এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
অভাবে নাকি স্বভাব নষ্ট হয় । কথাটি হয়ত এক সময়ে সত্য হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু এখন আর সত্য না । এখন স্বভাব নষ্ট হয় ক্ষমতায়, অর্থে, প্রতিপত্তিতে । হাতে একটু ক্ষমতা এল তো বাকী সব বান্দির ফুত, হাতে একটু অর্থ এল তো বাকী সব ফহিন্নীর ফুত, হাতে একটু প্রতিপত্তি এল তো বাকী সব চোরের ফুত । যা মুখে আসে তাই বলে দেয় । এই হয়ে যায় ওদের স্বভাব । তো, স্বভাবের এমন গুণ(!) কি গরীবের মধ্যে দেখা যায় ? তাহলে অভাবে স্বভাব নষ্ট হয় কিভাবে ?
তো, স্বভাব নিয়ে মনোবিজ্ঞানীদের কিছু গবেষণার ফলাফল দেখুন আর জেনে রাখুন বিভিন্ন সব মানুষের বিচিত্র সব স্বভাব ।
১ ।
কিছু স্বভাবের মানুষ আছে সবসময় অন্য জনকে ছোট করে আনন্দ পায় ।
ধরেন আপনি বন্ধুদের মজলিশে আপনার নতুন প্রেমিকা সম্পর্কে স্তুতিগান গাইছেন । সে কত ভাল, তার পরিবার কত ভাল, কত বড় ফ্যামিলির মেয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি । ঠিক এই সময়ে আপনার এক বন্ধু বলে উঠল, “আরে এত ভাল হলে কি আর তোর সঙ্গে প্রেম করে”? ব্যস্ হোল ? দিল সব শেষ করে ?
খেয়াল করে দেখবেন আপনার বন্ধু বান্ধব কিংবা আপনার অফিসের কলিগদের মধ্যে এরকম এক আধজন থাকবেই যারা আপনাকে বা অন্যজনকে এমন ছোট করে আনন্দ পায় ।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এ স্বভাবের মানুষদের আত্মসম্মানবোধ থাকে না, আর অন্যান্যদের চেয়ে এদের আই কিউ তুলনামূলক ভাবে কম থাকে ।
আমি বলি কি ? এরা যদি কোন ভাবে একবার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে উঠতে পারে, জীবনেও আর শ্বশুর বাড়ির লোকজন এদের বের করতে পারবে না । কারণ, এদের আত্মসম্মানবোধ নেই । আর আই কিউ কম থাকার কারণে এরা বউ আর শালীর পার্থক্যও বুঝবে না । সুতরাং ভেবে চিন্তে .........
২।
আচ্ছা, আপনি কি অন্যের রাগ দেখে আনন্দ পান ? যদি পান, তাহলে আপনার মজা পাওয়া এখানেই শেষ করুন । জানেন ? আপনি যে জন্যে এই আনন্দ পান তার মূল কারণ হচ্ছে আপনার শরীরে টেষ্টোষ্টেরন (testosterone) হরমোন নির্গত হচ্ছে বেশী !
এই টেষ্টোষ্টেরন হরমোনের আধিক্যের জন্য কিন্তু আপনি অল্প বয়সে টেকো হয়ে যাবেন । তখন দেখবেন অন্য জনেরা আপনাকে নিয়ে কেমন আনন্দ পায় । কি বললেন ? এ রকম কেন হবে ? আরে! পাপের শাস্তি মাথায় নেবেননা তো কোথায় নেবেন ?
৩।
কিছু স্বভাবের মানুষেরা সবসময় অন্যের সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করে । চিনুক আর না চিনুক, অন্যের সম্পর্কে বিভিন্ন আজে বাজে মন্তব্যে এরা যে কি আনন্দ পায় বুঝিনা ।
মনোবিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন এদের আত্মবিশ্বাস থাকে একেবারে কম !
আমি বলি কি ? এরকম মানুষ পেলে এদের কানে কানে একটু বলে আসুন যে, “ভাই/আপু, আপনার সম্পর্কে ঐ কথাটা শুনলাম(দরকার হলে বানিয়ে বানিয়ে), ওটা কি সত্য?” ব্যস্, এবার দেখুন ব্যাঙের লাফানো কাকে বলে !
