার। আরব রাজ্য প্রতিষ্ঠার তাগিদ থেকেই যে তাঁর ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠা, তা আরও বোঝা যায় তার কুরাইশদের সাথে ১০ বছর মেয়াদী সন্ধি চুক্তি
করার মাত্র আড়াই বছর পরেই একটা ঠুনকো অজুহাতে মক্কা আক্রমন ও দখল করার মধ্য দিয়ে। এত তাড়াতাড়ি চুক্তি ভঙ্গ করে আক্রমন করার কারণ হলো তিনি তখন প্রায় বৃদ্ধ হয়ে গেছেন
, বয়স ৬০ পেরিয়ে যাচ্ছে, স্বপ্ন সফল হচ্ছে না।তাঁর হাতে তেমন সময়
ছিল না আর।
মোহাম্মদ শুধু বুদ্ধিমানই ছিলেন না ,
ছিলেন অতিশয় প্রত্যুৎপন্নমতিও । তাৎক্ষনিক যে কোন প্রশ্নের
উত্তর দিতে তাঁর জুড়ি ছিল না। তাঁর এ ক্ষমতা ছিল
বলেই সে না তিনি নবী হতে পেরেছিলেন আর উদ্ধত আরবদেরকে বশ করতে পেরেছিলেন। তাঁর প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের একটা উদাহরণ দেয়া যাক-
আল বারা বর্ণিত- এ আয়াত টি নাযিল হলো,
“ যে সব বিশ্বাসী ঘরে বসে থাকে তাদের মর্যাদা যারা জান মাল দিয়ে
আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে তাদের সমান নয়”(কোরাণ,০৪:৯৫)। নবী বললেন,
যায়েদকে আমার কাছে ডাক আর তাকে একটা বোর্ড বা হাড়ের টুকরা ও
কালি আনতে বল। তারপর তিনি বললেন- “লেখ, সে সব বিশ্বাসী ঘরে
বসে থাকে…” এবং এমন সময় আমর বিন উম মাখতুম যে ছিল একজন
অন্ধ মানুষ সে সেখানে নবীর পিছনে বসেছিল, নবীকে বলল,
“ হে আল্লাহর নবী! আমি তো একজন অন্ধ মানুষ, আমার জন্য তোমার কি হুকুম ?” সুতরাং সাথে সাথেই আগের আয়াতের পরিবর্তে এ আয়াত নাযিল হলো- “যারা অক্ষম তারা ছাড়া যে সব বিশ্বাসী ঘরে বসে থাকে তাদের মর্যাদা
যারা জান মাল দিয়ে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে তাদের সমান নয়”(০৪:৯৫)। সহি বুখারী, বই-৬১, হাদিস-৫১২
এর পরে কি বুঝতে বাকী থাকে কোরাণের আয়াত আল্লাহর
প্রেরিত নাকি মোহাম্মদের নিজের রচিত ? একই সাথে এটা
তাঁর দুর্দান্ত প্রত্যুৎপন্নমতিত্বেরও উদাহরণ। কথায় বলে বেশী চালাকের গলায় দড়ি। বিষয়টা এ ক্ষেত্রেও
প্রযোজ্য হতে পারে। কোরাণ যেহেতু লাওহে মাহফুজে আল্লাহ অনেক আগেই
লিখে রেখেছে, তার মানে কিছুক্ষণ আগে যা নাযিল হয়েছিল সেটা
নিশ্চয়ই কোরাণে লেখা ছিল। কিন্তু এক অন্ধ লোকের
আচমকা বেমক্কা প্রশ্নে মোহাম্মদকে বাধ্য হতে হয় নতুন করে সংশোধিত আয়াত বলতে। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে- আল্লাহ কি সাথে সাথেই তার লিখিত কোরাণ থেকে আগের নাযিলকৃত
ব্ক্তব্য মুছে ফেলে নতুন করে লিখেছে? অবস্থা দৃষ্টে
মনে হচ্ছে- মোহাম্মদের বেঁচে থাকা কালীন সময়ে বেচারা আল্লাহ বড়ই বিপদের মধ্যে ছিল। তার অন্য সব কাম কাজ ফেলে তাকে অহর্নিশ বসে থাকতে হতো তার লিখিত কোরানের সামনে। কারণ কখন তার পেয়ারা নবী জানি দোস্ত তার কোরাণের বাণী পাল্টে ফেলে তার ঠিক নেই। আর সাথে সাথেই তাকে তা সংশোধণ করতে হতো। আল্লাহর কাছে কোন কম্পিউটার
আছে কিনা তা মোহাম্মদ জানাননি। যদি না থেকে থাকে তাহলে
বেচারা আল্লাহর এ ধরণের সংশোধনীর জন্য যে কিরূপ পরিশ্রম করতে হয়েছে তা সহজেই বোধগম্য। এ থেকে আরও বোঝা যায়- মোহাম্মদ প্রচন্ড দু:সাহসীও ছিলেন।কারণ যে কোন সু্স্থ ও কান্ডজ্ঞান সম্পন্ন মানুষই মোহাম্মদের উক্ত বক্তব্য শুনে
বুঝে ফেলতে পারত যে মোহাম্মদ যাকে আল্লাহর বাণী বলে চালাচ্ছে তা আসলে আল্লাহর বাণী
নয়। কিন্তু তাঁর দু:সাহস তাঁকে এ বিষয়ে অনেক সাহায্য করত। তবে বিশেষভাবে খেয়াল করতে হবে এ ধরণের তাৎক্ষনিক পরিবর্তনীয়
আয়াতগুলি তিনি মদিনার জীবনেই সব বলেছেন যেখানে তিনি ছিলেন একচ্ছত্র অধিপতি,
যার কথার বিরুদ্ধাচরণ কেউ করত না বা করতে সাহস করত না। যেমন উপরের ০৪:৯৫ টি হলো সূরা নিসা থেকে নেয়া যা মদিনায় নাযিল হয়েছিল।
প্রথমে বলা হয়েছিল মোহাম্মদের হিস্টিরিয়া
রোগ আছে কি না। তাঁর সামগ্রিক জীবনের কর্মকান্ড পর্যালোচনা
করলে দেখা যায়- জীবনের সবসময়ই তার এ রোগটা ছিল তবে প্রথম দিকে এর প্রকোপ বেশী ছিল,
পরে কিছু কমে যায়। পরবর্তীতে তিনি আয়াত
নাজিলের জন্য আর হিস্টিরিয়ার অপেক্ষায় বসে থাকতেন না। কৃত্রিমভাবে একটা ভাব গম্ভীর আবহ সৃষ্টি করে আয়াত নাজিল করতেন। ঠিক সেকারণেই খুব দ্রুত তিনি পাল্টা আয়াত নাজিল করতেন যেটা ওপরোক্ত হাদিস থেকে
পরিস্কার বোঝা যায়। আর একাজটা তিনি করেছেন তার মদিনার জীবনে কারণ
সেখানে তাঁর কোন কাজের ব্যপারে টু শব্দ করার কোন সাহস কেউ করত না। মক্কায় অবতীর্ণ সূরাতে এসব খুব বেশী দেখতে পাওয়া যায় না। কেননা দুর্বল মোহাম্মদ মক্কাতে এসব করলে তিনি যে একজন প্রতারক তা সবাই ধরে ফেলে
তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করত সাথে সাথেই। তাই প্রাথমিক মক্কার
জীবনে তিনি ভুলক্রমেও কখনও একাজ টি করেন নি-এটা আমার অনুমান- যে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে
পারেন। একাজটি তিনি একবারই মাত্র করেছিলেন মক্কাতে সেই বিখ্যাত শয়তানের
আয়াতের ব্যপারে আর তার পরিণাম কি হয়েছিল তা সবাই অবগত। তাঁকে এর পর পরই মদিণাতে জান নিয়ে পালাতে হয়েছিল।একজন ভাল ইসলামী পন্ডিত যিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়েছে তাকে উক্ত
হাদিসটি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম- এটা কিভাবে সম্ভব যে এত দ্রুত একই বিষয়ে সংশোধিত
আয়াত নাজিল হতে পারে ? আল্লাহ কি তাহলে প্রথমবার
অসম্পূর্ন আয়াত নাজিল করেছিল ? লোকটি চালাক,
বুঝতে পেরেছিল আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি। তাই অত ঘুর প্যাচে না গিয়ে সোজা বলল- কিভাবে কখন কোন পরিস্থিতিতে আয়াত নাজিল হয়েছিল
এটা ভেবে সময় নষ্ট না করে কোরাণে যা বলা আছে সেটা অনুসরণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। বলাই বাহুল্য ,সে লোক এ ব্যপারে আমার সাথে আর কথা বাড়ায়
নি।
************************************************************************
পর্ব -৬---মোহাম্মদ ও ইসলাম ,
কোরান ও হাদিসে ভুরি ভুরি আজগুবি,উদ্ভট ও অযৌক্তিক বিষয় থাকার পরেও এমন কি এসব ভাল ভাবে জানার
পরেও কেন একজন মানুষ ইসলাম মেনে চলে? এর বহু কারন
থাকলেও প্রধান কারন হলো দোজখের আগুনের ভয়ে। মানুষ যে আসলে বেহেস্তের
হুর পরীর লোভে খুব বেশী ধর্মপরায়ণ হয় তা ঠিক নয় , সে বরং যাতে দোজখে পড়ে আগুনে না পোড়ে, দোজখের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্যই ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে।একজন অমুসলিমকে ইসলামে আহ্বান করার জন্যেও এটা হলো সব চেয়ে ভাল দাওয়াই।দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষই এখনও কোন না কোন ধর্ম বিশ্বাস করে।ধর্ম বিশ্বাস মানেই হলো কোন এক সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাস। তখন স্বাভাবিক ভাবেই যেটা চলে আসে তা হলো- সৃষ্টি কর্তা মানব জাতিকে সৃষ্টি করে
দুনিয়াতে পাঠিয়েছে, বিভিন্ন সময় হয় সৃষ্টি কর্তা নিজে স্বয়ং
( যীশু, কৃষ্ণ, রাম এসব অবতার)এসে এদেরকে ভাল মন্দ শিক্ষা দিয়ে গেছে, অথবা সে বহু নবী পয়গম্বর ( ইব্রাহিম, মূসা,
মোহাম্মদ এসব নবী)পাঠিয়ে সেসব শিক্ষা দিয়ে গেছে। এখন ভাল কাজ করলে যদি পুরষ্কার থাকে , যেমন স্বর্গ
বা বেহেস্ত আর সেখানে হুর, পরী, অপ্সরি , মদের নহর, গেলমান এসব ; তাহলে খারাপ
কাজের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকতেই হবে। সেটা হতে পারে জ্বলন্ত
আগুনে পোড়া যা খুব বেশী প্রচলিত সব ধর্মেই। এখন দুনিয়াতে চলতে
ফিরতে গেলে মা্নুষ সব সময় ভাল কাজ করতে পারে না , জীবন জীবিকার তাড়নায় তাকে অনেক সময়ই খারাপ কাজ করতে হয় বা ধর্মীয় অনুশাসন
বা ক্রিয়া কলাপ গুলো সঠিক ভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। যার ফলাফল নির্ঘাত দোজখে আগুনে পোড়া। সে পোড়া যদি হয় অনন্ত
কাল তাহলে মানুষের মনের মধ্যে অজান্তেই একটা বিশাল ভয় ঢুকে যাবে। তখন তার যুক্তিবোধ ভোতা হতে বাধ্য।তখন সে মনে করে অত
শত চিন্তা ভাবনা করে কোন লাভ নেই, সৃষ্টি কর্তা আছে কি
নেই এটা নিয়েও গবেষণা করে কোন ফায়দা নেই, ব্যস্ত জীবনে এসব নিয়ে খোজ খবর করারও কোন সময় নেই।তার চেয়ে সোজা রাস্তা হলো ধর্মটাকে পালন করে যাওয়া যেভাবে যতটুকু পারা যায়।এখানে ইসলামের বিশেষত্বটা কি ? ইসলামের বিশেষত্বটা
হলো – মোহাম্মদ সাধারন মানুষের এ দোটানা মনোভাবকে
খুব ভালমতো বুঝতে পেরেছিলেন।বুঝতে পেরেই তিনি তার
ইসলাম ধর্মের মধ্যে এ দোজখের ভয়টাকেই সবচাইতে বেশী কাজে লাগিয়েছিলেন।অন্যান্য ধর্মে দোজখ বা নরক যন্ত্রনার কথা থাকলেও সেটা ইসলামের মত এত বেশী প্রকট
নয়।এত বেশী পরিস্কার ভাবে দোজখ বা নরকের বিবরণও অন্যান্য ধর্মে
নেই যেটা আছে ইসলাম ধর্মে।এর ফরে বিভ্রান্ত মানুষ
অনেক সময়ই ইসলামের ফাঁদে পড়ে ইসলাম গ্রহণ করে বসে।
হিন্দু ধর্মে স্বর্গ ও নরক দুটো থাকলেও একটা
উদ্ভট তত্ত্ব আছে সেখানে আর সেটা হলো জন্মান্তরবাদ।মানুষ তার কর্ম অনুযায়ী পূনরায় জন্মগ্রহণ করে, এভাবে শত শত লক্ষ লক্ষ বার জন্মও গ্রহণ করতে পারে একজন মানুষ পূর্ন পাপ স্খলন করে
স্বর্গে যাওয়ার জন্য।এই যদি হয় অবস্থা সেখানে নরকের কোন প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়
না কারন জন্মের পর জন্ম গ্রহণ করে যদি পাপ স্খলন করতে হয় তাহলে এক পর্যায়ে সবাই স্বর্গে
চলে যাবে, নরকে শাস্তি ভোগ করার সুযোগ কোথায়?
