“বসন্ত বাতাসে সইগো
বসন্ত বাতাসে......
বসন্ত বাতাসে সইগো
বসন্ত বাতাসে-
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ...
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ
আমার বাড়ি আসে
সইগো বসন্ত বাতাসে
সইগো বসন্ত বাতাসে...”
এই গানটা যেভাবে চৈত্রকে ফীল করাতে পারে- সেভাবে মনে হয় আর কোন গান করাতে পারে না...সাদামাটা কথা- কিন্তু কেমন ধু ধু করা একটা আবহ । কিভাবে জানি গরম বায়ুপ্রবাহ ফীল করা যায় । সূরের কারনে মনে হয় । শুনলেই কিছু একটা মিস করতে হয়- ফাঁকা ফাঁকা লাগে...
কোন কারন ছাড়াই বিছানা ছেড়ে ফ্লোরে শুয়ে আছি- পাশে এক কাজিন- বিছানা খালি । কাজিন চুপচাপ ঘুমাচ্ছে বা মোবাইলে পর্ন দেখছে- আমি ঠিক জানি না । আমি লালনের “বসন্ত বাতাসে” শুনছি হেডফোন লাগিয়ে । চশমা ছাড়া আবছা ঘোলা চোখে মনে হচ্ছে বিশেষ কোন জায়গায় আছি । সারা ঘরে কোন আলো নাই- এসির এলইডির আবছা আলোয় কেমন জানি দুঃস্বপ্নীল একটা ইফেক্ট সারা ঘরে । এলইডি হলুদ । কিন্তু আমার কাছে সারা ঘর লালচে লাগছে ... টিভিতে ড্রাগ এডিক্টদের নেশা করা দেখানোর সময় যেরকম অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘোলাটে লালচে ইফেক্ট দেয়া হয়- পুরোপুরি সেরকম ।
“বন্ধুর বাড়ির ফুলবাগানে
নানান রঙের ফুল
ফুলের গন্ধে মন আনন্দে...
ফুলের গন্ধে মন আনন্দে
ভ্রমর হয় আকুল
সইগো বসন্ত বাতাসে...
সইগো বসন্ত বাতাসে”
মনে পড়ল লাস্ট এই গানটা সামনাসামনি শুনেছিলাম ভার্সিটির অনুষ্ঠানে । এন্ট্রান্স ডে ছিল আমাদের – এক মাসের মত আগে । সুমিকে ওইদিন প্রচন্ড সুন্দরী লাগছিল । মনে হচ্ছিল সারা জীবন শুধু এই স্টেজের সামনে বসে তার দিকে তাকায় থাকি- আর সে গান গাক । অদম্য একটা আকর্ষন কাজ করছিল - কোন কামনা বাসনা ছাড়া- সম্মান থেকে উদ্ভূত একটা তীব্র প্রেম । কামনাময় প্রেমের থেকে কোন অংশে কম তীব্র না ।
তবে এটাই প্রথম না- এক জিনিস সারা জীবন করতে চাওয়াও প্রথম না- এরকম ভাবে কামনাহীন সম্মানজাত প্রেমে পড়াও প্রথম না । সেদিন চারুকলার পিছনের গর্তটায় পা ঝুলিয়ে শান্তুর সাথে ধোঁয়া টানার সময়ও মনে হচ্ছিল- যদি কোন পাস্ট-ফিউচার না থাকতো – শুধুই এই মুহুর্তটা থাকত- আক্ষরিক অর্থেই অফুরন্ত সময় ধরে – আমার আর কিছু লাগত না – সবকিছু পারফেক্ট ছিল ওই মুহুর্তে । শান্তুর গালে বিকালের রোদ পড়ে চকচক করছিল- আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে সবকিছু দেখছিলাম- মনে হচ্ছিল এটা অন্য কোন জায়গা- অনেক আগে একসময় খুব কাছের ছিল । এখন আর নাই। আজ কতদিন পর আবার পেলাম- এই জায়গাটা।
আবার একদিন বিজয়দার রুমে রবীন্দ্রনাথের “ফুলে ফুলে” গানের একটা নতুন ভার্শন শুনলাম-আমাদের ব্যাচেরই একজনের গাওয়া । এতটা সুন্দরভাবে মনে হয় কেউ আগে গাইতে পারে নাই এই গান – সাথে সাথে গায়িকার প্রেমে পড়ে গেলাম – “প্রেমে পড়ে গেলাম” বললে যেরকম সকাল-বিকালের ক্রাশ বোঝায়- জিনিসটা কিন্তু মোটেও সেরকম ছিল না । তীব্র ফিলিংস । মনে হচ্ছিল – সারা জীবন প্রতিটা দিন ওর গান শুনতে পারলে আর কিছু লাগে না জীবন পারফেক্ট হতে...