৪।
কিছু মানুষের স্বভাব হচ্ছে, এরা যখন দেখে এদের দিকে কেউ লক্ষ রাখছে তখন এদের মত ভালো মানুষ আর হয় না । এরা তখন এতই ভালো হয়ে যায় যে, প্রস্রাব দরকার হলে প্যান্টে করে দেবে, তাও আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে না টয়লেটটা কোথায়, পাছে আপনি বিরক্ত হন !
ইস্, যদি প্রত্যেক চাকরীদাতাকে কানে কানে গিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে আসতে পারতাম এরা আর যাই হোক কাজের হয় না !
৫।
বিশ্বের নামকরা ইন্টারভিউয়াররা চাকরীর আবেদনকারীদের সামনা সামনি ইন্টারভিউ নেবার আগে প্রথম কাজটা কি করে জানেন ? প্রথমে বায়োডাটা বা সি ভি এর ইন্টারভিউ নেন । যার বায়োডাটা ওজনে ভারী বা তুলনামূলক আকর্ষনীয় ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সে আবেদনকারীর চাকরী হবার সম্ভাবনা কিন্তু বেড়ে যায় সেখান থেকেই ! সুতরাং চাকরীর বায়োডাটা তৈরী করবেন একটু চিন্তা ভাবনা করে, আর এ কাজে একটু সময় আর শ্রম দেবেন । মাথায় গেল ব্যপারটা ? না গেলে চাকরিও গেল ! ঐ সোনার হরিণ হয়েই থাকবে !
নামকরা ইন্টারভিউয়ারদের কিন্তু এটা একটা কমন স্বভাব ।
৬।
যারা কঠোর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে জীবন পার করে তাদেরকে কনভিন্স করা অন্যান্যদের চেয়ে বেশী কষ্টকর । এমনকি যারা শক্ত চেয়ারে বসে কাজ করে কিংবা শক্ত বিছানায় ঘুমায় তাদেরও কিন্তু অন্যান্যদের চেয়ে কনভিন্স করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় ।
বলি, আমাদের বাপ দাদারা শক্ত কাঠের চেয়ারে বসে কাজ করত বলেই কি তাদের কোন কিছু মানাতে পারতাম না ? আর আমরা নরম গদির চেয়ারে বসে কাজ করি বলে সব কিছু মেনে নেই ? তাহলে তো আমাদের কোন দোষ নেই বাবা ! সব দোষ তো ঐ নরম চেয়ারের !
এ হচ্ছে কঠোর পরিবেশে বেশীদিন থাকার ফলে অর্জিত স্বভাব ।
৭।
মানুষের আরেকটা অদ্ভুৎ স্বভাব শুনেন, ধরেন আপনি কারও কাছে পাঁচ হাজার টাকা ধার চাইলেন, এখন সে আপনাকে টাকাটা দিতে পারে বা নাও দিতে পারে, ঠিক না ? দিতে পারলে দিবে, আর না দিতে পারলে মানা করবে বা হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিবে । এই তো ? এখন আপনি ঐ মানুষের কাছে টাকা না চেয়ে নামাজ পড়ে আপনার জন্য একটু দোয়া করতে বলুন তো ? আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, তার যদি নামাজ পড়ার অভ্যাস না থাকে সে কখনই আপনার এ অনুরোধ রক্ষার জন্য নামায পড়ে আপনার জন্য দোয়া করবে না । আর শুধু দোয়া যে করবে না তা না, আপনাকে মানাও করবে না বা হাত জোড় করে ক্ষমাও চাইবে না ।
যে সাহায্য করতে কম ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, মানুষ সে সাহায্য করতে কম আগ্রহী হয় ।
আমিও বারবার ভেবে দেখেছি, কথাটা আসলেই ঠিক । তাই ঠিক করেছি এখন থেকে আর দোয়া চাইব না, টাকাই চাইব ।
৮।
এবারেও ঐ একই প্রসংগ, মানবিক সাহায্যের বিষয়ে বেশীরভাগ মানুষই ওয়াদা করতে পিছপা হবে না । একই সাথে বেশীর ভাগ মানুষই ওয়াদা পূরণও করবে না ।
৯।
মিথ্যা কথা বলার জন্য কিন্তু অনেক চিন্তা ভাবনা করতে হয় । কারণ একই সাথে মিথ্যাটাও বলতে হয়, আবার একই সাথে সত্যটাও গোপন করতে হয় । এত সব চিন্তা করে মিথ্যাবাদী মিথ্যাবলার ক্ষেত্রে সহজ সরল শব্দগুলোই বেছে নেয় বেশী । আর আমরা সহজ সরল শব্দ গুলোকেই সত্য মনে করি ।
১০।
আকর্ষণীয় বাহ্যিক রুপ ও সততার মুখোশধারীরা সহজেই সাধারণ পাবলিকের আস্থা অর্জন করে । সাধারণ পাবলিকেরা সততার চেয়ে বাহ্যিক রুপ বেশী গুরুত্ব সহকারে নেয় ।
বলি, তা নেবে না ? বাহ্যিক রুপ তো দেখা যায়, সততা কি দেখা যায় নাকি ?