খৃষ্টাণ ধর্মে বলা হয় যীশু নিজে স্বয়ং ঈশ্বর,
তিনি তার সন্তানরূপ মানবজাতিকে এত ভালবাসেন যে তিনি মানুষরূপে(যীশু)
জন্মগ্রহণ করে দুনিয়ার সেসব মানুষের পাপ গ্রহণ করে চলে গেছেন সেই দুই হাজার বছর আগে,
যেসব মানুষ যীশুকে তাদের রক্ষাকর্তা রূপে গ্রহন করেছে বা করবে। এক্ষেত্রে যারা তাকে রক্ষাকর্তা রূপে গ্রহণ করে নি তাদের জন্য নরক যন্ত্রনার একটা
ব্যবস্থা থাকাটা বেশ যুক্তি যুক্ত।খৃষ্টান ধর্মে নরকের
ধারনা এসেছে অবশ্যই তার আগের ধর্ম ইহুদি থেকে। তৌরাত কিতাব থেকে কিছু ধারনা পাওয়া যায় , যেমন-
তার সমস্ত পূত্র কন্যারা তাকে সান্তনা দিতে এগিয়ে এলেও তিনি কোন সান্তনা পেলেন
না, তিনি বললেন –না, আমি শোক করতে করতে আমার সন্তানের কাছে পাতালে নেমে যেতে চাই।জেনেসিস-৩৭:৩৫
কিন্তু প্রভূ যদি অঘটন ঘটান আর ভূমি যদি হা করে এদের ও এদের সবকিছুকে গ্রাস
করে ফেলে তবে এরা জীবন্তই পাতালে নেমে যায় আর তখন বুঝতে পারবে এরা প্রভূকে অবজ্ঞা
করেছে।মোশী একথা শেষ করা মাত্র তাদের পায়ের নীচ থেকে মাটি তলিয়ে
গেল।আর ভূমি তার নিজের মুখ হা করে তাদের, তাদের পরিবারের সকলকে ও কোরার পক্ষের সকল লোককে এবং তাদের সম্পত্তি গ্রাস করে ফেলল।নাম্বারস(গণনাপুস্তক)-১৬: ৩০-৩৩
বলা বাহুল্য পাতাল এখানে মোটেও কোন স্বর্গ
নয়।স্বর্গ হলে প্রভু তাকে অবজ্ঞাকারীদেরকে সেখানে পাঠাত না।সুতরাং এটা নরককেই বোঝাচ্ছে। এখন এই পাতাল নামক
নরকে কি আগুন আছে নাকি অন্য কোন শাস্তির ব্যবস্থা সেখানে আছে সেটা পরিস্কার নয়,
তবে সেটা যে কোন মহা যন্ত্রনাদায়ক স্থান সে বিষয়ে কোন সন্দেহ
নেই।
বাইবেল কিতাবে পাতাল হিসাবে আখ্যায়িত হলেও
নতুন নিয়ম তথা গসপেলে দেখা যাচ্ছে এটাকে নরক বলা হচ্ছে , যেমন:
যারা দেহকে মেরে ফেলতে পারে কিন্তু আত্মাকে মেরে ফেলতে পারে না তাদেরকে ভয়
করো না, বরং যিনি দেহ ও আত্মা দুটোকেই নরকে বিনাশ
করতে পারেন তাকে ভয় কর। (মথি-১০:২৮)
তোমার হাত যদি তোমার পদস্খলনের কারন হয় তবে তা কেটে ফেল, দুটো হাত নিয়ে নরকে সেই অনির্বান আগুনে যাওয়ার চেয়ে বরং নুলো
হয়ে জীবনে প্রবেশ করাই তোমার পক্ষে মঙ্গল। (মার্ক-৯:৪৩)
এ বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নরকে আগুন আছে
আর তা অনির্বান তথা কখনো নেভে না আর পাপীদেরকে সে অনির্বান আগুনে অনন্তকাল পোড়ানো
হবে। এ থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে, মোহাম্মদ মূলত: বাইবেলের নতুন নিয়ম থেকেই তার অগ্নিময় দোজখের ধারনা আমদানি করেন।
যদি খেয়াল করা হয় তবে দেখা যাবে তৌরাত কিতাব
বা গসপেল কোথাও বারংবার মানুষকে নরকের আগুনের ভয় দেখানো হয় নি।কদাচিৎ নরকের আগুনের
ভয় দেখানো হয়েছে। তবে দোদুল্যমান মানুষকে ধর্মের পথে টানার
জন্য নরক বা দোজখের আগুনের ভয় দেখানো বলা বাহুল্য একটা কার্যকর মারাত্মক দাওয়াই।বিশেষ করে সেই প্রাচীন যুগে যখন মানুষের জ্ঞান ছিল সীমিত।এমনকি বর্তমানের এই বিজ্ঞানের যুগেও দোজখের আগুনের ভয় মানুষকে দারুনভাবে তাড়া
করে ফেরে। তার প্রমান হলো ইসলাম ও দোজখের ভয়ে সদা কম্পমান মুমিন মুসলমানরা।তাই দেখা যায় মুমিন বান্দারা যতটা না বেহেস্তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে তার চেয়ে
বেশী ভয় পায় দোজখের আগুনে যাতে পুড়ে মরতে না হয়।এখন দেখা যাক কি ভাবে ও কত প্রকারে মোহাম্মদ এ ধরনের একটা অলীক দোজখের ভয় দেখিয়ে
মানুষকে তার দলে ভিড়িয়েছিলেন।
আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস
পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অনন্তকাল সেখানে থাকবে।২:৩৯
এরাই পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে। অতএব এদের শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্যও পাবে না।২:৮৬
যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রি করেছে, তা খুবই মন্দ; যেহেতু তারা আল্লাহ যা নযিল করেছেন,
তা অস্বীকার করেছে এই হঠকারিতার দরুন যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ নাযিল
করেন। অতএব, তারা ক্রোধের উপর ক্রোধ
অর্জন করেছে। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।২:৯০
এরা চিরকাল এ লা’নতের মাঝেই থাকবে। তাদের উপর থেকে আযাব কখনও হালকা করা হবে না বরং এরা বিরাম ও পাবে না।২:১৬২
কাফেরদিগকে বলে দিন, খুব শিগগীরই তোমরা
পরাভূত হয়ে দোযখের দিকে হাঁকিয়ে নীত হবে-সেটা কতই না নিকৃষ্টতম অবস্থান।৩:১২
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।৩:৮৫
হে আমাদের পালনকর্তা! নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে নিক্ষেপ করলে তাকে সবসময়ে অপমানিত
করলে; আর জালেমদের জন্যে তো সাহায্যকারী নেই।৩:১৯২
এবং তোমরা সে আগুন থেকে বেঁচে থাক, যা কাফেরদের
জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।৩:১৩১
আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ
করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত
হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায়
মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত
করে রেখেছি।৪:১৮
অতঃপর তাদের কেউ তাকে মান্য করেছে আবার কেউ তার কাছ থেকে দূরে সরে রয়েছে। বস্তুতঃ (তাদের জন্য) দোযখের শিখায়িত আগুনই যথেষ্ট।এতে সন্দেহ নেই যে, আমার নিদর্শন সমুহের
প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে
আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে,
তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী।৪:৫৫-৫৬
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত
করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।৪:৯৩
তাদের বাসস্থান জাহান্নাম। তারা সেখান থেকে কোথাও
পালাবার জায়গা পাবে না। ৪:১২১
আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের
প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে
চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।৪:১৪০
প্রকৃতপক্ষে এরাই সত্য প্রত্যাখ্যাকারী। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছি অপমানজনক আযাব।৪:১৫১
আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত,
অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে,
তারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক
আযাব।৪:১৬১
তারা দোযখের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে কিন্তু তা থেকে বের হতে পারবে না। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে।৫:৩৭
যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলবে এবং তা থেকে অহংকার করবে, তারাই দোযখী এবং তথায় চিরকাল থাকবে।৭:৩৬
আল্লাহ বলবেনঃ তোমাদের পূর্বে জিন ও মানবের যেসব সম্প্রদায় চলে গেছে,
তাদের সাথে তোমরাও দোযখে যাও। যখন এক সম্প্রদায় প্রবেশ করবে; তখন অন্য সম্প্রদায়কে
অভিসম্পাত করবে। এমনকি, যখন তাতে সবাই পতিত হবে, তখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের
সম্পর্কে বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক এরাই আমাদেরকে বিপথগামী করেছিল। অতএব, আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন। আল্লাহ বলবেন প্রত্যেকেরই দ্বিগুণ; তোমরা জান না।৭:৩৮
পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবেঃ তাহলে আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই
অতএব, শাস্তি আস্বাদন কর স্বীয় কর্মের কারণে।৭:৩৯
নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছে,
তাদের জন্যে আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে
প্রবেশ করবে না। যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ
করে। আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি।৭:৪০
তাদের জন্যে নরকাগ্নির শয্যা রয়েছে এবং উপর থেকে চাদর। আমি এমনিভাবে জালেমদেরকে শাস্তি প্রদান করি।৭:৪১
তারা কি একথা জেনে নেয়নি যে, আল্লাহর সাথে
এবং তাঁর রসূলের সাথে যে মোকাবেলা করে তার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে দোযখ; তাতে সব সময় থাকবে। এটিই হল মহা-অপমান।৯:৬৩
ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার
পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইও,
তবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণ, তারা ছিল গোনাহগার।৯:৬৬
ওয়াদা করেছেন আল্লাহ, মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক
নারীদের এবং কাফেরদের জন্যে দোযখের আগুনের-তাতে পড়ে থাকবে সর্বদা। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের প্রতি
অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আযাব।৯:৬৮
হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের
সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ
এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।৯:৭৩
তারা কসম খায় যে, আমরা বলিনি,
অথচ নিঃসন্দেহে তারা বলেছে কুফরী বাক্য এবং মুসলমান হবার পর
অস্বীকৃতিজ্ঞাপনকারী হয়েছে। আর তারা কামনা করেছিল
এমন বস্তুর যা তারা প্রাপ্ত হয়নি। আর এসব তারই পরিণতি
ছিল যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাদেরকে সম্পদশালী করে
দিয়েছিলেন নিজের অনুগ্রহের মাধ্যমে। বস্তুতঃ এরা যদি তওবা
করে নেয়, তবে তাদের জন্য মঙ্গল। আর যদি তা না মানে, তবে তাদের কে আযাব
দেবেন আল্লাহ তা’আলা, বেদনাদায়ক আযাব দুনিয়া ও আখেরাতে। অতএব, বিশ্বচরাচরে তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী-সমর্থক নেই।৯:৭৪
সে সমস্ত লোক যারা ভৎর্সনা-বিদ্রূপ করে সেসব মুসলমানদের প্রতি যারা মন খুলে দান-খয়রাত
করে এবং তাদের প্রতি যাদের কিছুই নেই শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমলব্দ বস্তু ছাড়া। অতঃপর তাদের প্রতি ঠাট্টা করে। আল্লাহ তাদের প্রতি
ঠাট্টা করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।৯:৭৯
পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে
আনন্দ লাভ করেছে; আর জান ও মালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ
করতে অপছন্দ করেছে এবং বলেছে, এই গরমের মধ্যে অভিযানে
বের হয়ো না। বলে দাও, উত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম। যদি তাদের বিবেচনা
শক্তি থাকত।৯:৮১
আর ছলনাকারী বেদুঈন লোকেরা এলো, যাতে তাদের
অব্যাহতি লাভ হতে পারে এবং নিবৃত্ত থাকতে পারে তাদেরই যারা আল্লাহ ও রসূলের সাথে মিথ্যা
বলে ছিল। এবার তাদের উপর শীগ্রই আসবে বেদনাদায়ক আযাব যারা কাফের।৯:৯০
এখন তারা তোমার সামনে আল্লাহর কসম খাবে, যখন তুমি তাদের কাছে ফিরে যাবে, যেন তুমি তাদের
ক্ষমা করে দাও। সুতরাং তুমি তাদের ক্ষমা কর-নিঃসন্দেহে এরা
অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের বদলা হিসাবে তাদের ঠিকানা হলো দোযখ।৯:৯৫
আর কিছু কিছু তোমার আশ-পাশের মুনাফেক এবং কিছু লোক মদীনাবাসী কঠোর মুনাফেকীতে
অনঢ়। তুমি তাদের জান না; আমি তাদের জানি। আমি তাদেরকে আযাব দান করব দু’বার, তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে মহান আযাবের দিকে। ৯:১০১
যে ব্যাক্তি স্বীয় গৃহের ভিত্তি রেখেছে কোন গর্তের কিনারায় যা ধ্বসে পড়ার
নিকটবর্তী এবং অতঃপর তা ওকে নিয়ে দোযখের আগুনে পতিত হয়। আর আল্লাহ জালেমদের পথ দেখান না।৯:১০৯
তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে তোমাদের সবাইকে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, তিনিই সৃষ্টি করেন
প্রথমবার আবার পুনর্বার তৈরী করবেন তাদেরকে বদলা দেয়ার জন্য যারা ঈমান এনেছে এবং নেক
কাজ করেছে ইনসাফের সাথে। আর যারা কাফের হয়েছে,
তাদের পান করতে হবে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করতে হবে যন্ত্রনাদায়ক
আযাব এ জন্যে যে, তারা কুফরী করছিল।১০:০৪
মন লোকদের ঠিকানা হল আগুন সেসবের বদলা হিসাবে যা তারা অর্জন করছিল।১০:৮
অবশ্য তোমাদের পূর্বে বহু দলকে ধ্বংস করে দিয়েছি, তখন তারা জালেম হয়ে গেছে। অথচ রসূল তাদের কাছেও
এসব বিষয়ের প্রকৃষ্ট নির্দেশ নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তারা ঈমান আনল না। এমনিভাবে আমি শাস্তি
দিয়ে থাকি পাপি সম্প্রদায়কে।১০:১৩
আর যারা সঞ্চয় করেছে অকল্যাণ অসৎ কর্মের বদলায় সে পরিমাণ অপমান তাদের চেহারাকে আবৃত করে ফেলবে। কেউ নেই তাদেরকে বাঁচাতে পারে আল্লাহর হাত থেকে। তাদের মুখমন্ডল যেন ঢেকে দেয়া হয়েছে আধাঁর রাতের টুকরো দিয়ে। এরা হল দোযখবাসী। এরা এতেই থাকবে অনন্তকাল।১০:২৭
পূরো কোরান থেকে এভাবে শত শত আয়াত দেখানো
যাবে যার মাধ্যমে মোহাম্মদ তার অনুসারী ও তাকে অবিশ্বাসকারী মানুষদেরকে ক্রমাগত ভয়
দেখিয়েছেন দোজখ ও তার আগুনের।মূল বক্তব্য হলো-
তোমরা আমাকে নবী মান, আমি যা বলি তাই শোন, না হলে তোমাদেরকে দোজখে পোড়ান হবে।
শুধু কোরান নয়, হাদিসেও আছে এরকম ভূরি ভূরি উদাহরন।এবার সেগুলোকে একটু
দেখা যাক-
ইবনে আব্বাস বর্ণিত – নবী বলেছিলেন, “আমাকে দেখানো
হয়েছিল দোজখের অধিকাংশ অধিবাসী হলো নারী যারা অকৃতজ্ঞ ছিল”। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, “তারা কি আল্লাহকে অবিশ্বাস
করে?” (বা আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ?)।তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “তারা তাদের স্বামীর
প্রতি অকৃতজ্ঞ এবং তাদের যে সুবিধাদি দেয়া হয় তা তার জন্য তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে
না।যদি তুমি তাদেরকে সব সময় নানা রকম সুবিধা প্রদান কর এবং কোন
এক সময় তারা ভিন্ন কিছু দেখে যা তাদের পছন্দ নয়, তখন তারা বলবে- আমি তোমার কাছ থেকে কখনই ভাল কিছু পাই নি”। সহি বুখারি, ভলুম-১. বই-২, হাদিস-২৯
আাবু সাইদ খুদরি বর্ণিত- একদা আল্লাহর নবী
ঈদ উল আজহা বা ঈদ উল ফিতর এর নামাজ পড়ার জন্য বের হলেন। পথে তিনি কিছু নারীদেরকে যেতে দেখলেন ও বললেন-“ ওহে নারীরা, দান কর, কারন আমি দেখেছি দোজখের অধিকাংশ অধিবাসী হলো নারী তারা আগুনে পুড়ছে”। তারা জিজ্ঞেস করল-“ হে আল্লাহর নবী কেন
তা?” তিনি উত্তর দিলেন- “তোমরা সব সময়ই তোমাদের
স্বামীদেরকে অভিশাপ দাও আর তাদের প্রতি অকৃতজ্ঞ। আমি তোমাদের মত কম বুদ্ধি সম্পন্ন ও ধার্মিক আর কাউকে দেখিনি। একজন অতি সতর্ক মানুষও তোমাদের জন্য বিপথে যেতে পারে”। তারা জিজ্ঞেস করল- “হে আল্লাহর নবী,
বুদ্ধি ও ধর্মে আমাদের যে ঘাটতি আছে সেটা কিরকম?” তিনি বললেন- “এটা কি ঠিক
নয় যে একজন পুরুষের সাক্ষী হলো দুইজন নারীর সমান( সূরা বাকারা,২:২৮২)?” তারা হ্যা সূচক উত্তর
দিল। তখন নবী বললেন- “এটাই তোমাদের
বুদ্ধির ঘাটতি। এটা কি ঠিক নয় যে তোমাদের মাসিক রজ:স্রাবের
সময় নামাজ বা রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে?” স্ত্রীলোকগুলো হ্যা সূচক উত্তর দিল। তিনি বললেন- “এটাই তোমাদের ধর্ম জ্ঞানের ঘাটতি”। (বুখারি, ভলুম-১, বই-৬, হাদিস নং-৩০১)
উসামা বর্ণিত-নবী বলেছিলেন, “আমি বেহেস্তের দরজায় দাড়ালাম এবং দেখলাম যে যারা তাতে প্রবেশ
করল তাদের অধিকাংশই গরিব, যখন ধনীরা তাতে প্রবেশ
করতে গেল তাদেরকে গেটে থামান হলো। তখন আমি দোজখের গেটে
দাড়ালাম এবং দেখলাম তাতে যারা প্রবেশ করল তাদের অধিকাংশ নারী”। (বুখারি, ভলুম-৭, বই-৬২, হাদিস-১২৪)
হুবহু এ ধরনের আরও বহু হাদিস আছে।
আবু সাইদ খুদরি বর্ণিত- ….নব তখন বললেন, “একজন ঘোষণা
করবে, ‘যারা যার যার উপাসনা করতে তারা এক এক কাতারে
দাড়াও’। সুতরাং যারা ক্রুশের উপাসনা করত তারা ক্রুশের কাছে যাবে ,
যারা পুতুলের পুজো করত তারা তাদের পুতুলের কাছে যাবে,
যারা বিভিন্ন দেব দেবীর উপাসনা করত তারা তাদের স্ব স্ব দেব দেবীদের
কাছে যাবে।অত:পর যারা এক আল্লাহর উপাসনা করত ও কিছু আহলে কিতাবীরা ( ইহুদি
ও খৃষ্টান) বাকী থেকে যাবে। অত:পর তাদেরকে কাছে
দোজখ উপস্থিৎ হবে যেন তার
ছিল একটা ছায়া মাত্র। তারপর ইহুদিদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে “তোমরা কিসের উপাসনা করতে?’ তারা উত্তর দিবে, ‘আমরা এজরা যিনি ছিলেন
আল্লাহর পূত্র তার উপাসনা করতাম’।তাদেরকে বলা হবে,
‘তোমরা হলে মিথ্যাবাদি, কারন আল্লাহর কোন পূত্র বা স্ত্রী নেই। এখন তোমরা কি চাও ?
