আমি বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী সেই
বির্তকে যাব না। মোটামোটি ভাবে সবাই বিশ্বাস করে আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের
পাতাটিও নড়ে না। ভাল কথা, এটা আমিও বিশ্বাস করি। কিন্তু একটি খটকা, এসে
আমার সমস্ত বিশ্বাস ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। আল্লাহ যদি সমস্তু হুকুমের
একমাত্র মালিক হন, তবে শয়তানের অস্তিত্ব থাকে কি? আল্লা যদি আমাকে আশ্রয়
দেন তাহলে শয়তান কিভাবে আমার কেশাগ্র স্পর্শ করবে। আল্লাই যদি সমস্ত
কার্যক্রমের একক মালিক হবেন, তাহলে খামাখা শয়তানের উপস্থিতিই বা কেন, আর
কেনই বা শয়তানের বিরম্বনা মানুষকে পোহাতে হবে। আসলে আল্লাহ বা শয়তান এই
দুটি অনুসঙ্গ মানুষই মানুষের প্রয়োজনে সৃষ্টি করেছে। এই শয়তান উতপত্তির
গল্পটাও বেশ মজার।
কোরান শরিফের সুরা আল বাকারাহ’য় এই গল্পটি বর্ণিত আছে। সুরা আল বাকারাহ
এর ত্রিশ নম্বর আয়াতে আল্লাহ যা বলছেন তা মন দিয়ে শুনুন " আর তোমার
পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেন : আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে
যাচ্ছি , তখন ফেরেশতাগন বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাওকে সৃষ্টি করবে যে
দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার
গুনকীর্তন করছি এবং তোমার প্রবিত্র সত্তাকে স্মরন করছি। তিনি বললেন ,
নি:সন্দেহ আমি জানি, যা তোমরা জান না।“ এই পুরো আয়াতটি পড়লেই এর অসংলগ্নতা আপনার কাছে দিনের আলোর মত পরিস্কার হয়ে যাবে। আল্লাহ যা করবেন তা তার ইচ্ছার প্রতিফলন মাত্র। কিন্তু এখানে কি দেখছি আল্লাহ মানুষের মতই নিজের মতামতটা অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য বলছেন, তিনি প্রতিনিধি বানাবেন, যেন কারো মতামতের খুব দরকার। আর কি মজা দেখুন প্রতিনিধির আকার, আকৃতি, নির্মাণ শৈলী কি হবে তা তখনও সবার অজানা থাকা সত্বেও ফেরেশতারা কেমন বিজ্ঞের মতো বলে উঠলো, ওরা তো পৃথিবীতে গিয়ে দাঙ্গা ফ্যাসাদ করে রক্তপাত ঘটাবে। ফেরেশতারা তখন রক্ত কি, কেমন হবে সব জানতো। এখানে আমার আল্লার চাইতে ফেরেশতাদেরকেই বেশী জ্ঞানী মনে হয়েছে। কোরান শরিফের প্রায় সমস্ত আয়াতই এমন অসংলগ্নতায় পরিপূর্ন। তারপর আল্লাহ আদমকে তৈয়ারী করলেন এবং যাবতীয় বস্তু ও ফলের নাম শেখালেন। তারপর ফেরেশতাদের বললেন আদমকে সেজদা কর। ফেরেশতারা বলল আমরা মাটি দিয়ে তৈরী আদমকে কেন সেজদা করব। আল্লাহ তখন কিছু বস্তু ও ফল এনে সমস্ত ফেরেশতাদেরকে দেখিয়ে ঐগুলির নাম পরিচয় জানতে চাইলেন ফেরেশতারা বললেন, তুমি আমাদের যতটুকু শিখিয়েছ এর বাইরে আমরা তো কিছুই জানি না। আল্লাহ আদমকে বললেন তুমি বলে দাও। আদম সব বলে দিলে, ফেরেশতারা সবাই আদমকে সেজদা করলো শুধু ঈবলিশ করলো না। এই হলো শয়তান উত্থানের গল্প।
আজ দুইহাজার পনারো সালে এসেও যদি এই চালাকিটা আমরা না ধরতে পারি তাহলে আমাদের শিক্ষাটাই যে মাঠে মারা যায়। ধরুন একজন শিক্ষক একজন ছাত্রকে ধরি, ছাত্রটির নাম রহিম, এই রহিমকে শেখালেন আম, জাম ও কলার বৈশিষ্টসমুহ। আর অন্য ছাত্র করিমকে শেখালেন বই, কলম, ও খাতার বৈশিষ্টসমুহ। এখানে মাষ্টারমশাই যদি করিমের প্রশ্ন রহিমকে আর রহিমের প্রশ্ন রহিমকে করলে যা দাড়াবে এখানে ঠিক তাইতো ঘটেছে। এই সহজ সমীকরনটি যারা বোঝার বোধবুদ্ধি ধারন করতে পারেন না, তারা হয়তো অন্ধধার্মিক হতে পারবেন কিন্তু মানুষ হতে পারবেন না। উপসংহারে আমার পরিচয় হল সর্বপ্রথম আমি মানুষ তারপর আমি বাঙ্গালী এর বাইরে আমার কোন অস্তিত্ব নেই।