এ হচ্ছে পাবলিকের স্বভাব ।
১১।
ভোট বা ইলেকশনের সময় বেশীর ভাগ সাধারণ ভোটাররা মধ্য বয়স্ক ও সুদর্শন প্রার্থির দিকে আকর্ষিত হয় বেশী ।
আমার কি মনে হয় জানেন ? আমাদের দেশের ভোটারদের বেলায় মনোবিজ্ঞানীদের এ ফর্মূলা ঠিক খাটে না । আরে আমরা তো প্রার্থীর দিকে তাকিয়ে ভোট দেই না, আমরা মার্কার দিকে তাকিয়ে ভোট দেই । তা, প্রার্থী যেমনই হোক না কেন, আমাদের কিচ্ছু আসে যায় না ।
১২।
জীবনে ব্যর্থ লোকেরা সব সময় সফল ও ধনীদের আসাধারণ বুদ্ধিমান আর জ্ঞানী মনে করে ।
ভাই, আমিও তো তাই মনে করি । তারমানে আমি কি......?
১৩।
মানুষ নাকি যত অর্থের মালিকই হোক না কেন সে ততটুকু খুশী হয় না, যতটুকু খুশী সে তার কম্পিটিটরের চাইতে বেশী অর্থের মালিক হলে হয় ।
আজব তো, আমি তো এমনি এমনিই খুশী হই । আর আমার কোন কম্পিটিটরও নাই, তাহলে কি আমি মানুষ না ?
১৪।
মাঝে মাঝে কিছু মানুষ রেগে গিয়ে এত্ত হৈ চৈ, চিল্লা চিল্লি, মারামারি কেন করে জানেন ? পুরোপুরি অন্যের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য । এই দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য এরা যে কোন কিছু করে ফেলতে পারে । এ ধরণের মানুষরা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অসৎ হয় ।
১৫।
ডিসিশন নেয়া যত কঠিন হয়, মানুষ ডিসিশন নেবার আগ্রহ ততটাই হারিয়ে ফেলে । বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যে স্টোর গুলোতে পণ্যের অপশন(option, model, variation) বেশী রাখা হয় সেখানে কাস্টমারদের ডিসিশন নেয়া ততই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় । ফলে শুধুমাত্র ডিসিশন নেয়ার অভাবে তারা পণ্য ক্রয়ের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ।
আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের এ বিষয়টা নিয়ে ভালোভাবে পড়াশোনা করা উচিত ।
১৬।
বেশিরভাগ মানুষই দ্রুত সিদ্ধান্ত পছন্দ করে না । এ সিদ্ধান্ত অন্যের হোক বা নিজেরই হোক । বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্রুত সিদ্ধান্তের ফলাফল সন্তোষজনক হলেও তারা পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্তে অসন্তষ্ট থাকে । তারা মনে করে আরেকটু সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে ফলাফলটা হয়ত আরও ভালো হোত ।
হুম্, দেখবেন যারা তড়িঘড়ি করে বিয়ে করে তারা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই কিন্তু এ সমস্যায় পড়ে থাকে । বিয়ের কয়েকদিন পরেই মনে করে আরেকটু চিন্তা ভাবনা করে বিয়ে করলে হয়ত আরও ভালো ছেলে বা মেয়ে পেতাম । আরে বাবা, এটা কোন চিন্তার বিষয় হোল ? আসল চিন্তার বিষয় যে অন্যখানে ! আপনার সংগী বা সংগীনি যে একই চিন্তা করছে না, তার গ্যারান্টি কি ?