তারা উত্তর দিবে- ‘আমাদেরকে কিছু
পানি দাও’।
তখন তাদেরকে বলা হবে, ‘পান কর’ এবং তাদেরকে দোজখে ফেলে দেয়া হবে। এর পরে খৃষ্টানদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, ‘তোমরা কার উপাসনা করতে? তারা উত্তর দিবে ,
‘ আমরা আল্লার পূত্র মেশিয়ার উপাসনা করতাম’। তখন তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমরা মিথ্যাবাদি,
আল্লাহর কোন পূত্র বা স্ত্রী নেই’। এখন তোমরা কি চাও? তারা বলবে –‘
আমরা পানি পান করতে চাই’। তাদেরকে বলা হবে – ‘পান কর’ এবং এই বলে তাদেরকে দোজখে ফেলে দেয়া হবে।তখন শুধুমাত্র যারা আল্লাহর উপাসনা করত ও তার প্রতি বাধ্য ছিল তারাই বাকী থাকবে………”। (বুখারি, ভলুম-৯, বই-৯৩, হাদিস-৪৩২)
আন নুমান বর্ণিত- আমি নবীকে বলতে শুনেছি,
“যাকে দোজখে সব চাইতে কম শাস্তি দেয়া হবে তার শুধুমাত্র পায়ের
পাতা দোজখে থাকবে কিন্তু তাতেই তার মাথার ঘিলু টগ বগ করে ফুটতে থাকবে”। (বুখারি, ভলুম-৮, বই-৭৬, হাদিস-৫৬৬)
এর পরেও কারও যদি ইসলামি দোজখ সম্পর্কে আরও
বেশী জানার আগ্রহ থাকে , তিনি কামরান মির্জার
নিবন্ধ ভয়ংকর ইসলামি দোজখে যেতে পারেন।
এরকম হুবহু এক রকম হাদিস আছে বুখারি,
মুসলিম, আবু দাউদ সহ সকল হাদিস
বইয়ে।আর সেখানে বলা আছে রোম হর্ষক দোজখ ও তার আগুনের বিবরণী। সেসব দেখলে বোঝা যায় , মোহাম্মদ নিজের কল্পনাকে
আশ্রয় করে দোজখের চিত্র এঁকেছেন।এসব বর্ণনা কখন দিয়েছেন
প্রায় অজ্ঞ ও নিরক্ষর মানুষের সামনে? সেই ১৪০০ বছর
আগের মূর্খ গোয়ার একগুয়ে উগ্র দেশ প্রেমিক আরবদের কাছে, যারা ছিল মূলত: খুব গরিব ও যাদের জীবন যাত্রা ছিল খুব কঠোর।এখনো এ সমাজে উদ্ভট গল্প ও কিচ্ছা বিশ্বাস করার লোকের অভাব নেই, তারা ভূত পেত্নি জ্বীন পরী ইত্যাদিতে বিশ্বাস করে।কিছুকাল আগেও গ্রাম গঞ্জে মানুষকে হর হামেশাই ভুতে ধরত, পরে ওঝা ডেকে ভুত তাড়াতে হতো। এ যদি হয় বর্তমান
কালের অবস্থা সেই ১৪০০ বছর আগেকার অবস্থাটা সহজেই বোধ গম্য। প্রশ্ন হলো – এত কিছুর পরেও মোহাম্মদকে কেন কুরাইশদেরকে
দলে টানতে এত বেগ পেতে হলো?
প্রথম কারন হলো – কেউ সাধারণত অত সহজে তার নিজের বিশ্বাসটাকে ত্যাগ করতে চায় না তা সেটা যতই আজগুবি
হোক না কেন।মানুষ গোষ্ঠিবদ্ধ জীব, কেউ সহসা তার ধর্মীয় বিশ্বাসটাকে ত্যাগ করে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। তাছাড়া প্রত্যেকেই মনে করে তার ধর্মীয় বিশ্বাস হলো সেরা।কুরাইশরাও সেটাই মনে করত।
দ্বিতীয়ত:কুরাইশরা যে মোহাম্মদকে নবী হিসাবে
বিশ্বাস করে তার ইসলাম গ্রহন করতে রাজী হয় নি তার কারন হলো তারা মোহাম্মদকে ভাল করেই
চিনত ও জানত।বাল্য কাল থেকে তার মধ্যে এমন কোন গুণপনা দেখা যায় নি যে হঠাৎ করে নিজেকে নবী হিসাবে
দাবী করলেই তাকে বিশ্বাস করতে হবে।
তৃতীয়ত: তৎকালীন আরব সমাজে কতকগুলো
রীতি ছিল। শৌর্য বীর্যের একটা মহান মর্যাদা ছিল সে সমাজে।বাল্য কাল থেকে মোহাম্মদ এমন কোন শৌর্য বীর্যের পরিচয় দেন নি যে তাকে নবী হিসাবে
মেনে তার কথা শুনে চলতে হবে।
চতুর্থত: মোহাম্মদ বাল্যে তার দাদা মুত্তালিব
ও পরে যৌবনে আবু তালিবের অধীনে থাকতেন ও আবু তালিবের উট দুম্বা চরাতেন। এতীম নি:স্ব মানুষকে সে সমাজের মানুষ করুনার দৃষ্টি দিয়ে দেখলেও তাকে নেতা মানার
মত মানসিকতা কুরাইশদের ছিল না।
পঞ্চমত: মোহাম্মদের সত্যিকার অর্থেই কোন মর্যাদা
ছিল না, কারন ২৫ বছর বয়েসে ৪০ বছরের ধনী খাদিজাকে
বিয়ে করা ও তার পর স্ত্রীর অর্থে বসে জীবন যাপন করাটা সেই আরবী সমাজে ছিল ভীষণ রকম
অসম্মানজনক একট ঘটনা। স্ত্রীর ওপর নির্ভরশীল মানুষকে ভীষণ রকম হীন
দৃষ্টি দিয়ে দেখা হতো সে সমাজে।এরকম একটা চাল চুলোহীন
ও মর্যাদাহীন মানুষকে নবী হিসাবে মেনে নেয়া ছিল ভীষণ রকম আত্মরম্ভী, উদ্ধত কুরাইশদের কল্পনার বাইরে।তখনকার যে সব কুরাইশ নেতাদের কথা জানা যায় যেমন- আবু লাহাব, আবু জেহেল, আবু সুফিয়ান এরা ছিল
যেমন তেজস্বী তেমনি আত্মমর্যাদাশীল।তারা ছিল সেই সমাজের
দন্ড মুন্ডের কর্তা।
এ পঞ্চম কারন থেকে বোঝা যায় যে কেন মোহাম্মদ
খাদিজাকে বিয়ে করার পর প্রায় একাকি হয়ে পড়েছিলেন যে কারনে তিনি প্রায়ই নির্জন
বাস করতেন।
স্ত্রীর ওপর বসে খাওয়া মর্যাদাহীন একটা মানুষকে কেউ সে সমাজে
পাত্তা দিত না, তার কথা কেউ কানে দিত না।শৈশবেই পিতা মাতা হারা মোহাম্মদ এমনিতেই পিতা মাতার আদর ভালবাসাহীন পরিবেশে বেড়ে
উঠে মানসিক ভাবে হয়ে উঠেছিলেন যেমন হতাশাগ্রস্ত, তেমনি এক রোখা।বিয়ের আগে আবু তালিবের বাড়িতে থাকা অবস্থায় তিনি সমাজে কোন
মতে মেলা মেশা করতে পারতেন , কারন আবু তালিবও ছিলেন
সে সমাজে একজন সম্ভ্রান্ত নেতা। বিয়ের পর একেবারেই
একা হয়ে যান মোহাম্মদ। যা তার হতাশাগ্রস্থ মানসে বিশাল প্রভাব ফেলে।প্রায়ই একাকি নির্জন বাস করতে থাকেন। নির্জনে কাটানো একজন
হতাশাগ্রস্থ মানুষের মনে নানা রকম চিন্তা ভাবনা, কল্পনা উকি ঝুকি দিতে থাকে। এ থেকেই তার সৃষ্টি
হয় দৃষ্টি বিভ্রম তথা হ্যালুসিনেশন সমস্যা। হেরা গুহায় নির্জন
বাস বা ধ্যান করার সময় মোহাম্মদ সেই দৃষ্টি বিভ্রমে আক্রান্ত হন যা সেই বিখ্যাত জিব্রাইল
ফিরিস্তা দর্শনের ঘটনা ও প্রথম ওহী নাজিলের ঘটনা হিসাবে প্রচারিত।২৫ বছর থেকে ৪০ বছর। ১৫ বছর সময় বেশ লম্বা
সময় একজন মানুষের জীবনে। এই ১৫ বছর ধরে মোহাম্মদ
বহু চিন্তা ভাবনা কল্পনা করেছেন আর তার পরেই তার অলীক দর্শনের গল্প মানুষের কাছে প্রচার
করা শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে তিনি ভাল মতো জেনে গেছেন তৌরাত,
গসপেলের গল্প। কারন তিনি তার চাচা
আবু তালিবের সাথে বেশ কয়বার বানিজ্য উপলক্ষ্যে সিরিয়া গমন করেন, সিরিয়াতে বসবাস করত খৃষ্টান ও ইহুদিরা। সেখানে অবস্থান উপলক্ষ্যে মোহাম্মদ তাদের সাথে মেলা মেশা করে তাদের ধর্মীয় কাহিনীগুলি
ভালই রপ্ত করেন। এখন অনেকে কোরানের ঐশ্বরিকতা প্রমান করতে
যেয়ে প্রশ্ন তোলেন- নিরক্ষর মোহাম্মদের পক্ষে কিভাবে তৌরাত ও গসপেলের কাহিনী কোরানে
বলা সম্ভব ছিল? তারা ভুলে যায় বা গোপন করে যায় যে ,
মোহাম্মদ তার কোরানের বানী প্রচার শুরু করেন যখন তার বয়স ৪০
আর তার আগে তিনি ইহুদি খৃষ্টানদের সাথে মেলা মেশা করে তাদের কাহিনী গুলো ভাল মতো জেনে
নিয়েছিলেন। তবে যেহেতু শুনে শুনে সব হুবহু মুখস্ত করা
সম্ভব হয় না, বলার সময় অনেক কিছুই এলোমেলো হয়ে যায়,তাই তার কোরানে তার কথিত তৌরাতের কাহিনীগুলো বেশ উদ্ভট ও জগাখিচুড়ি
মার্কা যার সাথে তৌরাতের কাহিনীর অনেক অমিল পরিলক্ষিত হয়। যেমন যীশুর মাতা মরিয়মকে তিনি যীশুর প্রায় এক হাজার বছর আগে আসা মুসা নবীর বোন
ইমরান কন্যা মরিয়ম বলে বর্ণনা করেছেন। যীশুকে নিয়ে যখন মরিয়ম
তার আত্মীয় স্বজনের কাছে যায় তখন তার আত্মীয় স্বজনরা সন্দেহজনক প্রশ্ন করলে সদ্য
জাত যীশু নিজেই প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মত কথা বলে ওঠেন। বলা বাহুল্য এসব কাহিনীর সাথে তৌরাত বা ইঞ্জিল কিতাবের কোন মিল নেই। এসব নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হয়, বলা হয় –
এসব কিতাব নাকি বিকৃত। হাস্যকর যুক্তি। নিজে বিকৃত বা ভুল কাহিনী প্রচার করে পরে
জোর করে বলা হচ্ছে অন্যদের কিতাব বিকৃত।মরিয়ম কার কন্যা ছিল
বা যীশু সদ্যজাত অবস্থায় কথা বলেছিল কি না এসব তথ্য বিকৃত করলে তৌরাত বা ইঞ্জিলের
কি লাভ? কোন লাভ নেই। লাভ ছাড়া কেউ কি কিতাব বিকৃত করে? বিশ্বাসী ব্যক্তিরা
কখনই তাদের কিতাব বিকৃত করে না যদি তারা সেই কিতাবকে ঐশ্বরিক প্রাপ্ত জ্ঞান করে। কারন তা হলে তো তারা পাপী হয়ে গেল। পাপের ভয় কে না পায়
