সভ্যতা একটি চলমান প্রক্রিয়া। দুইশ’ বছর আগে
দাসপ্রথা নৈতিকতার সাথে সাংঘর্ষিক ছিলো না। পঞ্চাশ বছর আগেও বন্যপ্রানী
শিকার সমাজের মান-মর্যাদা, সাহসীকতা এবং শৌর্য-বীর্যের প্রতীক ছিলো। ২৫ বছর
আগে প্রকাশ্যে ধূমপান মানুষের ব্যক্তিত্ববিকাশের সহায়ক ছিলো যার নমুনা
আমরা দেখতে পাই চে গেভারা কিংবা বঙ্গবন্ধুর পোর্টেটেও। এই তিনটি ক্ষেত্রই
আধুনিক সভ্যতার নৈতিকতার সংজ্ঞার সাথে সাংঘর্ষিক। যে কারণে সারা পৃথিবী
থেকে দাসপ্রথা বিদায় নিয়েছে। বন্যপ্রানী হত্যা এখন কাপুরুষতার পরিচায়ক এবং
সারা পৃথিবীতেই আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। প্রকাশ্যে ধুমপান পৃথিবীর সর্বত্র এখনো
তিরোহিত না হলেও এই বিষয়টিকে কোথাও উৎসাহীত করা হয় না। বিশ্বনেতা, কিংবা
সেলিব্রেটিরা ধুমপানরত অবস্থায় জনসম্মক্ষে আসেন না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে
বিশেষ কারণে ধূমপানরত ব্যক্তিকে দেখানো হলেও ডিসক্লেইমার দেওয়া হয়। এভাবেই
বর্ণবৈষম্য, জাতিবৈষম্য সভ্য পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। একই কারণে আজকের
সভ্য পৃথিবীর অনেক বিষয় আগামী পঞ্চাশ বছর পরে হয়তো নৈতিকতার ভিত্তি হারিয়ে
ফেলবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে সম্প্রতি নিরামিষ খাদ্যাভ্যাস এবং
সমকামীতার পক্ষে সারা পৃথিবীতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী গড়ে উঠছে।
কিন্তু বিশ্বের সব সমাজে সভ্যতা চলমান নয়। কোনো কোনো সমাজে ও রাষ্ট্রে সভ্যতা স্থির হয়ে আছে। এই সমাজ ও রাষ্ট্রগুলো আধুনিক নৈতিকতার ভিত্তিগুলোকে অস্বীকার করে। কোনো কোনো রাষ্ট্র যদিও নৈতিকতার ভিত্তিগুলোকে অস্বীকার না-ও করে থাকে তথাপি সেসব দেশে ধর্মান্ধ, উগ্রবাদী ও মৌলবাদী গৌষ্ঠীগুলোর প্রভাবে এবং সমাজের একটি বিরাট অংশের নাগরিকের সমর্থনে এই নৈতিকতার ভিত্তিগুলো যথাযথভাবে কার্যকর নয়। ফলে এই সমাজ ও রাষ্ট্রগুলোতে অন্যান্য সভ্য রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় পশ্চাদপদ জীবনমান পরিলক্ষিত হয়। এবং সভ্যতার সুচকগুলো সমর্থন না করা সত্ত্বেও এই পশ্চাদপদ রাষ্ট্রে পশ্চাদপদ মানুষগুলোকে সভ্য দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করতে দেখা যায়।
সমাজের একশ্রেনীর মানুষ সর্বদাই এধরনের স্ববিরোধী, পশ্চাদপদতা, সংকীর্ণতা, অনৈতিকতার বিরোধীতা করে স্বোচ্চার কণ্ঠস্বর চালিয়ে যান। কোনো সমাজেই নৈতিকতার এই ভিত্তিগুলো খুব মসৃণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় নি। প্রত্যেক সমাজে মৌলবাদী, ধর্মান্ধগোষ্ঠীগুলোর সাথে সমাজের প্রথাবিরোধী একটি ক্ষুদ্র অংশকে প্রাণান্তকর পরিশ্রম, অত্যাচার, নিপীড়নের মধ্য দিয়ে গিয়েই আধুনিক প্রগতিশীল সভ্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকেই এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রাচীন কাল থেকে মৌলবাদীদের অন্ধত্বের আর প্রতিক্রিয়াশীলতার বলী হয়েছেন সক্রেটিস, হাইপেসিয়াসহ আরো বিপুল পরিমান মুক্তচিন্তার মানুষ। মধ্যযুগে মৌলবাদীতার শিকার গ্যালিলিও, গিওর্দানো ব্রুনোসহ আরো অনেকেই। বাংলাদেশে গত কয়েকযুগে মৌলবাদীদের হামলা ও প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েছেন অনেক প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ।
কাজেই সভ্য প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে হলে পেছন থেকে ছুরি চালনো কাপুরুষ কূপমন্ডুকদের মোকাবেলা করেই তা করতে হবে। আইডিয়ার মৃত্যু নেই।
কিন্তু বিশ্বের সব সমাজে সভ্যতা চলমান নয়। কোনো কোনো সমাজে ও রাষ্ট্রে সভ্যতা স্থির হয়ে আছে। এই সমাজ ও রাষ্ট্রগুলো আধুনিক নৈতিকতার ভিত্তিগুলোকে অস্বীকার করে। কোনো কোনো রাষ্ট্র যদিও নৈতিকতার ভিত্তিগুলোকে অস্বীকার না-ও করে থাকে তথাপি সেসব দেশে ধর্মান্ধ, উগ্রবাদী ও মৌলবাদী গৌষ্ঠীগুলোর প্রভাবে এবং সমাজের একটি বিরাট অংশের নাগরিকের সমর্থনে এই নৈতিকতার ভিত্তিগুলো যথাযথভাবে কার্যকর নয়। ফলে এই সমাজ ও রাষ্ট্রগুলোতে অন্যান্য সভ্য রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় পশ্চাদপদ জীবনমান পরিলক্ষিত হয়। এবং সভ্যতার সুচকগুলো সমর্থন না করা সত্ত্বেও এই পশ্চাদপদ রাষ্ট্রে পশ্চাদপদ মানুষগুলোকে সভ্য দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করতে দেখা যায়।
সমাজের একশ্রেনীর মানুষ সর্বদাই এধরনের স্ববিরোধী, পশ্চাদপদতা, সংকীর্ণতা, অনৈতিকতার বিরোধীতা করে স্বোচ্চার কণ্ঠস্বর চালিয়ে যান। কোনো সমাজেই নৈতিকতার এই ভিত্তিগুলো খুব মসৃণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় নি। প্রত্যেক সমাজে মৌলবাদী, ধর্মান্ধগোষ্ঠীগুলোর সাথে সমাজের প্রথাবিরোধী একটি ক্ষুদ্র অংশকে প্রাণান্তকর পরিশ্রম, অত্যাচার, নিপীড়নের মধ্য দিয়ে গিয়েই আধুনিক প্রগতিশীল সভ্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকেই এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রাচীন কাল থেকে মৌলবাদীদের অন্ধত্বের আর প্রতিক্রিয়াশীলতার বলী হয়েছেন সক্রেটিস, হাইপেসিয়াসহ আরো বিপুল পরিমান মুক্তচিন্তার মানুষ। মধ্যযুগে মৌলবাদীতার শিকার গ্যালিলিও, গিওর্দানো ব্রুনোসহ আরো অনেকেই। বাংলাদেশে গত কয়েকযুগে মৌলবাদীদের হামলা ও প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েছেন অনেক প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ।
কাজেই সভ্য প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে হলে পেছন থেকে ছুরি চালনো কাপুরুষ কূপমন্ডুকদের মোকাবেলা করেই তা করতে হবে। আইডিয়ার মৃত্যু নেই।