১৭।
বিভিন্ন মানুষের কাছে রিস্ক এর সংজ্ঞা বিভিন্ন রকম । কেউ হয়ত মাটি থেকে ত্রিশ হাজার ফিট উঁচু হতে প্যারাস্যুট জাম্প করতে ভয় পায় না, কিন্তু সেই যখন বসের রুমে ঢুকেন তখন হয়ত ভয়ে কাঁপতে থাকেন । আবার দেখা যায় কেউ হয়ত বাঘের হুংকার শুনে ভয় পান না, কিন্তু বউয়ের হুংকারে জ্ঞান হারানোর দশা হয় ।
পরিশিষ্ঠঃ
এগুলোর বাইরে আরও একটা স্বভাব আছে, যে স্বভাবের প্রাণী গুলোকে আসলে মানুষ বলা যায় না । এদের কোন জানোয়ার বলে গালি দিলে আসলে সেই জানোয়ারকেই গালি দেয়া হয় । এদের আকার আকৃতি মানুষের মতই, কিন্তু মানুষ না । এদেরকে পিশাচ বলা হয় । এরা রাজনের মত অবুঝ নিষ্পাপ শিশুকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে ।
রাজন আমাদের ক্ষমা কর বাবা । তোর হত্যার বিচার চাওয়া ছাড়া আর কি করব বল ? তুই মৃত্যুর আগে আইনের আশ্রয় পাসনি, কিন্তু ওরা ঠিকই আইনের আশ্রয় পেল, আমরা ওদের পিটিয়ে মারতে পারলাম না । তুই এত পানি পানি করে কাঁদলি, ওরা তোকে একফোঁটা পানি দিল না, আর ওরা কিন্তু দিনের পর দিন তোর বাবা আর আমাদের পয়সার অন্ন ধ্বংস করে যাবে । এ কষ্টও বড় কষ্ট রে বাবা, অনেক বড় কষ্ট ।
ব্যাঙ দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেষ্ট?
১৯৬০ সাল পর্যন্ত মহিলাদের প্রেগন্যান্সি পরীক্ষার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমাধান কি ছিল জানেন ? যাকে প্রেগন্যান্ট সন্দেহ করা হত তার প্রস্রাব আফ্রিকান এক প্রকার নখরযুক্ত ব্যাঙয়ের (African clawed frog) শরীরে প্রবেশ করানো হোত । যদি পরবর্তী ৮-১২ ঘন্টার মধ্যে ব্যাঙটি ডিম পাড়ত তাহলে মহিলাটি প্রেগন্যান্ট । শুধু তাই না, পরীক্ষাটি শতকরা ৯৭-৯৮ ভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক তথ্য দিত । বিশ্বাস হচ্ছে না, তাই না ? তাহলে ভিজিট করে আসুন এই সাইটটি থেকে - Click This Link ; এখন বিশ্বাস হয়েছে ?
যদি বিশ্বাস হয় তাহলে আরেকটি তথ্য দেই । শুধু প্রেগন্যান্ট কিনা, তা না । ছেলে হবে না মেয়ে হবে তাও আগেকার মানুষেরা পরীক্ষা করে বের করে ফেলত, তাও কত আগে জানেন ? যীশু খৃষ্টের জন্মেরও ১৩৫০ বছর আগে ! যার পরীক্ষা করা হোত তার প্রস্রাব নিয়ে গম আর বার্লির ওপর ছিটিয়ে দেয়া হোত । যদি গম থেকে চারা ফুটে বেরুতো তাহলে মেয়ে সন্তান হবে আর যদি বার্লি থেকে চারা ফুটে বেরুতো তাহলে ছেলে সন্তান হবে ।
আরও অবাক করা ব্যপার হচ্ছে ১৯৬০ সালে ন্যাশনাল ইনষ্টিটিউট অব হেলথ্ গবেষণা করে দেখেছে পরীক্ষাটি আসলেই কার্যকর এবং বিজ্ঞান সম্মত । কি ? এটাও বিশ্বাস হচ্ছে না ? তাহলে ঘুরে আসুন - Click This Link সাইটটি থেকে ।
আমি বলি কি, এখন তো প্রেগন্যান্সি টেষ্টের অনেক ধরণের ষ্ট্রিপ বাজারে পাওয়া যায় আর ওগুলো খুব একটা দামি তাও না । তো ঐ ষ্ট্রিপ দিয়ে স্ত্রীর প্রেগন্যান্সি টেষ্ট টা সহজেই করে ফেলা যায় । তবে ছেলে হবে না মেয়ে হবে এটা জানার জন্য এত টাকা খরচ করে আলট্রাসনো করার কি কোন দরকার আছে ? আর অযথা আলট্রাসনো করানোও নাকি ঠিক না । সুতরাং বাসায় কিছু গম আর বার্লি কিনে নিয়ে আসলেই হয় !!