? সাধ করে কি পাপ করে কেউ নরকের আগুনে পুড়তে চায় ? সুতরাং কোন বিশ্বাসী মানুষ সচেতন ভাবে কখনই তাদের কিতাব বিকৃত
করে না। তবে যেটা হতে পারে, কিতাবের কিছু
অংশ সংরক্ষন করতে ব্যর্থ হলে বা হারিয়ে গেলে তার স্থলে কিছু মনগড়া কাহিনী লিখতে পারে
তবে তা কিতাবের মূল সূরকে কখনই বিকৃত করবে না। বরং তাকে আরও মহিমান্বিত করার জন্যই তা করবে।
মোহাম্মদ মক্কাতে দোজখের আগুনের ভয় দেখিয়েও
তেমন সুবিধা করতে না পেরে অবশেষে মদিনায় পাড়ি জমান ও সেখানে নানা কায়দায় ক্ষমতা
দখল করেন।আর তখন থেকে তার ইসলাম প্রচার শুরু হয় তিন কায়দায়,
দোজখের ভয় দেখানো, বেহেস্তের হুর
পরীর লোভ দেখানো ও পরিশেষে কোনটাতে কাজ না হলে তার দলবল নিয়ে বিভিন্ন গোষ্টিতে আক্রমন
ও তাদেরকে ছারখার করে দেয়া অর্থাৎ ভীতির মাধ্যমে ইসলাম প্রচার।মূলত: এই শেষ পদ্ধতির মাধ্যমেই মোহাম্মদ সব চাইতে বেশী সফল।ধর্ম প্রচারক মোহাম্মদের চাইতে শাসক হিসাবে মোহাম্মদের সাফল্য অনেক বেশী।যদি ভালমতো গবেষণা করা যায় তাহলে দেখা যাবে মদিনাতে মোহাম্মদের ইসলাম প্রচারে
সাফল্য ছিল মূলত: অন্যদের সম্পদ লুট পাট ও তা গণিমতের মাল হিসাবে ভাগ বাটোয়ারা করে
নেয়ার মাঝে।মানুষ যে আসলে তার কোরানের বানী শুনে বা ইসলামের মাহাত্ম দেখে
ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তা গ্রহণ করত সেটা মোটেও সঠিক নয়। যদি ইতিহাসের দিকে তাকানো যায় তাহলে দেখা যাবে, মোহাম্মদ তার দল বল সহ মদিনায় যাওয়ার পর সেখানে তাদের বেচে থাকার কোন পেশা ছিল
না।গরিব মদিনাবাসীদের পক্ষে মোহাম্মদ ও তার দলবল কে বেশীদিন মেহমানদারী
করাও সম্ভব ছিল না। ফলে তাদেরকে মদিনার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া
মক্কাবাসীর বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করা ছাড়া কোন গতি ছিল না, আর এসব কাজেই মূলত: মক্কাবাসীরা ছিল ওস্তাদ।তাহলে গতি ধারা অনুযায়ী বোঝা যায় যে, মদিনায় যাওয়ার পর পরই যে সূরা নাজিল হয়েছিল তাতে লুটের মাল বৈধ হওয়ার বিধান
থাকবে। এবং সত্যিই তাই। তালিকা অনুযায়ী দেখা
যায় ,বাকারা হলো মাদানী সূরা কিন্তু এর দুই তৃতীয়াংশই
নাজিল হয়েছিল মক্কাতে। আর এর পরেই নাজিল হয় সূরা আনফাল।
আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি
শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে
যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন।সূরা আনফাল ৮:৩৯
আর তারা যদি না মানে, তবে জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের
সমর্থক; এবং কতই না চমৎকার সাহায্যকারী। সূরা আনফাল ৮:৪০
আর এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে,
তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায়
ও মুসাফিরদের জন্য; যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং
সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল।সূরা আনফাল ৮:৪১
আল্লাহ বলছে যতক্ষন ভ্রান্তির শেষ না হয়
অর্থাৎ তারা ইসলাম
কবুল না করে বা মোহাম্মদের দলে না ভেড়ে ততক্ষন পর্যন্ত যুদ্ধ করতে হবে।যুদ্ধে যদি জয়লাভ হয়ে থাকে তা হলে তা আল্লাহর সমর্থনে হয়েছে, আর সেকারনে যুদ্ধ লব্ধ দ্রব্য সামগ্রীতে আল্লাহরও কিছু হক রয়েছে। তাই তা থেকে এক পঞ্চমাংশ হলো আল্লাহ, তার রসুল মোহাম্মদ
ও তার আত্মীয় স্বজন এবং অসহায় মুসাফিরদের জন্য।মোহাম্মদ যে কত চালাক লোক ছিলেন তার প্রমান মেলে উক্ত ৮: ৪১ এর শেষ অংশ এতীম-অসহায়
ও মুসাফিরদের জন্য থেকে। প্রথমে বলছে আল্লাহর
জন্য গণিমতের মাল দরকার, তার পর বলছে মোহাম্মদের
দরকার, তারপর বলছে তার নিকট আত্মীয় স্বজনের জন্য
দরকার। আল্লাহ তো আর গণিমতের মাল ভোগ করতে দুনিয়াতে আসবে না,
সে তো তার সাত আসমানের ওপর আরশে বসে আছে মহা আরামে,তার তো কোন গণিমতের মাল দরকার নেই, তার অর্থ আল্লাহর নামের অংশটুকুও যাবে মোহাম্মদের ভাগে।প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে মোহাম্মদ তো আল্লাহর নামে গণিমতের মাল দাবী না করলেও তো
পারতেন।আল্লাহর নাম করার অর্থই হলো লোকজন যেন ভয়ে তাড়াতাড়ি সেই এক
পঞ্চমাংশ দিয়ে দেয়, না দিলেই গুনাহ আর তার শাস্তি হলো দোজখে আগুনে
পুড়ে শাস্তি ভোগ করা। যুদ্ধে যেতে না পারা মোহাম্মদের আত্মীয় স্বজন
কারা? তার বহু সংখ্যক স্ত্রী ও আরও কিছু আত্মীয়
স্বজন যারা তার সাথে মদিনায় হিজরত করেছিল যাদের অধিকাংশ ছিল নারী তাদের জীবন কেমনে
চলবে তাই তাদের জন্যও গণিমতের মাল দরকার। এখন গণিমতের মালের
সকল অংশই যদি মোহাম্মদের দখলে যায়, তা হলে তা দেখতে
খারাপ দেখায় এজন্যই এটাকে একটু জনকল্যাণমূলক দেখানোর জন্যই বলা হচ্ছে শেষে যে এ গণিমতের
মালের কিছু অংশ এতিম, অসহায় ও মুসাফিরদের জন্যও নির্ধারিত। গণিমতের মাল না দিয়ে কোন মুসলমান যাতে উল্টা পাল্টা বা টাল বাহানা করতে না পারে
বা আত্মস্যাত করতে না পারে, কোরানে সেকারনে বার
বার এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যেমন-
আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, গনীমতের হুকুম। বলে দিন, গণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা
সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য কর,
যদি ঈমানদার হয়ে থাক।সূরা আনফাল ৮:০১
সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন
ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে
থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।সূরা আনফাল ৮:৬৯
এবং বিপুল পরিমাণে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ,
যা তারা লাভ করবে। আল্লাহ পরাক্রমশালী,
প্রজ্ঞাময়। সূরা আল ফাতাহ ৪৮:১৯
আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ
সম্পদের ওয়াদা দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্যে ত্বরান্বিত করবেন। তিনি তোমাদের থেকে শত্রুদের স্তব্দ করে দিয়েছেন-যাতে এটা মুমিনদের জন্যে এক নিদর্শন
হয় এবং তোমাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।সূরা আল ফাতাহ ৪৮:২০
লোকজন যুদ্ধ করে কোন গোত্র বা বানিজ্য কাফেলা
আক্রমন করে তাদের ধণ সম্পদ দখল করলে গণিমতের অংশ হিসাবে মোট মালামালের এক পঞ্চমাংশ
মোহাম্মদ পাবেন যা আল্লাহ বার বার হুকুম দিয়েছে।কিন্তু যদি কোন কারনে যুদ্ধ ছাড়াই অর্থাৎ কারো সাহায্য ছাড়াই
অমুসলিমদের কোন মালামাল দখল করা যায় তার কি বিধান?সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ মোহাম্মদের নিজের সম্পদ। যেমন নিচের আয়াত-
আল্লাহ বনু-বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে
যে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায়
কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার
উপর ইচ্ছা, তাঁর রসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।সূরা আল হাসর ৫৯:০৬
আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে
যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং
মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের
মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রসূল তোমাদেরকে যা
দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর
শাস্তিদাতা।সূরা আল হাসর ৫৯:০৭
উক্ত ৫৯:০৬ আয়াতে দেখা যাচ্ছে বনু বনুযয়র
নামক কোন এক গোষ্ঠীর সম্পদ বিনা যুদ্ধেই মুসলমানদের দখলে আসে। এমতাবস্থায় আল্লাহ বলছে যুদ্ধ ছাড়া যদি কোন সম্পদ প্রাপ্ত হয় তার উপর মোহাম্মদের
প্রাধান্য থাকবে অর্থাৎ তা মোহাম্মদের নিজের হয়ে যাবে।আর তা থেকে মোহাম্মদ মন চাইলে কাউকে কিছু দিতে পারেন আর যাই তিনি দিবেন সেটাকেই
