প্রেম করে বিয়ে নাকি পারিবারিক বিয়ে? পড়াশুনা, বা চাকরি, ফোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর কল্যাণে আজকাল একাধিক মানুষের সঙ্গে পরিচয় ঘটে চলেছে । পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব, সেখান থেকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মোড়। আজকাল এসব ঘটনা সবার কাছেই মামুলি হয়ে গেছে। পারিবারিক পছন্দের বদলে নিজের পছন্দকেই প্রাধান্য দেয়ার পক্ষে অনেকেই। অনেকে আবার এটার ঘোর বিরোধী। মূলকথা হল উভয় ধরনের বিয়েরই পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তি আছে। আসুন দেখে নেয়া যাক।
পারিবারিক বিয়ে সুফল
.পরিবারকে পাশে পাবেন সব সময়। দেখাশোনা থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন তারা।
.যৌথ পরিবারে থাকার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে বাধ্য ছেলে বা মেয়ের তকমাও জুটে যাবে আপনার কপালে।
.নতুন সংসারে নতুন মানুষ আপনাকে আদিক্ষেতাও করবে বেশ। তাদের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করবেন নতুন ভাবে।
.আত্মীয় স্বজনের ভালো লাগাকে সঙ্গে রেখে নতুন সম্পর্কে যাত্রা হবে আপনাদের।
পারিবারিক বিয়ে কুফল
.প্রেমের চেয়ে সাংসারিক দায়বদ্ধতা থাকবে বেশি।
.সম্পূর্ণ নতুন সদস্য হিসেবে পরিবারের সব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে।
.স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে সবকিছু খোলাখুলি আলোচনা করতেও দ্বিধা কাজ করতে পারে।
.পরিবারের সবার মন রক্ষা করে চলতে নতুন বৌদের পোহাতে হয় মানসিক চাপ।
.দুজনের একান্ত ব্যাপারগুলোতেও বাড়ির লোকেরা হস্তক্ষেপ করতে পারে।
এসব সমস্যা এড়াতেই যে প্রেমের বিয়ে বেছে নেয়া হচ্ছে তা নয়, প্রেমে পড়ে যাওয়ার কারণেই সাধারণত এ ধরণের বিয়ে হয়ে থাকে। তবু প্রেমের বিয়েতেও রয়েছে বেশ কিছু সুফল-কুফল। দেখে নেয়া যাক-
প্রেমের বিয়ে সুফল
.নতুন মানুষকে নয়। মনের মানুষকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়া যায়।
.ঝগড়ার আশঙ্কা কম থাকে।
.চাওয়াপাওয়ার হিসেব নিয়ে গোলমাল হয় না।
.সব বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা যায়।
.দু-জনে মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
.একজনের কথা অন্যজনের বুঝতে সমস্যা হয় না।
.ঝগড়া হলে তাড়াতাড়ি মিটমাট হয়ে যায়।
.ব্যক্তিগত বিষয়ে বাইরের লোকজন কম নাক গলাতে সাহস পায়।
প্রেমের বিয়ে কুফল
.পরিবারের সমর্থন নাও পেতে পারেন। এক্ষেত্রে অনেকটা নির্বাসিত জীবন হতে পারে দুজনের।
.নতুন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার আগে যেমন টান টান উত্তেজনা ও ভয় কাজ করে, প্রেম করে বিয়ে করলে সেই রোমাঞ্চটা থাকে না।
.অনেকক্ষেত্রেই বাড়ির অমতে বিয়ে করলে দু-পরিবারের মধ্যে সুখকর সম্পর্ক তৈরি হয় না।
.পরিবারের মধ্যে মৈত্রী করতে অনেক পরিশ্রম করতে হতে পারে।