আর সাথে সাথে এও বলে দিচ্ছি, আমি কিন্তু কম কষ্ট করে ডাটাগুলো যোগাড় করি নি, তার ওপর আলট্রাসনোর খরচটাও বাঁচিয়ে দিলাম । সন্তান হলে আমার ভাগ্যে এক আধটু মিষ্টি যাতে জুটে, মনে রাখবেন ।
হাঁটি হাঁটি পা পা, যেখানে খুশী সেখানে যা
আপনাকে যদি হেঁটে হেঁটে সমস্ত পৃথিবীটা একটা চক্কর দিয়ে আসতে বলা হয়, তাহলে পারবেন? যদি বলেন পারবেন না, তাহলে শুনে রাখেন, পারবেন। তা ও, একবার বা দুইবার না, তিন তিন বার! গবেষণায় দেখা গেছে, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ তার জীবদ্দশায় যতটুকু হাঁটেন তাতে সমস্ত পৃথিবী তিন বার চক্কর দেয়ার সমান হয়ে যায়।
তবে কিছু মানুষ আছেন যারা এই সুস্থ স্বাভাবিক মানুষগুলোর চেয়ে আরও কয়েক পা এগিয়ে থাকতে চান। এদেরই একজন জর্জ মিগান(George Meegan) (https://en.wikipedia.org/wiki/George_Meegan), লম্বা হাটায় বিশ্ব রেকর্ড রয়েছে ইনার। ১৯৫২ সালের ২রা ডিসেম্বর জন্ম নেয়া ব্রিটিশ এই ভদ্র লোক ছিলেন একজন মেরিনার। ১৯৭৬ সালে চাকরী ছেড়ে দিয়ে তিনি ১৯৭৭ সালে শুরু করেন তার সেই বিশ্বখ্যাত হাঁটা, যা শেষ হয় ১৯৮৩ সালে। এটা দীর্ঘতম অবিরাম হাটার রেকর্ড হিসাবে গিনেস্ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ এ সংরক্ষিত। দীর্ঘ ২,৪২৫ দিন হেঁটে তিনি অতিক্রম করেন মোট ৩০,৬০৮ কিলোমিটার।
মজার ব্যপার হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকা হতে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত এ দীর্ঘ ছয় বছরের পদযাত্রায় তিনি –
১। কদম ফেলেছেন মোট ৪ কোটি ১০ লক্ষ বার
২। জুতো ছিঁড়েছেন মোট সাড়ে তের জোড়া
৩। তার জাপানী প্রেমিকাকে বিয়ে করেন
৪। এ যাত্রায় তিনি ঐতিহাসিক দূর্গম ডারিয়েন গ্যাপ (Darien Gap) (Click This Link) অতিক্রম করেন, যেখানে তাকে উদ্দেশ্য করে একবার গুলি ছোঁড়া হয়, আরেকবার ভাগ্যক্রমে সন্ত্রাসীদের ছোরার আঘাত থেকে বেঁচে যান।
৫। এ যাত্রায় তিনি তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের বাসাও ঘুরে আসেন
৬। যাত্রা শেষে তিনি লাভ করেন গিনেস্ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ এ তার নাম, সুন্দরী জাপানী স্ত্রী আর তার গর্ভে দুইটি ফুটফুটে ছেলে মেয়ে।
হ্যান্ডশেক ভালো? নাকি চুমু ভালো?
চুমু খাওয়ার চেয়ে নাকি হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায় বেশী, জানেন নাকি এটা? আর না জেনে থাকলেও সমস্যা নেই, এখনতো জানলেন।
তবে বলে রাখি, এই তথ্যের আবার অপব্যবহার করবেন না যেন। বুঝতে পেরেছেনতো আমি কি বলতে চেয়েছি?
না বুঝলেও সমস্যা নেই, মাইরের মধ্যে নাকি কি কি ভিটামিন আছে?
মস্তিষ্কের খেলামানুষের মস্তিষ্ক নাকি সেকেন্ডে এক কোটি দশ লাখ বিট তথ্য গ্রহণ করতে পারে, তবে আইডেন্টিফাই করতে পারে মাত্র চল্লিশটি।
আপনাদের মস্তিষ্ক এরকম নাকি? আমারটা কিন্তু এরকম না, আমার মস্তিষকের তথ্য গ্রহণের হিসাব সেকেন্ড না, বরং ঘন্টা হিসাবে বের করতে হবে।
আপনি কি পোকা খান?