সন্তুষ্ট মনে গ্রহন করতে হবে, কোন রকম ওজর আপত্তি
করা চলবে না। তা করলেই বিপদ, দোজখের আগুনে পুড়তে হবে।মানুষজন যখন জীবন বাজি
রেখে যুদ্ধ করবে যাতে সে মারাও যেতে পারে, না মারা গেলে
দারুনভাবে আহত হতে পারে, এর পর যুদ্ধে জয়ী
হয়ে মালামাল দখল করলে সেখান থেকে কড়ায় গন্ডায় এক পঞ্চমাংশ মোহাম্মদের জন্য নির্ধারিত
যার সামান্যতম হের ফের করার উপায় নেই, অথচ যুদ্ধ ছাড়া
কোন সম্পদ দখল করা হলে তা হবে সম্পূর্নই মোহাম্মদের নিজের আর মোহাম্মদ যদি ইচ্ছা করেন
তাহলেই তার সাহাবিরা কিছু পেতে পারে, সেখানে তাদের
কোন সুনির্দিষ্ট হিস্যা নেই। প্রশ্ন হতে পারে ,মোহাম্মদের অনুসারী তো অনেক সুতরাং মোহাম্মদ কিভাবে সবাইকে সমান
ভাবে তার সেই সম্পদ বন্টন করবেন? তাই আল্লাহ মোহাম্মদের
ইচ্ছার ওপরেই এ সম্পদের বিলি বন্টন নির্ধারন করে দিয়েছে।কিন্তু সেক্ষেত্রে পাল্টা প্রশ্ন হলো – সেই সম্পদের চার পঞ্চমাংশ যদি সাহাবীদের জন্য নির্ধারিত থাকত, তাহলে অসুবিধা কি ছিল? মোহাম্মদ কি নিজের ব্যক্তিগত কারনে সে সম্পদ দখল করতে পেরেছিলেন নাকি সাহাবীদের
আত্ম ত্যাগ ও সাহসের কারনে মোহাম্মদ এমন অবস্থায় পৌছেছিলেন যে তখন এমনও অবস্থা সৃষ্টি
হতো যে বিনা যুদ্ধেই তিনি সম্পদ লাভ করতে পারতেন। এখন দেখা যাক উক্ত সম্পদ মোহাম্মদ আসলে কিভাবে খরচ করেছিলেন-
এরপর আল্লাহ পাক বলেন: যে জনপদ এভাবে বিজিত
হবে ওর মালের হুকুম এটাই যে ওটা রসুলুল্লাহ নিজের দখলে নিয়ে নিবেন যার বর্ণনা এই আয়াত
ও পরবর্তী আয়াতে আছে(সূরা আল হাসর- ৫৯: ৬-৭)। এটাই হলো ফায় মালের খরচের স্থান ও হুকুম। যেমন হাদিসে এসেছে যে, বনী নাজিরের মাল ফায়
মাল হিসাবে রসুলের হয়ে যায়, আর তা থেকে তিনি সারা
বছরের জন্য স্বীয় পরিবারের খরচ চালাতেন, যা অবশিষ্ট
থাকত তা তিনি যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধের সরঞ্জামাদি ক্রয়ে ব্যয় করতেন। (ইবনে কাথিরের তাফসির, অনুবাদ: ড: মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, খন্ড -১৭ম,
পৃষ্ঠা- ৩৯৭)
কি সুন্দর ব্যবস্থা। উক্ত আয়াত ও তার তাফসির দেখে মনে হয় যেন, মোহাম্মদের নিজের কারিশমাতেই বনু নাজিরের লোকজন তাদের দুর্গ ছেড়ে পালিয়ে গেছিল।তারা পালিয়েছিল ঠিকই তবে মোহাম্মদের কারনে নয়, মোহাম্মদের দুর্ধর্ষ লুটেরা বাহিনীর ভয়ে। তাহলে উক্ত গণিমতের মাল কেন শুধুমাত্র মোহাম্মদের নিজের হবে? তার বাহিনীর লোকজনের কেন কোন সুনির্দিষ্ট হিস্যা থাকবে না?
অথচ যুদ্ধ করে জয়লাভ করে মালামাল দখল করলে তা থেকে একেবারে
কড়ায় গন্ডায় মোহাম্মদকে সুনির্দিষ্ট এক পঞ্চমাংশ দিতে হবে? না দিলেই কেন দোজখের আগুনে পুড়ে জ্বলার ভয় দেখানো হবে?
এখন কোরানের উক্ত আয়াত দেখে কি মনে হয় যে তা আল্লাহর কাছ থেকে
আসছে? নাকি সুচতুরভাবে মোহাম্মদই এগুলো বলছে যাতে
আল্লাহর নামে ভাল পরিমান সম্পদ দখল করে তার বিশাল পরিবারের ভরণপোষণের নিশ্চয়তা বিধান
করা যায়?
শুধু কোরানের বানী দিয়েই মোহাম্মদ ক্ষান্ত
হন নি, বার বার তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন- গণিমতের
মাল তথা লুট পাঠকৃত মাল হলো হালাল অর্থাৎ আল্লাহ নির্দেশিত পবিত্র জিনিস যাতে মানুষ কখনই যেন লুট তরাজ
করতে সামান্যতম দ্বিধা দ্বন্ধে না ভোগে, যেমন-
জাবির বিন আব্দুল্লাহ বর্ণিত- আল্লাহর নবী
বলেছেন গণিমতের মাল(লুটপাটের মাল) আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে। (বুখারি, বই-৫৩, হাদিস-৩৫১)
জাবির বিন আব্দুল্লাহ বর্ণিত: নবী বলেছেন-
পাঁচটি জিনিস আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে যা অন্য কোন নবীকে বৈধ করা হয় নি ,
যেমন- (১) ত্রাস সৃষ্টির দ্বারা আমাকে বিজয়ী করা হয়েছে,
(২) সারা দুনিয়া আমার প্রার্থনার জায়গা করা হয়েছে,
(৩) গনিমতের মাল(লুটপাটের মাল) আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে,
(৪) কেয়ামতের মাঠে আমাকে মধ্যস্থা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে
ও (৫) আমাকে সমস্ত মানব জাতির জন্য পাঠানো হয়েছে অথচ অন্য নবীদেরকে তাদের স্ব স্ব
জাতির জন্য পাঠানো হয়েছে। (বুখারি, বই -৭, হাদিস নং-৩৩১)
উক্ত হাদিস থেকে জানা যাচ্ছে যে, মোহাম্মদ ভয়ভীতি ও জোর জুলুম করার অবাধ লাইসেন্স পেয়েছেন তার
শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রচারের আর তা করতে গেলে যখন কেউ তার কথা মানবে না তখন তার উপর
আক্রমন চালিয়ে তাদেরকে হত্যা জখম করে তাদের মালামাল ও নারীদেরকে গণিমতের মাল হিসাবে
দখল করতে পারবেন মোহাম্মদ তথা মুসলমানরা। এখানে ৫ নং পয়েন্ট
টা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। যখন কোরান হাদিস ঘেটে
প্রমান করা হয়ে যে মোহাম্মদ শুধুমাত্র মক্কা মদিনায় ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছিলেন
ও তাই ইসলাম শুধুমাত্র আরবদের জন্যই তখন ইসলামিষ্টরা উক্ত হাদিস দেখিয়ে প্রমান করতে
চায় যে মোহাম্মদ গোটা মানব জাতির জন্য। মজাটা হলো তারা এই
শেষ ৫ নং পয়েন্টটাকে তাদের পক্ষের বলে গ্রহণ করলেও অপর ১ নম্বর পয়েন্টকে কিন্তু আপাত:
গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয় কারন সেগুলোতে শান্তির কোন ছোয়া নেই। তখন সেটা হয়ে যাচ্ছে জায়িফ হাদিস তথা মিথ্যা হাদিস। কি অদ্ভুত যুক্তি, একই হাদিসের কিছু অংশ
তাদের জন্য সুবিধা বলে সেটুকু সঠিক আর বাকিটুক মিথ্যা! গোজামিলের যুক্তিরও একটা সীমা
থাকা দরকার।
আবু হুরায়রা বর্ণিত- নবী বলেছেন,
যে ব্যক্তি আল্লাহর খেদমদে জিহাদে যোগ দেয়, তাকে আল্লাহ হয় পুরস্কার হিসাবে গণিমতের মাল প্রদান করেন নতুবা
তাকে সরাসরি বেহেস্তে নসিব করেন ( যদি সি মৃত্যু বরন করে)।( বুখারি, বই-২, হাদিস-৩৫)
ঠিক একই রকম হাদিস নিচে-
Narrated Abu Huraira: I heard Allah’s Apostle saying, “The
example of a Mujahid in Allah’s Cause– and Allah knows better who really
strives in His Cause—-is like a person who fasts and prays continuously. Allah
guarantees that He will admit the Mujahid in His Cause into Paradise
if he is killed, otherwise He will return him to his home safely with rewards
and war Booty.”(Bukhari, Book #52, Hadith #46)
তার মানে জিহাদ তথা অমুসলিম জনপদে বা অমুসলিমদেরকে
আক্রমন করে জিহাদ করলে বেঁচে থাকলে বা মারা গেলে কোনই ক্ষতি নেই, উভয় দিক দিয়েই লাভ। কারন জয়ী হয়ে ফিরে
আসলে গণিমতের মাল পাওয়া যাবে, মারা গেলে সরাসরি বিনা
বিচারে বেহেস্তে গিয়ে হুর পরীদের সাথে লাগামহীন ফুর্তি করা যাবে। সুতরাং এর পরেও যদি কোন মুসলমান অলসভাবে চুপ করে বসে থাকে, তার মত মুনাফেক আর হয় না। ইসলাম শান্তির ধর্ম বলে এর পরেও যদি কোন মুসলমান অমুসলিমদের কাছে তারস্বরে প্রচার
করতে থাকে তার মতো ডাহা মিথ্যাবাদি আর কেউ হতে পারে না। প্রতিটি মুসলমানের উচিত নবীর বানী অনুসরণ করে অমুসলিমদের ওপর ঝাপিয়ে পড়া,
আক্রমন করে তাদেরকে নি:শেষ করে দেয়া, আর তা করতে গিয়ে বাঁচলে বা মরলে কোনই ক্ষতি নেই, উভয় দিক দিয়েই লাভ। সুতরাং যারা এখন বিভিন্নভাবে
জঙ্গী হামলা করে কাফির মুনাফিক হত্যা করছে, তাদেরকে কেন বিভ্রান্ত মুসলমান আখ্যা দেয়া হয় তা ঠিক বোধগম্য নয়।কাফির মুনাফিক হত্যা করতে গেলে অনেক সময় নিজেকেই উৎসর্গ করতে হয়,
এটাকে কেন কিছু ইসলামি পন্ডিত আত্মহত্যা বলে রায় দেয় সেটাও
বোধগম্য নয়।আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কৌশলগত কারনে যদি কারও শরিরে
বোমা বাধতে হয়, তাহলে তা কিভাবে আত্মহত্যা হতে পারে?