.প্রেমের চর্চা থাকায় সঙ্গী অপরের দিকে ঝুকতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় অনেক বেশি।
.একে অপরের সামনে ধৃষ্টতা দেখাতেও দ্বিধা করেনা। বায়না থাকে বেশি। আর তখনই ঝগড়ার উৎপত্তি ঘটে।
স্বামীর কাছে যা শুনতে চান স্ত্রী!---
স্বামীর কাছে স্ত্রীই সব, তাকে ঘিরেই স্বামীর স্বপ্ন, তাকে ছাড়া অন্য কারও কথা ভাবতে পারেননা তিনি। এই কথা গুলি মনের মধ্যে ঝড় তুললেও মুখে আনতে পারেন না পুরুষ মানুষ। সব কথা সরাসরি মুখে না বলে অন্য ভাবে বোঝাতে চান অনেকবার। স্ত্রী হয়তো তার কাছ থেকে একটা মিষ্টি আলিঙ্গন বা আবেগঘণ কথা আশা করেন। সেখানে পুরুষরা স্ত্রীর প্রিয় খাবার কিনে আনে, সাজগোজের জিনিস উপহার দেয় বা ঘরের কাজে সাহায্য করে। তখন বুজতে হবে মনের সেই না বলা কথায় জানান দিতে এতো প্রচেষ্টা তার।
স্বামী বিরুদ্ধে স্ত্রী অভিযোগের শেষ থাকে না। বিশেষ করে বাপের বাড়ির লোকদের সামনে বা নিজের বান্ধবীদের সামনে স্বামীকে নিয়ে ঠাট্টা পর্যন্ত হয়। সব শুনে মুখে কিছু না বললেও মনে মনে কুঁকড়ে যান পুরুষটি। এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে স্বামীর মনে হতাশার জন্ম দিবে। বিষয়টি এক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করবে। উভয়ের কাছে উভয়ের গুরুত্ব কমতে শুরু করবে। তাই স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কোন অভিযোগ থাকলে সেটা সরাসরি বলা উচিৎ। অযথা অন্যের সামনে স্বামীর বদনাম করে তাকে ছোট করা ঠিক নয়।
নিজের সন্তানদের প্রতি স্ত্রীর দায়িত্বশীলতা দেখে খুশি হলেও মনে মনে নিজেকে অনেক সময় একা ভাবতে পারেন একজন স্বামী। শিশুদের জীবনে মায়ের ভূমিকা জানা সত্ত্বেও স্ত্রীকে যেন কিছুতেই অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাননা তিনি। তিনি চান হাজার কাজের মাঝেও স্ত্রী তাকে সময় দিক।স্বামীকে প্রতিমুহুর্তের ভালোবাসায় সিক্ত রাখুক।স্বামী হয়তো চান শুধু স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যেতে।তাই স্ত্রীর উচিৎ হাজার কাজের মাঝে সময় বের করে তাকে সময় দেয়া।
স্বামীর হঠাৎ করে যদি চাকরি চলে যায় বা কর্মক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে তবে দাম্পত্য জীবনে তার প্রভাব দেখা দেয়। স্বামী চান স্ত্রী তাকে মানসিক ভাবে সাহস জোগাবে। স্ত্রী বেশি চিন্তিত হলে স্বামী আরও বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তাই একজন সচেতন স্ত্রীর উচিৎ স্বামীকে সাহস জোগানো। তার পাশে থেকে সঙ্গ দেয়া। চিন্তা থেকে বের করে এনে নতুন পরিকল্পনায় সাহায্য করা।
সব ভাল কাজের জন্য প্রশংসা পেতে কেনা চায়। ভাল কাজের জন্য একজন স্বামীর সব চেয়ে বড় স্বীকৃতি স্ত্রীর প্রশংসা। এমনকি স্ত্রীর জন্য কিছু করলেও সেই কাজের প্রশংসা পেতে আশা করেন স্বামী। তাই স্বামীকে প্রশংসা করতে কার্পণ্য না করে উদারতা দেখানোই ভাল।এতে দুজনেরই সম্পর্ক ভাল থাকবে।