পরে বিজয়দা আমাকে শান্ত করালেন ।
“বন্ধুর বাড়ির ফুলের টঙ্গি-
বাড়ির পূর্বধারে
সেথায় বসে বাজায় বাঁশী...
সেথায় বসে বাজায় বাঁশী
মন নিল তার সুরে
সইগো বসন্ত বাতাসে”
আসলে সারাটা জীবনই আমরা একটা পুর্ণতার অনুভূতির পেছনে ছুটি । এই পুর্ণতার ফিলিংস কখনো আমরা কোন কাজের মাঝে পাই, কখনো পাই কোন মানুষের সঙ্গে , কখনো পাই প্রভাব-প্রতিপত্তির মাঝে , আবার কখনো টাকার মাঝে । আর তাই কারো জীবন হয় তার গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড (বুলশিট) , কারো ফ্যামিলী , কারো বা চাকরি , আবার কারো টাকা ।
কিন্তু মানুষের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হল সে চেঞ্জ হয় । আর তাই এক মুহুর্তের “জীবনের অর্থ” বা “পুর্ণতা” অন্য মুহুর্তে বোঝা হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে হতাশার কারন ।
তখন আমাদেরকে “মুভ অন” করতে হয় । কিন্তু “মুভ অন” করতে করতে একসময় আর মুভ করতে ইচ্ছা হয় না । সবকিছু ছেড়েছুড়ে বসে থাকতে ইচ্ছা করে । তখন শুধু শুন্যতা ফীল করা যায়- সেটাকে পুরণ করা যায় না...
রাত প্রায় দুইটা বাজে –ইংরেজি দিনের হিসাবে কালকে বাংলা নববর্ষ । সম্মোহিতের মত করে আমি তাকিয়ে আছি থেমে থাকা ফ্যানটার দিকে – হলুদ এলইডির নেশাময় লালচে আভায় খুব দুরের মনে হচ্ছে ফ্যানটাকে – লাগছে অনেক অচেনা... যেন অন্য গ্রহের কিছু- অসাধারন কিছু, নাকি অপাংক্তেয় ??
ঠিক যেন আমার বর্তমান জীবন । খাপ খাওয়াতে পারছি না কোন কিছুর সাথে- ভার্সিটির একাডেমিক কাজ বিরক্তিকর লাগে- নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে – আমি কখন,কবে কি পড়ব সেটা কেন আমার হাতে থাকবে না ?? সবসময় কেন একই টাইপ জিনিস নিয়ে পড়াশুনা করতে হবে?? বাসায় বাবা-মার সাথে আজও চরম ঝগড়া হল । তারা নিজেদের আইডিওলজি – দর্শন , ভাল-খারাপের স্কেল আমার উপর চাপায় দিতে চায়...
অর্থাৎ আমাকে গড়ে তুলতে চায় নিজেদের মত করে । আবার মুখে বলে- “আমরা চাই তুমি আমাদের মত সাধারন মানুষ না হয়ে অনেক বড় কিছু হও ।”
আসলে তারা চায় আমি মানুষ হিসেবে হব তাদের মত- তাদের ধ্যান ধারনার, বস্তুত সমাজের সবার মত- সাধারন । কিন্তু আবার “সাকসেসের” দিক দিয়ে হব অসাধারন, সমাজের সবার থেকে আলাদা । বাহ... কি কন্ট্রাডিক্টরি কথাবার্তা । বাল...