আচ্ছা আপনি কি পোকা খান? খান না? তবে জেনে রাখুন, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে বিশ্বে প্রতিটা মানুষ তার জীবনে প্রতি বছরে গড়ে ৪৩০ টি পোকা খেয়ে ফেলে, তাও ভুল বশতঃ।
ছ্যা ছ্যা। আমি বাবা ওসব খাই না, মানে এখন থেকে খাবার দাবার পরীক্ষা করে খাব আরকি।
মানুষ নামের মহাশয়
এই পৃথিবী তার ধরণীতে যতগুলো মানুষ নিয়ে সূর্যের চারপাশে ঘুরে বেড়ায় তার চেয়ে বেশী সংখ্যক জীবাণু নাকি আমাদের শরীরে নিয়ে আমরা ঘুরে বেড়াই!
পৃথিবীর আসলে অনেক কিছুই শেখার আছে আমাদের কাছ থেকে।
দেঁতো বাবা !!
গড়ে প্রতি ২০০০(দুই হাজার) শিশুর মধ্যে একজন শিশু নাকি জন্মের সময় দাঁত নিয়ে জন্মায়।
দাঁতের তো অনেক নাম আছে, যেমন- দুধ দাঁত, আক্কেল দাঁত ইত্যাদি। এই দাঁতের নাম কি হবে? পেঁটু দাঁত?
লালা লা লা
মরফিন একটি শক্তিশালী বেদনানাশক। এর চেয়েও ০৬(ছয়) গুণ বেশী শক্তিশালী বেদনানাশক আছে আমাদের লালায়, এর নাম অপিওরফিন (opiorphin)।
দে দে, লাফ দেআপনার পোষা প্রাণিটি যখন তার গা চুলকায় বা গা ঝাঁকা দেয় তখন তার গায়ের কীট বা জীবাণুগুলো খুব দ্রুত গতিতে তার গা থেকে লাফ দেয়। এই কীট বা জীবাণূগুলোর এই গতির ত্বরণ (প্রতি সেকেন্ডে গতি বৃদ্ধির হার) কেমন জানেন? -মহাকাশগামী স্পেস শাটল্ বা রকেট যে ত্বরণে ভূপৃষ্ট হতে লাফ দেয় তার চাইতে ২০(বিশ) গুণ বেশী!
পালুন এবার বিড়াল, কুকুর, সাথে আরও কত কি !!
সবশেষে একটি হাদীস
কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-১১
১৪ই মার্চ, শুক্রবার, ১৮৭৯ সালে সকাল সাড়ে এগারটায় জার্মানীর উলমে জন্ম নিল একটি ছেলে বাচ্চা। সুস্থ, স্বাভাবিক, সব কিছুই ঠিক ঠাক। মায়ের অতি আদরের ছেলেটি আস্তে আস্তে অন্যান্য সব বাচ্চাদের মতই বেড়ে উঠতে লাগল। বাচ্চাটির বয়স যখন দেড় কি দু’ বছর তখন সবাই আস্তে আস্তে খেয়াল করল অন্যান্য সব বাচ্চারা যখন এ বয়সে কট্ কট্ শব্দে বিভিন্ন অদ্ভুৎ উচ্চারণে সমস্ত বাড়ি ব্যতিব্যস্ত করে রাখে তখন এ ছেলে কিনা একেবারেই চুপ! সারাক্ষণ চুপচাপ ব্যস্ত নিজের খেলনাগুলো নিয়ে! আরে বাবা এ কি বোবা হয়ে জন্মালো নাকি?
ছেলেটির বয়স তখন চার হবে, এই সময়ে একদিন সবাই ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেছে। সবার সাথে ছেলেটিও আছে। মা এই প্রথম একটি ভুল করে ফেললেন – স্যুপের বাটিটা সহ্য করার মত ঠান্ডা না করেই ছেলেটির সামনে দিয়ে ফেলেছেন। এতদিনে সবাই মোটামুটি নিশ্চিত যে, ছেলেটি বোধ হয় কোনদিন কথা বলতে পারবে না। এদিকে যে ঘটনাটি ঘটল তা হচ্ছে - স্যুপের বাটিটিতে হাত দেয়া মাত্রই সবাইকে অবাক করে দিয়ে একেবারে নির্ভুল উচ্চারণে ছেলেটি বলে উঠল, “ স্যুপটা অনেক গরম”।
সবার এবার খাদ্য খাওয়া বাদ দিয়ে ভিড়মি খাওয়ার যোগাড়, “আরে! তুমি তো বাপু দিব্যি কথা বলতে পার, তাহলে এতদিন বলনি কেন?”