একজন স্ত্রীর উচিৎ তিনি যেমন তাকে সেভাবেই ভালবাসেন সেটা বুঝিয়ে দেয়া। কারণ একটানা যদি স্বামীর ভুল নিয়েই অভিযোগ উঠতে থাকে তবে তিনি বুঝেই উঠতে পারেননা স্ত্রী আদৌ তাকে মূল্য দেন কিনা। তাই গল্পের সময় হালকা কথায় স্বামীকে বুঝিয়ে দেয়া ভাল তার সমস্যার কথা। এতে একদিন প্রায় সব সমস্যারই সমাধান হবে। সংসার হবে সুখের।
যে কারণে নারীরা যৌন কল্পনা করে---
আমাদের মাঝে অনেকের ধারণা, খুব খারাপ বিষয় নাকি যৌন কল্পনা এবং এই নিয়ে খোলামেলা আলোচনাও নাকি খারাপ। যদিও বিশেষজ্ঞদের মত উল্টো ধারণা। তাঁরা আবার অভয় দিয়ে বলেন, যৌনতা নিয়ে আলোচনা একেবারেই খারাপ বিষয় নয়। যৌনতা নিয়ে আলোচনা হল সুস্থতারই লক্ষণ।
স্যান্ডউইচ স্টাইল
কোনও কোনও নারীর একজন পুরুষে ক্রিয়া সমাপ্ত হয় না। একই সঙ্গে একাধিক পুরুষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাস্তবে সবক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। ফলে কল্পনাই সই। ফ্যান্টাসির জগতে কিছু সংখ্যক নারীকে সঙ্গ দেয় একের অধিক পুরুষ।
রোল বদল
যৌনসুখে বিভোর কোনও কোনও নারী পুরুষকে নানা রূপে কল্পনা করতে ভালোবাসেন। সঙ্গীর পরিবর্তে এমন কোনও ব্যক্তিকে তিনি কল্পনা করেন, যাঁর সঙ্গে বাস্তবে যৌনমিলন করায় বাধা আছে। মোদ্দা কথা হল, সেই সব নারী সেক্স করার সময় পরপুরুষের কথাই চিন্তা করে সুখ খুঁজে পান।
টু পিস ও উষ্ণতা
আলুথালু চেহারার রমণীও এমন কল্পনা করেন মনে মনে। সুদীর্ঘ সোনালি বালুতটের উপর দিয়ে তিনি টু পিস পরে দৌড়ে এসে জাপটে ধরেন সঙ্গীকে। সমুদ্রের ঢেউ স্পর্শ করে যায় তাঁদের অর্ধনগ্ন শরীর।
রোম্যান্টিকতা
আবেগপ্রবণ রমণীর ক্ষেত্রে রোম্যান্সটাই প্রথম কথা এবং সেটাই শেষ কথা। কল্পনার জগৎ জুড়ে ছেয়ে থাকে দারুণ সুসজ্জিত কোনও শোওয়ার ঘর, সুগন্ধি ক্যান্ডেল ও ঘরের লাগোয়া কোনও বাথটাব। টাব ভর্তি গোলাপের পাপড়ি। সেই আবহে রতিলীলায় মত্ত দুটি মন, দুটি প্রাণ। অনেকটা হিন্দি সিনেমার গানের দৃশ্যের মতোই মাখোমাখো ব্যাপার।
আমার সঙ্গী আজ তোমার হল
কোনও কোনও নারী কিন্তু তাঁর কল্পনার দুনিয়ায় অনেক বেশি উদার। ফ্যান্টাসির দোহাইতেই তিনি সঙ্গীকে অন্য কারোর সঙ্গে মিলিত হতে অনুমতি দেন। এবং মনে করেন সেই দৃশ্য তিনি বসে বসে দেখছেন। তাতে নাকি অদ্ভুত উত্তেজনা হয় শরীরে।
আগন্তুকের সঙ্গে সহবাস
নারী কল্পনার আরও একটি আশ্চর্য বিষয় হল, তিনি কোনও আগন্তুক বা অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে নিজেকে কল্পনা করতে ভালোবাসেন। বাসে, ট্রামে, ট্রেনে – যে পুরুষটিকে মনে ধরে খানিকক্ষণ, মনে মনে কল্পনা করে নেন আশ মিটিয়ে।
যে কারণে বিদেশী পুরুষ পছন্দ সৌদি নারীদের---