ভার্সিটির বেশীরভাগ বন্ধুকে এখন আর কাছের মনে হয় না – রিসেন্টলি স্কুলের সেই পুরোন বন্ধুদের সাথে অর্থহীন আড্ডা দেয়াটাই সবথেকে আরামের লাগে।
রি-ইউনিয়ন অনেক কিছু ঠিক করে দিয়ে গেছে...
সো, বেসিক্যালি আমার জীবন এখন স্থির । মাঝে মাঝে নিজেকে নিজের বাইরে থেকে দেখলে এই ফ্যানের মতই লাগে । থেমে থাকা, ঘোলাটে জগতের এক প্রাণী... হয়তবা অসাধারণ , কিংবা অপাংক্তেয় । অনেকে ফিউচারের চিন্তা পুরোপুরি ছেড়ে দিতে পারে – তারা আমার পরিস্থিতিতেও হ্যাপী থাকে । কজ- “লাইফ গোস অন...”
কিন্তু আমি তো যেকোন ওয়েতে লাইফকে “গো” করাতে চাই না... খুব ইচ্ছা ছিল ছোট থেকে-রিসার্চার হব, ভার্সিটির টিচার হব- দেশ বিদেশ ঘুরব- নোবেল ফোবেল পাব । তাই আমার খারাপ লাগে – হতাশ লাগে ।অপুর্ণ লাগে । এখন আর নতুন কোন কিছুকেও নিজের সম্পূরক বানাতে পারি না। সব কিছু থেকে “মুভ অন” করতে করতে আমরা এগিয়ে যাই। কিন্তু আসলে “মুভ অন” করলেও সবকিছুর একটু একটু করে অংশ সাথে নিয়েই আমরা “মুভ” করি । আমাদের ভেতরে নিজেদের অজ্ঞানে জমতে থাকে অসম্পুর্ন কিছু অনুভুতি আর স্মৃতি। আর তাই এই স্মৃতি আর অপুর্ণ অনুভূতির জঞ্জাল দিয়ে একসময় ভর্তি হয়ে যায় আমাদের মন । আর নতুন তীব্র অনুভূতি তৈরী হয় না কারো জন্য, কোন কিছুর জন্য । পুর্ণতার অনুভূতি হারিয়ে যায় অপুর্ণতার ভীরে...
কাল নববর্ষ – আমার সবথেকে প্রিয় উৎসব । সবার মত আমারও নববর্ষের কাছে আকুতি- সব জঞ্জাল সাথে করে নিয়ে যাও... প্লীজ ।
অসম্পুর্ণ, অপরিণত সবকিছু থেকে আমাকে মুক্তি দাও – পুরনো অসম্পুর্ণ জঞ্জাল আমার “নব্যতা” অনুভব করার ক্ষমতা প্রায় শেষ করে দিয়েছে... আমি চাই নতুন করে পুর্ণতা পেতে- নব্যতা অনুভব করতে । কালকের এই নববর্ষের নব্যতা দিয়েই তা শুরু হোক...
গত বছর এই নববর্ষ পালন শুরু করেছিলাম আগের দিন রাতে । সারা রাত ছিলাম রাস্তায় – সেক্স ছাড়া এমন কিছু নাই যেটা সে রাতে তীব্রভাবে ফীল করিনি... ডিবি পুলিশের ভয়, জীবনের ভয়, মারামারি – কি ছিল না... এটা ছিল আমার জীবনের বেস্ট রাত । অনেকদিন পর পেয়েছিলাম সেই চির আরোধ্য “পুর্ণতা” । বসন্তের (পক্স) জন্য এবার হয়ত নিজে থেকে কিছুই করা হবে না – যা করার- নববর্ষকেই করতে হবে ।
তাই বসন্তের এই শেষ মুহুর্তে দাঁড়িয়ে তাই আমি আশাভরা চোখে চেয়ে আছি তোমার দিকে - এসো...
“মন নিল তার বাঁশীর গানে
রূপে নিল আঁখী
তাইতো পাগল আব্দুল করি...ম
তাইতো পাগল আব্দুল করিম
আশায় চেয়ে থাকে
সইগো বসন্ত বাতাসে...
সইগো বসন্ত বাতাসে । ”
।। সবাইকে শুভ নববর্ষ ।।
বসন্ত বাতাসে......