আত্মহত্যা হবে যদি কেউ ব্যক্তিগত কারনে নিজেকে হত্যা করে সেটা।
আবু আব্দুল আজিজ বর্ণিত- যখন আল্লাহর রসুল
খায়বার দখল করলেন, ——- আমরা খায়বার দখল করলাম,
তাদেরকে বন্দী করলাম,লুন্ঠিত মালামালও যোগাড় করলাম। দাহিয়া এসে বলল- হে
নবী , আমাকে গনিমতের মাল হিসাবে একটা নারী দিন বন্দিনী
নারীদের মধ্য হতে।নবী খুব উদার ভাবে বললেন- যাও তোমার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে নাও। সে তখন সাফিয়া বিনতে হুইকে নিল। এক লোক এসে বলল- হে
নবী আপনি দাহিয়াকে সেই নারী দিয়েছেন যে নাকি খায়বারের সর্দারের স্ত্রী। নবী তখন তাকে সাফিয়াকে তার কাছে আনার জন্য হুকুম করলেন। সাফিয়াকে তার সামনে আনা হলে, তিনি দাহিয়াকে অন্য
নারী নিতে বললেন ও সাফিয়াকে নিজের কাছে রেখে দিলেন। (বুখারি, বই -৮, হাদিস-৩৬৭)
উক্ত হাদিস থেকে বোঝাই যাচ্ছে, মহান দয়ালু নবি কোন কিছু দান করলেও সেটা ফেরত নিতেন যদি তার
মন চাইত। সাফিয়াকে ফেরত নিয়ে নেয়াতে দুটো ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি- তিনি
দান করে তা ফেরত নিয়েছেন ও নারীর প্রতি তার যে সীমাহীন আকর্ষন ছিল তার বহি:প্রকাশ
ঘটিয়েছেন।
সাফিয়া ছিল সুন্দরী ও আকর্ষনীয় দেহ বল্লরীর অধিকারী তার দিকে
চোখ পড়তেই মহান নবীর দিল মন উষ্ণ হয়ে ওঠে ও সাথে সাথেই তার আগের দেয়া বক্তব্য পাল্টে
ফেলে তাকে নিজের কাছেই রাখেন।
মোহাম্মদের সাঙ্গ পাঙ্গরা কি পরিমান যৌন কাতর
ছিল তার একটা বিবরন পাওয়া যায় নিচের হাদিসে-
আবু সাইদ আল কুদরি বর্ণিত- সে যখন নবির সাথে
বসেছিল জিজ্ঞেস করল- হে নবী , আমরা কিছু নারী বন্দিনী
হস্তগত করেছি আর আমরা তাদের সাথে যৌনমিলন করতে চাই।কিন্তু আমরা সতর্কভাবে তা করতে চাই।ব্যপারে আপনার কি অভিমত?
নবী বললেন- তোমরা কি সত্যিই সেরকম করে থাক ? আল্লাহ সমস্ত আত্মাই সৃষ্টি করে রেখেছেন, যারা জন্মের জন্য নির্ধারিত তারা জন্ম লাভ করবেই। বুখারি, বই-৩৪, হাদিস-৪৩২
যারা মোহাম্মদকে দুনিয়ার শ্রেষ্ট আদর্শবান
মানুষ মনে করে আর তার সাথে চলাফেরা করা সাহাবিদের মনে করে আদর্শ মানুষ তারা কি বলবে
উপরের হাদিস গুলো পড়ে? অবশ্য অত্যাধিক নারী
প্রীতি ও যৌন আকাংখায় অত্যাধিক কাতরতা যদি আদর্শ মানুষের লক্ষন হয় তাহলে বলার কিছু
নেই। আসলে উপরের ৪৩২ নং হাদিসটির আসল রহস্য হলো- যে সব বন্দিনী নারীরা
ছিল তাদের অনেকেরই স্বামী বর্তমান ছিল, সাহাবিরা তাই
তাদের স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের সাথে যৌন মিলন করতে নিমরাজি ছিল।সে প্রেক্ষিতে মহা শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রবর্তক দ্বিধাহীনভাবে আদেশ করছেন যে
– তাদের স্বামী বেচে থাক বা না থাক কিছুই আসে যায় না যথেচ্ছ তাদেরকে
ধর্ষন করতে পার, নিচের আয়াতের প্রেক্ষিতে উক্ত হাদিসের আবির্ভাব-
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক
তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত
যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব
করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ
হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।সূরা নিসা, ৪:২৪
অর্থাৎ এটা আল্লাহর হুকুম
যে বন্দিনী নারীরা ধর্ষনের যোগ্য তা তাদের স্বামী বেঁচে থাক বা মারা যাক।এখন ধরা যাক, সমস্ত অমুসলিম ইসলামের এসমস্ত আল্লাহর বানী
উপলব্ধি করে তারা সবাই একত্রিত হয়ে মুসলমানদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাদেরকে পরাজিত করত:
তাদের সব নারীদেরকে বন্দি করল ও ইসলামের দেখানো পথে তারা তাদেরকে উপর্যুপরি ধর্ষণ আরম্ভ
করল, মুসলমানরা সেটাকে কি চোখে দেখবে? যেমন শোনা যায় ইরাক বা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা নারীদেরকে মাঝে মাঝে ধর্ষণ
করে, তা নিয়ে মুমিন বান্দারা এত চিৎকার চেচামেচি করে কেন?
তাদের তো বরং আনন্দিত হওয়া উচিত এই ভেবে যে তারা আল্লাহ ও তার
নবীর পদাংক অনুসরণ করছে। এ প্রসঙ্গে ইসলামি
পন্ডিতদের যে বক্তব্য পাওয়া যায় তা হলো – সেই সময়ে দাসি বা বন্দিনী নারী ধর্ষন অনুমোদিত ছিল এখন এটা বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু বাতিল যে হয়ে গেছে তার কোন কোরানিক বা হাদিসের দলিল আছে? দুনিয়াতে এখনো পাঁচ ভাগের চারভাগ মানুষই অমুসলিম তথা ইহুদি
নাসারা কাফের, মুসলমানের দায়িত্ব তো শেষ হয় নি এখনো। তাদেরকে ইসলামের পতাকা তলে আনতে মুসলমানদেরকে অবিরত জিহাদ করে যেতে হবে,
তা করতে গেলে যখন কাফেরদের নারীরা বন্দিনী হবে , তখন কি তাদেরকে বলৎকার করা নিষেধ করা আছে কোথাও কোরান হাদিসে? তন্ন তন্ন খুজেও তো কোথাও এ বিষয়ে কিছু পাওয়া গেল না ,
তাহলে ইসলামি পন্ডিতদের এ ধরনের নিজস্ব মতামত তথা মিথ্যা প্রচারনার
উদ্দেশ্য কি?