সৌদি পুরুষদের স্বামী হিসেবে কমই পছন্দ করেন সে দেশের নারীরা। দাম্পত্য জীবনে স্থিতি ও নিরাপত্তার জন্য সৌদি নারীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিদেশীদেরই স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে চান। বেশির ভাগ সৌদি নারীই চান না তাদের বিয়ে ডিভোর্স কিংবা স্বামীর বহুবিবাহের কারণে শেষ হোক। এ ছাড়া একটি নির্দিষ্ট বৃত্তের বাইরে গিয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনেক স্বাধীনতা পাওয়া যায় এ ক্ষেত্রে। সে জন্যই স্বামী হিসেবে বিদেশী পুরুষদেরই বেশি পছন্দ সৌদি নারীদের। জরিপ রিপোর্টের উদ্বৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
হাদি মাক্কি নামের এক হাসপাতালের নার্স বলেন, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এড়াতে ও বিবাহবিচ্ছেদের হার বেশি হওয়ায় অগণিত তরুণী সৌদি পরিবারে বিয়ে করতে ভয় পান। অনেকে চান বিদেশে গিয়ে আরেকটু স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে, যা তারা নিজেদের সমাজে পারেন না।
সৌদি অনেক নারীই আরবের অন্য দেশের পুরুষদের বিয়ে করেছেন। আরবের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সত্তার মধ্যে মিল থাকায় এটি সম্ভব হয়েছে। তবে গভীর উপজাতীয় শেকড় যাদের মধ্যে বিদ্যমান, তারা খুব কমই নিজের সংস্কৃতির বাইরের মানুষকে বিয়ে করতে আগ্রহী। আইন পরামর্শদাতা আবদুল আজিজ দাশমান বলেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কুয়েতের বেশি নাগরিককে বিয়ে করেছেন সৌদি নারীরা। ২০১২ সালের এক জরিপে এমন তথ্য পাওয়া যায়। তবে উপসাগরীয় নয়, এমন দেশগুলোর মধ্যে ইয়েমেনের পুরুষরাই বেশি বিয়ে করেছেন সৌদি নারীদের।
এ ছাড়া দেখা গেছে, অন-আরব কাউকে বিয়ে করার ব্যাপারে সামাজিক টাবু থাকা সত্ত্বেও ১১৮ সৌদি নারী পাকিস্তানিদের বিয়ে করেছেন। তবে তিনি আরও জানান, অনেক সৌদি নারীর কাছে সৌদি নন এমন পুরুষদের বিয়ে করাটা অনেকটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো বিষয়। তবে এ ক্ষেত্রে আর্থিক অসচ্ছলতার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। তিনি নারীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, তাদের অর্থের ওপর আগ্রহ আছে এমন পুরুষের প্রতি যাতে তারা ঝুঁকে না পড়ে।
নোরা নামের এমন এক সৌদি নারী নিজ সংস্কৃতির কাউকে বিয়ে না করার কারণে আক্ষেপে পুড়ছেন। তিনি বলেন, আমি যদি আমার আত্মীয়দের কথা শুনতাম তবেই ভাল হতো। খাইরিয়াহ আলি নামের ভিনদেশী পুরুষকে বিয়ে করা এক সৌদি নারী বলেন, তিনি ও তার সন্তানরা এখন আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছেন। কেননা, অভিবাসী স্বামী তার নিয়োগকারী কোম্পানির সঙ্গে এক ঝামেলায় জড়িয়ে এখন জেল খাটছেন।
এ ছাড়া এ ধরনের দম্পতির সন্তানের নাগরিকত্ব নিয়েও সমস্যা হয়। সৌদি শূরা পরিষদের সদস্য সাদাকাহ ফাদেল জানান, প্রায় ৭ লাখ সৌদি নারী বিদেশী বিয়ে করেছেন, যা মোট বিয়ে করা সৌদি নারীদের ১০ শতাংশ। শূরা পরিষদ সৌদি নারীদের বিদেশী স্বামী বা পুরুষদের বিদেশী স্ত্রী ও তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত আইন পরিবর্তন করতে চাইছে। তবে অনেকে আশঙ্কা করছেন, এ আইনের অপব্যবহার হতে পারে।