বসন্ত বাতাসে সইগো
বসন্ত বাতাসে-
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ...
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ
আমার বাড়ি আসে
সইগো বসন্ত বাতাসে
সইগো বসন্ত বাতাসে...”
এই গানটা যেভাবে চৈত্রকে ফীল করাতে পারে- সেভাবে মনে হয় আর কোন গান করাতে পারে না...সাদামাটা কথা- কিন্তু কেমন ধু ধু করা একটা আবহ । কিভাবে জানি গরম বায়ুপ্রবাহ ফীল করা যায় । সূরের কারনে মনে হয় । শুনলেই কিছু একটা মিস করতে হয়- ফাঁকা ফাঁকা লাগে...
কোন কারন ছাড়াই বিছানা ছেড়ে ফ্লোরে শুয়ে আছি- পাশে এক কাজিন- বিছানা খালি । কাজিন চুপচাপ ঘুমাচ্ছে বা মোবাইলে পর্ন দেখছে- আমি ঠিক জানি না । আমি লালনের “বসন্ত বাতাসে” শুনছি হেডফোন লাগিয়ে । চশমা ছাড়া আবছা ঘোলা চোখে মনে হচ্ছে বিশেষ কোন জায়গায় আছি । সারা ঘরে কোন আলো নাই- এসির এলইডির আবছা আলোয় কেমন জানি দুঃস্বপ্নীল একটা ইফেক্ট সারা ঘরে । এলইডি হলুদ । কিন্তু আমার কাছে সারা ঘর লালচে লাগছে ... টিভিতে ড্রাগ এডিক্টদের নেশা করা দেখানোর সময় যেরকম অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘোলাটে লালচে ইফেক্ট দেয়া হয়- পুরোপুরি সেরকম ।
“বন্ধুর বাড়ির ফুলবাগানে
নানান রঙের ফুল
ফুলের গন্ধে মন আনন্দে...
ফুলের গন্ধে মন আনন্দে
ভ্রমর হয় আকুল
সইগো বসন্ত বাতাসে...
সইগো বসন্ত বাতাসে”
মনে পড়ল লাস্ট এই গানটা সামনাসামনি শুনেছিলাম ভার্সিটির অনুষ্ঠানে । এন্ট্রান্স ডে ছিল আমাদের – এক মাসের মত আগে । সুমিকে ওইদিন প্রচন্ড সুন্দরী লাগছিল । মনে হচ্ছিল সারা জীবন শুধু এই স্টেজের সামনে বসে তার দিকে তাকায় থাকি- আর সে গান গাক । অদম্য একটা আকর্ষন কাজ করছিল - কোন কামনা বাসনা ছাড়া- সম্মান থেকে উদ্ভূত একটা তীব্র প্রেম । কামনাময় প্রেমের থেকে কোন অংশে কম তীব্র না ।
তবে এটাই প্রথম না- এক জিনিস সারা জীবন করতে চাওয়াও প্রথম না- এরকম ভাবে কামনাহীন সম্মানজাত প্রেমে পড়াও প্রথম না । সেদিন চারুকলার পিছনের গর্তটায় পা ঝুলিয়ে শান্তুর সাথে ধোঁয়া টানার সময়ও মনে হচ্ছিল- যদি কোন পাস্ট-ফিউচার না থাকতো – শুধুই এই মুহুর্তটা থাকত- আক্ষরিক অর্থেই অফুরন্ত সময় ধরে – আমার আর কিছু লাগত না – সবকিছু পারফেক্ট ছিল ওই মুহুর্তে । শান্তুর গালে বিকালের রোদ পড়ে চকচক করছিল- আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে সবকিছু দেখছিলাম- মনে হচ্ছিল এটা অন্য কোন জায়গা- অনেক আগে একসময় খুব কাছের ছিল । এখন আর নাই। আজ কতদিন পর আবার পেলাম- এই জায়গাটা।
আবার একদিন বিজয়দার রুমে রবীন্দ্রনাথের “ফুলে ফুলে” গানের একটা নতুন ভার্শন শুনলাম-আমাদের ব্যাচেরই একজনের গাওয়া । এতটা সুন্দরভাবে মনে হয় কেউ আগে গাইতে পারে নাই এই গান – সাথে সাথে গায়িকার প্রেমে পড়ে গেলাম – “প্রেমে পড়ে গেলাম” বললে যেরকম সকাল-বিকালের ক্রাশ বোঝায়- জিনিসটা কিন্তু মোটেও সেরকম ছিল না । তীব্র ফিলিংস । মনে হচ্ছিল – সারা জীবন প্রতিটা দিন ওর গান শুনতে পারলে আর কিছু লাগে না জীবন পারফেক্ট হতে...