এখন দেখা যাক ,জিহাদে শহিদ হলে কি কি পাওয়া যাবে বেহেস্তে , যেমন কোরানে বলা আছে-
কোরান ৫২: ১৭-২০: মুমিনগণ থাকবে সুখময় জান্নাতে,
যেখানে আনন্দ-উল্লাস করে বেড়াবে আল্লাহ দানে… তাদের বলা হবেঃ তোমাদের কৃতকর্মের জন্য খাও-দাও, ফূর্তি করো, এবং তারা সারি-বাধা
সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে এবং আমরা (আল্লাহ) তাদেরকে যৌন-উন্মাদক চোখওয়ালা পরম সুন্দরী
হুরদের তাদের সঙ্গী বানাব।
কোরান ৫২:২২-২৫: বেহেশ্তে তারা ফলমূল এবং
মাংস যা চাইবে আমি (আল্লাহ) তাই দেব। সেখানে তারা একে অপরকে
লোভনীয় পানপাত্র দেবে; যেখানে অসার বাতুলতা
নেই, নেই কোন পাপকর্ম। সেখানে তাদের সেবায়
নিবেদিত সুরক্ষিত মুক্তার ন্যায় সুন্দর কিশোরেরা ঘুরাফেরা করবে। তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
কোরান ৩৭:৪০-৪৯: তাদের জন্য থাকবে আনন্দ-উল্লাস
ও সম্মান-সম্ভ্রম আল্লাহর বিলাস বাগানে। সিংহাসনে মুখোমুখি
বসবে তারা এবং স্বচ্ছ ঝর্ণা থেকে স্ফটিকের ন্যায় সাদা মদের পেয়ালা থেকে পান করবে
তারা, যা হবে চমৎকার মজাদার ও সুস্বাদু
কিন্তু তারা হবে না মাতাল। এবং তাদের পাশে থাকবে
লাজুক ও মন-মাতানো আয়তলোচনা চিরকুমারী হুরী, যেন সুরক্ষিত ও নাজুক শুভ্র ডিম্বের ন্যায়।
কোরান ৪৪:৫১-৫৫: হ্যাঁ, সঠিক পথের অনুসারীদের জন্য থাকবে সুরক্ষিত আবাস — বিলাস-বাগান ও ঝর্ণার মাঝে। চমৎকার কারুকার্য
বিশিষ্ট সিল্কের কাপড়ে সজ্জিত হয়ে তারা মুখামুখি বসবে; এবং আমরা (আল্লাহ) তাদের সঙ্গী বানাব সুন্দরী, টানা-টানা ও যৌন-উন্মাদক চোখ-ওয়ালা শ্বেতকায় হুরীদেরকে।
কোরান ৫৫: ৫৬-৫৭: তাদের মধ্যে থাকবে আয়তলোচনা
লজ্জাবতি চিরকুমারী হুরীগণ, যাদেরকে কোন মানুষ
বা জ্বিন কখনোই স্পর্শ করেনি…
কোরান ৫৫:৫৬-৭৪: সেথায় থাকিবে প্রবাল ও পদ্মরাগ
সদৃশ যুবতীগণ (হুরী), দুটি ঘন সবুজ উদ্যান, উদ্বেলিত দু’টি ঝর্ণা। সেথায় আছে ফলমূল, খেজুর ও আনার,
আছে সুশীলা সুন্দরী যুবতীরা, সুনয়না ও তাবুতে অবস্থানকারী কুমারী হুরবালা – যাদেরকে মানব অথবা জ্বিন কখনোই স্পর্শ করেনি।
কোরান ৫৬:১৫-২৩: তারা স্বর্ণখচিত সিংহাসনে
হেলান দিয়ে মুখোমুখিভাবে বসবে; তাদের আশে-পাশে ঘুরাফেরা
করবে মুক্তার ন্যায় চির-কিশোরেরা খাটি সুরাপূর্ণ পানপাত্র হাতে নিয়ে; যা পান করলে তাদের শীরঃপীড়া হবে না; আর থাকবে তাদের পছন্দমত পাখীর মাংস; থাকবে আয়োতলোচনা
(টানা চোখের) কুমারী হুরীগণ; আবরণে রক্ষিতা মুক্তার
ন্যায়; ইহা তাদের কর্মফল।
কোরান ৭৮:৩১-৩৬: মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য;
বাগান ও আঙ্গুর রস এবং সমবয়স্ক সুন্দরী উন্নতবক্ষা (তীরের ন্যায়
খাড়া-খাড়া স্তনযুগল) কুমারী যুবতীগণ এবং তাদের হাতে থাকবে শরাব ভর্তি পেয়ালা,
যা আল্লাহর কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার।
কোরান ৭৬:১৪-১৯: বেহেশ্তে থাকবে বৃক্ষছায়া
ও যাবতীয় ফলমুল, যা চাবে তাই পরিবেশন করা হবে রৌপ্য-স্ফটিকের
পাত্রে; আরও পান করতে দেওয়া হবে যাঞ্জাবিলের মিশ্রিত
সালসা এবং সালসাবীল নামে এক ঝর্ণা; তাদের কাছে ঘুরাফেরা
করিবে বিক্ষিপ্ত মুক্তার ন্যায় চির কিশোর বালকগণ।
কোরান ৫৬:৩৪-৩৭: তথায় থাকিবে তাদের জন্য
উচ্চ শয্যা-সংগিনী, যাদেরকে সৃজিয়াছি বিশেষভাবে চিরকুমারী (ever
virgin) ও সমবয়স্কা করে।
কোরান ২:২৫: হে নবী (সাঃ) যারা ইমান এনেছে
এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে
বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে প্রবাহমান
থাকবে নদী।
যখনই তারা কোন ফলমুল পাবে তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যাহা আমরা পৃথিবীতেও পেয়েছিলাম। বস্তুত তাদেরকে একই রকম ফল দেওয়া হবে, এবং সেখানে থাকবে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকুল আর সেখানে তারা অনন্তকাল বাস
করিবে।
কোরান ৪৭:১৫: মুমিন মুসলমানদেরকে যে জান্নাতের
ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপ: তাতে আছে পানির নদী,
নির্মল দুধের নদী যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পান-কারীদের জন্য সুস্বাদু শরাবের নদী এবং বিশুদ্ধ মধুর নদী। তথায় তাদের জন্য আছে রকমারি ফলমুল ও তাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা থাকবে জাহান্নামে
অনন্তকাল এবং যাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি, যা পান করিলে তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন বিছিন্ন হবে?
আহা, পরম করুনাময় আল্লাহর কি অসীম কুদরত। তিনি মুমিন বান্দা
ও শহিদদের জন্য কি অতুলনীয় ব্যবস্থাই না করে রেখেছেন। আয়ত লোচনা উন্নত বক্ষা হুর বা সঙ্গীনি। আর কি চাই। যে কোন মুমিন বান্দার তো এ জগতেই এসব চিন্তা করে পাগল হয়ে যাওয়ার কথা। বস্তুত তারা পাগল হয়ও। হয় বলেই তো তারা অনেকেই
সেই সময় তো বটেই ইদানিং কালেও গায়ে অথবা গাড়িতে বিস্ফোরক ভর্তি করে চলে যায় কাফেরদের
আক্রমন করতে। যাতে সাথে সাথেই হুর পরীদের সাথে মৌজ করতে
চলে যাওয়া যায়। ইসলাম পালন না করলে অহরহ দোজখের আগুনে জ্বলা
পোড়ার ভয় দেখানো সেই সাথে সঠিকভাবে ইসলাম পালন করলে বেহেস্তে হুর পরী ও অবাধ পান
করার লোভ কে সম্বরন করতে পারে ? তাই দেখা যায় যখন
মোল্লারা ওয়াজ নসিহত করে তারা লোলুপতার সাথে হুরদের আকর্ষণীয় বর্ণনা দেয় যাতে মুমিন
বান্দারা যেন আরও বেশী লালায়িত থাকে। এত কিছুর পরও যে দুনিয়ার
অধিকাংশ মানুষই ইসলাম গ্রহণ করছে না, তারা নিরেট
মূর্খ ও বধির ছাড়া আর কি? কেন যে মুসলমানরা নিজেদের
মহা বুদ্ধিমান ও পন্ডিত মনে করে আর ভাবে অমুসলিমরা গন্ড মূর্খ, এখন কি আর বুঝতে বাকি আছে? আসলেই অমুসলিমরা নিতান্তই মূর্খ ও ইতর প্রানী, তা না হলে ইসলামে এমন ধরনের মহা সুবন্দোবস্ত কে প্রত্যখ্যান করতে পারে ?
তবে যেকথাটা না বললেই নয় তা হলো - এতসব ব্যবস্থা তো হলো সব
পুরুষদের জন্য, নারীদের জন্য এসব কিছুই নেই। তাই তারা বেহেস্তে কি পাবে না পাবে তা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানে। তবে বিভিন্ন হাদিস থেকে দেখা যাচ্ছে- বস্তুত মুসলিম নারীরা বেহেস্তেই যাবে না,
যাবে সব দোজখে। যেমন উপরের –
(বুখারি, ভলুম-১, বই-৬, হাদিস নং-৩০১),
(সহি বুখারি, ভলুম-১. বই-২,
হাদিস-২৯), (বুখারি, ভলুম-৭, বই-৬২, হাদিস-১২৪ )হাদিস গুলো। এখানে খুব পরিস্কার ভাষায় বলা হচ্ছে দোজখের বাসিন্দারা হলো মূলত: নারী। আর যৌক্তিক ভাবে সেটাই হওয়ার কথা। কারন তারা জিহাদে যেতে
পারবে না, তাই সত্যিকার মুসলমান হওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব
নয়। তাছাড়া বেহেস্তে পুরুষদের জন্য অগনিত হুর তৈরী করে রাখাতে,
সেখানে নারীদের কোন দরকারও থাকার কথা নয়। তারা সেখানে থাকলে বরং গন্ডগোল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কারন তারা যখন দেখবে তাদের স্বামীরা বহু সংখ্যক হুরদের সাথে কামকেলীতে ব্যস্ত তখন
তারা সেখানে মারামারি কাটাকাটি শুরু করে দিতে পারে, বুদ্ধিমান মোহাম্মদ তাই চতুরতার সাথেই সব মেয়েদেরকে দোজখে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা
করেছেন যাতে তাদের স্বামীরা নিরুপদ্রবে হুরদের সাথে অনাবিল যৌন আনন্দ উপভোগ করে যেতে
পারে। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে নারীরা এত ধর্ম পালন করে কেন?
কারন তারা মূর্খ, স্বয়ং কোরানে
আল্লাহ নারীকে পুরুষের অর্ধেক মর্যাদা দিয়েছে আর নবী সেটা ভালমতো ব্যখ্যা করে বলেও
গেছেন। যেমন কোরানের আয়াত-
দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না
হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়,
তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সূরা নিসা ২: ২৮২
উক্ত আয়াতের ব্যখ্যা হিসাবেই এসেছে পূর্বোক্ত
বুখারি, ভলুম-১, বই-৬, হাদিস নং-৩০১ হাদিসটি। এর পর মুসলিম নারীরা কিভাবে তর্ক করতে পারে যে তারা পরিপূর্ণ মানুষ? অনেক কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রীধারী নারীদেরকে দেখা
যায় নারীদেরকে ইসলাম কতটা মর্যাদা দিয়েছে সেটা আদাজল খেয়ে প্রমান করতে কিন্তু তাদেরকে
বেহেস্তে কি দেয়া হবে এ ব্যপারে একেবারে নিশ্চুপ দেখা যায়। তখন তারা বলা শুরু করে কোরানের আয়াত ও হাদিসকে ভূলভাবে ব্যখ্যা করা হচ্ছে। কিন্তু যেখানে কোরান ও হাদিসে খুবই পরিস্কার ভাষায় সব কিছু বলা আছে সেখানে সেটা
ভূলভাবে কিভাবে ব্যখ্যা হলো তা ঠিক বোধগম্য নয়। তবে সঠিক ব্যখ্যাটি যে কি সেটাও তাদের অজানা। মূর্খ মুসলিম নারীগুলো বুঝতেই পারে না যে তাদেরকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছে দোজখে পুড়ে
মারার জন্য।তাই বেহেস্তে তাদের জন্য কোন কিছু সৃষ্টি করা হয় নি।তাদের এ মহা মূর্খতাই তাদেরকে ইসলামে আকড়ে রাখে। এই মূর্খ মুসলিম নারীগুলো কি এখন বুদ্ধিমতী হওয়ার চেষ্টা করবে?
সুতরাং কেন একজন মুসলমান তার ইসলামকে আকড়ে
ধরে থাকে, তা বুঝতে কি আর কোন সন্দেহ থাকার কথা?----------