“বা রে, কেন বলব? এতদিন তো সব কিছু ঠিকঠাক মতই ছিল!”- এক্কেবারে যুক্তিযুক্ত উত্তর ছেলেটির। আর হবেই না বা কেন? এ কি আর সাধারণ ছেলে? এরকম ছেলে কি ঘরে ঘরে জন্মায়?
এ-আলবার্ট আইনস্টাইন! বিশ্বের সর্ব কালের সেরা বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম, থিওরি অফ রিলেটিভিটির জনক!
আপনারা জানেন? তিনি এত বড় বিজ্ঞানী কিন্তু তার কোন গাড়ি ছিল না! এমন কি কোনদিন গাড়ি চালানোও শিখেন নি! কোথাও যেতে হলে তিনি হেটে অথবা সাইকেলে চড়ে যেতেন। খুব দরকার হলে তিনি বন্ধুদের বা আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে গাড়ি ধার নিয়ে ব্যবহার করতেন, তাও ড্রাইভার সহ।
আসলে গাড়ি তার মোটেই পছন্দ ছিল না, তার পছন্দ ছিল বোট। তিনি বোট কিনেছিলেন এবং মাঝে মাঝেই বোটে চড়ে ঘুরতে বেরুতেন। কিন্তু সেখানেও সমস্যা ছিল, তিনি সাঁতার জানতেন না, তার উপর কোন সময়েই লাইফ জ্যাকেটও পড়তেন না। তার বোটে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর সময়টা তার পরিবারের কাছে ছিল রীতিমত আতংকের সময়।
তিনি হেঁটে বেড়াতেও পছন্দ করতেন, হাঁটতে হাঁটতে তিনি ঘাস ফড়িং খুঁজতেন। ভাগ্যক্রমে দুই একটা জুটে গেলে অমনি মুখে পুরে চ্যাবাৎ! অর্থাৎ একেবারে দাত দিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতেন!
তিনি ছিলেন খুব শান্তি প্রিয় মানুষ, পাখি দেখতে খুব পছন্দ করতেন। মিউজিক তাকে খুব টানত, মিউজিকের করুণ সুরগুলোতে তিনি অঝোর ধারায় কাঁদতে পারতেন।
অসাধারণ প্রতিভাবান এই বিখ্যাত ব্যাক্তিটি অন্যান্য বিখ্যাত ব্যক্তিদের মতই পাপারাৎজিদের অন্তর থেকে ঘৃণা করতেন। পাপারাৎজিদের তার ছবি তুলতে দেখলেই তিনি জিহ্বা বের করে চেহারাকে কিম্ভুতিকামার করে ফেলতেন।
সোমবার, ১৮ই এপ্রিল, ১৯৫৫ সালে ৭৬ বছর বয়সে আমেরিকার নিউ জার্সির প্রিন্সটনে একটি হসপিটালে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ডঃ থমাস এস হার্ভে নামক একজন গবেষক গবেষণা করার জন্য কারও অনুমতি ছাড়াই তাঁর মাথা থেকে মগজ অপসারণ করে ফেলেন।
এত কিছু জানার পর পাঠক কি তাঁর কবর দেখার জন্য কোন আগ্রহ বোধ করছেন? যদি আগ্রহ বোধ করেন তাহলে বলে দেই, তাঁর কোন কবর নেই। আইনস্টাইনের অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর দেহ পুড়িয়ে অজানা কোন স্থানে তাঁর দেহ ভস্ম ছিটিয়ে দেয়া হয়, এটা কোথায় তা কেউ জানে না, জানবেও না কোন দিন।
আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)
জার্মানীতে জন্মগ্রহণকারী থিওরিটিকাল ফিজিসিস্ট। থিওরি অফ রিলেটিভিটি’র জনক।
জন্মঃ ১৪ই মার্চ, ১৮৭৯, উলম, জার্মানী
মৃত্যুঃ ১৮ই এপ্রিল, ১৯৫৫, প্রিন্সটন, নিউ জার্সী, ইউনাইটেড স্টেটস্।