পরে বিজয়দা আমাকে শান্ত করালেন ।
“বন্ধুর বাড়ির ফুলের টঙ্গি-
বাড়ির পূর্বধারে
সেথায় বসে বাজায় বাঁশী...
সেথায় বসে বাজায় বাঁশী
মন নিল তার সুরে
সইগো বসন্ত বাতাসে”
আসলে সারাটা জীবনই আমরা একটা পুর্ণতার অনুভূতির পেছনে ছুটি । এই পুর্ণতার ফিলিংস কখনো আমরা কোন কাজের মাঝে পাই, কখনো পাই কোন মানুষের সঙ্গে , কখনো পাই প্রভাব-প্রতিপত্তির মাঝে , আবার কখনো টাকার মাঝে । আর তাই কারো জীবন হয় তার গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড (বুলশিট) , কারো ফ্যামিলী , কারো বা চাকরি , আবার কারো টাকা ।
কিন্তু মানুষের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হল সে চেঞ্জ হয় । আর তাই এক মুহুর্তের “জীবনের অর্থ” বা “পুর্ণতা” অন্য মুহুর্তে বোঝা হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে হতাশার কারন ।
তখন আমাদেরকে “মুভ অন” করতে হয় । কিন্তু “মুভ অন” করতে করতে একসময় আর মুভ করতে ইচ্ছা হয় না । সবকিছু ছেড়েছুড়ে বসে থাকতে ইচ্ছা করে । তখন শুধু শুন্যতা ফীল করা যায়- সেটাকে পুরণ করা যায় না...
রাত প্রায় দুইটা বাজে –ইংরেজি দিনের হিসাবে কালকে বাংলা নববর্ষ । সম্মোহিতের মত করে আমি তাকিয়ে আছি থেমে থাকা ফ্যানটার দিকে – হলুদ এলইডির নেশাময় লালচে আভায় খুব দুরের মনে হচ্ছে ফ্যানটাকে – লাগছে অনেক অচেনা... যেন অন্য গ্রহের কিছু- অসাধারন কিছু, নাকি অপাংক্তেয় ??
ঠিক যেন আমার বর্তমান জীবন । খাপ খাওয়াতে পারছি না কোন কিছুর সাথে- ভার্সিটির একাডেমিক কাজ বিরক্তিকর লাগে- নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে – আমি কখন,কবে কি পড়ব সেটা কেন আমার হাতে থাকবে না ?? সবসময় কেন একই টাইপ জিনিস নিয়ে পড়াশুনা করতে হবে?? বাসায় বাবা-মার সাথে আজও চরম ঝগড়া হল । তারা নিজেদের আইডিওলজি – দর্শন , ভাল-খারাপের স্কেল আমার উপর চাপায় দিতে চায়...
অর্থাৎ আমাকে গড়ে তুলতে চায় নিজেদের মত করে । আবার মুখে বলে- “আমরা চাই তুমি আমাদের মত সাধারন মানুষ না হয়ে অনেক বড় কিছু হও ।”
আসলে তারা চায় আমি মানুষ হিসেবে হব তাদের মত- তাদের ধ্যান ধারনার, বস্তুত সমাজের সবার মত- সাধারন । কিন্তু আবার “সাকসেসের” দিক দিয়ে হব অসাধারন, সমাজের সবার থেকে আলাদা । বাহ... কি কন্ট্রাডিক্টরি কথাবার্তা । বাল...
