যদি ঈশ্বর থেকেই থাকেন তাহলে তার তো একটা শুরু থাকবে। প্রথমে তার নিজেরই অস্তিত্বে আসতে হবে। নাহলে তিনি সৃষ্টি করবেন কীভাবে? তাহলে স্রষ্টার অস্তিত্বে আসার আগে কী ছিল? স্রষ্টা কীভাবেই বা অস্তিত্বে এলেন? এগুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং যৌক্তিক প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর ধর্মগ্রন্থে থাকাটা বাঞ্চনীয় ছিল। নেই যখন তখন কী আর করা। আর অস্তিত্বে আসার পর তিনি ঠিক প্রথম কী সৃষ্টি করেছিলেন তা জানাটা খুবই দরকার। কারন তার প্রথম সৃষ্টি কী তাই যদি না জানি তাহলে এত শত ধর্ম পালন মানবজাতির জন্য বৃথা। আর স্রষ্টা নিজে কী দিয়ে তৈরী তাও ধর্ম গ্রন্থে স্পষ্ট নয়।অনেক ধর্মে বলা হয় ঈশ্বরের নাকি নূরের পর্দা আছে। আচ্ছা ঈশ্বরের পর্দা লাগবে কেন? তিনি নাকি আরশে সমাসীন। সেই আরশটা কীসের তৈরী। এইসব প্রশ্নের উত্তর হাবিজাবি কথা বলে এড়ানো মানে নিজের ধর্মের প্রতিই অনাস্থা। কারন ধর্মের মতে জীবন চালাতে হলে ঈশ্বর সম্পর্কে যদি সেই ধর্মই নীরব থাকে তাহলে সেই ধর্মের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠাটাই স্বাভাবিক। ঈশ্বর প্রথম কী সৃষ্টি করেছিলেন তার চেয়ে বড় ব্যাপার তিনি তার প্রথম সৃষ্টি কী দিয়ে বানিয়েছিলেন? কেনইবা বানিয়েছিলেন। তার প্রথম সৃষ্টির উপকরন কী ছিল? তার উদ্দেশ্যই বা কী ছিল। ঈশ্বর যখন প্রথম নিজেই আত্মপ্রকাশ করলেন তখনতো একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিছুই যখন ছিল না তাহলে বুঝা যায় কোন খারাপ কিছুও ছিল না। তাহলে প্রথম খারাপ কিছু কীভাবে অস্তিত্বে এলো? বিশাল মহাবিশ্বের অনেক সৌরজগতের অত্যন্ত ছোট্ট একটা গ্রহে মানুষের বসবাস। তাহলে বাকী গ্রহগুলো বানানোর কীইবা দরকার ছিল। এখনো অনেক গ্রহই আবিষ্কার হয়নি। হয়ত অন্যান্য গ্রহেও থাকতে পারে প্রান। তাদের বুদ্ধিমত্তা হয়ত মানুষের চেয়েও বেশি হতে পারে কিংবা নাও হতে পারে। ঈশ্বর কেনইবা তৈরী করলেন স্বর্গ-নরক। তার সৃষ্টির প্রক্রিয়া কী এটাও ধর্মে বলা যায় অনেকটা জাদুর মত। হও বললেই নাকি হয়ে যায়। তাহলে তার মুখ দিয়ে উচ্চারন করতে হয়। কেন ঈশ্বরকে কেন মুখ দিয়ে উচ্চারন করতে হবে? তিনি কি মুখ দিয়ে উচ্চারন করা ছাড়া কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন? তার ভাষা কী? তিনি কি অস্তিত্বে আসার পরই ভাষার ব্যবহার করতে লাগলেন? এই পৃথিবীতে একমাত্র মানুষ কথা বলে। তাহলে ঈশ্বরও কি মানুষের মতই কথা বলেন নাকি তার কথা অন্যরকম।তার কন্ঠ কেমন তা কোন ধর্ম গুরুই বলে যাননি। ঈশ্বরের কথার কম্পাংক কেমন? তা কি কোন মানুষের শ্রবনযোগ্য হতে পারে? নাকি তিনি তার কন্ঠের কম্পাংক কমিয়ে ফেলেন।
ঈশ্বরের কন্ঠের বর্ননা কোন ধর্ম গ্রন্থেই নেই। মহাবিশ্বে প্রতিনিয়ত অনেক বিস্ফোরণ হচ্ছে যেগুলো পৃথিবীতে শোনাই যায়না, কারণ সেগুলোর কম্পাংক মানুষের শ্রবনশক্তির বাইরে। ঈশ্বর কথা বলেন তার মানে তাকেও ভাবের প্রকাশ করতে হয়। প্রকাশ না করেও কি কাউকে কিছু জানাতে পারবেন এই ঈশ্বর নামক প্রাচীন ধারনাটি। ধর্ম গুরুরা বিনা বাঁধায় এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতেন অথচ আজকের যুগে একজন প্রেসিডেন্টও ভিসা ছাড়া অন্য দেশে যেতে পারেননা। তাহলে কেন ধর্ম গুরুদের যুগে ছিল না ভিসার সিস্টেম। তাহলে কি ভিসা পদ্ধতি ধর্মানুভুতিতে তীব্র আঘাত হানার কথা নয়? তাহলে কেন আজ ধার্মিকেরা ভিসার জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন দীর্ঘ লাইনে। দিন দিন কেন কমে যাচ্ছে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা। দূর্বল চিত্তের মানুষকে নরকের ভয় দেখানো ঈশ্বর নামক ধারনা নিজেই কেন সর্ব প্রথম খারাপ বা নেতিবাচকতা তৈরী করেছিলেন। আগে থেকেই নাকি নরক বানানো এবং ঈশ্বর নাকি পরীক্ষা নিচ্ছেন তা তিনি নিজে কয়টা পরীক্ষা দিয়েছেন? যদি ঈশ্বর নামক প্রাচীন ধারনা থেকেই থাকেন তাহলে অন্তত একটা দিনের জন্য কি পুরো সৃষ্টির কন্ট্রোল অটো মুডে দিয়ে একজন মানুষ হয়ে পৃথিবীতে এসে মানুষের জীবন কাটাতে পারেন না? যে কোন একটি ধর্ম পালন করতে পারেন না? তারপর নিজেই বুঝে যাবে পরীক্ষার ধান্দায় পড়ে আজ এই পৃথিবীই হয়ে যাচ্ছে নরক। ঈশ্বরের তো কোন স্বজন নেই। তাহলে তিনি কীভাবে বুঝবেন স্বজন হারানোর ব্যাথা। ঈশ্বর নামক এই প্রাচীন ধারণা পৃথিবীকে প্রাচীনই রাখতে চায়।