ভার্সিটির বেশীরভাগ বন্ধুকে এখন আর কাছের মনে হয় না – রিসেন্টলি স্কুলের সেই পুরোন বন্ধুদের সাথে অর্থহীন আড্ডা দেয়াটাই সবথেকে আরামের লাগে।
রি-ইউনিয়ন অনেক কিছু ঠিক করে দিয়ে গেছে...
সো, বেসিক্যালি আমার জীবন এখন স্থির । মাঝে মাঝে নিজেকে নিজের বাইরে থেকে দেখলে এই ফ্যানের মতই লাগে । থেমে থাকা, ঘোলাটে জগতের এক প্রাণী... হয়তবা অসাধারণ , কিংবা অপাংক্তেয় । অনেকে ফিউচারের চিন্তা পুরোপুরি ছেড়ে দিতে পারে – তারা আমার পরিস্থিতিতেও হ্যাপী থাকে । কজ- “লাইফ গোস অন...”
কিন্তু আমি তো যেকোন ওয়েতে লাইফকে “গো” করাতে চাই না... খুব ইচ্ছা ছিল ছোট থেকে-রিসার্চার হব, ভার্সিটির টিচার হব- দেশ বিদেশ ঘুরব- নোবেল ফোবেল পাব । তাই আমার খারাপ লাগে – হতাশ লাগে ।অপুর্ণ লাগে । এখন আর নতুন কোন কিছুকেও নিজের সম্পূরক বানাতে পারি না। সব কিছু থেকে “মুভ অন” করতে করতে আমরা এগিয়ে যাই। কিন্তু আসলে “মুভ অন” করলেও সবকিছুর একটু একটু করে অংশ সাথে নিয়েই আমরা “মুভ” করি । আমাদের ভেতরে নিজেদের অজ্ঞানে জমতে থাকে অসম্পুর্ন কিছু অনুভুতি আর স্মৃতি। আর তাই এই স্মৃতি আর অপুর্ণ অনুভূতির জঞ্জাল দিয়ে একসময় ভর্তি হয়ে যায় আমাদের মন । আর নতুন তীব্র অনুভূতি তৈরী হয় না কারো জন্য, কোন কিছুর জন্য । পুর্ণতার অনুভূতি হারিয়ে যায় অপুর্ণতার ভীরে...
কাল নববর্ষ – আমার সবথেকে প্রিয় উৎসব । সবার মত আমারও নববর্ষের কাছে আকুতি- সব জঞ্জাল সাথে করে নিয়ে যাও... প্লীজ ।
অসম্পুর্ণ, অপরিণত সবকিছু থেকে আমাকে মুক্তি দাও – পুরনো অসম্পুর্ণ জঞ্জাল আমার “নব্যতা” অনুভব করার ক্ষমতা প্রায় শেষ করে দিয়েছে... আমি চাই নতুন করে পুর্ণতা পেতে- নব্যতা অনুভব করতে । কালকের এই নববর্ষের নব্যতা দিয়েই তা শুরু হোক...
গত বছর এই নববর্ষ পালন শুরু করেছিলাম আগের দিন রাতে । সারা রাত ছিলাম রাস্তায় – সেক্স ছাড়া এমন কিছু নাই যেটা সে রাতে তীব্রভাবে ফীল করিনি... ডিবি পুলিশের ভয়, জীবনের ভয়, মারামারি – কি ছিল না... এটা ছিল আমার জীবনের বেস্ট রাত । অনেকদিন পর পেয়েছিলাম সেই চির আরোধ্য “পুর্ণতা” । বসন্তের (পক্স) জন্য এবার হয়ত নিজে থেকে কিছুই করা হবে না – যা করার- নববর্ষকেই করতে হবে ।
তাই বসন্তের এই শেষ মুহুর্তে দাঁড়িয়ে তাই আমি আশাভরা চোখে চেয়ে আছি তোমার দিকে - এসো...
“মন নিল তার বাঁশীর গানে
রূপে নিল আঁখী
তাইতো পাগল আব্দুল করি...ম
তাইতো পাগল আব্দুল করিম
আশায় চেয়ে থাকে
সইগো বসন্ত বাতাসে...
সইগো বসন্ত বাতাসে । ”
।। সবাইকে শুভ নববর্ষ ।।